কাজল নদীর জলে পর্ব-১৪

0
1259

কাজল নদীর জলে
আফিয়া আপ্পিতা

১৪.
চয়ন চারদিক চোখ বুলিয়ে এরেঞ্জমেন্ট ঠিকঠাক আছে কি-না দেখছে। আকস্মিক কারো কথায় পাশে তাকায়। কালচে নীল বারবি গাউন, চেহারায় উপচে পড়া প্রসাধনীর ভীড়, কান হাত গলায় জুয়েলারির সমাহার। চুল গুলো পাপ করে ছেড়ে দেয়া। পিঠ ছড়িয়ে গেছে তা পুতুল সদৃশ একটা মেয়ে তার নজরে পড়ে। ভারী মেক আপ আর উইগের কারণে চয়ন তাকে চিনতে পারে না। ভ্রু কুঁচকে তাকায়। সুরলা আন্দাজ করে চয়ন তাকে চিনতে পারে নি। তার রাগ হয়।

“আমি উনাকে প্রপোজ করার চিন্তায় আছি। আর জনাব আমাকে ভুলে বসে আছে! জনাব, আপনার কপালে চুল টানাই আছে।” কথাটা মনে মনে বলে কটমট করে তাকায় চয়নের দিকে। চয়ন আবার ভ্রু কুঁচকায়। এই মেয়েটা কোথা থেকে উদয় হয়ে উদ্ভট আচরণ করছে! সুরলা রাগী চাহনি দেয় চয়নের পানে। তারপর কপাল চাপড়ে চলে যায় অন্যদিকে। এখানে থাকলে তাকে না চেনার অপরাধে চয়নের চুল টেনে ধরবে নিশ্চিত। পুরো ব্যাপারটা চয়নের মাথার উপর দিয়ে যায়। ‘ঢাকা আসুন, বিয়ের পর আমি থাকতে পারব না’ এই কথার মানে খুঁজতে থাকে। বুঝতে পারে না। ভাবনায় মগ্ন হতে যাবে তখনি চরণের ডাক পড়ে। চয়ন চলে যায় সেদিকে। সুরলা গিয়ে আবারও নিতুর পাশে বসে পড়ে। নিতু আর চিবা সেলফি তুলছিলো। সুরলাকে দেখে চিবা বলে,
“আপু আসো সেলফি তুলি।”
“তোমরা তুলো। আমার ভালো লাগছে না।” গম্ভীরমুখে বলে সুরলা। নিতু ভ্রু কুঁচকে তাকায় সুরলার দিকে। বলে,
“কেউ কিছু বলেছে?”
থেমে বলে,
“কেউ আবার তোমাকে পিচ্ছি বলেছে?” বলে চাপা হাসে। সুরলা রাগত চাহনি দেয়। কিছু বলে না। চিবা সুরলার দিকে তাকিয়ে বলে,
“কী হয়েছে আপু?”
“কিছু না। ” চিবা বুঝতে পারে সুরলা কোন কারণে ক্ষেপে আছে। সে ওদিক ঘাটায় না। সুরলার মন ভালো করতে বলে,
” আপু তুমি জানো? তোমাকে আজ ডলের মত লাগছে। ”
সুরলা কৃত্রিম হেসে বলে,
“ধন্যবাদ। ”
“আসো সেলফি তুলি, এই মুহুর্তটা স্মৃতির খাতায় বন্দি করি। ধ্যান অন্যদিকে গেলে মনের রাগ ক্ষোভ খানিকের জন্য ভুলে যাবে। প্লিইজ!” আবদার করে চিবা। সুরলা অনিচ্ছা সত্ত্বেও সায় জানায়। ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা টেনে নানান ভঙিতে সেলফি তুলে।

ডিনার করার সময় সুরলা নিতু চিবা যেই টেবিলে বসেছিল সেই টেবিলে বসে সুরলা। চয়নখাবারের তদারকি করতে আসে তাদের টেবিলের কাছে। সুরলার সাথে বেশ কয়েকবার চোখাচোখি হয়। যতবারই চোখাচোখি হয়েছে সুরলা চোখ রাঙায়। চয়ন ভ্রু কুঁচকে দৃষ্টি সরায় প্রতিবারই। পার্টি শেষে বের হওয়ার সময় সুরলাকে একা পেয়ে চয়ন জিজ্ঞেস করে,
“এক্সকিউজ মি! আপনি আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছিলেন কেন! কারণ জানতে পারি?”

