অজানা_অনুভূতি #পর্বঃ ২০

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২০
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

সাজ্জাদ বলে উঠলো মিম তুই এখানে?

ইয়েস ব্রো কালকেই দেশে ফিরলাম।কেমন আছিছ? (মিম)

আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুই? (সাজ্জাদ)

আলহামদুলিল্লাহ ভালো ত হঠাৎ দুপুরে রেস্টুরেন্টে কার সাথে এসেছিছ? (মিম)

এতোক্ষণ মিম আদ্রিতাকে খেয়াল করে নি।

ওইযে ওর সাথে এসেছি সাজ্জাদ আদ্রিতাকে দেখিয়ে কথাটি বললো।

এই পিচ্চি কে? (মিম)

সাজ্জাদ হেঁসে উঠলো। মেজাজটা আর খারাপ হয়ে গেলো আমার একে ত আমার সামনে এইভাবে সাজ্জাদকে জড়িয়ে ধরেছে এখন আবার আমাকে পিচ্চি বলছে।

আপু আমি পিচ্চি না আর কিছুদিন পর ১৮ বছর হয়ে যাবে। (আদ্রিতা)

কথাটি শুনে মিম আপু আর সাজ্জাদ দু’জনই হেসে উঠলো।

কিসে পড়ো তুমি? (মিম)

ইন্টার ১ম বর্ষ (আদ্রিতা)

তুমি সাজ্জাদের ওই বোনটা না? (মিম)

কি বলবো এখন আমি সাজ্জাদের কি হয় আমি নিজে ও জানি না। আমি কিছু বলার আগে সাজ্জাদ বলে উঠলো,

আমার ফ্রেন্ডের ছোট বোন। (সাজ্জাদ)

ও হাই আমি মিম সাজ্জাদের বেস্ট ফ্রেন্ড।

[ সাজ্জাদ, স্বাধীন, মিম, সাকিব এরা ৪ জন বেস্ট ফ্রেন্ড। ছোটবেলা থেকেই তারা একসাথে বড় হয়েছে। অনার্স কমপ্লিট করার পর মিম আর সাকিব দু’জন কানাডা চলে যায়। সেখানেই নিজেদের জীবন গুছিয়ে নেয়। কালকেই দেশে ফিরেছে আর আজকে ওদের সাথে দেখা হয়ে গেলো। ]

আমরা একসাথেই পড়াশোনা করেছি। (সাজ্জাদ)

পড়াশোনা করছেন না কি করছেন এইটাই ত বুঝতে পারছি না (আদ্রিতা মনে মনে কথা গুলো বলছে)

হ্যাঁ, সাজ্জাদ ঠিক বলেছে আমরা ছোট থেকেই ফ্রেন্ড। কিন্তু আমি এখন কানাডাতে আছি আর বাংলাদেশে কালকেই দেশে ফিরলাম।

আদ্রিতা উৎসাহ নিয়ে বললো আপু কানাডা থাকেন?

হ্যাঁ, কেনো তোমার কানাডা যাওয়ার ইচ্ছে আছে নাকি? (মিম)

হ্যাঁ আপু ইচ্ছে আছে। (আদ্রিতা)

কখনো যদি ইচ্ছে পূরণ হয় আমার বাসায় এসো। (মিম)

আদ্রিতা মুচকি হেঁসে বললো আচ্ছা আপু।

আচ্ছা তোরা এনজয় কর আমি গেলাম। (মিম)

চল গেইট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসি। (সাজ্জাদ)

কথাটি বলে সাজ্জাদ আর মিম আপু হাঁটা শুরু করলো। মেজাজ আর ও খারাপ হয়ে গেলো মানে গেইট পর্যন্ত এগিয়ে দেওয়ার কি আছে একা ও যেতে পারবে বিরক্তিকর।

সত্যি করে বল আসলেই কি ফ্রেন্ডের ছোট বোন নাকি অন্য কিছু? (মিম)

ও আদ্রিতা (সাজ্জাদ)

