আন্তঃনগরের_ভালবাসা লেখকঃ আবির খান পর্বঃ ০৪

#আন্তঃনগরের_ভালবাসা
লেখকঃ আবির খান
পর্বঃ ০৪
~ ওহ! দেখেছিস যে জন্য আসলাম সেটাই বলি নি। শোন আজ কিন্তু ভার্সিটি থেকে তাড়াতাড়ি আসবি।
~ কেন? কেন? (বেশ অবাক হয়ে)
~ কেন আবার তোর জন্য একটা ছেলে দেখতে যাবো তো তাই।

জান্নাত ওর মায়ের কথা শুনে পুরো স্তব্ধ হয়ে যায়। ওর মা এটা বলল কি! জান্নাত ভীষণ ভাবে ঘাবড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করে,

~ মা কি উল্টো পালটা বলছো এসব?

হঠাৎই ওর মা হাসতে শুরু করে। হাসতে হাসতে বলেন,

~ মজা করেছি পাগলি। তোর কি এখনো বিয়ের বয়স হয়েছে নাকি? আগে পড়াশোনা ঠিক মতো শেষ কর। তোর ছোট খালার বাসায় যাবো। তার শরীরটা নাকি ভালো না৷ তুই আর আমি গিয়ে দেখে আসবো নি।
~ মা তুমিও না৷ আমার আত্নাই উড়ে গিয়েছিল আরেকটু হলে।
~ হাহা। যা ফ্রেশ হয়ে আয়। নাস্তা করবি।
~ আচ্ছা।

জান্নাতের মা চলে যায়। ও মুহূর্তের জন্য পুরো ব্ল্যাং হয়ে গিয়েছিল বিয়ের কথা শুনে৷ এখন একটু শান্তি লাগছে ওর। জান্নাত মনে মনে ভাবছে, আজকের দিনটা আসলেই অদ্ভুত। ঘুম থেকে উঠতে না উঠতেই একের পর এক অদ্ভুত কাহানী হচ্ছে ওর সাথে। না জানি আর কি কি হয়৷ জান্নাত আর কিছু না ভেবে ফ্রেশ হতে চলে যায়।

এদিকে, আমি ফ্রেশ হয়ে এসে বেডের উপর চুপচাপ বসি। অনেক ক্লান্ত লাগছিল। প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছিল। গতকাল সারারাত জেগেছিলাম। কোন ভাবেই দুচোখের পাতা এক করতে পারি নি। হাজারটা চিন্তা আর ভয় ঘুমকে আসতে দেয় নি। কিন্তু এখন চোখ ভেঙে ঘুম আসছে। নিজেকে আর ধরে না রাখতে পেরে বেডের একপাশে চুপচাপ শুয়ে পড়ি। ভাবি নাস্তা হতে হতে একটু ঘুমিয়ে নি। বেডে শুয়া মাত্রই এমন ঘুমে হারিয়ে যাই যে পৃথিবীর সবকিছু ভুলে আমি শুধু ঘুমাচ্ছিলাম। জানি না কতক্ষণ ঘুমিয়েছি। কিন্তু হঠাৎই কারো ডাকে আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকাই।

~ ভাইয়া… আবির ভাইয়া উঠুন৷ দুপুর হয়ে গিয়েছে।

মরিয়মের কথা শোনা মাত্রই আমি এক লাফে উঠে বসি৷ বসেই,

— সরি সরি, কখন যেন গভীর ঘুমে হারিয়ে যাই। টেরই পাই নি।
~ সমস্যা নেই ভাইয়া৷ আপনি যে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন, তাই আমিও আর ডাকি নি৷ বাবা-মাও না করেছে। আপনার ঘুমের অনেক দরকার ছিল। এখন কেমন লাগছে আপনার?
— আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো।
~ যাক। আচ্ছা সাওয়ার নিয়ে আসুন। মা আপনার জন্য অনেক কিছু রান্না করেছে। সকালে তো এসে কিছু খান নি। তাই আরও বেশি করে রান্না করেছে। সবাই অপেক্ষা করছে আপনার জন্য৷ জলদি আসবেন কিন্তু।
— আচ্ছা আচ্ছা আমি তাড়াতাড়ি আসছি। দুঃখিত আমার জন্য তোমাদের এত কষ্ট হচ্ছে।
~ আবার সেই পরের মতো কথা বলছেন। বাবা-মাকে বলবো?
— না না। আচ্ছা বোন তুমি যাও আমি আসছি।
~ ওকে ভাইয়া। (হাসি দিয়ে)

