আমি সেই চারুলতা পর্ব-৩৭

0
1153

#আমি_সেই_চারুলতা
#Shuvra_Priya (স্নেহা)
#পর্বঃ৩৭
_______________________

নিজের দিদির দুই সন্তানকে প্রথমবারের মতো দেখে আবেগে আপ্লুত হলেন প্রতিমা দেবী। হামিদ তখনও জানেনা মহিলাটি কে তবে এটা জানে মহিলাটি তাকে খুব ভালোবাসে। কিছুটা দুরেই দাঁড়িয়ে আছে হামিদের চেয়ে বয়েসে একটু বড় আরেকটা ছেলে। নাজিমুদ্দিনকে বাজান সম্মোধন করছে সে। হামিদের রাগ হলো, অন্য একটা ছেলে কেনো তার বাবাকে বাজান ডাকবে? হামিদ এইটা মানতে পারছেনা কিছুতেই। হামিদ ইচ্ছে করে গিয়ে ছেলেটার সামনে গিয়ে বারবার বলতে লাগলো এইটা তার বাবা। ছেলেটা ছোট হলেও তার বুঝতে অসুবিধা হয়নি হামিদ নাজিমুদ্দিনের অন্য আরেক ছেলে। প্রচন্ড হতাশ হলো সে। মুখ চেপে কান্না শুরু করলো। প্রতিমা দেবী এলেন তার কান্না থামানোর জন্য কিন্তু সেটা থামলো না। নাজিমুদ্দিন কোনোমতে বুঝিয়ে ছেলেটাকে থামালেও মনের মাঝে এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি তার। বাসায় ফিরেই সবটা জানিয়ে দেয় তার মাকে। এতদিন সে দেখে এসেছে কত কষ্ট নিয়ে তার মা বেঁচে আছে। বাবা একদিন আসে তো ছয়মাস আসেনা। কোনোরকম হাতখরচও দেয়না। অন্যের বাসায় কাজ করে মা সংসার চালাতো। সেদিন থেকেই হিমেল নিজ মনে দৃঢ় সংকল্প করে সে মায়ের জন্য কিছু একটা করবে। হিমেলের মা চলে আসে হিমেলকে নিয়ে অনেকটা দূরে, নাজিমুদ্দিনের নাগালের বাইরে।

অপরদিকে, প্রতিমার সাথে হামিদের পরিচয় করানো হয় ফুপি হিসেবে। চৌদ্দ বছরের হামিদের মাথায় প্রশ্ন আসেনি কেনো সে ভিন্ন ধর্মের? বড় হওয়ার পর মাথায় বেশ কয়েকবার প্রশ্নটা আসলেও মাথা ঘামায়নি সে। নাজিমুদ্দিনের সকল রহস্য সে জানতে পেরেছিলো তাকে খু*নের দিন। আট বছর আগে হামিদের সাথে তাদের প্রথম দেখা হলেও দ্বিতীয়বার দেখা হয় পাঁচ বছর আগে এবং তৃতীয়বার দেখা হয় মাত্র ছয়মাস মাসে। নাজিমুদ্দিনকে খু*নের মাত্র কিছুদিন আগে। সেখান থেকেই সমস্ত পরিকল্পনা করে হিমেল, সাজিদ ওরফে সিফাতের অগোচরে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে হামিদ এবং হিমেল তখনও জানতো না নাজিমুদ্দিন ব্রাহ্মণ।
ঘটনাটি ঘটেছিলো প্রায় মাস ছয়েক আগে। সাজিদের সাথে তখন দেখা হয়নি হামিদের। দেখা হয়েছিলো কেবল হিমেলের সাথে। সেখানেই হামিদ জানতে পারে নাজিমুদ্দিন সম্পর্কে তার বিদ্বেষ। হামিদও চারুর সাথে হওয়া সকল অন্যায় হিমেলকে জানায় যতটা সে জানতো। হামিদ এবং হিমেল দুজনে মিলে ঠিক করবে তারা নাজিমুদ্দিনের ওপর প্রতিশোধ নেবে কিন্তু হামিদ শর্ত জুড়ে দেয় চারুকে বাঁচাতে হবে হিমেলের। চারুর কোনোপ্রকার ক্ষতি হামিদ হতে দেবেনা। এরজন্য নতুন এক পরিকল্পনা করে সাজিদের সাথে মিলে যায় তারা।

