#ধর্মের_দেয়াল
-নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ৫
রাফসান ড্রাইভ করছে। পাশে রেহানা
বসে। রাফসান একের পর এক কল দিয়েই
যাচ্ছে। কিন্তু নাম্বার বন্ধ দেখাচ্ছে।
কারও নাম্বারেই কল ঢুকছেনা। রেগে
এবার ফোনটারে আছাড় মারল পায়ের
নিচে। রেহানা খুব চিন্তিত। আজ যে
কি হবে আজ তারও জানা নেই।
.
.
.
কাইফ তার বাবার কথা শুনে চুমকে উঠল।
তারপর বলল আপনি আপনার ভেলকি
দেখাইছেন আমারও যে দেখানো
বাকি আছে বলেই কালো ধুয়ার কুন্ডলি
পাকিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল।
.
.
.
নাফিসার রুমের মধ্য ৭ টা কুৎসিত ভয়ঙ্কর
কুকুর দাড়িয়ে আছে। তাদের মধ্য একজন
লাফ দিয়ে নাফিসার বুকের উপর উঠল
এবং নাফিসার চুলের মুঠি ধরে নিচে
ফেলে দেয়।
আর বুকের উপর উঠে গলা চেপে ধরে।
একদম বাজে ভাবে ধরে ফেলছে। এমন
ভাবে ধরছে যে নাফিসা ঙ্গান
হারানোর ভিতরই ছটফট ও গঙ্গাতে শুরু
করে দেয়।
.
.
.
কাইফ রুমে প্রবেশ করেই এক ঝটকানে
জ্বীন টিকে ছুড়ে ফেলে দেয় এবং
নাফিসাকে খাটে সুয়ে দেয়।
.
.
একনজর নাফিসার দিকে চেয়ে বলল
জানিনা কোন দিন তোমার সাথে আর
দেখা হবে কিনা! বলেই হিংস্র হয়ে
ওদের দিকে ফিরে তাকালো।
.
.
.
রাফী এবং ওর পরিবার ডাইনিং রুমে
খুজে বেরাচ্ছে কি হয়েছে এবং বের
হবার চেষ্টা করছে সেখান থেকে।
কিন্তু বার বার একই জায়গায় ঘুরে
ফিরে চলে আসছে। সবাই ভিষন ভয়
পেয়ে গেল।
-জাহানারা বলে উঠল ঐ মেয়ে
অলক্ষুণে মেয়ে। ওর সাথে খারাপ
জিনিস থাকে। আমি এমনি ওর সাথে
ওমন ব্যবহার করি!
.
.
মা! আমরা এখানে এক সমস্যার ভিতর
আছি। তার উপর তোমার পেচাল। তুমি
এবার কি থামবে?
.
.
.
.
কাইফ তার সাদা ২ টা ডানা বিশাল
আকারে মেলে ধরে আর হুংকার দিয়ে
বলে কে আছিস আয় এবার।
.
.
– ওরা ৭ জন একসাথে কাইফকে আক্রমন
করল।
একের পর এক ব্যান কাইফের উপর হুমরি
খেয়ে পড়ছে।
– কাইফ দেখল ও একা সবার সাথে
পারছেনা। তখনই একটা ভুল করে ফেলল।
ওর সমস্ত শক্তি দিয়ে নাফিসার
চারদিকে ১টা সুরক্ষা চক্র বানিয়ে
দিল এবং ক্লান্ত হয়ে মেঝেতে বসে
পড়ল।
.
.
.
খৈয়াম এসে ছেলেকে ধরে ফেলল
এবং জ্বীনদের বলল ক্ষমা করে দিন
আমার ছেলেকে। ও অবুঝ। ওদের মধ্য এক
নারী কন্ঠ বলে উঠল। তোকে দায়িত্বে
রাখা হইছিল কিন্তু তোর ছেলে সব নষ্ট
করে দিছে। এর শাস্তি ওকে আর তোর
পরিবারকে ভোগ করতে হবে। এমন সময়
চারদিকে আযান দিয়ে উঠল।
.
.
.
কাইফ এবং ওর পরিবারের সাথে
সেদিন কি হয়েছিল সেটা অজানাই
রয়ে গেল।
.
.
.
আযান শেষ হতেই পুরো বাড়িতে লাইট
চলে আসল।
.
.
সবাই বেশ আশ্চর্যই হয়ে গেল রুমে কিছুই
কিছুই হয়নি।
তার পর রাফী নাফিসার কাছে গিয়ে
দেখল সব স্বাভাবিক।
.
