এক_শ্রাবণ_হাওয়ায়-২ #লেখিকা: কায়ানাত আফরিন #পর্ব: ২

#এক_শ্রাবণ_হাওয়ায়-২
#লেখিকা: কায়ানাত আফরিন
#পর্ব: ২
আমি কাঁপা কাঁপা হাতে আনভীরের শার্টের বোতামগুলো খুলতেই আমার হাত চেপে ধরলেন উনি দুর্বলভাবে। বলে ওঠলেন,

‘ হোয়াট আর ইউ ডুয়িং?’

আমি তপ্তশ্বাস ছাড়লাম। বলে ওঠলাম,

‘ আমি ডক্টর,এআরকে। প্লিজ শান্ত হোন। আমি….আমি ট্রিটমেন্ট করছি আপনার।’

বলেই উনার কথার পরোয়া না করে শার্টের সবগুলল বোতাম খুলে বুক উন্মুক্ত করে দিলাম। পুরো বুকটাই প্রায় রক্তে মাখামাখি। আমি বক্স থেকে এক এক করে সবকিছু বের করতে থাকলাম এবার৷ প্রথমে তুলো দিয়ে উনার লোমহীন বুকের রক্তগুলো পরিষ্কার করে নিলাম। উনার চোখ বন্ধ। ব্যাথা সহ্য করছেন কোনোরকম ভাবে। ব্যাথার এক পর্যায়ে জ্ঞান হারালেন উনি। আমার ভয় যেন আরও বেড়ে গেলো। এত ভয়াবহ কন্ডিশনের রিকভার কিছুতেই হসপিটাল ছাড়া সম্ভব না। পালস রেট চেক করতে গিয়ে টের পেলাম তা চলছে খুবই ধীরগতিতে। আমি হার মানলাম না, উনার বডিতে ব্যান্ডেজ করিয়ে অপেক্ষা করলাম উনার পার্লস রেট স্বাভাবিক হওয়ার। ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে গেলো উনার পার্লস কন্ডিশন। উনি এখন ঘুমিয়ে আছেন নিশ্চিন্তে। কেননা আমি উনাকে ঘুমের ওষুধ দিয়ে দিয়েছিলাম।

ঝিরঝিরি বৃষ্টি কমে এবার একেবারেই শান্ত হয়ে গিয়েছিলো প্রকৃতি। ঘড়ির কাটার দিকে তাকিয়ে দেখলাম রাত প্রায় সাড়ে চারটা বাজে। আমি জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে নিলাম যে বাহিরে কেউ আছে কিনা। না, কেউই নেই। কিন্ত আমার মনে ছিলো হাজারো প্রশ্নের সমাহার। কি এমন হয়েছিলো যে আনভীর এভাবে রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছিলেন? আর কেনই বা উনি হসপিটালে না গিয়ে এখানে এসেছেন? এসব উত্তর জানার জন্য সকাল হওয়ার অপেক্ষা করতে হবে আমায়। আমি ভাবলাম না আর, রুমের এককোনায় কাউচে গিয়ে এলিয়ে দিলাম আমার ক্লান্ত শরীর।
.
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজেকে বিছানায় দেখে হতভম্ব হয়ে গেলাম আমি। তার থেকেও অবাক হলাম আমার ওপর আনভীরের অবস্থান দেখে। আমার নিঃশ্বাস ঘন হয়ে এলো। আনভীর আমার ওপর উবু হয়ে তাকিয়ে আছেন পলকহীনভাবে। আমি তো কাউচে ঘুমিয়েছিলাম, আমায় এখানে আনলো কে? এ প্রশ্নটা মাথায় আসতেই প্রশ্ন করলাম,

‘ আমি এখানে কিভাবে?’

‘ আমি এনেছি।’

নিঃসংকোচ কন্ঠ উনার। উনার ভরাট গম্ভীর কন্ঠ শুনে শরীরে এক অদ্ভুত শিহরণ জেগে ওঠলো আমার। মানুষটার এই ডিপ ভয়েসের গান বহুবার শুনেছি আমি৷ পড়ার সময় চোখের ঘুম কাটানোর জন্য উনার ভয়েস ছিলো আমার একমাত্র হাতিয়ার। আর সেই মানুষটাকে এই প্রথম, এই প্রথম কাছাকাছি দেখার অভিজ্ঞতাটা আমার স্নায়ুতন্ত্র নিষ্ক্রিয় করে ফেললো। খাড়া নাক, পুরু লালচে ঠোঁট, কালচে বাদামী চোখজোড়ায় সীমাহীন নেশা। কপালের ওপর চুল পড়ে আছে অসমান্তরালভাবে। আনভীর ভ্রু নাচিয়ে বলে ওঠলেন,

