গল্পের_নাম_তুমি_আসবে_বলে পর্বঃ৪

গল্পের_নাম_তুমি_আসবে_বলে পর্বঃ৪
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza

আমি চোখ পিট পিট করে খুলে দেখি আমার সামনে এখন কেউ নেই কারণ আমার হাত দুটো এখন স্বাভাবিক আছে আমি চোখের পানি হাত দিয়ে মুছে তাড়াতাড়ি সেই রুম থেকে বের হয়ে আসলাম।দ্রুত পায়ে হেঁটে খালামণির রুমে চলে আসি চুপটি করে খালামণির পাশে আমি শুয়ে পরি।কিছুক্ষন আগের ঘটনাটা এখন পর্যন্ত আমার মাথায় ঘুরছে কাকে বলবো এই ঘটনা আর কেই বা আমার সাথে এমন করতে পারে।নাহ আর ভাবতে পারছিনা মাথা ঘুরছে আমার অনেক ঘুৃম প্রয়োজন এসব ভাবা বন্ধ করতে হবে।
আমি চোখ বন্ধ করে শুয়ে রইলাম এই আশায় যে ঘুম আমায় ধরা দিবে। একপর্যায় ঘুম আমায় ধরা দিলো আমি ঘুমের রাজ্যে চলে গেলাম।

সকালে খালামণির ডাকে আমার ঘুম ভাঙ্গে আমি চোখ পিটপিট করে খুলে দেখি খালামণি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।কাল রাতে কান্নার কারণে আমার মাথাটা ভার হয়ে আছে আমাকে চোখ খুলতে দেখে খালামণি বললেন,
~ফিহা মা,কী হয়েছে তোর চোখ এমন ফুলে আছে কেন?
আমি উঠে বসে আমতাআমতা করে বললাম,
~ঘুমটা ঠিক মতো হয়নি তো তাই এমন লাগছে।
খালামণি রাগ দেখিয়ে বললেন,
~আজ থেকে রাত জাগা বন্ধ ঘুম তো শরীরের জন্য জরুরি।
আমি কিছু না বলে মাথা হেলিয়ে সহমত পোষণ করলাম।খালামণি বললেন,
~ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে আয়।নাস্তা তৈরি করেছি আজ তো তোর মায়েরা চলে আসবে আর ফায়াজের ফুপিরা।
আমি বিছানা থেকে উঠতে গিয়েও থম মেরে বসে পরলাম ফায়াজ ভাইয়ের ফুপিরা আসবে এর মানে রাহেলা ফুপিও আসবে এই মহিলা এইবার আমার বিয়ে দিয়েই ছাড়বে যে হারে ছেলেদের লিস্ট নিয়ে ঘুরে আবীর ভাইয়ের পিছে পিছে থাকতে হবে নাহলে এইবার নিশ্চিত বিয়ে দিয়েই দিবে।

এসব ভাবনায় আবার মনে পরে গেলো কাল রাতের ঘটনা।নাহ আর মনে করবো না যে পর্যন্ত মা না আসবে আমি একথা মনে করবো না একবার মা চলে আসুক তারপর মাকেই বলবো সব।মাই আমাকে বুঝবে
এসব ভেবেই আমি ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে আসি।নিচে আসতেই দেখি ফায়াজ ভাই,রুপা আপু,ফাহাদ ভাই,সায়ন ভাই,সায়মা সবাই একসাথে বসে আছে হয়তো নাস্তা করবে।রাসেল ভাউ আমাকে দেখে বললেন,
~ফিহা এসে পরেছো তোমার জন্যই অপেক্ষা করছে সবাই।
আমি মুখে হাসি ফুটিয়ে সায়মার সাথে বসে পরলাম সায়মা আমাকে দেখে বললো,
~কোনো সমস্যা আপু?
আমি বললাম,
~না।
ফায়াজ ভাইয়ের দিকে নজর পরতেই দেখি সে আমার দিকে ভ্রুকুচকে তাকিয়ে আছে।তার তাকানো দেখে আমি তার থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম সবাই নাস্তা করছে হঠাৎ আমার ফোনটা বেজে উঠলে আমি ফোনে দিকে তাকিয়ে দেখি মা ফোন করেছে আমি সাথে রিসিভ করতেই মা বলে উঠলো,
~ফিহা আমরা একটু পর চলে আসছি।আর তুই কালকে রাত কেন জেগেছিস? তোর খালামণি বললো
আমি বললাম,
~উফফ মা ফাহাদ ভাইয়ের বিয়ে এখন তো ছাড় দেও।
মা বললো,
~ঠিক আছে ঠিক আছে।ফোন রাখছি
মায়ের ফোন রেখে নাস্তা খাওয়ায় মনোযোহ দিলাম।সবাই নাস্তা করছে আর গল্পগুজব করছে।ফায়াজ ভাই আজ রুপা আপুর সাথে বেশ হেসে খেলে কথা বলছে যাক দুই ভাই-বোনের মিল তো হলো।সবার নাস্তা শেষ হলে আমি আর রুপা আপু মিলে টেবিল গুছিয়ে যে যার রুমে চলে আসতে নিবো তখনই ফায়াজ ভাই এসে আমাকে বললেন,

