অপরাধী পর্ব-৬

0
1357

#অপরাধী
#লেখক_অন্তর
পর্ব_৬
,
,
,
সিরির দিকে তাকিয়ে তো আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো,কারন মেয়েটাকে আমি চিনি, মেয়েটার নাম হচ্ছে মুন্নি।আর সবচেয়ে ভয়ের কথা হলো সেও আমাকে চিনে। মুন্নিকে আসতে দেখেই আমি সাথে সাথে মাথা নিচু করে বসে আছি।তবে আড়াল চোখে আমি দেখতে লাগলাম মুন্নিও সোজা টেবিলে এসে বসে আর সে বস্তেই তাকে নাস্তা দেওয়া হয় আর আমিও চুপচাপ মাথা নিচু করে খেতে লাগি।

–কিরে এতো লেট কেন??দেখিস নাই বাসায় মেহমান আসছে!(সৌরভ)

–সরি ভাইয়া, আসলে একটা কল আসছিলো কলেজ থেকে তাই কথা বলতেছিলাম তাই লেট হইছে, (মুন্নি)

–মুন্নি মা, তোমার পড়া শুনা কেমন চলছে! (মামা)

–এই তো আংকেল ভালোই চলতেছে, (মুন্নি)

–যাক শুনে খুশি হলাম,ও ভালো কথা মুন্নি আমাদের সাথে নতুন একজন আসছে, পরিচয় করিয়ে দি!ঐযে বসে আছো দেখছো না, সে হচ্ছে আমার দূর সম্পকের ভাগিনা,কিরে মাথা নামিয়ি রাখছিস কেন??মাথা উঠা(মামা)

কি করবো ভেবে পাচ্ছি না আমি,এমন এক পরিস্থিতির শিকার হবো তা আমি জানতাম না,আর আমার ও খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো গলা দিয়ে খাবার আর নামছে না, আমি যতো চাইছি পরিচিতদের কাছ থেকে আড়ালে থাকবো ভাগ্য কিন্তু আমাকে সকলের সামনে প্রকাশ করতেই লাগলো।আমিও মাথা উঠালাম মাথা উঠাতেই মুন্নির চেহারাটা দেখলাম, সেও আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। হয়তো আমাকে দেখে মানে এদের সাথে দেখেই অবাক হলো।

–মুন্নি মা এই হচ্ছে আমার একটা ভাগিনা অন্তর!আর অন্তর এই হচ্ছে মুন্নি আমার দোস্ত মুনসুর এর মেয়ে।

–আসসালামুয়ালাইকুম!ভালো আছেন!(আমি কাপা কাপা গলায়)

–জি ওয়ালাইকুমসালাম,আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি,আপনি কেমন আছেন(মুন্নি)

–জী আমিও ভালো আছি!

–আচ্ছা এবার খাওয়া দাওয়া করো, এরপর কথাবার্তা বলিও,(আংকেল)

সকলে নাস্তা খেতে লাগলো কিন্তু আমি খাবার খেতে পারতেছি না মানে নাস্তা আমার গলা দিয়েই নামছে না বার বার আড়াল চোখে আমি মুন্নিকে দেখছি সেও আমার দিকে অবাক চোখেই তাকিয়ে আছে।কিন্তু আমাকে যে চিনে তা কেউকে বুঝতেই দিচ্ছে না, কোনো প্রকার রিয়েক্ট ও করতেছে না সে।আমার আর নাস্তা করাই সেই ইচ্ছাটুকু নেই কারন খেতে চাচ্ছি কিন্তু গলা দিয়ে নাস্তা নামছে না। তাই আমিও আর খাচ্ছি না নাস্তা সামনে নিয়ে বসে আছি।

–কিরে খাচ্ছিস না কেন??কোনো সমস্যা??(মামা)

–না, তেমন কিছু না এমনেই আর খেতে ইচ্ছা করতেছে না! (আমি)

–এই জন্যই তো না খেয়ে খেয়ে নিজের কি হাল করে রাখছে, কিরে মানিক তো ভাগিনা এমন কেন রে??(আংকেল)

–আরে আর বলিস না, এটা এমনি! খাওয়া দাওয়া না খেয়ে শরীরের কি হাল করে রাখছে দেখিস না!(মামা)

–আচ্ছা মামা তোমরা নাস্তা করো আমি গেলাম রুমে।(আমি)

–কেন ভাই,আমাদের ভালো লাগতেছে না (সৌরভ)

