গল্পের নামঃ অবশেষে ভালোবাসি❤পার্ট ২+৩
#writer : রোদেলা❤
রিয়াদঃ কেন? পরশো তোমাদের বাসায় যেতে হবে কেন?
সাদিয়াঃ কেন মানে??বিয়েতে যাবে না? ( অবাক হয়ে)
রিয়াদঃ বিয়ে? কার বিয়ে? ( সাদিয়ার অবাকের মাত্রার সাথে পাল্লা দিয়ে দ্বিগুণ অবাক হয়ে)
সাদিয়াঃআমার বিয়ে(সাবলীল ভঙ্গীতে)
কথাটা শুনেই মুখ কালো করে থমকে দাড়ালো রিয়াদ,,,,,
সাদিয়াঃ(পিছনের দিকে তাকিয়ে) কি ব্যাপার?দাড়িয়ে পড়লে কেন?
রিয়াদঃ না,,ম,,,মানে,,,,তোমার বিয়ে?(কিছুটা তুতলিয়ে)
সাদিয়াঃ নেকা!!তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি জানোই না যে পরশো আপ্পির হলুদ।
রিয়াদঃ(স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো,,, মনের অজান্তেই মুচকি হাসলো)
সাদিয়াঃ কি ব্যাপার? ওইখানে দাড়িয়ে এভাবে বোকার মতো হাসছো কেন??
রিয়াদঃ কই নাতো।।হাসছি না। ভাবছি পরশো আপুর হলুদ আর আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।
সাদিয়াঃ তুমি সিরিয়াসলি জানো না?(অবাক হয়ে)
রিয়াদঃ নাহ্।। আমাকে তো আর বলো নাই।জানবো কিভাবে?
সাদিয়াঃLOL,,,,আম্মু আন্টিকে মিনিটে মিনিটে ফোন দিচ্ছে আর বলছে,,,,আমাদের ঘুম ভাঙ্গার আগেই যেনো তোমরা সেখানে উপস্থিত থাকো।। আর তুমি বলছো কিছুই জানো না? তাছাড়া রিয়ার সাথে তো আমার ড্রেস প্লেনিং ও হয়ে গেছে।।রিয়াও তোমাকে বলে নি? strange….
রিয়াদঃstrange এর কিছুই না।।।আম্মু হয়তো কাজের চাপে বলতে ভুলে গেছে আর রিয়া???ও তো এমনিতেই নাচের কাঠি আরো পেয়েছে ঢোলের বারি,,,, ওকে আর পায় কে??
সাদিয়াঃ হা হা হা,,,তা যা বলেছ।।
রিয়াদঃ(রিয়াদও হেসে দিলো।।রিয়া রিয়াদের ছোট বোন)
সাদিয়া হঠাৎ কোমরে হাত রেখে রাগী চোখে রিয়াদের দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে পড়লো,,,,,,
সাদিয়াঃ আচ্ছা তুমি কি হ্যা??
রিয়াদঃ মানে?
সাদিয়াঃ আরে কোনো রিক্সা ডাকবা?নাকি হেটে হেটেই চলে যাবো??আজিব irresponsible ছেলে,,,(মুখ বাকিয়ে)
রিয়াদঃএখানে irresponsible এর কি দেখলা??হাটতে তো ভালোই লাগছে,,,খারাপ কি?
সাদিয়াঃ তোমার মাথা!! কই আগে আগে রিক্সা ডাকবে তা না,,,,,এই রোদে হাটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আবার তর্কও করছে।।
রিয়াদ কিছু না বলে রিক্সা ডাকলো।। রিক্সা আসতে একটু দেরি হলেও হতে পারে কিন্তু সাদিয়া উঠতে ১ সেকেন্ডও দেরি করলো না।।ইচ্ছেমতো জায়গা নিয়ে বসলো।।।রিয়াদ উঠতে যাবে তখনই বলে উঠলো,,,,,
সাদিয়াঃ তিন ইন্ঞ্চি ফাক রেখে বসবে,,(সামনের দিকে তাকিয়ে)
রিয়াদঃ তুমি হাতির মতো যে জায়গা নিয়ে বসছো তারপরে যদি আমি তিন ইন্ঞ্চি জায়গা ফাকা রাখি তাহলে আমাকে আর রিক্সায় বসতে হবে না রিক্সার চাকায় ঝুলে থাকতে হবে
