আমার_গল্পে_তুমি ১৮_পর্ব

আমার_গল্পে_তুমি ১৮_পর্ব
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)

,
ইয়ানা সকালে ঘুম থেকেই উঠেই তড়িঘড়ি করে রেডি হয়ে খেতে বসে গেছে কেননা কালকে রাতে দেরি করে ঘুমানোর জন্য আজকে সকালে উঠতে দেরি হয়ে গেছে, আজকে আবার অফিসে অনেক কাজ একেতে দুইদিন মতো অফিসে ছিলো না তারপর আবার বিকেলের দিকে অফিসে ছোটখাটো একটা অনুষ্ঠান আছে , কেননা এতো বড় একটা ডিল হলো তাতে তো স্টাফদের একটা ট্রিট দিতেই হবে। ইয়ানা খাওয়া শেষ করে মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে অফিসের উদ্দেশ্য চলে গেলো।

ওহ এতো চকলেট খেতে হয় না ডার্লিং দাঁতে পোকা হবে , তখন তোমায় দেখতে অনেক পঁচা লাগবে।
,, ওফ লিজা পিজ্জা তোমাকে কতবার বলেছি আমার নাম পরশ ডার্লিং নয় বুঝেছো??
,, ওহ রিয়েলি ইউ নটি বয়, তোমার চাচ্চু কোথায়??
, কেনো জানো না চাচ্চু এখন তার রুমে রেডি হচ্ছে।
ওকে তুমি থাকো তাহলে আমি দেখে আসছি, লিজা সিঁড়ি বেঁয়ে উপরে উঠে আর্দ্র রুমে চলে গেলো গিয়ে দেখলো আর্দ্র খালি গায়ে গা মুছছে তারপর শার্ট গায়ে দিয়ে উপরে কোর্টটা পড়ে নিলো, , ওদিকে লিজা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে এক ধ্যানে আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে আছে যেনো চোখ দিয়েই আর্দ্রর জিম করা বডিতে হাত বুলিয়ে যাচ্ছে ,, তারপর বাঁকা হেসে রুমের মধ্যে প্রবেশ করল।

তা আর্দ্র স্যার বুঝি রেডি হচ্ছে?? অফিসে যাবি?? কারো গলার আওয়াজ শুনে আর্দ্র পিছনে তাকালো দেখলো লিজা ,, আরে লিজা যে তা কেমন আছিস?
ভালো আর থাকবো কীভাবে আসার পর থেকে তো তোকে পাচ্ছিই না এখন যাও বা পেলাম তাও আবার তুই অফিসে যাচ্ছিস চল আমিও যাবো তোর সাথে।
তুই কি করতে যাবি আর আমি তো অফিসে যাচ্ছি , আচ্ছা তুই তো আমার অফিস চিনিসই বিকেলে অফিসে একটা ছোট খাটো অনুষ্ঠান আছে তুই বরং বিকেলে যাস , ওকে।
ওকে।
ঠিক আছে তাহলে থাক আমি যায়।
ইস কবে যে তোকে নিজের করে পাবো সেই ছোট্ট থেকে অপেক্ষা করে আছি, , কবে যে তোর বুকে মাথা রাখব আর তুই তোর ওই শক্ত পোক্ত হাত দিয়ে আমায় শক্ত করে জরিয়ে ধরে রাখবি লিজা চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে যে আর্দ্র ওকে শক্ত করে বুকের সাথে চেপে ধরে আছে,, উফফ স্বপ্নেই কেমন সারা শরীল শিহরিত হয়ে যাচ্ছে , না জানি বাস্তবে সেই মহুর্তটা কতটা সুখকর হবে।
,,,,,
মোটা মোটা অনেক গুলি ফাইল নিয়ে ইয়ানা স্টোর রুম থেকে আর্দ্রর কেবিনে যাচ্ছে , ফাইল গুলোর জন্য ভালো করে দেখতেই পাচ্ছে না একেবারে চোখের উপর পর্যন্ত তাও আস্তে আস্তে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখনি কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে সবগুলি ফাইল নিচে পরে গেলো , ইয়ানা রেগে কিছু বলতে যাবে তখনি দেখলো সামনে আর্দ্র দাঁড়িয়ে আছে, হয়ে গেলো এখন শুরু হবে ওনার জ্ঞান দেওয়া, দেখে চলতে পারো না ইডিয়ট এতোগুলো ফাইল নিয়ে এভাবে যাচ্ছো কেনো ব্লা ব্লা ইয়ানা বসে বসে ফাইল তুলছিলো আর এগুলো ভাবছিলো কিন্তু আর্দ্র ইয়ানাকে অবাক করে দিয়ে নিজেও নিচে বসে ফাইল গুলো উঠিয়ে ইয়ানাকে সাহায্য করলো, ইয়ানা তো অবাক চোখে আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে আছে ।

