ছায়াকরী পর্বঃ৯

0
436

# ছায়াকরী
# পর্বঃ ৯
লেখনীতেঃতাজরিয়ান খান তানভি

মহলে ফিরতেই তোভিয়ার প্রশ্নের তোপের মুখে পড়ে জেহেন। তোভিয়ার করা অজস্র প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয়নি সে। তার ভাবভঙ্গিতে রাগের ঝড় তুলে তোভিয়া।

“কোথায় গিয়েছিলেন কাল রাতে আপনি? জবাব দিন জেহেন।”

জানালার ধারে দাঁড়িয়ে আছে জেহেন। তার সূদুর দৃষ্টি মহাচ্ছায়া জঙ্গলে। গহন জঙ্গলে তার রোজকার যাতায়াত। রাতের আঁধারে চলে শিকার। নিজের উদরপূর্তি করেই প্রভাতের রোশনাই গায়ে মেখে মহলে ফেরে সে। জেহেন অনিমেষ চাহনি নিবদ্ধ করে রেখেছে সেই জঙ্গলের দিকে। তোভিয়া তেতে উঠে বলল—

“জবাব দিন জেহেন। কোথায় ছিলেন আপনি সারারাত?”

জেহেন স্বাভাবিক স্বরে জবাব দিলো—

“বাধ্য নই আমি।”

“আপনি বাধ্য। বাধ্য আপনি। আমি আপনার অর্ধাঙ্গিণী হতে চলেছি। আপনার ওপর অধিকার আছে আমার।”

জেহেন ভ্রূ কুঁচকালো। তোভিয়ার দিকে সরস দৃষ্টিতে তাকাল। কণ্ঠে নমনীয়তা এনে বলল—

“ভুল করছ তুমি। ”

তোভিয়া কয়েক কদম সামনে এগিয়ে আসে। তার জ্বলন্ত চোখ দুটোতে জলের ধারা নামছে। জেহেন ভাবান্তরহীন। দুর্বোধ্য, কঠোর, নিষ্করুণ চাহনি। তোভিয়া ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলল—

“হ্যাঁ, ভুল। ভুল করেছি আমি। আপনার মতো একজন মানুষকে ভালোবেসে ভুল করেছি। তার শাস্তি দিচ্ছেন আমাকে।”

তোভিয়াকে বিস্ময় বুঁদ করে তার দুই বাজু চেপে ধরে জেহেন। বজ্রকঠোর কণ্ঠে উজ্জ্বল সবুজ মনির চোখ দুটো পূর্ণ প্রশ্বস্ত করে বলল—-

“মানুষ নই আমি। এক মাংসাশী পশু আমি। আমাকে ভালোবাসা যায় না। যায় না তোভিয়া।”

দুই হাতের ঝাড়া দিয়ে তোভিয়াকে সরিয়ে দেয় জেহেন। তোভিয়া ভয়ে সিদিয়ে যায়। পুরো মুখ লাল হয়ে উঠেছে জেহেনের। তার চোখ দুটো যেন এখনই সব নিষ্পেষিত করে ফেলবে!
তোভিয়া টিমটিমে গলায় বলল—

“এসব কী বলছেন আপনি? ”

জেহেনকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তার বুকে হামলে পড়ে তোভিয়া। দুই হাতে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে। যেন একপলকে এই কঠিন মানুষটার মাংসের প্রাচীর ভেদ করে পাঁজরে ঢুকে যাবে। সংগোপনে বসত শুরু করবে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে। প্রেমহীন এক হৃদয়ে আজীবন রয়ে যাবে সে প্রণয়ের চির অম্লান প্রতীক হয়ে। জেহেনের নাকের ডগা সংকুচিত-প্রসারিত হচ্ছে। তার এই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ তাকে কারো মায়ায় জড়ানোর আদেশ দেয় না। এই ভয়ংকর সত্তা যেকোনো সময় এই পদ্মফুলের অস্তিত্ব ছিনিয়ে নেবে। এই হাসির ফোয়ারার ধারাতে বেড় লাগিয়ে দেবে। তা চায় না জেহেন। চায় না। তোভিয়ার কান্নার জল মিশে যাচ্ছে জেহেনের শার্টের সুতোয় সুতোয়। ভিজে যাচ্ছে বক্ষ:স্থল। কিন্তু হৃৎপিন্ডের সম্মতি মেলে না। সে যে বড়ো নিষ্ঠুর!
,
,
,
ক্ষুণ্ণ মনে আজ জেহেনের জন্য খাবার বানিয়েছে তোভিয়া। অনিতা আজ একটা লম্বা হাতাওয়ালা, গলাবন্ধ জামা পরেছে। যাতে করে তার ক্ষত দাগগুলো কারো নজরে না আসে। নুয়ায়ামের কাধে ছায়াকরী। তার ব্যস্ত দৃষ্টি তোভিয়ার দিকে। মেয়েটা নিশ্চয় এত সময় কেঁদেছে! নাকের ডগা, চোখের কোটর লাল হয়ে আছে, মুখটাও ফ্যাকাশে। খাবারে মনোযোগ নেই তেহজীবের। তার মন, মস্তিষ্ক অমোঘ ঘটনা কিছুতেই মানতে পারছে না। তোভিয়াকে কোনোভাবেই জেহেনের পাশে সে দেখতে পারবে না। কিন্তু সে যা করতে চাইছে তাও ঠিক নয়। এতে তাকেই পস্তাতে হবে। কিন্তু!

নুয়ায়ামের কাধে ওষ্ঠাধরের খোঁচা মারে ছায়াকরী। নুয়ায়াম বিভ্রান্ত হয়। সে খাওয়া থেকে মনোযোগ তুলে ছায়াকরীর দিকে তাকায়। ছায়াকরীর নীলাক্ষীতে চোখ রেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। তা অবলোকন করে জেহেন। নুয়ায়াম ঠোঁটের কোণে হেসে তোভিয়াকে বলল—

“ছায়াকরীর খিদে পেয়েছে বোধহয়।”

তোভিয়া ম্লান সুরে অনিতাকে আদেশ দিলো ছায়াকরীর জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে। জেহেনের খাওয়া শেষ। সে উঠে চলে যায়। তোভিয়া তার যাওয়ার পানে একদৃষ্টে চেয়ে থাকে। নিভৃতে যাতনা বাড়ে হৃদকুঠিরের। তেহজীব খায়নি। তোভিয়াকে বলল—

“খেতে বসো।”

তোভিয়া ঋণাত্মক জবাব দেয়।

“খিদে নেই আমার।”

অনিতাকে উদ্দেশ্যে করে পূনরায় বলল—

“ভাইয়া আর তেহজীবের খাওয়া শেষ হলে বেগমরাণি আর কাকি আম্মির খাবার তাদের কক্ষে পাঠিয়ে দেবে।”

“জি, ছোটো মালকিন।”

তেহজীব পলকবিহীন চোখে চেয়ে রইল। চোখের পানিকে ছিটকে ফেলল তোভিয়া। তা দেখতে পেল তেহজীব।
,
,
,
নিষ্প্রভ বিকেল! ধূসর অন্তরীক্ষের পূর্বদেশে জেগে ওঠা বিভাকর পশ্চিমাদেশে ঝুলে যাচ্ছে। শেষ বিকেলের কমলা আভা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। দিঘীর জলে পা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তোভিয়া। তার হৃদয়জ সমস্ত ক্লেশ, সংকোচন, শঙ্কা দিঘীর শীতল জলে জলাঞ্জলি দিচ্ছে। তার চোখের কোটর থেকে টুপটুপ করে ঝরে পড়া নোনতা জল মিশে যাচ্ছে দিঘীর শান্ত জলে। চকিতে পায়ে সুড়সুড়ি লাগল তোভিয়ার। সে সংবেদনশীল দৃষ্টিতে তাকাল। কিছু একটা দেখতে পাচ্ছে দিঘীর স্বচ্ছ, টলটলেজলে। তোভিয়া নিষ্পলক দৃষ্টিতে চেয়ে রইল। ভয়ে ভয়ে সে পা উঠিয়ে পিছিয়ে গেলে এক সিঁড়ি। তারপর হঠাৎ করে জলে ভেসে উঠল এক কিশোরীর মুখ। ভয়ে আর্তনাদ করে পেছন ফিরে তোভিয়া। থমকে যায় সে। কারো বুকে গিয়ে ঠেকেছে তার নাক। জেহেন শান্ত স্বরে বলল—

“কী হয়েছে?”