~ফিহা আমার রুমে চা নিয়ে আয় তো।
রুপা আপু তা শুনে বললো,
~আমি নিয়ে আসি
ফায়াজ ভাই বললেন,
~যাকে বলেছি সে করবে।
বলেই সে চলে গেলো রুপা আপু একবার আমার দিকে তাকিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো হয়তো রাগ করেছে। আমি চা নিয়ে ফায়াজ ভাইয়ের রুমের দিকে চললাম
তার রুমের সামনে এসে দরজায় টোকা দিতেই ভিতর থেকে বলে উঠলো,
~ভিতরে আয়।
আমি দরজা ঠেলে ভিতরে ডুকতেই দেখি ফায়াজ ভাই ল্যাপটপে কাজ করছে। আমি তার পাশে চা রেখে চলে আসতে নিবো তখনই সে বললেন
~তোর কী কিছু হয়েছে?
আমি বললাম,
~কী হবে?
ফায়াজ ভাই বললেন,
~এতো অফ কেন লাগছে তোকে?
আমি বললাম,
~অন কখন ছিলাম।
ফায়াজ ভাই ল্যাপটপ রেখে আমার বরাবর দাড়িয়ে বললেন,
~ত্যাড়া কথা আমায় শুট করে তোকে না।কি হয়েছে বল?
আমি বললাম,
~কিছু না কালকে একটু দেরিতে ঘুমিয়েছি তাই এমন লাগছে।
ফায়াজ ভাই আমার পাশ ঘেসে বিছানায় শুয়ে বললেন,
~আমার চুলগুলো একটু টেনে দেতো?
আমি মনে মনে বললাম শখ কতো আমার যদি সাধ্য থাকতো আপনার চুল কেটে দিতাম নিজের মনের কথা মনেই রেখে আমি ফায়াজ ভাইয়ের মাথার কাছে বসে তার চুলগুলো টেনে দিতে লাগলাম।ফায়াজ ভাই চোখ বন্ধ করে আছেন তার নিশ্বাসের শব্দ আমার কানে আসছে।এই মানুষটি এতো জোড়ে নিশ্বাস নিচ্ছেন কেন?আমি তার চুলগুলো টেনে দিচ্ছি হঠাৎ ফায়াজ ভাই তার চোখ খুলে আমার হাত খপ করে ধরে বললেন,

~আর চুল টেনে দিতে হবে না তুই মায়ের কাছে যা।
বলেই শোয়া থেকে বসে পরলেন আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম আর একমূর্হুত দেরি না করে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসলাম।সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে দেখি মা-বাবা আর ভাই দাড়িয়ে আছে তাদের দেখে আমি বললাম,
~তোমরা এসেছো?
মা বললো,
~আর বলিস না এতো জ্যাম রাস্তায় তাই আসতে দেরি হলো।
ততক্ষনে সবাই এসে হাজির কবিতা চাচী মাকে দেখে জড়িয়ে ধরলেন তারা সবার সাথে কুশলাদি করলেন।
মাকে কাল রাতের কথা বলার সুযোগই পাচ্ছি না সবাই মায়ের সাথে কথা বলছেন হঠাৎ রুপা আপু এসে আমায় বললেন,
~ফিহা তুমি কী প্রিয়া ভাবির বাসায় যাবে না?
আমি বললাম,
~প্রিয়া ভাবির বাসায় কেন যাবো?
রুপা আপু বললো,
~তার বিয়ের ঢালা নিয়ে যাবো কাল ভাই আর ভাবির গায়ে হলুদ একসাথে হবে ভুলে গেলে
আমি বললাম,
~হ্যাঁ মনে পরেছে।কখন যাবে?
রুপা আপু বললো,
~এইতো একটু পর তুমি রেডি হয়ে নেও কেমন আমরা সব কাজিনরা যাবো শুধু ফাহাদ ভাই বাদে।
আমি বললাম,
~বেচারা ফাহাদ ভাই নিজের বিয়ে বলে আজ যেতে পারছে না।
আমার কথা শুনে রুপা আপু হেসে বললো,
~একদম ঠিক বলেছো।তুমি আমার রুমে চলে এসো সব মেয়েরা একসাথে রেডি হবো।
আমি বললাম,
~আচ্ছা।
কথা শেষ করে আমি রুমে গিয়ে দেখি মা আর খালামণি কথা বলছেন আমি মাকে বললাম,
~মা আমার সাদা কালারের ড্রেসটা এনেছো?
মা বললো,
~ব্যাগে আছে।
আমি দেরি না করে ড্রেসটা বের করে যেতে নিবো তখন মনে হলো মাকে সব বলে দেই কিন্তু খালামণি আছে তাই সাহস হলো না।আমি ড্রেস নিয়ে রুপা আপুর কাছে চলে গেলাম সেখানে সবাই রেডি হচ্ছে

