অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)part:18

অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)part:18
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤

.
.
🍁
.
আ..আপনি আমাকে এভাবে ভেতরে টেনে আনলেন কেন??আর দরজায় বা কেনো লাগালেন??(ভ্রু কুচঁকে)
.
কথাগুলো বলতো বলতে সামনের দিকে তাকাতেই রিয়া আবারো গলা ফাটিয়ে চেচিয়ে উঠলো।।ফাহিম তাড়াতাড়ি ওর মুখ চেপে ধরে বলে উঠলো…
.
কি হয়েছে?আবার চেঁচাচ্ছো কেন?
.
উমম উমম(চোখের ইশারায়)
.
কি??(হাত সরিয়ে)
.
এটা ঘর??ছিহ এই অবস্থা কেন?এখানে মানুষ থাকে নাকি?
.
রিয়ার কথায় ফাহিমও মাথা চুলকে ঘুরে তাকালো।সত্যিই তার রুমকে এই মুহূর্তে মানুষের বসবাসযোগ্য কিছু মনে হচ্ছে না।।বিছানার সব কুশন,চাদর, কম্বল মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে।বুকসেল্ফের অর্ধেকের বেশি বই ছিটাছান হয়ে পড়ে আছে এখানে সেখানে।বুকসেল্ফটাও বেঁকে গিয়ে আলমারির সাথে ঠেস দিয়ে কোনোরকম নিজের জীবন রক্ষা করেছে বলে মনে হচ্ছে।আলমারির সব কাপড়ই যেনো ফ্লোরে।সোফার অবস্থা না বলায় শ্রেয়,,সবকটা উল্টে পড়ে আছে বিধ্বস্তভাবে।ড্রেসিংটেবিলের আয়নার অর্ধেকটা ভেঙে পড়েছে নিচে,আর বাকিটুকু ঝুলে আছে বেশ অদ্ভুতভাবে।।এদিক সেদিকে বেশ কয়েকটা ফুলের ভাজের টুকরোও চোখে পড়ছে।।পাশে কাঁচা ফুলগুলোও থেতলে পড়ে আছে।।কি বিশ্রী কান্ড।
.
এসব কি করেছেন??আর কেনো করেছেন??(রাগী গলায়)
.
তুমি এখানে কিভাবে এলে?তাও এতো রাতে?(মাথা নিচু করে)
.
আমার এই মুহূর্তে আপনাকে ধরে আছাড় দিতে ইচ্ছে করছে।।কিন্তু দুর্ভাগ্য সেটা সম্ভব নয়।।একমাত্র আপনার জন্য এতোরাতে আমায় এখানে আসতে হয়েছে আপনি আসলেই একটা ভাইরাস।আমার জীবনটা শেষ করে দিলেন একদম।।এক্চুয়েলি আপনার সমস্যা টা কি??বলুন?
.
আই লাভ ইউ(মাথা নিচু করে)
.
হোয়াট ডিড ইউ ছে?ইউ হোয়াট?
.
ভালোবাসি তোমায়… বিয়ে করবে প্লিজ?(চোখে চোখ রেখে)
.
যদি বলি না..
.
রিয়ার কথায় বাঁকা হাসি দিলো ফাহিম।আচমকা রিয়াকে নিজের সাথে চেপে ধরে চুলগুলো কানে গুঁজে দিতে দিতে বলে উঠলো…
.
ইউ হেভ টু…
.
ম..ম..মানে??ছা..ছাড়ুন আমায়।আ..আমি চেঁচাবো।
.
লাভ নেই।চেঁচাতে চেঁচাতে গলা ফাটালেও লাভ নেই।রিয়ু বেবি…ইউ হেভ টু ম্যারি মি।সেটা তোমার ইচ্ছেতে হোক বা জোড় করে আই ডোন্ট কেয়ার।।তুমি আমার ভালো সাইডটা দেখেছো রিয়া,,,এখন বেড সাইডটা দেখার পালা।
.