সাদিয়াঃতাহলে ঝুলেই থাকে।।।আর কি বললা??আমি হাতি??(রেগে)
রিয়াদঃ আমি হাতি কখন বললাম।।। আমি তো বললাম হাতির মতো।।।
সাদিয়াঃ ওহ।।।হাউ সুইট(মুখ ভেঙিয়ে)ফাজিল ছেলে,,,আমি হাতির মতো তাই না??খবরদার এই রিক্সায় ওঠবি না।(রেগে)
রিয়াদঃ মামার বাড়ির আবদার!!! রিক্সাটা আমি ডেকেছি সো,,আমি এই রিক্সাতেই যাবো।।তোমার সমস্যা হলে তুমি নেমে যেতে পারো।I have no problem baby..(দুষ্টুমি হাসি দিয়ে রিয়াদ রিক্সায় ওঠে বসলো)
রিয়াদের হাসিতে যেন সাদিয়ার রাগ চরমে ওঠে গেলো।রিক্সা থেকে নেমে উল্টো দিকে হাটতে শুরু করলো,,, এদিকে রিয়াদ রিক্সায় চুপচাপ বসে আছে।।রিক্সাচালক হা করে তাকিয়ে আছে,,,,
রিয়াদঃ মামা,,,,৫ মিনিট রেস্ট নেন।।হাতি,, আ্যানাকোন্ডা যায়হোক ৫ মিনিটে বেক করবে।।
২ মিনিট না যেতেই সাদিয়া রাগে গজগজ করতে করতে ধুপ করে রিক্সায় উঠে বসলো।
রিয়াদঃমামা চলেন( মুচকি হেসে)
বিয়ের প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস কিনে দুজনেই বাসায় ফিরলো।।
আজ নাদিয়ার বিয়ে।ওহ্ বলতে ভুলে গেছি,,, নাদিয়া হলো সাদিয়ার বোন।২ বছর আগে পড়াশোনা কমপ্লিট করে এখন কলেজর টিচার।।যায়হোক এবার গল্পে ফেরা যাক,,,সাদিয়ার বাড়িতে খুশির ধুম পড়েছে। বাড়ির বড় মেয়ের বিয়ে বলে কথা।।আত্মীয় -স্বজনে বাড়ি ভর্তি।। বাচ্চাদের চিল্লাচিল্লি হৈ-চৈ,,,মেয়েদের মেহেদী দেওয়ার ধুম আর বড়দের কাজ নিয়ে ছুটাছুটি আর গল্প।
কারো যনো এক মিনিটেরও ফুরসত নেই।সবাই যেনো মহাব্যস্ত।।সবচেয়ে ব্যস্ত হলো ছোট্ট রোদ।এই জানুয়ারিতে একবছর হলো তবু মুখ দেখে মনে হচ্ছে আশি বছরের বুড়ো আর এমন ভাবে ছুটাছুটি করছে মনে হচ্ছে বিয়ে বাড়ির সব দায়িত্ব যেনো তার কাধেই দেওয়া হয়েছে।।
সাদিয়াঃ আপ্পিইইইই(রুমে ঢুকেই জরিয়ে দড়লো)
নাদিয়াঃ এতোক্ষনে আমার কথা মনে পড়লো বুঝি।।(মুখ ফুলিয়ে)
সাদিয়াঃ তোমাকে তো সাজাচ্ছিলো তাই আর আসি নি।আচ্ছা আপ্পি তোর কাছে অ্যাম্বুলেন্সের নাম্বার আছে?(সিরিয়াস ফেস নিয়ে)
নাদিয়াঃ কেনো?(কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে)
সাদিয়াঃ তোকে যে হারে সুন্দর লাগছে দুলাভাই তো তোকে দেখেই হ্যাং মারবে।।I mean heart attack করবে,,,তাই,,,(দুষ্টুমি হাসি দিয়ে)
নাদিয়াঃ শয়তান মেয়ে,,,যাহ ভাগ,,,(আস্তে একটা চড় দিয়ে)
সাদিয়াঃ হুহ,,,,বললেই হলো?ভাগবি তো তুই।কাল থেকে এই রুমটা আইনত আমার হয়ে যাবে।(সবকটা দাঁত বের করে)
নাদিয়াঃ শখ কতো,,,তালা লাগায় যাবো তবু তোকে দিবো না।।আমার রুমের ১২ টা বাজাবি তা হবে না।।
সাদিয়াঃমুখের কথায় কিছু হবে না
আইন সবার জন্য সমান রে বোন,,,,,মেনে নে,,,মেনে নে,,,
নাদিয়াঃতাই?এটা কোন নীতি শুনি???
