আয়নামতি পর্ব-৪

0
1890

#আয়নামতী
#পর্ব_৪
#পুষ্পিতা_প্রিমা

ফজলু মিয়ার কাছে সকাল সাতটার দিকে রওনা দিল আয়না। রজনীগন্ধার কন্দ কিভাবে লাগাবে সে জানেনা। ওই যে বইটা দিল ওটার লেখাগুলো তার মাথায় ঢুকছেনা। তাই ফজলু মিয়ার কাছে যাওয়া।
ফজলু মিয়ার জন্য সে নারকেল নাড়ু নিয়ে গেল। বাড়ির পেছনে নারকেল গাছটাতে নারকেল ধরেছে, সেই নারকেল কাল পেড়েছে আয়না। আর তার আব্বা নারকেল নাড়ু খেতে পছন্দ করে তাই মাকে বলেছে যাতে নারকেল নাড়ু বানায়। ফজলু কাকুর জন্য ও নিয়ে যেতে পারবে।
ফজলু মিয়া নারকেল নাড়ু দেখে বলল
‘ দাঁত দিয়া চাবাই খাইতে পারিনারে মা। আমার রেণু খাইবো। রাখ।
আয়না বলল
‘ একটা খাওয়ার চেষ্টা করো। বাকিগুলো রেণু খাবে৷ এখন ছটপট বলে ফেলো মাটি কিভাবে তৈরি করব।
ফজলু মিয়া বলল
‘ আমার রেণুরে লইয়্যা যাহ ফুলবানু। ও তোরে সব শিখাইয়া দিবো৷
আয়না খুশি হলো।
‘ রেণু পারবে?
রেণু বলল
‘ পারিব আপা। আমি আমার বাগানে কন্দ লাগাইছি।
আয়না বলল
‘ তাহলে চলো। দুপুরে আমাদের ঘরে ভাত খাবে। আর তোমার নানার জন্য টিফিনবক্সে করে পাঠাই দেব। আজ রান্না করতে হবে না৷
রেণু বলল
‘ আইচ্ছা।
আয়না বেজায় খুশি। রেণুকে নিয়ে ঘরে আসার পথে কালকের ভ্যানগাড়িওয়ালাকে চোখে পড়লো। আয়নাকে দেখে রহমত মিয়া হাসলো। এগিয়ে এসে কিছুটা দূরত্ব রেখে দাঁড়িয়ে একটা কাগজ বাড়িয়ে দিয়ে বলল
‘ আপা ছোডসাহেব আপনারে আরেকডা লিখা পাঠাইছে।
আয়না ভুরু কুঁচকালো। রহমত মিয়া কাগজটা দিল। আয়না সেটি নিয়ে বলল
‘ আর যদি দেয় আপনি আনবেন না। যদি আনেন আপনাকে আমি খাইছি।
রহমত মিয়া ভড়কে গেল। কেমন ধারালো কথা? খাইবে মানে কিতা?
রহমত মিয়া বলল
‘ ছোডসাহেবের আদেশ পালন করতেই হইবো আপা। আপনি মারলেও আনতে হইবো।
আয়না বলল
‘ দয়া করে আপনি যান । আমার অত সময় নাই ফালতু কথা বলার।
রহমত মিয়া পথ আটকে দাঁড়ালো আবার। বলল
‘ ছোডসাহেব কইছে যাতে চিঠির উত্তর লইয়া যাই।
আয়না বিরক্ত হলো। বলল
‘ আমার কি মাথা খারাপ? আপনার ছোটসাহেবের মাথা খারাপ হয়ছে আমার না। যান।
রহমত মিয়া মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। আবার আয়নার পথ আটকে বলল
‘ আপা আমি যদি আরেকডা লেখা লইয়া যাই, তাহলে ছোডসাহেব কিছু টাকা দিবো। ঘরে বাচ্চা আছে, বাচ্চাটার জন্য কিছু,,,

