খুনশুটি_ভালোবাসার পর্ব ৩

0
2122

#খুনশুটি_ভালোবাসার💞❤️💞
#Nishi_khatun (Angel_Frozen)
#part:_03

ইরাদ খুব রেগে জোরে চেঁচিয়ে বলে,”এই বেদ্দপ মাইয়া!আমি তোমার কোন কালের ভাই?সেই তখন থেকে ভাই ভাই করছো?তোমার সাথে রক্তের সম্পর্ক আছে?চলে আসছো ভাই-বোনের সম্পর্ক তৈরি করতে।”

অনু ইনোসেন্ট চেহারা করে বলে,”কারো সাথে যে রক্তের সম্পর্ক না থাকলে তাকে ভাইয়া ডাকা নিষেধ এমন কথা কোথাও বলা আছে?”

ইরাদ বলে,”সে থাক বা না থাক তাতে আমার কী? ওইসব আমার দেখার বিষয় না!আমি তোমাকে আমার বোন বানিয়ে নিজের বাবার সম্পত্তির ভাগীদার বাড়াতে পারবো না।it’s that clear! ”

এবার অনু ভ্রু কুঁচকে ইরাদের দিকে তাকিয়ে বলে,”শোনের ভালো ভাবে কথা বলছি তার মানে এই নয় যে আমার বাবার সম্পত্তি কম পড়ছে।আল্লাহর রহমতে আমার বাবার যে টুকু আছে আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালোয় আছে।রাস্তার যে কাউকে ভাই বানাতে যাবো না তাও পরের বাপের সম্পত্তির জন্য!”

ইরাদ :-You অপমান me!আমি অপমান সহ্য করবো না।

জ্বি হ্যা অপমান করছি! বলে অনু সেখান থেকে সোজা চলে যায়।

এমন সময় আরিয়ান ইরাদের কাছে এসে জিজ্ঞাস করে কী রে তোর কী হলো চেহারা এমন বান্দরের মতো করে রাখছিস কেনো?

ইরাদ বলে,”আবিরের বোন এসেছিল।কানের কাছে ভাই ভাই বলে ঘ্যানঘ্যান করছিল।”

আরিয়ান বলে,”হুম বুঝি তো সুন্দরি মেয়ের ভাই কে হতে চাই।”

ইরাদ:- হ্যা এমন সুন্দরি মেয়েদের তো বিয়ে করে নিজের বাড়ির সৌকেচে সাজিয়ে রাখা দরকার।”

আরিয়ান :-হ্যা ভালো তো। শুভ কাজে দেড়ি কিসের।তাড়াতাড়ি যা একটা সুন্দরি মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে সাজিয়ে রাখ! ”

ইরাদ :-খারাপ কথা বলিশ নাই।আমি আজ কে বাড়িতে যেয়ে বাবার সাথে কথা বলবো।

আরিয়ান:-শোন তোর বিয়েতে দাওয়াত দিতে ভুলবি না কিন্তু!কব্জি ডুবিয়ে খাবো তোর বিয়েতে বুঝলি।

ইরাদ;-হ্যা তারপর বাসরঘর থেকে আমার বউ কে নিয়ে পালাবি।

আরিয়ান ;-আরে ধুর মনটা উদার করতে শেখ।
তুই তো বউ সাজিয়ে রাখবি।আমি তো কাজে ব্যবহার করবো সমস্যা নেই।তারপর আবার তোর কাছে ফেরত দিয়ে আসবো সাজিয়ে রাখার জন্য।

ইরাদ আরিয়ান কে শয়তান খচ্চর লুচ্চা ইত্যাদি বলে চলে যায়।

আরিয়ান আবিরের কাছে গিয়ে দেখে আবির রাজের সাথে বসে আছে।

আরিয়ান আবির কে বলে,”দোস্ত দুঃখিত রে!”

আবির অবাক হয়ে বলে,”তুই দুঃখিত কেনো বলছিস রে?”