কি ক…করবেন আ..আপনি?আপনি যায় করুন না কেনো আমি বিয়ে করবো না।। কিছুতেই না।
.
রিয়া?আসলে তুমি কখনো আমার জেদ টা দেখো নি।।তোমাকে তো ভালোবাসতে বলি নি আমায়,বলেছিলাম কি?তবু বেসেছো,,জোড় করে আমার লাইফে নিজের নাম লিখিয়েছো,,আমায় পাবার জন্য পাগলামো করেছো।।এতোকিছুর পর তোমার কি মনে হয় এতো সহজে বেঁচে যাবে তুমি??নো বেবি নট এট অল।।তোমার পাগলামো শেষ এবার আমারটা শুরু।।তোমারটা ছিলো বাচ্চামো কিন্তু আমারটা নয়।।তোমার ধারনাও নেই তোমাকে পাবার জন্য আমি ঠিক কি কি করতে পারি।।(গালে স্লাইড করতে করতে)
.
ফাহিমের কথায় রিয়া অনেকটাই ভড়কে গেলো।এতোক্ষণ সাহস নিয়ে কথা বললেও সেই আগের ভয়টা আবারও চেপে ধরছে তাকে।তবুও নিজেকে শক্ত করে একধাক্কায় ছাড়িয়ে নিলো নিজেকে।রাগী চোখে ফাহিমের দিকে তাকিয়েই বলে উঠলো সে…
.
সব আপনার ইচ্ছে মতো হবে না স্যার।জীবনটা আমার,,আপনার নয়।।আর আমিও আপনার কোনো সম্পত্তি নই যে যখন ইচ্ছে কাছে নিবেন যখন ইচ্ছে ছুঁড়ে ফেলবেন।আমাকে আমার মতো ছেঁড়ে দিন প্লিজ(হাত জোড় করে)আপনার এই মুখটাও আমার আর দেখতে ইচ্ছে করে না আবার ভালোবাসা।।লিসেন মিষ্টার ফাহিম আহমেদ,,যদি সত্যিই ভালোবাসেন আমায় তো প্লিজ আমার লাইফে ইন্টারফেয়ার বন্ধ করুন।।নেক্সট টাইম আমার সাথে কথা বলতেও আসবেন না,,স্যার স্যারের মতো থাকুন।।প্রেমিক হওয়ার চেষ্টা বন্ধ করুন।।কথাগুলো কি মাথায় ডুকেছে???
.
(হালকা হেসে)তুমি যা বলবে তাই মানবো।কিন্তু তোমাকে ছাড়ার কথা,, ইম্পসিবল।। তুমি আমার মানে আমার।আর তু…
.
আমার কসম…(স্থির দৃষ্টিতে)
.
মানে?(অবাক হয়ে)
.
মানেটা খুব সিম্পল। আমার কসম,, আপনি আর আমার জীবনে ইন্টারফেয়ার করবেন না।এসব পাগলামো তো কখনোই না,,নয়তো….
.
নয়তো? (টলমলে চোখে)
.
আমি আবারও সেইম স্টেপ নিবো।।সুইসাইড!!!
.
