অবশেষে ভালোবাসি❤পার্ট ৪+৫

গল্পের নামঃ অবশেষে ভালোবাসি❤পার্ট ৪+৫
#writer: রোদেলা❤

তার মনে হচ্ছে এই ক্যামেরা নামক জিনিসটাকে হয়তো কোনো এক কালে শুধুমাত্র রিয়াদের হাতে এতোটা মানাবে বলেই তৈরি করা হয়েছিল।।।উফফফ্ অদিতির এবার অসহ্য ধরনের ফিলিংস হচ্ছে,,, সে রিয়াদকে দেখে রীতিমতো ক্রাশ খাচ্ছে ব্যাপারটা ক্রমাগত ঘটছে যা তার মোটেও ভালো লাগছে না আবার নিজেকে আটকেও রাখতে পারছে না।।পাঞ্জাবীর হাতা পোল্ড করার মতো তুচ্ছ ঘটনাও অদিতির কাছে খুবই অসাধারণ ও আশ্চর্যদায়ক বলে মনে হচ্ছে।যা দেখার জন্য অদিতি নির্লজ্জ হতেও রাজি।
অদিতিঃ সাদিয়া,,,সাদিয়া,,,??­( আঁচল টেনে ধরে)
সাদিয়াঃ ইসসস্,,,,, কি হলো???( আঁচল ঠিক করতে করতে)
অদিতিঃ আচ্ছা,,,, ওই ছেলেটার নাম কি রে??
সাদিয়াঃ এখানে তো অনেক ছেলে,,,তুই কোনটার কথা বলছিস??
অদিতিঃ আরে,,,ওইতো ফাহিম ভাইয়ার বাম পাশে দাড়ানো লম্বা করে ছেলেটা।।।
সাদিয়াঃ আরেক কাহিনী!!!অদিতি বাম-ডান বলে কনফিউসড কেন করছিস???ভাইয়ার বাম পাশ কোনটা রে??( বোকা বোকা ফেস নিয়ে)
অদিতিঃ সাদিয়া????ওলয়েজ মজা ভালো লাগে না।।।(একটু রেগে)
সাদিয়াঃ ওকে ওকে,,,,কোল,,, রাগিস কেন?ওয়েট,,,,ফাইম ভাইয়া,,,,,এই ফাহিম ভাইয়া(একটু জোড়ে)
সাদিয়াঃ (ফাহিম তাকাতেই)আপনার বাম হাতটা তুলেন,,,, ফাস্ট ফাস্ট,,,,
সাদিয়ার কথা শুনে আর মুখের রিয়েকশন দেখে মনে হচ্ছে ফাহিমের হাত তোলার ওপর সাদিয়ার বাঁচা – মরা নির্ভর করছে।।ফাহিম ওর রিয়েকশন দেখে কিছু না বুঝেই বোকার মতো হাত তুলে দাড়াল।।।
সাদিয়াঃওহহ্,,,ওইটা??­ও তো রিয়াদ।।
বলেই ফাহিমকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল।।। ফাহিম তখনো হাত তুলে দাড়িয়ে আছে।।।অদিতি ওর অবস্থা দেখে হেসে কুটিকুটি,,,,
অদিতিঃভাইয়া,,, হাত নামাতে পারেন,,, কাজ শেষ।।(হেসে হেসে)
হাত তোলা এবং নামানো দুইটাই ফাহিমের মাথার উপর দিয়ে গেলো,,,,,,,ফাহিম ঠিক বুঝতে পারলো না তার সাথে একচুয়েলি কি হয়ে গেলো।।।তাই হাতটা নামিয়ে চুপচুপ ভাবতে লাগলো,,,,যতই ভাবছে ততই সে নিজেকে গরু হিসেবে আবিষ্কার করছে।।।চারপাশে সবাই চুপচাপ দাড়িয়ে আছে হয়তো হাসি কন্ট্রোল করার ব্যর্থ চেষ্টা করছে।।।।কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না সবাই একসাথে হেসে দিলো।।।অবেশেষে ফাহিম ও মাথা চুলকে হেসে দিলো।।সাদিয়ার এমন কর্মকান্ডের সাথে সবাই পরিচিত।।।এখানে এমন কেউ নেই যাকে সে বোকা বানাইনি,, তাই এই নিয়ে কেউ তেমন মাথা ঘামালো না।।।
রাত ২ টা বাজে।।।বাড়িটা যেনো ঘুমন্তপুরীতে পরিণত হয়েছে।।।কিন্তু একজোড়া চোখ এখনো ঘুমহীন,,, শূণ্য।।।ঘুমেরা সেখানে পাড়ি জমাতে পারে নি।।হাজারো স্বপ্নের আলো- ছায়ায় ঘুমেরা যেন হারিয়ে গেছে বহুদূরে।।।
অদিতিঃ রিয়াদ,,রিয়াদ!!!!হুম নামটা কিউট কিন্তু,,,,,,,কোথায় যেন কিছু একটা মিসিং,,,,,,উমমমম্ কি নেই??রিয়াদ!!!রিয়াদ- অদিতি,,,,,,Wow,,, Now perfect,,,,,,রিয়াদ- অদিতি,,, (একটি তৃপ্তির হাসি দিয়ে)
