কিশোরী_মাফিয়াপর্ব_৭

#কিশোরী_মাফিয়া
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_৭

–অনেক কয়জন লোক অস্ত্র হাতে নিয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে!পরে তারা আমার গাড়ির সামনে এসে আমার দিকে অস্ত্র তাক করে চতুর্পাশ থেকে আমাকে ঘিরে ফেলে!কি করবো ভেবে পাচ্ছি না!তাড়াতাড়ি ফোনের লোকেশন অন করে জায়গা মতন একটা ম্যাসেজ পাঠিয়ে দিলাম।তখনি সেই লোকজন গুলো ইশারায় আমাকে গাড়ির কাঁচ খুলতে বলে।
আমি চুপচাপ তাঁদের কথা মতন গাড়ির কাঁচ খুলে দিলাম।তখনি একজন এসে আমার গলায় গুলি ঠেকিয়ে ধরে গাড়ি থেকে বের হতে বলে।অপারগ হয়ে তাঁদের এই কথাটাও মেনে নিতে হলো আমাকে।গাড়ি থেকে নামতেই তারা আমাকে টেনে হেঁচড়ে তাঁদের গাড়িতে উঠায়।পরে আমার চোখে কালো কাপড় বেঁধে দেয়।যখন তারা আমার চোখ থেকে কালো কাপড় খুলে,তখন নিজেকে আবিষ্কার করলাম একটা বন্ধ ঘরের মধ্যে।তাঁদের সবার মুখের মধ্যেই মাক্স।কারোর চেহারাই দেখা যাচ্ছে না।তারা আমায় ধরে দড়ি দিয়ে একটা চেয়ারের সাথে হাত,পা বেঁধে ফেলে।এই তোমরা কারা?আর আমাকে এখানে কেন এনেছো?

–আমরা তোর জম।আর তোকে এখানে এনেছি মারার জন্য।

–ওহ ভালে কথা।তো মেরে ফেলো আমায়।

–নাহ এতো সহজে না।আমাদের ম্যাম আসছে।তারপর তোকে কি ভাবে মারবে সেটা তিনিই ডিসাইড করবে।
আমাদের কাজ হচ্ছে তোকে উঠিয়ে আনা।তাই তোকে আমরা উঠিয়ে এনেছি।

–আর কিছুই বললাম না।চুপচাপ হয়ে বসে আছি।তারা আমায় বেঁধে রেখে অন্য রুমে চলে গেছে।তখনি আমার নজর গেলো একটা টি টেবিলের উপরে।যেটা আমার থেকে কিছুটা দূরে রাখা।আর সেই টি,টেবিলটার উপরে নজর পড়তেই বমি চলে আসলো।কারন সেখানে দুইটা কাটা হাত রক্তমাখা অবস্থায় কে যেনো রেখে দিয়েছে!যার থেকে বাজে একটা স্মেইল ছড়াচ্ছে রুমের মধ্যে!আর হাত গুলো দেখতেও বেশ জঘন্য লাগছিলো!আমি দাঁত,মুখ খিচুনি দিয়ে বসে আছি।তখনি তাঁদের থেকে একজন রুমে আসে আমায় দেখার জন্য।

–কিরে আছিস তো তুই?

–তোরা অতিরিক্ত পস্তাবি।তোরা জানিস না,যে তোরা কোথায় হাত দিয়েছিস।

–এই বেটা একদম কথা কম।আর আমরা কোথায় হাত দিয়েছি তা আমাদের জেনে লাভ নেই।ম্যাম অর্ডার করেছে তোকে তুলতে।তাই তোকে তুলে এনেছি।
এরপর যা হবে ম্যাম বুঝে নিবে সেসব।আর তুই যতো বড় কিছুই হোস না কেন,আমাদের সাথে কোনোদিন এই পেরে উঠবি না।সো চুপচাপ বসে থাক।ম্যাম হয়তো চলেই আসবে আর কিছু সময়ের মধ্যে।তারপর উপরের টিকিট কেটে দিলে চুপচাপ উপরে চলে যাস।

–আমাকে উপরে পাঠানোর চক্করে যেনো তোদেরকেই উপরে যেতে না হয়।সেই দিকটা একটু ভালো করে লক্ষ্য রাখিস।
.
আকাশের কথা শুনে তার রুমে আসা মানুষটা প্রচন্ড ক্ষেপে যায়!যার ফলে সে এসে আকাশের কলার চেপে ধরে।আর আকাশকে বলে….