–না ভাই,আসলে আমার মোবাইলটা একটু লাগবে আর সেটা রুমে আছে তো সেটাই নিতে যাচ্ছি!(আমি)

–ওহ আচ্ছা, মোবাইল নিয়ে নাও,এরপর আমরা বের হবো, তোমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবো আমাদের এলাকায়!(সৌরভ)

কথাটা শুনেই প্রচুর হাসি পাচ্ছিলো কিন্তু হাসি অনেক কষ্ট করে চিপে ধরে রাখছি!সে আমাকে এই এলাকায় ঘুরাবে,অথচ সে জানেই না এই এলাকার অলিগলি আমার চেনা!তারপরেও কোনো রিয়েক্ট করলাম না আমি।

–ঠিক আছে ভাই,আমি গিয়ে মোবাইল নিয়ে আসি!(আমি)

বলেই রুমে চলে গেলাম, সেখানে গিয়ে আমি মোবাইল নিলাম আর সোজা তানভিরকে কল দিলাম, জানি না মামা এখানে আসার খবর তানভিরকে দিছে কিনা!তবুও আমার বলাটা দরকার!আমিও মোবাইল হাতে নিয়ে তানভিরকে কল দিলাম।আর সেও রিসিব করলো!

–কিরে মামা কি অবস্থা!(তানভির)

–এই তো দোস্ত,আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি, তোর কি অবস্থা!(আমি)

–এই তো বিন্দাস আছি,তো কি করিস??নাস্তা করছিস??(তানভির)

–আধা নাস্তা করছি,(আমি)

–কেন দোস্ত!(তানভির)

–তুই জানোস আমি কোথায় আছি???(আমি)

–কোথায় আবার ঢাকায়!(তানভির),

–আমি চট্টগ্রামে আছি দোস্ত,আমি জানি তুই কথাটা শুনেই অবাক হবি তবে এটাতেই অবাক হয়ে লাভ নাই এর চেয়েও বড় অবাকর কথা আছে!(আমি)

–মানে!আর সালা তুই চট্টগ্রামে কবে আসছিস!আর কোথায় আছিস চট্টগ্রামে তুই!(তানভির অবাক হয়ে)

–আরে মামা শোন সেটাই তো বলতেছি, আমি চট্টগ্রামে এমন এক জায়গায় আছি যে এলাকায় আমি আর কোনো দিনো আসতে চাই নাই!(আমি)

–তার মানে তুই!মানে সেই জায়গায় আবারো ফিরলি!কিন্তু তুই তো বলছিলি এই জায়গায় আর আসবি না তাহলে!(তানভির অবাক হয়ে)

–দোস্ত,আমি তো আসতেই চাই না কিন্তু সালার কপালে আমাকে এখানে টেনে নিয়ে আসলো!(আমি)

এরপর তানভিরকে আমার এখানে আসার সকল কথা বলি!

–দোস্ত,এখন কি করবি!(তানভির)

–জানি নারে ভাই!তবে চাইতেছি সকলের থেকে আড়ালে থাকতে, কিন্তু দোস্ত আমার কপালটা এতোটাই পোড়া যে বাড়িতে আসলাম সেই বাড়ির একজন আমার পরিচিত মানে সে আমাকে ও আমিও তাকে চিনি!(আমি)

–কে সে??(তানভির)

–তোরে মুন্নির কথা বলছিলাম না! সে!(আমি)

— মুন্নি!এক মিনিট এটা মায়ার বেষ্টি সেই মুন্নি না! (তানভির)

–হ্যা দোস্ত,মায়ার বেষ্টি মুন্নি,আর আমরা বর্তমানে তারই বাড়িতে আছি,মুন্নির ভাই সৌরভের বিয়েতে আসলাম আমরা!আর কে জানতো মুন্নির বাবা মামার বন্ধু হবে, আর কেই বা জানতো যে মামারা এই শহরে এই এলাকায়ই আসবে! দোস্ত ভালো ভাবেই ফেসে গেছি এখন যদি সে মায়াকে বলে দেয় যে আমি এখানে আসছি তাহলে আমার জন্য বেপারটা মোটেও ভালো হবে না।দোস্ত এখন আমি কি করতাম না পারবো এখান থেকে পালাইতে না পারবো তাদের থেকে দূরে থাকতে না, এক এক করেই সকলেই আমার সামনে আসতেছে, (আমি)

আমরা কথা বলতেছি তখনি আমার রুমের দরজায় কেউ একজন নক করলো!