কি? কি বললি তুই? আদ্রিতা? আগে বলবি না তাহলে ওর সাথে বসে কতক্ষণ আড্ডা দিয়ে আসতাম। (মিম)

চুপ থাক এমনি তোর জন্য আদ্রিতা এখন হয়তো রেগে আছে। (সাজ্জাদ)

আরে আমি আবার কি করলাম? (মিম)

এইযে হুট করে এসে জড়িয়ে ধরলি। (সাজ্জাদ)

কানাডাতে এইগুলো নরমাল। (মিম)

কিন্তু এইটা বাংলাদেশ। (সাজ্জাদ)

যাই হোক ওর রাগ ভাঙিয়ে নিস। এখন বল তোদের বিয়ে কবে? (মিম)

শুনিছ নি কি বললো? ১৮ বছর এখন ও হয় নি 🥲 সামনের মাসে ১৮ তে পা দিবে তখনই নিজের করে নিবো। (সাজ্জাদ)

হায়রে পিচ্চির প্রেমে পড়েছিছ। (মিম)

সাজ্জাদ হেঁসে উঠলো। যাই মহারাণীর রাগ ভাঙিয়ে আসি। (সাজ্জাদ)

হুম যা আমি ও গেলাম কথাটি বলে মিম চলে গেলো।

সাজ্জাদ এসে দেখলো আদ্রিতা চুপচাপ বসে আছে মুখে বিরক্তর ছাপ।

সরি একটু লেট হয়ে গেলো। (সাজ্জাদ)

আপনার মেয়ে ফ্রেন্ড ও আছে? (আদ্রিতা)

কেনো থাকতে পারে না? তোমার ও ছেলে ফ্রেন্ড আছে। আবিরের কথা ভুলে গেছো নাকি? (সাজ্জাদ)

ভুলবো কেনো? কিন্তু সবার সামনে হুট করে এসে জড়িয়ে ধরে না। (আদ্রিতা)

কানাডায় এগুলো নরমাল। (সাজ্জাদ)

ভালো চলে যান কানাডা যাকে ইচ্ছে তাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকেন। (আদ্রিতা)

সাজ্জাদ উঠে এসে আদ্রিতার পাশে বসলো।

আমার জায়গায় কোনো এসেছেন দূরে যান(আদ্রিতা)

সাজ্জাদ আদ্রিতাকে কাছে এনে এক হাত দিয়ে আদ্রিতার কোমর জড়িয়ে ধরলো।

ছাড়ুননননন (আদ্রিতা)

তুমি ত বললে যাকে ইচ্ছে তাকে জড়িয়ে ধরতে তাই তোমাকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছে ছিলো তাই চলে আসলাম তোমার কাছে। (সাজ্জাদ)

স্যার আপনাদের খাবার। ( ওয়েটার)

রেখে দিন। (সাজ্জাদ)

খাবার খেযে নিন আর আমাকে ছাড়ুননন (আদ্রিতা)

হুঁশশশ, আজকে আমি তোমাকে খাইয়ে দিবো।

আদ্রিতা আর কিছু বললো না সাজ্জাদ আদ্রিতাকে খাইয়ে দিলো সাথে নিজে ও খেয়ে নিলো।

খাওয়া শেষে আদ্রিতা আর সাজ্জাদ বের হলো।

*********

আদ্রিতা একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছে আর সাজ্জাদ কিভাবে আদ্রিতার এতো কাছে গেলো কথাটি বলে নওশিন গাছে একটি লাথি দিলো

শান্ত হ (রাইসা)

কালকের অনুষ্ঠানেই আদ্রতার শেষ দিন হবে। (নওশিন)

কি করবি তুই? (রাইসা)

দেখ না যা করবো তারপর আর সাজ্জাদ কখনো আদ্রিতার দিকে ঘুরে ও তাকাবে না। (নওশিন)

কি করবি আমাকে বল (রাইসা)

কালকে দেখে নিস। কালকের পর থেকে সাজ্জাদ শুধু আদ্রিতাকে ঘৃণা করবে।

*******

আরিয়ান কলেজে আছে এখনো একটি বিষয় কিছুতেই মেলাতে পারছে না। কিন্তু আরিয়ান যা ভাবছে তা যদি সঠিক হয় তাহলে আরিয়ানেরই লাভ।

******

বাসায় চলুন আমি সন্ধ্যায় বের হবো (আদ্রিতা)

কোথায় যাবে?

