অদ্ভুত প্রেমোমোহ তুমি পর্বঃ২০

0
1915

#অদ্ভুত_প্রেমোমোহ_তুমি
#পর্বঃ২০
✍️ তাজরিয়ান খান তানভি

সকাল সকাল কিছু একটার খুট খুট আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় আজরাহান এর।ঢুলু ঢুলু চোখে বিছানার এ পাশে তাকিয়ে দেখে তা বিরান।প্রহর কোথায়??

বিছানা ছেড়ে আওয়াজ কে কেন্দ্র করে সেদিকে পা বাড়ায়।বারান্দায় গিয়ে দেখে বেশ বড় একটা টবে মাটি চাপা দিচ্ছে প্রহর।

“কিরে কি করছিস তুই এই সকাল সকাল??

প্রহর উঠে দাড়ায়।ওড়নাকে কোমড়ে বেধে রেখেছে চুলে হাত খোপা।এমনি তে এই মেয়েকে ঘুম থেকে টেনে তোলা যায় না।কিন্তু আজ সে আগেই উঠে পড়েছে।

“গাছ লাগাই।”

আজরাহান একটু সামনে এগিয়ে যায়।গিয়ে দেখে একটা ছোট্ট গন্ধরাজ ফুলের চারা।

“এইটা তো বাগানে ছিলো।বাবা গত সপ্তাহে লাগিয়েছে।তুলে আনলি কেনো তুই??

“কে বলল তুলে এনেছি??
এইটা ছোট আব্বু আমাকে এনে দিয়েছে।সকালে নার্সারি থেকে।”

“বুঝলাম।কিন্তু একটা তো আছে তাও আরেকটা এনে একবারে বারান্দায় লাগিয়েছিস কেনো??

“কারন এইটা শুধু আমার।
যখন এতে ফুল হবে তখন আপনি রোজ আমার খোপায় গন্ধরাজ ঘুজে দিবেন।”

আজরাহান এর চোখে হাসি যা তার মুখচ্ছবির কোনো পরিবর্তন করে না।প্রহর এর দু হাত ভরা মাটি লেপ্টে আছে।আজরাহান ওর হাতের কনুই ধরে টান মেরে ওকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।দু হাত হালকা করে ওর কোমড়ে আড়ষ্ট করে।

“তোর গন্ধরাজ এতো প্রিয় কেনো??

“কারন আপনি আমার প্রিয় তাই।”

“আমার সাথে গন্ধরাজ এর কি সম্পর্ক??

“আপনিই তো আমার গন্ধরাজ।
আপনার শরীর থেকে আমি গন্ধরাজ এর ঘ্রাণ পাই।”

প্রহর আজরাহান এর বুকে বার দুয়েক নাক ঘষে আবার বলে–

“এই যে এখনো পাচ্ছি।”

প্রহর এক বড় নিঃশ্বাস টেনে নেয়।

আজরাহান ওকে আলগা করে নিজের থেকে।

“খাওয়া হয়েছে তোর??

“নাহ।
আপনি হাত মুখ ধুয়ে আসুন।নিচে সবাই আছে।”
,
,
কুহেলিকা বাড়ি ফিরে এসেছে।সাথে মেয়ে আর মেয়ে জামাইকেও সাথে নিয়ে এসেছে।আজরাহান কে দেখে সানায়ার আট বছরের ছেলে সারাফ দৌড়ে আসে।

“মামাই,,

“কি খবর চ্যাম্প??

“ভালো।আমার ভিডিও গেমস??

“সরি চ্যাম্প।মামাই তো ভুলেগেছি।আজ নিয়ে আসবো।”

“ওকে।”

পাশে সূর্য্যি এসে বলে —

“আমার জন্যও ডল নিয়ে এসো চাচ্চু।”

“তোকে কেনো দিবে??
যা এখান থেকে।”

বলেই ধাক্কা মারে সারাফ সূর্য্যি কে।

আজরাহান বা হাত দিয়ে ওকে টেনে ধরে।

“সারাফ এইসব কি ধরনের ব্যবহার??
মিষ্টি না তোমার ছোট বোন??