‘ আই নো আই এম হ্যান্ডসাম ম্যাডাম। এভাবে না তাকালেও চলবে।’

অস্বস্তি ঘিরে ধরলো আমাকে। নিজের দু’হাত দিয়ে উনার বুকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ফেলতেই উনি আহ্ করে করে সরে বসলেন। ধ্যান ভাঙলো আমার। কেননা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে উনার বুকে ব্যান্ডেজ করা আছে। আমি তৎক্ষনাৎ উঠে বসে বললাম,

‘ আর ইউ ওকে? আমি…..আমি দুঃখিত এভাবে ধাক্কা দেওয়ার জন্য। ‘

বলেই উনার বুকে হাত দিয়ে ব্যান্ডেজটা পরখ করতে গেলে উনার চোখে চোখ পড়লো আমার। সন্দেহভোজন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে ওঠলেন,

‘ উমমমম, চান্সটা ভালোই কাজে লাগাচ্ছেন। আনভীর রেজওয়ান খান এখন যেহেতু আপনার কাছে দায়বদ্ধ তাই বারবার টাচ করার সুযোগটা মিস করতে চাচ্ছেন না, এম আই রাইট?’

গালগুলো লাল হয়ে গেলো আমার উনার লাগামছাড়া কথায়। ইসসস! কথাগুলো আসলেই সত্য৷ এই রকস্টাররা সবসময় এমন অসভ্য টাইপেরই হয়। আমি তখনই তা সরিয়ে ফেললাম উনার বুকের কাছ থেকে। আমার এতটা অস্বস্তিতে দেখে কেন যেন মনে হচ্ছে মজা পাচ্ছেন উনি। কে বলবে যে এই মানুষটা এত ভয়াবহভাবে৷ গতরাতে রক্তাক্ত হয়ে এসেছেন? আনভীর এবার জিজ্ঞেস করলেন,

‘ গতরাতে আমায় হেল্প করার জন্য থ্যাংকস মিস। বিকজ আপনি না থাকলে আজ হয়তো ওপরওয়ালার কাছে চলে যেতে হতো। এন্ড, আপনাকে বারবার মিস বলে সম্বোধন করতেও ভালোলাগছে না৷ নাম কি আপনার?’

‘ আহি।’

‘ শুধু আহি? নামের আগেপিছে কিছু নেই?’

আমি দম নিলাম। বললাম,

‘ তায়্যিরাত উম্মে আহি। মেডিক্যাল ইন্টার্নশিপ করছি এখন।’

আমার কথা শুনে আরও একদফা গম্ভীর হয়ে তাকালেন উনি। এমন দৃষ্টি দেখে আমি অবাক হলাম। আনভীর হেসে বলে ওঠলেন,

‘ এই নামটা আমার খুব পরিচিত একজনের সাথে অনেকটাই মিলে যায় মিস আহি। এমন একজন মানুষ যাকে আমি অনেকটা বেশিই ঘৃণা করি।’

আমি মৌনতা বজায় রাখলাম। সেই সাথে খানিকটা অবাকও হলাম নির্বিঘ্নে এভাবে উনার পার্সোনাল কথা এভাবে আমার কাছে বলে ফেলতে। ঘড়ির কাটা সাড়ে ছয়টা প্রায় ছুঁইছুঁই, আজকে দিনটা একেবারেই লাগছে অন্যরকম। কেননা আমি একা ফ্ল্যাটে একজন রকস্টারের সাথে সারারাত একা ছিলাম। আনভীর এবার বলে ওঠলেন,

‘ তুমি করেই বলছি তোমায় আহি। তোমায় কাছে শার্ট বা টিশার্ট টাইপ কিছু হবে? কেননা এভাবে শুধুমাত্র ব্যান্ডেজ এক্সপোজ করে রাখাতে ভালোলাগছে না আমার।’

আমি ভাবলাম কিছুক্ষণ। আমার কাছে ছেলেদের শার্ট বা টিশার্ট থাকবে কিভাবে? পরক্ষণেই আমার মনে পড়লো অপূর্ব ভাইয়ার কথা। উনাকে মাথা নাড়িয়ে বলে দিলাম যে শার্ট আছে। ড্রয়ার থেকে একটা শার্ট বের করে উনাকে। দিলাম। আনভীর তা দেখে বিষ্ময় নিয়ে বলে ওঠলেন,

‘ শার্ট কার এটা? ভাই, নাকি বয়ফ্রেন্ডের?’

