খুনশুটি_ভালোবাসার পর্ব ১১

0
1850

#খুনশুটি_ভালোবাসার💞❤️💞
#Nishi_khatun (Angel_Frozen)
#part:_11

অনু আর ইরাদের বিবাহের সব কিছু রেডি কাজী সাহেব বিবাহের কাজ শুরু করে দেয়।ঠিক সে সময় আনিসা অনু কে বলে,”অনু তুই সত্যি বিয়েটা করে নিচ্ছিস?”

অনু বলে,”এ ছাড়া উপায় নেই তো আপু!”

এমন সময় আনিসা সে বিয়ের আসরে বমিবমি ভাব নিয়ে সবার সামনে থেকে চলে যায়।সবাই ভাবে বিয়ের বাড়ি উল্টাপাল্টা কিছু খেয়েছে হয়তো।

আনিসা বাথরুম থেকে এসে ইরাদের সামনে গিয়ে বাংলা সিনেমার নায়িকাদের মতো বলে ওঠে,”ওগো তুমি আমাকে রেখে অনুকে কেনো বিয়ে করতে চাইছো?তাহলে আমাদের অনাগত বাচ্চাদের কি হবে?আমি যে তোমাকে প্রচুর পরিমাণে ভালোবাসি।তুমি আমার বোন কে আমার সতীন করে আনবে এ হতে পারে না।আমি মানি না!মানবো না!”

ইরাদ সেখানে দাঁড়িয়ে বলে,”বিয়ের আসরে ফাইজলামি হচ্ছে?আমি তো আপনাকে চিনি না!মেয়ে মানুষ হয়ে নিজের চরিত্রের উপর দাগ লাগাতে একটু বাঁধতেছে না আপনার?”

আনিসা বলে,”ধুর মিয়া আপনার বাঁধে না তো আমার বাধবে কেনো?”

ইরাদ, “মানে!”

আনিসা :-অনুর মত নেই আপনাকে বিয়ে করাতে সেখানে আপনি তাকে জোর করে কেনো বিয়ে করতে আসছেন?

ইরাদ :বিয়ের আগে মেয়েরা এমন কথা অনেক বলে বিয়ের পর সব কিছু ঠিকঠাক হয়ে যায়।

আরিয়ান অনুর পাশে বসে বলে,”আনিসাপু পুরাই ড্রামা কুইন।যে কোনো পরিস্থিতি খারাপ করতে খুব ভালো পারে।”

অনু এখন এসব দেখে হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না।

আবির আনিসার ব্যবহারের জন্য সবার কাছে মাফ চাইতে থাকে।তখন আনিশা বলে,”আজব তো ভাইয়া ভুল আমি করেছি মাফ ও আমি চাইবো।”

আনিসা:-বিয়ের আসরে যদি একটু মজা না করি তাহলে মজা করবো করে?

আনিসার মা বলে,”তোর জ্ঞান-বুদ্ধি কবে হবে রে?ছোট বোনের বরের সাথে কেউ এমন ফালতু ফাইজলামি করে না!”

আনিসা কিছু বলতে যাবে তখন ইরাদ তাকে থামিয়ে বলে,”কাজী সাহবে আপনি বিয়ের কাজ শুরু করেন তো।আমি আজ বউ নিয়ে বাড়িতে যাবো যে যাই বলুক না কেনো!”

কাজী সাহেব বিয়ের কাজ শুরু করবে তখন ইরাদের চাচা চাচী মা বলে, “এই ছেলেটা কে কোথায় যেনো দেখেছি!”

একটুপর ইরাদের চাচা বলে,”আরে ইরাদ ঐ মেয়েটা তো বিবাহিত। ”

ইরাদ ভ্রু কুঁচকে বলে,”কোন মেয়েটা? ”

ইরাদের চাচা অনুর সামনে গিয়ে বলে,”লজ্জা করছে না নিজের স্বামী কে সামনে রেখে আরেকজন কে স্বামী রুপে গ্রহন করতে চাইছো?

