গল্পের_নাম_তুমি_আসবে_বলে পর্বঃ১১

গল্পের_নাম_তুমি_আসবে_বলে পর্বঃ১১
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza

রুমের ভিতরে ঢুকতেই আমার চোখ চড়কগাছ ফায়াজ ভাই আমার রুমের বিছানায় পায়ের উপরে পা তুলে শুয়ে আছে।আমি তাকে দেখে ভ্রুকুচকে আমার কোমড়ে হাত রেখে তার সামনে গিয়ে বললাম,
~এই যে মশাই আপনি এভাবে শুয়ে আছেন কেন?তাও আমার রুমে
ফায়াজ ভাই আমার কথা শুনে ধপ করে বিছানা থেকে উঠে আমার সামনে দাড়িয়ে পরলো আমি দুকদম পিছিয়ে গেলাম।সে আমার একদম কাছে এসে বললেন,
~আমার মন চেয়েছে তোর রুমে আসতে তাই এসেছি কোনো সমস্যা?
বলেই আমার চুল গুলো কানের পিছে গুজে দিলেন।তার স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠলাম আমি। তার চোখে চোখ পরতেই আমি দূরে গিয়ে দাড়ালাম ফায়াজ ভাই আমাকে দূরে যেতে দেখে মুচকি হেসে বললেন,
~এতো দূরে থেকে লাভ আছে ওইতো আমার কাছে আসতেই হবে।
আমি বললাম,
~দেখা যাবে নে কে কাছে আসে।
ফায়াজ ভাই হেসে আমার কাছে এসে দুগালে তার হাত রেখে বললেন,
~তুই এতো কিউট কেন?বলতে পারিস তুই যখন গাল ফুলিয়ে কথা বলিস তখন তাকে ছোট বাচ্চার মতো লাগে।
ফায়াজ ভাই নির্ঘাত পাগল হয়ে গেছে কী আবোল তাবোল বকছে মাথার সব তাড় ছিড়ে গেছে।আমি কিছুক্ষন এসব ভেবে তাকে বললাম,
~ফায়াজ ভাই,এসব কী বকছেন?
ফায়াজ ভাই আমার গাল টেনে বললেন,
~তোকে বুঝতে হবে না সময় হলে বুঝে যাবি।আর শোন তোর না আমাদের বাসার পাশে পার্কটা পছন্দ আজ আমরা সেখানে যাবো।
আমি তাড়াতাড়ি করে বললাম,
~একদম না খালামণি যেতে দিবে না।
ফায়াজ ভাই বললেন,
~সেটা আমার ব্যাপার ঠিক এক ঘন্টা পর তোকে আমি নিয়ে যাবো।
বলেই সে চলে গেলো আমি হা হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম

ফায়াজ তার মায়ের রুমের সামনে এসে দরজায় টোকা দিলো ভিতর থেকে আওয়াজ আসলো,
~ভিতরে আসো।
ফায়াজ অনুমতি পেয়ে ভিতরে ঢুকে দেখলো তার মা আলমারি গোছাতে ব্যস্ত। ফায়াজ তার মাকে বললো,
~মা একটু কথা আছে।
ফায়াজের মা ছেলের দিকে তাকিয়ে বললো,
~কী হয়েছে বল?
ফায়াজ বললো,
~মা ফিহাকে নিয়ে বাড়ির পাশে পার্কে যেতে চাই।
ফায়াজের মা ছেলের এমন কথায় বললো,
~ফিহা রাজী যেতে?
মায়ের কথায় ফায়াজ বললো,
~তোমার কী মনে হয় তোমার ভাগনী রাজী হবে তুমি পারমিশন দেও আমি ওকে নিয়ে যাবো।
ফায়াজের মা ছেলের এমন পাগলামী দেখে হালকা হেসে বললেন,
~তুই একদম তোর বাবার মতো হয়েছিস জেদী একটা।মেয়েটাকে একা ছাড় ভাবতে দে।
ফায়াজ বললো,
~উফ মা তুমি বুঝতে চাইছো না তোমার ভাগনীকে একা ছাড়া যাবে না।
ফায়াজের মা বললেন,
~যা কিন্তু তোর ভাই আর ভাবী আসবে তার আগেই চলে আসবি।
ফায়াজ বললো,
~যেটা আজ্ঞে মহারাণী।
ফায়াজের মা বললেন,
~যা দুষ্ট কোথাকার।
ফায়াজ হাসিহাসি মুখে মায়ের রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে গিয়ে রেডি হতে শুরু করলো
আমি আয়নার সামনে দাড়িয়ে হিজাব ঠিক করছি খালামণি এসে বলেগেছেন ফায়াজ ভাইয়ের সাথে যেতে আর আমারও মন চাইছে একটু ঘুরতে তাই ভাবলাম যেতে পারলে খারাপ কী?আমি হিজাবটা ঠিক করে ঠোঁটে হালকা লিপজেল দিয়ে চোখে কাজল দিয়ে রেডি হয়ে নিলাম।তারপর রুম থেকে বের হয়ে ডাইরেক্ট নিচে চলে আসলাম সোফার রুমে।