আরিয়ান বলে,”আসলে কাল রেগে গিয়ে অনুকে থাপ্পড় দেওয়া মোটেই উচিৎ হয় নি।তুই একটু আমার ভুলের জন্য অনুর কাছে মাফ চেয়ে নিস প্লিজ। ”

আবির :-আরে ধুর,ওসব কথা বাদ দে।আমি যা করতাম সে কাজ তুই করেছিস।সেখানে ভুলের কি আছে?

আরিয়ান :-আচ্ছা ঠিক আছে।ওই কথা ভুলে যাচ্ছি।

আবির আচ্ছা শোন আরিয়ান আর রাজ তোদের বোন কে সাথে নিয়ে শুক্রবার আমার বাড়িতে আসবি।আমার ছোট বোন স্নেহার জন্মদিন।বাড়িতে ছোট খাটো একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।সেখানে তোদের আসতেই হবে।

আরিয়ান বলে,”সমস্যা নেই আমাদের একমাত্র বোন ডিম কে দরকার হয় আগেই তোদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিবো।রাজের বোন তো আমাদের দুই ভাইয়ের বোন তাই না।”

রাজ কিছু বলে না!তখন সেখানে ইরাদ এসে বলে,”কী রে সবাই কে দাওয়াত দিচ্ছিস আমার কথা কেনো ভুলে যাচ্ছিস।”

আবির বলে,”তুই ও তোর বোন কে সাথে করে চলে আসিস তাহলে।আমাদের সমস্যা নেই।”

ইরাদ বলে,”ইনশাআল্লাহ শুক্রবার দেখা হবে।আর সমস্যা থাকলেই বা আমার কী?”

এদিকে অনু ক্লাস শেষে গেটের সামনে এসে আবির কে খুঁজতে থাকে।আরিয়ান এসে বলে,”আবির কে খুঁজে লাভ নেই।ওর দরকারি কাজ ছিলো তাই চলে গেছে।আমার ঘাড়ে তোমার দায়িত্ব দিয়ে গেছে।”

অনু বলে,”ধন্যবাদ ভাইয়া!”আমি নিজ দায়িত্বে বাড়িতে চলে যেতে পারবো।”

আরিয়ান জোড়ে একটা ধমক দিয়ে বলে,”এই বেয়াদব মেয়ে তোমাকে হাজার বার বারণ করছি না আমাকে ভাই বলে ডাকবে না।দরকার হলে জান,জানু, কলিজা এসব বলে ডাকবে।”

অনু বলে,”আজারে এই সব বলে আপনাকে কেন ডাকতে যাবো?”

আরিয়ান :কেনো মানে কী?কয়েক বছর আগে তোমার জন্য এসব ডাক শোনা থেকে বিরত আছি।সে কাহিনী তুমি ভালোয় জানো ময়নার মা।”

এবার অনুর মুখটা শুকিয়ে শুটকি মাছ হয়ে যায়।
আর কোনো কথা না বাড়িয়ে সোজা আরিয়ানের বাইকের পেছনে উঠে পড়ে।

আরিয়ান বলে,”এই না হলে ভদ্র মেয়ে।এই মেয়ের একটাই সমস্যা অতীতের খোঁচা না খেলে সহজে সোজা হয় না।”বলে বাইক স্পিডে ছুটিয়ে চলে।

আরিয়ান রাস্তা ফাঁকা পেয়ে অনুকে ভয় দেখাতে প্রচুর জোড়ে বাইক চালাতে থাকে।এতে অনু খুব ভয় পেয়ে আরিয়ানের কাঁধে খুব শক্ত করে খামচি দিয়ে ধরে রাখে।

আরিয়ান বেপারটা বুঝতে পারে।তাতে ওর কিছুই যায় আসে না।অনুকে ডিস্টার্ব করতে আরিয়ানের বেশ মজা লাগে।

