আমার_গল্পে_তুমি ১৭_পর্ব

আমার_গল্পে_তুমি ১৭_পর্ব
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)

,
এই যে মিস্টার আর্দ্র আর কত এভাবে হাঁটবো আমার তো পা বেথ্যা করছে ,, আরে এই মিস্টার কথা কানে যাচ্ছে না আমি এতোক্ষণ ধরে বকবক করছি , এতো বড়লোক হয়ে লাভ কি যদি পায়েই হাঁটতে হয়। ইয়ানার একটা কথাও যেনো আর্দ্রর কানে যাচ্ছে না , আর্দ্র তো একমনে নিজের ট্রলি ব্যাগটা ডান হাত দিয়ে ধরে বাম হাতে নিজের কোটটা রেখে হেঁটে যাচ্ছে ,, এদিকে ইয়ানা আর্দ্রর সাথে হেঁটে না পেরে রিতীমত দৌড়াচ্ছে কেননা আর্দ্র অনেক জোরে হাঁটছে ,, আর্দ্র হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করেই থেমে গেলো আর ইয়ানা দৌড়ে এসে আর্দ্র বুকের সাথে ধাক্কা খেলো কেননা ও বুঝতেই পারিনি আর্দ্র রাস্তার মাঝে এভাবে থেমে পরবে।

তুমি কি সব সময় উৎ পেতে থাকো যে কখন আমার সাথে ধাক্কা খাবে?? আর হ্যাঁ এখন যদি আর একটা কথাও বলো তো তোমাকে রেখেই আমি চলে যাবো।

সরি মিস্টার আর্দ্র আমি আর হাঁটতে পারবো না আমার পা বেথ্যা করছে এই যে এই গাছটার উপর বসলাম আমি আর এক পা ও নড়ছি না।

ওকে তাহলে তুমি বসে থাকো এখন তো দুপুর একটু পর বিকেল হবে তারপর সন্ধা দেন রাত তখন বুঝবে মজা আর এটা তো পাহাড়ি অঞ্চল রাতের বেলা কি হতে পারে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো ,, ওকে তুমি থাকো আমি গেলাম।

আর্দ্রর কথা শুনে ইয়ানা একটা শুকনো ঢোক গিলে বলল ,, আরে আমি তো এমনি বলছিলাম আমার কোনো পা টা বেথ্যা করছে না চলুন আজকে হেঁটেই বাড়ি চলে যাবো ,,, কি হলো এমন করে তাকিয়ে আছেন কেনো??

হেঁটে যেতে কমপক্ষে দশ থেকে এগারো দিন লাগবে তুৃমি তাহলে তাই করো ওকে ,, এখন থেকে তুমি তোমার রাস্তায় আমি আমার রাস্তায় তাছাড়া তোমার সাথে আর বেশিক্ষণ থাকলে আমি পাগল হয়ে যাবো এতো বকবক কেউ কি করে করতে পারে ,, কথা গুলো বলে আর্দ্র চলে গেলো।

কেমন মানুষ রে বাবা এভাবে একটা মেয়েকে কেউ একা রেখে যায়?? হার্টলেস একটা , তাও আবার অজানা অচেনা একটা জায়গায় ধ্যাত , , ইয়ানা বসা থেকে উঠে আবার দৌড় দিলো কেননা আর্দ্র হেঁটে অনেকটা দূরে চলে গেছে ,, ভাগ্যক্রমে আর্দ্র ফোনটা হাতে থাকায় নিতে পারিনি আর্দ্র অনিককে ফোন করে বলে দিয়েছে অনিক গাড়ি নিয়ে বেরিয়েও পরেছে কিন্তু মাঝ পথে এসে গাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়ার আস্তে এতো দেরি হচ্ছে ,, দেখতে দেখতে সকাল গড়িয়ে দুপুর , আবার দুপুর গড়িয়ে রাত হয়ে গেলো অনিকের আসার কোনো খোঁজই নেই ,, ইয়ানার কাছে থাকা সেই একশো টাকা দিয়ে দুজনে হালকা কিছু খেয়ে নিয়েছে।

মিস্টার আর্দ্র এখন তো রাত হয়ে গেলো অনিক ভাইয়ার তো কোনো খোঁজ নেই , আপনি আমায় যাই বলেন না কেনো আমি আর হাঁটতে পারবো না আমি শেষ অনেকটা হেঁটেছি আমার এই বাইশ বছরে এতোটা কখনোই হাঁটিনি ,, এটা বলে ইয়ানা রাস্তায় বসে পড়ল আর্দ্রও কিছু বলল না কেননা হেঁটে ওর অবস্থা ও খারাপ আর্দ্র চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকল কিছু একটা করতে হবে কেননা এভাবে রাতের বলা অচেনা জায়গায় রাস্তায় বসে থাকা যাবে না যেকোনো সময় বিপদ হতে পারে ও একা থাকলে সম্যসা ছিলো না কিন্তু সাথে ইয়ানা রয়েছে ,, এসব ভাবতেই আর্দ্র সামনে তাকিয়ে দেখলো পাঁচ ছয় টা ছেলে ওদের দিকেই আসছে হাতে আবার কিসের বস্ক হয়ত মদ হবে জঙ্গলে বসে খাওয়ার জন্য যাচ্ছে , আর্দ্র ইয়ানার হাত ধরে টেনে সাইডে চলে গেলো।

