উড়ো পাতার ঢেউ পর্ব: ৩৫

0
467

#উড়ো_পাতার_ঢেউ
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ৩৫
_________________

কতক্ষণ অবচেতন ছিল জানে না, যখন জ্ঞান ফিরলো তখন নিজেকে আবিষ্কার করলো বৃহৎ এক কক্ষ মাঝে। সুবিশাল কক্ষটির চারপাশ অন্ধকার দ্বারা বেষ্টিত। কক্ষটির মাঝ বরাবর মাথার উপর জ্বলছে একটা আলোর উৎস। যা কক্ষটির মধ্যভাগকে আলোকিত করলেও পুরো কক্ষটি থেকে অন্ধকারের ঘাপটি মেরে থাকাকে দূর করতে পারেনি। কক্ষে উপস্থিত মানুষদের উপর চোখ বুলাতেই দেখা গেল দুটো মেয়ে এবং তিনটি ছেলেকে। এদের ভিতর একজন কৃষ্ণাঙ্গ ছেলে, বাকিরা শ্বেতাঙ্গ। বুকের ভিতর ‘ভয়’ নামক জিনিসটি ঝনঝন করে উঠলো ইরতিজার। নিঃশ্বাসের গতি দ্রুত থেকে দ্রুততর। নড়তে গিয়ে লক্ষ করলো সে একটা চেয়ারের সাথে বাঁধা অবস্থায় আছে। এমনকি তার হাত দুটো পিছন দিকে নিয়ে বাঁ’ধা হয়েছে। এতক্ষণ ব্যথা অনুভব না হলেও ধীরে ধীরে ব্যথাটা শরীরে জেগে উঠলো। হাত দুটোতে বেশি ব্যথা অনুভব করছে। যন্ত্রণায় ইরতিজার মুখটা মুহূর্তেই করুণ ছাপ এঁকে নিলো। সে বুঝতে পারছে না কী ঘটছে! এখানে কেন সে? এই ছেলে-মেয়েগুলো কি তাকে এখানে এনেছে? কিন্তু কেন? প্রশ্নগুলো মুখ দিয়ে প্রকাশ করতে পারলো না ইরতিজা। ভয় করছিল, সাথে দুর্বলতাও অনুভব হচ্ছিল।
ছেলে-মেয়েগুলো ইরতিজার থেকে কিছুটা দূরে অবস্থানরত। একটা মেয়ে টুলে বসে ছিল, ইরতিজা জাগ্রত হওয়ায় উঠে দাঁড়ালো সে। মেয়েটার উচ্চতা অনেকখানি। মাথার চুলগুলো দীঘল কালো। চোখ দুটো স্বচ্ছ নীল। মুখের ভিতরে থাকা চুইংগাম অনবরত চিবিয়ে যাচ্ছে সে। শীতের মাঝেও মেয়েটার গায়ে শুধু সামান্য একটা স্লিভলেস টপ পরিধান করা। সাথে নীল জিন্স। মেয়েটা এসে ঝুঁকে পড়লো ইরতিজার দিকে। ইরতিজা ভয় পেয়ে গেল। ওর ভয়ে মিইয়ে যাওয়া চেহারাটা সহজেই প্রকাশ পেল।
মেয়েটা নিজের নীল চক্ষু বুলিয়ে ক্ষণ সময় ধরে দেখে চললো ইরতিজাকে। তারপর বললো,
“ইউ লুকিং সো গুড…বাট ইওর বয়ফ্রেন্ডস বিহেভিয়ার আর সো ব্যাড এন্ড ডার্টি!”