মরিয়ম চলে গেলে আমি হাত মুখ ধুতে চলে যাই। কারণ সকালেই একেবারে সাওয়ার নিয়ে ঘুম দিয়ে ছিলাম। ফ্রেশ হয়ে অনেকটা লজ্জা নিয়েই খাবার রুমে যাই। আমি আসতেই আণ্টি আমার কাছে এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করেন,

~ ঠিক মতো ঘুম হয়েছে বাবা?
– জি আণ্টি…(আণ্টি চোখ গরম করে তাকান) না মানে মা।
~ আমাকে মা ভাবয়ে কি তোর কষ্ট হয়? নাকি আমি তোর মায়েরই যোগ্য না।
— না না মা তা না৷ আসলে হঠাৎ করে মা আসছিল না। অনেকদিন ধরে কাউকে মা বলে ডাকি না তো তাই।
~ এখন থেকে আমাকে মা বলে ডাকবি৷ আর ওনাকে তোর বাবা বলবি। ঠিক আছে?
— জি।
— আচ্ছা ডাকাডাকি পরে হবে নে। আগে ছেলেটাকে খেতে দেও৷ সেই কাল থেকে না খাওয়া।
~ আল্লাহ! আসলেই তো। বাবা তুই বস। আমি খাবার দিচ্ছি। মরিয়ম প্ল্যাটটা দে তো মা।
~ এই যে মা নেও।

এরপর আমি শুধু বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি। আমার আপন মা মারা যাবার পর আজ প্রথম আরেক মা আমাকে স্বযত্নে বেড়ে খাওয়াচ্ছে। মা প্রথমে সাদা ভাত আর কম হলেও দশ রকমের ভর্তা দিলেন। দিয়ে বললেন,

~ আগে বাঙালি খাবার দিয়ে শুরু কর। তারপর দেখ তোর জন্য কত্তো কিছু রান্না করেছি। সব খেতে হবে কিন্তু।

মায়ের মুখে বেশ অমলিন মনমাতানো একটা হাসি ছিল। আমি না বলে সেই হাসিটা হারাতে চাই না। তাই আচ্ছা বলে পাশ থেকে একটা চামচ নিয়ে বাম হাত দিয়ে খেতে শুরু করা মাত্রই মা আমাকে থামালেন৷ তিনি কিছু না বলেই চেয়ার টেনে আমার পাশে বসলেন৷ আমি পুরো অবাক। কি হলো? মা আমার খাওয়া এভাবে থামিয়ে দিল কেন? আমার সব প্রশ্নের উত্তর আমি মুহূর্তেই পেয়ে গেলাম। তিনি আমার প্ল্যাটটা নিয়ে সুন্দর করে মাখিয়ে আমার মুখের দিকে খাবার তুলে দিয়ে বললেন,

~ নে এবার হা কর।

আমি যেন স্তব্ধ হয়ে যাই। চোখ ভেঙে প্রচন্ড কান্না আসছিল। আরে আসবেই না কেন? আমার আপন মা যতদিন ছিল আমাকে কখনো বাম হাত দিয়ে খেতে হতো না৷ তিনিই খাইয়ে দিতেন। আজ ঠিক সেভাবেই আরেক মা আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে। আমি চোখের পানি আর আটকে রাখতে পারি না৷ অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে খাবারটুকু মুখে নি৷ বাবা বলে উঠেন,

— কিরে কাঁদছিস কেন বোকা?

চোখটা মুছে কান্নাসিক্ত কণ্ঠে বলি,

— আমার আপন মাও আমাকে কখনো বাম হাত দিয়ে খেতে দিত না৷ আজ এত বছর পর মায়ের হাতে খাবার খেয়ে পুরনো সব স্মৃতি মনে পড়ছে। আপনারা সত্যিই অনেক ভালো।
~ মা যদি তার সন্তানের কষ্ট না বুঝে তাহলে সে কিসের মা বল?

