এমনও প্রেম হয় পর্ব:-৩১

0
850

#এমনও_প্রেম_হয়
#ইয়ানা_রহমান
#পর্ব:-৩১

লিয়ারা উদয়কে নিয়ে চেন্নাই (মাদ্রাজ) গিয়ে পৌঁছালো। অ্যাপোলো হসপিটালের খুব কাছেই বাসা ভাড়া নিলো। বাসাটা খুব সুন্দর। তিন রুমের ফ্ল্যাট। দুটা বারান্দা, দুইটা বাথরুম, কিচেন সংলগ্ন ডাইনিং। এসি, ফ্রিজ, টিভি, ফোন সবই আছে।
.
.
ওখানে যারা বাসা ভাড়া করে থাকে, তাদের বেশির ভাগ লোকই ট্রিটমেন্টের জন্য যায়। বিল্ডিংয়ের ভিতর খাওয়া দাওয়ার কোন ডাইনিং হলের ব্যাবস্থা নেই। বাইরে গিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে হবে, না হলে নিজেদের বাজার করে রান্না করে খেতে হবে।

.
গ্যাসের চুলা, গ্যাস সিলিন্ডার, বটি ছুরি, প্লেট, গ্লাস, হারি পাতিল, সব কিছু আছে ফ্ল্যাটে। সম্পূর্ন ফার্নিসড ফ্ল্যাট।
.
ফ্ল্যাটের ভাড়া বাবদ প্রতি দিন সাত হাজার রুপি রেন্ট দিতে হবে। ফ্ল্যাটের কেয়ার টেকার সব কিছু রক্ষণাবেক্ষণ করে।

.
ওখানে সব ফ্ল্যাটে শুধু পেশেন্ট ভাড়াটিয়ারা থাকে। কোন বাড়িওয়ালা থাকে না। একজন কেয়ারটেকার পুরা বাড়ির দেখা শুনা করে। ভাড়া আদায় করে। ভাড়াটিয়াদের সুবিধা অসুবিধা দেখে।

.
আমরা বাংলাদেশে থাকতেই ডক্টরের এপোয়েনমেন্ট নিয়ে এসেছি। এটাই সিস্টেম। এপোয়েনমেন্ট নেয়ার পর ডক্টরের এসিস্ট্যান্টের সাথে কথা বলার পরই অ্যাম্বাসেডর ভিসা ফর্মে ওকে সীল মারেন।

.
প্রথম দিন আমরা রেস্টুরেন্টেই খাওয়া দাওয়া করলাম। বাজার করা নেই তাই রান্নার আয়োজনও নেই। ডাক্তার দেখিয়ে তারপর বাজার করে ফিরবো এমন চিন্তা ভাবনা আব্বুর।

.
হসপিটালে গেলাম সবাই। বিশাল হসপিটাল। কত যে ডিপার্টমেন্ট। কত শত লোকের আনাগোনা সেখানে।

.
লিয়ার বাবা মিজান সাহেব আর
উদয়ের বাবা দুজনে মিলে হসপিটালের সব কাগজপত্র আপ টু ডেট করলো।ফাইল রেজিস্ট্রেশন করা এক রুম থেকে আরেক রুমে দৌড়া দৌড়ি করা, তারা যেখানে যেখানে যেতে বলছে সেখানে যাওয়া সব করেছে।

.
আমি, উদয় আর শাশুড়ি মা, আমরা একটা ওয়েটিং রুমে বসে আছি। সেখানে আরো অনেক লোক আছে। কেউ কেউ এয়ারপোর্ট বা ট্রেন থেকে নেমে সরাসরি হসপিটালে চলে এসেছে বলে মনে হলো। তাদের সাথে বড় বড় লাগেজ আর ছোট ছোট বাচ্চা।

.
আয়ুশ উদয়ের কোলে ঘুমিয়ে গেছে। আমি ওর কাছ থেকে আয়ুশকে নিলাম।

.
আজকাল উদয় আয়ুশকে বেশিক্ষণ কোলে রাখতে পারে না। কিছুক্ষণ পরই হাঁপিয়ে ওঠে। তারপরও নিতে চায়, আমি দেই না, ওর কষ্ট হয় দেখে।