বলতে বলতে মেয়েটার চোখ-মুখ রোষমদপূর্ণ হয়ে উঠলো। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে খুব জোরে একটা চ/ড় মারলো সে ইরতিজাকে। ইরতিজার মুখবিবর দিয়ে ব্যথার আর্তনাদ বেরিয়ে এলো। মুখ সরে গেল অন্যদিকে। ব্যথায় টনটন করে উঠলো গাল। চোখ দিয়েও পানি ছিটকে বেরিয়ে এসেছে।
মেয়েটা নিজের দলের দিকে এগোতে এগোতে বললো,
“কল করো ক্যানিকে। ওকে আসতে বলো এখানে।”

ইরতিজার গালে আঙুলের ছাপ পড়ে গেছে। ভীষণ কষ্টে ভিতরটা দুমড়ে-মুচড়ে আসছে তার। কেন হচ্ছে এসব? ক্যানিয়ল? ক্যানিয়ল কি তাকে এখানে নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছে? ইরতিজার দু চোখ বেয়ে জলের দুটি অবিগলত ধারা নেমে গেল। ক্যানিয়ল এমনটা কেন করবে? উহুঁ ক্যানিয়ল করছে না। কিন্তু তার উপর হঠাৎ এমন তান্ডব ঝড় কেন শুরু হলো?

কৃষ্ণাঙ্গ ছেলেটা বললো,
“শুধু কল করবো? তোমার কি মনে হয় না সাথে একটা ফটো পাঠালেও সুন্দর হয়?”

“ফটো?”
মেয়েটা ঘাড় বাঁকিয়ে পিছনে ইরতিজার দিকে তাকালো। তারপর আবার ঘাড় সোজা করে বললো,
“কিন্তু এমনভাবে ছবি তুলে পাঠালে ক্যানি আমাদের দুর্বল ভাববে।”
এই বলে মেয়েটা আবারও ইরতিজার কাছে এলো। খুব জোরে আবারও একটা চ’ড় বসিয়ে দিলো ইরতিজা8র গালে। এবার চ’ড়টার আঘাত ছিল আগের চেয়েও মারাত্মক। ইরতিজার ঠোঁটের কোণ দিয়ে রক্ত দেখা গেল। শরীরে এবার ভয়ের কাঁপন শুরু হলো তার। ভয়, ব্যথার যন্ত্রণায় মুখ হয়ে আছে একেবারে বিবর্ণ। ক্ষণকাল পার হতেই কেটে যাওয়া স্থান থেকে রক্তের ক্ষুদ্র ধারা গড়িয়ে পড়লো। মেয়েটা বললো,
“এবার ছবি তোলো।”

ছবি তুলে সেটা পাঠানো হলো ক্যানিয়লের কাছে। সাথে কলও দেওয়া হলো। প্রথম বার কল হলেও রিসিভ করলো না ক্যানিয়ল। ছেলেটা তাই চিন্তিত মুখে শুধালো,
“রিসিভ হচ্ছে না।”

“আবার দাও।” নীল চোখের মেয়েটা হুকুম করলো। ছেলেটা তার কথা মতো আবারও কল দিলো।

প্রথমবারই কলটা দেখেছিল ক্যানিয়ল। সে সময় ড্যাড তাকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলছিলেন। তাই অপরিচিত নাম্বারের কল রিসিভ করার প্রয়োজন বোধ করেনি। কিন্তু দ্বিতীয়বার যখন কলটা এলো তখন সে আলোচনা সভা থেকে উঠে চলে এলো।

“হু স্পিকিং?” প্রশ্ন করলো ক্যানিয়ল।

ওপাশে ছেলেটা হাসলো। ক্যানিয়ল নিজ প্রশ্নের উত্তর পেল না। ছেলেটা বললো,
“তোমার গার্লফ্রেন্ড ক্যানি…”

ক্যানিয়লের কপালে বিস্ময়ের খাঁজ পড়লো,
“গার্লফ্রেন্ড?”

মাত্র দুই মিনিটের মাথাতেই ক্যানিয়ল গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। এত ব্যস্ত ভঙ্গিতে সে বের হলো যে সকলের দৃষ্টিতে খুব করে লাগলো বিষয়টা। হঠাৎ কী ঘটেছে যার জন্য ক্যানিয়ল এমন ছটফটে ভাবে বেরিয়ে গেছে?