চাচী বলে,”তুমি বা কেমন স্বামী? নিজে বসে থেকে স্ত্রীর বিয়ে দিচ্ছ পরপুরুষের সাথে?”

আরিয়ান বলে,”দেখুন আপনাদের কোথায় ভুল হচ্ছে।অনু আমার বউ না।ও আমার বন্ধুর ছোট বোন।”

ইরাদের চাচী ;- ওহ তাই মাঝ রাতে বন্ধুর বোনকে নিয়ে রাস্তায় কেনো যাও?কোন বাড়ির মানুষেরা তাদের মেয়েকে অন্য ছেলের সাথে মাঝ রাতে ঘুরাঘুরি করতে যেতে দেয়।১০০% শিউর তোমরা পালিয়ে বিয়ে করেছো দেখে মাঝ রাতে এতো ঘুরাঘুরি করো।”

ইরাদের চাচীর সাথে তাল মিলিয়ে অনুদের প্রতিবেশি আন্টি অনুর নামে খারাপ কথা বলতে শুরু করে দেয়।

প্রতিবেশী বলে,”হ্যা আপা ঠিক কথা বলছেন।বিয়ের কিছুদিন আগেও ঐ ছেলে আর মেয়ে সারারাত বাহিরে ছিলো।বোঝেন তাহলে এই বয়সী ছেলে মেয়ে সারারাত বাহিরে কি করতে পারে?জানি এসব কথা একটু বললেই পুরোটাই বুঝতে পারছেন।”

ইরাদ বিবাহ আসর থেকে অনু সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে,”উনার যা বলছে সব কিছু কি সত্যি? ”

আবির বলে,”আমার বোন এমন না!উনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে। ”

অনু বলে,”যদি বলি উনারা যা বলছে সত্যি তাহলে কি করবেন? ”

ইরাদ আবিরের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,”আবির তোর বোনের চরিত্রে সমস্যা আছে।একদিকে রাজের সাথে প্রেম,,আরিয়ানের সাথে রাত বিলাস,আর আমাকে আসছে বিয়ে করতে।এমন চরিত্রের মেয়েকে তো আমি কেন কোনো ছেলে জীবনে নিজের বাড়ির বউ করবে না।”

অনু বলে,”আপনার মতো ফালতু লোকের দরকার এই অনুর নেই।যে রাস্তার মানুষের কথা শুনে অন্যকে দোষী বলে।আপনি কি রিজেক্ট করবেন আমি আপনারে রিজেক্ট করছি।করবো না আপনাকে বিয়ে।”

ইরাদ তার পরিবারের সবাই কে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।

ইরাদের পরিবার চলে যাবার পর অনুর বাবা আবিরে গালে থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।তারপর বলে,”ঘরে দুইটা যুবতী বোন থাকলে সেই ভাইয়ের ছেলে বন্ধুদের বাড়ি থেকে দূরে রাখতে হয়।আজ তোর এসব বন্ধুদের জন্য আমার মান-সম্মান সব রাস্তার ধুলোয় মিশে গেলো!”

আবির :-বাবা শোনো আরিয়ান অনেক ভালো ছেলে!অনুকে আরিয়ান কখনো খারাপ দৃষ্টিতে দেখে নাই।সমাজের এই মানুষদের চোখের দৃষ্টিতে সমস্যা তারা সব ভালো সম্পর্ক গুলোকে খারাপ ভাবে দেখে।”

অনুর বাবা বলে,”আমি জানি না,আজকে এখুনি তুই ভালো ছেলে কোথায় পাবি নিয়ে আয়।অনুর মতো আপদ কে আজ বিয়ে দিয়ে আমি আমার বাড়ি থেকে বিদায় করবো।”

অনু বলে,”আমি কোনো ডাস্টবিনের নোংরা নয় যে আমাকে আজকেই বিদায় করতে না পারলে গন্ধ বাহির হবে।”

অনুর বাবা :- তোর মতো বেয়াদব মেয়ে কে ঘরে রাখার কোনো মানে হয় না।আবির ছেলে খোঁজ কোনো ফকিরের সাথে দরকার হলে তোর বোনের বিয়ে দিবে তাও বিয়ে দিবোই।