“কে বলল ও আমার বোন??
ও তো সূর্য্যি।”

সানায়া এসে সারাফ কে নিজের কাছে টেনে নেয়।

“এই তুই আমার ছেলে ধমকাচ্ছিস কেনো??

“ধমকাই নি।বুঝাচ্ছি।ওকে তো তুমি তোমার মতো বানিয়ে ফেলছো।”

“আজরাহান,,ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।”

“ভালো যে হবে না তা আমিও জানি।এখনো সময় আছে ছেলেকে শুধু শিক্ষিত না করে স্বশিক্ষিত করো।তোমারই ভালো হবে।নাহলে তো বৃদ্ধাশ্রম আছেই।”

আজরাহান হাটু ভেঙে বসে।সারাফ এর গালে হাত দিয়ে বলে–

“মামাই,,আর যাই করো তোমার বাবার মতো মেরুদন্ডহীন পুরুষ হয়ো না।”

আজরাহান এর কথায় সানায়ার চক্ষুগরম হয়।ঠোঁট চিপে বলে–

“কি বলতে চাস তুই???

তারাফ খাওয়ার টেবিলেই বসা ছিলো।হালকা করে ঠোঁট প্রসারিত করলেন।গলার স্বর হালকা উচু করে বললেন–

“শ্যালক সাহেব,,,যদি কোনো দিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হই তাহলে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার টা আমি তোমাকেই দিবো।”

সানায়া আরো ক্ষীপ্ত হলো।প্রেগন্যান্সিতে এমনিতেও মুড সুয়িং হয়।তারাফ সানায়া কে যথেষ্ট ভালোবাসে।তবে ভালোবাসা অন্ধ হওয়া উচিত নয় যে বাবা মায়ের ভালোবাসা সেখানে তুচ্ছ জ্ঞাপন হয়।

সানায়া সারাফ ক নিয়ে হুড় হুড় করে চলে যায়।আজরাহান তারাফ এর পাশেই বসে।এই লোকটাকে ওর অসহ্য লাগে।বউ এর কথায় কেউ মা বাবা কে নিজের থেকে আলাদা করে??

“কেমন আছো আজরাহান??

“ভালো।আপনার কি অবস্থা??

“চলছে।
তা তোমার বৈবাহিক জীবন কেমন চলছে??

“ভালো।
তা কয়দিন থাকবেন??

“অনেকদিন পর এলাম।দেখি কয়দিন থাকা যায়।”

“আপু কে এতো কেনো ভালোবাসেন আপনি??

“ভালোবাসার কোনো কারন লাগে না আজরাহান।তা নিশ্চয় তুমি বুঝতে পেরেছো।”

আজরাহান আড় চোখে তাকায় তার ভাইয়ের দিকে।সামান চোখ লুকোয়।সে জানে আজরাহান কি বুঝাতে চায়।
,
,
,
রাতের আঁধার মানুষকে বদলে দেয়।কেউ মানুষ কেউ অমানুষ।

অফিসের কাজ শেষ করে নিজেদের অফিসের সামনে এসে দাড়ায় আজরাহান।সারাদিনের পরিশ্রমে বেজায় ক্লান্ত।কিন্তু সামান এর সাথে কথা বলার জন্য বাড়ি উপযুক্ত নয়।অফিসের সামনে আসতেই দেখে দাড়োয়ান দাড়ানো।পঞ্চাশ উর্ধ্ব বৃদ্ধ।আজরাহান এর বাবার সময় থেকে তিনি এখানে কর্মরত।তাকে দেখে সামনে এলেন আজরাহান।

“কেমন আছেন চাচা??