আয়না কিছুক্ষণ নীরব হয়ে থাকলো। তারপর কিছু একটা ভেবে বলল
‘ আমার কাছে কলম খাতা নেই। আমার সাথে পিছু পিছু আমাদের বাড়িতে আসেন। খবরদার ” ছোডসাহেব ” শব্দটা ভুলে ও তখন নেবেন না। মনে থাকবে?
রহমত মিয়া মাথা নাড়লো। খুশি হলো। আয়না মাথা নাড়িয়ে রেণুকে নিয়ে যেতে যেতে বলল
‘ আজ এমন জঘন্য গালি দেব, জীবনে আর লেখা পাঠানোর নাম ধরবেনা। লম্পট পুরুষ মানুষ। তার সাথে আমার কি?
ঘরে এসে কাগজটা তার কলমদানিতে রেখে দিল আয়না। নতুন কাগজ নিয়ে কি যেন লিখলো। তারপর রহমত মিয়ার হাতে ধরিয়ে দিল। বলল
‘ আর যদি লেখা পাঠায়, আপনার ও খবর আছে, আপনার ছোডসাহেবের ও খবর আছে। বলে রাখলাম।
রহমত মিয়া একগাল হাসলো। যেতে গিয়ে আবার থেমে গেল। বলল
‘ একডা কথা কমু আপা?
আয়না বলল
‘ কিহ?
রহমত মিয়া কিছু বলতেই যাচ্ছিল।

আয়না হঠাৎ চ্যানচ্যান করে উঠে রহমতকে থামিয়ে দিয়ে বলল
‘ যান যান যান। এক সেকেন্ড ও দাঁড়াবেন না। যান। যেতে বলেছি। আপনার ফালতু কথা শোনার সময় নেই। যান।
রহমত মিয়া ভয় পেয়ে লম্বা লম্বা পা বাড়িয়ে চলে গেল। তার মনের প্রশ্ন, আপা হঠাৎ এমন করলো ক্যান? নাকি তার মনের কথা আপা বুইঝা গেছে?

___________

সাধারণত কন্দ দ্বারাই রজনীগন্ধার চাষ ও বংশ বিস্তার করা হয়। কন্দ থেকে উৎপন্ন গাছে নাকি মাতৃ গাছের সকল গুণাগুণ বজায় থাকে।
রেণু বলল
‘ আপা জমিতে চাষ দেওয়া লাগবো। তোমার কন্দ তো বেশি। অতজায়গা জমি আমরা দুজন মিলা পারবো না তো।
আয়না বলল
‘ কোদাল নিয়ে আসি। আমি পারব। তারআগে কি কিছু করতে হবে?
রেণু বলল
‘ জমি চাষ করবার আগে কন্দগুলারে ইউরিয়ার পানিতে আধঘন্টার মতো চুবাইয়া রাখতে হইবো।
আয়না বলল
‘ তারপর?
রেণু বলল,
‘ তৈয়ার জমিতে বেড বানানো লাগবো। তারপর এক সপ্তাহ পর কন্দ রোপণ করা লাগবো।
আয়না বলল
‘ ততদিনে কন্দগুলো কিভাবে রাখব?
রেণু বলল
‘ রোদে রাখলে ভালা থাকবো্ তো।
আয়না বলল
‘ আচ্ছা।
নিজ হাতে সমস্ত জমি কোদাল দিয়ে খুঁড়িয়ে দিল আয়না। রাতে হাতের এমন ব্যাথা উঠলো। ঘুমাতে দিল না আয়শা বেগমকে। আজহার সাহেব তার এমন অবস্থা দেখে বললেন
‘ দরকার নেই বাগানের।
আয়না বলল
‘ আব্বা কাল জমির মিয়াকে ডেকে আনব। দুশো টাকা দিলে চাষ দিয়ে দেবে।
আজহার সাহেব কিছু বললেন না। নামিরা গরম পানির সেক লাগিয়ে দিল আয়নার হাতে। তারপর ব্যাথার ঔষধ খাইয়ে দিল। আয়না তারপরের দিন জমির মিয়াকে ডেকে আনলো। জমি চাষ দেওয়ার সাতদিনের মাথায় কন্দগুলি লাগালো তার আগেই গাঁদাফুলের চারাগুলো লাগিয়ে ফেলেছিল সে। রেণু তাকে সাহায্য করেছিল সমস্ত কাজে। তারপর নামিরাকে নিয়ে বাগানের চারপাশে যতটুকু পারলো ততটুকু আধছেঁড়া জাল দিয়ে ঘিরে দিল।
আয়শা বেগম মেয়ের কান্ডকারখানা দেখে বললেন
‘ সারাক্ষণ বাগান নিয়া পড়ে থাকলে হবে? তোর লেখাপড়া নাই?
আয়না বলল
‘ কলেজে অত যাওয়া লাগেনা আম্মা। আমি ঘরে পড়তেছি না?
আয়শা বেগম বলল
‘ হ্যা, পড়ে তো উল্টায় দিচ্ছিস। পরীক্ষা আসলে দেখা যাবে। ফেল মারলে লোকে আর ও ভালো করে বলতে পারবে।
আয়না হেসে হেসে মাকে বলল
‘ লোকে কত কিছু বলে আম্মা৷ সব কথা কি কানে নিতে আছে?
আয়শা বেগম রাগ নিয়ে তাকিয়ে থাকে মেয়ের হাসি-হাসি মুখের দিকে। এমন বজ্জাত মেয়ে তার কোত্থেকে হলো?