সুরলা কোন উত্তর না দিয়ে চোখ রাঙিয়ে হাটা ধরে। বিরক্তি চেয়ে যায় চয়নের মুখ।

.

পার্টি শেষে বাসায় ফিরতে ফির‍তে রাত এগারোটা বাজে। অতিথিরা সবাই সেন্টার থেকেই যে যার বাসায় চলে যায়। সারাদিন ধকল যাওয়ায় বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে চয়ন।

বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় চলে যায় সুরলা। দোলনায় ফোন হাতে বসে পড়ে। চয়নকে কল দেয়। অনেক রাগ জমে আছে, না ঝাড়লে শান্তি পাবে না। তাকে না চেনার অপরাধে অনেক গুলো কথা শুনাবে এখন। সিদ্ধান্তে অটল সুরলা। একের পর এক কল করতে থাকে, কিন্তু চয়ন উঠায় না। কম হলেও পঞ্চাশটা কল দিয়েছে। রাগের মাত্রা বাড়ে। চয়ন ইচ্ছে করে তাকে এড়িয়ে যেতে চাচ্ছে না-তো! কল দেয়া বন্ধ করে ম্যাসেজ দেয়া শুরু করে। একে একে পঁচাত্তরটা ম্যাসেজ দেয় চয়নকে। রিপ্লাই আসে না। সবগুলো রাগের ইমোজিতে ভরা। আরো ম্যাসেজ দিতে যায়। পারে না। তার ফোনের ব্যালেন্স শেষ। রাগে ফোন ছুড়ে মারে। ফ্লোরে পড়ার আগে কেউ একজন মুঠোবন্দি করে নেয়। সুরলা তখন রাগ দমাতে ব্যস্ত, তার নজর সেদিকে যায় না। বারান্দায় আগত মানুষটা এগিয়ে আসে সুরলার দিকে। সুরলা পাশে বসে। বলে,
“কী হয়েছে আমার বোনটার? এত রাগ আর ফোন ছোঁড়াছুড়ি কারণ কী?”

সুরলা পাশে তাকায়। নিতিকাকে চোখে পড়ে। কোন উত্তর দেয় না সে। অন্যদিকে ফিরে তাকায়। নিতিকা আবার বলে,
” ঝগড়া হয়েছে? ”
সুরলা ফুস করে নিঃশ্বাস ছাড়ে। নিজের রাগ দমিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে,
“কার সাথে ঝগড়া ঝগড়া হবে?”
” আজকের পার্টির মধ্যমনির ভাইয়ের সাথে।” মুচকি হেসে বলে নিতিকা। সুরলা বুঝতে পারে না। বলে,
“কার কথা বলছো তুমি?”
” যার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে আমার বোনটা, তার কথা বলছি।” সুরলা ভাবনায় পড়ে। নিতিকার কথা মনে মনে আওড়ায়। সে যার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে সে তো চয়ন। আর পার্টির মধ্যমণি ও তো চয়ন। তার বুঝতে বাকি থাকে না, তার বোন জেনে গেছে চয়নের কথা। সে অবাক হয়ে বলে,
“আপু তুমি কিভাবে…

সুরলাকে থামায় নিতিকা। সুরলার গাল টেনে বলে,
” চয়নের ছবি ফোনের ওয়ালপেপারে সেট করে ঘুরে বেড়ালে যে কেউ বুঝতে পারবে। গতবার আমাদের বাসায় আসার পরই চোখ পড়েছে ব্যাপারটা। এর আগে একদিন ছাদে বসে তোদের কথা বলতে দেখেছি। আর আজ পার্টিতে চয়নের দিকে তোর তাকানো, আর চয়নের সাথে কথা বলা দেখে আমি নিশ্চিত হই, এই সেই মানুষ যে আমার বোনের মন চুরি করেছে। ”