পাশ থেকে মরিয়ম লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে বলে উঠে,

~ মা আমাকেও একটু খাইয়ে দিবে?
~ হ্যাঁ মা অবশ্যই। তুই তো আমার লক্ষ্ণী মেয়ে৷ নে হা কর।

এরপর মা আমাদের দুজনকে খাইয়ে দিলেন। ভাত সাথে হরেক রকমের ভর্তা। তারপর মাছ, পোলাও, রোস্ট, কোরমা, গরু আরও অনেক কিছু। আমি না শুধু খেয়েই যাচ্ছিলাম। মায়ের হাতের খাবার খেয়ে পেটই যেন ভরছিল না৷ মনে হচ্ছে আরও খাবো। প্রাণ ভরে মায়ের হাতে খেলাম। আমরা চারজন মিলে অনেক হাসি আনন্দ করে দুপুরের খাবার খাই। বাবার সকালে আনা সেই জিলাপিও বাদ যায় নি। বাবা-মা বোন এই তিনজনার ভালবাসা, স্নেহ একসাথে পেয়ে আমি পঞ্চমুখ। এ যেন রূপকথার কোন গল্প, এ যেন অবিশ্বাস্য কোন স্বপ্ন। আমি আজ শুধু মুগ্ধ। জীবনটাও এরকম হতে পারে? সত্যি জানা ছিল না। এরপর খাওয়া দাওয়া শেষ হলে মরিয়ম এক বাটি দই নিয়ে আসে। এসে বলে ভাইয়া এটা আমি তোমাকে খাইয়ে দি?

— না না বোন আমি পারবো।
~ ভাইয়া.. প্লিজ…

আমি মরিয়মের মায়াময় মুখ দেখে ওকে আর না করতে পারলাম না৷ শেষমেশ বোনটাও আমাকে খাইয়ে দিল। আমার কাছে মনে হচ্ছিলো আমার জীবনটা নতুন করে শুরু হয়েছে। আমি কোন সাতাইশ বছরের ছেলে না। আমি এখন একটা বাচ্চা ছেলে। মহান আল্লাহর কাছে মনে মনে প্রতিনিয়ত শুকরিয়া আদায় করেই যাচ্ছিলাম। নতুন করে একটা জীবন উপহার দেওয়ার জন্য৷

এদিকে আমি খাওয়া দাওয়া শেষ করে আবার একটা ঘুম দি। ঘুম থেকে বিকেল বেলা উঠি। আছরের আজান দিচ্ছে। দ্রুত উঠে ওজু করে বাইরে আসি নামাজ পড়তে মসজিদে যাবো বলে। এসে দেখি বাবাও আমার অপেক্ষায় বসে আছেন৷ আমাকে দেখে বললেন,

— উঠেছিস বাবা? চল একসাথে নামাজ পড়তে যাবো।
— আচ্ছা। (হাসি দিয়ে)

তারপর আমি আর বাবা একসাথে নামাজ পড়তে গেলাম। একটা ছেলে সন্তান ঠিক তখনই অনেক বেশি খুশি হয় যখন তার বাবা তার পাশে থাকে। আমার আপন বাবা আমার পাশে না থাকলেও আমার নতুন বাবা আমার পাশে আছেন। আমরা দুজন একসাথে নামাজে যাচ্ছিলাম। বাবা জিজ্ঞেস করলেন,