আমরা রেডি হয়ে ফায়াজ ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছি সবাই চলে এসেছে শুধু রাজা সাহেবই আসেনি।
খালামণি বার বার তাকে ডাকছে কিন্তু তার হেলদোল নেই খালামণি রেগে গিয়ে বললেন,
~এই তোরা চলে যা ওই গাধার যেতে হবে না।
রুপা আপু বললো,
~চাচী রাগ করো না চলে আসবে ভাইয়া।
তখনই পিছন থেকে ফায়াজ ভাই বলে উঠলো,
~মা এতো কীসের তাড়া আমরা তো আর বিয়ে করাতে যাচ্ছি না।
বলতে বলতে সে আমাদের সামনে চলে আসলো একপলক আমার দিকে তাকিয়ে খালামণিকে বললেন,
~এখন আমি এসে পরেছি আর কোনো লেইট হবে না।
খালামণি বললেন,
~তোর ফুপিরা রাতে চলে আসবে চেষ্টা করিস তাড়াতাড়ি চলে আসার।
ফায়াজ ভাই বললেন,
~ঠিক আছে।
সবাই যে যার মতো সিএনজিতে বসে পরেছে এখন শুধু আমি ফায়াজ ভাই আর রুপা আপু বাকি।আমি আবীর ভাইয়ের সাথে যেতে চেয়েছিলাম ফায়াজ ভাই আমাকে তার সাথে রেখে দিয়েছেন।

