আনকোরা পর্ব-৩৬

0
2015

#আনকোরা
#রূবাইবা_মেহউইশ
৩৬.

কাছের কে, কে’বা দূরের এ যে বোঝা বড় দায়;

গল্পে অল্পে যে আছে কাছে সেও যে আপন নয় হায়!

একটুখানি দূরত্বে যে ভুলতে আমায় চায়;

সেই মানুষটা আমার না হোক আমার অপার শূন্যতায়!

বিড়বিড়িয়ে লাইনগুলো আওড়াতে আওড়াতেই ভাবছে এ কেমন শূন্যতা তার! মনের ভেতর সারাক্ষণ কি যেন নেই, কে যেন নেই একটা অস্থিরতা। কেন এমন হয় সে জানে না। গত কয়েকটা দিন ধরেই সে অনুভব করছে এই শূন্যতা। আর তার এই অস্থিরতা দ্বিগুণ হারে বেড়ে যায় যখন সে দিশানকে দেখতে পায়। দিশানের মুখের দিকে তাকালেই ঝাপসা কোন স্মৃতি ভাসে। এমন স্মৃতি যা বোধহয় খুব একটা সুখের নয় কিংবা কিছুটা যন্ত্রণাদায়ক। কিন্তু তার সমস্ত উপলব্ধিটাই তো একটা মরিচীকার মত। আজ ইউনিভার্সিটি যাওয়া হয়নি। বাবা বলেছে আজ কাউন্সিলিং ডেট তাই তার সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে যেতে হবে একটু পরই। আজ আকাশে কালো মেঘ নেই, বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই অথচ আকাশ জুড়ে পলকা মেঘের ওড়াওড়ি। চারপাশে আম, কাঁঠাল পাকার ভ্যাপসা গরম। আলমারি খুঁজে খুঁজে কোন পুরনো ড্রেস পেলো না যা তার গায়ে ঠিকঠাক লাগে। আর এখনকার জামা বলতে তার স্কার্ট, লেগিংস, কূর্তা এসবই সম্বল। মা বলেছে দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকায় তার জন্য তেমন কোন কাপড়ও কেনা হয়নি। আজ বাড়ি ফেরার পথে চৈতী অনেক শপিং করবে বলে ঠিক করেছে তাই দিথি আর আহানাকেও বলেছে সে ফোন করলেই যেন তারা শপিংমলে পৌঁছায়। চৈতীর হাজারো ভাবনার মাঝেই চাঁদ খান ডাকলেন বের হওয়ার জন্য। সুইটিও যেতে চাইছে কিন্তু চাঁদ বলছে তাকে শপিং করার সময় ফোন করবে তখন যেতে। সুইটি আর কথা বাড়ায়নি।

“তুমি কি আমার কথা শুনবে না অভিনব?”

“কি শুনবো আব্বু? একটা মানসিক সঙ্গাহীন মেয়ের বাড়িতে তোমরা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেছো৷ প্রস্তাবটা আমার খুশির জন্য অথচ আমি নিজেই জানি না৷ আমার জীবনের সিদ্ধান্তগুলো আমাকে নিতে না দিয়ে তোমরাই এগিয়ে যাচ্ছো। কখনো আম্মু কখনো তুমি। এগুলো কি খুব বেশিই বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না! অন্তত তোমাদের মত হাইলি এডুকেটেড আর কোয়ালিফাইড প্যারেন্টসদের থেকে এমন আচরণ সত্যিই অভাবনীয়।” হাতে থাকা কয়েকটা কাগজ বিছানায় ছুঁড়ে কপালে হাত রেখে বসে পড়লো অভিনব। বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে অভিনবের বাবা -মা গিয়েছিলো আরো এক সপ্তাহে আগে। সে শুধু জানতো তারা চৈতীকে দেখতে গিয়েছে। তার ধারণা ছিলো মা নিজের মনোমালিন্যতা ছেড়ে হয়তো বন্ধুর অসুস্থ মেয়েকে দেখতে গেছেন। কিন্তু আজ যখন মা তার পিঠে হাত ভুলিয়ে বলল, ” বিদেশে স্যাটেল হয়ে কি সুখ পাবে আমাদের ছেড়ে বলোতো? আমরা তো চেষ্টা করেছি চৈতীকে তোমার করার। কিন্তু তারা রাজী হয়নি….”