‘ আমার কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই। তাই এসব প্রশ্ন না করে শার্টটা পড়ে নিন চুপচাপ। আপনার শার্ট ওয়াশিং মেশিনে ধুতে দিচ্ছি আমি।’

আমি উনার দিকে না তাকিয়ে বললাম কথাগুলো। কেননা আমি আসলেই জানিনা এই শার্টের মালিকের সাথে আমার সম্পর্ক কি। অপূর্ব ভাইয়ার কাছে আমি একধরনের জেদ, এমন একধরনের জেদ যার জন্য সে কখনোই আমায় উনার বন্দী কারাগার থেকে মুক্তি দিবে না।

আনভীর শার্টটা পড়ে এবার খানিকটা কাছে এগোতে থাকলেন আমার। আমি তা টের পেতেই পেছাতে লাগলাম একটু একটু করে। উনি নির্বিকার ভাব নিয়ে বলে ওঠলেন,

‘ অনেকক্ষণ ধরেই একটা প্রশ্ন করবো করবো করে ভাবছিলাম। ‘

‘ ক…কি প্রশ্ন?’

আমায় বিব্রত হতে দেখে আনভীর সুক্ষ হাসি হাসলেন। কিছু আমার দিকে এগোতে ভুলে যাননি। একপর্যায়ে খাটে বসে পড়লাম আমি। আনভীর আমার দুপাশে হাত দেখে উবু হয়ে গম্ভীর কন্ঠে বললেন,

‘ তুমি যে আমায় গতরাতে হেল্প করলে, একটাবারও ভাবোনি যে তুমি তো একা একটা মেয়ে। এট এনি চান্স আমি তোমার সুযোগ নিয়ে ফেলতাম তো? কি করতে তুমি মিস আহি?’

বলেই আমার চোখে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন উনি৷ আমার কথা বলা রীতিমতো বন্ধ হয়ে গেলো। আসলেই তো, যদি আমার কোনো ক্ষতি হয়ে যেতো। আজীবন তো মুভিতে, ড্রামাতে দেখেছি যে এসব সেলিব্রিটিদের ক্যারোক্টার একটু ঢিলা টাইপের হয়। আর উনার যা ঠোঁটকাটা কথা বলার স্বভাব, এমন কিছু হয়ে গেলে তো……। দরদর করে ঘাম ঝরতে থাকলো আমার কপাল বেয়ে। আনভীর হাসলেন স্মিত। বললেন,

‘ এজন্যই কাউকে এতটা বিশ্বাস করতে নেই মিস আহি। আমি কিন্ত পুরোপুরি ডিসেন্ট ছেলে। তার মানে এই নয় যে আমার মতো সবাই ডিসেন্ট হবে। বাই দ্য হয়ে, তোমার এই ভয় লাগাটা ভালোলাগছে আমার।’

বলেই আমার মুখে হালকা ফুঁ দিয়ে সরে এলেন উনি। আমি সাথে সাথে উঠে দাঁড়ালাম। চট করে প্রশ্ন করলাম,

‘ আপনি কখন এখান থেকে যাবেন?’

‘ যাবোনা তো, তোমার এই টিনি ফ্ল্যাটটা আমার পছন্দ হয়েছে। ভাবছি আরও এক রাত থাকবো তোমার সাথে, জাস্ট ইউ..এন্ড মি!’

আমি বিস্ফোরিত নয়নে তাকালাম উনার দিকে। আমায় এতটা অবাক হতে দেখে আনভীর যেন মজা পেয়ে গেলেন। বললেন,

‘ কথায় কথায় এত অবাক হওয়ার মতো কি আছে? আমি জাস্ট মজা করছিলাম। তবে এটা সত্য যে দিনের আলোতে এখান থেকে বের হওয়া ইম্পসিবল। কারও নজরে যদি আমি পড়ে যাই, তবে সর্বনাশ হয়ে যাবে। তাই রাতটা নামুক, আমি আমার সেক্রেটারিকে বলে দিবো এখানকার ঠিকানা, ও নিয়ে যাবে আমায়। ততক্ষণ পর্যন্ত এই অধমটাকে সহ্য করুন প্লিজ!’