–দোস্ত আমি পরে কথা বলবো, কেউ একজন আমার রুমের দরজা নক করলো!খোদাহাফেজ ভালো থাকিস!(আমি)

–হ্যা তুইও ভালো থাকিস দোস্ত,আল্লাহ হাফেজ।(তানভির)

বলেই কল কেটে দিলো আর আমিও মোবাইল পকেটে নিয়ে দরজার কাছে যেতে লাগি, হয়তো মামা মামী বা রিদিকা আসতে পারে তাই আমিও গিয়ে দরজাটা খুলে দেই,দরজা খুলেও আমি দরজার দিকে দেখেই নিমিশেই সক খেয়ে গেলাম কারন মনে করছিলাম হয়তো মামা মামী নাহলে রিদিকা আসলেও আসতে পারে কিন্তু আমার ধারনা ভুল, তাদের মধ্যে একজনেও না বরং মুন্নি আসছে! আমি পূরাই থ হয়ে গেলাম তাকে দেখে।

–আমি কি রুমে আসতে পারি??না মানে আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে! (মুন্নি)

আমি জানি না সে আমাকে কি বলবে বা কি জিজ্ঞেসা করবে,, আমি পূরাই হস্তদম্ভ হয়ে গেলাম!

–জি,(আমি আসেপাশে দেখতে লাগলাম, কারন দেখছি যাতে কেউ আমাদের দেখছে কিনা!)

–চিন্তা করিয়েন না, কেউই নেই!সবাই হল রুমে ব্যস্থ!(মুন্নি)

এরপর সেও ভিতরে আসলো আর এসেই সাথে সাথে দরজা লক করে দিলো। মুন্নির দরজার লক করা দেখে আমার মনে ভয় কাজ করতে লাগলো,

–দ দ দরজা লক করছো কেন!এবার কি!(আমি কাপা কাপা গলায়)

–দেখেন ভাইয়া আমি জানি আপনি কি মনে করতেছেন কিন্তু ভাইয়া ভয় পাইয়েন না আমি কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে দরজা বন্ধ করি নাই,!আমি দরজা লক করার কারন হচ্ছে যেন কেন হুট করে রুমে ডুকে না পরে সাথে আমি যে আপনার রুমে আছি তা জেন না জানে!আপনি রিলেক্স হন ভাইয়া!(মুন্নি)

মুন্নির কথাটা শুন একটু রিলেক্স হলাম।

–ভাইয়া,এখন অন্তত আর অচেনা সেজে আপনি আপনি করে বলিয়েন না প্লিজ,আর আপনি আমার Id ও ব্লক করে দিছেন কেন!আর আপনার নাম্বার বন্ধ কেন!আপনি জানেন আমি আপনার সাথে অনেকবার যোগাযোগ করতে চাইছিলাম কিন্তু আপনার নাম্বার বন্ধ বলছিলো, কোথায় চলে গেছিলেন আপনি!, (মুন্নি)

–অনেক দূরে চলে যেতে চাইছিলাম, যাতে আর এই এলাকায় ও এলাকার মানুষগুলোর মুখ যেন না দেখতে হয়,কিন্তু ভাগ্যক্রমে আবার এখানে চলে আসলাম।তাছাড়াও আমি সকল চেনা জানা মানুষকে আমার id তে ব্লক দিয়ে রাখছিলাম আর সেই নাম্বারটাও অফ করে দিছি সারাজীবনের জন্য যেন কেউই আমাকে খুজে না পায়।কিন্তু তুমি আমার সাথে যোগাযোগ করতে চাইছিলে কেন!(আমি)

–কারন আপনি আমাকে বোনের মর্যাদা দিছেন, যখন কোনো বোন তার ভাইয়ের খারাপ খবর শুনে তখন সে কি করে স্থীর থাকে!(মুন্নি)

–হা হা হা,আমার আপন বোনই আমাকে চিনলো না বুঝলো না তাহলে বাকীদের থেকে কি আসা করতাম!আর সেখানে যার জন্য আমি সকলের কাছে খারাপ হলাম সেই মানুষের বেষ্টি থেকে তো আসা করা আরো বোকামী!(আমি)