___________

বসার ঘরে ছিল সবাই। শায়খ চৌধুরী আর অনিমা,আনহিতা ও ছিল। শায়লা বেগমের পাশে বসা অমি। অনুরাগ সোফায় বসে কবি জিওফ্রে চসারের রচনাবলী ” দ্য ক্যান্টারবেরি টেলস ” পড়ছিল। হঠাৎ করে দাড়োয়ান এসে অনুরাগকে বলল
‘ ছোটসাহেব রহমত মিয়া দেখা করতে চাইছে।
অনুরাগ বইয়ে মনোযোগ দিয়ে বলল
‘ আসতে বলো।
দাড়োয়ান চলে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যে রহমত মিয়া এসে সালাম দিল শায়খ চৌধুরীকে দেখামাত্র।
শায়খ চৌধুরী সালাম নিল না। অনুরাগ বলল
‘ বাবা আপনাকে সালাম দিয়েছে। শুনেননি মনে হয়।
শায়খ চৌধুরী সংবাদপত্র রেখে দিয়ে জোরগলায় সালাম নিল। রহমত মিয়া অনুরাগের কাছে এসে বলল
‘ ছোডসাহেব কাগজখানা।
অনুরাগ বইয়ের দিকে তাকিয়ে বলল
‘ কিসের কাগজ? রেখে চলে যাও।
রহমত মিয়া উসখুস করলো। অনিমা বলল
‘ কিসের কাগজ? আমাকে দাও তো।
রহমত মিয়া দিয়ে হাত মোচড়ামুচড়ি করলো। অনিমা দেখলো কাগজটা।
তারপর চোখ বড় বড় করে অনুরাগের দিকে তাকালো। তারপর বলল
‘ ভাই এটা কে পাঠিয়েছে তোকে? এসব কি লিখেছে?
অনুরাগ বই থেকে মাথা তুললো। বলল
‘ কি বললি?
অনিমা বলল
‘ এই দেখ।
অনুরাগ হাত বাড়িয়ে কাগজটি নিল। কাগজটাতে চোখ বুলিয়ে চট করে রহমত মিয়ার দিকে তাকালো। তারপর কান চুলকাতে চুলকাতে বলল
‘ নাহ আপা, ওই এমনি। তুই ওসব নিয়ে ভাবিস না।
অনিমার কপাল কুঞ্চিত হলো। অনুরাগ রহমত মিয়ার পিঠ চাপড়ে বলল
‘ আচ্ছা যাও। তোমাকে আমি পরে ডেকে নেব।
রহমত মিয়া মাথা দুলালো। মন খারাপ হলো। ধুরর সাহেব তো তাকে টাকা দিল না।
অনুরাগ ঘরে গিয়ে এদিকওদিক পায়চারী করলো। কাগজটা মেলতেই দেখলো সেখানে লিখা আছে,