–এই বেটা গলাবাজি একদম কম।
তুই হয়তো আমাদের সম্পর্কে এখনো ভালো করে জানিস না!শোন মানুষকে মারার জন্য আমাদের কোনো অস্ত্রের প্রয়োজন হয় না।আমরা চাইলে আমাদের ধারালো দাঁত দিয়েই মানুষকে শেষ করে দিতে পারি।আর তুই কিনা আমাদের সাথে এসে বাহাদুরি করছিস।
.
আকাশ লোকটার কথায় কিছু না বলে একটা হাসি দেয়।তখনি সেখানে গোলা বাজি শুরু হয়ে যায়!
ফরিদ অনেক ছেলেপেলে নিয়ে আকাশকে বাঁচাতে এসেছে।আকাশ তখন লোকেশন অন করে ফরিদকেই ম্যাসেজ করেছিলো।আকাশকে কিডন্যাপ করা লোকজন এতো ছেলেপেলে দেখে আকাশকে রেখে অন্য রাস্তা ধরে পালিয়ে যায়।ফরিদ ছেলেপেলে নিয়ে এসে আকাশকে উদ্ধার করে।

–ভাই কি ভাবে কি হলো?
তাঁদের এতো বড় কলিজা,যে তারা আপনাকে উঠিয়ে এনেছে!

–আমিও সেটাই ভাবছি,যে ওরা কার পাওয়ারে এতো উড়াউড়ি করছে!

–ভাই হয়তো এসবের পিছনে বড় কারোর হাত রয়েছে।

–হুম আন্ডারওয়ার্ল্ডের লোকজন জড়িত এর সাথে।

–কিহহহ,তাহলে এখন কি করবেব ভাই?

–কি আর করবো,ধরে ধরে সব কয়টাকে কুপিয়ে মারবো।তারা যতো বড় সেয়ানাই হোক না কেন,মনে রাখিস এটা আমাদের দেশ।আর এই দেশে ভিনদেশী কোনো মাফিয়ার পাওয়ার চলবে না।

–ভাই সে না হয় চলবে না,কিন্তু এখন এদেরকে কি করবেন?

–ওদের একটাকে ধরতে পারলেই বাকিদের খবর পেয়ে যাবো।তোরা কিছু সময় এখানে অপেক্ষা কর।কারন তারা কোন ম্যাম আসার কথা বলছিলো।দেখি সে আসে কিনা।অবশ্য আসবে না জানি,কারন তারা হয়তো এতো সময়ে তাঁদের ম্যামকে ইনফর্ম করে দিয়েছে।

–তাও একটু অপেক্ষা করি ভাই।

–হুম,
ছেলেপেলে নিয়ে অনেকটা সময় অপেক্ষা করলাম তাঁদের ম্যামের জন্য।কিন্তু সে আসলো না।তার মানে অবশ্যই তাঁদের ছেলেপেলে আমাদের বিষয়ে জানিয়ে দিয়েছে।এই ফরিদ চল এখান থেকে।আমার মনে হয় সে আসবে না।

–হুম ভাই চলেন।কারন আমারো মনে হচ্ছে তাঁদের লিডার আসবে না।

–সবাইকে নিয়ে সেখান থেকে চলেন এলাম।তারপর ফরিদকে বললাম ছেলেপেলেকে সব সময় সাথে সাথে রাখতে।পরে আমি বাসার জন্য রওয়ানা হলাম।বাসায় যেতে যেতে তাঁদের সাহস নিয়ে কল্পনা করছি,যে কতোবড় কলিজা হলে তারা আমাদের দেশে এসে আমাকেই উঠাতে পারে!নাহ এর একটা বিহিত করা দরকার।এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে এসেছি।ঘড়ির কাটা বারোটা ছুঁই,ছুঁই।ঘরের দরজায় বাড়ি দিতেই দিয়া এসে দরজা খুলে দিলো।
কিরে তুই বাসায় কখন এলি?তোদের ক্লাস না একটায় শেষ হয়?আর ঈদনি কোথায়?

–হুম একটায় শেষ হয়।কিন্তু ঈদনি ভাবির নাকি ক্লাস করতে ভালো লাগছিলো না।তাই ভাবিকে নিয়ে চলে এসেছি।

–তো সে কোথায় এখন?