–ভাইয়া আপনি এই কথাটা বলতে পারলেন!হ্যা জানি মায়া যা করছে তা অনেক জঘন্যতম অন্যায় করছে,কিন্তু আমি তার ঐকাজে তার সাথে ছিলাম না, না তার সঙ্গও ছিলাম! একদিন বিকাল বেলা মায়ার সাথে দেখা কর‍তে আপনার বোনের শশুর বাড়িতে যাই, সেখানে আমি তাকে খুজতে লাগি পরে আপনার আপুকে জিজ্ঞেসা করে দেখি আর আপু বলে সে নাকি ছাদে আছে আমিও ছাদে যেতে লাগি ছাদের কাছে যেতেই আমি কথা বলার আওয়াজ পাই,আমি মনে করছিলাম হয়তো আপনি মায়ার সাথে আছেন তাই আর ডিস্টাব করলাম না,কিন্তু দেখলাম সেখানে মায়া আর একটা ছেলের হাত ধরে কথা বলতেছে বিষয়টা সত্যি আমাকে অবাক করে দিলো!এরপর মায়ার কথাটা শুনেই আমি পূরাই নিস্তব্দ হয়ে গেলাম,

–দেখলে তো, কি করে খুব সহজে আমি অন্তরকে আমাদের দুজনের পথ সরিয়ে দিলাম,(মায়া)

কথাটা শুনেই আমি নিমিশেই অবাক হয়ে গেলাম,মানে অন্তর ভাইয়াকে দুজনের পথ থেকে সরিয়ে দিলো মানে!কোন দুজনের আর মায়া কি আবল তাবল বলতেছে! এরপর আমি আরো কথা শুনলাম,

–দেখলে তো সোজা জীবন থেকে ডাইরেক্ট বাড়ি থেকে পার্মানেন্টলি বের করে দিলাম।আমাকে চড় মারছে তাই না, মনে করছিলাম এমনেই তার সাথে ব্রেক আপ করে নিবো কিন্তু সে আমাকে চড় মারছে তার কতো বড়,আমার মাথা পূরাই গরম হয়ে গেলো কারন সে কি করে আমার গায়ে হাত দিছে সে, আমি।বেপারটা মোটেও মেনে নিতে পারি নাই তাই মাথা খাটাতে লাগলাম আর মাথায় দারুন একটা বুদ্ধি আসে আমি সাথে সাথে দাঁড়িয়ে ডাইরেক্ট দরজা বন্ধ করে দিলাম এরপর নিজের জামা কাপড় ছিড়ে চিৎকার করতে লাগলাম ব্যাস এরপর ব্যাস বাকিরা আসে আর আমাকে এই অবস্থায় দেখে তারাও ভেবে নিছে সেই ছ্যাচড়াটা আমার সাথে কিছু একটা করতে চাইছে পরে তার নিজের বোনই তাকে চড় মানে,উফ জানো না কি ভালো লাগলো জিনিসটা দেখে, সে আমাকে চড় দিছিলো আর আমিও তাকে তার বোনের হাতে চড় খাওয়ালাম সাথে অনেক ঝাড়িও আর সর্বশেষ ভাইয়ার হাতে তাকে ডাইরেক্ট বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলাম,(মায়া)

–বিশ্বাস করবেন না ভাইয়া কথাটা শুনেই আমার ভাবতেই অবাক লাগতেছিলো এর মতো নষ্টা মেয়ে আমার বেষ্টি!সাথে সাথে আমিও তাদের সামনে চলে যাই,মায়া আমাকে দেখে অবাক!সে আমাকে কিছু বলতে যাবে সাথে সাথে গালে একটা চড় লাগিয়ে দি,!আর এই নষ্টা মেয়ের সাথে সেই দিনই আমার বন্ধুত্ব শেষ করে দি আর বলে আসি কোনো দিনো যেন আমার সাথে কথা বলতে না আসে,আর সেখান থেকে সোজা বাড়ি চলে আসি!কারন আর যাই হোক ওর মতো নষ্টা মেয়ে কোনো দিনো কারো বন্ধু হতে পারে না কারন যে এই রকম জঘন্য কাজ করতে পারে সে কোনো দিনো কারো বন্ধু হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।আমি বাসায় এসে অনলাইনে ডুকি আর দেখি আপনি আমাকে ব্লক দিয়ে রাখছেন!আমি whats app, imo তেও নক দি,কিন্তু রিপ্লাই পাই না পরে নাম্বারেও কল দি সেটাও বন্ধ!কি করে পারলো আপনার সাথে এমনটা করতে সে,আমার ভাবতেও অবাক লাগতেছিলো এতো দিন একটা নষ্টার বেষ্টি ছিলাম আমি ভাইয়া,এরপর অনেক ট্রাই করি যোগাযোগ করার জন্য কিন্তু আমি ব্যর্থ হই,আর ভাইয়া সেইদিনের পর থেকে আজ পর্যন্ত মায়ার সাথে দেখাও করি নাই না কোনো যোগাযোগ করছি!কিন্তু ভাইয়া আপনি কি করে আছেন এই অপবাদ নিয়ে,আপনার কি ইচ্ছা হয় না নিজেকে নির্দোষ প্রমানিত করার! (মুন্নি)