কথাটা কানে যেতেই চমকে উঠলো ফাহিম।অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলো…”রিয়া??নো..আই কান্ট।প্লিজ ডোন্ট…”কিন্তু রিয়া শুনলো না দৌড়ে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।দরজা খুলতেই চোখে পড়লো ফাহিমের বাবা-মা এর অশ্রুমাখা চোখ।।রিয়া কোনোরকম পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেলো বাড়ি থেকে।।নির্জন রাস্তায় হেঁটে চলেছে সে।কি থেকে কি হয়ে গেলো কিছুই বুঝতে পারছে না সে।।মুখ থেকে হঠাৎ করে এমন কিছু বেরিয়ে যাবে ভাবতে পারে নি রিয়া।।চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছে করছে তার।।নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় মনে হচ্ছে,,কেনো করছে সে ফাহিমের সাথে এমন কেন??কেন পারছে না সবকিছু মেনে নিতে??কাকে বলবে ওর কস্টগুলো,,কে দেবো ওর সঙ্গ?এসব ভাবতে ভাবতেই রাস্তার পাশে বসে পড়লো সে।।রাত প্রায় ১১ টা।রাস্তাটা অনেকটাই নীরব।রিয়া হাঁটুতে মাথা গুঁজে ফুফিয়ে উঠছে বারবার।হঠাৎই কি একটা মনে করে মাথা তুলে তাড়াতাড়ি ফোন হাতে নিলো সে।ফোনবুক ঘেঁটে একটা নাম্বার বের করেই ডায়াল করলো সে।কিন্তু তাকে হতাশ করে দিয়ে দুবারের মাথায়ও রিসিভ হলো না ফোনটা।।রিয়া একরাশ অভিমান নিয়ে আবারো মাথা নিচু করে বসে রইলো।।কিছুক্ষণ না যেতেই ফোনটা বেজে উঠলো তীব্রভাবে।ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে একটা সস্থির নিঃশ্বাস ফেলেই রিসিভ করে নিলো ঝটপট।।সাথে সাথেই ফোনের ওপাশ থেকে হাস্যজ্জোল কন্ঠে বলে উঠলো কেউ…
.
সরি পিচ্চিটা।ফোনটা সাইলেন্ট ছিলো তাই বুঝতে পারি নি। তো কেমন আছে আমার পিচ্চিটা।।
.
কন্ঠটা শুনেই ডুকরে উঠলো রিয়া।রিয়ার কান্নার শব্দে ওপাশ থেকে উদ্ধিগ্ন কন্ঠে বলে উঠলো আয়ান…
.
পিচ্চি পাখি?কি হয়েছে সোনা?কাঁদছো কেন?
.
ভা..ভাইয়া..
.
হ্যা বলো…সোনাটা কেন কাঁদছে?
.
ও..ওই ভা..ভাইরাস..(কাঁদতে কাঁদতে)
.
ইশশ এভাবে কাঁদে না।।কান্না থামাও।।এখন বলো.. ভাইরাস?মানে ফাহিম?এই আহাম্মকটা আবার কিছু করেছে নাকি?(ভ্রু কুচঁকে)
.
হু,,,হুম(হেঁচকি দিতে দিতে)
.
কি করেছে ও??এতোবড় সাহস ওর আয়ানের পিচ্চি পাখিকে কাঁদায় ও??আমি তো গর্দান নিবো…
.
আয়ানের কথায় হেসে উঠলো রিয়া।তারপর একেরপর এক সব ঘটনাই খুলে বললো সে।সবকিছু শুনে তো আয়ান হাসতে হাসতে শেষ।ফাহিমও যে এসব করতে পারে তা আয়ানের ধারনার বাইরে ছিলো।।কথায় আছে না?চিপায় পড়লে বাঘও ঘাস খায়…
.
আপনি হাসছেন ভাইয়া??আমি উনার সাথে খুব রুড বিহেভ করেছি।।(মন খারাপ করে)
.
বেশ করেছো।যদিও কসম দেওয়াটা তোমার ঠিক হয় নি।।তবুও নেভার মাইন্ড।মাঝে মাঝে কসম দেওয়াটা খারাপ না,,কি বলো??
.
আমার কান্না পাচ্ছে, ভাইয়া?
.
কিন্তু কেনো??কাঁদবে তো ও,,তোমার কান্না পাচ্ছে কেন?এখনো ভালোবাসো তাই না?
.
হুমম…
.
পাগলি…(মুচকি হেসে)একদম টেনশন নিও না তো।কাল ভার্সিটিতে যখন দেখা হবে সোজা গিয়ে বলে দিবে ভালোবাসো ব্যস।
.
কিন্তু??
.
হবে না?
.
উহুম…(অসহায় কন্ঠে)
.