নিচে আসতে দেখি ফায়াজ ভাই দাড়িয়ে আছে আমাকে দেখে মুচকি হেসে বললেন,
~যাওয়া যাক।
আমি কিছু না বলে হাঁটা শুরু করলাম দরজার বাহিরে গিয়ে আরো একটা ধাক্কা খেলাম কারণ বাইক দাড় করানো।ফায়াজ ভাই বাইকে উঠে তা স্টার্ট দিয়ে বললেন,
~তাড়াতাড়ি বসে পর।
আমি তার পিছে বসে পরলাম ফায়াজ ভাই বললেন,
~শক্ত করে ধরে বস নাহলে পরে যাবি।
আমি বললাম,
~উহু বসেছি তো আর মাত্র ২০মিনিটের রাস্তার জন্য বাইক নেওয়ার কী দরকার ছিল?
ফায়াজ ভাই কিছু না বলে বাঁকা হেসে বাইক চালাতে শুরু করলেন। এমনভাবে চালাচ্ছেন জেনো প্লেন চালাচ্ছেন আমি তাল সামলাতে না পেরে তার কাধে হাত রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।ফায়াজ ভাই বললেন,
~এখন বুঝেছিস কেন বাইক নিয়েছি।
ফায়াজ ভাইয়ের কথায় আমি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললাম মানুষটা বড্ড মুখ কাটা একটা কথাও মুখে আটকায় না।
২০মিনিট পর আমরা পার্কের সামনে এসে পরলাম আমি বাইক থেকে নেমে একসাইডে দাড়ালাম আর ফায়াজ ভাই বাইক এক জায়গায় দাড় করিয়ে দিলেন।
আমি আর ফায়াজ ভাই পার্কের ভিতরে প্রবেশ করলাম পার্কটা অনেক সুন্দর গাছপালায় পরিপূর্ণ ছোট ছোট বাচ্চারা খেলাধুলা করছে আমরা একটা জায়গায় গিয়ে বসে পরলাম। এমন প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে অনেক ভালো লাগে নরম ঘাসের উপরে আমরা বসে আছি আশেপাশে মানুষজন বসে আছে তারাও আড্ডায় মসগুল কেউ কেউ চা বিক্রি করছে তো কেউ কেউ চানাবুট।অনেক ভালোলাগছে মন খুলে নিশ্বাস নিয়ে আশে পাশে তাকাচ্ছি হঠাৎ

ফায়াজ ভাই আমার কানের কাছে এসে বললেন,
~কী দেখছিস এভাবে?
ফায়াজ ভাইয়ের কন্ঠ শুনে আমার সারা শরীরে এক অজানা শিহরণ বয়ে গেলো।আমি শুকনো ঢোক গিলে বললাম,
~আশেপাশের পরিবেশ দেখছি অনেকদিন পর এখানে এসেছি।
ফায়াজ ভাই আমার হাত তার হাতে নিয়ে বললাম,
~তোর জন্যই তো এখানে আসা।
আমি বললাম,
~হাত ছাড়েন আশেপাশের মানুষ দেখছে।
ফায়াজ ভাই আমার হাত শক্ত করে ধরে আমার দিকে তাকিয়েই বললেন,
~দেখুক দেখলে কী হবে?
আমি কিছু না বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম ফায়াজ ভাই বললেন,
~এখানের পরিবেশটা অনেক সুন্দর একদম তোর মতো নাহ তুই এর থেকেও বেশি সুন্দরী কারণ তুই যে আমার মনের নারী।
আমি ফায়াজ ভাইয়ের কথা শুনে আমার কাজল কালো চোখ নিয়ে তার দিকে তাকালাম সে আমার দিকে একনজরে তাকিয়ে আছে। ফায়াজ ভাই বললেন,
~তোর সিদ্ধান্ত যা হবে আমি তাই মেনে নিবো এটা তুই ভাববিনা আমি চেষ্টা করে যাবো তোকে আমার করার জন্য আর শোন আমি এতো সহজে হার মানবো না।
ফায়াজ ভাইয়ের কথা শুনে আমি কী বলবো তা ভেবে পাচ্ছি না তার মনের ভাব আমার জন্য যে অনেক গভীর তা আমি বুঝতে পারছি।আমার মনেও তার জন্য একটু একটু মনোভাব আছে কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।একটু সময়ের প্রয়োজন কারণ আমি তারাহুরা করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাই না।
ফায়াজ ভাইয়ের পার্কে অনেকক্ষন ঘুরা ফেরা করে আইসক্রিম আর ফুচকা খেয়ে বাসায় রওনা দিলাম আমাদের মাঝে অনেক কথাই হলো প্রিয়া ভাবিরা বাসায় চলে এসেছে তাই আমরা বাসার দিকে রওনা হলাম।বাসায় পৌছে আমি ভিতরে চলে গেলাম ফায়াজ ভাই বাইক রাখতে গেলেন

খালামণি দরজা খুলে আমাকে দেখে বললেন,
~ফায়াজ কোথায়?
খালামণিকে দেখে চিন্তিত লাগছে কিন্তু কেন?আমি বললাম,
~বাইক রাখতে গিয়েছে।
খালামণি বললেন,
~ভিতরে আয়।
আমি ভিতরে ঢুকে আরেক দফা ধাক্কা খেলাম এখন বুঝেছি কেন খালামণি চিন্তিত কারণ তাসিফ আমার সামনে বসে আছে।আমাকে দেখে প্রিয়া ভাবি বললেন,
~আরে ফিহা যে এখানে আসো।
আমি প্রিয়া ভাবির পাশে গিয়ে বসে পরলাম তাসিফ আমাকক দেখে বললেন,
~কেমন আছো ফিহা?
আমি কিছু বলতে যাবো আমার নজর দরজার দিকে পরলো আর তাতেই আমার কলিজার পানি শুকিয়ে গেলো

চলবে

(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন।ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)

আগের পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/385585579829887/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here