সিফাত ছোটবেলা থেকেই ছিলো ভবঘুরে ছেলে। পেশায় তার মনোযোগ ছিলোনা কিন্তু তবুও ভাইয়ের সাথে মিলে পুলিশে জয়েন করেছিলো। ঘুরতে ঘুরতে একপর্যায়ে সে পৌছেছিলো চারুদের গ্রামে। সেখানেই চারুকে প্রথমবারের মতো দেখে সে। সিফাত ভবঘুরে হলেও ছিলো তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন। নাজিমুদ্দিনকে তার সন্দেহ হলে সে খুব দ্রুতই বুঝতে পারে সে এই মেয়েটাকে নিয়ে কিছু ষড়যন্ত্র করছে কিন্তু সে কিছু করার আগেই নাজিমুদ্দিন সেটা টের পেয়ে যায় এবং কৌশলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। সিফাত ভবঘুরে হওয়ায় চারুকে নিয়ে অত্যাধিক চিন্তা সে করেনি তবে হামিদকে জানিয়ে দিয়ে আসে চারুর সাথে কিছু একটা করতে চায় নাজিমুদ্দিন। সেসময়টাতে হামিদও চারুর খেয়াল তেমন রাখতো না। তাই ব্যাপারটা নিয়ে তেমন মাথা ঘামায়নি।
হামিদের যখন মনে পড়লো, সিফাত তাকে সতর্ক করেছিলো চারুর সম্পর্কে তখন হামিদ আবারও হিমেলকে নিয়ে ছুটে গেলো সিফাতের কাছে কিন্তু বাসায় পৌঁছেই তারা জানতে পারলো সিফাত মা*রা গেছে। অতঃপর বাধ্য হয়ে সাজিদের সাথেই কথা বলে তারা। সাজিদ আগে থেকেই সব জানতো কারণ রোড এক্সিডেন্টে সেদিন সিফাত নয়, সাজিদ মা*রা গিয়েছিলো। আর সিফাতই সাজিদের পরিচয়ে সেখানে অবস্থান করছিলো।
ততদিনে সিফাত বদলে যায় সম্পূর্ণ। ভবঘুরে হয়ে থাকা ছেড়ে দিয়ে সাজিদের মতোই কাজে সিরিয়াস হয়। কাউকে বুঝতে দিতে চলবেনা সেই সিফাত। এই কারণে হামিদও জানতে পারেনি সাজিদ আসলে সাজিদ নয়। সে তারই জমজ ভাই সিফাত। হামিদ তাকে সকল কথা খুলে বললেও সে প্রথমে রাজি হতে চায়না কারণ এইসব আইনের ঘোর বিরোধী কিন্তু হামিদের এত অনুরোধ ফেলতে পারেনা সে। তৈরি হয় নতুন এক ইতিহাসের