আচ্ছা তাহলে এই প্ল্যান কেন্সেল।ভালোবাসো বলতে হবে না,,ওটা ওকে বুঝে নিতে দাও।।তুমি বরং ঠুস করে একটা সরি বলে দিবে ওকে?
.
লজ্জা লাগে…
.
লজ্জা তো চোখে থাকে।দেখো না বাংলা সিনেমাতে লজ্জা পেলে মুখ ডেকে নেয়।।তো তুমি একটা কাজ করো,,চোখ বন্ধ করে ছোট্ট করে একটা সরি বলে দিও কেমন??বাকিটুকু সে বুঝে নিবে…
.
যদি না বুঝে??
.
আমি আছি না??তুমি আর আমি মিলে পিটাইতে পিটাইতে বুঝাবো ওকে??এখন আমার পিচ্চি পাখিটা কি একটু হাসবে?
.
নাহ(মুখ গোমড়া করে)
.
কেন??(মন খারাপ করে)
.
কারণ পিচ্চি পাখিটা একটু না অনেকখানি হাসবে….হিহিহিহিহি
.
.
🍁
.
.
আজ দুদিন হতে চললো ফাহিম রিয়ার সাথে কথা বলে না।।স্যার,, স্টুডেন্ট ছাড়া অন্য কোনোভাবে ফাহিম রিয়াকক চিনেই না যেনো।।রিয়া যেচে কথা বলবে সে সুযোগও পাচ্ছে না।তার প্রধান কারণ হলো ফাহিম ক্লাস নেওয়ার পর এক মিনিটও বাইরে থাকে না সোজা অফিসে চলে যায়।।আর অফিসে গিয়ে ফাহিমের সাথে প্রেম আলাপ করা,,,আস্তাগফিরুল্লাহ…।রিয়ার মেজাজ আজ চরম রকম গরম।প্রথমত ফাহিম ওকে পাত্তা দিচ্ছে না। তাকাচ্ছে না পর্যন্ত অন্যদিকে সব মেয়েরা ওর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।।রিয়ার ইচ্ছে হচ্ছে সবকটার চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলতে তারআগে এই ভাইরাসটাকে খুন করতে।।।অসভ্য,,লুচু এতো সেজে আসা লাগে তোর??রিয়া নিজের মতো বিরবির করছিলো ঠিক তখনই পাশ থেকে অবন্তি বলে উঠলো…
.
দোস্ত??চল একটা জুস মেকার কিনে আনি!!!
.
জুস মেকার কেনো??(অবাক হয়ে)
.
মেরি জানুটাকে জুস বানিয়ে খেয়ে ফেলবো।।দোস্ত বল তো ব্যাটা এতো কিউট কেন??উনার মা কি খেয়ে জন্ম দিছে রে??ইশশশ কি সুন্দর করে কথা বলে।।দোস্ত আমি জাস্ট পাগল হয়ে যাবো…
.
তুই কি স্যারের কথা বলছিস??ফাহিম স্যার?(ভ্রু কুচঁকে)
.
অবিয়েসলি,,মাই অনলি ক্রাশশশ….উমমমমম্মাহহহ
.
ছিহ,, ইউ চিপ।। উনি তোর স্যার মাইন্ড ইট অবন্তি।।(রাগী গলায়)
.
আরে তুই রাগ করছিস কেন??আজ স্যার কাল জামাই হবে,, তারপর বাচ্চা..
.
শাট আপপপ..(হালকা জোড়ে)
.
রিয়ার চিৎকারে সবাই ওদের দিকে ফিরে তাকালো।।ফাহিমও অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে রাগী গলায় বলে উঠলো…
.
স্ট্যান্ড আপ…(রিয়া আর অবন্তি দাঁড়াতেই)
.
এটা পার্ক না যে বসে বসে রঙ ঢঙের গল্প করবেন।।ইটস আ ক্লাস রুম।।সো গেট লস্ট।।
.
স্যার এক্চুয়েলি.. (অবন্তি)
.
