অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)part:28

অবশেষে ভালোবাসি (সিজন ২)part:28
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤

.
.
🍁
.
আপনি ঠিক আছেন তো?জ্বর টর উঠে নি তো?এমন পাগলের মতো বিহেভ কেনো করছেন হুয়াই?
.
পাগলের মতো বিহেভের কি দেখলে মিস.ঝগড়ুটে?
.
আপনার সব কথায় পাগলের মতোই লাগে আমার।।আপনি কি কখনো সিরিয়াস হতে পারেন না?
.
এইযে.…ভালো কথা পছন্দ হলো না তো?বারবার তো আমার বাচ্চার মা হিসেবেই উপস্থিত হচ্ছো।। তাই বলছি চলো বিয়ে করে ফেলি তাহলে নগদে প্রেগনেন্টও হয়ে যাবে,,,আমার বউও হয়ে যাবে।।আমাকে আর মিথ্যাও বলতে হবে না।আইডিটা সুন্দর না?(দাঁত কেলিয়ে)
.
আপনার মাথা।।(দাঁতে দাঁত চেপে)
.
অদিতির রাগে সারা শরীর জ্বালা করছে।।আর আয়ান মুচকি মুচকি হাসছে।।আচ্ছা এই ছেলেটা কি কখনো সিরিয়াস হতে পারে না??এমন উদ্ভট বিহেভ কেনো করে সব সময়??অদিতির এই মুহূর্তে আয়ানকে ধাক্কা দিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দিতে ইচ্ছে করছে।।অসভ্য ছেলে,, মুখে কিছু আটকায় না নাকি।অদিতি বুকের উপর হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে।।রাগে নাক মুখ ফুলে একাকার।কিন্তু সেদিকে আয়ানের খেয়াল থাকলে তো?সে মিষ্টি হেসে আবারও বলে উঠলো….
.
ওয়াহ্…পার্ফেক্ট…
.
অদিতি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়েই বলে উঠলো,, “হোয়াট?” আয়ান আবারও মুচকি হেসে দু’পা এগিয়ে এসে একবার অদিতির চোখের দিকে তাকিয়ে…চোখদুটো অন্য একটি জায়গায় স্থির করলো।অদিতিও ভ্রু কুঁচকে কৌতূহল নিয়ে তার দৃষ্টি অনুসরণ করলো।।কিন্তু নিচের দিকে তাকিয়েই তার চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম।। তারাতারি সোজা হয়ে দাড়ালো সে।।অদিতির অস্বস্তি দেখে হাসলো আয়ান।।চোখ দুটো এদিক ওদিক ঘুরিয়ে বলে উঠলো…
.
এখন ঢেকে কি লাভ?যা দেখার দেখেই ফেলেছি।।তিলটা কিন্তু বেশ সুইটেবল জায়গায়।এমনটা সাধারণত দেখা যায় না।।একদম নাভির উপর টকটকে কালো তিল।।উফফ…এককথায় জোস(চোখ টিপে)
.
এমনভাবে বলছেন “সাধারনত এমনটা দেখা যায় না” মনে হচ্ছে দুনিয়ার অর্ধেক মেয়েদের চেক করে এসেছেন।।লুচু একটা।(মুখ ভেঙিয়ে)
.
হা হা হা….মিস.ঝগড়ুটে এভাবে মুখ ভেঙিয়েও না…প্রেম প্রেম ভাব আসে।।পরে গুজব সত্যি হয়ে গেলো আমায় দোষারোপ করতে পারবে না বলে দিলাম।।আর হ্যা…পৃথিবীর অর্ধেক মেয়ে চ্যাক না করা হলেও দুই তিনশো তো হবেই।।এগুলো কি এনাফ না?
.
ছিহ্..দুই তিনশো???আচ্ছা আপনার এইডস টইডস নেই তো??কে জানে হতেও পারে।।হুহ
.
এইডস ও আমায় দেখে ভয় পায় মে বি।।হা হা হা…
.
সিরিয়াসলি একটা কথা বলি?আমি ভাবতাম আপনি মেয়েদের সাথে ফ্লার্টিং করলেও একটা ভালো মানুষ।।বাট আই ওয়াজ রং।আপনার মতো প্লে বয় টাইপ ছেলে আমি আমার জীবনে দেখি নি।।নট ইভেন এনি ড্রামা অর নভেল।
মেয়েদের ফিলিংসের প্রতি আপনার ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধও নেই।।ইউ আর জাস্ট আ বিস্ট।
.
কথাটা বলে অদিতি যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই তার হাতটা খপ করে ধরে ফেললো আয়ান।।নিজের সাথে শক্ত করে জরিয়ে নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো…
.
আই নো হোয়াট ইজ ইমোশন।।আমাকে জার্জ করার সাহস তুমি কোথায় পেলে।।এতোদিন আমার সাথে ছিলে…আমি যদি পশুই হতাম তাহলে এখন পর্যন্ত আস্ত থাকতে না তুমি।।একরুমে থেকেছো আমার সাথে….তোমার এই তিলটা একসপ্তাহ আগেই চোখে পড়েছে আমার,,,কখনো কিছু বলেছি??আর আসছে ওই মেয়েদের কথা??কাউকে আমি ফোর্স করি নি।।ওরা নিজের গরজে এসেছে আমার কাছে।।।আমি লুচু..??হা হা হা হা… আচ্ছা??তোমরা দেখাতে পারলে আমার দেখতে দোষ কি??দেশে এসে কোনো মেয়ের সাথে ক্লোজ হয়নি কজ আই নো ওরা সেনসেটিভ হয়।।আর না জেনে বলে দিলে আমি পশু??এই মুহূর্তে তোমায় দেখাতে পারি আয়ান পশুর রূপ নিলে তা কতোটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। বাট আই এম নট ইন্টারেস্টেড অন ইউ৷।। ইউ আর নট মাই টাইপ।
.