.
ডাক্তারের রুমে যাওয়ার কল এলো।
আমরা ভিতরে ঢুকলাম। মাদ্রাজী ডাক্তার। ভেবেছি উনি যা বলবেন তা বুঝবো কি না আল্লাহই জানে।

.
আমরা বাংলাদেশী শুনে আমাদের সাথে যা বলার উনি ইংলিশে আর হিন্দিতে বললেন। আমি হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম যেনো।

কারণ আমি ডাক্তারের কাছে কিছু জানতে চাইলে আমার প্রশ্নের উত্তরগুলো ভালোভাবে পাবো। বা উনি যা বলবেন সেটা সহজেই বুঝতে পারবো।

.
ডক্টর উদয়কে ভালো ভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করলেন। উদয়কে অনেক কথা জিজ্ঞেস করলেন।

.
তারপর অনেকগুলি টেস্ট করতে দিলেন। প্রায় সবগুলো টেস্ট খালি পেটে করতে হবে।

.
হসপিটালের ভিতরেই সব টেস্ট করা যাবে। শুধু সিটি স্ক্যান করতে হবে এই হসপিটালের অন্য বিল্ডিং এ।

.
আজকে আর কোন টেস্ট করা হবে না। কারণ উদয় খালি পেটে নেই।

রুপি জমা করে সিরিয়াল নাম্বার নিয়ে নেয়া হলো।

তারপর বাসায় চলে গেলাম।
বাবা আর আব্বু বাজারে চলে গেলো।
বাজার থেকে মুরগি , চাল, ডাল, তেল, নুন, সবজি যা যা দরকার সব নিয়ে এলো।

.
এখানে পেয়াজ, আর আদা রসুনের পেস্ট প্যাকেটে পাওয়া যায়। বাটার কোন ভেজাল করতে হলো না। আমি আর মা দুজনে মিলে রান্নার কাজ শেষ করলাম।

.
সিলিন্ডার গ্যাসে এই প্রথম রান্না করলাম তাই একটু ভয় ভয় লাগছিলো। পরে সব ঠিক হয়ে গেছে।

.
রাতে খাওয়া দাওয়ার পর উদয় বললো চলো আশপাশে একটু ঘুরে আসি।
আমি যাইনি, কারন আমি উদয়ের অসুখটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত ছিলাম।

.
রিপোর্ট করতে দেয়ার পর আবার নতুন কি বের হয় কে জানে।
এখানকার ডাক্তার কি বলে সেটাও মনে ভাবনার ডানা মেলেছে।
মনে শান্তি থাকলে তবেই না ঘুরতে ভালো লাগে।

.
পরদিন সকালে খালি পেটে টেস্ট করানোর জন্য হসপিটালে গেলাম। মা আর শাশুড়ি মায়ের কাছে আয়ুশকে রেখে গেলাম।

.
অনেক ধরনের টেস্ট করানো হলো। এতে উদয় আরো একটু অসুস্থ হয়ে পরলো।

.
টেস্ট শেষ করে বাসায় ফিরে যাওয়ার রাস্তা থেকেই উদয়ের বমি শুরু হলো। বাসায় নিয়ে ওকে শুইয়ে দিলাম। খুব কষ্ট হচ্ছিলো ওর। একটু স্থির হলে নাস্তা দিলাম, মেডিসিন দিলাম। তারপর ও আবার শুয়ে পরলো। শরীর খুব দূর্বল হয়ে যাচ্ছে দিনে দিনে।

খেয়াল করলাম ওর পায়ের পাতা দুটো ফোলা ফোলা। শরীরও ফোলা, মুখটাও ফোলা, ভার ভার দেখাচ্ছে।

.
উদয় যেনো না শুনে, তাই মাকে চুপি চুপি দেখালাম। মাও দেখলো শরীর, মুখ, পাগুলি বেশ ফোলা।

.
পায়ে পানি এসেছে। মা আড়ালে গিয়ে কেদে ফেললো। আমার ছেলেটার কি হলো। আল্লাহ ওকে সুস্থ করে দাও। আমার বুক খালি করো না। অঝোর ধারায় কাদতে থাকলো।

.
রিপোর্ট কালেক্ট করার ডেট দিলো তিনদিন পর।

.
তিনদিন পর
ডাক্তারের চেম্বারে গেলাম। বাংলাদেশে হসপিটালে ভর্তি পেশেন্ট ছাড়া আমরা যেমন রিপোর্ট তুলে তারপর ডাক্তারের কাছে যাই ওখানে তেমনটা দেখলাম না।

