গল্পের_নাম_তুমি_আসবে_বলে পর্বঃ১০

গল্পের_নাম_তুমি_আসবে_বলে পর্বঃ১০
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza

আমি খেয়াল করে দেখলাম আওয়াজটা ফায়াজ ভাইয়ের রুম থেকে আসছে।আমি পা পা টিপে তার রুমের সামনে দাড়িয়ে পরি দরজা আধখোলা হয়ে আছে।তা দিয়ে ভিতরে উঁকি দিয়ে আমি যা দেখলাম তাতে আমার বুকটা ধক করে উঠলো ফায়াজ ভাই নিচে বসে আছেন বিছানার কার্নিশ ঘেসে আর তার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে তার সামনে আয়না ভেঙ্গে পরে আছে।ফায়াজ ভাইয়ের হাত থেকে গলগল করে রক্ত পরছে।আমি নিজেকে আর সামলিয়ে রাখতে পারলাম না দরজা ঠেলে রুমে ঢুকে ফায়াজ ভাইয়ের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরলাম।ফায়াজ ভাই আমাকে দেখে অবাক হলেন তারপরই আমাকে জড়িয়ে ধরলেন তার রক্তভেজা হাত আমার পিঠে রাখলেন।পুরো কামিজে আমার তরল জাতীয় কিছু বেয়ে পরছে নিশ্চিত ফায়াজ ভাইয়ের রক্ত।আমি তার হাতটা ছাড়াতে চাইলে আরো গভীরভাবে সে আমায় জড়িয়ে ধরে।আমি অনেক কষ্টে নিজেকে ছাড়িয়ে তার রক্তমাখা হাত আমার হাতে নিয়ে দেখলাম হাতের ভিতর কাঁচের কিছু অংশ লেগে কেটে গেছে।আমি তার ড্রয়ার থেকে মেডিসিনের বক্স নিয়ে হাতের কাটা জায়গাটা ব্যান্ডেজ করে দেই।ব্যান্ডেজ করা শেষ হলে আমি ফায়াজ ভাইয়ের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললাম,

~বাচ্চাদের মতো এসব কী করছেন?আপনি যথেষ্ট বড় এসব করে নিজেকে ছোট করবেন না।
বলেই যেই আমি উঠতে নিবো তখনই সে দাড়িয়ে পরে আমার সামনে আমি রাগ নিয়ে বললাম,
~এতো রাতে তামাশা করবেন না।
আমার কথা শেষ হতেই আমি তার পাশ কাটিয়ে যেতল নিবো তখনই সে আমার হাত টান দিয়ে তার বাহুডরে আমাকে আবদ্ধ করলো।আমি তার বুকে গিয়ে পরলাম ফায়াজ ভাইয়ের এহেন আচরণে আমি কিছুই বললাম না সে আমার মাথায় পরম যত্নে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন,
~আবীর ভাই কেন তোকে আমার সাথে বিয়ে দিতে চায় না?আর কয়েকদিন পর আমার জবও হয়ে যাবে আমার ভিতর প্রবলেমটা কী?আমি আর এসব নিতে পারছিনা আমি তো ধুকে ধুকে মরছি তুই কী বুঝিস না?আমি জানি তুই বুঝিস কিন্তু আমাকে বুঝাতে চাস না।
এতটুকু বলে সে থেমে গেল তার এসব কথা শুনে আমার চোখের পানি পরতে লাগলো তার শার্ট ভিজে গেছে আমার চোখের পানিতে ফায়াজ ভাই আমায় ছেড়ে দিয়ে তার হাত আমার বাহুডরে রেখে আমার চোখে চোখ রেখে বললেন,

~কিছু তো বল ফিহা?তুই কী আমার মনের কথা বুঝতে পারছিস না
বলেই সে ফ্লোরে বসে পরলো তার চাপা কান্নার আওয়াজ পুরো রুম জুড়ে শোনা যাচ্ছে আমি সেভাবেই দাড়িয়ে রয়েছি স্তব্ধ হয়ে কী বলবো?কিছুই বুঝতে পারছিনা মন কী চায় তা হলো বড় প্রশ্ন আমি নিজেকে ঠিক করে বললাম,
~রাত অনেক হয়েছে ঘুমিয়ে পরুন।আর এসব করবেন না খালামণি এসব দেখলে কী ভাববে?সে কী তার ছেলের এই অবস্থা দেখে সহ্য করতে পারবে।
বলেই এক মুর্হুত সেখানে দাড়ালাম না রুমে এসে ওয়াশরুমে চলে আসলাম কলের ট্যাপ ছেড়ে চাপা কান্না শুরু করলাম ফায়াজ ভাইয়ের কষ্ট দেখে এতো খারাপ কেন লাগছে তাকে ব্যথায় দেখে আমার সহ্য হচ্ছে না।
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে চুপচাপ মায়ের পাশে শুয়ে পরলাম চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
সকালে সবাই ডাইনিং টেবিলে বসে আছে সবার মুখ গম্ভীর হয়ে আছে আমি চুপচাপ নাস্তা করছি হঠাৎ কোথা থেকে যেন ফায়াজ ভাই এসে আমার পাশের চেয়ারে বসে পরলেন সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে
আমি আড়চোখে তাকিয়ে দেখলাম ফায়াজ ভাই একদম স্বাভাবিক ভাবে তার প্লেটে পরোটা তুলছে তারপর পরোটা ছিড়ে মুখে পুরে দিলো।
হঠাৎ আবীর ভাই বললেন,
~খালামণি আমরা আজ চলে যাচ্ছি বাবা বাসায় একা আছেন আর আমারও অফিস শুরু তাই আমাদের বাসায় যাওয়াটা দরকার।
খালামণি বললেন,
~যেটা তোমরা ভালো বুঝো।
আমি ফায়াজ ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে দেখি সে একদম বিন্দাস নাস্তা করছে কেনজানি অনেক অভিমান হলো এই তার ভালোবাসা আমি চলে যাচ্ছি তার কোনো ভাবান্তর নেই।