তোভিয়া ভয়ে কম্পিত স্বরে বলল—-

“ওখানে, ওখানে, ওখানে…।”

“ওখানে কী?”

“ওখান কেউ আছে।”

জেহেন মুখ বাড়িয়ে তাকাল। কিছু দেখতে পেল না সে।

“কিছু নেই তো।”

“দেখুন আছে।”

“নেই তোভিয়া। ভয় পেয়েছ তুমি। সন্ধ্যা নামছে। মহলে যাও।”

তোভিয়া ভীতসন্ত্রস্ত চিত্তে জেহেনের বুক থেকে মাথা সরিয়ে দিঘীর দিকে তাকাল। ডুবো ডুবো বিভাকরের রশ্মি ছিটকে পড়ছে জলের বুকে। তোভিয়া সামনে তাকাল। জেহেনের দিকে।

“আপনি এখানে এসেছেন কেন?”

“একা কেন এসেছ এখানে?”

“তাতে আপনার চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। যদি আমার জলসমাধি হয় তবুও…।”

তোভিয়াকে কঠিন হাতে ধরল জেহেন। ক্ষীপ্ত কণ্ঠে বলল—

“একদম চুপ। এই ধরনের কথা আর কখনো বলবে না।”

তোভিয়ার হাত ধরে জেহেন। শিথিল কণ্ঠে বলল—

“মহলে চলো।”
,
,
,
অগাধ নভাক! চারদিকের কোনোকিছুই দৃষ্টিগোচর নয়। চাঁদের আলোয় তা আবছা দৃশ্যমান। তবে ঘন আঁধারেও চলতে সমস্যা হয় না জেহেনের। তার চোখের দৃষ্টি আঁধার বিদীর্ণ করা। তাই তো রাতের নিস্তব্ধতাকে জেহেন আপন করেছে নিজের দ্বিতীয় সত্তাকে লালন করতে।

মহাচ্ছায়া জঙ্গলে মানুষের পদচারণা নেই। হিংস্র পশুদের অভয়ারণ্য। পদ্মনগরের শেষ প্রান্তে জাগ্রত এই জঙ্গলের ভেতরে ঢুকলে বাইরে বেরিয়ে আসার পথ পাওয়া দুর্লভ। দুর্গম, ভয়ংকর, শ্বাপদসঙ্কুল এই জঙ্গলের এক পাশ দেখা যায় পদ্মমহল থেকে। আর বিস্তৃত এই জঙ্গলের আরেকপাশে অনিকেত প্রান্তর। অত্যন্ত প্রয়োজনীয় না হলে সে পথ মাড়ায় না কোনো মানুষ। আর অন্যপাশ এখনো অজানা।
জেহেনের কালো গাড়ি সেই খোলা প্রান্তর অতিক্রম করে জঙ্গলের কাছে এসে পৌঁছায়। গাড়ি থেকে নেমে দাড়ায় জেহেন। মৃদু হাসে। তারপর বালির নরম বুকে পা রেখে চলতে থাকে জঙ্গলের উদ্দেশ্যে।

অনেক সময় ধরে কোনো কিছু অনুভূত না হতেই গাড়ির ডিকি খুলে বাইরে বেরিয়ে আসে তোভিয়া। রাতের আঁধার তার চোখের তারায় হানা দেয়। সে ডিকি থেকে নেমে দাড়ায়। চাঁদের কুণ্ঠিত বিভাতে সে তার চোখের সামনে দেখতে পায় মহাচ্ছায়া জঙ্গলকে। ভেতরের শ্বাস আটকে যায় তোভিয়ার। জেহেন এখানে কেন এসেছে? এই জঙ্গলের অনেক কাহিনি শুনেছে সে। ভয়ে গা কাটা দিয়ে উঠে তোভিয়ার। তার হৃদস্পন্দন জমে বরফ হয়ে যাচ্ছে। জঙ্গলের গাছের বহর দেখতে পাচ্ছে সে। কী করবে সে?
তোভিয়া পেছনে তাকায়। বিস্তীর্ণ এলাকার জুড়ে কোনো ঘর-বাড়ি নেই। জেহেন কোথায়? কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল সে। তারপর একটা লম্বা শ্বাস টেনে হাঁটতে শুরু করল। তার বিশ্বাস, জেহেন যেতে পারলে সে কেন পারবে না?

