আমার প্রিয় তুমি পর্ব-২

0
2019

#আমার_প্রিয়_তুমি
#মেহজাবিন_তানিয়া
দ্বিতীয় পর্ব

৩.

ঘুমের মধ্যে মনে হচ্ছে কেউ খুব গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করছে। তাই খুব কষ্টে চোখ খুলে দেখি মোট দুই-দুই চার চোখ আমাকে ঘুরে ঘুরে দেখছে আর এই চোখের মালিকরা হচ্ছে আমার দুই জান্টু শিলা আর মেহু।আমাকে চোখ খুলতে দেখেই মেহু বল্লো এই তোর তো গাল ফুলে নাই কেমন চর দিলো ডাকাতে । কই ভাবলাম তোর গাল ফুলে আলু হবে তা না তোর গায়ে তো মারের ‘ম’ ও নাই ।
হে’রে তাহু তকে সত্যি চর মারছে তো।

ওদের দু’জনের কথা শুনে আমার মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেছে । এই তোরা কি আমার শত্রু নাকি হে ।তোদের কথা শুনে মনে হইতেছে ডাকাতরা আমাকে মেরে আহত করে গেল খুব খুশি হইতি। সর আমার সামনে থেকে যতসব আজাইরা পোলাপান হুহ………বলেই চলে গেলাম ফ্রেস হতে।
(আসেন ফ্রেস হতে হতে আমারা পরিচিত হয়ে নেই)।

আমি তাহরিমা ইসলাম অরুফে ‘তাহু’। ক্লাশ নাইনে পড়ি । বাবা-মার একমাত্র মেয়ে আর তাদের একমাএ ছেলেও আছে যার নাম ‘মেঘ’ বর্তমানে প্রবাসী। বাবা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক আর মা গৃহিণী । মা-বাবা আর দাদিকে নিয়ে আমাদের ছোট্ট পরিবার।

ফ্রেস হয়ে একেবারে স্কুলের জন্য তৈরি হয়ে রুম থেকে বের হলাম । নাস্তা করে তিন বান্ধবী রওনা দিলাম স্কুলের পথে। মাঝ রাস্তায় দেখা হলো গ্ৰামের চেয়ারম্যানের অপদার্থের ছেলে রাকিবের সাথে। ওরে দেখলেই মন চায় একবারে কুচি কুচি করে কেটে রোদে শুখাতে।

আমাদের তিন জনকে দেখতে দেরি ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো মেমে করতে দেরি নাই।

কি সুন্দরীরা স্কুলে যাও বুঝি ।

নাহ আমরা তো পাগলা গারদে যাই । আপনার জন্য সীট বুকিং করতে । আপনি আর কত দিন এভাবে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবেন তাই না শিলা আর তাহু। মেহুর কথা শুনে আমারা খুব দ্রুততার সাথে মাথা নাড়ালাম যার মানে কথাটা ১০০% সত্য। আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তারাতাড়ি চলে আসলাম সেখান থেকে।
পেছন থেকে শুধু শুনলাম ‘তাহলে তোমাদের বান্ধবী তাহরিমাকে আমার সাথে দিয়ে দিও ঐ খানেই সংসার করব ।

কথাটা শুনেই মনটা চাইলো ফেরত গিয়ে দুই গালে দুইটা থাপ্পড় মেরে আসি।যাই হোক এইসব নিয়ে আর মাথা ঘামালাম না।চলে গেলাম স্কুলে।

৪.

গ্ৰামের প্রধান প্রভাবশালীর তালিকায় আছেন হাওলাদার বাড়ি । যদিও তারা সবাই ঢাকায় থাকে। শুধু হাওলাদার সাহেব নিজে রয়ে গেছেন গ্ৰামে ।তিনি তার দুই ছেলেকে বলে দিয়েছেন আমি যত দিন বেঁচে আছি তত দিন এখানেই থাকবো আর সব দেখা শুনা করবো তোমরা থাকো ঢাকায় শুধু সময় করে মাঝে মাঝে এই গ্ৰাম আর আমাকে দেখে যেও।

আজিজ হাওলাদারের দুই ছেলে । বড় ছেলে তারেক হাওলাদার তার ঘরে আবার এক ছেলে ও এক মেয়ে ।
এবং ছোট ছেলে তুহিন হাওলাদার তার শুধু এক ছেলে।তাদের ঢাকায় নিজ নিজ বাড়ি গাড়ি সবই আছে।

মাঝে মাঝে হাওলাদার সাহেবের দুই ছেলেই সপরিবারে চলে আসেন গ্ৰামের নিজের বাবাকে দেখতে আর মার কবর জিয়ারত করতে । তেমনি আজও হাওলাদার সাহেবের দুই ছেলে আসবে । তবে আজ আসার কারন ভিন্ন । আজ হাওলাদার সাহেবের বড় নাতি আসবে বহু বছর পর ।সে এতো দিন সুদূর প্রদেশ লন্ডনে ছিলো পড়াশোনার খাতিরে । একদিন আগেই সে দেশে ফিরেছে । এবং আজ দাদাকে দেখতে আসছে।

এই খুশিতে হাওলাদার সাহেব বাড়িতে এলাহী কান্ড করে যাচ্ছেন। সব কাজের লোকদের একেক কাজে বসিয়ে দিয়েছেন । তার বাগানের সব ধরনের ফল তুলিয়ে নিয়ে আসছেন।বড় বড় হাঁড়িতে রান্না বসিয়েছেন সব নাতির পছন্দ মত। খাসি জবাই দিয়েছেন রান্না করার জন্য।আর এই সবই তিনি ঘুরে ঘুরে তদারকি করছেন।

চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here