–না, এখন নিদোষ প্রমানিত করে কি লাভ,নির্দোষ প্রমানিত হলে তারা হয়তো আমাকে তাদের কাছে কাছে নিয়ে যাবে এতো টুকুই,কিন্তু আমি তো আর তাদের কাছে ফিরতে চাই না, এই একটা ঘটনার দ্বারা আমি মানুষ ভালো করেই চিনতে পারলাম আর বুঝতে পারলাম কে আপন আর কে পর! পরিবারের মধ্যে এতো বছর৷ থেকেও যেখানে তাদের বিশ্বাস যোগাতে পারলাম না আর যেখানে তারা আমাকে চিনতেই পারলো না সেখানে আমি আর ফিরে যাবোই বা কেন!তারাও খুব সহজেই অপবাদকে সত্যি ভেবে নিলো,তাদের অন্তত উচিত ছিলো আমাকে অন্তত একবার জিজ্ঞেসা করার কিন্তু তারা তা করে নাই!এর মানে এটাই প্রমান হয়ে গেলো আমি সেই আমার মানুষ গুলোর বিশ্বাস যোগাতে পারিই নাই,তাদের ভরসাও যোগাতে পারি নাই,এরপরেও কি তাদের কাছে ফিরতে চাইবো নাকি!এখন যদি প্রমানিত হয়েও যায় আমি নির্দোষ এরপরেও তো আমি আর ফিরবো তাদের কাছে না তাদের সাথে কথা বলবো, এখনো দূরে আছি তখনো দূরেই থাকবো, তাদের মনে আমার জন্য যেমন ভরসা জুটলো না, এরপর কিভাবে আমার মনে তাদের কাছে ফিরে যাওয়ার চিন্তা আসবে!এসব হওয়ার পরেও কিভাবে তাদের প্রতি বিশ্বাস থাকবে আমার!আর যেহুত তারা আমাকে অপরাধী ভেবেই নিছে তো হ্যা আমি অপরাধী, আর এই অপরাধীকে তারা কোনো দিনও তাদের কাছে ফিরে যাবে না, (আমি)

–মানে ভাইয়া আপনি কি সত্যিই আর আপনার পরিবারের সাথে মিলিত হবেন না!ভাইয়া এটা কোনো কথা!(মুন্নি)

–তুমি জানো না মুন্নি!আমি কি পরিস্থিতিতে ছিলাম, কেমন অবস্থায় ছিলাম,এই ঘটনার পর, আমি মনে করছিলাম আম্মু অন্তত একবার হলেও আমার খোজ নিবে, আমার মোবাইলে কল দিয়ে আমাকে জিজ্ঞেসা করবে আমি অপরাধী কি না!কিন্তু আমি ভুল ছিলাম,যেহুতু তারাই আমাকে দূরে ঠেলে দিছে তাই আমিও আর ফিরতে চাই না!তাদের কাছ থেকে যেসার্পোট পাবো ভাবছিলাম সেটাও পাই নাই!এরপর কি করে তাদের কাছে ফিরার মন মানসিকতা থাকে!আমি যেহুতু তাদের কাছে ফিরবো না ভেবেই নিছি তাই আমার সিধান্তে আমি অটুট থাকবো,আর এই সব বেপার বাদ দাও কারন অতিত নিয়ে এতো ঘাটাঘাটি করে লাভ নাই,আর দেখো আমরা যে দুজন দুজনকে চিনি তা জেন কেউই জানতে না পারে!(আমি)