আমি কিছু বললাম না আর। তাছাড়া আজ উইকেন্ড বলে আমার তেমন কাজও ছিলো না। তাই উনাকে এখানে থাকতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়াই যায়। আমি এই সময়গুলোর মাঝে নিজেকে চিমটি কাটতে ভুলিনি মোটেও৷ কেননা এখনও আমার কাছে স্বপ্নের মতোই লাগছিলো যে রকস্টার আনভীর এসেছেন আমার বাসায়। কিন্ত কে জানতো উনার সাথে এই সাক্ষাৎটাই আমার সবকিছু এভাবে উনার সাথে জড়িয়ে দিবে?

______________

বর্তমান
পিটপিট করে চোখ খুলতেই নিজেকে আমি আবিষ্কার করলাম সম্পূর্ণ ভিন্ন এক পরিবেশে। রুমটা বিশাল বড়, একপাশে বিশাল কাচের থাই গ্লাস দিয়ে দেখা যাচ্ছে সূর্য উঠেছে পুব-আকাশে। নিঃসন্দেহে সুন্দর একটি দৃশ্য। আমি মাথা চেপে মনে করতে থাকলাম শেষ রাতের কথাগুলো। যে আনভীরের কথায় কিভাবে উনার সেক্রেটারি নাহিদ রেজওয়ান কিভাবে আমায় অজ্ঞান করেছিলো। আমি চমকে নিজেকে পরখ করে নিলাম। কেননা আমার ড্রেস চেন্জ করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটা আনভীরের বাসা ছাড়া অন্যকোথাও না।
আমি উঠে দাঁড়ালাম এবার। রুম থেকে বের হওয়ার জন্য দরজাটা খুলতেই দেখি সেটা খোলা।আরও এক দফা অবাক হলাম আমি। উনি আমায় জোরপূর্বক নিজের কাছে এনেছেন কিন্ত আমায় বন্দী করে রাখেননি কেন? হঠাৎ অপূর্ব ভাইয়ার কথা মনে হতেই তাচ্ছিল্যের হাসি এসে পড়লো ঠোঁটে। সবাই তো আর উনার মতো জালিম হয় না। আমি পা বাড়ালাম রুমের বাইরে। সিড়ির কাছাকাছি এগোতেই মুখোমুখি হলাম নাহিদ ভাইয়ার৷ উনি মিহি হেসে বললেন,

‘ উঠেছেন আপনি মিস আহি!’

‘ এটা কোথায়?’

কোনো কথা না বলেই সরাসরি প্রশ্ন ছুড়লাম নাহিদ ভাইয়াকে। ভাইয়া এবার বললেন,

‘ এটা এআরকে’র বাসা। স্বাভাবিক আপনাকে তো যেহেতু জোরপূর্বক আনা হয়েছে তাহলে অন্যত্র কোথাও নেওয়া যাবে না। আপনি ফ্রেস হয়ে নিন আহি। আমি আপনার ব্রেকফাস্ট নিয়ে রুমে যাবো। সমময়তো এআরকেও আপনার সাথে কথা বলে নিবে।’

বলে আমাকে এড়িয়ে উনি নিচে নামতে গেলেই আমি বাঁধা হয়ে দাঁড়ালাম। থমথমে গলায় বললাম,

‘ আমি কারও কেনা গোলাম নই যে এভাবে আপনারা যা বলবেন আমি মেনে চলবো।’

‘ আমরা আপনাকে এমন কিছুই মনে করছিনা মিস আহি। আপনি যদি একবার বুঝতেন যে এআরকে’র কাছে আপনি আসলে কি, আপনি কখনোই একথাটা বলতেন না। উনি সেফটি চায় আপনার।’

‘ কি সেফটি চায় সেটা তো দেখেই নিলাম। উনি শুধু চান আমার দ্বারা রাহি আপুকে কষ্ট দিতে।’

নাহিদ নিশ্চুপ।

‘ কোথায় উনি? আমি কথা বলতে চাই উনার সাথে। এখন মানে এখনই।’

আমার একরোখা ব্যবহারে হার মানলেন নাহিদ ভাইয়া। বলে ওঠলেন,

‘ আপনার রুমের দু’রুম পরেই উনার রুম। যান দেখা করে আসেন। আমি নিচে বলে দেই ব্রেকফাস্ট রেডি করতে।’

