অস্তিত্বের খোঁজে পর্বঃ১০

0
2978

অস্তিত্বের খোজে
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ১০



– শুভ্রে কথা শুনে বেশ ভরকে যায় আকিক। চোখের সামনে যা দেখছে সেটা অন্তত আকিক আশা করেনি। একদম সব সাজানো গোছানো। শেষ ভরসা পরী ছিল….. অও দেখছি স্বাভাবিক বউয়ের মত আচরন করছে। মেয়েটা কে কি দিয়ে এরা মুখ আটকালো।



– বসেন বসেন এক সাথে নাস্তা করি বলে নিতাই সেন তাদের আমন্ত্রন করল।
– না মানে আমরা একটা রিপোর্ট পেয়েই এসেছি। আপনার নাতী শুভ্র সেন নাকি একটি মেয়েকে…………..।


– ইন্সপেক্টর থানায় গিয়ে একটা মানহানির মামলার প্রস্তুতি করেন সাথে আপনাদের অকারনে বাসায় হানা দেওয়ার জন্যও রিপোর্ট লেখানোর জন্যও। তথ্য যাচাই বাছাই না করে কেমনে একজন সম্মানিত পরিবারের উপর অকারনে বদনাম আরোপ করতে এসেছেন। আমি তো আমার স্ত্রীর সামনেই আছি তাকে একবার জিঙ্গাসা করুন….. তার অমতে কোন কাজ করেছিনা কি! বলেই পরীর দিকে চেয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে তাকাল শুভ্র।



– শয়তান, বান্দরের বাচ্চা, উজবুক, হারামি,ব্যাটা বজ্জাত কোথাকার শুধু মানুষ গুলো একবার বাসা থেকে বিদায় হয়ে যাক তোর ৩২ পাটির দাঁত কেলানো যদি আমি বের না করেছি আমার নাম পরী নয়।


– কি পরী চুপ করে কেন আছো ওনাদের কিছু বল। আমাদের সম্মান নিচে নামানোর জন্য কিছু লোক টানাহিচড়া করছে আমাদের ২ জনকে নিয়ে…. বলেই আকিকের দিকে তাকালো শুভ্র।


– দুঃখিত সব স্বাভাবিক তো দেখছি। আমাদের আগে ভাল করে খোঁজ খবর নেওয়া উচিত ছিল। Sorry sir উপর মহলে দয়া করে কিছু বলবেন না।


– জানেন ইন্সপেক্টার আপনা আর মিডিয়ার লোক একই রকম… বড় বড় সম্মানীয় লোকদের কথা তিল থেকে তাল করে ফেলেন। নাস্তা করে যান এবং একটা মামলার প্রস্তুতি নেন। রির্টাট প্রাপ্ত ব্যারিস্টার নিতাই সেনের পরিবারের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ করা যে কতটা ভয়াভয় সেটা বুঝাইতে হবেনা বলে নিতাই সেন তাদের দিকে তাকালো।



– Sir sir sorry sir ভূল হয়ে গেছে আমাদের। না বুঝে কাজ করেছি আর হবেনা এমন ভূল।


– না না তা কি করে হয় আপনি এক্ষুনি প্রস্তুতি নেন মামলার বলে নিতাই সেন উঠে গেল।

– ধুর মিয়া আপনার কথা শুনে লোভে পরে এমন কাজ করলাম এখন নিজের চাকরি নিয়ে টানাটানি বলেই আকিক কে রেখেই চলে গেল ওরা।



– কি আকিক মাঠে নেমেই অপদস্থ হলিতো! আমার ক্যারিয়ার ধংস করবি…..আমার বউ কে নিজের বউ বানাবি……আমাকে ধংস করে দিবি.. এই কথা গুলো কই গেল আকিক। পরী তোর বৌদি হয়। আর বৌদি মায়ের মত হয়। ঐ সম্মান টাই ওকে দিস।



– আকিক রাগের চোটে এমন একটা কাজ করে ফেলল যা কেউ কল্পনাতেই ভাবতে পারেনি।
……….
একদম সোজা খাবার টেবিলের সামনে গিয়ে পরীকে এক ঝটকায় চিয়ার থেকে তুলে ঠাশশশ্ ঠাশশশ্ করে ২ চড় বসিয়ে দিল এবং জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল। পরীও টাল সহ্য না করতে পেরে ফ্লোরে পড়ে গেল।