সুরলা লাজুক হাসে। কিছু বলে না। কী বলবে খুঁজে পায় না। তার অস্বস্তি হয়। নিতিকা বোনকে সহজ করতে বলে,
“জানিস আমি কী পরিমানে চিন্তায় পড়েছিলাম? তোর মত সহজ সরল মেয়ে আবার কার পাল্লায় পড়েছে! মানুষটা যদি খারাপ হয়! এই ভয় আমাকে খেয়ে যাচ্ছিল। যাক, এখন আমি নিশ্চিন্ত হলাম।”

“কেন!” তড়িৎ প্রশ্ন ছুঁড়ে সুরলা। নিতিকা হেসে বলে,
“চয়ন ভীষণ ভালো ছেলে। ওর মত ছেলে হয় না। স্বভাব, চরিত্র, রূপ, গুন, ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড সব দিক দিয়েই পারফেক্ট। সেই ছেলে যদি তোর জীবনে আসে, তবে খারাপ কিছু নয় বরং চমৎকার কিছুই হবে। তুই সুখে থাকবি। তাই নিশ্চিন্ত হলাম আমি। তবে, তোর কপাল খারাপ বেশিদিন প্রেম করতে পারবি না। ”

“কেন!” অবাক হয়ে প্রশ্ন করে সুরলা। নিতিকা বলে,
“চয়নের আম্মু এসেছিল পাঁচদিন আগে। পার্টির দাওয়াত দিতে। কথায় কথায় জানালেন চয়নের জন্য মেয়ে দেখছেন । ছেলেকে শীঘ্রই বিয়ে করাবেন, ছেলের বয়স হচ্ছে। তাই তোদের প্রেমটা শীঘ্রই বিয়েতে গড়াবে বলে মনে হচ্ছে।” মুচকি হাসে নিতিকা। সুরলা গম্ভীরমুখে বলে,
“আগে প্রেমটা ঠিকঠাক মত হোক, তারপর বিয়ের চিন্তা করা যাবে।”

নিতিকা হাসি থামায়। ভ্রু কুঁচকে বলে,
“কী হয়েছে বলতো? পার্টিতে ও দেখলাম চয়নের সাথে কথা বললি। তখন তো সব ঠিকঠাক ছিল। হঠাৎ কী হলো তোর? এত রেগেছিস কেন!”

সুরলা ফুস করে নিঃশ্বাস ছাড়ে। নিতিকা যেহেতু জেনে গেছে তাই তাকে বলাই যায়। জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে পার্টিতে চয়নের আচরণের কথা বলে বোনকে। তাদের প্রেমের মাত্রাও জানাতে ভুলে না। নিতিকা অবাক হয়। সে ভেবেছিলো এদের প্রেম বেশ জমেছে, এখন দেখে তা এক তরফা। নিজের বিস্ময় চাপিয়ে বলে,
“এতে রাগের কোন কারণ তো আমি দেখছি না। তোকে আজ অনন্য দিন থেকে একবারেই ভিন্ন লেগেছে। উইগ আর মেক আপের জন্য তোর রূপ পরিবর্তন হয়েছে। তোকে একদমই চেনা যায় নি। প্রথমে তো আমি নিজেও চিনি নি। এর আগে যেহেতু চয়ন তোকে এই রূপে দেখেনি, তাই চিনেনি। না চেনারই কথা। এটা স্বভাবিক ব্যাপার। এতে হাইপার হওয়ার কী আছে বলতো?”