‘ আপনার লিখা সুন্দর নাহ প্রফেসর। আমার বমি পায়। দয়া করে এমন বিশ্রী লিখা পাঠিয়ে আমাকে অসুস্থ বানাবেন না।

অনুরাগ খুশি হলোনা। খাতা কলম নিয়ে লিখলো,

‘ গত চিরকুটে আমি আপনাকে ‘আয়নামতী’ ডেকেছি তাই এই চিরকুটে আপনার রাগ করার কথা। তারমানে আপনি চিরকুটটা পড়েননি। আমি কেন চিরকুটটা পড়েননি আয়নামতী? আমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছি।

তিনদিন পর রহমত মিয়ার জেরায় পড়ে আয়না আর ও একটি চিরকুট লিখলো। যদি ও অনুরাগের দেওয়া চিরকুটটা আগেরটার মত কলমদানিতে পড়ে রইলো।

রহমত মিয়া চিরকুট এনে অনুরাগকে দিল। অনুরাগ একরাশ কৌতূহল নিয়ে খুলে চিরকুট মেলে দেখল খালি কাগজ। হতাশ হলো অনুরাগ। পুনরায় লিখে পাঠালো।

‘ রজনীগন্ধায় প্রথম ফুল আসলে, সেটি আমার জন্য রেখে দেবেন আয়নামতী। সময় হলে আমি গিয়ে নিয়ে আসব। রাখবেন?

অনুরাগ ভেবেছিল এবার উত্তর আসবে। কিন্তু তাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে তারপর পরই আবার খালি কাগজ নিয়ে এল রহমত মিয়া। অনুরাগ তীব্র ক্ষোভ নিয়ে লিখলো

‘ আপনি খুব বুদ্ধিমতী আয়নামতী। খুব সুনিপুণ ভাবে অবহেলা করতে জানেন।

এইবার সাদা কাগজটা ও এল না। অনুরাগ খোঁজ নিয়ে জানতে পারলো, রহমত মিয়া নাকি ভীষণ অসুস্থ। অনুরাগ চিন্তায় পড়লো।

বাগানের কাজ আর পড়াশোনার চাপে অন্যকিছু ভাবনায় ও আসেনি আয়নার। তবে রহমত মিয়া যে দুই তিনদিন পর আসতো সেটা আসা বন্ধ হওয়ায় চিন্তিত হলো আয়না। রহমত মিয়ার কিছু হয়নি তো? আহা সহজ সরল মানুষটা যা বলে তাই করে। হঠাৎ করে কি হলো?
রেণুকে নিয়ে রহমত মিয়ার খোঁজে বের হলো আয়না। রেণু নাকি রহমত মিয়ার বাড়ি চেনে।

রহমত মিয়ার বাড়ি পড়েছে পূর্ব পাড়ার দিকে। রেণু আয়নাকে নিয়ে যেতে যেতে বলল
‘ আমি ইসকুল থেইকা আসার পথে রহমত মিয়াকে অনেকবার দেখছি আপা। এই গলি দিয়া বের হইতো।
আয়না বলল
‘ তাহলে এখানে আশেপাশে কোথাও না কোথাও থাকবে।
আয়না আর রেণুকে এক বৃদ্ধ রহমত মিয়ার বাড়ির পথ চিনিয়ে দিল। আয়না আর রেণু সেখানে গিয়ে উপস্থিত হতে না হতেই দেখলো রহমত মিয়ার বাড়ি থেকে অনুরাগ বের হয়েছে মাত্র। তাদেরকে দেখে থামলো অনুরাগ। চাহনি বেশিক্ষণ স্থির না করে সরিয়ে নিল। আয়না তাকে এড়িয়ে গেল। রহমত মিয়ার সাথে দেখা করতে গিয়ে দেখলো রহমত মিয়া কয়েকদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। অনুরাগ আসার সময় আপেল আর কমলা নিয়ে এসেছিল। আয়না এনেছে পাঁকা পেঁপে। তাদের বাড়ির পেছনের পেঁপে গাছে এই বছর নতুন পেঁপে ধরেছে। ভারী মিষ্টি। রহমত মিয়া খুশিতে যেন কেঁদে দিল। ছোটসাহেব যে দেখতে এল যা সে কখনো কল্পনা ও করতে পারেনি। আর এদিকে রাগী আপা।
আয়না চলে আসার সময় রহমত মিয়া বলল
‘ আপা আপনার হাতে কি বল শক্তি কিচ্ছু নাই? ছোডসাহেবরে খালি কাগজ পাঠান কেন? ছোডসাহেব মন খারাপ করে।
আয়না বলল
‘ ওসব কথা থাক। আপনি সুস্থ হয়ে উঠুন। আপনাকে এভাবে দেখতে ভালো লাগছেনা। সুস্থ হয়ে উঠুন যাতে আবার ডাকপিয়নের কাজ করতে পারেন।
রহমত মিয়া হাসলো। আয়না ও হাসলো। চলে আসার সময় অনুরাগকে আবার দেখতে পেল আয়না । অনুরাগ তাকে দেখা মাত্রই হনহনিয়ে চলে গেল। এমন ভাব করলো যেন সে আয়নামতীকে দেখতে পায়নি। আসল কথা হলো, সে আয়নামতীকে দেখার জন্যই দাঁড়িয়েছিল এতক্ষণ।