– একদম চোখের সামনে ঘটনা গুলো এক নিমিষেই ঘটে গেল। আকিকের পুরো চোখ লাল হয়ে গেছে।এই তুমি কিভাবে এরকম বউ সেজে বসে থাকতে পারলে! এ্যাট লাষ্ট সত্য কথাতো বলতে পারতে।


– এই থার্ড ক্লাস মেয়ে…….. বড় বাড়ির লোভ সামলাতে পারনা। সারা জিবন পায়ের উপর পা তুলে খেতে পারবে তাই নিজের ধর্মও ত্যাগ করে বসলে। আরে আমিও শুভ্রর মত তোমায় আরাম আয়েস দিতে পারতাম। ওর থেকে আমার কি টাকা কম ছিল!
– ছিঃ তোমাকে দেখে আমার জাষ্ট ঘৃনা হচ্ছে। আমি এই মেয়ের জন্য পাগল ছিলাম যে নিজের স্বার্থের জন্য বেশ্যা গিরী করতেও প্রস্তুত। শুভ্র খুব তৃপ্তি দি……ছে বলা শেষ না হতেই শুভ্র আকিকের বুক বরাবর লাথি বসে দেয়। আকিক ছিটকে পড়ে যায়। শুভ্র আকিকের শার্টের কলার ধরে টেনে হিচড়ে তুলে ফটাফট কয়েকটা চড় বসিয়ে দেয়।

-এ…..ই তোর সাহস কি করে হয় আমার সামনে আমারই পরীর গায়ে হাত তোলা এবং অরুচিকর কথাবার্তা বলা!….. এত মাস হয়ে গেল আমি কখনো খারাপ উদ্দেশ্য ওর কাছে যায়নি। …. নিজের বিবাহিতা স্ত্রী হয়েও ওকে আমার রুমে কখনও শিফর্ট করিনি…….. আমি যাকে একদিনও খারাপ ভাষায় কথা বলিনি তুই কোন সাহসে এই ভাষা গুলো ব্যবহার করিস বলেই আকিকের গাল বরাবর একটি ঘুষি বসিয়ে দেয় শুভ্র।



– আকিকের নাক ও মুখ দিয়ে ঝর ঝর করে রক্ত পড়ছে। কৌশিক গিয়ে শুভ্রকে ধরে ফেলে। এই কি করছিস ও তোর খুব ভাল friend ছিল।


– Friend!…. friend my foot বলেই ঐ অবস্থায় আকিককে একটা লাথি বসিয়ে দেয়। যে friend হয় সে কখনও friend এর wife কে এই কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করে!


-কৌশিক শুভ্র কে টেনে হিচড়ে সরে নিয়ে যায়।

– ছাড়ো আমায়… ছাড়ো বলছি.. আজ ওকে মেরেই ফেলব আমি। আমার পরীর গায়ে হাত তোলা…..! ওর হাত না আমি ভেঙ্গে দিব।…. ঐ হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার অবস্থায় রাখবনা।


– চুপপপপপ বলে কৌশিক শুভ্রকে একটা চড় বসিয়ে দেয়। একটা মেয়েকে নিয়ে তোদের এত্ত ঝামেলা! যদি সেই মেয়ে তোদের কাউকে একজন কে ভালবাসত তাহলে এই লড়াইটা ২ জনের মধ্য স্বার্থক হত। তোরা ২ জনেই মেয়েটার জিবন নিয়ে খেলায় মেতে উঠেছিস।



– খেলাতো আপনার ছোট ভাই মেতে উঠেছে। এর ফলাফলের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলবেন। যার জন্য আমার গায়ে এতগুলো আঘাত করল ও… সেই যদি না থাকে…. বলেই আকিক চলে গেল।



– অর্পিতা গিয়ে পরীকে উঠায়। মাথা হেলে পরী কেঁদেই চলছে। এমন কাহিনী হবে ওকে নিয়ে এমন কল্পনাতেও আনেনি ও।



