কিশোরী_মাফিয়াপর্ব_৬

#কিশোরী_মাফিয়া

লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_৬

ঈদনি আকাশের চুল ছেড়ে দিয়ে তাঁকে সজোড়ে একটা ধাক্কা মার!যার ফলে আকাশ বিছানার উপরে গিয়ে আছড়ে পড়ে!আর ঈদনি গিয়ে আকাশের গায়ের উপরে উঠে বসে।পরে সে আকাশের ঠোঁটের মধ্যে জোরে একটা কামড় বসিয়ে দেয়!যার ফলে আকাশের ঠোঁটে প্রচন্ড লাগে!কিন্তু সে কোনো ধরনের রিয়েক্ট না করে ঈদনির দিকে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে থাকে!কারন সে কোনোদিন ও কল্পনা করেনি,যে ঈদনি তার এমন জায়গায় কামড় বসাবে!আকাশ অবাক দৃষ্টিতে ঈদনির দিকে তাকিয়ে থাকে!কিছুক্ষণ পর ঈদনি তাঁকে ছেড়ে দিয়ে দূরে সরে যায়!এবার আকাশ ঈদনিকে বলে…

–ঈদনি কি ছিলো এটা?

–তোর শাস্তি।

–তা ঠিক আছে,কিন্তু ঠোঁটে কামড় কেন?
.
ঈদনি এবার চুপচাপ হয়ে যায়!কারন এতোটা সময় তার মাঝে হুঁশ জ্ঞান কিছুই ছিলো না!কারন সে আকাশের কোথায় কামড় দিয়েছে,সেটা সে নিজেও বলতে পারবে না।কিন্তু যখন আকাশের মুখ থেকে ঠোঁটের কথা শোনে,তখন তার হুঁশ জায়গা মতন আসে।
তাই সে লজ্জায় চুপ হয়ে যায়।

–কি হলো কথা বলছো না যে?

–আসলে আমি না বুঝে ওমনটা করেছি!আর তাছাড়া আপনাকে আঘাত করার সময় আপনার ঠোঁটটাই সর্বপ্রথম আমার চোখের সামনে এসেছে।তাই বেখেয়ালি ভাবে ঠোঁটেই কামড় বসিয়ে দিয়েছি।আর বেখেয়ালি হওয়ার কারনটা হলো আপনার উপরে অতিরিক্ত মাত্রায় রাগ উঠেছে আমার!কারন কেন আপনি আমায় একা বাসায় রেখে এতোটা সময় বাসার বাহিরে থাকবেন।

–তা ঠিক আছে তোমার তীব্র রাগের কারনে তুমি আমার ঠোঁটে কামড় বসিয়েছো।কিন্তু হটাৎ তুই থেকে আপনি হয়ে গেলাম কি করে?কাহিনী না কি একটু বলবে?

–না,না,কিছুনা।
এমনিই আপনি ডাকছি।

–ওহহহ ঠিক আছে সমস্যা নেই।কিন্তু সামনের বার থেকে আমায় আঘাত করার আগে কোথায় আঘাত করছো সেটা দেখেশুনে করবে।
.
ঈদনি আর কোনো কথা বলে না।মাথা নামিয়ে চুপচাপ আকাশের থেকে কিছুটা দূরে বসে আছে।আর আকাশ ও কিছু বলে না।আর তাছাড়া আকাশ ও জানে ঈদনির আপনি বলার কারন।সে ভালো করেই জানে,যে উঠ পাহাড়ের নিচে আসলেই পাগলামি শুরু করে।সেমটা ঈদনিও করেছে।

–আচ্ছা ঠিক আছে আমি নিচে যাচ্ছি।
তুমি রুমে থাকো।
.
আকাশ নিচে যাওয়ার জন্য বিছানা থেকে ফ্লোরে পা নামায়।তখনি ঈদনি এসে খপ করে আকাশের শার্ট খামচে ধরে তার বুকে মাথা রাখে!তারপর ঈদনি বলতে থাকে…

–আপনি প্লিজ এখন নিচে যাবেন না।আমাকে একটু সময় দিন আপনি।আমার একা একা একদম ভালো লাগেনা ঘরের মধ্যে থাকতে।প্লিজ আপনি যাবেন না।

–অবাকের পর অবাক এই হচ্ছি খালি!কারন মেয়েটা সেই তখন থেকে অদ্ভুত আচরণ করছে!এই ঈদনি কি হয়েছে বলো তো তোমার?কেউ কি তোমায় কিছু বলেছে?না কোনো কারনে তুমি ভয় পেয়েছো?

–না আমায় কেউ কিছু বলেনি।আর কোনো ভয় ও পাইনি।

–তাহলে এমন অদ্ভুত ধরনের আচরণ কেন করছো তুমি?তুমি তো আমায় সহ্যই করতে পারো না।তাহলে হটাৎ এমন পাগলামো করছো?