বেলিক নামের ছেলেটা খুব নিবিড়ভাবে ইরতিজাকে লক্ষ করে চলছিল। সবাই যখন ক্যানিয়লের এখানে আসার অপেক্ষা করছে চুপচাপ, তখন ছেলেটা এগিয়ে গেল ইরতিজার দিকে। হালে, অর্থাৎ নীল চোখের মেয়েটা চোখের ইশারায় ইরতিজার কাছে যেতে নিষেধ করেছিল বেলিককে। কিন্তু বেলিক তার নিষেধাজ্ঞাকে এক টুকরো বাঁকা হাসি দিয়ে অগ্রাহ্য করে এগিয়ে গেল।
ক্রমশ ভয়ে ভিতরটা জড়োসড়ো হয়ে আসছিল ইরতিজার। এত ভয় শেষ কবে পেয়েছিল মনে করতে পারছে না! হৃদয়ে ঢুমঢুম করে ভয় শব্দ করছিল।
বেলিকও এসে হালের মতো ঝুঁকে পড়লো ইরতিজার দিকে। তবে বেলিক একটু বেশিই ঝুঁকেছে। ইরতিজা আর তার দূরত্ব মাত্র কিছুটা। বেলিকের এমনভাবে ঝুঁকে পড়ায় ভীষণ চমকে উঠেছে ইরতিজা। আতঙ্কগ্রস্ত হৃৎপিণ্ডটা যেন গলার মাঝ বরাবর আটকে রয়েছে।
বেলিক খুব মনোযোগ সহকারে দেখলো ইরতিজার ভীত সন্ত্রস্ত মুখখানি। চোখ, ঠোঁট, নাক, কপোল সবকিছুতেই খুব নিবিড়ভাবে দৃষ্টি বুলিয়ে গেল সে।
ছেলেটার অধরে বিদ্যমান বাঁকা হাসিটাকে ইরতিজার কাছে কাঁটার ন্যায় মনে হলো। ছেলেটা বললো,
“তুমি দেখতে ভীষণ সুন্দর প্রিন্সেস। প্রথম দেখায় তোমাকে যার ভালো না লাগবে, ধরে নিতে হবে তার মস্তিষ্কে কিছু বিষয়ের অনুপস্থিতি রয়েছে।”

বেলিক ইরতিজার মাথায় দৃষ্টি দিলো। একরাশ অসন্তুষ্টি এসে ঘিরে ধরলো তাকে। গাম্ভীর্য কণ্ঠে বললো,
“নিজের সুন্দর চুলগুলোকে কেন ঢেকে রেখেছো? জানো মেয়েদের কোন বিষয়টা আমার হৃদয়ে বেশি দোলা দেয়? মেয়েদের চুলের ঘ্রাণ!”

কথাটা বলতে বলতে মুখটা ইরতিজার কানের কাছে নিয়ে গেল। কিছুটা ফিসফিসানি সুরের শোনালো তার শেষের কথা। ইরতিজা আঁতকে উঠলো।
বেলিক হাত বাড়ালো ইরতিজার মাথার দিকে। হিজাবটা হাত দিয়ে স্পর্শ করা মাত্রই ইরতিজা বলে উঠলো,
“কী করছো তুমি?”