অনামিকা কথা শেষ করার আগেই অভিনব বিষ্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকালো মায়ের দিকে।

“কি করেছো তোমরা?”

অভিনব প্রশ্ন করতেই অনামিকা সেদিনের ঘটনা বলল। চাঁদ খান প্রস্তাব গ্রহণ করেনি বলেই তারাও বাড়ি ফিরে অভিনবকে কিছু জানায়নি৷ কিন্তু আজ জানতেই অভিনবের প্রতিক্রিয়া দেখে ভীত হলো অনামিকা। কিছু সময় চুপচাপ বসে থেকে আবার বেরিয়ে গেল সে। পেছন পেছন অনামিকা জিজ্ঞেস করছিলো কোথায় যাচ্ছে! অভিনব কোন উত্তরই দেয়নি।

এক ঝাঁড় সাদা আর গোলাপি রজনীগন্ধায় লম্বা ফুলের টবটা খিলখিলিয়ে হেসে আছে। আভিজাত্যের ছোঁয়ায় ঝলমল করছে বসার ঘরটা। চৈতী আর চাঁদ এসেছে প্রায় পনেরো মিনিট আগে সাইকিয়াট্রিস্ট মেহরিমার কাছে। আজ সে তার চেম্বারে না বসে চৈতীকে ডেকেছে তার নিজের বাড়িতে। আজ অনেক আয়োজন করেই সে চৈতীর সাথে কথা বলবে বলে ঠিক করেছে। আর তাই শুধু চৈতী না দিলশাদকেও উপস্থিত থাকতে বলেছেন। কিন্তু দিশান অফিসে থাকায় দিলশাদকে নিয়ে আসতে পারেনি এখনো। মূলত সে কারণেই মেহরিমা একটু সময় নিয়ে কিছু কাগজপত্র মনযোগে পড়ে নিচ্ছে আবার কিছু কিছু কথাবার্তা যা সে আলোচনা করবে তাও দু চার অক্ষরে টুকে রাখছে। চাঁদখান চৈতীর পাশে বসেই ফোনে কিছু ছবি চেক করছেন তার নতুন প্রোডাক্টের। চৈতীকে দেশে আনার পরই তিনি নিজের নতুন ব্যবসা শুরু করেছেন। দোকানের ভাড়া আর অন্যান্য যে অর্থ আয় আছে সেগুলো দিয়ে হয়তো নিশ্চিন্তে সংসারটা হেসে খেলে চলে যাবে কিন্তু মেয়ের একটা সুরক্ষিত ভবিষ্যত আর আসন্ন বিপদ আপদের কথা কিছুই বলা যায় না। তাই আর বাড়িতে বসে না থেকে নতুন কর্মজীবন শুরু করেছেন চাঁদ খান। ব্যবসা সম্পর্কিত জ্ঞান কম থাকায় দিশান আর তার দুলাভাইদের মদদও নিচ্ছেন৷ আজ গোডাউনে মাল তোলার কথা ছিলো কিন্তু চৈতীর সাথে আসায় অর্ধবেলা কোন কাজ করা যাবে না। পাশে বসে চৈতী বিরক্ত হয়ে বলল, “আর কতক্ষণ লাগবে বাবা?”

“বুঝতে পারছি না মা। উনার কাজের বুয়াটাও তো চা দিয়ে গেল আর এলো না নইলে জিজ্ঞেস করা যেত।”

চাঁদ খানের কথা শেষ হওয়ার আগেই মেহরিমা এসে দাঁড়ালো দরজায়। কাঁচের স্লাইড দরজাটা ঠেলে সে বসার ঘরটায় ঢুকলো। তাকে দেখতেই চৈতী কিছুটা নড়েচড়ে বসলো। চল্লিশোর্ধ্ব এই মহিলাকে দেখলেই তার গলা শুকিয়ে আসে। অনেকদিন হলো এই কৃষ্ণকায়, অতি মোহনীয় আর কোমল স্বভাবের মহিলার কাছে চিকিৎসাধীন থাকার পরও সে তার সামনে স্বাভাবিক থাকতে পারে না। আজও তার চোখ মুখে ভয়ার্ত ভাব স্পষ্ট হয়ে উঠলো। তা দেখেই মিষ্টি করে হাসলেন মেহরিমা। চৈতী গুম হয়ে আছে দেখে তিনিই প্রথমে কথা বললেন, ” কেমন আছো কিউট মেয়ে!”

