অজানা_অনুভূতি #পর্বঃ ১৮

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১৮
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

আদ্রিতা দাঁড়াতে চেয়ে ও দাঁড়াতে পারছে না।

এই আদ্রিতা একটু দাড়ানোর চেষ্টা কর (আলো)

পারছি না রে। (আদ্রিতা)

কি দরকার ছিলে দৌড়ে যাওয়ার? এমনি সকালে কিছু খাওয়া হয় নি তোর আবার লো প্রেসারের সমস্যা রয়েছে। এখন কি করবি? (আবির)

বাজে বকা অফ কর আর ওকে টেনে তোল (তানহা)

তোরা তোল আমি দেখি বরফ নিয়ে আসি।(আবির)

আবির একথা বলে বরফ আনতে চলে গেলো।

কি হচ্ছে এখানে?(আরিয়ান)

হঠাৎ আরিয়ান স্যারের শব্দ পেয়ে সবাই চুপ হয়ে গেলো।

স্যার আদ্রিতা তাড়াতাড়ি করে যেতে গিয়ে পরে গেছে।পা মচকে গেছে অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু দাঁড়াতে পারছে না।(আলো)

এখন এই অবস্থা কেনো তোমার ? কালকে অনুষ্ঠান তোমার কতো দায়িত্ব রয়েছে আর আজকে সিট কি করবে এখন (আরিয়ান)

আরিয়ান স্যারের কথা ভালো লাগছে না। একে ত সেই লেহেঙ্গার প্যাকেট দেখেছিলাম স্যারের হাতে আবার ফোনের ম্যাসেজ। সব কি স্যার করছে নাকি না বুঝতে পারছি না। কিন্তু এখন ব্যথা পাওয়ার পর ও স্যারের মধ্যে আমার জন্য কোনো চিন্তা দেখতে পারছি না। তাহলে কি আমার ধারনা ভুল? উফ মাথা ব্যথা শুরু হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সাজ্জাদ যে এগুলো কিনবে সাজ্জাদ ত জানে না আমি এগুলো পছন্দ করেছি। আদ্রিতা নিচে বসে এই কথাগুলো ভাবছে।

আরিয়ানের মনে একটি বিষয় নিয়ে অনেক সংকোচ কাজ করছে তাও নিজেকে সংযত রেখে আদ্রিতার দিকে হাত বাড়িয়ে বললো,

আদ্রিতা উঠার চেষ্টা করো। (আরিয়ান)

আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। মনে মনে খুব করে একটি মানুষকে চাইছি। সে আসুক আমি আমার বিপদে তাকে বাদে অন্য কারোর সাহায্য চাই না। আদ্রিতা চোখ বন্ধ করে কথা গুলো ভাবছিলো।

কি হলো উঠে এসো? (আরিয়ান)

আলো বুঝতে পারছে আদ্রিতা সংকোচ বোধ করছে। আলো কিছু বলবে এর আগে পিছন থেকে শব্দ আসলো।

তুমি এতো কেয়ারলেস কেনো? (সাজ্জাদ)

সাজ্জাদ শান্ত গলায় কথাটি বললো। সাজ্জাদ এইবার ও হুডি পড়ে এসেছে যেনো হঠাৎ দেখায় কেউ তাকে চিনতে না পারে।

আদ্রিতার চোখ গুলো যেনো এতোক্ষণ এই মানুষটাকেই খুঁজে চলেছিলো। আদ্রিতা ও বুঝতে পারছে ওর পক্ষে দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। কোনো ছেলের সাহায্য লাগবে। কিন্তু অন্য কোনো ছেলের স্পর্শ আদ্রিতা চাই না। কতক্ষণের জন্য আদ্রিতা যেনো ভুলে গিয়েছিলো মানুষটা আদ্রিতার নয়।

সাজ্জাদকে দেখে কেনো জানি আরিয়ানের ভালো লাগলো না। সাজ্জাদের ঘন ঘন কলেজে আসা আরিয়ানের মোটেও পছন্দ না।

**********

সামিরা ইউনিভার্সিটির ক্লাস শেষে দাঁড়িয়ে আছে বাসস্ট্যান্ডে। সামিরার মনের বিরুদ্ধে কাউকে খুঁজে চলেছে। সামিরার বিশ্বাস সে আসবে। প্রথম একটি বাসে সামিরা উঠলো না। অপেক্ষা করতে থাকলো কিন্তু সে আসলো না। সামিরা নিজে ও বুঝে উঠতে পারছে না কেনো তাকে খুঁজে চলেছে? এমন না যে সামিরার সামনে সেই ব্যক্তিটি আসলে সামিরা কথা বলবে। কিন্তু নিজ অজান্তেই চোখ গুলো খুঁজে চলেজে একজনকে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে ও যখন সেই ব্যক্তি আসলো না তখন সামিরা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাসে উঠে গেলো।সামিরা কেনো তাকে খুঁজলো সামিরা নিজে ও জানে না এই #অজানা_অনুভূতির মানে সামিরার কাছে জানা নেই।

*******

সাজ্জাদ এগিয়ে এসে আদ্রিতার হাত ধরে ওকে টেনে দাঁড় করালো।

অনেক ব্যাথা করছে হাঁটতে পারছি না। (আদ্রিতা)

সাজ্জাদ আদ্রিতার দিকে তাকালো মনে হচ্ছে এখনই যেনো চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়বে। সাজ্জাদ বুঝতে পারলো তার মানে ভালোই ব্যাথা করছে।

সাজ্জাদ আর কিছু না ভেবে আদ্রিতাকে কোলে তুলে নিলো।

হঠাৎ সবার মাঝে এমন ঘটনার জন্য আদ্রিতা মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। ভয় এবং লজ্জা ওকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে।