–ঠিক আছে ভাইয়া, আপনি যা বলেন,তবে ভাইয়া মায়ার সাথে সম্পকে শেষ বলে আমার সাথে সম্পর্ক শেষ করবেন এটা কিন্তু ঠিক না, মায়ার জন্য পরিচিত হইছিলাম বলে এখন আমাকে ভুলে যাবেন, আপনার সাথে পরিচিত হওয়ার পর যেমনটা আপনার বোন হয়ে যেভাবে আপনার উপর অধিকার খাটাইছি এখন আমি সেই বোনের অধিকারটা চাই!যেন এই ভাইয়ার উপর বোনের অধিকার খাটাতে পারি!বুঝছেন!(মুন্নি)

–হা হা হা ঠিক আছে,ওরে ভুলেই গেছিলাম সৌরভ ভাইয়া বলছিলো নিচে যাইতে, ঘুরতে বের হবে বলছিলো,মুন্নি আস্তে করে তুমি রুম থেকে বেরিয়ে যাও, এরপর আমিও বেরিয়ে সৌরভ ভাইয়ার কাছে যাবো!তারা হয়তো আমাদের জন্য অপেক্ষা করতেছে!(আমি)

–ঠিক আছে ভাইয়া!(মুন্নি)

এরপর মুন্নি আসতে করে বেরিয়ে যায় কিছুক্ষন পরে আমিও রুম থেকে বেরিয়ে হল রুমের দিকে যাই,

–অন্তর ভাই,সেই কখন গেছিলেন, এতো লেট হইছে কেন!(সৌরভ)

–আরে ভাই, এক হারামী কল দিছে তার সাথে কথা বলতেছিলাম,তো ভাই চলেন!(আমি)

এরপর আমরা ৪জন মানে সৌরভ ভাই,মুন্নি, রিদিকা ও আমি বের হলাম এলাকায় ঘুরতে, আমরা সকলের মুখে মাস্ক আসলে করোনার সময় তাই সৌরভ ভাই বললো সকলে মুখে মাস্ক পড়ে থাকতে, তবে আমি কোন দিন মাস্ক পড়ছি নিজেই ভুলে গেছি🙂,তারপরেও পকেট থেকে মাস্ক বের করে পড়লাম।এরপর আমরা এলাকায় ঘুরতে লাগলাম,আমি আর সৌরভ ভাই একত্রে হাটছি, মুন্নি আর রিদিকা একসাথে হাটছে।তবে আমরা সামনে তারা পিছনে, ভাই আমাকে এলাকার অলি গলি দেখাচ্ছে কিন্তু সে তো আর জানে না এই এলাকার অলিগলি আমার ভালো করে চেনা,তারপরেও আমি অচেনা জায়গার মতো হাবভাব দেখাচ্ছি ও এলাকা সম্পকে প্রশ্ন করতেছি যেন সে সন্দেহ না করে, তা দেখে মুন্নি মুখ চেপে হাসতেছে।এই এলাকায় আমার একটা পছন্দের জায়গা আছে সেটা হচ্ছে এই এলাকার নদীর সাইডটা!কারন এখানে সেই রকম বাসাত বয়ে চলে সাথে আবার প্রকৃতিটাও অনেক সুন্দর!তাছাড়াও সেখানে বসার জন্য সিমেন্ট দিয়ে বসার জায়গা করে রাখছে, সেখানে কিছুক্ষন থেকে আমরা বাড়ির দিকে যেতে লাগি।সৌরভ ভাইয়া বলল গলির রাস্তা দিয়ে বাড়ির দিকে যাবে তাই গলির রাস্তা ধরলো আমরা গলির রাস্তা দিয়ে ডুকে পড়লাম আর বের হচ্ছি,তখনি কেউ একজন আমাকে পিছন থেকে আমার কলার ধরে টান মারে!

–এই যে ভাই, কতোক্ষন ধরে ডাকতেছি আপনাকে!আপনার ওয়ালিট পড়ে গেছে এই নিন!(পিছন থেকে)

আমিও পিছনে ঘুরে যাই, আর পিছনে ঘুরতেই আমি পূরাই নিস্তব্দ হয়ে গেলাম সেই ডাক দেওয়া ব্যক্তিকে দেখে!কারন সেই ব্যক্তিটা আর কেউই না আমার আপন বোনের স্বামী মানে আমার দুলাভাই!

চলবে…………..
ভুলক্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।আর লাইক ও গল্প ভিত্তিক কমেন্ট করে পাশে থাকুন।।সেয়ার করুন আর পরর্বতি পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।
পার্ট 7
https://www.facebook.com/groups/315195763809014/permalink/398329468828976/

পার্ট 5
https://m.facebook.com/groups/315195763809014/permalink/380850137243576/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here