অতপর আমরাও সিএনজিতে উঠে বসলাম রুপা আপু আমাদের মাঝে বসে পরলেন তাই ফায়াজ ভাই নেমে সামনে বসে পরলেন।রুপা আপু মুখটা কালো করে বিড়বিড় করে বললো,
~আমার সাথে বসলে কী হতো?
আমি তার কথা শুনে মিটমিট করে হেসে মুখ অন্যদিকে করে রাখলাম।প্রিয়া ভাবিদের বাসায় পৌছে দেখতে পেলাম পুরো বাড়ি সাজানো কেনই বা না হবে এ বাড়ির একমাত্র মেয়ের বিয়ে ভাবির একটা বড় ভাই আছে। আমরা বাড়ির ভিতর প্রবেশ করতেই ভাবির বাবা-মা আমাদের সাথে কুশলাদি করে বসতে বললেন।আমরা সোফার ঘরে বসে পরলাম ভাবিদের বাসায়ও অনেক মেহমান হঠাৎ মায়ের বয়সী একটা মহিলা এসে বললেন,
~কেমন আছো তোমরা?
আমরা কেউই তাকে চিন্তে পারলান তাই ফায়াজ ভাই বললেন,
~আন্টি আপনাকে তো চিনলাম না
সেই মহিলাটি হেসে বললেন,
~আমি তোমার ভাবির মামী।
সবাই তার সাথে পরিচিত হয়ে বেশ মজা পেলো অনেক সৌখিন একজন মানুষ একটুপর প্রিয়া ভাবি আমাদের মাঝে উপস্থিত হলেন সবাই তাকে পেয়ে একদম ঘিরে ধরলেন।আমি ভাবির সাথে দুমিনিট কথা বলে একপাশে বসে সবার কথা শুনছি হঠাৎ সায়ন ভাই এসে বললেন,
~ফিহা আমাকে এখানে ভাই বলে ডাকতো
আমি তার দিকে ভ্রুকুচকে বললাম,
~কেন?
সায়ন ভাই বললেন,
~এখন থেকে আমাকে যখনই ভাই বলে ডাকবি উচ্চস্বরে ডাকবি যাতে সবার কানে যায় বিশেষ করে ভাবির সাথে যে মেয়েটা দাড়িয়ে আছে তার কানে যেন বেশি করে যায়।
আমি ভালোভাবে তাকিয়ে দেখলাম ভাবির সাথে একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে সে ভাবির বান্ধবী সম্ভবত আমি বললাম,
~কী হয়েছে ভাই?
সায়ন ভাই বললো,
~আমাকে পিচ্চি বেয়াই কেন বলে?
সায়ন ভাইয়ের কথায় আমি হেসে উঠলাম আর বললাম,
~মজা করে ভাই।
সায়ন ভাই বললেন,
~বোইন রে চরম গালি আইতাসে এই মাইয়্যার ল্যাইগা।
আমি আর কোনো কথা বললাম না শুধু বিনা সাউন্ডে হেসে গেলাম।ভাবির বাসা থেকে বের হতে আমাদের রাত ৭.৩০বেজে গেলো ফায়াজ ভাই অনেক তাড়া দিয়ে আমাদের বাসায় যাওয়ার ব্যবস্থা করলেন।এবার রুপা আপুকে সে সায়ন ভাইয়ের সাথে পাঠিয়ে দিলেন আমি আর ফায়াজ ভাই একই সিএনজিতে উঠে বসলাম। আমি এক কিনারে বসে পরলাম ফায়াজ ভাই তা দেখে বললেন,
~আমি বাঘ না ভাল্লুক যে দূরে গিয়ে বসেছিস।
তার কথা শুনে আমি ঠিক করে বসে পরলাম সে আমার থেকে একটু দূরে সরে বসে পরলেন।গাড়ি চলছে আপন গতিতে আমি বাহিরের দিকে তাকিয়ে এ রাস্তার ব্যস্ততা দেখছি লোকজন নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হঠাৎ ফায়াজ ভাই বললেন,
~ফাহাদ ভাইয়ের বিয়ের দিন আমার দেওয়া শাড়িটা পরিস
তার কথা শুনে বাহির থেকে মুখ ফিরিয়ে বললাম,
~কালকেও শাড়ি তার পরেরদিনও শাড়ি পরবো।
ফায়াজ ভাই গম্ভীর কন্ঠে বললেন,
~তোর ইচ্ছে হলে পরিস।
আমাদের মাঝে আর কোনো কথা হলো না বাসায় পৌছে আমি ভিতরে যেতেই দেখি ফায়াজ ভাইয়ের ফুপিরা এসে পরেছে। ফায়াজ ভাইয়ের ২ ফুপি তারা জমজ একজনের নাম রাহেলা আরেকজনের নাম মালিহা সবচেয়ে ডেঞ্জারাস রাহেলা ফুপি সব মেয়েদের সে বিয়েই দিয়ে দেয়।সবাই তাদের সাথে কথা বলতে ব্যস্ত।আমি রাহেলা ফুপির থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য পা টিপে টিপে রুমে যেতে নিবো তখনই

রাহেলা ফুপি বললেন,
~আরে আরে ফিহা মামণি যে
আমি মুখে হাসি ফুটিয়ে বললাম,
~কেমন আছেন ফুপি?
ফুপি বললেন,
~ভালো তা তোমার বিয়ের বয়স এখন তো হয়েই গেলো
আবীরের মা বলছি কি আমার কাছে একটা ভালো ছেলে আছে দেখতে পারো তোমরা।
মা বললেন,
~সে হবে নে আপা আগে ফাহাদের বিয়েটা হোক তারপর
আবীর ভাই বললেন,
~ফিহা তুই উপরে চলে আমার সাথে।
আমি পা টিপে টিপে আবীর ভাইয়ের পিছে পিছে যেতে লাগলাম রুমের কাছে পৌছে আবীর ভাই বললেন,
~ওই মহিলার কথায় একদম কান দিবি না এই বিয়ে শাদি তোর এখন হবে না পড়াশোনায় মনোযোগ দে।
বলেই আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো আবীর ভাই চলে যেতে আমি রুমের ভিতর ডুকে ফ্রেশ হওয়ার জন্য ব্যাগ থেকে কাপড় বের করতে যাবো তখনই দেখলাম একটা কাগজ আমি কাগজটা হাতে নিয়ে যা পড়লাম এতে আমার শরীর কেঁপে উঠলো চিঠিতে লেখা,
~তোমায় আজ অনেক সুন্দর লাগছে একদম আমার মনে মতো তোমার চোখ দুটি আরো বেশি সুন্দর লাগছে রুপকথার কন্যা লাগছে তোমায়।
শেষ কথা এতটুকু ভালোবাসি তোমায়❤️❤️

চলবে।।।

(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন।ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)

আগের পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/380719300316515/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here