অদ্ভুত প্রেমোমোহ তুমি পর্বঃ৩১

0
2012

#অদ্ভুত_প্রেমোমোহ_তুমি
#পর্বঃ৩১
✍️ তাজরিয়ান খান তানভি

অতীত হলো মানুষের জীবনের একটা কালো অধ্যায়।মানুষ চাইলেও তাতে লিখা তার অতীত মুছে ফেলতে পারে না।

নন্দিতা যখন কলেজে পড়তো তখন ওদের কলেজে ওর চেয়ে দুই বছরের সিনিয়র ইফতি নামে একটা ছেলে ওকে রোজ যাওয়া আসার পথে টিজ করতো।ছেলেটা ওকে পছন্দ করতো।কিন্তু ইফতি ছিলো ড্রাগ এডিক্টেড।ইফতি কে অনেক বার মানা করার পরও সে তার বন্ধুদের নিয়ে রাস্তায়,কলেজে যেখানেই সুযোগ পেতো নন্দিতাকে হয়রানি করতো।একদিন কলেজে ঢুকার সময় ইফতি নন্দিতার ওড়না টেনে ধরে।নন্দিতা তার কোন বন্ধুর সাথে ঘুরতে গিয়ছিলো তাই ইফতি নন্দিতার উপর ভীষন ক্ষেপে যায়।এরপর নন্দিতা প্রিন্সিপ্যাল এর কাছে কমপ্লেইন করলে ইফতি কে কয়েকবার ওয়ার্নিং দেওয়া হয়।কিন্তু তাতেও কাজ না হলে তাকে কলেজ থেকে রেস্টিকেট করা হয়।এরপর ইফতি আরও হিংস্র হয়ে উঠে।একদিন নেশার ঘোরে নন্দিতাদের বাসায় গিয়ে ওর সাথে অসভ্যতার চেষ্টা করে।নন্দিতার বাবা এবং আশেপাশের মানুষ ওকে ধরে পুলিশে দিয়ে দেয়।ইফতির বাবা মা অনেক কান্নাকাটি করে নন্দিতার পরিবারের সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে ওকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনে।আর ওকে রিহ্যাব সেন্টার এ পাঠায়।

রিহ্যার থেকে আসার পর কিছুদিন ভালোই থাকে।কিন্তু দুবছর আগে যখন একদিন নন্দিতাকে সামান এর সাথে দেখে তখন ওর রাগ আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠে।

সামানের সাথে কথা বলার পর মারশিয়াদ অরিধার খোজ খবর নেওয়া শুরু করে।যেখানে অরিধা থাকতো তার আশেপাশের মানুষ জানায় প্রায়ই একটা ছেলে ওর কাছে আসতো।মারশিয়াদ সেই ছেলেকে খুজে বের করে।সে আর কেউ নয় ইফতি ছিলো।নন্দিতার উপর বদলা নিতে সে অরিধাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে।অরিধা ছিলো একটা ব্রোথেল গার্ল।ইফতি মোটা অঙ্কের টাকায় অরিধা কে কিনে আনে।তারপর সামানের পিছনে লাগিয়ে দেয়।মারশিয়াদ ওদের বাড়ি গেলে ইফতি প্রথমে কিছুই স্বীকার করে না।বাধ্য হয়ে মারশিয়াদ কে তার অবাধ্য রুপ দেখাতে হয়।

ইফতির দু হাত বেধে ওকে ফ্লোরে শুইয়ে রাখে।পিঠের উপর নিজের দুই হাটু রেখে বলে—

“তুই যদি চাস তোকে আমি একদম স্নিগ্ধ মৃত্যু দিতে পারি।তোর একটুও কষ্ট হবে না।”

মারশিয়াদ ওর এক হাত দিয়ে ছুরি ধরে রাখে ইফতি গলার মাঝ বরাবর।

ইফতির বাবা চিৎকার করে বলে—

“এই ছেলে,ছাড়ো আমার ছেলেকে।আমি এখনই পুলিশ কে কল করছি।”

“আমিও তো তাই চাই।করেন কল।”

ইফতির মা ভয়ে কেঁদে উঠে।

“বাবা,আমার ছেলে কে ছেড়ে দাও।ওকে কিছু করো না।”

“খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না!!
সাবারই কষ্ট হয় নিজের সন্তানের জন্য।আপনার এই ছেলের অপকর্মের জন্য এক মা মরতে বসেছে।এক বোন তার ভাই এর চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারে না।এক বাবা তার আদর্শ ছেলের কপালে খুনির কালিমা দেখেছে।এক স্ত্রী তার স্বামীর পথচেয়ে বিনিদ্র রজনী বসে থাকে।”

মারশিয়াদ উঠে দাড়িয়ে দু টো লাথি মারে ইফতির পিঠের উপর।আবার বসে ওর চুল মুঠ বন্ধ করে বলে–

“যদি কোর্টে গিয়ে সত্য বলিস,তাহলে হয়তো আরও কিছুদিন বাঁচতে পারবি আর না হলে আজই,,,,,

মারশিয়াদ ওর হাতের ছুরি দিয়ে হালকা টান মারে ইফতির গলায়।

ইফতির বাবা মা আর্ত চিৎকার দিয়ে উঠে।

“ও সত্যি বলবে।
ওকে আর মেরো না।মেরো না ওকে।”

“ওকে।চল আমার সাথে।”

মারশিয়াদ ইফতি কে কোর্টে নিয়ে যায়।সেদিন অরিধা যখন ইফতি কে বলে সামান ওকে ছেড়ে নন্দিতার কাছে ফিরে যেতে চায় তখন ওর মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়।ওর এতোদিনের সব প্ল্যান এইভাবে নষ্ট হতে পারে না।তাই ও অরিধা কে দিয়ে সামান কে কল করাই ইমিডিয়েটলি হোটেলে আসার জন্য।সামান আসার আগেই ইফতি অরিধা কে খুন করে সেখান থেকে চলে যায়।যাওয়ার আগে রুম সার্ভিস কে কল করে যায় যেনো এক ঘন্টা পর সে খাবার নিয়ে রুমে আসে।ইফতি ভেবেছিলো সামান আসতে সময় লাগবে।কিন্তু কোনো একটা কাজে সামান হোটেলের কাছাকাছি কোথাও ছিলো।তাই ওর আস্তে তেমন সময় লাগে নি।সামান এসে অরিধার এই অবস্থা দেখে উপায়ন্তর না পেয়ে আজরাহান কে কল করে।

“তো এখন বুঝতে পারলেন তো,দ্যা গ্রেট আজরাহান কারীম কি করে ফাঁসলো এই মার্ডার কেসে!!!

শিহরণ আর নন্দিতা অবাক হয়ে যায়।এতো কিছু হয়ে গেলো আর ওরা কিছুই জানতে পারলো না।

“তুই এতো কিছু করলি,একবার আমাকে জানালিও না??

“একদম সময় ছিলো না।আমি প্রথম দিনই বুঝতে পেরেছি আজরাহান এর মতো ছেলে এ কাজ কখনো করতে পারে না।”

মারশিয়াদ চার দিন পাগলা ঘোড়ার মতো দৌড়ে বেরিয়েছে শুধু আজরাহান কে জেল থেকে বের করার জন্য।এমনকি শিহরণ কেও কিছু জানাই নি।

“তোমার এই ঋন আমি কখনো শোধ করতে পারবো না ভাই।”

“ভাই বলছেন আমার ঋনও বলছেন!!
ভাইয়ের কাছে বোন কখনো ঋনী হতে পারে না।”

“বাঁচালে তুমি আমাকে।আজরাহান এর কিছু হলে আমি নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারতাম না।”

“আমার ঋন তো আপনাকে শোধ করতে হবে।”

“কি করতে পারি তোমার জন্য??

“যদি বলি আমাকে আপনার ছোট ভাই বানাবেন।”

নন্দিতা হেসে উঠে।

“তা কি আর বলতে।”

“এখন তো আমার নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হয়।দুই দুইটা বোন বিনা পয়সায় পেয়ে গেলাম।”

মারশিয়াদ গা দুলিয়ে হেসে উঠে।

“পাগল ছেলে!!
এখন তাহলে আসি আমি।”

নন্দিতা উঠে দাড়ায়।ওরা একটা ক্যাফেটেরিয়াতে বসে কথা বলছিলো।

“আমি আপনাকে পৌছে দিচ্ছি।”

“লাগবেনা ভাই।আমি একাই যেতে পারবো।”

“ভাই ডেকেছেন।ভাই হয়ে কী করে একা ছেড়ে দেই এই শিয়াল কুকুরের আস্তাকুড়ে!!

