এক_শ্রাবণ_হাওয়ায় পর্ব – ১০

এক_শ্রাবণ_হাওয়ায় পর্ব – ১০
#লেখিকা – কায়ানাত আফরিন

-‘এবার তো তোমার কোমড় ছাড়ছিনা মিস।আফটার অল, হাজবেন্ট আমি তোমার। আমি চাইলে তোমার হাত কেন! কোমড়, পেট , পিঠ সব কিছু ধরে রাখতে পারবো।পারলে সারাদিন নিজের সাথে ফেবিকলের মতো আটকে রাখবো। কি করতে পারবে তুমি?’

আমার কান দিয়ে রীতিমতো ধোঁয়া বের হতে থাকলো উনার কথাগুলো শুনে। আল্লাহ! আমারে তুমি ধৈর্য দাও। নাহলে এই অসভ্য লোকের অসভ্য কথাগুলো শুনে কবে জানি আমার প্রাণপাখি ফুড়ুৎ করে উড়ে যাবে।এই আমায় মিস বলে, আবার এই বলে উনি নাকি আমার হাজবেন্ট।এর যে মাথার স্ক্রু ঢিলা আছে আগেই আমার বোঝা উচিত ছিলো। আমি আশপাশে তাকিয়ে অসহায়ভাবে নিজের কোমড় থেকে উনার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম। আমায় এমন করতে দেখে উনি আরও শক্তভাবে আমার কোমড় আকড়েঁ ধরলেন। আমি কড়াচোখে উনার দিকে তাকিয়ে দেখি সে নির্বিকার। যেন এসব করাটা তার কাছে মোটেও কোনো ব্যাপার না। আমি তপ্ত শ্বাস ছেড়ে বললাম,

-‘ছাড়ুন আমায়।’

-‘আমি কি তোমায় ধরেছি। আমি তো জাস্ট তোমার……’

এতটুকু বলেই ঠোঁট কামড়ে মাথা ঘুরিয়ে নিলেন। আমার এবার প্রচন্ড রাগ লাগছে। নিজে আমার সাথে অসভ্যতামো করে আর আমি কিছু না করেই উনার রামধমক খাই।আমায় এরকম ফোস ফোস করতে দেখে উনি ছেড়ে দিলেন আমায়। কানের কাছে জড়ানো গলায় বললেন,

-‘কিছু পারো আর না পারো , উনিশ থেকে বিশ হলে সাপের মতো ফোস ফোস করতে ভালোই পারো।(একটু থেমে) যার সাথে কথা বলবে , ডিসট্যান্স নিয়ে কথা বলবে। কারও সাথে হাত মিলাতে হবে না। তোমার হাত মিলানোর জন্য আপাদত আমিই যথেষ্ট।’

বলেই উনি আমায় এখানে রেখে চলে গেলেন আজরান ভাইয়ার কাছে। আমি একপলক উনির দিকে পরখ করে চোখ ফিরিয়ে নিলাম। আমি জানি উনার এসব ব্যবহার শুধুমাত্র ছয় মাসের জন্যই। তারপর আমায় ছুঁড়ে ফেলে দিতেও দু’বার ভাববেন না। যেদিকে আমার বাবাই আমাকে বোঝা মনে করেছেন সেদিকে উনার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা স্বাভাবিক। অনুষ্ঠান শেষে এবার আমরা সবাই রওনা দিলাম বাড়ির জন্য। বাসায় আসতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। তাই বাবা ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তখন। মা ড্রইংরুমে আমাদের আসার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আমি তার সাথে চোখাচোখি হওয়া মাত্র বরাবরের মতোই একটা সৌজন্যমূলক হাসি দিলাম।তবে এবার আমায় অবাক করে দিয়ে প্রতিউত্তরে হাসলেন উনিও। অবশেষে উনি আমায় নজর দেওয়া শুরু করেছেন। আমার মনের থেকে এবার একটি চাপা দুঃখ নেমে গেলো।
.
.
বাহিরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। জানালা খুলে দেওয়াতে শীতল বাতাস সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে। আমি এসময় টেবিলে বসে আজকের ক্লাসের পড়াগুলো রিভাইস করে নিচ্ছি। আমার ছোটবেলা থেকেই লেট নাইটে পড়ার অভ্যাস। এসময় আমি অনেক মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারি। সেই পূর্বের মতো রুটিন অনুসরণ করে এখন টেবিলে বই নিয়ে পড়ছি আমি। মেডিক্যালের পরীক্ষার জন্য আমার পড়াশোনার সময় বাড়িয়ে দিতে হবে অনেক । যেহেতু আমার টার্গেট ডিএমসি। আনভীর রুমে নেই। উনি লাইব্রেরি রুমে চলে গিয়েছেন বরাবরের মত। উনিও আসলে রাত করে পড়াশোনা করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আবার ম্যাথ প্রফেসরদের পড়াশোনার জন্য নীরব পরিবেশের প্রয়োজন হয় , তাই রাতে পড়াটাই উনার সবচেয়ে বেশি প্রিয়।
এই কথাটি ভাবতেই একটি পুরোনো ঘটনা স্মৃতিচারণ হলো আমার।

