#খুনশুটি_ভালোবাসার💞❤️💞
#Nishi_khatun (Angel_Frozen)
#part:_13
ইরাদ অনুকে দেখে বলে,”আরে বিয়ান কেমন আছেন?এতোবছর পরেও তো একটুচেঞ্জড হওনি।”
অনু:-যদি বদলে যেতাম তাহলে তো আমাকে চিনতেই পারতেন না।
আরিয়ান চুপচাপ দাঁড়িয়ে নিরব দৃষ্টিতে অনুকে দেখছে।আরিয়ানের পাশে স্নেহা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
অনু বলে,”তা বাচ্চাদের তো দেখছি না সবাই কোথায়?”
তাসনিয়া বলে,”এতোবছর পর তোমার সাথে আমাদের দেখা হলো।ভাই ভাবীর খোঁজ খবর নিবে না?”
অনু তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে,”বড়লোকদের খবর আমার নেওয়ার যোগ্যতা নেই।আমি তো গরীব মানুষ।আর আপনাদের দেখে বোঝা যাচ্ছে খুব সুখেই আছেন।তাই কষ্ট করে জিজ্ঞাস করার প্রয়োজন বোধ করছি না।”
আবির উঠে বলে,”নিজের বড় ভাইয়ের বউয়ের সাথে এমন ভাবে কেউ কথা বলে?”
অনু :- আপনাদের তো এখন সুখের দিন।দুই বোন বাড়ি থেকে বিদায় হয়েছে।তাদের খাওয়ানো পড়ানোর কোনো চিন্তা নেই।না আছে তাদের বিয়ে দেওয়ার টেনশন সব কিছুই তো কমপ্লিট।তাহলে সমস্যা কোথায়? ”
আবির :- তোর কথার টোনে সমস্যা।
অনু :- আপনার সমস্যা হলে আমার সাথে কথা বলার দরকার নেই।
তাসনিয়া বলে,”এমন ধরণের কথা বলো দেখে তো স্বামীর সংসার কপালে জুটলো না!”
অনু একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,”আমার কপালে ঠিক কি কি জুটছে তার ধারণা আপনাদের কারো নেই।”
ঠিক তখুনি পেছন থেকে একটা বাচ্চা ছেলে দৌড়ে এসে অনুকে জড়িয়ে ধরে মাম্মা বলে ডাক দেয়।
সবাই তো পিচ্চিটা কে দেখে অবাক।
অনু পিচ্চিটা কে কোলে নিয়ে বলে,”আমার জান বাচ্চাটা বাহিরে এতো সময় কি করছিল? ”
বাচ্চাটা এখনো ক্লিয়ার করে কথা বলা শেখে নাই।তাই সে বলে,”মাম্মা বেবি ঘুরু।”
অনু একগাল হেসে বলে ওঠে,”মাম্মার বেবিটা বাহিরে ঘুরাঘুরি করছিল তাই তো।”
বাচ্চাটা অনুর গালে চুমা দিয়ে গলা জড়িয়ে কাধের উপর মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে।
আবির অনু কে বলে,”এই ছেলেটা কার?”
অনু :-আমার ছেলে!
তাসনিয়া :এই বাচ্চার বাবা কে?
অনু :যে আমার স্বামী সে!
ইরাদ :-তা তোমার স্বামী কে?
অনু :আমি যার বউ সে!
আনিসা :- আরো তোর স্বামীর নাম কি?বাড়ি কোথায়? কবে বিয়ে করছিস?
অনু :পাঁচ বছর আগে।যেদিন বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিলাম সেদিন।
তাসনিয়া আবির কে উদ্দেশ্য করে বলে,'”দেখো স্নেহার বড় বোন যেখানে পালিয়ে বিয়ে করছে সেখানে ছোট বোন কি আর ভালো হয়?”