–রুমে আছে।

–উপরে নিজের রুমে চলে এলাম।রুমে এসে দেখি ঈদনি অন্য পাশ ফিরে বিছানায় শুয়ে আছে।বিছানার কাছে গিয়ে ঈদনিকে ডাক দিলাম।এই ঈদনি কি হয়েছে তোমার?
.
ঈদনির কোনো জওয়াব নেই।
আকাশ আবার তাঁকে জিগ্যেস করে।

–এই ঈদনি কি হয়েছে তোমার?তুমি নাকি ভালো লাগছে না বলে ক্লাস থেকেও চলে এসেছো?তোমার কি শরীর টরীর খারাপ করেছে নাকি?
.
ঈদনির এবারো কোনো জওয়াব নেই।ঈদনির কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে আকাশ তাঁকে হাত দিয়ে নাড়া দেয়।
তখনি ঈদনি লাল লাল চোখ নিয়ে আকাশের দিকে ঘুরে তাকায়!আকাশ তার চাহনি দেখে ভেবাচেকা খেয়ে যায়!কারন ঈদনির দুই চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি পড়ছে!তার উপরে আবার তার চোখ জোড়া অগ্নিশিখার মতন লাল হয়ে আছে!

–ঈদনি কি হয়েছে তোমার?কান্না করছো কেন তুমি?
.
এবার ঈদনি জওয়াব দেয়।

–নাহ কিছু হয়নি।আমি ঠিক আছি।

–নাহ এটা বললে তো হয় না।তোমার চোখের পানি দেখে স্পষ্ট বুঝাই যাচ্ছে,যে কিছু তো একটা হয়েছে।
.
ঈদনি এবার চরম রেগে যায়!

–এই আমার কিছু হলে তোর সমস্যা কি?
তোর তো কোনো সমস্যা হওয়ায় কথা না।তুই এতো মাতব্বরি না করে নিজের কাজ কর গিয়ে।

–আরেহ ঈদনি তুমি খামোখা রেগে যাচ্ছো কেন?

–আমি খামোখা রাগ করছি তাই না?
তোর কথা অনুয়ায়ী আমার রাগের কোনো কারন নেই?

–আরেহ খামোখা রাগ করো আর যাই করো,কিন্তু কি জন্য রাগ করেছো সেটা তো বলবে?

–তোর আসলে শরীরটাই বড় হয়েছে।মানুষের মন বুঝার ক্ষমতা টা আল্লাহ তোকে দেয় নি।

–আরেহ আজব তো!

–এই তোর আজবের গুষ্টি মারি।তুই আমার চোখের সামনে থেকে দূর হ।আমার চোখের সামনে আসবি না একদম।

–ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি।
রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।কিন্তু ঈদনির এমনধারা অদ্ভুত আচরণ দেখে আমার ভিতরে কোনো কৌতূহল এই কাজ করছে না।কারন তার অদ্ভুত আচরণের আসল রহস্য টা কি,সেটা আমার জানতে বাকি নেই।তার অদ্ভুত আচরণের কারন হলো তার স্কুলের মেয়েটার সাথে রসিকতা করা।কিন্তু তার ভিতরে অন্য একটা জিনিস আমাকে ভাবাচ্ছে,যে ঈদনি তো আমায় ভালোবাসে না।বা আমায় সহ্যই করতে পারে না।তাহলে অন্যের সাথে রসিকতা করায় সে কেন এতোটা হাইপার হচ্ছে!ধুর যাই হবে হোক।সে আমার সাথে কেমন আচরণ করবে সেটা তার ব্যাপার।সেসব নিয়ে আমি কখনোই মাথা ঘামাবো না।
.
দুপুর হয়ে এসেছে।আবার রুমে এসে ঈদনিকে খাওয়ার জন্য ডাক দিলাম।কিন্তু সে সোজা বাংলায় না করে দিলো,যে সে খাবে না।দুপুর পেরিয়ে রাত হয়ে এসেছে।এর মধ্যে আমি আর তার সামনে আসিনি।সারাটা দুপুর সে রুমেই কাটিয়েছে।সিদ্ধান্ত নিলাম রাতেও খাবারের জন্য জোর করবো না তাঁকে।যখন তার পেটে টান পড়বে,তখন এসে সে আপনা আপনিই খাবে।কিন্তু মা তা হতে দিলো না।রাতের বেলায় খাবার নিয়ে গিয়ে নিজের হাতে ঈদনিকে খাইয়ে দিয়েছে।মা’ঈদনিকে খাইয়ে দিয়ে নিচে এসে আমায় একগাদা প্রশ্ন ছুঁড়ে মারলো।

–আকাশ ঈদনি কান্না করছিলো কেন তাঁকে খাইয়ে দেওয়ার সময়?কি করেছিস তুই ওর সাথে?