★★★

– তারমানে তুমি নাজিমুদ্দিন সম্পর্কে কিছুই জানতে না? শুধু জানতে তার আরো বিয়ে আছে।
– হুম কিন্তু এতগুলা আছে তা জানতাম না।
– বস কে?
– আমি ক্যামনে জানমু?
– তাহলে তার পিছু করা ছেড়ে দিতে বললে কেনো?
– সে তো আর কোনো ঝামেলা করতাছেনা তাই বলছি।
– পরে করবেনা তার কি গ্যারান্টি?
– আমরা তো আছি চারু।
– তোমাদের আর আমি বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করিনা। যাকগে বাদ দাও, এখন বলো এইসব কেনো করলে?
– আমরা সবাই তোরে একটা স্বাভাবিক জীবন দিতে চাইছিলাম।
– আমাকে স্বাভাবিক জীবন দিতে গিয়ে সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক বানিয়ে দিলে তাই তো? আমি যদি সঠিক হই আপনি আমাকে নিজে পছন্দ করে বিয়ে করেননি তাই না সাজিদ?
– বিয়েটা দায়বদ্ধতা থেকে করলেও বিয়ের পরে আমি সত্যি আপনাকে ভালোবেসেছি বেলিফুল। বিশ্বাস করুন।
– করলাম না। প্রতিমা দেবী সব জানতেন?
– না। উনি শুধু জানতেন দুর্ঘটনায় নাজিমুদ্দিন আর সারদা দেবী মারা যান আর আপনারা একা হয়ে গেছেন। আমরা তাকে যতটুকু করতে বলেছিলাম তিনি ততটুকুই করছেন। আর এর বিনিময়ে চেয়েছিলেন আমি যেনো তার দিদির মেয়েকে বিয়ে করে নেই। তিনি জানতেন না তুমি সারদা দেবীর মেয়ে নও। তোমাদের সারদা দেবীর সন্তান মনে করেই তিনি তোমাদের ভালোবাসেন।
– আমি সেদিন ড্রইংরুমে আপনাদের যেই কথপোকথন শুনেছিলাম সেটাও সাজানো ছিলো?
– বিয়ের ব্যাপারে রাজি না হওয়া?
– হুম।
– হ্যাঁ সেটা সাজানো ছিলো।
– সবাই শুরু থেকে সব জানতো কেবল আমিই জানতাম না।
– আমি চারুলতা, আমি প্রথমে তোমাকে চিনিনি। একদিন ব্যস আমি তোমাকে কেইসটা নিয়ে বাসায় ঘাটাঘাটি করি, সেদিনই জানি হামিদ তোমার ভাই আর তুমি সেই চারুলতা যাকে আমার বাঁচতে হবে। হামিদ আমাকে সব বলেছিলো ঠিকই কিন্তু তোমার কোনো ছবি আমাকে দেয়নি এবং পরবর্তীতে আমাদের যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। (হিমেল)
– সাজিদ ওরফে সিফাত প্রথমেই সব জানতেন?
– হুম। এমনকি আমিই আপনাকে আমার খোজ দিয়েছিলাম যা আপনি বুঝতে পারেননি।
– নাম কেনো বদলালেন?