তখন আমার ক্লাস নাইনের মিড টার্ম পরীক্ষা চলছিলো। তাই পড়াশোনারও ছিলো প্রচুর চাপ। আমি তাই সেই সুবাদে রাতে লাইট জ্বালিয়ে পড়াগুলো রিভাইস করছি। আমার টেবিলের ঠিক সামনেই রয়েছে জানালা যেটা দিয়ে আমাদের প্রতিবেশি বাড়িটি দেখা যায় যেহেতু বাড়িটা আমাদের বাড়ির প্রাচীর ঘেষেঁ। সেদিকে চোখ পড়তেই আমি থমকে গেলাম তখন। আনভীর বারান্দায় বসে বসে বই পড়ছেন। এটা ছিলো উনার সাথে আমার দ্বিতীয় সাক্ষাৎ। প্রথম দেখায় উনি যখন আমায় পিচ্চি বলেছিলেন তখন আমি এতটাই রেগে গিয়েছিলাম যে পরবর্তীতে উনার সাথে কথা বলার চেষ্টাও করিনি আমি। হঠাৎ আনভীর মাথা ঘুরাতেই দেখলেন আমি উনার দিকে তাকিয়ে আছি। আমাদের চোখাচোখি হতেই আমি অপ্রস্তুত হয়ে পড়লাম। আনভীর ভ্রু নাচিয়ে তখন বললেন,

–‘এই পিচ্চি ! এমন হা করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলে পরীক্ষায় আর পাশ করা হবে না। পড়ো?’
.
.
.
কথাগুলো মনে পড়লেই হাসি এসে পড়ে এখন। তবে সেদিন আমায় পিচ্চি বলাতে আমি অনেক রেগে গিয়েছিলাম। আর সেই পিচ্চি আমিই এখন উনার বউ। আমার ঘুম পাচ্ছে অনেক। তাই বই বন্ধ করে লাইব্রেরিরুমে চলে গেলাম আনভীরকে ডাকার জন্য। গিয়ে দেখি উনি লাইব্রেরির স্টাডি টেবিলে নেই। আমি কিঞ্চিত অবাক হলাম এতে। টেবিল ল্যাম্প জ্বালানো , বই-খাতা, ল্যাপটপ সব এখানে রাখা তাহলে উনি গেলেন কোথায়?আমি উনাকে খুঁজার উদ্দেশ্যে লাইব্রেরি ছেড়ে ড্রইংরুমের দিকে পা বাড়াতেই হঠাৎ বারান্দায় একটা সরু শব্দ পেলাম। বারান্দার দরজাটি হালকা ভিড়ানো। আমি শব্দটির উৎস জানার জন্য বারান্দার দিকে এগিয়ে গেলাম এবার। দরজা খুলে বাহিরে দাঁড়ানো মানুষটিকে দেখে স্তব্ধ হয়ে গেলাম আমি। আর পা এগোনোর সাহস নেই। আনভীর দাঁড়িয়ে আছেন বারান্দায় বাহিরের দিকে মুখ করে। শরীর ক্লান্ত , অবসন্ন। আমি বুঝতে পারছি না যে এখন উনাকে ডাকা উচিত কি-না।ইনি তো আবার সোজা পথের মানুষ না, ডাকলেই বাঘের মতো গর্জে ওঠবে।
আমি এসব দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম তখনই আনভীর একই অবস্থায় দাঁড়িয়ে হঠাৎ বলে ওঠলো,