–কি করবো আমি আবার তার সাথে?

–কিছু তো একটা করেছিস।না হয় সে কান্না করছিলো কেন?

–মা’আমি তার সাথে কিছুই করিনি।আর সে কান্না করছিলো কেন,সেটাও আমি জানি না।তবে তুমি তো তাঁকে জিগ্যেস করতে পারতে….

–করেছি কিন্তু কোনো উত্তর দেয়নি।তবে তার কান্নার ধরন আমার কাছে বেশি একটা সুবিধার মনে হয়নি!হয়তো মেয়েটা কোনো কিছু নিয়ে বেশ কষ্ট পেয়েছে।

–মা’য়ের কথা শুনে গলায় কাশির চলে এলো।
কারন তিনি ঠিকই ধরেছেন,যে সে কিছু একটা নিয়ে অনেক কষ্ট পেয়েছে।কিন্তু মা’কে সেটা বলা যাবে না,বা বুঝতেও দেওয়া যাবে না।তাই কথা ঘুরিয়ে ফেললাম।মা তার হয়তো বাসার মানুষের কথা মনে পড়েছে।না হয় আমাদের বাসায় তো কোনো কিছুর কমতি নেই।আর তাছাড়া আমিও তার সাথে কোনো ধরনের খারাপ আচরণ করিনি,যে সে কষ্ট পাবে।

–হুম তা হলেও হতে পারে।
আচ্ছা শোন তুই তার থেকে আজ রাতে একটু জিগ্যেস করিস,যে কি হয়েছে।তার কি বাসার জন্য মন খারাপ কিনা।যদি তাই হয়,তাহলে কাল সকালে তাঁকে সাথে নিয়ে তুই তার গ্রামে যাবি।পরে সেখানে কিছুদিন থেকে বাড়ি ফিরবি।

–ঠিক আছে।
পরে আমিও খেয়ে দেয়ে রুমে চলে আসলাম।কিন্তু তাঁকে কিছুই জিগ্যেস করলাম না।কারন আমি জানি সে আমার প্রশ্নের কোনো উত্তর এই দিবে না।তাই আর মুখ নষ্ট করলাম না।চুপচাপ বিছানায় এসে শুয়ে পড়েছি।আর সে আগ থেকেই অন্যপাশ ফিরে বিছানায় শুয়ে আছে।বিছানায় শোয়া মাত্রই আমার ঘুম চলে এসেছে।রাতের বাজে তিনটা।হটাৎ কারোর কান্নার শব্দ শুনে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো।মিটমিট করে চোখটা খুললাম।তখনি দেখি ঈদনি আমার শার্ট আলতো করে খামচে ধরে বুকে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করছে!এই দৃশ্য দেখে বুকের ভিতরটা ছ্যাঁত করে উঠলো!কিন্তু কোনো ধরনের সাড়াশব্দ করলাম না।তখনি ঈদনি ফোঁপাতে ফোপাঁতে বলতে লাগলো….

–এই আজ তুই কেন এমন করলি আমার সাথে?
কেন তুই আমার সামনে ঐ মেয়েটার সাথে রসিকতা করলি?তোর একটা বারের জন্যেও কি মাথায় আসেনি,যে তোর এই আচরণটা আমার ভিতরটাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিবে?তুই এতো পাষাণ কেন?
তোর জায়গায় পাষাণ তো আমার হওয়ার কথা ছিলো।কিন্তু কেন জানি তোর আজকের আচরণটা আমায় অনেকটা আঘাত করেছে!তোর আজকের আচরণটা আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও কেন জানি বুকের ভিতরে কাঁটার মতন হয়ে বিঁধছে!যেখানে আমি তোকে সহ্যই করতে পারি না,সেখানে কেন এমন কষ্ট হচ্ছে তুই অন্যের সাথে রসিকতা করায়!বল কেন কষ্ট হচ্ছে?
কেন আমি তোর সেই আচরণ টাকে মেনে নিতে পারছি না!কেন পারছি না বল?
.
ঈদনি আকাশকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে আর পাগলের মতন প্রলাপ করছে!ঈদনি ভেবেছে আকাশ হয়তো ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেছে।আর তার কোনো কথাই সে শুনছে না।কিন্তু আকাশের তো বহু আগেই ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছে।আকাশ সেই কবে থেকেই ঈদনির পাগলের মতন প্রলাপ গুলো শুনছে।কিন্তু ভিতরে ভিতরে তার অনেকটা খারাপ লাগছে ঈদনির এমন কথাবার্তা শুনে!এদিকে ঈদনি এখনো বকবক করেই যাচ্ছে।আকাশ ঈদনির বকবকানি থামানোর জন্য ঘুমের বাহানা করে ঈদনিকে জড়িয়ে ধরে।সে এমন ভাবে ঈদনিকে জড়িয়ে ধরে,ঈদনি তাতে বুঝতেই পারে না যে আকাশ জেগে আছে।সে ভাবে আকাশ ঘুমের মাঝেই তাঁকে জড়িয়ে ধরেছে।তাই সে আকাশকে বলে…