কথাটা বলে অদিতিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে সেখান থেকে চলে এলো আয়ান।কেনো জানি রাগটা কন্ট্রোলই হচ্ছে না আজ।।অদিতিও নিজেকে সামলে নিয়ে টলমলে চোখে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।।হাতদুটোতে ব্যাথা করছে প্রচুর।।
.
🍁
.
ছাড়ুন আমায়।একদম ধরবেন না।আপনার ধারনা আছে আমি আপনাকে কতোটা ভালো মনে করেছিলাম??আপনিও যে এমন হবেন সেটা কে জানতো?
.
আজব…এমন করছো কেন? আমি আবার কি করলাম?
.
কি করলেন মানে??আপনি মেয়েদের কোমরের দিকে তাকিয়ে থেকে কোমরের শেইপ দেখেন।।ছি ছি।শেষ পর্যন্ত আমার স্বামী কিনা লুচু??
.
শাট আপ রিয়া।।আমি সব মেয়েদের কোমরের দিকে তাকায় নাকি??শুধু তোমারটার দিকেই তাকিয়েছিলাম।।আর তুমি তো আমার বউই।
.
যখন তাকিয়েছেন,,তখন তো বউ ছিলাম না।।এ্যা এ্যা এ্যা…
.
এবার আর ফাহিমের সহ্য হচ্ছে না।।কি মেয়েরে বাবা!! সত্য বলেছে তাতেও দোষ।।রিয়াকে একটানে সামনে এনে রেলিঙের সাথে চেপে ধরে ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো ফাহিম….
.
ইউ নো ওয়াট??শুধু কোমরের শেইপ না অনেক কিছুই খেয়াল করেছি তোমার।।এখন কি তার জন্য কাঁদবে??যদি কাঁদো তো স্টার্ট করো। আমি লাবন্য মেয়েটার খুঁজ করি তার আমাকে নিয়ে কোনো প্রবলেম নেই।।ওকে নাও???
.
কথাটা বলে ফাহিম ঘুরতে নিলেই,,ফাহিমের শার্ট টেনে ধরলো রিয়া।।ফাহিম তাকাতেই কাঁদো কাঁদো চোখে বলে উঠলো…”ভালোবাসি”
.
কি ভালোবাসো?আম?নাকি টমেটো?
.
আপনাকে ভালোবাসি।
.
বাট আমি তো বাসি না।(গম্ভীর মুখে)
.
কথাটা শুনেই রিয়ার মাথায়,রক্ত উঠে গেলো।।দৌড়ে গিয়ে ফাহিমের বুকে কিল,,ঘুষি দিতে লাগলো ক্রমাগত।।”কি ভালোবাসিস না আমায়??বল ভালোবাসিস…বল…”
.
আরে বাবা…বরকে এতো মারে কেউ..?এমনে মারলে তো রাস্তার পাগলও ভালোবাসি বলে দিবে রে বাবা।।
.
এবার শুরু হলো রিয়ার কান্না।।কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি তুলে ফেলছে বেচারি।। আর ফাহিম মিটিমিটি হাসছে।।ইশশ…এই মেয়েটা ওকে এতো ভালো কি করে বাসতে পারে??হাউ??রিয়াকে আলতো হাতে বুকে চেপে ধরলো ফাহিম।প্রথমে ছুড়াছুড়ি করলেও একপর্যায়ে শান্ত হয়ে গেলো রিয়া।।ফাহিম একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মুচকি হাসলো।।বুকটা আজ ভরা ভরা লাগছে তার।।কি শান্তি!!
.
.
.
সকাল থেকে বমি করে চলেছে অদিতি।।এখন ১২ টা বাজে। এই নিয়ে পাঁচবার বমি করা শেষ তার।।বমির কারনে খেতেও পাচ্ছে না সে।।মেয়ের বমি করা দেখেই অদিতির মা ফিট।।আয়ানের কথায় সত্য মেয়ে তার প্রেগনেন্ট এখন কি হবে??ইঞ্জিনিয়ার পাত্রটা ছুটে গেলো হাত থেকে।।উনার মাথায় বালতির পর বালতি পানি ঢালা হচ্ছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।সবাই সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আয়ানের দিকে।।সবার সন্দেহ প্রকট।।ছেলে-মেয়ে একসাথে ছিল..কে জানে কোনো অকারেন্স ঘটিয়েছে কি না?আয়ান সোফায় বসে নখ কামড়াচ্ছে,, ব্যাপারটা তার বোধগম্য হচ্ছে না।।সে যে কিছুই করে নি তা যে কেউ বিশ্বাস করছে না সেটা ওদের দৃষ্টি দেখেই বুঝা যাচ্ছে।।আয়ানের চিন্তা একটায় কেমনে কি??আল্লাহ রেডিমেট দিয়া দিলো নাকি??ভারি চিন্তার বিষয়…
.
#চলবে🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here