আমাদের রেজিস্ট্রেশন আর ডাক্তারের নাম অনুযায়ী রিপোর্ট ডাক্তারের টেবিলে চলে গেছে। আমাদের রিপোর্ট তোলার কোন ঝামেলা করতে হয়নি।

.
সিরিয়াল অনুযায়ী আমরা ভিতরে গেলাম। ডক্টরের অ্যাসিস্টেন্ট পেশেন্টের নাম জিজ্ঞেস করে, ফাইল বের করে ডাক্তারকে দিলো।

ডাক্তার সবগুলি রিপোর্ট ভালো মত দেখে উদয়কে জিজ্ঞেস করলো যে ও ড্রিংক করে কি না। আরও অনেক প্রশ্ন করলো,আমরা সবাই রুমের ভিতর। ডক্টর যা বলছে সবার সামনেই বলছে। উদয়কে বাইরে যেতে বলেনি। আমি চাইলাম না উদয় কিছু শুনুক। শুনলে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়তে পারে। কিন্তু ডাক্তার ওর সামনেই সব বলে যাচ্ছে গটগট করে।

.
সি টি স্ক্যান রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বললো যে পেশেন্টের লিভার সিরোসিস। (CLD) ক্রনিক লিভার ডিজিস।

85% লিভার নষ্ট হয়ে গেছে। ভালো আছে 15%

.
আর এই পনের পার্সেন্ট আগামী দুই মাসের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যাবে।

.
আমি কেদে ফেললাম। ডাক্তার বললো,
লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা যায়। যদিও বৃহৎ আকারে শুরু হয় নি এখনো। তবে কিছুদিন হলো আমরা এখানে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট অপারেশন শুরু করেছি।

.
যদি আপনারা লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করতে চান তবে কিছু দিনের মধ্যেই এখানে আসতে হবে ।
আর ডোনার হতে হবে রক্তের সম্পর্কের ভাই/বোন, বাবা/ মা, ছেলে/মেয়ে। এছাড়া অন্য কোন ডোনার এলাউড না।

.
কিডনি পেশেন্ট হলে রক্তের সম্পর্কের বাইরেও কেউ ডোনার হতে পারে কিন্তু লিভারের ক্ষেত্রে এটা একেবারেই অসম্ভব।

.
এক্ষেত্রে পরিবারের বাবা মা, ভাই বোন, ছেলে মেয়ে এদের মধ্যে থেকে যার সাথে ব্লাড গ্রুপ মিলে একমাত্র সেই ডোনেট করতে পারবে।

.
তারপর এই ডাক্তার
উদয়কে মেডিসিনের ডাক্তারের কাছে রেফার করলো।

বললো, যে পর্যন্ত ট্রান্সপ্লান্ট না করা হয় ততদিন মেডিসিনের ডক্টরের এডভাইস মত চলবেন।

.
মেডিসিনের ডাক্তারের জন্য নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করতে হলো।

.
রেজিস্ট্রেশন করা হলে ডাক্তারের রুমে গেলাম। ডাক্তার সব রিপোর্ট দেখলো রেফার করা লিভার স্পেশালিস্ট ডাক্তারের এডভাইস দেখে সে অনুযায়ী মেডিসিন লিখে দিলো। সব নিয়ম কানুন বুঝিয়ে দিলো।

.
আমি বললাম, ওর পা কেন ফোলা। ডাক্তার বললো CLD অসুখে এরকম হয়।
শরীরে প্রোটিন তৈরি হচ্ছে না। তাই হাত পায়ে পানি জমে যাচ্ছে।

লিয়া কাদঁছে,এবার উদয়ও কেদে ফেললো।

আম্মু আর মা তো নিঃশব্দে চোখের পানি ফেলেই চলেছে।

.
ডাক্তার দেখানো শেষ করে বাসায় ফিরে গেলাম। আমি আর আমার ইমোশন ধরে রাখতে পারলাম না। আব্বুকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে অনেকক্ষণ কাদলাম।

আব্বু আমার কান্না দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারলো না।

বললো আল্লাহকে ডাক, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া এই মুশকিল থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না।