–দেখেছিস আমার কষ্ট হচ্ছে দেখে তুই ঘুমের মাঝেই আমাকে জড়িয়ে ধরে শান্তনা দিচ্ছিস।কিন্তু বাস্তবে তুই অনেকটা নিষ্ঠুর।
.
ঈদনির এমন কথায় আকাশ ভুলেই যায়,যে সে এতোটা সময় ধরে ঈদনির সাথে ঘুমের ভান করে নাটক করছিলো।সে এবার নিজের অজান্তেই বলে উঠে….

–হুম আমি ঘুমের রাজ্যে থেকেই তোমাকে শান্তনা দিচ্ছি।সো তুমিও এবার কান্না থামিয়ে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যাও।
.
আকাশের কথার শব্দ শুনে ঈদনি ভেবাচেকা খেয়ে যায়!সে আশ্চর্যজনক ভাবে আকাশের দিকে তাকিয়ে তাঁকে বলে….

–তুই ঘুমাস নি?
.
আকাশ এবার জিভে কামড় দিয়ে বসে!কারন সে বেকুবের মতন একটা কাজ করে ফেলেছে!

–তুই এতোটা সময় ঘুমের বাহানা করে আমার কথা শুনছিলি তাই না?
.
আকাশের আর বাঁচার উপায় নেই।সে ধরা খেয়ে গিয়েছে।

–আরেহ কে বলেছে আমি ঘুমাইনি।আমি তো ঘুমিয়েছি।আর এখনো ঘুমের মধ্যেই আছি।আর ঘুমের মধ্যে থেকেই তোমার সাথে কথা বলছি….
.
আকাশের কথা শুনে ঈদনি দাঁতে দাঁত চেপে ধরে আকাশকে বলে…

–শয়তান,কুত্তা কোথায়কার।তুই আস্তো বড় একটা শয়তান।

–হুম আমি শয়তান আর তুমি ধোঁয়া তুলসী পাতা।
.
ঈদনি আকাশের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে সোজা আকাশের বুকের মধ্যে কামড় বসিয়ে দেয়।আকাশ ঈদনির এমনধারা আচরণ দেখে খিটমিট করে হাসতে শুরু করে।আকাশের হাসির শব্দ শুনে ঈদনি আকাশের বুক ছেড়ে দিয়ে মাথার নিচ থেকে বালিশ উঠিয়ে নিয়ে সোজা তার মুখের মধ্যে চেপে ধরে।তারপর রাগান্বিত কন্ঠে আকাশকে বলতে থাকে…

–জানোয়ার তোকে একদম খুন করে ফেলবো আমি।
একদম হাসবি না তুই।

আকাশ ঈদনির এমন পাগলামি মূলক আচরণ দেখে শরীরের জোর খাঁটিয়ে মুখের উপর থেকে বালিশটা ফেলে দেয়।পরে ঈদনিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে আরম্ভ করে।আর এদিকে ঈদনি আকাশের ঠোঁটের উষ্ণ ছোঁয়া পেয়ে পুরোপুরি শান্ত হয়ে যায়!
সে যেনো পাগলামি বন্ধ করার মেডিসিন পেয়ে গেছে!
আকাশের মেডিসিনের কার্যকারিতা তার উপরে এতো পরিমাণে প্রভাব ফেলে,যে সে পাগলামির রাজ্য ছেড়ে অন্য কোনো রাজ্যে গিয়ে পাড়ি জমায়।

চলবে?

ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here