আদ্রিতারা মাঠের যেখানে বসে ছিলো সেখানে একটি গাছ ছিলো গাছের চারপাশে বসার জন্য জায়গা তৈরি করা আছে। সাজ্জাদ আদ্রিতাকে সেখানে বসিয়ে দিলো। সাজ্জাদের পিছন পিছন বাকিরা ও বসালো আরিয়ান স্যার ও আসলো।

দেখি তোমার পা কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতার পা ধরতে নিলে আদ্রিতা চিল্লিয়ে উঠলো,

একিকিকি কি করছেন পায়ে হাত দিবেন না আপনি আমার বড়। (আদ্রিতা)

এখন এইসব ফালতু আলাপ করো না। চুপচাপ দেখতে দেও কি হয়েছে। (সাজ্জাদ)

আদ্রিতা ভাইয়া যা করছে ভালোর জন্য করছে তুই একটু চুপ থাক (আলো)

আদ্রিতাকে আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে সাজ্জাদ আদ্রিতার পা ধরলো।

সাজ্জাদের স্পর্শে আদ্রিতার শরীরে এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে যাচ্ছে।

সাজ্জাদ আদ্রিতার পা একটু মোচড় দিলো। পরেরবার একটু জোড়ে মোচর দিলে আদ্রিতা ব্যাথায় সাজ্জাদ সার্ট খামছে ধরে। চোখ থেকে এক ফোঁটা জল সাজ্জাদের হাতে এসে পড়ে।

ছাড়ো (সাজ্জাদ)

সাজ্জাদের কথা শুনে আদ্রিতা শার্ট থেকে হাত ছেড়ে দেয়।

এখন হাঁটার চেষ্টা করো দেখো পারবে। (সাজ্জাদ)

আদ্রিতা সোজাসুজি দাঁড়াতে ভয় পাচ্ছিল। সাজ্জাদ বিষয়টি বুঝতে পেরে নিজের হাত এগিয়ে দিলো,

আমার হাতে হাত রেখে দাঁড়াও (সাজ্জাদ)

আদ্রিতা ও কথা অনুযায়ী সাজ্জাদের হাতে হাত ধরে দাঁড়ালো।

হ্যাঁ এখন পা ঠিক আছে। (আদ্রিতা)

ব্যবসার পাশাপাশি দেখি ডাক্তারের কাজ ও শিখে গেছিছ (আরিয়ান)

ওই একটু আকটু সবাই পারে (সাজ্জাদ)

আরিয়ান আর সাজ্জাদ কথা বলছে শুধু ভাবছি আমি সাজ্জাদকে ভালোবাসি সে কি আমাকে ভালোবাসে? আমার সব বিপদে এগিয়ে আসে কেনো? আবার ওই প্যাকেটের ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম না সেটা কি আরিয়ান স্যার দিলো নাকি অন্য কেউ? সাজ্জাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব না আবার অসম্ভব ও না মানুষটাকে রহস্যময় লাগে। এসব কথা ভাবছিলাম হঠাৎ মাথা কেমন জানি ঘুরে উঠলো।

আদ্রিতা হঠাৎ পড়ে যেতে নিলে সাজ্জাদ আকড়ে ধরলো।

ওর কি হয়েছে? (আরিয়ান)

সকাল থেকে এখনো কিছু খাওয়া হয় নি তাই প্রেসার লো হয়ে গেছে। (আলো)

কি? আদ্রিতা এখনো কিছু খায় নি? তোমরা জানো না ওর প্রেসারের সমস্যা রয়েছে? (সাজ্জাদ)

সরি ভাইয়া (আলো)

আরিয়ানের এসব বিষয় ভালো লাগছে না।

তোমাদের ওর সাথে কোনো কাজ থাকলে পরে ওর সাথে দেখা করে নিও আমি এখন আদ্রিতাকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি। কথাটি বলে সাজ্জাদ আবার আদ্রিতাকে কোলে তুলে গাড়ির দিকে হাঁটতে থাকলো।

*****

দূর থেকে নওশিন সব দেখছে। নওশিন আর এসব সহ্য করতে পারছে না। চোখে মুখে প্রতিশোধর আগুন ফুটে উঠছে।

******

সামিরা বাসায় চলে এসেছে। কিন্তু কোনোভাবে শান্তি পাচ্ছে না। সামিরা নিজে ও বুঝতে পারছে না হঠাৎ কি হলো সামিরার

*****

সাজ্জাদ আদ্রিতাকে গাড়িতে বসালো। একটি পানির বোতল আর সাথে কিছু খাবার কিনে নিলো। সাজ্জাদ নিজে ও গাড়িতে বসে আদ্রিতার চোখে মুখে পানি ছিটানো শুরু করলো। সাজ্জাদ খেয়াল করছে আদ্রিতার ঠোঁট গুলো হালকা কাঁপছে। জিনিসটা যেনো সাজ্জাদ অনেক উপভোগ করছে। আদ্রিতার এখনো জ্ঞান ফিরে নি অন্যদিকে আদ্রিতার ঠোঁট যেন অনেক টানছে সাজ্জাদকে। সাজ্জাদের পক্ষে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সাজ্জাদ আর কিছু না ভেবে আদ্রিতার ঠোঁট ঠোঁট মিশিয়ে দিলো।

#চলবে

[ আমি ভেবেছিলাম আদ্রিতাকে আরিয়ান স্যার সাহায্য করবে। কিন্তু আপনারা সবাই চাচ্ছেন সাজ্জাদ সাহায্য করুক। তাই সাজ্জাদকে নিয়ে আসলাম। 😁

গঠনমূলক মন্তব্য করবেন তাহলে অনেক ভালো লাগে ❤️ ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here