শিহরণ এক হতাশাদায়ক শ্বাস ছাড়ে।

“ঠিক বলেছিস।স্বাধীন দেশের পরাধীন সৈনিক আমরা।এখন তো বাবার সাথে মেয়ে,ভাইয়ের সাথে বোন এমনকি স্বামীর সাথেও স্ত্রী সেইফ না।হিংস্র হায়েনারা সব সময় ওট পেতে থাকে কখন খুবলে খাবে কার মা,বোনকে।”

“হে জাতীর পিতা,কার জন্য এনেছিলে স্বাধীনতা?
কাকে বানিয়েছিলে ধরনীর সম্মান
বিবস্ত্র নারীর আহাজারি আজ,কেনো শুনতে পায় না তাদের কান।
কেনো ধরনীর বুকে এই বর্বরতা,কেনো এই হিংস্রতা??
বোকা মেয়ের গর্ভেই তো একদিন জন্মেছে জাতীর পিতা।
কেনো পারি না দিতে সম্মান তাকে,কেনো বাঁচার অধিকার??
নারী হয়ে জন্মানোই কী তাদের আজন্ম পাপাচার???

“চলুন আপু।”

“হুম।”
,
,
,
বিছানার উপর বসে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে ইনশিরাহ তার সেই প্রতিক্ষিত পেইন্টিং এর দিকে।আজ সকালেই পার্সেল করে পাঠিয়েছে মারশিয়াদ তার প্রানের চেয়ে প্রিয় সেই কাজলচোখী পেইন্টিং।

ওসনিয়াত এসে দেখে সেই সকাল থেকে নিজের ঘরেই বসে আছে ইনশিরাহ।খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে।

“প্রিন্সেস,,খাবে না??

ইনশিরাহ এক গাল হেসে বিছানা থেকে উঠে ওসনিয়াত এর সামনে পেইন্টিং টা ধরে।

“দেখো না আয়া মা,মারশিয়াদ আমাকে কী পাঠিয়েছে!!
তোমাকে বলেছিলাম না ওর কাজলচোখী পেইন্টিং এর কথা।আজও এইটা আমার জন্য পাঠিয়েছে।”

“বাহ!!!
বেশ সুন্দর তো!

“সাথে চিরকুট ও দিয়েছে।তাতে লিখা–

“আমি আমার বন্ধুত্বের প্রথম উপহার তোমাকে দিলাম আশা করি তুমি তার মান রাখবে।”

“বন্ধুত্বের মানে??
ও তোমাকে ভালোবাসে না??

ইনশিরাহ এর চোখে মুখে একরাশ অভিমান জড়ো হয়।ঠোঁট দুটো ফুলিয়ে বলে—

“নাহ।ও আমাকে এখনো ভালোবাসে না।জানি না ওই মেয়ের মধ্যে এমন কি পেয়েছে।”

“ওই মেয়ে তো বিবাহিত??

“হ্যাঁ।
তারপরও ও ওই মেয়েকে ভুলতে পারে না।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে ওই মেয়েকে গলা টিপে মেরে ফেলি।ওর সাহস কি করে হলো আমার মারশিয়াদ কে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার!!!

“এইসব বলে না প্রিন্সেস।ভালোবাসা জোর করে পাওয়ার জিনিষ নয়।তাকে অনুভব করতে হয়।বুজতে হয়।”

“মারশিয়াদ আমাকে সে সুযোগ দিচ্ছে না আয়া মা।কি করবো আমি??

“কে বলল দিচ্ছে না।বন্ধুত্ব হলো ভালোবাসার প্রথম সিড়ি প্রিন্সেস।একবার তাতে পা বাড়ালে গন্তব্যে তাকে পৌছাতেই হবে।”

“তাহলে তুমি বলছো ও আমাকে ভালোবাসবে??