চৈতী একবার বাবার দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে জবাব দিলো সে ভালো আছে। চাঁদ খান চোখের ইশারায় চৈতীকে রিল্যাক্স হতে বলল। মেহরিমা এবার চাঁদকে বলল, “মিস্টার খান আমি একটু চৈতীর সাথে কথা বলতে চাচ্ছি।”

মেহরিমার কথার অর্থ সে চৈতীর সাথে একান্তে কথা বলবেন। চাঁদ বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। এই বসার ঘরের বাইরে আরেকটা খোলা জায়গা আছে। সেখানেও বসার মত বিশেষ জায়গার ব্যবস্থা রয়েছে। চাঁদ সেদিকেই যাচ্ছিলো তখনি আবার মেহরিমা বলল চাঁদ যেন একটু দিশানের সাথে কানেক্টেড হয়। দিলশাদকে নিয়ে আসার কথা ছিল। চাঁদ মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে বাইরে গেল। মেহরিমা পুনরায় চৈতীর সাথে কথপোকথন শুরু করলেন। এবং অনেক কথাই আবার ছোট্ট করে টুকে রাখলেন নোটপ্যাডে৷ দশ মিনিটের লাগাতার কাউন্সিলিং আজ যথেষ্ট ছিলো চৈতীর মানসিক অবস্থা পরীক্ষা করার জন্য। দিশান যখন দিলশাদকে নিয়ে পৌঁছুলো তখন চৈতীরা চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। দিশানকে দেখে আবারও চৈতীর ভাবনা শুরু হলো তা লক্ষ্য করেছিলো মেহরিমা। তাই সে চাঁদকে ইশারা করলেন তারা যেন বাইরে একটু অপেক্ষা করে। চাঁদ খান আর চৈতী বাইরের বসার জায়গাটাতে বসে রইলো। এরই মাঝে চাঁদের সেলফোন বাজলো আবার। এবারের ফোন কলটা অভিনবের। সে বিনয়ের সাথে ক্ষমা চাইলো তার মা-বাবার ওভাবে যাওয়া নিয়ে। চাঁদ কিছুই মনে করেনি। তার আগেই মনে হয়েছিলো অভিনবের অজানা সেই প্রস্তাব রাখার ব্যপারটা। সে আশ্বস্ত করলো অভিনবকে তারা কিছু মনে করেনি। চাঁদ আবার জানতে চাইলো সে কি সত্যিই বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে! অভিনব খুব সুন্দর করে কথাটা এড়িয়ে গিয়ে প্রশ্ন করলো চৈতীর আজ কাউন্সিলিং ডেট ছিলো রেজাল্ট কি? চাঁদও কোন দূর্বল চিত্তের মানুষ নন। যথেষ্ট বুদ্ধিমান আর চতুর লোক সে এড়িয়ে যাওয়াটা বুঝতে পেরে আর প্রশ্ন করে অভিনবকে বিব্রত করলো না। কথা শেষ করে ফোন রাখতেই মেহরিমা ডাকলো তাকে। এবার আর চৈতীকে যেতে হয়নি ভেতরে। সে আগের মতোই বসে রইলো৷ চাঁদ আর দিশানকে একসঙ্গেই প্রশ্ন করলো, “দিহান দেখতে কেমন?”