সাদিয়াঃকেন?? বোননীতি ২০১৯,,ধারা নং ৪২০(চোখ টিপ দিয়ে)
নাদিয়ার মাঃ সাদিয়া??এখানে দাড়িয়ে আছিস কেন??কতো কাজ পড়ে আছে,,,রেডিও হোস নি।।।তোকে নিয়ে আর পারি না।।।এতো কাজের মধ্যেও আমার কি তোর পিছে পিছে ঘুরতে হবে নাকি??তুই,,,
সাদিয়াঃ (কথাটা শেষ করতে না দিয়েই) ওহ্হো মাদার বাংলাদেশ,,,, take a deep breath,,,,যেভবে একটানা বলে যাচ্ছো এখনি তো হ্যাং মারবে।।।আর পিছে পিছে কেনো??তুমি চায়লে আমার সামনে সামনেও ঘুরতে পারো,,, আমার কোনো সমস্যা নেই (বলেই দৌড়ে পালাল,,)
এতো মানুষের ভীরেও রিয়াদের চোখ মনের অজান্তেই সাদিয়াকে খুজঁছে। সাদিয়াকে একটিবার দেখার জন্য অবচেতন মনটা খুবই চঞ্চল হয়ে ওঠছে।।।হঠাৎ একটি জায়গায় চোখ আটকে গেলো রিয়াদের।।।
#,চলবে…
।
।
।
গল্পের নামঃঅবশেষে ভালোবাসি❤
#writer: রোদেলা❤
#পার্ট ৩
হঠাৎ একটি জায়গায় রিয়াদের চোখ আটকে গেলো। ওই তো সাদিয়া স্টেজের পাশে।হলুদ শাড়িতে মেয়েটাকে কি অসম্ভব সুন্দরই না লাগছে।।সাদিয়া সাধারনত সাজে না।কিন্তু আজ হালকা সেজেছে।বড় বড় মায়াবী চোখগুলোতে কড়া করে কাজল,ঠোঁটে লাল লিপস্টিক,, হাত ভরা চুরি,,কানে ঝুমকো,,,সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে তার হাসি।।।কি প্রাণোবন্ত।।সাদিয়ার এই হাসিটাই রিয়াদকে পাগল করার জন্য যথেষ্ট।সাদিয়ার খোলা চুলের সাথে পাল্লা দিয়ে রিয়াদের ভাবনাগুলোও যেনো বেপরোয়া হয়ে ওঠছে।হঠাৎ কারো ডাকে রিয়াদের ঘোর কাটে।চরম বিরক্তি নিয়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফিরে তাকায়।।।একটি মেয়ে দাড়িয়ে আছে।।মেয়েটির ঠোঁট নড়ছে,,,রিয়াদ বুঝতে পারছে যে মেয়েটি তাকে কিছু বলছে কিন্তু ঠিক কি বলছে তা বুঝতে পারছে না।।।রিয়াদের কানে যেনো এখনও সাদিয়ার খিলখিল হাসি আর চুরির টুনটান আওয়াজটাই ভেসে বেড়াচ্ছে।।।হঠাৎপাশে রাখা চেয়ারটাতে ধুপ করে বসে পড়লো রিয়াদ,,,,নিজের চুলগুলোকে হাতের মুঠোতে নিয়ে টানতে লাগলো।।।কিছুক্ষন এভাবে বসে থেকে কি ভেবে আবার হঠাৎই ওঠে দাড়ালো।।।মেয়েটা আগের জায়গাতেই দাড়িয়ে আছে আর অবাক হয়ে রিয়াদ কে দেখছে।।।।
রিয়াদঃ আমাকে কিছু বলছিলেন??
মেয়েটিঃ (চুপ,,, ,, )
রিয়াদঃ হ্যালো মিস???
মেয়েটি ঃ (চুপ,,,,,,)
রিয়াদ কিছু না বলে মেয়েটিকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।।মেয়েটি শুধু ফেলফেল করে রিয়াদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।।।কেনো জানি চোখ সরাতে পারছে না।।।
সাদিয়াঃ ওই,,,,হ্যাং মারছিস নাকি??(হাল্কা ধাক্কা দিয়ে)
অদিতিঃ ন,,,না মানে,,,,, কই নাতো(একটু লজ্জা পেয়ে)
সাদিয়াঃ আচ্ছা বাদ দে।।।।এবার চল তো আপ্পির হলুদের ঢালা সাজাতে হবে,,,,চল চল( এক প্রকার টেনেই নিয়ে গেলো)
অদিতি হলো নাদিয়ার বান্ধবী ঐশীর ছোটবোন।। সাদিয়াদের ভার্সিটিতেই পড়ে।।।ওদের ইয়ারমেট।।।এবার গল্পে ফেরা যাক,,,,হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে।।।সবাই একে একে হলুদ লাগাচ্ছে।।রিয়াদের পালা আসতেই অদিতি রিয়াদের বেশকিছু ছবি তুলে নিল।।।অদিতি বুঝতে পারছে কোনো এক অদ্ভূত কারণে সে রিয়াদের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।।। কিন্তু কারণটা কি তা সে বুঝতে পারছে না।।।ছেলেটাকে প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে গেছে অদিতির।।। হয়তো একেই বলে Love at first sight..।।অদিতি খেয়াল করলো তার কাছে রিয়াদের সবকিছুই ভালো লাগছে আসলে একটু বেশিই ভালো লাগছে।।।।।এইতো রিয়াদ যে ক্যামারা হাতে ছবি তুলছে তাও অদিতির কাছে অদ্ভুত ভালো লাগছে।।। তার কাছে মনে হচ্ছে,,,,,,
#চলবে
·