“অবশ্যই।”

“আর যদি না বাসে!!!
তাহলে কিন্তু ওই মেয়েকে আমি সত্যিই খুন করে ফেলবো।আমার মারশিয়াদ এর হৃদয়ে শুধু আমার নাম থাকবে।”

“আচ্ছা সে দেখা যাবে।
এখন বলো আজও কী তুমি,,,,

ইনশিরাহ ওসনিয়াত কে টেনে নিয়ে ও কাভার্ড এর ড্রয়ার দেখায়।সম্পূর্ন ড্রয়ার খালি।

“মারশিয়াদ আমাকে কথা দিয়েছে ও সবসময় আমার সাথে থাকবে।তাই আমি ওকে বলেছি তাহলে আমি আর ড্রাগস নিবো না।”

বলেই নিজের অধর প্রসারিত করে ইনশিরাহ।ঝাপটে ধরে ওসনিয়াত কে।

“আমি ওকে খুব ভালোবাসি আয়া মা।খুব ভালোবাসি।দেখো,ও আমাকে ভালোবাসলে আমি একদম ভালো হয়ে যাবো।আর কোনো পাগলামি করবো না।”

ওসনিয়াত তৃপ্তির হাসি হাসে।এইবার যদি মেয়েটা একটু সুখের দেখা পায়!!
,
,
,

খাবার টেবিলে আশফিক এর বলা জোকস এ হেসেই অস্থির শিহরণ।মারশিয়াদ ওদের কথার ফাঁকে ফাঁকে হালকা হাসে আর গপ করে এক লোকমা মুখে দেয়।
মারশিয়াদ এর বিপরীত দিকেই বসা আজরাহান।পাশেই দাঁড়িয়ে আছে প্রহর।মারশিয়াদ তার অবাধ্য নয়নকে প্রতিহত করেছে অনেক আগেই।সামানও বসেছে তাদের সাথে খাবার টেবিলে।কিন্তু খাবার গলা দিয়ে নামছে না।অনেক চেষ্টা করেছে নন্দিতাকে মানানোর কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।এখন তার একমাত্র ভরসা আজরাহান।

আজরাহান ফিরে আসায় নন্দিতা মারশিয়াদ কে আজ লাঞ্চের জন্য ইনভাইট করেছে।সাথে তাদের মধ্যে যে নতুন সম্পর্ক হলো তার জন্যও।

“আপনার হাতের রান্নার কিন্তু জবাব নেই আপু।প্রশংসা না করে পারলাম না।জাস্ট আমেজিং।”

নন্দিতা ছোট্ট করে হেসে বলে–

“তাহলে তো প্রহর এর প্রশংসা করতে হয়।কারন আজকের সব রান্না ও নিজের হাতে করেছে।”

এক নিমিশে মারশিয়াদ এর রৌদ্রদীপ্ত চেহারা মেঘে ঢাকা আকাশ হয়ে যায়।

“সরি।”

আজরাহান হালকা অধর প্রসারিত করে বলে–

“সরি কেনো??

“সবার সব অধিকার থাকে না।”

আজরাহান গভীর দৃষ্টি দেয় মারশিয়াদ এর দিকে।দু জন পুরুষ এক নারীতে মত্ত।তবুও তাদের মধ্যে বেজায় তফাৎ।কেই চায় তো কেউ পায়।ভাগ্যের খেলা শুধু উপর ওয়ালার হাতে।তিনিই সর্বদ্রষ্টা।

মারশিয়াদ আবার নিজের খাওয়ায় মনোযোগ দেয়।

আজরাহান ওর ঘাড় ঘুরিয়ে প্রহর এর দিকে তাকায়।প্রহর সেখান থেকে সরে আসে।আজরাহান আবার সোজা হয়ে তাকাতেই ওর চোখ যায় দরজার দিকে।যখন থেকে ও ফিরেছে নুরাইসা একবারও ওর সাথে কথা বলে নি।কাউকে বিদায় জানাচ্ছে নুরাইসা।আজরাহান হাত ধুয়ে উঠে আসে। নুরাইসার হাত ধরে ওকে বাইরে নিয়ে আসে।

“কোথায় ছিলে তুমি??