-‘এখানে আসো।’

শীতল কন্ঠ আনভীরের। আমি অবাক হয়ে গেলাম এতে। কেননা আমিতো এখানে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি আর উনিও তো আমাকে দেখেননি তাহলে বুঝলেন কিভাবে যে আমি এখানে?আমি এবার ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম উনার দিকে। ঠিক আনভীরের পাশে দাঁড়ালাম। উনি তখনই বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছেন। আবছা আলোতে উনার মুখটা দেখতে অন্যরকম লাগছে। চশমা না পড়াতে চোখের দৃষ্টি লাগছে কিছুটা ভিন্ন। আনভীর তপ্ত শ্বাস ছেড়ে বললেন,

-‘আজ দুপুরে কি হয়েছিলো তোমার?’

যেই ভয়টা হয়েছিলো সেটাই। তবে আমার এক্সপেক্টেশনের বাহিরে ছিলো যে এখন উনি এ প্রশ্নটা করে বসবেন। আমি দ্বিধায় পড়ে গিয়েছি এবার। চিন্তায় আবার ঠোঁট কামড়াতে গেলেই আনভীরের চোখ রাঙানি দেখে থেমে গেলাম আমি। আনভীর আবারও স্থিরভাবে বললেন,

-‘কি হলো বলো?’

আমার হঠাৎ দুপুরের সেই কথাগুলোর কথা মনে পড়তে লাগলো। আমি স্পষ্ট শুনেছি সেই মানুষটার কন্ঠ।আর যাই হোক , তার অত্যাচারের শিকার আর কখনোই আমি হবোনা। আর ভুগতে চাই না সেই আঘাতগুলোর কষ্টে যখন চাচ্চু-চাচিমা কেউই আমার পাশে দাঁড়াতো না। টাকার জন্য তারা যতটা নিচে নামতে পেরেছিলো ঠিক ততটাই নিচে নেমেছিলো তারা। হঠাৎ আমার কপাল বেয়ে টপ টপ করে ঘাম ঝড়তে থাকলো। আমায় এতটা অস্থির হতে দেখে আনভীর আমার হাত স্পর্শ করলেন আলতো ভাবে। বললেন,

-‘রিলেক্স আহি। থাক, কিছু জিজ্ঞেস করবো না।’

আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম উনার কথা শুনে। নিশিরাতের আড়ালে ফুরফুরে হাওয়া সর্বত্র বয়ে শরীরে এক অন্যরকম শিহরণ জাগিয়ে তুলছে এবার। আনভীর বলে ওঠলেন,

-‘আহি।’

-‘হুম?’

-‘ধ্রুবের সাথে কোচিংয়ে পড়ালেখার বাহিরে খুব বেশি একটা কথা বলবে না।’

আমার ভ্রু আপনা আপনি কুচকে এলো । উনার কথাটি আমার কেমন যেন মাথার ওপর দিয়ে গিয়েছে। এই মানুষটা মহা জ্বালায় তো। তাই অবাক হয়ে বললাম,

-‘কেনো, পড়ালেখার বাহিরে কথা বললে কি হবে।’

আনভীর ঠোঁট চেপে তীর্যক দৃষ্টিতে তাকালো আমার দিকে।কড়া গলায় বললেন,

-‘হাতে-পায়েই শুধু বড়ো হয়েছো। নাহলে মাথাটা এখনও পিচ্চি গতিতে দৌড়াচ্ছে তোমার। এত প্রশ্ন করতে আগেই না বলেছিলাম না? ধ্রুবের সাথে পকর পকর বেশি করবানা দ্যাটস ইট!’