দিলশাদ পাশেই ছিলো। সে দিহানের নাম শুনেই উতলা হয়ে গেল। দিশান নির্বাক তাই চাঁদই বলল, “দিহানের মুখাবয়ব দিশানের মতোই অনেকটা।তবে উচ্চতায় দিশান যেমন লম্বা দিহান তেমন ছিলো না। আর তাদের দুজনের কপাল থেকে চোখ হুট করে দেখলে একজনই মনে হতো।”

মেহরিমা আর কোন প্রশ্ন না করে বলল, “দিহানের কোন ফটো থাকলে আমাকে সেন্ড করুন।”

দিশান সাথে সাথেই সেন্ড করলো একটা ছবি। আর ছবিটা দেখেই বিষ্মিত হলেন ডক্টর মেহরিমা। সত্যিই দু ভাইয়ের চেহারা অনেকটা মিল কিন্তু দিহান তেমন লম্বা নয় তা দু ভাইয়ের একসাথে থাকা ছবিটাতেই স্পষ্ট। এবার মেহরিমা দু চোখ বুঁজে কিছুটা সময় স্থির রইলেন। তারপরই বললেন, “চৈতী দিশানকে দেখলেই দিহানকে মনে করে। হয়তো সে চেহারাটা স্পষ্ট মনে করতে পারে না আর তাতেই কনফিউজড হয়। দিশানকে দেখলে তার অনুভূতিও বদলায়।”
এ পর্যায়ে দিশান বলল, “আমারো তাই মনে হয়। ও আমাকে দেখলেই কেমন অন্যরকমভাবে তাকায়। তার এই চাহনি আগে ছিলো না।”

এটা একটা পজেটিভ সাইন সে পুরনো সব মনে করতে পারছে।অতীত ভুলে বেশিদিন থাকা যায় না।চৈতীর অতীত কুয়াশার মত ঘোলাটে আলো ডিঙিয়ে স্বচ্ছ সকালের মত তার মানসপটে ভেসে আসছে। তবে অবশ্যই সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে চৈতীকে আরো এক ভঙ্গুর অবস্থা থেকে সামলে নেওয়ার জন্য। তার স্মৃতিতে স্বামী সন্তানের মৃত্যু স্পষ্ট হতেই আবারও সে ট্রমায় থাকবে। চাঁদ খান মানসিকভাবে নিজেকে যতোটা শক্ত রাখতে চাইছে তা সে কিছুতেই পারছে না।

মেহরিমার বাড়ি থেকে বের হতেই চৈতী বলল শপিংয়ে যাওয়ার কথা। চাঁদ মনে মনে অনেক অস্থির তাই সে বলল সুইটিকে ফোন করছে সে নিয়ে যাবে। চৈতী বলল, “থাক মাকে লাগবে না আমার দুই বান্ধবী আসছে তাদের সাথেই যাবো।”

চাঁদ চেনে তার বান্ধবী কারা। তাই অপেক্ষা করলো তারা এলে চৈতীকে ছেড়ে সে বাড়ি ফিরলো। আহানার নিজের গাড়ি আছে তাতেই এসেছে ওরা দুজন এবার চৈতীকে নিয়ে রওনা হলো। শপিং শেষে তিনজনে মিলে কিছু খাওয়াদাওয়াও করে তবেই বের হলো বাড়ির উদ্দেশ্যে।

চৈতীর জীবনে আবারও চলছে পড়াশোনা নতুন করে। সে অনেক কিছুই নতুন করে শিখছে সেই সাথে জমে উঠেছে তার নতুন করে বন্ধুত্ব। আনকোরা তার এ জীবনে নতুন নতুন উপলব্ধিও হচ্ছে জীবন সম্পর্কে। ডক্টর অভিনব খন্দকার চৈতী আর তার দুই বান্ধবীর নজরে গ্যারেজের মিস্ত্রি হিসেবেই এখনো পরিচিত। মজার ব্যপার হলো অভিনব নিজেও উপভোগ করছে তার এই নতুন পরিচয়। সে ইচ্ছে করেই মাঝেমধ্যে এসে দাঁড়ায় চৈতীদের ক্যাম্পাসে। নতুন বেশে নতুন পোশাকে। প্রথম দুদিন তার গায়ে ছিলো ফরমাল শার্ট-প্যান্ট। প্রথম দুই বারই দেখা হয়েছিলো কাকতালীয়ভাবে এবার আর তা নয়। অভিনব নতুন করে চৈতীর প্রেমে মগ্ন হয়েই নিজের সাজপোশাক বদলে চৈতীর চক্ষুগোচর হওয়ার চেষ্টায় আছে। কোনো না কোন ঘটনা ঘটিয়ে সামনে এসে উপস্থিত হয়। আজও এসেছে সে ক্যাম্পাসে হাতে তার দু তিনটা গাড়ি ঠিক করার মত যন্ত্রপাতি। যন্ত্রপাতি রাখা ব্যাগটাকে নিয়েই সে এদিক ওদিক খুঁজতে লাগলো চৈতীরা কোথাও আছে কিনা! অভির দৃষ্টি যখন সামনের দিকে তখন পেছন থেকে ডাক এলো, “এই যে আপনি এখানে আজও এসে গেছেন?”