অনুদের বাড়ির সামনে বাইক থামাতেই অনু বাইক থেকে নেমে জোড়েজোড়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,”আমাকে মেরে ফেলার ইচ্ছা আছে আপনার?দিনের বেলা রাতের আকাশের চাঁদ দেখিয়ে দিচ্ছেন।দেখেন আমার এতো তাড়াতাড়ি মরার শখ নেই।আপনার দরকার হলে মরে যান।”

আরিয়ান বলে,”দিনের বেলা রাতের আকাশের চাঁদ দেখিয়েছি!রাতের বেলা না হয় দিনের সূর্য দেখাবো বুঝলে মেয়ে!”

এদের কথাবার্তা শুনতে পেরে আবির বাড়ির ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসে।এসে বলে,”আরিয়ান কি হয়েছে?”

আরিয়ান বলে,”আর বলিশ না।অনু আমার বাইকে চড়ে এতো মজা পেয়েছে যে রাতে লং ড্রাইভে যেতে চাইছে।আমি বারণ করছি তাও আমার কথা শুনছে না।বলে ভাইয়া কিছু বলবে না।আপনি ভাইয়াকে বলেন তাহলে সে রাজী হবে।”

অনু মনে মনে বলে,”ওরে খচ্চর বেডা!তুই আমারে এই ভাবে ভাইয়ার সামনে পাঁচাবি ভাবতেও পারি নাই।থাম আজ তোর মিথ্যা কথার কিছু করবোই।”

আবির বলে,”অনু তুই সত্যি আরিয়ানের সাথে যেতে চাইছিস? ”

অনু :-ভাইয়া তুমি তো জানো তোমার বোন কেমন।তোমার কী মনে হয় আরিয়ান ভাইয়া যা বলছে সে সব সত্যি কথা?বা সে কথা গুলো আমি বলেছি?

আরিয়ান বলে,”আবির তোর কী মনে হয় আমি মিথ্যে অথবা বানিয়ে কথা বলছি?”

আবির একটু চুপ থেকে বলে,”উঁহু তোরা দুজনের সত্যি বলছিস। কারণ অনু খুব মজা করতে ভালোবাসে।
সে কারণে হয়তো সে তোকে মজার ছলে কথা গুলো বলেছে।আর তাই জন্য অনু এমন কথা বলছে।”

আরিয়ান অনুর দিকে তাকিয়ে চেহারার মধ্যে এমন একটা এক্সপ্রেশন দেয় তাতে বোঝায় সে জিতেছে।

অনু কাঁদো-কাঁদো চেহারা করে কিছু বলবে তার আগে আবির বলে,”আচ্ছা আরিয়ান তা বল আমার বোনকে নিয়ে কবে যাচ্ছি ঘুরতে? ”

অনু আবিরে মুখে এমন কথা শুনে হ্যা করে তাকিয়ে থাকে।অনুর চেহারার এমন এক্সপ্রেশন দেখে আরিয়ান বলে,”আঙ্কল আন্টি যদি মাইন্ড করে তখন?”

আবির বলে,”আরে ধুর সবাই তোকে বিশ্বাস করে আর তাই তোর সাথে আমার দুই বোন কে চোখ বন্ধ করে ছাঁড়তে পাড়ি তাতে একবার ভাবতে যাবো না।”

আরিয়ান বলে,”শুভ কাজে দেড়ি কিসের?তাহলে আজ রাতেই যাবো।”

অনু এমন কথা শুনে এক সেকেন্ড ও না দাঁড়িয়ে সোজা বাড়ির ভেতরে চলে যায়।

আবির বলে,”দেখছিস আমার বোনটা কতো খুশি হয়েছে।যে খুশি প্রকাশ করতে সোজা বাড়ির ভেতরে চলে গেছে।”

আরিয়ান ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে বলে,”হ্যা একটু বেশি খুশি হয়েছে।”

এরপর দুজনের দুজনে বিদায় দিয়ে চলে যায়।



চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here