– নাম আমি আপনি জন্য বদলাইনি চারুলতা। এইটা সম্পূর্ণই আমার নিজস্ব কারণে বদলেছিলাম। আমার বাবা সায়মার সাথে সাজিদের বিয়ে ঠিক করায় তাদের বিয়েটা হয়। সম্পত্তির জন্য সায়মা সাজিদকে খু*ন করতে চায় এবং সে সম্পদ নিয়ে সে হোসেনের সাথে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলো তাই সাজিদের গাড়ির ব্রেক ফেইল করিয়ে দেয়। সেদিন দুষ্টুমি করে আমি আর সাজিদ প্ল্যান করি প্রতিমা আন্টিকে বোকা বানাবো তাই আমি সাজিদের পোশাক পড়ি আর সাজিদ আমার পোশাক। তারপর যা হওয়ার তাই হলো। গাড়ি ব্রেক ফেইল হয়ে খাদে পড়ে গেলো। আমি কোনোমতে বেঁচে গেলেও সাজিদ বাঁচলো না। আমার পরনে সাজিদের পোশাক থাকার সকলে ভেবে নেয় আমার অর্থাৎ সিফাতের মৃ*ত্যু হয়েছে আর সাজিদ বেঁচে আছে। সায়মাও তাই মনে করে। ততদিনে আমি সায়মা সম্পর্কে সব জানতে পারি এবং নিজের সম্পূর্ণ পরিচয় লুকিয়ে আমার নতুন পরিচয় হয় আমি সাজিদ। এরপরই সায়মার সাথে আমার ডিভোর্স হয়। এইটা অবশ্য ডিভোর্স ছিলোই না কারণ সায়মার সাথে আমার নয় সাজিদের বিয়ে হয়েছিলো। ব্যাস তারপর থেকে সাজিদের হয়ে আমি পুতুলকে মানুষ করছি। আমি ছাড়া আর কেউ এই সত্য জানতো না এমনকি প্রতিমা আন্টিও না।
– আপনারা সকলেই বিশ্বাসঘাতক! বেড়িয়ে যান ঘর থেকে। আমাকে একা থাকতে দিন।
কেউই বের হলো না। হামিদ বলে উঠলো,
– তুই কি চাস চারু?
– আমি যা চাই তা আমি নিজেই করে নিতে পারবো। কোনো বিশ্বাসঘাতকের সহায়তা আমার প্রয়োজন নেই। তাছাড়া তোমরাও তো চাও আমি বসকে না খুজি। এমন হলে আমার তোমাদের প্রয়োজন নেই।
– চারু আমি,,,
– পুলিশ অফিসার সীমা কে? তার কি রহস্য?
– তার কোন রহস্য নেই। সে সাধারণ এক পুলিশ অফিসার। কিছুদিনের মাঝেই তার ট্রান্সফার হতো। সে সবটা জানলেও কোনো সমস্যা ছিলোনা কারণ সে এই কেইসটার তত্ত্বাবধানে থাকবেনা।
– তোমরা সবাই এখন নিজেদের মতো থাকো আর আমাকে আমার কাজ একাই করতে দাও৷ আমার আর কাউকে প্রয়োজন নেই।
– কি করতে চাস তুই?
– তোমরা ইচ্ছে করেই কেইসটা সমাধান করোনি আমি জানি। আমার কেইসের সমাধান আমিই করবো।
– কি করবি তুই?
– যেখানে সব শেষ হয়েছিলো সেখানেই আবার সব শুরু করবো। আমি গ্রামে ফিরে যাবো। সেখানেই খুজবো ঘাতককে।
– আমিও তোর সাথে যামু।
– তুমি ভাবলে কিভাবে আমি তোমাকে আমার সাথে নিয়ে যাবো?