এসব ভাবতে ভাবতেই কেটে গেলো একটি নির্ঘুম রাত্রি।।হাজারো আশা- আকাঙ্খায় নিজেকে রাঙ্গিয়ে সূর্য ওঠার আগেই বিছানা ছাড়লো অদিতি,,,,,,
সূর্য উঠার সাথে সাথেই বাড়িতে আবার উৎসবের আমেজ শুরু হয়ে গেছে।।।সবাই সাজগোজ করে তৈরি।।রিয়াদ আজকে লাল পাঞ্জাবী পড়েছে,,,হাতে ঘড়ি,,,চুলগুলো একটু উচু করে স্পাইক করা।।।হাতে একটি ক্যামেরা।।।সব মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে।।।।রিয়াদ ক্যামেরা হাতে কিছু একটা করছে,,,,,, কেউ যে তার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে দিকে তার খেয়াল নেই।।।।হঠাৎ সাদিয়ার কন্ঠ কানে ভেসে আসায় ফিরে তাকিয়ে যা দেখলো,,,,,,,
# চলবে


গল্পের নামঃ অবশেষে ভালোবাসি
writer:রোদেলা❤
পার্টঃ৫
রিয়াদ ক্যামেরা হাতে কিছু একটা করছিলো,,,কেউ যে তার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে সেদিকে তার কোনো খেয়াল নেই।হঠাৎ সাদিয়ার কন্ঠ কানে ভেসে আাসায় ফিরে তাকিয়ে যা দেখলো,,,তা রিয়াদকে বিস্ময়ের চরম মাত্রায় পৌছে দিলো।।।এ কোন সাদিয়াকে দেখছে সে?আজ সাদিয়া প্রচুর সেজেছে!লাল কাঁথান শাড়ি আর ভারি সাজে সাদিয়াকে একদম অন্যরকম লাগছে,,,,,,রিয়াদের চোখ ফেরাতেও কষ্ট হচ্ছে।।।।সাদিয়া ফোনে ব্যস্ত।।। কাউকে ইচ্ছেমতো জারি দিচ্ছে।।এদিক ওদিক ক্রমাগত পায়চারী করছে।।।চারপাশে কি হচ্ছে তা নিয়ে তার বিন্দু মাত্র মাথা ব্যাথা নেই।।তার মুখ দেখে মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে ফোনের ওপাশের মানুষটাকে ইচ্ছামতো জারি দেওয়ায় হলো তার প্রধান দায়িত্ব।।। হাটঁতে হাঁটতেই শাড়ির কুচিতে পা আটকে উল্টে পড়লো সাদিয়া।।।মাথাটা গিয়ে লাগলো দরজায়,,,,ফোনটা সিটকে পড়লো,,,,
রিয়াদঃ oopppssss…
সাদিয়া খুব স্বাভাবিকভাবে ওঠে দাড়ালো,,,মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ফোনটা খুঁজে হাতে নিয়ে দেখলো কিছু হয়েছে কি না,,,নাহ্ ঠিক আছে।।এবার শান্ত হয়ে দরজার পাশে বসলো এবং দিলো এক চিৎকার,,,,,,,
সাদিয়াঃ আআআমমমমমম্মুুু,,,,,,­,,, (নেকা কান্না করে)
আর চারপাশে ছুটাছুটি শুরু হয়ে গেলো,,,,,,,সবার ফেস দেখে মনে হচ্ছে মারাত্মক কিছু একটা হয়ে গেছে।।রিয়াদ সাদিয়ার কর্মকান্ড দেখে না হেসে পাড়লো না।।মেয়েটা যেনো দিন দিন ছোট হচ্ছে।।।।এসব ভাবতে ভাবতে পাশফিরে তাকাতেই অদিতির চোখে চোখ পড়লো।।অদিতি ওর দিকেই তাকিয়ে ছিলো চোখাচোখি হতেই একরাশ লজ্জায় চোখ ফিরিয়ে নিয়ে চলে গেলো।।।
খাওয়া শেষে রিয়াদ বাইরের একটা সোফায় বসে ছবিগুলো দেখছিলো।।হঠাৎ অদিতি রিয়াদের গা ঘেঁষে বসে পড়লো।।রিয়াদ অবাক হয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকালো,,,,
অদিতিঃ হাই,,আই’ম অদিতি
রিয়াদঃ রিয়াদ,,,আই’ম রিয়াদ
অদিতিঃআই নো,,,ছবি দেখছিলেন?