আরে আরে আপনি এভাবে আমায় টেনে এখানে আনলেন কেনো??
, সামনে তাকিয়ে দেখো।
, ইয়ানা সামনে তাকিয়ে দেখলো পাঁচ ছয়টা ছেলে মিলে ওরা যেখানে ছিলো সেখানে গোল হয়ে বসে বাক্স থেকে বতল মতো কিছু একটা বার করছে ,, আপনি ওদের দেখে ভয় পেয়ে আমায় এখানে আনলেন?? মিস্টার আর্দ্র আপনার এই বডি দিয়ে কি হবে যদি মারামারিই না করতে পারেন।
,, ওহ রিয়েলি?? শোনো ভালো করে তাকিয়ে দেখো ওরা ছয় জন আর আমি যদি এখানে একা থাকতাম তাহলে ওরা আমায় কিছু বললে আমি ওদের সাথে লড়তে পারতাম কিন্তু আমার সাথে তুমি ও আছো, ধরো আমি ওদের সাথে মারামারি করছি আর সেই ফাঁকে দুজন তোমায় নিয়ে জঙ্গলে নিয়ে গেলো , নিতেই পারে কেননা ওরা ছয় জন আর আমি একা কয় জন কে সামলাবো ,, তারপর তোমায় জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ,, নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো এরপর কি হবে,,, তো কি বলো যাবো??

আর্দ্রর কথা শুনে ইয়ানা ভয় পেয়ে আস্তে করে আর্দ্র ডান হাত ধরে বলল,, থাক আপনার মারামারি করা লাগবে না কেননা মারামারি করা খুবি খারাপ এতে শরীলের অনেক ক্ষতি হয়।

এবার লাইনে এসেছো ,, এরপর আর্দ্র ইয়ানাকে নিয়ে আস্তে করে ওই ছেলেদের পিছন দিয়ে চলে গেলো কিছুদূর যাওয়ার পরেই ওদের সামনে একটা গাড়ি থামল গাড়ির সামনে আলো থাকায় আর্দ্র দেখতে পেলো না কে ,, পরে গাড়ি থেকে অনিক নেমে ওদের সামনে এসে বলল,, তোরা ঠিক আছিস তো?? আসলে গাড়ি নষ্ট হয়ে গিছিলো তাই আসতে এতো দেরি হলো উঠ গাড়িতে।

আর্দ্র আর কথা বাড়ালোনা কেননা ভীষণ ক্লান্ত লাগছে ,, ইয়ানা তো গাড়িতে ওঠে সিটে গা এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে এখন শান্তি লাগছে। ওরা বাড়ি যেতে যেতে রাত প্রায় দুইটা বেজে গেলো ইয়ানা তো বাড়ি গিয়েই সটান করে শুয়ে পড়ল আর মাকে বলল সব কথা সকালে হবে এখন ভীষণ ক্লান্ত । আর্দ্র ইয়ানাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েই নিজে বাড়ি ফিরে রুমে যেতে গেলে অন্তরা বলল , লিজা এসেছে এতোক্ষণ তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলো পরে ঘুম আসছিলো বলে রুমে চলে গেছে।

ওর সাথে সকালে কথা বলল ভাবি এখন আমি ভীষণ ক্লান্ত অনক ঘুম পাচ্ছে , এই বলে আর্দ্র হেলেদুলে রুমে চলে গেলো। কি হলো তুমি আবার এখানে দাঁড়িয়ে কি এতো ভাবছো?? আর তুমি এখনো ঘুমাওনি কেনো জানো না এসময় রাতজাগা ঠিক নয়।

জানো তো অনিক আমার না আর্দ্রর জন্য অনেক চিন্তা হচ্ছে ।
কেনো??
কেনো তুমি জানো না?? লিজা কতটা পাগল আর্দ্রর জন্য সেই ছোট্ট বেলা থেকে কিন্তু আর্দ্র তো লিজাকে বন্ধুই ভাবে লিজা তো আর্দ্রর জন্য খুন করতেও দ্বিধাবোধ করবে না।

হুম আমিও তো জানি তবে এককাজ করলে কেমন হয় বলতো??
কি কাজ??
যদি লিজার সাথে আর্দ্রর বিয়ে দিয়ে দিই তাহলেই তো হয়ে যায়।
তুমি কি পাগল হয়ে গেছো অনিক ,, আর্দ্র বিয়ে করবে?? আর লিজাকে আমার তেমন একটা ভালো লাগে না কেমন সব পোশাক পরে তবে আমার ইয়ানা কে ভীষণ ভালো লাগে আচ্ছা ইয়ানাকে যদি আর্দ্রর বউ করে আনি তাহলে??
ক্ষপেছো তুমি?? দাখোনি ওদের সম্পর্ক কেমন সাপে নেউল আর লিজা বিদেশি তাই ওমন পোশাক পড়ে।
এই তুমি লিজার হয়ে এতো কথা বলছো কেনো?? থাকো তুমি তোমার লিজাকে নিয়ে আমি গেলাম।
আরে রাগ করো কেনো এই অন্তরা শোনো ,,, কিন্তু কে শোনো কার কথা অন্তরা রেগে লাল হয়ে রুমে চলে গেছে, বেচারা অনিক আর কি করবে ও অন্তরার পিছনে পিছনে রুমে চলে গেলো এখন আবার তার বউ এর রাগ ভাঙ্গাতে হবে।

চলবে,,,,,,???

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here