★★★

অফিসে বসে কাজ করছিলো শিহাব। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে উন্নত দেশে। কিছুদিনের মাঝেই নতুন ধরনের কিছু পোশাক শিহাব বাইরের দেশে রপ্তানি করবে। যার জন্য তড়িঘড়ি করে শিহাব শহরে এসেছিলো তাকে পায়নি সে। সে নাকি অন্য এক কাজে রাজশাহী আছে। আসতে এক সপ্তাহের মতো লেগে যাবে৷ অপেক্ষা ছাড়া কিছুই করার নেই শিহাবের। সে নতুন তৈরি করা পোশাকের ডিজাইনগুলো দেখছিলো। এমন সময়েই কেবিনে নক হয়। শিহাব ভেতরে আসার অনুমতি দিলে ঘরে প্রবেশ করে সুহাসিনী।
– তুমি? এখানে কি চাই?
– চলে এলাম আপনার সাথে দেখা করতে। এখন থেকে প্রায়ই আসবো।
– কেনো?
– যেনো আপনি আমাকে প্রতিদিন দেখেন আর আমার জন্য আপনার মনে মায়ার সৃষ্টি হয়।
শিহাব ভ্রুকুঞ্চন করে তাকালো সুহাসিনীর দিকে কিন্তু প্রত্যুত্তরে মেয়েটি কেবল মিষ্টি করে হাসলো।
– এইসব কি ছেলেমানুষী করছো তুমি?
– ছেলেমানুষী আমি নই আপনি করছেন। যাকে কোনোদিন পাবেন না তাকে কেনো ভালোবাসেন? যাকে পেতে চলেছেন তাকে ভালোবাসুন।
– তুমি বুঝবেনা সুহাসিনী। জোর করে অন্তত ভালোবাসা হয়না।
– হবে। এখন থেকেই হবে। আমাদের বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়েছে জানেন তো?
– হুম জানি।
– তারমানে আমি এখন আপনার হবু বউ। আমাকে নিয়ে কোথাও থেকে ঘুরে আসুন।
– আমি বিজি আছি সুহাসিনী। তুমি এখন যাও।
– না যাবোনা।
সুহাসিনী একপ্রকার জোর করেই জড়িয়ে ধরলো শিহাবকে।
– আমি আপনাকে ভালোবাসি শিহাব। খুব ভালোবাসি। আপনি কেনো আমাকে বোঝেন না? একতরফা ভালোবাসা এতটা কেনো কষ্ট দেয় শিহাব? কেনো ভুলতে পারিনা আপনাকে? কেনো আপনি আমাকে ভালোবাসেননা জেনেও আমার মন শুধু আপনাকেই চায়।
শিহাব নিরুত্তর রইলো। এইসব প্রশ্নের উত্তর সে নিজেও জানেনা। পাঁচটা বছর ধরে সেও তো কাউকে একতরফা ভালোবেসে এসেছে। সুহাসিনী মেয়েটা তাকে সত্যিই খুব ভালোবাসে। তার কি উচিত হবে জীবনকে আরো একটা সুযোগ দেওয়া? হয়তো হবে, জীবন তো একটাই। একটা মাত্র জীবনকে শুধুমাত্র একটা মেয়ের জন্য পার হয়ে দেওয়া বোকামি ছাড়া কিছুই নয়। শিহাবের মস্তিষ্ক কথাটা বিশ্বাস করলেও মন যেনো কিছুতেই মানতে চায়না।
– এতটা পাষাণ কেনো হচ্ছেন শিহাব? আমি জড়িয়ে ধরেছি আপনাকে। আপনিও আমাকে ধরুন। প্লিজ!
শিহাব জড়িয়ে ধরেনা সুহাসিনীকে তবে সিদ্ধান্ত নিলো সত্যিই সে বিয়ে করবে সুহাসিনীকে। একতরফা ভালোবাসার কষ্ট সে জানে। একটা মেয়েকে আর কত কষ্ট দেবে সে? সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে নিজের জীবন গুছিয়ে নেওয়ার।