সপ্তাহ দুয়েক পরের কথা। রজনীগন্ধায় স্টিক আসতে শুরু করেছে। আগাছা পরিষ্কার করতে হয় রোজ। নামিরা সহযোগীতা করে আয়নাকে। আয়ানের ছাপাখানার দোকান আরম্ভ হয়েছে ইতোমধ্যে। টুকটাক কাজ করছে সে। এদিকে আয়নার পরীক্ষা ও নিকটে। সন্ধ্যা নাগাদ রহমত মিয়াকে দেখা গেল। আয়না তাকে দেখামাত্রই ঘরে চলে গেল। কলমদানি থেকে সব না পড়া চিঠি পড়ে নিয়ে ছোট্ট করে লিখলো,

‘ কেন আপনি আমাকে চিরকুট লিখেন প্রফেসর ? এই কারণটা যদি বলতে পারেন তাহলে আপনার প্রত্যেকটা চিরকুটের উত্তর আমি দিতে বাধ্য।

বহুদিন পর আয়নামতীর চিরকুট পেয়ে চাপা ক্ষোভ, রাগ, অভিমান কমে আসলো অনুরাগের। খুশিতে গদগদ হয়ে সে লিখলো,

‘ আপনি আমার বিয়ে না করা বউ। না শব্দটা বাদ দিলে সোজা বউ।

আয়নামতী সেই প্রসঙ্গ রেখে পরের চিরকুটে লিখলো,

‘ আপনি আমার কাছে একজন পরপুরুষ। আপনার সাথে আমার কিসের কথা? তারপর ও কেন আপনি আমায় চিরকুট লিখেন?

অনুরাগ প্রত্যুত্তরে লিখে পাঠালো,

‘ পরের বিপরীত শব্দ আপন। পরপুরুষ না হয়ে আপন পুরুষ হওয়ার জন্য কি করতে হয় আয়নামতী? আপন পুরুষ হলে কি আপনি আমায় রোজ চিরকুট লিখবেন?

আয়না এই শেষবারের মতো লিখে পাঠালো

‘ নাহ। আমি রোজ বিরক্তি নিয়ে চিরকুট লিখি। আমার লেখা দেখে কি আপনি সেটা বুঝেন না? যদি বুঝে থাকেন তারপরও কেন চিরকুট লিখেন? চারা দিয়েছেন সেজন্য? অধিকারবোধ কি এটা থেকেই আসে? উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম প্রফেসর সাহেব।

অনুরাগ সেই চিরকুটের উত্তর পাঠালো না। সেই যে নিরুদ্দেশ হলো মাস দুয়েক গেলে ও ভুলে চোখে পড়লো আয়নার। না সেই আগন্তুক, না সেই আগন্তুকের লিখা চিরকুট। আয়নার ও মনে পড়লো না। পড়লে ও বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না ।

চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here