খুনশুটি_ভালোবাসার পর্ব ১২

0
1945

#খুনশুটি_ভালোবাসার💞❤️💞
#Nishi_khatun (Angel_Frozen)
#part:_12

আজ পাঁচ বছর পর অনু দাঁড়িয়ে আছে সেই ভার্সিটির গেটের সামনে। যে ভার্সিটি তে প্রথম প্রবেশ করার দিন থেকে ঘটে নানারকম ঘটনা।সেই দিন গুলো সত্যি মজার ছিলো।ভার্সিটির লাইফে সবাই স্বাধীন থাকে তবে নিজেদের ফিউচার নিয়ে চিন্তিত থাকতেই হয়।

আজ আবারো অনেক গুলো বছর পর অনু ভার্সিটিতে প্রবেশ করছে।উঁহু স্টুডেন্ট হয়ে প্রবেশ করছে না।সে ভার্সিটির একজন লেকচারার হিসাবে জয়েন করবে আজ।

পাঁচ বছরে অনু নিজের গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে ভার্সিটিতে জব করবে।

হুম সেদিন অনু নিজের বাবার বাড়িতে ফিরে যায়নি। নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য সকল বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে নিজের আলাদা পৃথিবী তৈরি করে।

অনু গেটের ভেতর প্রবেশ করতেই দেখে কতো গুলো ছেলে মেয়েরা একসাথে চিৎকার চেঁচামেচি করছে।কাহিনী বুঝতে একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখে ওদের রেগিং চলছে।

অনু সেখান থেকে দূরে সরে এসে বলে,”এই রেগিং করার নিয়ম মজা করার জন্য।কিন্তু এরা মানুষের সম্মান নিয়ে টানাটানি করে।এরা জীবনে শুধরাবে না।”

অনু ভার্সিটির ক্লাস নেওয়ার জন্য তার ক্লাস রুমে প্রবেশ করতেই কোনো স্টুডেন্ট কেয়ার করে না।সবাই অনুকে স্টুডেন্ট ভেবেছিল।কিন্তু অনু তো ভ্রু কুঁচকে দাঁড়িয়ে আছে।

তখন প্রিন্সিপাল স্যার এসে সব স্টুডেন্টদের সাথে অনুর পরিচয় করিয়ে দেয়।

এরপরে সবাই অনুকে সরি বলে!বলে,”আসলে আমরা বুঝতে পারি নাই আপনি আমাদের ম্যাডাম।”

এরপরে অনু আর কিছু না বলে ক্লাস নিয়ে বাহিরে বেড়িয়ে আসতেই অনুর ফোনের রিংটোন বেজে ওঠে।

ইরাদ কল দিয়েছে অনু কে।সে অনুকে তার বাড়িতে যাবার জন্য দাওয়াত করে।

ইরাদ অনুকে বলে,”দেখো এতো গুলো বছর তো সবার থেকে দূরে থাকলে এবার না হয় দূরত্বটা কম করবে।আর কতো বছর সবার থেকে দূরে থাকবে।এতো বেশি অভিমান ভালো না।”

অনু কিছু না বলে ফোনের লাইনটা কেটে দেয়।

বিকালের দিকে ইরাদের বাড়িতে অনুষ্ঠান তাই সবাই সেখানে এসে উপস্থিত।

আবিরের সাথে আবিরের বউ তাসনিয়া এসেছে সাথে তাদের দুই বছরের মেয়ে আর চার বছরের ছেলে।

ইরাদের বউ আনিসা এদের আদর আপ্যায়ন করতে ব্যস্ত। ননদ আর ননদ জামাই বলে কথা।

ইরাদের মেয়ের আজ জন্মদিন তাই সে একটা ছোটখাটো পারিবারিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

আরিয়ান তার মেয়ে আরিয়ানা কে সাথে করে আনছে।

আরিয়ানা দুষ্টুমি করছিল তখন তার দুষ্টামি থামাতে আরিয়ান বলে,”আমি তো খুব ভালো,কখনো কারো সাথে দুষ্টুমি করি না।তাহলে তুমি এতো দুষ্টুমি করো কেনো আরি?”

আরিয়ানা বলে,”পাপা তুমি ভালো ছিলে তার প্রমাণ দাও!”

স্নেহা এসে বলে,”আরি মামুনি পাপার সাথে কেউ এভাবে কথা বলে না।জানো সত্যতা তোমার পাপা অনেক ভালো।একদম নম্রস্বভাবের, তবে রেগে গেলে সে দিন দুনিয়ার কথা ভুলে যায়।”

আরিয়ানা:-হুম,তার রাগটা তার কাছে সব কিছু!আমার তো কোনো দাম নেই পাপার কাছে তাই না পাপা?