“আমার লুক চেঞ্জ হলেও গলার স্বরটা তো চেঞ্জ হয় নি। অন্তত গলার স্বর ধরে তো চিনতে পারতো?” অভিমান ভরা গলায় বলে সুরলা। নিতিকা হেসে জবাব দেয়,
” হয়তো তেমন খেয়াল করে নি। তাছাড়া তোর লুক দেখে তোর কথা মাথায় ও আসে নি হয়তো। অচেনাই মনে হয়েছে। ও তোর কাধ অবধি চুল দেখেছে, এখন তুই উইগ পরে লম্বা চুল নিয়ে ঘুরে বেড়ালে চিনবে কিভাবে বল?”
” সে না হয় বুঝলাম, কিন্তু এখন কল ধরছে না কেন!”
“হয়তো ঘুমাচ্ছে। সারাদিন অনেক ধকল গেছে। আয় তুই ও ঘুমিয়ে পড়বি। সকালে কথা বলিস ওর সাথে।”
“তুমি যাও আমি আসছি।”

নিতিকা উঠে দাঁড়ায়। দরজা অব্দি গিয়ে থামে। পেছু ফিরে বলে,
“এক তরফা ভালোবাসায় অভিমান, অধিকার,অভিযোগ, সব একজনেরই হয়। সেগুলো নিজের মাঝেই চেপে রাখতে হয়। প্রকাশ করা উচিত নয় ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণ না সে তার ভালোবাসার মানুষটার কাছে তার ভালোবাসা প্রকাশ করছে না এবং তার ভালোবাসাটা দুই তরফা হচ্ছে না। মনে রাখবি, এখন চয়নের প্রতি তোর কোন অধিকার নেই। তুই অধিকার তখনি পাবি যখন তুই ওকে ভালোবাসার কথা বলবি, এবং সে তোর ভালোবাসা গ্রহণ করবে। আগে ওর মনে নিজের জায়গা করে নে তারপর অধিকার দেখাস। এখন নয়।”

সকালে খাবার টেবিলে সবাই উপস্থিত হয়। খেতে খেতে সুরলার কথা মনে পড়ে চিবার। চয়নের সাথে তার পরিচয় করিয়ে দেবার কথা ছিল। সে বেমালুম ভুলে গেছে। পরিচয় করিয়ে দিতে না পারলেও ভাইয়ের ভুল ধারণা মেটাতে চায় সে। চিবা তার পাশে বসা চয়নের দিকে তাকায়। চয়ন এক মনে খেতে যাচ্ছে। চিবা বলে,
“ভাইয়া জানিস?কাল পার্টিতে নিতুর ছোটবোনের সাথে দেখা হয়েছে। ওর থেকে স্বাস্থ্যবিধি জেনে নিয়েছি। ”
“কিট্টি এসেছে পার্টিতে!” অবাক হয়ে বলে চয়ন।
“কিট্টি কে?” প্রশ্ন করে চিবা। চয়ন খেতে খেতে বলে,
“ওকে দেখতে ছোটোখাটো বিড়ালছানার মতো কিউট লাগে, তাই আমি ওর নাম দিয়েছি কিট্টি। ” সাত পাঁচ ভাবে না চয়ন। চিবা ভ্রু নাড়িয়ে ভাইয়ের কথা হজম করে। চিবা মাথা নাড়িয়ে বলে,
“হ্যাঁ, ও এসেছে নিতুদের সাথেই। ”

“আমার চোখে পড়েনি কেন?”
” ও তো আমার আর নিতুর সাথেই ছিল। সম্ভবত তুমি ওকে চিনতে পারো নি।”
“আমি ওকে চিনি ভালোভাবে, চিনতে পারব না কেন?”
“কাল ও একেবারেই ভিন্ন লুকে এসেছে। প্রথমে আমি নিজেই চিনতে পারি নি। একবারেই পুতুল পুতুল লাগছিল। ”

চয়নের খটকা লাগে। কোথাও কাল তার সাথে উদ্ভট আচরণ করা মেয়েটা কিট্টি নয় তো! সে বলে,
“ছবি আছে? দেখা তো?”
ফোন চিবার সাথেই ছিল। সে লক খুলে সুরলার সাথে তোলা সেল্ফি দেখায় চয়নকে। বলে,
“এটাই তথাকথিত তোমার কিট্টি ওরফে নিতুর ছোটোবোন। ”

চয়ন বিশ্বাস করতে চায় না। সন্দিহান হতে বলে,
“তুই শিওর?”
“হ্যাঁ। কাল উইগ আর মেক আপে ওকে ভিন্ন লেগেছে। তোমার খটকা লাগলে আমি সিম্পল ছবি দেখাই একটা।”
বলে গ্যালারির ঘেটে ফেসবুক থেকে সেভ করা সুরলার একটা ছবি দেখায় চয়নকে। বলে,
“দেখো এটাই তোমার কিট্টির এভারেজ লুক । ”