বৃদ্ধ ছোট্ট হাসলেন।তার অভিব্যক্তি অমায়িক।

“ভালো।তুমি কেমন আছো আজরাহান??
অনেকদিন পর এলে।”

“সময় পাই না চাচা।”

আজরাহান কথা বাড়াতে চায় না।সন্ধ্যায় ঘরে ফেরা পক্ষিকুলের মতো তারও বাড়ি ফেরা দরকার।আজকাল কোনো কিছুই তার সহ্যের বাইরে।জীবন কেমন থমকে যাচ্ছে মনে হচ্ছে।অদেখা আগ্রাসন তাকে ঘিরে ধরেছে ধীরে ধীরে।

“অফিস কি বন্ধ??

“নাহ।একটু আগেই ছুটি হলো।সামান বাবা তো আজ তাড়াতাড়ি বেরিয়েছে তাই সবাই কে চলে যেতে বলেছে।”

আজরাহান ঘড়ি দেখে।সময়ের ঘড়ি দশটায় কড়া নাড়ছে।দাড়ায় না সে।পা বাড়ায় সামনে।মনে তার অজানা ঝড়।যা থামাতে চেয়েও পারছে না।মানুষ কেনো বদলে যায়??অতীত যদি ফিরে আসে??

আজরাহান মৃদু পায়ে কিছুদুর হেটে আসে।রাস্তার কোলাহল এখনো পরিপূর্ন।গাড়ি ছুটে চলছে আপন গতিতে সাথে মানুষ ও।আজরাহান এর পা অসাড়।না আর চলতে ইচ্ছে করছে না।রাস্তার পাশের যাত্রী ছাউনি তে বসে সে।মোবাইল বের করে দেখে প্রায় পোনে এগারো টা।নন্দিতার নাম্বার থেকে আসা মিসডকল শো করছে।টের পায়নি সে।মোবাইল সাইলেন্ট।হয়তো প্রহর করেছে।

সে সব ভুলে, কল করে সামান এর নাম্বার এ।ওপাশে রিং বেজে চলছে কিন্তু রিসিভ করছে না।

করবে কি করে !!অনৈতিক সম্পর্কের বেড়জালে জড়ানো দুই নরনারী একে অপরের মাঝে মত্ত হয়ে আছে।এতোটাই মত্ত যে মোবাইলের অনবরত আওয়াজ তাদের কর্নগহ্বরে সাড়া জাগাতে পারলো না।

সামান অনেক সময় ধরে অরিধার বাড়ির সামনে দাড়িয়েছিলো।অনেক বুঝিয়েছে তাকে কিন্তু লাভ হয়নি।অরিধার এক কথা যদি তাকে বিয়ে করে তাহলেই সে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাবে।এই মুহূর্তে সামান এর অন্য কিছুর আগ্রহ নেই।তার নেশা এখন অরিধার নরম তুলতুলে শরীরে।তাই বাধ্য হয়ে একমাসের সময় নেয়।আর তার ফলশ্রুতিতে আবার ও চলে তাদের রথিক্রিয়া।

আচ্ছা,,মানুষ কি সত্যিই অভ্যাসের দাস?????
,
,
ডোরবেল এর আওয়াজে ছুটে আসে প্রহর।দরজা খুলেই দেখতে পায় ঘামার্ত আর চিন্তিত আজরাহান কে।সে অনেকটাই বিধ্বস্ত।কপালের ঘাম বেয়ে পড়ছে ধীরে ধীরে তার চিবুক বেয়ে।লাল চোখ দুটো দিয়ে তাকায় প্রহর এর দিকে।

“রাহান ভাইয়া,কি হয়েছে আপনার???

“কিছু না।”

“তাহলে এমন কেনো দেখাচ্ছে আপনাকে???

হতাশা তার চোখে মুখে।হাতে থাকা জিনিসগুলো প্রহর এর হাতে দিয়ে বলে–

“তুই যা আমি আসছি।”

প্রহর ঠোঁটের কোনে হাসি তুলে।

নন্দিতার দরজায় গিয়ে দাড়ায় আজরাহান।জানে তার ভাই ফিরেনি এখনো।নক করতেই দরজা খুলে নন্দিতা।

আজরাহান কে দেখে হালকা চকিত হয়।ওর চেহারায় প্রশ্নচিহ্ন।

“ভাইয়া কোথায় জানো??