আবীর ভাই আমার দিকে তাকিয়প বললেন,
~ফিহা যা রেডি হ এখনই বাসার জন্য রওনা হবো।
আমি চেয়ার ছেড়ে উঠতে যাবো তখনই ফায়াজ ভাই আমার হাত ধরে বললেন,
~ফিহা কোথাও যাচ্ছে না।
এতটুকু বলে আমার হাত ধরে সে দাড়িয়ে পরে আবীর ভাই রাগে কটমট করতে করতে বললেন,
~ফায়াজ কালকে রাতে আমি আমার কথা বলে দিয়েছি।আর ফিহার হাত ছাড় নাহলে খবর আছে
ফায়াজ ভাই আমার হাত আরো শক্ত করে ধরে বললেন,
~ছাড়ার জন্য তোমার বোনের হাত ধরিনি আমিও তো বলেছি আমি ফিহাকেই বিয়ে করবো।
আবীর ভাই বললেন,
~তোর মতো ছেলের কাছ থেকে এসব আশা করিনি আমি।
ফায়াজ ভাই বললেন,
~আশা না করাটাই শ্রেয়।
ফায়াজ ভাইয়ের কথায় আবীর ভাই গর্জে উঠলেন আর বললেন,
~খালামণি ফায়াজকে বুঝান আমরা এখন এসব ভাবছিনা
খালামণি একদম চুপ করে আছেন মা বললেন,
~ফায়াজ সব কিছু বুঝার চেষ্টা করো বাবা আমরা পরে কথা বলি এসব ব্যাপারে।
ফায়াজ ভাই বললেন,
~যা হওয়ার এখনই হবে।আমি ফিহাকে কোথাও যেতে দিচ্ছি না
বলেই সে আমাকে নিজের সাথে আরো শক্ত করে চেপে ধরলো।আবীর ভাই বললেন,
~বেয়াদবির সব লিমিট তুমি ক্রস করছো।
ফায়াজ ভাই আর আবীর ভাইয়ের চিল্লাচিল্লিতে রুপা আপু সহ সবাই বের হয়ে আসলো সবাইকে দেখে আমার অনেক খারাপ লাগছে আমার জন্য এসব হচ্ছে।
আমাী চোখ বেয়ে পানি পরছে তখনই খালামণি চিৎকার করে বললেন,
~দুজনই একদম চুপ আর কোনো কথা হবে না।ফায়াজ ফিহাকে ছাড়ো মেয়েটা তোমার জন্য সবার সামনে অপমানিত হচ্ছে।
ফায়াজ ভাই বললেন,
~না মা আমি ওকে ছাড়ছিনা আবীর ভাই ওকে নিয়ে চলে যাবে।
খালামণি এবার আমাকে তার হাত থেকে ছাড়িয়ে বললেন,
~ফিহা কী চায় এটা কেউ জানতে চেয়েছে?তোমরা সবাই নিজের কথা বলছো ওর কথা কেউ শুনেছো।
খালামণির কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে যায় ফায়াজ ভাই অসহায়ের মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেই চলছে। খালামণি বললেন,

~ফিহা,তুই বল তোর কী সিদ্ধান্ত?
আমি অশ্রুসিক্ত নয়নে খালামণির দিকে তাকিয়ে বললাম,
~খালামণি কিছুদিনের সময় দেন আমাকে।
খালামণি বললেন,
~অবশ্যই সে পর্যন্ত তুই আমার বাসায় থাকবি।
আমি মাথাদুলালাম খালামণি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
~ফিহা কী বলেছো সবাই শুনেছো আর আমার কী সিদ্ধান্ত তাও বলেছি কোনো কথা শুনতে চাইনা।
আর কেউ কোনো কথা বললো না আবীর ভাই রাগী চোখে একবার তাকিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন মা আমাকে রুমে চলে গেলেন।
রুপা আপু আর মায়েরা একসাথে বের হলেন বাসা থেকে আমি এখানেই থাকবো প্রিয়া ভাবিরা কাল চলে আসবে।সবাইকে বিদায় দিতে আমও নিচে আসলাম আবীর ভাই আমার কাছে এসে বললেন,
~দেখ বোনু আমি তোর উপর কোনো সিদ্ধান্ত চেপে দিতে চাইনা তুই যদি ফায়াজকে নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চাস আমার কোনো আপত্তি নেই।বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিস
আমি কিছু না বলে চুপ করে থাকলাম। সবাই চলে যাওয়ার পর রুমে চলে আসলাম মনটা কেমন কেমন করছে। রুমে আসতেই আমার চোখ চড়কগাছ হয়ে গেলো কারণ

চলবে

(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন।ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)

(দেরি করে গল্প দেওয়ার জন্য sorry 😢😢।আগামীকাল আমি গল্প দিতে পারবো না তার জন্য অগ্রীম sorry😢😢)

আগের পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/384848096570302/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here