– সকাল থেকে এমনি ঝামেলার শেষ নেই তার মধ্য এই ঝামেলা। যত দোষ এই মেয়েটার। বলি বাসা থেকে বিদায় হয়না কেন। শনির দৃষ্টি পড়েছে। সয়ং শনি এসে বসবাস করছে সেখানে সুখ আসবে কোথা থেকে বলে বিমলা পরীর চুলের মুঠি ধরে হির হির করে টেনে নিয়ে গেল দরজার সামনে। বের হ এক্ষুনি আমার বাসা থেকে। তোর জন্য বাড়িতে আজ সুখ নেই। আকিক র্থেড দিয়ে গেল। জানি না কোনদিন বিপদ এসে পরে শুভ্রর উপর। দুনিয়াতে এত জায়গা থাকতে এখানে গছতে এলি কেন বলে পরীকে চড় মারে বিমলা।


– মা কি করছেন! মেয়েটাকে মারছেন কেন? ওর কি দোষ। আপনার নাতি ও জিবন নিয়ে খেলেছে। ওকে কেন মারছেন বলে পরীর কাছে যায় অনিতা।


– আরে বাব্বা জল এত দুর গড়িয়ে গেছে দেখছি। যে বউ কোন দিন আমার মুখের উপর কোন কথা বলেনি তারও দেখছি মুখে খৈ ফুটেছে। সব ওর জন্য। ঐ তুই এখনো দাড়িয়ে আছিস বলে পরীর হাত ধরে টান দিতেই শুভ্র এসে পরীর হাত ধরে ওর কাছে টেনে নিয়ে বলে ও কোথাও যাবেনা দিদুন। যদি যেতে হয় তো আমার সাথেই যাবে।



– আমি এক ঝটকায় শুভ্রর কাছ থেকে নিজেকে ছেড়ে নিয়ে উপরে দৌড়ে আসি এবং নিজের রুমে এসে গায়ের শক্তি দিয়ে দরজা ঠাস করে লাগিয়ে দেই।



– শুভ্র আর কৌশিক ২ জন ২ জনার দিকে মুখ চাওয়া চাওয়ি করল। এদের আর বুঝতে বাঁকি রইল না পরী কি করতে যাচ্ছে। ২ ভাই একসাথে দৌড় দিল উপরে। একসাথে দরজায় ধাক্কা দিল। এই পরী দরজা খোল। এখুনি খোল বলছি। এভাবে সমস্যা সমাধান হবেনা। ভুল কাজ করে ফেলনা। আমার কথা একবার ভাবো।

– এই পরী দরজা খোল এমন কিছু করনা। তুমি যেভাবে থাকতে চাও আমি তোমার বড় দাদা হয়ে সেই ব্যবস্থা করে দিব বলে কৌশিক দরজায় ধাক্কা দিল। অনিতা,নিদ্রা,অর্পিতা,অনিল সবাই উপরে দৌড়ে এসে পরীকে ডাকতে লাগল।
– ও পরী দিদি দরজা খোল সবাই তোমায় ডাকছে শুনতে পাচ্ছ না বলে অর্পিতা কেঁদে উঠল।



– পরী খাটে চিয়ার এনে ফ্যানের সাথে ওড়না সেট করে ফাঁস তৈরী করে ফেলল। আর না আমার জন্যই সব সমস্যা এই আমি টা না থাকলেই সব সলভ্ হয়ে যাবে বলেই গলার ভিতর ফাঁস দিয়েই চিয়ার ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।



– ভিতরে কিছুর শব্দ হতেই শুভ্র পাগলের মত গায়ের শক্তি দিয়ে লাথি মারতে থাকে দরজায়। ওরা ২ জনে এক সাথে কয়েকটা শরীর দিয়ে ধাক্কা দিতেই দরজার ছিটকি খুলে যায় এবং চোখের সামনে পরীকে ঐ অবস্থায় দেখে শুভ্র গিয়ে পরীকে জেগে ধরে আর কৌশিক গলা থেকে ওড়নাটা খুলে ফেলে।



– পরীকে নিচে নামিয়ে শুভ্র পরীর গা ঝাকিয়ে বলে এই পরী….. পরী! তুমি এটা কেন করতে গেলে। আমার কথা একবারও মনে পড়ল না কাজটা করতে।কৌশিক এমার্জেন্সি পারিবারিক ডাক্তর কে আসতে বলে। প্রাথমিক যা চিকিৎসা দেওয়ার দরকার শুভ্র দেয়ে। এমনি কৃত্রিম শ্বাস ও দেয় শুভ্র পরীকে।