— তুই আসার সময় মনে হয় তেমন জামা কাপড় আনিস নি। কাল সকালে তোকে নিয়ে শপিং এ যাবো। তোর যা লাগে কিনবি৷ একটুও সংকোচ করবি না।
— বাবা আমার জন্য একটু বেশিই করছেন। আমি কি এত কিছু পাওয়ার যোগ্যতা রাখি?
— আজ যদি আমার আপন ছেলে থাকতো আমি কি তাকে এসব দিতাম না? অবশ্যই দিতাম। তুই হয়তো আমার আপন ছেলে না৷ কিন্তু আমার ছেলে তো?
— জি।
— তাহলে আর কিছু বলিস না৷ বাবার দায়িত্ব পালন করতে দে আমাকে। আমার খুব ইচ্ছা ছিল বাপ আর ছেলে এভাবে একসাথে নামাজ পড়তে যাবো। আজ সেই স্বপ্নটাও মহান আল্লাহ তায়ালা পূরণ করে দিলেন৷ আমার যে কি ভালো লাগছে তোকে বুঝাতে পারবো না৷ আর কি লাগে বল জীবনে? বাবা-মার সবচেয়ে বড়ো ঢাল হলো ছেলে।(আমার কাঁধে হাত রেখে) দীর্ঘ এতটা বছর ছেলে ছাড়া ছিলাম। আজ আল্লাহ যখন একটা ছেলে সন্তান আমাকে উপহার দিয়েছেন আমি তার জন্য এটুকু করবো না? নাহলে আমি কিসের বাবা!
— আল্লাহ যেন প্রতিটা সন্তানকে আপনাদের মতো বাবা-মা দেন৷ সত্যিই আপনারা অতুলনীয়। আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না, আমি আপনাদের মতো এত ভালো মনের মানুষদের কাছে মানে বাবা-মার কাছে আশ্রয় পেয়েছি। আল্লাহ তায়ালা আমাকে যেন আপনার জন্য কিছু করার তাওফিক দান করেন৷
— আমিন। তুই অবশ্যই পারবি। আমরা তোর সাথে আছি।

বাবার কথা শুনে মনে মনে অনেক সাহস পেলাম। জীবনে কখনো কল্পনাই করি নি আমার একটা হাত অকেজো হওয়া স্বত্ত্বেও আমার সাথে কেউ এতটা ভালো আচরণ করবে, আমার পাশে থাকবে, আমাকে আগলে রাখবে। সবশেষে আমাকে ভালবাসবে এবং আমার উপর বিশ্বাস রাখবে৷ আমি সত্যিই কল্পনা করিনি। কিন্তু আজ সেই কল্পনা না করা বিষয়গুলোও সত্য হয়েছে। আমাকে এবার কিছু একটা করতে হবে৷

হঠাৎ করে একজন লোক আমাকে উদ্দেশ্য করে বাবাকে জিজ্ঞেস করে,

— আরে আজাদ ভাই সাথে ও কে?

আমি ঘাবড়ে যাই। বাবা এখন কি বলবেন? হঠাৎ করে তার ছেলের কথা কিভাবে বলবেন? বললে তো আমার অসহায়ত্বের কথাও বলতে হবে৷ তারপর তারা উপহাস করবেন। আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি৷ খুব চিন্তা হচ্ছিল। বাবা এখন কি বলবেন? হঠাৎ তিনি হাসি দিয়ে বলেন,

— ও আমার আপন ছেলে আবির। বিদেশ থেকে পড়াশোনা শেষ করে এসেছে।
— বলেন কি ভাই! আপনার ছেলেও আছে? আগে তো কখনো বলেন নি।
— ও তো বিদেশে ছিল। আর কিছু কারণ তো আছেই না বলার। বুঝেনই তো আমার অবস্থানটা।
— হ্যাঁ ভাই তা ঠিক বলেছেন৷ তা বাবা কেমন আছো তুমি?
— আলহামদুলিল্লাহ আঙ্কেল ভালো আছি। আপনি?
— আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমি তোমার বাবার সাথে অনেক দিনের পরিচিতি। আজাদ ভাই আপনার ছেলেটা কিন্তু মাশাল্লাহ অনেক হ্যান্ডসাম হয়েছে।
— সবই আল্লাহর ইচ্ছা। তবে ভাই একটা কথা আছে।
— কি কথা?

বাবা আমার দিকে একবার তাকালেন আর বললেন,

— আমার ছেলেটার ডান হাতটা প্যারালাইজড। বাকি সবই আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছে।

আমি বাবার কথা শুনে স্তব্ধ। উনি ঠাস করে এটা বলে দিলেন? আমি অসহায় বোধ করছিলাম। অনেক ছোট লাগছিল নিজেকে। আঙ্কেলটা আমার ডান হাতটাই দেখছিলেন৷ কিছুক্ষণ নিরবতা গেলে আঙ্কেল আমার কাছে এসে হঠাৎ করেই কোলাকুলি করেন৷ আমি পুরো অবাক হয়ে যাই। কি হলো এটা! আঙ্কেল হাসি দিয়ে বললেন,