বলেই চলে গেলেন নাহিদ ভাইয়া। আমি কথা না বাড়িয়ে নাহিদ ভাইয়ার বলা রুমটিতে চলে গেলাম। দরজাটার লক মোচড় দিতেই খুলে গেলো সেটা। রুমটা বিশাল। একপাশে সুন্দর বারান্দা সেটা দ্বারা সূর্যের কিরণ রুমটাকে আলোকিত করে দিচ্ছে। আর অন্যপাশে সকল মিউজিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্টস। খাটের একপাশে আনভীরের উনার ফ্যানদের সাথে বিশাল একটি ছবি টাঙনো আছে স্টেইজ পারফরম্যান্সের, তার অন্যপাশেই বেস্ট সিংগার আওয়ার্ড এর সেই ছবিটা। আমি তপ্তশ্বাস ছাড়লাম, কেননা রুমে আনভীর নেই। আমি এখান থেকে চলে যেতেই আনভীর হঠাৎ পেছন থেকে দরজা খুলে রুমে ঢুকলেন। আমায় এখানে দেখে অবাক হলেন হঠাৎ। আমি পেছনে তাকাতেই দেখি আনভীর আমার দিকে তাকিয়ে আছেন হাত ভাঁজ করে। পরনে জগিং আউটফিট, গলায় শুভ্র রঙের একটি তোয়ালে ঝোলানো। উনার এমন দৃশ্য দেখে আমি খানিকটা থমকে গেলাম। ফর্সা মুখটাকে ক্লান্তির ছাপ, এলোমেলো চুলগুলোর দরুন উনাকে কিছুটা অন্যরকম লাগছে দেখতে।

আমার এমন চাউনি দেখে দুষ্টু হাসি দিলেন উনি। দরজা ভিড়িয়ে প্রবেশ করলেন রুমে। আমার চেহারায় এখনও অবাকতার ছাপ। উনি ভ্রু নাচিয়ে বলে ওঠলেন,

‘ হোয়াট হ্যাপেন্ড আহি! এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে রুমে এসেছো কেনো। আমায় মিস করছিলে নাকি?’

আমি আমতা আমতা করে বললাম,

‘ লুকিয়ে আসিনি আমি, কথা আছে আপনার সাথে।’

‘ কি কথা?’

‘ আপনি কিসব বলেছিলেন গতকাল যে আপনার অনাগত সন্তানের মা হওয়ার অভিনয় করতে হবে, আপনার সাথে থাকতে হবে, এসব কি আনভীর? আপনি কি স্পষ্ট করে বলবেন যে আপনি কি চান আমার কাছে?’

‘ আমি চাই যে তুমি এখানে থাকো। কারনটা তোমার না জানলেও চলবে৷ শুধু এতটুকু জেনে রাখো তুমি জাস্ট এখানে থাকবে দ্যাটস ইট।’

আমার রাগ লাগলো প্রচন্ড। চেঁচিয়ে বলে উঠলাম,

‘ পাগল নাকি আপনি? এভাবে কেনো থাকবো আমি আপনার কাছে?’

আনভীর দুষ্টু হাসলেন। বলে ওঠলেন,

‘ কে বলেছে এভাবেই আমার সাথে থাকবে তুমি? তুমি চাইলে লিভ টুগেদারে থাকতে পারবো আমি।’

শুকনো ঢোক গিললাম আমি। বললাম,

‘ ল.. লিভ টুগেদার?’

আনভীর দুষ্টু হেসে তাকালেন আমার দিকে। বেপরোয়া সুরে বলে ওঠলেন,

‘ অফকোর্স বেইব। লিভ টুগেদার জিনিসটা ইন্টেরেস্টিং হবে, তখন তোমায় আর লুকিয়ে লুকিয়ে আমার রুমে আসতে হবে না। তুমি তখন চাইলে তখন লাফালাফি-দাপাদাপি এন্ড চাইলে আমায় কিসও করতে পারবে। আই ডোন্ট মাইন্ড!’
.
.
.
.
.
~চলবে….. ইনশাআল্লাহ

আগের সিজনের সাথে এই সিজনের মিল না থাকলেও আনভীরের ঠোঁটকাটা এন্ড ডোন্ট কেয়ার স্বভাব ইহজিন্দেগিতেও পরিবর্তন হবে না। সো কেমন হয়েছে জানাবেন কিন্ত। ভুলক্রুটি মার্জনীয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here