★★★

অভিকে একপ্রকার টেনে হিচরে জোর করে আইসক্রিম পার্লারে নিয়ে এসেছে স্মৃতি। ছেলেটা কোথাও যেতে চায়না। কোথাও গেলেই তার মনে হয়, এতগুলো গার্লফ্রেন্ডের মাঝে কেউ একজন দেখে নিতে পারে। আজ স্মৃতির জোড়াজুড়িতে একপ্রকার বাধ্য হয়ে বের হতে হলো তাকে। আইসক্রিম নিয়ে একটা পার্কে ঢুকলো তারা।
– অভি!
– বলো।
– পরিবেশটা কেমন?
– ভালোই তবে কেউ আমাকে দেখলে,,,
– উফ! কেউ দেখবেনা তোমাকে। এইটা কাপল পার্ক। যদি কেউ দেখে তাহলে তার ভিতরেও ঘাপলা আছে। সে কেনো বয়ফ্রেন্ড ছাড়া কাপল পার্কে এলো?
– তা অবশ্য ঠিক বলেছো।
– মেয়েগুলোর ফ্লাইট আজ রাত নয়টায়?
– হুম।
– কি অদ্ভুত!
– এখানে অদ্ভুতের কিছু নেই স্মৃতি। আসলে তুমি সবটা জানোনা তাই তোমার কাছে ব্যাপারটা এইখানেই অদ্ভুত লাগছে।
– আবার কি লুকিয়েছো আমার কাছে?
– ঠিক লুকাইনি তবে তোমাকে জানানো হয়নি। এই মেয়েদের প্রস্টিটিউড হিসেবে পাঠানো হচ্ছেনা।
– মানে? তবে কেনো?
– মেয়েদের পাচার করলে যতটা না টাকা পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি টাকা পাওয়া যায়, সাইন্টিস্টদের কাছে বিক্রি করলে। তারা বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষা করে তাদের উপর যা তাদের দেশের সরকার নিষেধ করে দিয়েছে। এই ধরনের পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন হয় মানুষের আর আমরা বেশ কয়েকবার সেই ধরনের মেয়ে পাচার করেছি। তাদের বৈধ লাইসেন্স প্রয়োজন নেই তবে তারা হিপ্নোটাইজ নিয়ে গবেষণা করছে। মেয়েগুলো দেখে একবারও মনে হবেনা তারা নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই। তারা একটু বেশি রিস্ক নিয়ে মেয়েদের নিতে চাইছে।
– তাহলে চারুলতাকে কেনো ওখানে পাঠাচ্ছো?
– তারা সুন্দর মানুষ এবং কুৎসিত মানুষের মাঝে একটা পরীক্ষা করবে। দুইজনের জন্যই বেশ ভালো এমাউন্ট পাওয়া যাবে। তুমি ভাবতেও পারোনা এত টাকা!
– না তুমি চারুলতাকে সেখানে দেবেনা। ওর যখন এত রূপের দেমাক যখন তার অবস্থান হওয়া উচিত পতিতা পল্লিতে।
– রুপের দেমাক তার নয় স্মৃতি। তুমি ওর সৌন্দর্যকে হিংসে করো। অবশ্য এতে তোমার দোষ নেই। সুন্দরী মেয়েরা তাদের চেয়ে অধিক সুন্দরীদের হিংসে করেই থাকে।
– তারমানে তুমি আমার কথা মানছো না?
– না। এমন বেকুবের কথা মেনে আমি এতগুলো টাকা হাতছাড়া করতে চাইনা।
– তুমি আমাকে বেকুব বললে?
স্মৃতি মুখ ফুলালো। অভির ভিতরটা হঠাৎই কেমন করে উঠলো। আজকাল এই মেয়েটার প্রতি অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে যাচ্ছে সে। না এমনটা হওয়ায় যাবে। অভির ভাবনার ঘোর কাটে ফোনের আওয়াজে,
– হ্যাঁ বলো।
– বস চারুলতাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা।
– হোয়াট? পাওয়া যাচ্ছেনা মানে?
– পুলিশের বাড়িতে তালা দেওয়া। ভেতরে কেউ নেই। হামিদের বাড়িও খালি। কোথাও কেউ নেই।
– কোথায় গেছে?
– জানিনা বস।
– শু*য়োরের বাচ্চা, তোদের বলেছিলাম না ওর দিকে নজর রাখবি? তোদের খু*ন করে ফেলবো আমি। যেখান থেকে পারিস, এখন একটা মেয়ে জোগাড় করবি। রাত আটটার মধ্যে মেয়েটা আমার চাই।
– কি হয়েছে অভি?
স্মৃতির কথার জবাব না দিয়ে ফোনটা দূরে ছুড়ে ফেললো অভি।

বিঃদ্রঃ গল্পটা কেনো ভালো লাগছেনা কারণটা জানতে চাইছি। হ্যাঁ আমি মেনে নিচ্ছি গল্পটাতে একটু প্যাচ লেগে যাচ্ছে আমি সাজাতে পারছিনা। ১৬ তারিখ আমার পরীক্ষা তাই আমি কাভার তেমন করতে পারছিনা। এইটা ছাড়া অন্যান্য কারণ গুলো জানান। আর গল্পটা আপনারাও মনোযোগ দিয়ে পড়ছেননা। মনোযোগ সহকারে না পড়লে বুঝবেন না সেইটা স্বাভাবিক। যাদের যে বিষয় নিয়ে সমস্যা তা বলে ফেলুন। স্লভ করবো আজকে। সকলের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। আর নিতান্তই ভালো না লাগলে দুই পর্বের মাঝেই শেষ করে দেবো। অবশ্য আমার ভেবে রাখা অনেক কিছুই এতে স্কিপ হবে। তবে আপনাদের অসুবিধা হবেনা।

_______________________

To Be Continued…
®শুভ্রা আহমেদ প্রিয়া

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here