কন্ঠ পরিচিত৷ দিথি বলেছে কথাটা। এই মেয়েটা বড্ড বেশিই বকবক করে। যে কটা দিন সে এলো চৈতীকে দেখতে তার কথা শুনতে সে কটা দিনই এই মেয়ে বকবক করেছে। আজও না শুরু করে! অভিনব ফিরে তাকাতেই আহানা বলল, “মতলব কি?”

কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে চৈতী। সে নিশ্চুপ সবসময়কার মতই।

“কিসের মতলব!” কথাটা বলতে গিয়ে অভিনবের কন্ঠস্বর বোধহয় একটু কাঁপলো। সত্যিই তো সে মতলব নিয়ে আসে এখানে। চৈতীকে দেখার, তার কথা শোনার, তার সাথে বন্ধুত্ব করার। কিন্তু তার অভিসন্ধি পশ্চিমে হেলতে থাকা সূর্যের মত। অতি রঞ্জিত ধারায় কথার শুরু হতেই দপ করে অন্ধকারে ঢাকা পড়ে। চৈতী কথা তো দু একটা বলেই ফ্যালে কিন্তু সে কথা নিষ্প্রাণ, নির্লিপ্ততায় ভরা। অভিনব নিজের মনকে প্রতিক্ষণে বুঝিয়ে নিচ্ছে তার ভালোবাসা শুধুই অন্তর্জালে গুম হয়ে থাকতেই তৈরি হয়েছে। এই ভালোবাসা মনের কোণ ছেড়ে পাখা মেলে প্রজাপতির মত হাওয়ায় উড়ে বেড়ানো জন্য নয়। কিন্তু এখানেও তার স্বস্তি নেই। নিজের মনের জলস্রোতে বাঁধ নির্মাণ করার আপ্রাণ চেষ্টায় লেগে থাকা অভির প্রেমে পড়ে লাগামহীন হয়ে গেছে দিথি। আর তা আরও ফুসলে দিচ্ছে খোদ চৈতী। অভিনবের রোজ রোজ আনাগোনা আর দিথির তার প্রতি আকৃষ্টতা চোখে লাগতেই চৈতী অনুভব করে তার জীবনে কারো শূন্যতা। তার মনে অভিনবের কোন প্রভাব না পড়লেও অভিনবের দ্বারা প্রভাব পড়ছে চৈতীর অতীতের। সে ভাবে দিথি যেমন করে এই ছেলের জন্য উতলা হচ্ছে সেও কি হয়েছিলো কারো জন্যে! স্মৃতিহীন মস্তিষ্ক আর অবচেতন মন জবাব দেয় না তাকে। অস্থির হয়েই সে হঠাৎ একদিন প্রশ্ন করে মাকে, “মা আমি কি কাউকে কখনো ভালোবাসতাম!”

সুইটি থমকে যায় চৈতীর কথা শুনে। তৎক্ষনাৎ কোন জবাবই সে দিতে পারে না। তাই চৈতীই আবার প্রশ্ন করে, “আমি কি দিহান ভাইকে ভালোবাসতাম? আমি কি কোন কারণে তার জন্যই দূর্ঘটনায় পড়েছি? নইলে সবাই আমাকে দেখতে আসে কিন্তু এতদিনেও সে কেন আসেনি?”

চলবে

(অনেক জ্বালিয়েছি এই গল্প লিখে আপনাদের। খুব শিগগিরই সমাপ্তি আসবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here