আমি এবার কথা বললাম না কোনো। শুধু মাথা নাড়িয়ে বোকার মতো সম্মতি জানালাম।

____________

কোচিং থেকে বেরিয়ে বাসায় ফিরছি আমি। দীর্ঘ একঘন্টা ক্লাস করার পর মাথাটা কেমন যেন ভোঁ ভোঁ করছে।বাহিরে গতকালকের মতোই আজ প্রচন্ড গরম। তাই রোদে পুড়ে মুখ কেমন যেন লাল হয়ে গিয়েছে। বাসায় দ্রুত এসেই লম্বা সময় একটা গোসল সারলাম। এখন বেশ ঠান্ডা লাগছে। আজ হঠাৎ করে বাবার কথা কিভাবে যেন মনে পড়ে গেলো। আচ্ছা, বাবাকে কি একটা ফোন করবো? কিন্ত আনভীর যে সরাসরি বলে দিয়েছেন তাদের সাথে যোগাযোগ না করতে? আমার কাছে এটা একেবারেই অসম্ভব। একজন সন্তান হয়ে কিভাবে আমি পারবো আমার বাবার সাথে কথা না বলে থাকতে? তাও একজন এমন মানুষের কথায় যে আমাকে স্ত্রী হিসেবে মানে শুধুমাত্র চুক্তির দায়ে।
এখন তপ্ত দুপুর। তাছাড়া এসময় আনভীর কখনোই ঘরে থাকেন না। এটাই মুখ্য সময় বাবার সাথে কথা বলার জন্য। আমি আর কিছু না ভেবে বাবার নম্বরে কল দিয়ে দিলাম। আজ অনেকদিন পর বাবার সাথে কথা বলেছি আমি। যদিও আমি বেশি কিছু বাবাকে জিঙ্গেস করিনি চাপা ক্ষোভের জন্য।এর মধ্যে আমি আরও একটা মিথ্যে বলতে বাধ্য হয়েছি যে আনভীরের সাথে আমার সম্পর্ক সব স্বাভাবিক। কিছু কিছু সময় একটি মিথ্যা কারও মনও ভালো করতে পারে।
কথাবার্তা শেষ করে আমি মায়ের কাছে গেলাম সাহায্য করার জন্য। আনভীর এসেছেন সন্ধ্যার দিকে। আমি তখন ড্রইংরুমে বসে ভাবির সাথে টিভি দেখছিলাম। আনভীরের চোখ মুখ লাল। মুখটা কেমন যেন থমথমে হয়ে আছে। শার্টের ওপর দুটো বাটন খোলতে খোলতে আমার উদ্দেশ্যে বললো,

-‘রুমে আসো আহি।’

আমি এমন কন্ঠে কিছুটা ভড়কে গেলাম। শিউলি ভাবিও হয়তো কিছু একটা আন্দাজ করতে পেরেছেন হয়তো। আমি তাই আলতো ভাবে মাথা দুলিয়ে আনভীরের পিছে পিছে গেলাম। আমি রুমে ঢুকতেই শব্দ করে দযজা লাগিয়ে রুমে বিকট একটা শব্দ সৃষ্টি করলেন উনি।আমি কেপেঁ উঠলাম এমন শব্দে। আনভীর দাঁত চেপে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করে চলছেন। আমি কাপাঁ কাপাঁ গলায় জিজ্ঞেস করলাম,

-‘কি হলো আপনার?’

আনভীর এবার রাগের বশে টেবিল থেকে একটা গ্লাস নিয়ে সজোরে ছুঁড়ে মারলেন ফ্লোরে। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছি প্রচন্ড। উনার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। নিঃশ্বাস ফেলছে বারবার। এবার উনি আমার কাছে এসে সজোরে বাহু চেপে ধরলেন আমার। ব্যাথায় কাকিয়ে উঠলাম আমি। আনভীর গর্জে বলে ওঠলেন,

-‘সাহস কি করে হলো তোমার উইথআউট মাই পার্মিশন তোমার সো কল্ড ড্যাডকে ফোন দাও তুমি?’