বেলিক তার মাথার হিজাবটা খুলতে চাইছে বুঝতে পেরেই ভীষণ রকম ছটফট করে উঠলো ইরতিজা। মৃদু চিৎকারের সুরে বললো,
“ডোন্ট ডু ইট…ডোন্ট প্লিজ!”
ইরতিজা নিজের হাতদুটো ছাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠলো। শত টানা-হিঁচড়া করেও বিশেষ কোনো লাভ হলো না। বেলিক ছেলেটা মাথার হিজাবটা খুলে ফেলেছে! ইরতিজা বার বার থামতে বলছিল ছেলেটাকে কিন্তু ছেলেটা শুনলো না। হিজাবটা খোলার পর সে ইরতিজার বাঁধা চুলগুলোও খুলে দিলো। এরপর কুৎসিত ভাবে বুক ভরে টেনে নিলো ইরতিজার চুলের ঘ্রাণ!
হঠাৎই ভীষণ ঘৃণা এসে জাপটে ধরলো ইরতিজাকে। ঘৃণায় শরীর রি রি করে উঠলো তার! কিছু সামনে থাকা চুল বেলিক হাত দিয়ে কানের পিছনে গুঁজে দিলো। এরপর ইরতিজার ঠোঁটের কেটে যাওয়া অংশটা স্পৰ্শ করে মুছে দিলো রক্ত। বললো,
“তোমার বয়ফ্রেন্ডও আমার শরীর থেকে এমন লাল র’ক্ত ঝরিয়েছে। আমিও ওর শরীর র/ক্তা/ক্ত করতে চাই। তবে তোমার শরীরের এই রক্ত আমাকে কষ্ট দিচ্ছে সুইটহার্ট।”
বলে অদ্ভুতভাবে হাসলো বেলিক। তারপর হাতে থাকা চা’কুটা দেখিয়ে বললো,
“এটা দিয়ে আ/ঘা/ত করা হবে ওকে।”

বলে সে ইরতিজার পিছনে এসে চা’কু’টা ইরতিজার গলায় চে’পে ধরলো। হাসতে হাসতে বললো,
“এটা এখন তোমার গলায় টেনে দিলে কী হবে ভেবে দেখেছো সুইটহার্ট?”

ইরতিজার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। আরও কিছুক্ষণ যদি চা’কুটা এমনভাবে তার গলায় ধরে রাখা হয় তবে সত্যি সত্যি বোধহয় শ্বাস রোধ হবে তার। পিছন থেকে বেলিক আবার বললো,
“ভয় নেই, আমি অবশ্যই চাইবো না তুমি এভাবে আ’হত হও।”

চা’কুটা নামিয়ে নিলো বেলিক। ইরতিজা যেন প্রাণ ফিরে পেল। ফিরে পাওয়া প্রাণটা হঠাৎ আবার খা’মচে ধরলো ঘাড়ের পিছন থেকে বেলিকের নিচু স্বরের কথাটা,
“আগামীকাল তুমি ফ্রি আছো প্রিন্সেস? ফ্রি থাকলে কাল সারাটা দিন আমরা একসাথে কাটাতে পারতাম, এমনকি রাতটাও একসাথে কাটানো যেত।”

ইরতিজার বুক ভেঙে কান্না পাচ্ছে। কান্নাটা আর কোনোরকম আটকে রাখার চেষ্টা চালালো না সে। কাঁদতে কাঁদতে হালের দিকে তাকিয়ে বললো,
“এমনটা কেন করছো? অপরাধ কী আমার? কোন দোষে এমন শাস্তি দিচ্ছ? কারা তোমরা?”

কথাগুলো জিজ্ঞেস করতে এবার আর কোনো ভয় ভীতি অনুভব করলো না ইরতিজা।

ঘটনাগুলো ঘটেছিল আজ থেকে বেশ কিছুদিন পূর্বে। হালেদের ছয়জনের একটা দল আছে। যার মধ্যে পাঁচজনই এখানে উপস্থিত। দলটা মূলত বলতে গেলে দুর্বলদের উপর জু’লু’মকারী দল। সেই সাথে আছে ই’ভটিজিংও। দেখা যায় এরা প্রায়শই দুর্বলদের সাথে অন্যায় করছে। ঠিক এমনটাই দেখে ফেলেছিল ক্যানিয়ল। দুটো ছেলে-মেয়ের সাথে খুব বাজে আচরণ করেছিল এরা। ক্যানিয়লের ওসব সহ্য হয়নি। আর তাই সে হালের দলকে মেরেছিল। যদিও হালে এবং আরেকটি মেয়েকে মারেনি, কারণ তারা মেয়ে সেজন্য। বেলিক এবং রেন্ডি নামের ছেলেটা তো ক্যানিয়লের কাছে মা’র খেয়েছে দুইবার। প্রথমবার মা’র খেয়েছিল একটা মেয়ের সাথে অ’সভ্যতামি করার জন্য।
হালে ইরতিজাকে এসব ব্যাপারে কিছু বললো না। আসলে এসব কথা ইরতিজাকে বলার কোনো প্রয়োজনই নেই। ইরতিজাকে তারা এনেছে ক্যানিয়লকে ক্যাচ করার জন্য। ক্যানিয়লকে এমনি এমনি তারা কোনো কিছু দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে না জানে। তাই তো এই পথ অবলম্বন করে ক্যানিয়লকে ডাকতে হলো তাদের। ক্যানিয়ল এখানে আসার পর একটা হা’ঙ্গা’মা হবে। এটা আসলে প্রতিশোধ মূলক একটা বিষয়।