অনু :-আমি বিয়ে করবো না,অযথা জোড় করে লাভ নেই।

অনুর গালে থাপ্পড় দিয়ে ওর বাবা বাড়ির বাহিরে বেড় করে দিয়ে বলে,”তোর মতো বেয়াদব মেয়ের কোনো স্থান আমার বাড়িতে নেই।তোর জন্য রাস্তা সঠিক স্থান বলে বাড়ির দরজা বন্ধ করে দেয়।”

আরিয়ান অসহায়ের মতো আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে।

আবির আরিয়ান কে কিছু বলতে চেয়েও পারছে না।

আরিয়ান অনুর বাবাকে রিকুয়েস্ট করে বলে,”আঙ্কল প্লিজ এমন রাগের মাথায় অনুকে বাড়ির বাহিরে বাহির করে দিবেন না।আপনার মেয়ে আপনার বাড়ির সম্মান। এভাবে সে সম্মান রাস্তা ছুঁড়ে ফেলে দিবেন না।”

অনুর বাবা আরিয়ানের কোনো কথা শুনেত রাজী না।তার এক কথা কাল সে বাড়ির বাহিরে গেলে সবাই তার দিকে আঙ্গুল তুলে বলবে,”ঐ যে অনুর বাবা!যার মেয়ের চরিত্রে সমস্যা ছিলো দেখে বর বিয়ের আসর ছেড়ে চলে গেছে।যদি আজ অনুর কারো সাথে বিয়ে হয়ে যায় তাহলে আমি অনুকে আমার বাড়িতে স্থান দিবো নয়তো না।”

অনু বাহিরে দাঁড়িয়ে কান্নারত অবস্থায় বলে,”বিয়ে আমি করবো না!দরকার নেই আপনার বাড়িতে থাকার।আমি লেখাপড়া জানি ঠিক নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবো বুঝলে বাবা।”

অনুর বাবা বলে,”আবির তোর বন্ধু অযথা নিজের সম্মান নষ্ট করছে ঐ ফাজিল মেয়ের হয়ে রিকুয়েস্ট করে।”

অনু বলে,”যদি আমি কোনোদিন নিজে যোগ্যতা অর্জন করতে পারি তাহলে আসবো আপনার বাড়িতে নয়তো কোনোদিন ও ফিরে আসবো না এই বলে দিলাম।”

আরিয়ান এবার অনুর উপর খুব রেগে গিয়ে বলে,”তুমি তো দেখছি মেয়ে খুব একটা সুবিধের না।বাবার সাথে অশান্তি করে একলা মেয়ে মানুষ কোথায় যাবে?কোনো আত্মীয় সাহায্য করবে না।রাস্তার চারপাশে থাকা হায়না গুলো তোমাকে একলা পেয়ে খুবলে খাবে।তখন খুব ভালো লাগবে?”

অনু :-আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনার এতো মাথা ব্যাথা না করলেও চলবে।ঐ যে দেখেন আপনার প্রাক্তন সামনে দাঁড়িয়ে আছে তাকে নিয়ে সুখের জীবন সুরু করেন।”

আরিয়ান,;-আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে তোমাক চিন্তা করতে হবে না।আমি পেছনে ফেলে আসা কোনো জিনিশ আর গ্রহণ করি না।

এদের তিন জনের অনেক কথা কাটাকাটি হয়।তারপর কি হয় কে জানে?

এরপর কী হয় কেউ জানে না।দেখতে দেখতে কেটে যায় পাঁচ-পাঁচটা বছর।এ কয়েক বছরে বদলে গেছে সবার জীবন!সেদিনের সেই ঝগড়াঝাঁটির পর সবার জীবনের গল্পটা বদলে গেছে।কি হয়েছে পাঁচ বছর পরে?আগের মতোই আছে না কি সবার খুনশুটি ময় ভালোবাসার জীবন??

(কী হয়েছে মনে হয়??ভুল এুটি গুলো জানালে খুশি হবো)



চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here