– কিছুক্ষণ পর ডাক্তার আসে এবং টিট্টমেন্ট শুরু করে দেয়। প্রায় আধাঘন্টা আপ্রান চেষ্টায় পরী একবার ও…উ..ম..হ্ শব্দ করে জোড়ে শ্বাস নেয়।



-ডাক্তার স্বস্তিকর একটা নিস্বাস নিয়ে বলে আর চিন্তা নেই। ওর রেষ্ট দরকার। একটা ইনজেকশন পুশ করে দিচ্ছি। ওর লম্বা ঘুমের প্রয়োজন। কিছু সমস্যা হওয়ার কথা না আর। তবে বলা যায় না। কিছু হলে আমাকে সাথে সাথে ইনর্ফ্রম করবেন। ঘুম ভাঙ্গলে কিছু খাবার খাইয়ে দিবেন। মেয়েটা কে শুভ্র বলে ডাক্তার ওর দিকে তাকাল।
……………………?
– ওদের কোন কথার রেসপন্স না পেয়ে ডাক্তার চলে যায়।



– নিতাই আজ বিমলাকে ইচ্ছামত কথার ধোলায় দিচ্ছে ওর রুমে।




-মেয়েটা আসার পর থেকে ও তোমার চোখের ত্রিশূল হয়ে আছে। খেতে কি নিতে সব সময় খোঁটা দিতেই থাকো। তুমি যে কেমন সভ্য ঘরের মেয়ে সেটা তোমার ব্যবহারেই পরিচয় দেয় বলে নিতাই বিমলাকে ঝাড়ি দেয়।

– কিহ্ আমার বংশ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোল তুমি!পরের মেয়ের জন্য আমায় এত বড় কথা বললে তুমি। মরতেই তো গিয়েছিল। মরল কই। জোরে শক্ত করে গলায় ফাঁস দিতে পারলনা। মরার শুধু অভিনয় করল!
মরলে আপদ চুকে যেত।

– এবার নিতাই আর সহ্য না করতে পেরে বিমলাকে একটা কষে চড় মারল। মুখে লাগাম টানো তোমারই মঙ্গল হবে…..

– বিমলা চিৎকার করে উঠে বলল অঝঙ্গা মেয়ের জন্য তুমি আমার গায়ে হাত তুললে আজ। এই তোমার শিক্ষা! বলেই চিৎকার করে উঠে বলল ও অনিল দেখ তোর বাবা আজ আমার গায়ে হাত তুলেছে ঐ বানের জ্বলে ভেঁসে আসার মেয়ের জন্য।

– এই চুপপপপপ একদম চুপপপপপ দিন দিন কথার মনে হয় পিএসডি করে নিচ্ছে। ভগবান যে কেন এই ধরনের বাঁচাল মেয়ে মানুষ কেন বানালো তিনিই ভাল জানেন। আর একটা কথা যদি বলছো পরী কেন আমিই বাসা ছেড়ে চিরদিনের মত বিদায় হব। মুখও আমার দর্শন করতে পারবেনা কোন দিন। বড্ড বেশি বেড়ে গেছনা! একদম চাঁপা ভেঙ্গে দিব আর যদি একটা কথা বলছো!

– ধমক এবং হুমকি শুনে বিমলা চুপ করে যায়। এই প্রথম ওকে এতটা শাষিয়েছে নিতাই। এক তো মেয়েটার এই অবস্থা সেখানে আবার মৃত্যু কামনা করছে ভাবা যায়! এই জন্য বলে এদের হাটুর নিচে বুদ্ধি নিয়ে শুধু মানুষ কে জ্বালাতেই পারে। আর এদের ঘটে কোন বুদ্ধি নাই বলে নিতাই চলে গেল।



– শুভ্র অফিসে চলে গেল জাষ্ট শুধু সিগনেচার করার জন্য।


– শুভ্রদের বাসায় আকিকের বাবা-মা ২ জনে এসেছে। পলা এদের নাস্তা দিয়ে নিতাই সেন কে ডাকতে গেল।

– নিতাই সেন আসতেই বলল Sir আমার ছেলের লাইফটা নষ্ট করে দেন না। পুলিশ স্টেশন থেকে কল আসছে আপনারা নাকি মামলা করবেন! ও অবুঝ কিছু বোঝেনা ওকে ক্ষমা করে দেন।