রিয়াদঃজি।
অদিতিঃ আমিও দেখব
বলেই অদিতি আরো চেপে বসলো,,,এবার রিয়াদের অস্বস্তি লাগছে।।।মেয়েদের সাথে তার যোগাযোগ খুবই অল্প।।মেয়ে ফ্রন্ড থাকলেও তাদের থেকে একটু ডিসটেন্স মেইনটেইন করেই চলে।।।মেয়েদের সাথে গাঁ লাগিয়ে বসা তার স্বভাববিরোধী।।
সাদিয়াঃএই তোরা কি করছিস??
অদিতিঃ ছবি দেখছি,,,দেখ এই ছবিটাতে তোকে অস্থির লাগছে।।।
সাদিয়াঃ তাই?? দেখি দেখি(তাড়াতাড়ি করে রিয়াদের অন্য পাশে বসে পড়লো)
রিয়াদের অবস্থা এবার আরো কাহিল। ক্যামেরাটা রিয়াদের হাতে হওয়ায় দুজনেই দুপাশ থেকে রিয়াদের দিকে ঝুকে পড়েছে।।সাদিয়ার সাথে গাঁয়ে গাঁ লাগতেই রিয়াদের শরীর কেঁপে কেঁপে ওঠছে।।হার্টবিড হাজার গতিতে দৌড়াচ্ছে,,,দম বন্ধ হয়ে আসছে,,,,আবার অদিতির সাথে গাঁ লাগতেই চরম অস্বস্থিতে রিয়াদের শরীর হাসফাস করছে।।।
রিয়াঃ ভাইয়া,,,তুই এখানে বসে আসিস??আর আম্মু তোকে খুঁজতে খুঁজতে পাগল হয়ে গেলো,,,,,
রিয়াদঃ হুম,,,যাচ্ছি(কোনো রকম বললো)
বোনকে দেখে রিয়াদের এতটা আনন্দ আর কোনদিন হয়েছে বলে তার মনে হয় না।।রিয়ার জন্য আজ সে জানে বেঁচে গেলো।।।তাড়াতাড়ি ওঠে সাদিয়ার হাতে ক্যামেরাটা দিয়ে রিয়াকে নিয়ে দৌড়ে পালাল।।।
রিয়াঃ ওই,,, ওই,,হাত ছাড়।।।আদর দেখাইয়া লাভ নাই আমি আম্মুকে বলে দেব।।
রিয়াদঃ কি বলবো মানে,,তুমি যে মেয়েদের সাথে গাঁ ঘেঁষে বসে থাকো তা আম্মুর জানা উচিত।।।আম্মুর ধারণা তুমি ধোয়া তুলশি পাতা।(মুখ বাঁকিয়ে)
রিয়াদঃ ওই তুই বেশি বুঝিস কেন??(রেগে)
রিয়াঃ এএএএ,,,,,,নিজে দুইটার সাথে লাইন মারছো আর আমি বললেই দোষ??
রিয়াদঃ বেশি পাকিস না ঝরে পড়ে যাবি,,,(রেগে)
রিয়াঃ আমি পাকবো না পাকাবো আম্মুর কানে(সবকটা দাঁত বের করে)
রিয়াদঃআরে,,,,কিছুই তো করলাম না।। কি পাকাবি??(অবাক হয়ে)
রিয়াঃ ইউ নো মি,,রাইট ভাই?(দূষ্টুমী হাসি দিয়ে)
রিয়াদ বুঝতে পারলো এই মেয়েকে না আটকালে বিনা দোষেই ফাঁসিতে ঝুলতে হবে।।।
রিয়াদঃআচ্ছা,,,হিটলার­ বোন,,বল কি চায়?(অসহায় ভাবে)
রিয়াঃ কি আমি হিটলার?(ভ্রু কুচঁকে)
রিয়াদঃ নাহ্ তুই তো লক্ষী,,,মাদার তেরেসা,,,এবার বল।।।(আস্ত একটা শাকঁচন্নী,,,,রক্তপুষ­ে খাইলি আমার,,, মনে মনে)
রিয়াঃ গুড,,,এইবার দুই হাজার টাকা দে
রিয়াদঃ কি,?? দুই হাজার??দুই হাজার দিয়ে কি করবি??
রিয়াঃ কি করবো সেটা তোর না জানলেও চলবে।।।কিন্তু লজিকটা বলতে পারি।।
রিয়াদঃ লজিকটা কি?
রিয়াঃ দুইটার সাথে লাইন মারছিলি তাই দুই হাজার,,, তিনটার সাথে হলে তিন হাজার হতো।।এবার আমার টাকাটা দে,,,,(দাঁত কেলিয়ে হেঁসে)
রিয়াদঃহিটলার,,,,(আস্­তে)
রিয়াঃ কি বললি??
রিয়াদঃকিছু না,,,,, এই নে টাকা,,,
রিয়াঃ আমার মিষ্টি ভাইয়া,,,,,,
রিয়াদঃ হুহ,,,টাকা দিলেই মিষ্টি,,, পেত্নী একটা(মুচকি হাসলো)
#চলবে
·
·

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here