নন্দিতা ঠান্ডা গলায় বলে–

“ঘরে সানায়া আছে সাথে ওর স্বামী।বাবা, আম্মা তোমার জন্য কখন থেকে অপেক্ষা করছিলো।প্রহর কতোবার তোমাকে কল করলো ধরলে না।
এখন এইসব নিয়ে ঝামেলা করো না।পরে কথা হবে।তোমার ভাই আজ ফিরবে বলে মনে হয় না।প্রহর এখনো খায় নি।যাও ঘরে অনেক রাত হয়েছে।”

আজরাহান কথা বাড়ায় না।এতো ধৈর্যশীল কি করে হয় মানুষ।
ধৈর্য্যের আরেক নাম নারী।আল্লাহ বলেন–

“জেনে রাখ,আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে।”
—–সূরা বাকারা-২১৪।

হয়তো সে অপেক্ষায় আছে।
,
,
রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নেয় আজরাহান।বিছানায় গা এলিয়ে দেয়।কিঞ্চি এখনো চেয়ে আছে আজরাহান এর দিকে।

“তোকে না বলেছি দেরি হয়ে গেলে খেয়ে নিবি।”

“কোথায় ছিলেন আপনি??

“কাজ ছিলো।”

আজরাহান প্লেট হাতে নেয়।খাইয়ে দেয় প্রহর কে।

বিছানায় শুয়ে আছে আজরাহান।বিছানার পাশেই ঠোঁট উল্টিয়ে বসে আছে প্রহর।

“বসে আছিস কেনো,ঘুমাবি না??

“আপনি কিঞ্চি কে সরান।আমি আপনার বুকে শোবো।”

আজরাহান বালিসটা একটু উচু করে তাতে মাথা রাখে।কিঞ্চিকে বুকের উপর থেকে নিয়ে তার বিছানায় রাখে।কিঞ্চি ওর চার পা দিয়া আজরাহান শার্ট খামছে ধরে মিউ মিউ করে।প্রহর মুখ বাকিয়ে ভেঙচি কাটে।

“আয়।”

প্রহর সময় নষ্ট করে না।এক ঝাপে বুকে পড়ে আজরাহান এর।আজরাহান আজ শান্তু।বুকের ভিতর তার চিনচিনে ব্যথা।কেনো যেনো মনে হয় হারিয়ে যাচ্ছে কিছু ধীরে ধীরে তার জীবন থেকে।প্রহর কে আবদ্ধ করে নেয় তার বাহুবন্ধনেে।প্রহর নিশ্চল হয়ে পড়ে থাকে।

“এতো ভারী কেনো তুই??
মনে হচ্ছে ছোট খাটো হাতি।”

প্রহর দাতে চেপে আওয়াজ করে।মাথা উঠায় আজরাহান এর বুক থেকে।

“আমি হাতি তাই না??
তাহলে আপনার কিঞ্চিরানী কে নিয়েই থাকুন।যান এখান থেকে।

আজরাহান প্রহর কে হেচকা টানে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।ওর মাথা টা লাগিয়ে রাখে একদম ওর হৃদযন্ত্রের উপর।শক্ত করে আড়ষ্ট করে প্রহর কে।আর বলে–

” কোথায় যাবো তোমায় ছেড়ে??
তুমিহীন দীর্ঘশ্বাস এই হৃদয় জুড়ে।”

প্রহর মাথা উঠায়।আজরাহান এর বুকে চিবুক রেখে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।

“হাসিছ কেনো তুই??