এভাবে তাকিয়ে না থেকে ফাইল গুলো নিয়ে যলদি রুমে আসো।
আমি কি স্বপ্ন দেখলাম মিষ্টার আর্দ্র আমায় কিছুই বলল না? আবার এতো মিষ্টি সুরে কথা বলল কি জানি মাঝে মাঝে যে ওনার কি হয়।
ইয়ানা ফাইল গুলো নিয়ে আর্দ্রর কেবিনে গেলো তারপর আর্দ্র কে সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে এসে হল রুমে গেলো যেখানে বিকেলে মিটিং মানে অনুষ্ঠানটা হবে , অনেক বড় হল রুম সারি সারি চেয়ার দেওয়া দুপাশে আর মাঝখানে ইয়া বড় একটা টেবিল আর প্রতিটা চেয়ারের সামনে একটা করে পানির বতল রাখা ইয়ানার হল রুমে এসে দেখলো সবকিছু সুন্দর করে সাজানো কিন্তু আর্দ্র নামের ওখানে ডি জায়গায় বি লিখা।

হায় হায় এরা দেখি বড় আকারে ভুল করেছে এটা যদি এখন মিষ্টার আর্দ্র দেখতো তাহলে তো হয়ে যেতো,, ইয়ানা একটা চেয়ায়ে উঠে বি লেখা বেলুনটা সরায়ে ডি দিয়ে দিলো কিন্তু যেই নামতে যাবে ওমনি চেয়ারটা নড়ে উঠলো আর ইয়ানা পরে যেতে গেলো,,, আআআআআ এবার আমি শেষ কিন্তু না ইয়ানা নিচে পরার আগেই একটা শক্ত হাত ওর কমর জরিয়ে ধরে কোলে নিয়ে নিলো, ইয়ানা যখন বুঝলো যে ও নিচে পড়েনি কেউ ওকে ধরেছে তখন আস্তে করে চোখ খুলে দেখলো যে কে ওকে ধরেছে চোখ খুলে দেখলো আর কেউ নয় বরং আর্দ্র ওকে ধরে রেখেছে ইয়ানা অবাক চোখে আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে আছে তখনি পিছন থেকে কেউ আর্দ্র নাম ধরে ডাকলো।

আর্দ্র এখানে কি হচ্ছে এসব ,, লিজা রেগে চিৎকার করে বলল।
আর্দ্র ইয়ানাকে নিচে নামিয়ে দিয়ে পিছন ফিরে বলল,,আরে লিজা তুই?? এতো তারাতারি চলে আসলি যে।
ওহ এই তাহলে পরশের সেই লিজা পিজ্জা।
কেনো এসে কি ভুল করলাম?? আর তুই এখানে কি করছিলি??
আমি দেখতে এসেছিলাম হলরুম সাজানো কতদূর আর এসে দেখি ইয়ানা পরে যাচ্ছে তাই ওকে ধরলাম,, আর লিজা তুই ভালো করেই জানিস আমি কাওকে কৈফত দিই না তুই আমার অফিসে প্রথম আসলি তাই তোর যেনো কোনো অসম্মান না হয় তাই বললাম এরপর থেকে আমার সাথে এভাবে কথা বলার আগে দশবার ভাববি,, আর্দ্র রেগে বেরিয়ে গেলো,, লিজাও ইয়ানার দিকে রাগী একটা লুক দিয়ে বেরিয়ে গেলো আর পুরোটা সময় ইয়ানা চুপ করে দাড়িয়ে ছিলো কেননা ওর কিছু বলার ছিলোই না।

বিকেলে অনুষ্ঠানটা ভালো ভাবেই মিটে গেলো পুরোটা সময় লিজা আর্দ্রর সাথেই ছিলো,, ইয়ানা অফিস থেকে বেরিয়ে বাসায় চলে গেলো গিয়ে দেখলো সুহাগ এসেছে।