তারমানে কাল বিয়ে, থাকা না থাকার কথা কিট্টিই বলেছে! কিন্তু কেন! কিট্টির সাথে ওর বিয়ের কী সম্পর্ক! আর উদ্ভট আচরণ করছিল কেন! ভাবনায় পড়ে চয়ন। মিসেস জোবায়দা আর চরণ এতক্ষণ চিবা আর চয়নের কথা শুনছেন। সব কিছু তাদের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। তাদের জানামতে,নিতুর ছোটোবোন নেই। তবে এরা কার কথা বলছে! মিসেস জোবায়েদা বলেন,
“তোরা কার কথা বলছিস? এই কিট্টি কে?”
“কিট্টি হলো নিতুর ছোটোবোনের কথা।” চিবা জবাব দেয়।
“নিতুর ছোটোবোন ফেলি কোথায়!” ভ্রু কুঁচকে বলেন জোবায়েদা।”
“সুরলা আপুকে চিনো?”
“হ্যাঁ। ” সায় জানায় জোবায়েদা ।
“সুরলা আপুই ভাইয়ার সেভেন এইট পড়ুয়া কিট্টি আর নিতুর ছোটোবোন ।”
“কী সব আবলতাবল বকছিস? সুরলা কেন নিতুর ছোটোবোন হতে যাবে?” বিরক্তিমাখা গলায় বলেন জবায়েদা। চিবা হেসে বলে,
“ভাইয়া সুরলা আপুকে নিতুর ছোটোবোন মনে করে।”
চয়ন ভ্রু কুঁচকে বলে,
“ভাইয়া মনে করে মানে কী?”
“মানে হলো, সুরলা আপু নিতুর ছোটোবোন নয়।”
“তাহলে কী!”
“সুরলা আপু নিতুই খালাতো বোন। নিতুর সাবিনা খালার মেয়ে । বয়সে আমাদের থেকে কয়েকবছর বড়ো হবে। ”
“এই টুকুনি মেয়ে কিভাবে নিতুর বড়োবোন হয়!” ভ্রু কুঁচকে বলে চয়ন। জোবায়েদা বলেন,
“ওকে দেখতে বাচ্চা মনে হয়। আসোলে ও বাচ্চা নয়। ভার্সিটিতে পড়ে।”

চিবা মায়ের সাথে সায় জানিয়ে বলে,
“হ্যাঁ আপু তো আইইউবিতে পড়ে, ফোর্থ সেমিস্টার। দেখে একবারেই মনে হয়। যে কেউই সুরলা আপুকে টিন এজ ভাবে।”

চয়ন ভীষণ ধাক্কা খায়। সে এতদিন যাকে বাচ্চা ভেবে এসেছিল সে বাচ্চা নয়! মেয়েটা কতবার নিজেকে বড়ো দাবি করেছে। অথচ সে গ্রাহ্য করেছে। এক রাশ লজ্জা এসে ভর করে তাকে। এতক্ষণ সবার কথা শোনার পাশাপাশি স্থির দৃষ্টিতে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে ভাইকে পর্যবেক্ষণ করছে চরণ। হুট করে প্রশ্ন করে,
“ভাইয়া তুমি ওই মেয়েকে কিভাবে চিনো?”
“জগিংয়ে দেখা হয়েছিল মাসখানেক আগে । ওকে দেখে আমার ও বাচ্চাই মনে হয়েছে। টুকটাক কথা হয়েছে এই যা!” ফোনের কথা বলে না। আবার উলটো ভাবতে পারে। ধাক্কাটা সামলে উঠতে পারে না সে। কোনমতে খাবার শেষ করে রুমে চলে যায়। এই প্রথম কোন মেয়ের ব্যাপারে এতটা আগ্রহ দেখিয়েছে চয়ন। এটা মাথায় রাখেন জোবায়দা আর চরণ।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here