স্নেহা ভ্রু কুঁচকে বলে,”আমাকে আপনারা পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছেন। আপনাদের কাছে তো আমার স্বামী বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসছিল।তখন কেনো তার প্রস্তাব গ্রহণ করে আমার বিয়ে দেন নি?আমাকেও তো অনু আপুর মতো জোর করে মতের বিরুদ্ধে বিয়ে দিচ্ছিলে।তাহলে যাকে ভালবাসি তাকে বিয়ে করে কোনো ভুল করি নাই।”
তাসনিয়া :তোমরা দু বোন মিলে আমাদের মান-সম্মান সব ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছো।
স্নেহা :-ওহ আচ্ছা তাই না কি??তুমিও তো নিজে আমার ভাইকে পছন্দ করে বিয়ে করেছো তাহলে তুমিও আমাদের দু বোনের মতো।শুধু তোমার বাড়ির মানুষেরা কোনো ঝামেলা করে নাই দেখে মনের মানুষকে নিয়ে সুখে সংসার করছো।অন্যকে কিছু বলার আগে নিজের দিকে তাকিয়ে তারপর না হয় কিছু বলতে আসবেন। ”
আবির এসে স্নেহার গালে থাপ্পড় দিতে যায়।তখন আরিয়ান আবিরের হাত ধরে বলে,”স্নেহার গায়ে হাত তোলার কোনো অধিকার তোর নেই।কারণ স্নেহা এখন বিবাহিত। আর বিয়ের পর স্বামী অধিকার সব থেকে বেশি।বিয়ের পর তোর আর কোনো অধিকার নেই।”
অনু বলে,”স্নেহার মুখে অনেক আগেই শুনেছি ভাইয়া বদলে গেছে।তবে তখন বিশ্বাস করি নাই।আজ নিজের চোখে দেখে শুনে বিশ্বাস করলাম।”
স্নেহা :-আচ্ছা আপু একটা কথা বলো তুমি ইরাদ ভাইয়াকে রিজেক্ট করছিলে তাতে কোনো সমস্যা হলো না!তুমি স্বামী পেয়েছো ইরাদ বউ।শুধূ তফাৎ এটুকু যে তোমার সম্মান নষ্ট হয়েছে আর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছো।কিন্তু ইরাদের কোনো কিছুই হয় নি।সে সুখেই আছে আনিসাপু কে বিয়ে করে।তাহলে তুমি কেনো বাবার বাড়িতে স্থান পেলে না শুধু মাএ মেয়ে বলে?আচ্ছা সেদিন ভাইয়া ইচ্ছা করলে কি তোমার জীবনটা নষ্ট হবার হাত থেকে বাঁচাতে পারতো না?সে ইচ্ছা করলেই বাবা-মা কে বোঝাতে পারতো।তবে সে কাজ সে করে নাই।”
এমন সময় অনু বলে,”ওরে আল্লাহ সেই পাঁচ বছর আগের মরা কাহিনী নিয়ে তোরা এখনো পড়ে আছিস?আচ্ছা বাদ দে না এই সব কাহিনী। লাইফে পেছনের সব কিছু ভুলে সামনে এগিয়ে যেতে শেখ।দেখ আমাকে দেখে কিছু তো শিখতে পারিস।”
আরিয়ান বলে,”স্নেহা ভুলেও অনুর কথা শুনতে যাবে না।ও নিজের জীবনটা নষ্ট করছে এবার তোমার সুন্দর জীবনটাও নষ্ট করে দিবে।এই একদম স্নেহার মগজ চাষ করতে আসবে না।”
অনু কিছু বলতে যাবে তখুনি আনিসা বলে,”আজব কাহিনী তো?তোমরা সবাই কি এখানে শালিশ দরবার করতে আসছো?না কি আমাদের বাড়িতে দাওয়াতে আসছো।”
স্নেহা বলে,”নিজে সুখে আছো তো আপু তাই আমাদের কষ্টা বুঝবে না।”
আনিসা বলে,”বুঝলে বুঝপাতা না বুঝলে তেজপাত। আমার এখন কোনোটাই বোঝার ইচ্ছা নাই।সবাই এতোদিন পরে একসাথে হয়েছি একটু সুখ দুঃখের কথা বলবো তা নয় তো কে কোন ভুল করেছে তার হিসাব নিয়ে পড়ে আছে।”
অনু বলে,”হুম,আমিও তো তাই বলছি।কিন্তু এদের কানে কোনো কথায় ঢুকছে না।”
ইরাদ বলে,”তাই তো,কাহিনীটা এমন হলো রান্নাঘরে কে রে?আমি তো কিছু খাই নি।তোমাাকে নিয়ে সব সমস্যা আমি কিছুই জানি না এমন ভাব।”
অনু বলে,”দেখেন দুলাভাই আপনার সাথে ঝগড়া করার আমার মোটেই ইচ্ছা নেই।তারপর ও আমি আপনার দূরের সম্পর্কের শালি হয় ঝগড়াঝাঁটি চাইলে করতে পারেন।”
আনিসা সবাই কে ফ্রেশ হয়ে আসতে বলে রান্নাঘরে কাজ করতে চলে যায়।
এতো সময় এতো চিৎকার চেঁচামেচি শুনে অনুর পিচ্চিটা এবার হঠাৎ করে খুব কান্নাকাটি করতে শুরু করে দেয়।
অনু বাবুর হঠাৎ এমন কান্নার কারণ বুঝতে পারে না।বাবুর কান্না থামানোর নানারকম চেষ্টা করে।তবে শেষ পর্যন্ত সে ব্যর্থ হয়।
এরপর অনুর মনে পড়ে বাবু তো অনেক সময় না খেয়ে আছে হয়তো খুধা লেগেছে বলে কান্না করছে।
বাবুকে একটু খাবার খাওয়ানোর পর বাবু একটু নিরব হয়।অনু বাবুকে সোফাসেটের উপর ঘুমপাড়িয়ে দেয়।
তখন আরিয়ান বলে,”দেখো স্নেহা তোমার বোনের অবস্থা দেখো।নিজের বাচ্চাটাকে একটু দেখাশোনা ঠিক মতো করতে পারে না।সে মা হয়ছে কিসের জন্য আল্লাহ জানে।”
অনু রেগেমেগে আরিয়ান মনের সুখে বকা দিতে থাকে।
(কালকের পর্বের ইনশাআল্লাহ আপনাদের সমস্যার সমাধান আসবে)
‘
‘
‘
চলবে……