“আমার ইচ্ছে।”

প্রহর খিলখিলিয়ে হাসে।মাথাটা শুয়ে দেয় ওর বুকের উপর।নিরবতা পুরো ঘর জুড়ে।আজরাহান এর শরীর শিরশির করছে।তার পৌরষসত্তা জেগে উঠছে প্রহর কে এতো কাছে পেয়ে।নারী দেহের উষ্ণতা পুরুষকে তার হিতাহিত জ্ঞান ভুলিয়ে দেয়।আর প্রহর তো তার বিবাহিত স্ত্রী।

আজরাহান এর ইচ্ছে হচ্ছে আজ প্রহর কে তার সত্ত্বার সাথে মিশিয়ে নিতে।কামুকতা ভর করেছে তার দেহপিঞ্জরে।অনেক চেষ্টা করে নিজেকে সামলিয়েছে এতোদিন।আজ তার ভালোবাসা তার প্রতিদান চাইছে।ইচ্ছে করছে ভাসিয়ে নিতে প্রহরকে তার ভালোবাসার সাগরে।

আজরাহান ধীরে ওর হাতটা প্রহর এর কোমড়ে রাখে।প্রহর এর হেলদোল নেই।সে অনুভব করছে তার রাহান ভাইয়া কে।

“রাহান ভাইয়া???

“হুম।”

“আপনার হার্টবিট এতো ফাস্ট কেনো??

“তুই আমাকে ছুইয়েছিস তাই।”

“কেনো??
আমি কি টর্নেডো???

“না।ভুমিকম্প।”

আজরাহান আরেকটু চেপে ধরে প্রহর কে।প্রহর কোনো প্রতিক্রিয়া করে না।তার রাহান ভাইয়ার স্পর্শ তাকে কোনো কিছু ভাবতে দেয় না।

না,আর সম্ভব না।নিজেকে সে সংযত করবে।তার প্রহরিনী কে সে অপবিত্র করবে না।কামনা দিয়ে নয় ভালোবাসা দিয়ে সে তার প্রহরিনী নিজের করে নিবে।ছোটবেলা থেকে আজরাহান ছাড়া অন্য পুরুষের সান্নিধ্য তেমন পায় নি প্রহর।এ বাড়িতে আসার পর তার বন্ধু হোক আর শত্রু সবই তার রাহান ভাইয়া।আজরাহান এর স্পর্শে প্রহর কখনো কামনা খুজে পায় না।সে অনুভব করে তার রাহান ভাইয়ার পবিত্র স্পর্শ যা তাকে নিরঙ্কুশভাবে সকল প্রতিকুলতা থেকে আগলে রাখে।আজরাহান এর স্পর্শ ওকে কখনো ভাবায় না।

আজরাহান চায় প্রহর ওকে বুঝুক সেভাবে যেভাবে ও তাকে চায়।স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে ভালোবাসার মাঝে যে মোহ থাকে তা প্রহর এর অজানা।তার কাছে ভালোলাগাই ভালোবাসা।

আজরাহান ওকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে পাশে শোয়ায়।ওর উপর হালকা ভর ছেড়ে বলে—

“ঘুমা।অনেক রাত হয়েছে।”

“নামালেন কেনো আমাকে??

আজরাহান ওর গালে গাল ঘষে বলে—

“তোর গালগুলো একদম গোলাপজামুন এর মতো।একদিন আমি খেয়ে দেখবো।”

“আর???

“আর তোকেও।”

প্রহর কি বুঝেছে জানে না।কিছু বলে নি সে।আজরাহান ওকে ছেড়ে পাশ ফিরে শোয়।তার দ্বারা এরচেয়ে বেশি সম্ভব নয়।কবে বুঝবে তাকে তার প্রহরিনী??তার স্পর্শে কবে খুজবে ভালোবাসা??

ভালোবাসা উড়ো চিঠির মতো।উড়ে তো এসে পড়ে কিন্তু তার প্রাপক আদৌ তার জবাব দিতে পারবে কি না ভালোবাসা তা জানে না।
ভালোবাসা চাঁদের মতো।কখনো কারো উঠোন জুড়ে পূর্নিমার জোসনা বিলাস করে আবার কারো উঠোন জুড়ে অমাবস্যার কালো আঁধার ছেয়ে দেয়।