কলেজে অনুষ্ঠান কালকের জন্য কিছু জিনিস কিনতে হবে। ( আদ্রিতা)

কেনো তোমার কি কোনো ড্রেস নেই? (সাজ্জাদ)

আছে তুব ও কিনবো (আদ্রিতা)

সাজ্জাদের মনে মনে রাগ হচ্ছে। কারন সেদিন লাল লেহেঙ্গা, হিজাব আর বিভিন্ন জিনিস সাজ্জাদ পাঠিয়েছিলো সাজ্জাদ চেযেছিলো আদ্রিতা যেনো কলেজের প্রোগ্রামে সেই ড্রেস গুলো পড়ে। হঠাৎ আদ্রিতা বলে উঠলো,

আপনি আমাকে মেসেজ দেন তাই না? (আদ্রিতা)

সাজ্জাদ চমকে উঠলো নিজেকে শান্ত রেখে বললো, না

মিথ্যে বলবেন না আপনি ত মেসেজ দিয়েছিলেন এই কথা বলে আদ্রিতা ১ম নাম্বার থেকে আসা মেসেজগুলো সাজ্জাদকে দেখালো। কারন আদ্রিতার মনে হয়েছে যেহেতু লেহেঙ্গার প্যাকেটটি আরিয়ান স্যারের হাতে দেখেছিলো তাহলে নিশ্চয়ই ২য় নাম্বারটি থেকে আরিয়ান স্যার মেসেজ দিয়েছে। আর ১ম নাম্বার থেকে সাজ্জাদ।

সাজ্জাদ মেসেজ গুলো দেখে চমকে উঠলো কারন এই মেসেজ গুলো সাজ্জাদ করে নি।

আদ্রিতা আমি এই মেসেজ গুলো দেই নি। (সাজ্জাদ)

সাজ্জাদ কে দেখে মনে হচ্ছে না সে মিথ্যে কথা বলছে।

সাজ্জাদ বুঝতে পারলো আদ্রিতা কেনো এই লেহেঙ্গা পড়বে না কারন আদ্রিতার মনে হচ্ছে এই মেসেজ যে দিয়েছে সে এই লেহেঙ্গা পাঠিয়েছে।

কি হলো চলুন। (আদ্রিতা)

আমি ও যাবো তোমার সাথে মার্কেটে। (সাজ্জাদ)

আগে আমার বাসায় যেতে হবে টাকা নিয়ে তারপর বের হবো। (আদ্রিতা)

আমার সাথে থাকলে কি তোমার টাকার চিন্তা করতে হবে? (সাজ্জাদ)

অবশ্যই আমি আপনার টাকা দিয়ে শপিং কেনো করবো? আচ্ছা আপনি থাকুন আমি আবিরকে বলছি আমার নাম্বারে বিকাশ করে দিতে।

কথাটি শুনে সাজ্জাদের মাথা গরম হয়ে গেলো সাজ্জাদ চাই না সাজ্জাদ থাকতে আদ্রিতার কোনো কষ্ট হোক। আর আদ্রিতা সাজ্জাদের সামনে অন্য ছেলের থেকে সাহায্য নিবে। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আদ্রিতার সামনে এসে এক হাত দিয়ে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে আদ্রিতার মাথায বন্দুক ঠেকালো

#চলবে

[ পড়ারা অনেক বেশি চাপ তাই বোনাস পর্ব বা বড় করে লিখতে পারি না।

নওশিন মনে মনে কি ঠিক করে রেখেছে কি জানে 🤷‍♀️
যাই হোক কলেজের অনুষ্ঠানে আদ্রিতা কি পড়লে আপনারা খুশি হবেন? শাড়ি নাকি লেহেঙ্গা? আর কোন কালার পড়বে সেটা ও আপনারা ঠিক করে দিন 🫣 ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here