.
.
রাফসান রাফীদের বাসায় এসে
পৌছালো একটু পর।
কলিং বেল চাপ দিতেই বিথী চমকে
ওঠে বলল এই সময় কে?
.
.
.
রাফী গিয়ে গেট খুলে দিতেই দেখে
রাফসান এবং পিছে তার ফুফু দাড়িয়ে
আছে।
.
.
রাফীকে পাশ কাটিয়ে সোজা
ডাইনিং রুমের ভিতর দিয়ে নাফিসার
রুমে চলে গেল হনহন করে।
.
.
সামনে যে শশুর -শাশুড়ি আছে তাদেরও
কোন খেয়াল করল না।
রাফীতো বেশ অবাক হয়ে গেল।
রাফসান ভাইয়া যে এরক কাজ করল
বিশ্বাসই করা যায়না।
রাফীও পিছন পিছন যেতেই রেহানা
নিষেদ করল। বলল ও এবার এসেছে আর
চিন্তা নেই। তোরা মনে হয় সারা
রাত ঘুমাস নি গিয়ে একটু ঘুমা।
আর জাহানারা তোর জামাই প্রথম
তোর বাসায় আসলো তাকে
মেহেমানদারী করবি না?
আর তাছাড়া রাফসান একদম পছন্দ করে
না রোগী চিকিৎসা করা অবস্থায়
রুমে কেউ থাকুক।
বিথি বলে উঠল রোগীটা কে?
রাফী কটমট করে তাকালো বিথীর
দিকে।
– বিথী চুপ মেরে গেল এবং যে যার
যার রুমে চলে গেল।
– রেহানা যেন হাফ ছেড়ে বাচল এবং
দ্রুত নাফিসার রুমের দিকে পা
বাড়াল।
.
.
.
.
রাফসান সোজা গিয়ে নাফিসাকে
জড়িয় ধরে কাদতে লাগল। মায়েয়
সামনে কাদতে পারেনি।
নাফিসা যে কিনা রাফসানের প্রথম
প্রেম ছিল।
রাফসান ওকে ধরে বলল ভুল হয়ে গেছে
আমার পাখিটা এভাবে এত্ত বছর রাগ
করে তোকে দুরে রাখা আমার ঠিক
হয়নি।
রেহানা যে ভয় টা পাচ্ছিল আজ
সেটায় ঘটে গেল।
– রেহানা এসে ওর ঘাড়ে হাত দিয়ে
বলল বাবা এখানে দয়া করে
সিনক্রিয়েট করিস না। ভুলে যাসনা
এটা তোর শশুর বাড়ি।
.
.
রাফসান পিছন ফিরে মায়ের দিকে
তাকালো।
থমকে গেল রেহানা ওর দুটো রক্ত বর্ন
চোখ দেখে। আরও কিছু বলতে গিয়েও
আর বলতে পারলনা।
.
.
.
আজ যেন কোন বাধায় মানছেনা সে। ৪
বছর যাবত ওকে দেখেনি।
এমন সময় রেহেনা বলল ওর ট্রিটমেন্ট শুরু
করতে হবেতো বাবা। দেখনা ওর কি
হইছে।
এবার যেন রাফসান হুস ফিরে পেল।
.
.
সকালে নাফিসার ঙ্গান ফিরে আসে।
চোখ খুলতেই দেখে সামনে চিয়ারে
রাফসান ওর হাত ধরে বসে আছে।
– নাফিসা ধপ করে উঠে বসে।
.
.
.
রাফসান চমকে উঠে বলে সবাই কে
তোহ ভয় পাইয়ে দিছিলি।
– আপনিও ভয় পাইছিলেন বুঝি?
রাফসান কথাটা শুনে চুপ করে রইল।
তারপর কি জানি ভেবে বলল কেমন
আসিছ পাখিটা?
আদর করে রাফসানের দেওয়া না
পাখি।
নাফিসা শুধু ছল ছল চোখে রাফসানের
দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে
ওমনি ওর ফুফু রুমে এসে বলল রাফসান যা
ফ্রেস হয়ে নে তোর শাশুড়ি নাস্তা
করার জন্য ডাকছে।
.
.
.
ফুফুর হাতে প্লেট ভরতি ভাত দেখে
নাফিসার চোখ চকচক করে উঠল এবং
বলল
আমার জন্য!
খুব খুদা লাগছে ফুফু…………
চলবে……….