ভালোবাসা সত্যিই অদ্ভুত।তাইতো যুগে যুগে এতো কবি,সাহিত্যিক,ঔপন্যাসিক ভালোবাসা নিয়ে এতো এতো কবিতা,গল্প, উপন্যাস লিখেছেন কিন্তু আজ পর্যন্ত ভালোবাসার সংজ্ঞা কেউ দিতে পারে নি।
,
,
,
ঘুট ঘুটে অন্ধকার ঘরের চেয়ারের উপর বসে আছে মারশিয়াদ।ঘাম ঝড়ছে দরদর করে।এক হাত উঠিয়ে রেখেছে চেয়ারের হাতল এর উপর।তা থেকে টুপ টুপ করে রক্ত পড়ছে।এক পা চেয়ারের সাথে লাগোয়া অন্য পা সামনে বাড়িয়ে রেখেছে।চোখের দৃষ্টি ক্রুর।অন্য হাতে মোবাইল নিয়ে কথা বলছে সে।

“বল কি বলবি??

“কোথায় তুই??

“বাসায়।”

“একদম মিথ্যে বলবি না।”

মারশিয়াদ হালকা শব্দে হাসে।

“তাহলে জিঙ্গেস করলি কেনো।”

“তুই আবার শুরু করেছিস??

“আমি করি নি।ওরা করেছে।এইবার আমি শেষ করবো।”

“তুই বলেছিলি ছেড়ে দিবি।”

“বলেছিলাম।কিন্তু তাকে তো আমি পাইনি তাহলে নিজেকে বদলে কি করবো।মারশিয়াদ নিজের রুপে ফিরে যাবে।”

“ওরা যদি প্রহর এর কথা জানতে পারে????

“আমার কাজলচোখীর দিকে যে হাত বাড়াবে ওকে আমি জ্যান্ত পুতে ফেলবো।”

শিহরণ কে আর কিছু বলার সুযোগ দেয় নি।লাইন টা কেটে দেয়।

মারশিয়াদ থেকে কয়েকহাত দুরে পড়ে আছে একটা লাশ।সমস্ত শরীরে রক্তে রঞ্জিত।গলায় একটু আগেই ছুড়ি চালিয়েছে মারশিয়াদ।চেয়ারে বসেই হাতে থাকা গান দিয়ে আবার শুট করে।যা গিয়ে লাগে একদম লাশটির হৃদপিন্ডে।কোনো শব্দ হয়নি।শুধু নিথর লাশটি দুবার কেপে উঠে।

“আমি বলেছি আমার পিছু নিবি না।শুনিস নি তোরা।সেদিন আমার কাজলচোখীর জন্য অরল্যান্ডো কে আমি ছেড়ে দিয়েছি।কিন্তু শালা ইংরেজ এর বাচ্চা।ওর মৃত্যু আমার হাতেই।যেদিন ও আমার সামনে আসবে সেদিন ওর জীবনের শেষ সূর্যোদোয় হবে।”

চলবে,,,

(বিঃদ্রঃ আচ্ছা ভালোবাসা অন্যায়??না তো।তাহলে??
আমি বার বার বলেছি মারশিয়াদ ভিলেন নয়।নেগেটিভ রোল।আর ও এখন পর্যন্ত এমন কিছুই করেনি।তারপর অনেকের কাছে তার চরিত্র পছন্দ না।সমস্যা নেই।কমেন্টস বক্স পাঠকদের জন্যই।তার অভিমত প্রকাশ করবে।সবার এক জিনিস ভালো লাগতে হবে তা না।

আজরাহান এর চরিত্র পছন্দ হওয়ার কারন??
তার ব্যক্তিত্ব।ওকে ফাইন।আমি ইচ্ছে করলেই চরিত্র চেঞ্জ করতে পারি।ঠিক??

তাহলে আপনার কেনো অন্যের কমেন্টেসে গিয়ে হা হা দিবেন।যখন পছন্দ হবে না।যুক্তি দেখাবেন।তারও ভালো লাগবে।হা হা রিয়েক্ট মানে তাকে অবহেলা করা।আশা করি কেউ আর এমন করবেন না।

মানুষের চরিত্র আয়নার মতো।আপনি যতটুকু তাকে দেখাবেন ঠিক ততটুকুই সে প্রতিফলিত করবে।ধন্যবাদ।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here