আই সেইড গেট…
.
এটুকু বলার সাথে সাথেই রিয়া তুমুল গতিতে ব্যাগটা কাঁধপ নিয়ে একটা রাগী লুক নিয়ে বেরিয়ে গেলো।।পেছন পেছন দৌড় গেলো অবন্তি।
.
দোস্ত রে।।আমি হার্ট আট্যাক করুম রে।।আমাকে হসপিটালে নিয়ে যা…
.
ঢং বন্ধ কর।।মেজাজ খারাপ করিস না অবন্তি।
.
সিরিয়াসলি দোস্ত কি এটিটিউট।। কেমন একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব,,দেখেছিস।।।ইচ্ছে তো করছিলো উনার গালে টাইট একটা কিস দিয়ে দিই।।
.
তুই আরেকটা কথা বললে আমি তোকে জুতা পেটা করবো।।।বলে রাখলাম(প্রচন্ড রেগে, জুতো হাতে নিয়ে)
.
আচ্ছা বাবা….আর বলবো না।।জুতো পড়ে নে,,মানুষ তে ফকুন্নি বলবে।।(রিয়া তাকাতেই)বলবো না তো,,একদম সত্য দোস্ত।।চল ক্যান্টিনে যাই(ঢোক গিলে)
.
রিয়া আর অবন্তি ক্যান্টিনে বসে আছে।অবন্তি বার্গার চিবোচ্ছে আর বকবক করে চলেছে।।আর রিয়া রাগী রাগী ফেস নিয়ে কফির কাপে চুমুক দিচ্ছে।ওর এই মুহূর্তে ফাহিমকে খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে।।শুধু খুন না কেটে টুকরো টুকরো করে নদীতে ভাসিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।হঠাৎই পাশের টেবিল থেকে কিছু মেয়ের কথোপকথন কানে এলো।।তাতে যেনো রিয়া আরে জ্বলে উঠলো…
.
দোস্ত?সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টের ফাইম স্যারকে চিনিস??কি কিউট রে।।মনডাই কয় নিয়ে দৌড় দেই।
.
ম্যাথ ডিপার্টমেন্টের রাজ্জাক স্যারও কিন্তু অনেক ড্যাশিন।
.
আরে ফাহিম ব্যাটার সামনে ওই রাজ্জাকের খাওয়া আছে নাকি??
.
তা ঠিক,, ফাহিম ব্যাটার ঠোঁটের নিচের তিলটা কিন্তু চরম।।ব্যাটার হাসি দেখলে আমার হার্ট আট্যাক হওয়ার সম্ভাবনা ৪০% বেড়ে যায় রে।
.
স্যারের এটিটিউট দেখছিস??ব্যবহারও চরম।।স্যার যদি বলতো এক কোটি টাকা যৌতুক দিলে আমায় বিয়ে করবে তাহলে আমি ব্যাংক ডাকাতি করে হলেও টাকা যোগার করতাম।।
.
সত্যি রে,,ইচ্ছে করে স্যাররে সামনে বসায় রাখি।।ব্যাটা এতো কিউট কেন??
.
রিয়া আর কিছু শোনার অপেক্ষা করলো না।।রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চেয়ারটা উল্টে ফেলে সোজা গেটের দিকে রৌওনা দিলো।।ওর এখন রাগের চোটে কান্না পাচ্ছে।।শুধু কান্না না ভীষন রকম কান্না পাচ্ছে।।ওর ভাইরাসকে কেনো অন্যরা ওভাবে দেখবে।।আর ভাইরাসই বা দেখতে দেই কেন??লুইচ্চা একটা।এদিকে ঘটনার আকস্মিকতায় অবন্তি থ।।কিছুক্ষণ ব্যাপারটা বুঝে নিয়েই রিয়ার পেছনে দৌড় লাগালো।।ও কিছুতেই বুঝে উঠতে পাচ্ছে না রিয়ার হয়েছেটা কি??এমন অদ্ভুত বিহেভ কেনো করছে?কিছুদূর গিয়েই থমকে দাড়ালো রিয়া।।একটু সামনেই ফাহিম একাউন্টিং ডিপার্টমেন্টের মুনিরা মেম এর সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।।মেমও যেনো ঢলে পড়ে যাচ্ছে তা উপর।।যত্তসব নেকামো।।এবার রিয়া আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলো না।।সোজা ওদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।। এভাবে হাঠাৎ সামনে এসে দাঁড়ানোই ফাহিম মুনিরা দুজনেই বেশ অবাক।।রিয়া সেসব পাত্তা না দিয়ে ফাহিমকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো…
.