আমি ভীষণ অবাক হয়ে গেলাম। উনি বলে উঠলেন,

-‘কি ভেবেছো আমি বুঝবো না? তোমার বাবা কল দিয়ে দাওয়াত করেছে আমায় তোমাদের ওই নোংরা বাড়িতে।কি বলেছো তুমি? যে আমাদের মধ্যে সব ঠিকঠাক? আমি হ্যাপি লাইফ লিড করছি তোমার সাথে? বিয়ে মাই ফুট!’

আমার চোখ বেয়ে টপটপ করে জল গড়িয়ে পড়ছে। আমি বারবার নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছি উনার আবদ্ধ থেকে। আমায় এমন করতে দেখে উনি আরও ক্ষেপে গিয়ে নিজের সাথে আরও গভীরভাবে মিশিয়ে রাখলেন। দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,

-‘আর কত মিথ্যা বলবে আহি? আমি আর তোমার এসব কাজ নিতে পারছি না। বারবার শুধু আমার মনে পড়ে তোমার সাথে আমায় নিয়ে বানানো সেই নোংরা কথাগুলোর কথা। আমার ক্যারেক্টারে আঙুল তোলার কথা।আজ তোমার বাবা যখন আমায় কল দিয়ে বললো আমাদের তাদের বাড়িতে আসতে , আমি তার এসব কথা শুনে প্রচন্ড রেগে গিয়েছিলাম। পরে ভাবলাম যে উনি কল দিলেন কেন? কথাবার্তার এক পর্যায়ে বুঝতে পারি তুমি কথা বলেছো উনার সাথে।তাহলে মিথ্যে বললে কেনো যে আমার সাথে সবকিছু ঠিকঠাক? কিছু বলো আহি!’

শেষের কথাটা এতই জোরে বললেন যে আমার কানের পর্দা ফেটে গিয়েছে। আনভীর আমায় দেখে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললেন,

-‘তুমি যতই আমারওপর নিজের বউগিরি দেখাতে আসো না কেন, তুমি আমার কাছে একটা এগ্রিমেন্ট ছাড়া আর কিছু না। আমি যা করছি সবকিছু করছি দায়িত্ববোধের জন্য, কোনো ভালোবাসা-টালোবাসার জন্য নয়, ‘কজ আই হেইট ইউ আহি।’

বলেই আমার বিছানায় ছুঁড়ে ফেলে দিলেন উনি।তারপর জামা-কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলেন। একটাবারও জিজ্ঞেস করলেন না যে কেনো বাবাকে আমি মিথ্যা বললাম।তখন আমায় ধাক্কা দেওয়ায় পায়ে কাচের গ্লাস বিধে যাওয়াতে ব্যাথাও লাগছে অনেক। আমার কাছে আশেপাশের সবকিছু বিরক্তিকর লাগছে। লাগছে বিষাক্ত।
আমি সেভাবেই খাটে শুয়ে চোখ বন্ধ করে রইলাম কিছুক্ষণ। কখন যে ঘুমিয়ে পড়ি টেরও পাইনি। তবে আমায় ঘুম ভাঙলো রাতে কপালে কারও স্পর্শ পাওয়ায়।পিটপিট করে চোখ খুলতেই আনভীরের মুখ দেখতে পারলাম আমি। উনি একটু পরপর কপালে ভেজা রুমাল পট্টি দিচ্ছেন। মুখটা অবসাদ, বরাবরের মতো ঝুঁকেই কাজ করতে লাগলেন। আমার বলতে ইচ্ছে করছিলো অনেককিছু। কিন্ত বলতে পারলাম না। উনার শীতল কন্ঠে , ‘ঘুমাও আহি’ বলা কথাটি শুনেই সেই বলিষ্ঠ হাত জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
.
.
.
~চলবে…..ইনশাআল্লাহ

আজকে প্রত্যেকের গঠনমূলক কমেন্ট করবেন। এত নাইস নেক্সট এর ভীড়ে বুঝতে পারছি না যে গল্পটি আপনাদের আদৌ ভালোলাগছে কি-না। তাই প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ থাকবে কমেন্ট করার জন্য।

লেখিকার গল্পমহলঃ
🍂কায়ানাতের গল্পনিবাস🍂(Stories of Kayanat)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here