— আমার বাম পায়েও সমস্যা। একদম ভর দিয়ে হাঁটতে পারি না এখন আর। তো কি হয়েছে? ভালোই তো আছি। তুমি একদম মন খারাপ করবে না বাবা৷ আল্লাহ যা দিয়েছে আর যা নিয়েছে হয়তো আমাদের ভালোর জন্যই।

আমি মুহূর্তেই অসম্ভব খুশি হয়ে যাই। চোখে নোনা জল আসলেও আড়ালে মুছে ফেলি। বাবা পাশে দাঁড়িয়ে হাসছেন। আঙ্কেল আমাকে ছেড়ে বাবাকে বললেন,

— ছেলেকে নিয়ে বাসায় আসবেন কিন্তু ভাইজান।
— আচ্ছা। আপনিও আসবেন। চলেন এবার নামাজটা পড়ে আসি।
— হ্যাঁ হ্যাঁ চলেন চলেন৷
আমরা নামাজ পড়তে চলে যাই।

অন্যদিকে,

জান্নাত ক্লাস শেষ করে বাসার দিকেই যাচ্ছিল। কারণ ওর মা আজকে ওকে তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে তাই। কিন্তু হঠাৎ করেই ওকে পিছন থেকে কে যেন ডাক দেয়।

— জান্নাত..

ও ঘুরে তাকিয়ে দেখে নিলয়। জান্নাত স্বাভাবিক ভাবে বলে,

~ ওহ! তুমি। কিছু বলবে?
— উমম..না মানে হ্যাঁ কিছু বলার ছিল।
~ ওহ! আচ্ছা বলো।
— তুমি কি বাসায় যাচ্ছিলে?
~ এটা জিজ্ঞেস করতে ডাক দিয়েছো?
— না না। আসলে..আচ্ছা আমরা ওদিকটায় গিয়ে কথা বলি?
~ কেন জরুরি কিছু বলবে?
— হ্যাঁ। কথা আসলেই অনেক জরুরি।

জান্নাত হাতের ঘড়ির দিকে একবার তাকিয়ে বলে,

~ আচ্ছা চলো।

জান্নাত আর নিলয় নিরিবিলি একটা জায়গায় দাঁড়ায়। নিলয়ের প্রচন্ড নার্ভাস লাগছে৷ পুরো ক্লাসে ওর চেয়ে সুন্দর, গুড লুকিং, হ্যান্ডসাম ছেলে আর একটা নেই। কিন্তু জান্নাতের সামনে আসলেই ওর সব কনফিডেন্স চলে যায়। কারণ জান্নাত অসম্ভব সুন্দরী রূপবতী একটা মেয়ে। ওকে দেখে এমন কোন ছেলে নেই যে পাগল হয় না৷ নিলয়ও বাদ যায় নি। আজ দীর্ঘ একমাস পর অনেকটা সাহস যুগিয়ে জান্নাতের সামনে এসেছে নিলয়। ওর মনের কথাটা ও আজ বলবেই। জান্নাত নিলয়কে উদ্দেশ্য করে বলে,

~ হুম এবার বলো কি বলবে।
— আসলে হয়েছে কি…আ…আ…আম….আমি…
~ তুমি কি?
— আমি? আমি কি? (বোকা মতো হয়ে)

জান্নাত ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বলে,

~ তুমি কি সেটা আমি কিভাবে বলবো?
— হ্যাঁ হ্যাঁ তাই তো?

নিলয়ের গলা পুরো শুকিয়ে গিয়েছে। হাত পা পুরো কাঁপছিল। বেচারার অবস্থা খুব খারাপ। তাও কোন রকম নিজেকে সামলে বলে,

— জান্নাত আমি তোমাকে….
~ এক মিনিট।

নিলয় দেখে জান্নাত….

চলবে..?

সবার ভালো সাড়া চাই তাহলে খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব দেওয়া হবে। আর কেমন লেগেছে জানাবেন কিন্তু। আগের এবং পরবর্তী পর্বের লিংক কমেন্ট দেওয়া হবে। ধন্যবাদ।
(দুঃখিত। গতকাল অসুস্থতার জন্য গল্প দিতে পারিনি।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here