এই একটু এদিকে আসো তোমার সাথে কথা আছে।।
.
রিয়ার কথায় মুনিরা তো অবাক ফাহিম তার থেকেও বেশি অবাক।।এই মেয়ে বলে কি?মাথা ঠিক আছে তো??ফাহিম কি বলবে ঠিক বুঝতে পারছে না,,তার আগেই মুনিরা বলে উঠলো..
.
এই মেয়ে কোন ডিপার্টমেন্ট?? স্যারের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানো না??ম্যানের্স নেই??এমন ভাবে কথা বলছো ফাহিম তোমার বয়ফ্রেন্ড।।নাম কি তোমার আজই কমপ্লেইন করবো।।(রাগী গলায়)
.

জি সাইকোলজি ডিপার্টমেন্ট।।আমার নাম হলো রিয়া ফাহিম আহমেদ।।উনি আমার বয়ফ্রেন্ড নন আমার হাজবেন্ড,, এনি প্রবলেম মেম??সরি টু ছে বাট আমার বরের সাথে কিভাবে কথা বলবো তা নিশ্চয় ভার্সিটি ঠিক করে দিবে না।। তাছাড়া আমরা তো ক্লাসেও নেই,,তবু যদি আপনার খারাপ লাগে সরি মেমমম।
.
ফাহিম অবাক চোখে রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।।কি বলছে রিয়া??ফাহিম ওর হাজবেন্ড?ও কি সত্যিই পাগল হয়ে গেছে নাকি ও ভুল শুনছে,কোনটা??এদিকে মুনিরাও চরম অবাক।।এই মেয়ে ফাহিমের বউ??
.
ফাহিম?তুমি বিয়ে করেছো??বলো নি তো…(অবাক চোখে)
.
আ..এক্চুয়েলি…
.
শাট আপ… মেম আপনাকে না হয় পরে দাওয়াত করে খাওয়াবো এখন আমরা আসি কেমন?ভালো থাকবেন।।কি হলো চলো…
.
কথাটা বলেই ফাহিমের হাত টেনে গেটের দিকে চলে গেলো রিয়া।।ভার্সিটির সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।কিন্তু তাতে রিয়ার বিন্দুমাত্র মাথা ব্যাথা নেই।।ফাহিম যেনো ট্রমার মধ্যে আছে।।সবকিছুই ওর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।।রিয়ার হঠাৎ হলোটা কি??এদিকে অবন্তীর অবস্থা হলো…”আমি ঞ্জান হারাবো,,মরেই যাবো,,বাঁচাতে পারবে না কেউ” টাইপ।।
.
.
🍁
.
.
রিয়া আর ফাহিম গাড়িতে পাশাপাশি বসে আছে।।দুজনেই চুপচাপ।।ফাহিম চুপচাপ সামনের দিকে তাকিয়ে আছে কোনো প্রশ্ন করছে না কারন রিয়ার কসমের কথা তার বুকে এখনও কাঁচা ঘায়ের মতো রয়ে গেছে।এদিকে রিয়াও কথা বলছে না।।বেশ কিছুক্ষণ পর ফাহিমই গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করে উঠলো..
.
এসবের মানে কি?আপনি কি জানেন?একজন টিচারের সাথে এমন বিহেভের জন্য আপনার কি সাজা হতে পারে???আপ….