– মি. আমিনূল সাহেব আপনারা আসুন আমার সাথে আসেন বলেই আকিকের বাবা-মা কে পরীর রুমে নিয়ে গিয়ে বলল দেখেন মেয়েটার কি হাল হয়েছে।

– পরীর নিথর শরীরটা পড়ে আছে। গলায় লাল দাগ যেন কেটে বসে গছে। দুধে ধোয়া হলুদ রঙ্গে লাল দাগটা বড্ড বেমানান দেখাচ্ছে তাই না আমিনূল সাহেব। দেখেন ওকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে অল্প একটুর জন্য মেয়েটা বেঁচে গেছে। মেয়ে টা সুইসাইড করতে গিয়েছিল যার সূচনা টা আপনার কুলাঙ্গার ছেলে এসে করে গেছে এর পরও বলবেন আপনার ছেলে অবুঝ!

আমরা ছেড়ে দিলেও শুভ্র আপনার ছেলেকে ছেড়ে দিয়ে কথা বলবেনা।
– আপনার ছেলে আমাদের সম্মান আর এই মেয়েটির জিবন নিয়ে টানাহিচড়া শুরু করে দিছে ওকে সামলান। এর শাস্তি ওকে পেতেই হবে।

– পরীর এই অবস্থা দেখে আকিকের বাবা – মা আর কথা বলার সাহস না করে চলে গেল।



-প্রায় ঘন্টা ২য়েক পর শুভ্র বাসায় ফিরল। এসেই পরীর রুমে গেল। পরী ঘুমিয়ে আছে। ওর কপালে একটা kiss করে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেস হল। অনিতা এসে বলল শুভ্র চল বাবা কিছু খেয়ে নে। পুরো দিন কিছু খাসনি।


– মা পরী পুরো দিন না খেয়ে ওভাবে শুয়ে আছে আমি ওকে ছাড়া ক্যামনে খাই বল। আমার গলা দিয়ে যে খাবার নামবে না। তোমরা খেয়ে নাও পরী উঠলে একসাথে খাব। অনিতা চোখের জল ফেলে চলে গেল।



– শুভ্র পরীর রুমে এসে দেখে অর্পিতা ওর পাশে বসে আছে।
– দাদা পরী দিদির কখন ঙ্গান ফিরবে।
– ধুর পাগলি ঙ্গান ফিরার কথা কেন বলছিস ও তো ঘুমাচ্ছে। যা রুমে যা অনেক রাত হয়ে গেছে ঘুমা গিয়ে।


– অর্পিতা চলে গেলে শুভ্র দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে এসে পরীর পাশে সুয়ে পড়ে। মেয়েটা একদম শাড়ী সামলাতে পারেনা। কিন্তু শাড়ীতেই ওকে বেশি সুন্দর লাগে বলে পরীকে কয়েকটা কিস করে বুকে টেনে নেয়।



– একটু পর পরীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। ড্রিম লাইটে দেখল শুভ্র ওকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে আছে। অনেক বার নড়া চড়া করতে লাগল কিন্তু শুভ্র ওকে ছাড়ছেই না!


– পরী কিছু খাবা! বলে শুভ্র ওর কপালে আবার কিস করে।
– উমমম্ ছাড়ুন বলছি বলেই শুভ্রর সাথে ধস্তা ধস্তি শুরু করে দেয়।
– এই তোমার এই অবস্থায় এত শরীরের জোড় আসে কই থেকে বলে ২ হাত দিয়ে পরীর হাত চিপে ধরল।
– ছাড়ুন আমাকে………


– ছাড়ব না… তুমি কি করতে পার সেটাই দেখব আজ বলে শুভ্র মুচকি হেঁসে উঠল।
– আপনি আমাকে আবার জড়িয়ে ধরেছেন কেন?
– আমি ধরব নাতে কে ধরবে!

– আর এত নড়াচড়া করছো কেন! নিজেতো শান্তিতে থাকবানা আমাকে অন্তত শান্তিতে থাকতে দাও। আর শোন তোমার নিরাপত্তা এই শুভ্রের বুকে বুঝছ বলেই পরীর দিকে তাকিয়ে দেখল ও আবার ঘুমিয়ে পড়েছে।
– এই মেয়ে পারেও বটে! জড়িয়ে ধরতে দিবেনা আবার বুকের মধ্যই ঘুমিয়ে পড়ে……..

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here