–বললাম তো আমার একা থাকতে ভালো লাগে না।আমি একা থাকতে পারি না।তাই আমার তোকে চাই এখন।তুই একদম এখন নিচে যাবি না।চুপচাপ আমায় নিয়ে রুমের মধ্যে বসে থাকবি।না হয় যদি তুই এখন নিচে যাস,তাহলে কিন্তু তোর পায়ের মধ্যেও আমি ছুরি মেরে দিব।
.
ঈদনির পাগলামো দেখে আকাশ আর নিচে যায় না।সে চুপচাপ ঈদনির আচরণে সাড়া দিচ্ছে।আর ঈদনি আকাশের বুকে মুখ গুঁজে দিয়ে শব্দ করে ফোঁপাচ্ছে!
ঈদনির ফোঁপানো দেখে আকাশ নিজেও এবার দু-হাত দিয়ে ঈদনিকে জড়িয়ে ধরে।এমনভাবে অনেকটা সময় কাটে।পরে আকাশ লক্ষ্য করে,যে ঈদনি তার বুকের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েছে।তাই সে ঈদনিকে নিজ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বিছানায় বালিশের মধ্যে শুইয়ে দেয়।পরে সে মিটমিট করে হাসতে হাসতে নিচে চলে যায়।
.
মা,আর ছোট বোনের সাথে সময় কাটিয়ে একদম রাতে খাওয়ার সময় উপরে রুমে উঠে আসে।ঈদনি এখনো ঘুমোচ্ছে।

–এই ঈদনি উঠো খাওয়ার সময় হয়েছে।
.
ঈদনি ঘুম চোখে আকাশকে উত্তর দেয়…

–তুই খা তোর খাওয়া আমি খাবো না।আমি খালি ঘুমাবো।

–ঠিক আছে।
.
আকাশ আর ঈদনিকে না ডেকে নিচে চলে আসে।

–কিরে আকাশ ঈদনি কই?সে খাবে না?

–না,মা সে খাবে না।সে ঘুমোচ্ছে।তার নাকি ঘুম পেয়েছে অনেক।

–আরেহ খাবে না মানে কি!এটা কোনো কথা!

–আরে মা’বাদ দাও।খিদে নেই তাই হয়তো খাবে না।না হয় তো ঠিকই খেতে আসতো।

–আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে তোরা খেয়ে নে।
.
আকাশ আর দিয়া খেতে বসেছে।আর আকাশের মা’ তাঁদেরকে খাবার বেড়ে দিচ্ছে।আকাশ খেতে খেতে দিয়াকে বলে…

–কাল সকালে রেডি হয়ে থাকিস।তুই আর ঈদনিকে একই সাথে স্কুলে নিয়ে যাবো।তোর স্কুলেই তাঁকে এডমিশন করিয়েছি।

–ঠিক আছে ভাইয়া।
.
পরে আকাশ ও খাওয়া দাওয়া করে নিয়ে রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়ে।পরেরদিন সকাল বেলায় ঈদনি আগেভাগে ঘুম থেকে উঠে যায়।সে ঘুম থেকে উঠে চুপচাপ বসে আছে।তার কিছুক্ষণ পর আকাশের ও ঘুম ভাঙ্গে।তার ঘুম ভাঙ্গার পর ঈদনিকে বসে থাকতে দেখে বলে…

–ঈদনি কখন উঠেছো তুমি?

–এই তো একটু আগে।

–ওহ,,
আচ্ছা শোনো তুমি রেডি হয়ে নাও।আমি তোমাকে আর দিয়াকে একসাথে স্কুলে দিয়ে আসবো।
.
ঈদনি চটজলদি রেডি হতে চলে যায়।কিছুক্ষণ পর সে ফ্রেশ হয়ে এসে রেডি হয়ে নেয়।তারপর আকাশ ও ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়।পরে ঈদনি আর আকাশ নিচে চলে যায় নাস্তা খাওয়ার জন্য।নাস্তার পালা শেষ করে দিয়া আর ঈদনিকে গাড়ি করে নিয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।পরে স্কুলে এসে নামতেই দিয়া তার ক্লাসে চলে যায়।আর আকাশ ঈদনিকে নিয়ে প্রিন্সিপালের রুমে যায় বই আনার জন্য।আকাশ ঈদনির বই নিয়ে ঈদনিকে ক্লাসে দিয়ে আসার জন্য তাঁকে নিয়ে হাঁটা ধরে।তখনি মাঝ পথে একটা মেয়ে এসে আকাশকে বলে…

–এই যে আপনি নিশ্চই দিয়ার ভাই?

–হুম,কিন্তু কেন?