.
উদয় বললো, এখান থেকে দেশে যাওয়ার আগে আমি আজমীর শরীফ যেতে চাই।
তারপর দেশে ফিরে ওমরাহ হজ্জে যাবো। সে যাবেই তাকে কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছে না।

.
আমি বললাম,আচ্ছা ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে দেখি অনুমতি দেয় কিনা। যাওয়ার পারমিশন দিলে অবশ্যই নিয়ে যাবো।

.
আমি যাবোই, কারো কোন কথা শুনবো না। তোমরা না নিয়ে গেলে আমি একাই চলে যাবো।

.
কালকেই ডক্টরের কাছে যাবো জিজ্ঞেস করতে, এখন শান্ত হোন।

.
সবার মন খারাপ, সবার মনের অবস্থার একটু পরিবর্তন আনতে আব্বু জোর করে আমাদের সবাইকে চেন্নাই সী বীচে ঘুরতে নিয়ে গেল।

বীচ এ তেমন লোকজন নেই। নিরিবিলি পরিবেশ।

.
বালির ওপর বসে পানির ঢেউ দেখছি। আর চোখের পানি ফেলছি। কোন একটা বইতে পড়ছিলাম, অনেক বেশি মনের কষ্ট গাছকে না হয় সাগরের পানিকে বললে কষ্ট ওরা নিয়ে নেয়। কষ্টের ভার অনেকটা কমে যায়।

.
আমিও কাদছি আর বিড়বিড় করে সমুদ্রের কাছে মনের দুঃখের কথা শেয়ার করছি।

.
উদয় পাশ থেকে বললো, তোমার কান্না আমার একদম সহ্য হচ্ছে না। কান্না থামাও না হয় এই সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে সুইসাইড করবো এখনই।

আমি ওর হাত ধরে বললাম, আর কাদবো না।

.
চলো ফিরে যাই। ভালো লাগছে না।
তারপর সবাই বাসায় ফিরে এলাম।

.
পরদিন আবার ডাক্তারের কাছে গেলাম।

উদয় জেদ ধরে বসে আছে আজমীর শরীফ যাবেই। তাই পরামর্শ নিতে ডাক্তারের কাছে আবার আসা।

.
ডাক্তার সব শুনে একদম নিষেধ করে দিলো। বললো, এখন আপনার শারীরিক কন্ডিশন জার্নি করার মত না। জার্নির কারনে যে কোন সময় নাক মুখ দিয়ে ব্লিডিং শুরু হতে পারে। ট্রান্সপ্লান্ট হয়ে যাওয়ার পর যেখানে খুশি ঘুরবেন বেড়াবেন।

.
সব শুনে উদয় আর জেদ করেনি। বললো, তাহলে এবার দেশে ফিরে যাই চলো। এখানে থেকে আর কি হবে। রিপোর্ট তো একই এলো। কোন লাভ হলো না এখানে এসে।

.
হসপিটালের আশপাশে অনেক বড় বড় ফার্মেসি আছে। সেখান থেকে ছয় মাসের ওষুধ কিনে নিলাম। যদিও দুই মাস পর আবার আসার কথা। তারপরও বেশি করে মেডিসিন নিয়ে নিলাম। অনেক বেশি করে নিলাম বড় বড় প্রোটিনের কৌটা।

কৌটার প্রোটিন একগ্লাস গরম পানিতে গুলে সকালে আর রাতে খাওয়াতে বলেছে।

সার্জন ডক্টর মেডিসিন ডক্টর দুজনের ই মেইল নাম্বার আর হট লাইন নাম্বার দিয়ে দিলো বললো কোন সমস্যায় ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে। চাইলে ভিডিও কল ও করতে পারবেন। আমাদেরকে পেশেন্টের অবস্থা জানাবেন।

.
বাসায় ফিরে সব গুছিয়ে নিলাম।
পরদিন দেশের উদ্দেশ্যে ফ্লাই করলাম।

.
এদিকে জিয়ান নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়েছে। লিলি আর ওর সব বন্ধুদের সাপোর্টে সে এখন ডিপ্রেসন মুক্ত।
.
মন খারাপের দেশ থেকে বেরিয়ে এসে নিয়মিত ক্লাস করছে। রাত জেগে পড়াশুনা করছে। যেটুকু ক্ষতি হয়ে গিয়েছে, পড়াশুনার সেটুকু ক্ষতি মেকাপ করে নিচ্ছে। কাজেও যাচ্ছে আগের মতই। যেটাই করছে সম্পূর্ন নিষ্ঠার সাথে করছে।