আরিয়ান বলে,”আরি ছোট মানুষ ছোটদের মতো থাকো!বড়দের মাঝে তোমার থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।”

স্নেহা আরিয়ানা কে সাথে করে ইরাদের মেয়ের কাছে নিয়ে যায়।

আবির কে উদ্দেশ্য করে আরিয়ান বলে,”আমার মেয়েটা একদম তার নানাবাড়ির মানুষদের মতো স্বভাব পেয়েছে।কথায় কথায় তর্ক না করলে তার পেটের ভাত বুঝি হজম হয় না।”

আবির বলে,”মেয়ে তোর সেখানে অন্যদের দিকে কেনো আঙ্গুল তুলছিস? ভুলে যাবি না এক আঙ্গুল আমাদের দিকে উঠালে বাকি চার আঙ্গুল তোর নিজের দিকে ফিরে যাবে।”

স্নেহা এসে বলে,”আহ ভাইয়া,আরিয়ানের সাথে এতো ঝগড়াবিবাদ কেনো করো?তোমরা কি একটু চুপচাপ শান্তিতে থাকতে পারো না?”

তাসনিয়া বলে,”স্নেহা তুমি এভাবে তোমার ভাইয়ার সাথে কথা বলতে পারো না।”

স্নেহা :-ভাবী আপনি আমাদের দুই ভাই বোনের কথার মাঝে না আসলেই খুশি হবো।

আবির :-বড় বোনের মতো ছোট বোনটাও বেয়াদব হয়ে গেছে।বড় ভাইয়ের বউকে সম্মান দিতে হয় সে কথা ভুলে গেছে।

স্নেহা :-ভাবীর আক্কেলজ্ঞান কেমন দুই ভাইবোনের মাঝে কথা বলবে।তাকে চুপ করতে বলাটাও দোষের?মানুষেরা ঠিক কথা বলে,”ভাই বিয়ের পর ভাবীর হয়ে যায়।আর বোনের ভাই থাকে না।”

তাসনিয়া এবার বলে,”এতো কথার প্যাচ না লাগিয়ে যাওনা আরিয়ানের গলা ধরে ঝুলোঝুলি করো।”

স্নেহা বলে,”সে কথা আপনাকে ঢাক ঢোল পিটিয়ে বলতে হবে না।এই আপনার জন্য আজ আমাদের সম্পর্ক গুলো এমন বিষাক্ত। ”

আবির জোড়ে স্নেহা কে ধমক দিয়ে ওঠে।তখন ইরাদ এসে বলে,”আবির তোমার বোনের তাসনিয়া কে নিয়ে এতো সমস্যা কেনো গো?আমার বোন তোমাদের কোন পাকা ধানে মই দিয়েছে?”

আনিসা এসে বলে,”ইরাদ এটা ওদের পারিবারিক সমস্যা আমরা ওদের বেপারে নাক না গলালে ভালো হবে।”

ইরাদ :- আনিসা তুমি কি বলতে চাইছো?তুমি স্নেহার পক্ষ নিয়ে কথা বলছো?

আনিসা :-উঁহু মোটেই না।তবে তোমার বোন কি তোমার কাছে বিচার দিয়েছে?তাসনিয়া কিন্তু তোমার কাছে বিচার দেয় নি!তাহলে কি দরকার আগ বাড়িয়ে ওদের সম্পর্কের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করার?

আনিসার কথা শুনে ইরাদ একটু চুপচাপ হয়ে যায়।

আরিয়ান বলে,”আচ্ছা আবির তোর ছোট বোন না হয় একটু উঁচু গলায় কথা বলেছে।তার জন্য কি সবার সামনে তাকে এভাবে অপমান করতে হবে?একটু সুন্দর ভাবে তো বুঝিয়ে বলতে পারতিস?

আবির স্নেহা কে উদ্দেশ্য করে বলে,”নিজে বিয়ে করে পরের বাচ্চাকাচ্চার মা হয়েছে সে আর কি ভাবে ছোট থাকে?যে পালিয়ে বিয়ে করতে পারে তাকে বোঝানোর কোনো ইচ্ছা আমার নেই।”

স্নেহা আরিয়ানের কাছে গিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে।

তখন পুরোবাড়ির পরিবেশ নিরব হয়ে যায়।

ইরাদের বাড়ির সদর দরজা ভেদ করে ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করতেই দেখে এখানে সবাই উপস্থিত তবে সবাই কোনো এক কারণে নিরবতা পালন করছে।

অনু তখন সবাই কে উদ্দেশ্য করে বলে,”এতো নিরবতা কিসের এখানে?কেউ কি মারা গেছে এখানে?”

অনুর গলার আওয়াজ শুনে সবাই পেছনে তাকিয়ে অনুকে দেখে একদম অবাক।পাঁচ বছর আগের অনু আর আজকের অনুর মাঝে কোনো পরিবর্তন নেই।

(আমি খুব ব্যস্ত তার মাঝে গল্পটা দিতে চেষ্টা করেছি।)




চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here