এতোক্ষণে তোর আসার সময় হলো সেই কথন থেকে তোর জন্য অপেক্ষা করছি জানিস??
কেনো আমার সাথে আবার আপনার কি দরকার?
তোকে ওতোকিছু বুঝতে হবে না এখন ফ্রেশ হয়ে তৈরি হয়ে নে তোকে নিয়ে ঘুরতে যাবো।
,, সরি ভাইয়া আমি যেতে পারবো না আপনি তো জানেনই আমার এখন একটা টিউশনি আছে এমনিতেই তিন দিন পড়াতে যায়নি আজকে যেতেই হবে আমরা না হয় অন্য একদিন যাবো।
,, ওকে মহারানি তুই যেটা বলবি, তাহলে তুই তৈরি হয়ে নে আমি বরং তোকে যাওয়ার সময় নামিয়ে দিয়ে আসবো।
ওকে।
,,,,,
কিউটিপাই তুমি এসেছো জানো এ কয়দিন তোমায় অনেক মিস করেছি।
,, ওহ তাই ওলে বাবা তাহলে এখন চলে পড়তে বসতে হবে তো।
,, হুম পড়তে তো বসবোই তার আগে চলো তোমায় একটা জিনিস দেখায়।
কি??
আগে আসো তো তাহলেই বুঝতে পারবা ,,, পরশ ইয়ানার হাত ধরে টেনে উপরে চলে গেলো তারপর লিজার রুমের সামনে নিয়ে গিয়ে বলল দাখো৷, ইয়ানা ভিতরে তাকিয়ে দেখে লিজা মুখে প্যাক লাগিয়ে চোখে শশা দিয়ে কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে চেয়ারে বসে আছে।

দেখেছো কেমন দেখাচ্ছে আমার তো অনেক হাসি পাচ্ছে।
,,এভাবে বলতে হয় না সোনা ওনি তোমার বড় না?? আর ওনিতো রুপচর্চা করছে এখন চলো আমরা পড়তে বসি।
,,, ওকে চলো।
ইয়ানা পরশকে নিয়ে পরশের রুমে চলে গেলো তারপর পরানো শুরু করলো পরানো শেষে ইয়ানা নিচে নেমে দেখলো লিজা সোফায় বসে আছে তাই ইয়ানা অন্তরার থেকে বিদায় নিয়ে যেই যাবে তখনি লিজা ইয়ানা কে ডাক দিলো।। এই শোনো??
জি বলেন?

তোমাকে তো আমি অফিসে দেখেছিলাম তাহলে তুমি এখানে কি করছো??

আসলে আমি তো চাম্প মানে পরশকে পড়াই তাই আর কি।

ওহ ভালো ,, আমাকে এক গ্লাস পানি দাও তো।

ইয়ানা ভদ্রতার খাতিরে লিজাকে পানি দিলো আর তৃষ্ণার্থকে পানি পান করানো সোওয়াব এর কাজ তাই ইয়ানা লিজা কে পানি দিয়ে গ্লাসটা রেখে যেতে যাবে তখন লিজা বলল,, শোনো আমি হাতে নেল পলিশ লাগিয়েছি এখনো শুকায়নি তুমি এই ব্যাগটা আমার রুমে দিয়ে আসো তো। ,, আমার আর্দ্রর পাশে দেখেছি তোমায় ,, এতো সহজে তো তোমায় ছাড়বো না ,, মনে মনে বলল লিজা

ইয়ানা এতোক্ষণ চুপ থাকলেও এবার ও বুঝতে পেরেছে লিজা মেয়েটা ওকে জ্বালানোর জন্য এমন করছে তাই ও দু হাত বুকে গুজে দাঁড়িয়ে থাকলো।

কি হলো কথা কানে যানে যাচ্ছে না?? কি বললাম তোমায়??

ম্যাম আপনি ভুলে যাচ্ছেন আমি পরশের টিচার এই বাড়ির কাজে লোক নয়, আর কাজের লোক হলেও আমি আপনার কাজ করতাম না কেননা নিজের কাজ নিজে করাই ভালো।

এই শোনো তোমাকে আমায় জ্ঞান দিতে হবে না তোমাকে যেটা বললাম সেটা করো আর তাছাড়া তুমি তো টাকার জন্যই কাজ করো এই কাজের জন্যও না হয় আমি তোমায় কিছু টাকা দেবো।

এতোক্ষণ আমি আপনার সাথে ভালো ব্যবহার করেছি বলে আপনি কিন্তু আপনার সিমানা অতিক্রম করছেন ম্যাম,, আমি আবারো বলছি আমি পরশের টিচার।

তো?? আমি যখন তোমাকে বলেছি তুমি এই ব্যাগটা আমার রুমে দিয়ে আসবে, তখন তোমাকে দিয়ে আসতেই হবে।

যদি না দিই তো???

এখানে কি হচ্ছে ,, পিছন থেকে আর্দ্র বলল।

চলবে৷ ,,,,??

(সবাই বলছো আর্দ্রর সাথে ইয়ানার প্রেম করায়ে দাও আচ্ছা ভালোবাসা কি খুবি সস্তা?? যাকে তাকে দেখে যখন তখন কেউ কাউকে ভালোবাসে না যদি তাই হতো তাহলে আর্দ্র লিজাকে এতোদিন ভালোবেসে ফেলতো ভালোবাসা হলো মন থেকে হয় আর সেটা সময় হলেই হবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here