খুনশুটি_ভালোবাসার পর্ব ৫

0
1883

#খুনশুটি_ভালোবাসার💞❤️💞
#Nishi_khatun (Angel_Frozen)
#part:_05

অনু আরিয়ানের খুনশুটি বহুবছর ধরে চলছে।তার পর্বের পরিচিত বলেই হয়তে কখনো কেউ ওদের নিয়ে খারাপ মন্তব্য করে না।
তবে কে জানতো সামনে এদের জীবনের গল্পটা বদলে যাবে।

চাঁদনী রাতের কাহিনীর পর কয়েকদিন আর অনু আরিয়ানের দেখা হয় না।

এদিকে স্নেহার জন্মদিনের অনুষ্ঠানের ব্যস্ততায় সবাই সব কিছু ভুলে গেছে।

আজকে আমাদের স্নেহা মনির ১৭তম জন্মদিন।
সামনে বছর সে আঠারো বছরের স্বাধীন তরুণী হবে।তাই সতেরো বছরের জন্মদিনটা বেশ সুন্দর করে পালন করবে।

অনু স্নেহার পছন্দমত ক্রীম কালারের একটা বড় গোলামের ডিজাইন করা গাউন কিনে আনে।আজ সেই গাউনটা পড়েছে স্নেহা।গাউনটা পড়ে সুন্দর করে চুলের ডিজাইন করে খোঁপা করে।রাজকুমারীদের মতো মাথায় ছোট স্টোনের তাজ পরে।আজকে স্নেহাকে পুরো ডিজনি ল্যান্ডের রাজকুমারী মনে হচ্ছে।

পুরোবাড়িটা খুব হালকা সাজে গর্জিয়াছ করে সাজানো হয়েছে।
বোনের জন্মদিনের নানারকম আয়োজনে অনু আর আবির ব্যস্ত তাই ওদের সে ভাবে তৈরি হয় নি।নরমাল ড্রেসআপে বাড়ির কাজ করতে থাকে।

এমন সময় আরিয়ান সেখানে এসে অনুকে এভাবে কাজ করতে দেখে ভেবে নেয় আজও অনুর সাথে শয়তানি করবেই।

আরিয়ান স্নেহাকে সাথে করে অনুর সামনে গিয়ে বলে,”আচ্ছা স্নেহা তুমি কি একটা কথা জানো?”

স্নেহ :-কী কথা ভাইয়া?

আরিয়ান :-বাড়ির বড় মেয়ে গুলো কাজের মেয়ে হয় বুঝলে!

স্নেহা একগাল হেসে বলে,”জানবো না কেনো?ঐ যে দেখেন আমার বড় বোন তার নমুনা!”

অনু ভ্রু কুঁচকে স্নেহার দিকে তাকিয়ে বলে,”আমাকে উদ্দেশ্য করে তোরা কোনো ফাইজলামি করছিস না তো?”

স্নেহা:-পাগলে কামর দিছে না কি?যে তোমাকে নিয়ে ফাইজলামি করতে যাবো?

আরিয়ান মাঝে টপকে বলে,”স্নেহা তোমাাকে বাড়ির কাজের মেয়ে বলছিল।”

অনু রাগি দৃষ্টিতে স্নেহার দিকে তাকাতেই স্নেহা আরিয়ানের দিকে তাকাই।আরিয়ান চোখের ইশারাতে বোঝায় আমি আছি তোমার চিন্তা নেই।আরিয়ানের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে স্নেহা নিজের মনে অনেকটা সাহস যোগার করে।

স্নেহা শক্ত কন্ঠে বলে,”আমি ভুল কি বলেছি বলো তো আপু?”

অনু বলে,”তুই বাহিরের মানুষের সামনে আমাকে কাজের মেয়ে কেনো বলবি?”

স্নেহা বলে,”দেখো বাড়ির বড় মেয়েদের দায়িত্ব বেশি হয়।তাই তাদের বাড়ির সম কাজ করতে হয় যেমন তুমি বাড়ির বেশির ভাগ কাজ করো।আমি নামেমাত্র কিছুমিছু করি।তাহলে বড় মেয়ের সঙ্গা দিতে কাজের মেয়ের পদবি ব্যবহার করলে সমস্যা কোথায়? ”

অনু চিৎকার করে বলে,”সমস্যা আমার মাথায়। আজকাল মনে হয় এবাড়ির মেয়ে আমি না।আমি অন্য বাড়ির মেয়ে। তাই জন্য সবাই আমার সাথে এমন ব্যবহার করছেন।”

স্নেহা সব গুলো দাঁত বাহির করে হাসতে থাকে।
অনু রাগে দুঃখে সেখানে থেকে চলে যায়।

অনুর যাবার পর আরিয়ান স্নেহার সামনে বড় একটা চকলেট বক্স এগিয়ে দিয়ে বলে,”এই না হলে আমাদের স্নেহা মনি।”

চকলেট বক্সটা হাতে নিয়ে স্নেহা আরিয়ান কে জিজ্ঞাস করে,”সে আসবে না?”

এমন সময় সেখানে সে চলে আছে।

তাকে দেখে স্নেহা দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে,”আচ্ছা মীম ডিম এটা কি তোর আসার সময় বলতো?”