পরিত্যক্ত ম্যানশনের বাইরে গাড়িতে ব্রেক কষার শব্দ শোনা গেল হঠাৎ। নীরব নিস্তব্ধ পরিবেশে শব্দটা খুব জোরে শোনালো। সবার ধারণাই জানান দিলো ক্যানিয়ল এসেছে। হালে এগিয়ে গেল কক্ষটির কর্ণারে জমে থাকা অন্ধকারের দিকে। সেখান থেকে দুই হাতে করে তিনটা হকিস্টিক নিয়ে ফিরলো। ছেলে দুটোর দিকে দুটো হকিস্টিক বাড়িয়ে দিলো।
সামনে কী ঘটতে চলেছে ধারণা করতে পারছে না ইরতিজা। মাথার ভিতরটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। দু চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে। এরা কি ক্যানিয়লকে মা’রা’র প্রস্তুতি নিচ্ছে?
শূন্য দরজায় হঠাৎ ক্যানিয়লের পদচারণ পড়লো। সে এক পা থামলো না। ধীর পা ফেলে এগিয়ে আসতে লাগলো। এগোতে এগোতে লক্ষ করলো হালে এবং ছেলে দুটোর হাতে থাকা হকি স্টিক। এমনকি তার শান্ত ধারালো চোখ জোড়া থেকে বেলিকের হাতের চা’কুটাও দৃষ্টির অগোচরে থাকতে পারলো না। সবকিছু এক পলক দেখে নিয়ে সব শেষে তাকালো ইরতিজার দিকে। ইরতিজার রক্তিম গাল এবং ঠোঁটের ক্ষতটা চোখে পড়তেই দৃষ্টি ক্রুর হয়ে উঠলো তার। ক্ষণিকেই তা আবার নেমে এলো নমনীয়তায়। ইরতিজার সামনে এসে হাঁটু গেড়ে বসলো সে। কোমল আঁখিতে চেয়ে বললো,
“ঠিক আছো তুমি?”

ক্যানিয়লের এই প্রশ্নটায় ইরতিজার শুষ্ক হৃদয় ভিজে উঠলো প্রশান্তি বর্ষণে। এই প্রশ্নটির মাঝে সে খুঁজে পেল ভরসা, ভালো লাগা। মৃদু মাথা দুলিয়ে বললো,
“ঠিক আছি।”

“সত্যি?”

“হুম।”
কথাটা বলার খানিক পরেই আবার দুই পাশে মাথা নেড়ে কেঁদে বলে উঠলো,
“না, আমি ঠিক নেই।”

ক্যানিয়লের চোখের দৃষ্টি নম্র। ইরতিজার ঠোঁটের কে’টে যাওয়া স্থানটায় অঙ্গুলি স্পর্শ রেখে বললো,
“স্যরি পাকিস্টানি গার্ল! জানতাম না কেউ আমার জন্য এরকম আহত হবে। সত্যিই জনতাম না। স্যরি! এবং থ্যাঙ্ক ইউ এটার জন্য যে, আজ তোমার আহত হওয়ার কারণে বুঝতে পারলাম, কেউ একজন আছে আমার। আমার বিষাদের আকাশে সত্যিই একটা নক্ষত্র আছে। যেটা এখন আর ঝাপসাভাবে নয়, বরং ভীষণ উজ্জ্বলভাবে নিজের দুত্যি ছড়াচ্ছে!”

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here