–কেন বলতে আসলে…

–আসলে কি?

–আপনি দেখতে অনেক হ্যান্ডসাম।আপনাকে আগেও বেশ কয়বার ঈদনিকে স্কুলে আনা নেওয়া করতে দেখেছি।সেই তখন থেকেই আপনাকে কেন জানি আমার ভালো লাগে।
.
মেয়েটার মুখে এমন কথা শুনে ঈদনি চোখ পাকিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে!তখনি আকাশের মাথায় একটা বুদ্ধি আসে।

–আসলে তুমিও অনেক সুন্দরী।অনেক মায়াবী দেখতে তোমার চেহারাটা।একমদ মনোমুগ্ধকর।
.
আকাশের কথা শুনে মেয়েটা বেশ লজ্জা পায়!কিন্তু অন্যদিকে ঈদনি চরম রেগে যায়!কিন্তু সে কিছুই বলতে পারে না আকাশকে!কারন সে আকাশকে কিছু বলার মতন যোগ্যতা রাখে না।যদি সে আকাশকে স্বামী হিসেবে মানতো,বা তাঁকে স্ত্রীর অধিকতার দিতো,তাহলে সে হয়তো কিছু বলতে পারতো।কিন্তু সেই সুযোগ বা অবস্থান তার নেই বা হয়নি এখনো।তাই সে কিছুই বলে না।কিন্তু তার ভিতরে কেমন যেনো এক ধরনের খারাপ লাগা কাজ করছে!মনে হচ্ছে যেনো তার জিনিসের উপরে কেউ অধিকার ফলাচ্ছে!অদ্ভুত ধরনের একটা কষ্ট অনুভব করছে সে নিজের ভিতরে!তাই সে চোখ মুখ কালো করে সামনের দিকে হাঁটা ধরে!এদিকে আকাশ ঈদনির হাবভাব দেখে বুঝতে পারে,যে তার ঔষধ টা কাজে লেগেছে।

–আচ্ছা আমি এখন যাচ্ছি।আমার একটা জরুরী কাজ আছে।তারপর মেয়েটার সামনে থেকে চলে আসলাম।একটু জোরে হাঁটা দিয়ে ঈদনির কাছে গেলাম।সে চোখ মুখ একদম কালো করে রেখেছে।এই ঈদনি কি হয়েছে তোমার?বেহুদাই প্রশ্ন করলাম ঈদনিকে।কারন আমি ভালো করেই জানি কি হয়েছে।তার কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেওয়ায় যে তার জ্বলছে,সেটা আমার বুঝতে বাকি নেই।

–না,আমার কিছু হয়নি।আমি ঠিক আছি।

–ওহ তাহলে ঠিক আছে।কিছু না হলেই হলো।
আচ্ছা চলো তোমায় ক্লাসে দিয়ে আসি।
তারপর ঈদনিকে সাথে নিয়ে ক্লাসে দিয়ে আসলাম।
সে মন মরা হয়েই ক্লাসের ভিতরে ঢুকে পড়লো।ক্লাসে ঢুকার সময় সে আমার সাথে একটা কথাও বলেনি।
আমি আশা করেছিলাম,সে আমায় কিছু একটা বলবে।বাট সে চুপচাপ ক্লাসে ঢুকে পড়েছে।যাক কি আর করার।তারপর সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে নিজের কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।কিন্তু মাঝ পথেই চার-পাঁচটা গাড়ি এসে আমার পথ আঁটকায়।আমি গাড়ি সামনেও নিতে পারছিনা।পিছনেও যেতে পারছি না।মধ্যখাবে আঁটকে গেছি আমি।তখনি আমার পথ আঁটকানো গাড়ি গুলোর ভিতর থেকে অনেক কয়জন লোক অস্ত্র হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসে!পরে তারা আমার গাড়ির সামনে এসে আমার দিকে অস্ত্র তাক করে চতুর্পাশ থেকে আমাকে ঘিরে ফেলে…

চলবে?

ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।

পাঠক-পাঠিকা আন্তরিক ভাবে দুঃখীত আজকের পর্বটা ছোট হওয়ার জন্য।আসলে আজ সকালে খেলা দেখবো বলে গতকাল রাত পুরোটাই ঘুমাইনি।যার ফলে প্রচন্ড রকমের মাথাব্যথা শুরু হয়েছে।তাই বড় করে গল্পটা লিখতে পারিনি।অবশ্য আজকে লিখার কোনো ইচ্ছাই ছিলো না।কিন্তু তবুও নিজের সাথে জুলুম করে আজকের পর্বটা লিখেছি।সো ছোট হওয়ায় কেউ মন খারাপ করবেন না।আগামীকাল বড় করে দিব ইনশাআল্লাহ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here