মীম বলে,”দেখ স্নেহা আগে তো আমাকে ডিম ডাকা বন্ধ কর।কারণ এখানে অনেক মানুষের আনাগোনা কেউ ডিম নামটা শুনলে কি ভাব্বে?তাছাড়া আমার একটা পেস্টিজ আছে তাই না।”

স্নেহা বলে,”আরে হ্যা! আমাদের ডিমের প্রেস্টিজ নিয়ে চিন্তার শেষ নেই।”

তারপর দু বান্ধবী চলে যায় গল্প করতে।

এদিকে রাজ চলে আসে।ইরাদ তার সাথে বোন তাসনিয়া কে নিয়ে আসে।তাসনিয়া কে আবির সাথে করে স্নেহার রুমে রেখে আসে।

সব কিছু ঠিকঠাক হবার পর অনু আবির রেডি হয়ে নিচে চলে আসে।

এরপর সবাই একসাথে অনেক মজা করে,আড্ডা দেয়।একসাথে সবাই অনেক ছবি তোলে।তারপর খাওয়া-দাওয়া করে।সবাই একসাথে বসে আছে এমন সময় সেখানে ইরাদের বাবা মা চলে আসে।

তাদের হঠাৎ এমন আগমনের কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায় যে ইরাদের সাথে অনুর বিয়ের প্রপোজাল নিয়ে আসছে তারা।

অনুর বাবা মা সোজাভাবে বিয়ের প্রপোজাল না করে দেয় না।তারা বলে,”কিছুদিন পর তো মাস্টার্সের ফাইনাল পরিক্ষা!ওরা ভালোভাবে পরিক্ষা দিয়ে ভার্সিটি থেকে বেড়িয়ে আসুক তারপর না হয় ওদের চারহাত এক করে দেওয়া যাবে।”

ইরাদের বাবা মা নাছোড় বান্দা! তারা পরিক্ষার আগেই ছেলের বিয়ের ঝামেলা শেষ করতে চাইছে।তাদের কথা বিয়ের পরেও পরিক্ষা দিতে পারবে।আপনাদের যখন পরিক্ষার পর বিয়ে দিতে সমস্যা নেই।তখন পরিক্ষার আগে বিয়ে দিতে সমস্যা কোথায়?

অনুর বাবা মা ইরাদের বাবা মা কে বলে,”বিয়ের বিষয়ে ভাবার জন্য আমাদের কিছুদিন সময়ের প্রয়োজন। আমরা কিছুদিন পর না হয় এবিষয় আলোচনা করবো!”

ইরাদের বাবা-মা তাদের এ বিয়ে নিয়ে চিন্তা করার জন্য সময় নিতে বলে।তাদের কোনো সমস্যা নেই।

তাসনিয়া এসে অনুকে জড়িয়ে ধরে বলে,”বাহ শেষ পর্যন্ত এই মিষ্টি আপুটা আমার ভাবী হবে ভাবা যায়।”

অনু বলে,”আমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তোমার বাবা মা এবাড়িতে সোজা চলে আসছে?আর আমার ফ্যামিলি বা কেমন মেয়ের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করছে না?সব সিদ্ধান্ত একাই নিচ্ছে তারা।”

তাসনিয়া বলে,”ভাবী তুমি এ বিয়েতে রাজী না?”

অনু বলে,”তোমার ভাইয়ের সাথে কী আমার চার-পাঁচ বছরের রিলেশন আছে যে হুট করে সম্বন্ধ আনলে বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়তে হবে?”

স্নেহা বলে,”আপু মাথাটা কে একটু shut down এ রাখো এখন!এখানে অনেক মেহমান। কোন রকম তামাশা সৃষ্টি করোনা প্লিজ।

অনু excuse me বলে সেখান থেকে চলে যেতে লাগে
তখন আরিয়ান অনুর হাত ধরে বলে,”অভিনন্দন হবু নতুন বউ! ”

এ কথা শুনে অনুর গায়ে জ্বালাপোড়া করতে শুরু করে।এক ঝাটকা দিয়ে আরিয়ানের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যায়।

তারপর সবাই নানারকম কথা বলে অনুদের বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়।

আরিয়ান চলে যাবার সময় স্নেহা তাকে বলে,”এই হিরো আমার বোনটার কি সত্যি ঐ জিরোর সাথে বিয়ে হবে?”

আরিয়ান বলে,”বিষয়ে হলে মন্দ হবে না বলো?”

স্নেহা বলে,”আপুর বিয়ে তাড়াতাড়ি হলে তো আমার সমস্যা!”

আরিয়ান :-কেনো তোমার কী সমস্যা?

স্নেহা- বাবা মা তো বড় মেয়ে বিদায় করতে পারলেই আমার পিছনে লাগবে বিয়ে নিয়ে।আপুর বিয়ের যতো দেড়িতে হবে আমার জন্য ততোই ভালো।”

আরিয়ান -তুমি কী স্বার্থপর বোন?নিজের বোনের বিয়ো নিয়ে চিন্তা না করে নিজেকে নিয়ে চিন্তায় বিভোর। ”

স্নেহা কে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সে চলে যায়।
(গঠনমূলক মন্তব্য আশা করবো!আজকের পর্বটা পড়ে কেমন লাগছে সবার?)
.
.
.
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here