“তা দিয়ে তোমার কি দরকার??

“ওই ছেলেটা কে??

“তা আমি তোমাকে বলতে বাধ্য নই।”

“আমার উপর রাগ করে নিজের কোনো ক্ষতি করবে না, নুরাজান।”

“আমাকে নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না।আমি নিজেকে সামলে নিবো।”

“তাহলে কেনো যাচ্ছো না এখান থেকে??

“তোমাকে না দেখে থাকতে পারবো না তাই।”

নুরাইসা ওকে পাশ কাটিয়ে ভিতরে চলে যায়।সেদিকে তাকাতেই দেখে মারশিয়াদ দরজার সাথে হেলান দিয়ে এক পায়ের গোড়ালির উপর অন্য পা দিয়ে দাড়িয়ে আছে।

মুখে হাসি ফুটিয়ে বলে–

“কেউ চেয়েও পায় না আর কেউ পেয়েও চায় না।অদ্ভুত !!

আজরাহান ওর কথায় কোনো প্রতিক্রিয়া করে না।গার্ডেনের দিকে পা বাড়ায়।মারশিয়াদ ও পিছু যায়।

আজরাহান গন্ধরাজ গাছের সামনে গিয়ে দাড়ায়।

“তোমার বাবা কে বলবে আমাকেও যেনো একটা গন্ধরাজ গাছ এনে দেয়।ঠিক এমনটা।”

“এমনটাই কেনো??

“বড় অদ্ভুত গন্ধরাজ গাছ!!!মাত্র দুই তিনটা ফুল ই তো ফুটেছে।তাতেই পুরো বাড়ি সুগন্ধে মাতিয়ে ফেলেছে।”

“প্রহর এর গন্ধরাজ খুব প্রিয়।”

“জানি।মিষ্টি বলেছে।”

আজরাহান মারশিয়াদ এর মুখোমুখি দাড়ায়।হাইটের দিকে দুজন প্রায় সমান।বডিতেও কিন্তু মারশিয়াদ যেহেতু একটু স্বাস্থ্য সচেতন তাই ওর চেয়ে ফিট সে।

দুজনের চোখে অদ্ভুত চাহনি।যেনো তাদের অব্যক্ত কথাগুলো চোখের ইশারায় প্রতিফলিত হয়।

“আমার জন্য এতোকিছু করার কারণ??

“আমি কি কখনো তোমাকে জিঙ্গেস করেছি কাজলচোখী তোমাকে কেনো ভালোবাসে??

“তার উত্তর তুমি কখনো পাবে না।”

“আমি খুজিনি তার উত্তর।”

আজরাহান শুষ্ক কন্ঠে বলে—

“আমি বেঁচে থাকতে সে তোমার কখনো হবে না।”

“আমি কেড়ে নিতে জানি।কিন্তু প্রিয় মানুষ হারানোর যন্ত্রণা আমার চেয়ে বেশি কেউ জানে না”।

মারশিয়াদ দূর আকাশের দিকে তাকায়।

“আমি চাই সে ভালো থাকুক।
তুমি তার পাশে থাকলেই সে ভালো থাকবে।”

“তুমি ভালো আছো??

“আমিও ভালো আছি।
ছন্নছাড়া মারশিয়াদ আজ একটা পরিবার পেয়েছে।”

আজরাহান চোখে হাসে।তার মুখে তৃপ্ততা।

এর মধ্যেই সেখানে আশে আশফিক শিহরণ।
মারশিয়াদ দুটো কার্ড বের করে।একটা আজরাহান কে আরেকটা শিহরণ কে দেয়।

“তোর আর আজরাহান এর নামে হানিমুন সুইট বুক করেছি।আজ রাতের জন্য।
এইটা আমার পক্ষ থেকে বিয়ের উপহার।”

শিহরণ একটু লজ্জা পায়।কারন পাশেই আশফিক দাড়ানো।আজরাহান এখনো তাকিয়ে মারশিয়াদ কে দেখে।
নির্লিপ্ত হাসি তার অধরে।গভীর তার চিন্তা।ভাগ্য বদলায়,সত্যিই বদলায়।

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here