.
লিলি আর জিয়ান দুজনে দুজনকে ভালোবাসে এটা ওদের বন্ধুদের সবার ধারণা। কিন্তু কেউ মুখ ফুটে কিছু বলে না।

.
স্টিভ জেনেও না জানার ভান করে জিয়ানের থেকে কথা বের করতে চায়।

স্টিভ জিয়ানকে বললো, কিরে তোদের প্রেমলীলা কেমন চলছে?

জিয়ান অবাক হয়, কি বলতে চাস তুই ক্লিয়ার করে বল।

.
আরে বললাম তোর আর লিলির প্রেম কেমন চলছে? কবে বিয়ে করছিস? নাকি লিভিং টুগেদার করার কথা ভাবছিস?

.
জিয়ান বললো কি যা তা বলছিস! মাথা ঠিক আছে তো?
আমার আর লিলির প্রেম হলো কবে?

আমার আর লিলির মাঝে যেটা আছে সেটা শুধুই ফ্রেন্ডশীপ, এর বেশি কিছুই না।

এই বাজে চিন্তাটা কি শুধু তোর মাথায় আসছে নাকি বাকি সবার মাঝেও ঘুরপাক করছে!

.
স্টিভ বললো, তাহলে তুই বলছিস তুই লিলিকে
ভালোবাসিস না।

.,
অবশ্যই ভালোবাসি তবে সেটা একজন ভালো বন্ধুকে যেভাবে ভালোবাসা উচিত ঠিক ততটুকুই ভালোবাসি।

আর লিলি যদি তোকে বন্ধুর চেয়ে বেশি কিছু ভেবে থাকে, আই মিন তোকে যদি ভালোবেসে থাকে, তখন কি বলবি!

.
সেটা লিলির সমস্যা আমার না। আমি ওকে কোন প্রেমের আশ্বাস দেইনি। সেরকম কোন ইঙ্গিত করিনি কখনো।
আমি কারো সাথে কোন প্রেমের সম্পর্কে জড়াবো না এটা আমার বন্ধু মহলের সবাই জানে, তুইও জানিস।

.
স্টিভ বললো আমি লিলিকে পছন্দ করি, ভালোও বাসি অনেক।
আমাকে তোর হেল্প করতে হবে লিলিকে পাওয়ার জন্য। ওকে পাওয়ার জন্য আমি সব করবো। করবি একটু হেল্প?

.
জিয়ান বললো এই ব্যাপারে আমি তোকে কি হেল্প করতে পারবো? তুই ওকে পছন্দ করিস সে কথা তুই নিজেই বলে ফেল। তাহলেই তো হয়ে যায়।
কাউকে যদি তোর পছন্দ হয় তাকে পেতে যা করতে হয় সেটা তোকেই করতে হবে। এই ব্যাপারে অন্যে কেনো দালালী করবে?

.
না মানে বলছিলাম কি, লিলিরতো তোর সাথে অনেক বেশি খাতির, তোদের মধ্যে কিছু না থাকলে আমাকে হেল্প কর।
.
.
আমাদের মধ্যে কি থাকবে? বারবার কি বোঝাতে চাইছিস?
লিলি আমার খুব ভালো বন্ধু এর বেশি কিছুই না।
আমি আপাতত পড়াশুনায় কনসেন্ট্রেশন করতে চাই। ভালো একটা রেজাল্ট করে বাবা মায়ের হাসি ভরা মুখটা দেখতে চাই। এই দেশেই ভালো একটা চাকরি নিয়ে চিরদিনের জন্য সেটেল্ড হতে চাই।
প্রেম নামক জিনিসটা আমার জন্য না। আমাকে নিয়ে টেনশন করিস না। আমি কাউকে ভালোবাসি না, আর যদি ভবিষ্যতে আমার জীবনে কেউ আসে তোরাই সবার আগে জানবি।

.
লিলি বাইরে দাড়িয়ে আড়াল থেকে সব শুনলো। আজকে জিয়ানকে নিজের মনের কথা বলার জন্যই এসেছিলো। কেঁদে ফেললো লিলি।

(বানানের ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন)
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here