.
আর কিছু বলার আগেই ফাহিমকে অবাক করে দিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলো রিয়া।।ফাহিম রিয়ার এই হঠাৎ কান্নার কোনো কারণ খুজে পাচ্চে না।।মেয়েটা কি সাজার কথা শুনে কাঁদছে??সে কি জানে না,,ফাহিম মুখে বললেও ওকে কোনো শাস্তি দেওয়ার সাহস,,ক্ষমতা কোনটাই ওর নেই।।রিয়ার কান্নার গতি ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে।।তারসাথে বেড়ে চলেছে ফাহিমের বুকের চিনচিনে ব্যাথাটা।।অবশেষে ফাহিম করুন গলায় আবারও বলে উঠলো””” ডুন্ট ক্রাই প্লিজ।।আমি আপনার নামে কমপ্লেইন করবো না।।তবু কাঁদবেন না।।ইটস টোটালি ওকে।।””””কথাটা শেষ হতেই ফাহিমের কলার চেপে ধরলো রিয়া…
.
এই তুই আমায় ভালোবাসিস না??বল ভালোবাসিস…
.
রিয়ার কথায় ফাহিম যথেষ্টই অবাক কি হচ্ছে কিচ্ছু বুঝতে পারছে না সে।।সে যে রিয়াকে ভালোবাসে এটা তো নতুন না,,যে নতুন করে বলতে হবে।।এটা রিয়ার জানা কথা তবে কেন??
.
আপনি চুপ করে আছেন তারমানে আপনি আমায় ভালোবাসেন না।।(কান্নার গতি বাড়িয়ে)ইউ ডুন্ট লাভ মি।।ইউ ডুন্ট।।
.
আপনি কাঁদছেন কেন??
.
চুপপ একদম চুপপ।।এখন আমি আপনি হয়ে গেলাম??যেই না সুন্দর মেয়ে চোখে পড়লো ওমনি আমি আপনি??কই গেলো তোর ভালোবাসা??লুচু একটা।।তুই আমায় ভালোবাসিস না।।ইউ চিটেট মি।।
.
কথাটা বলেই গাড়ির ড্রয়ার থেকে কাঁচি নিয়ে হাতে চেপে ধরলো।।ফাহিমের যেনো জান বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম।। কোনোরকম রিয়ার হাত থেকে কাঁচিটা ছাড়িয়ে নিয়েই দিলো এক ধমক..
.
কি হইছে.?সমস্যা কি তোমার??পাগল হয়ে গেছো??এসব কি?তুমি জানো না আমি তোমায় ভালোবাসি??এটা নতুন কিছু নয় রিয়া।।আই ম্যাডলি লাভ উইথ ইউ।।সেটা তুমি যে আমাকে তোমার থেকে দূরে রাখছো,,, তাও ওই ডিসকাসটিং কসমের মাধ্যমে।।
.
(কলার চেপে ধরে) আ..আমি দূরে রাখলেই তুই দূরে থাকবি কেন??হোয়াই??আর এতো সাজুগুজুর কি আছে হ্যা??অন্য মেয়েরা আমার জিনিসে কেনো তাকাবে??আপনি আমার তো শুধুই আমার।।অন্য কেউ তাকালে খুন করে ফেলবো তোকে…
.
ফাহিম এতোক্ষণে বুঝতে পারছে ম্যাডাম জেলাস।।ফাহিম বেশ অবাক রিয়ার রিয়েকশন দেখে।।আবার খুশিও ওর অধিকারবোধ দেখে।।ওর বলা,,, “আপনি আমার” কথাটা ফাহিমকে স্বর্গীয় সুখ এনে দিচ্ছে বারবার।।
.
.
#চলবে
.
(চেক করি নি।।।অনেক ভুল হয়েছে নির্ঘাত।।প্রচুর ঘুম পাচ্ছে চেক করার ধৈর্য নেই।।একটু ম্যানেজ করে নিয়েন প্লিজ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here