তোভিয়া বুদ্ধি করে টর্চলাইট এনে ছিল। সেইটা একবার জ্বালিয়ে কিছু সময় হাঁটে, আবার বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকে। গা ছমছম করছে তার। হিংস্র পশুদের গরগর শব্দ কানে আসতেই শিউরে উঠল তোভিয়া। আর হাঁটতে পারবে না সে। আবছা আঁধারে সে দুটো চোখ দেখতে পেল। তড়িৎ বেগে পিছিয়ে গিয়ে আবার তাকাল। সামনে তাকাতেই থমকে গেল তোভিয়া। তার চোখের পল্লব সিক্ত ভয়ার্ত জলধারায়। হিংস্র হায়েনাটির হিংসাত্মক চোখের চাহনিতে আত্মারাম কেঁপে উঠল তার। শ্বাসের গড়পড়তায় যেন বজ্র হানা দিচ্ছে! কানের পাশ দিয়ে স্মিত ধারায় নামছে উষ্ণ প্রস্রবণ। চোখের মনি স্থবির, আড়ষ্ট, শান্ত। টর্চলাইট পড়ে গেল হাত থেকে। তা জ্বলছে।

হায়েনাটি ধীরে ধীরে ছোটো ছোটো পায়ে এগিয়ে আসছে। ঘন জঙ্গলের ছায়া ঢাকা বিস্তৃত ভূমিতে অগণিত গাছের এলোমেলো বিন্যাস। শিয়র উঁচু করে সদর্পে দাঁড়িয়ে আছে তারা। একটা মোটা গাছের সাথে পিঠ ঠেকে যায় তোভিয়ার। কেঁপে ওঠল ভয়ংকর, অভাবিত ভয়ে। ব্যাকবোনের সন্ধিস্থল ডেবে যাচ্ছে বারংবার। দৈবাৎ চোখের কোটর ছেড়ে দিলো জল পুকুরের নোনা স্রোত। বিদঘুটে, ভয়ংকর হায়েনাটি তখন তোভিয়ার থেকে কয়েক কদম দূরে বদ্ধদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সে চোখের মনি অতি সন্তর্পণে ঘুরিয়ে তার আশপাশ অবলোকন করছে।

বিদ্যুৎ বেগে হায়েনাটি তার ওপর হামলে পড়তে এক গগন বিদীর্ণ করা আত্মচিৎকার দিয়ে চোখের পাল্লা বন্ধ করে নিল তোভিয়া। বুকের পাটাতনে যেন কেউ পাথর মারছে। সেই যন্ত্রণায় নীরব বিধ্বস্ত সে। ধীরগতিতে চোখের পাল্লা খুলল। গা গুলিয়ে উঠল তার। ভেতর থেকে যেন সব বেরিয়ে আসবে! হায়েনাটির গলায় কামড় বসিয়ে রেখেছে এক কালো চিতা। হায়েনাটির পা যখন চিতাটির বুকে ধাক্কা দিচ্ছে, তখন চিতার ভয়াল পায়ের চাপ তার বুকের খাঁচায় বিদিয়ে দেয়। তবুও সর্ব শক্তি দিয়ে নিজেকে ছাড়াতে সক্ষম হয় হায়েনাটি। কিন্তু হার মানতে নারাজ সে। আবার দম্ভের সাথে এগিয়ে আসতেই কালো চিতার ভয়াল থাবায় আঁছড়ে পড়ে মৃত্তিকার বুকে। পায়ের চাপে ভূলুণ্ঠিত করে গলায় কামড় বসিয়ে মাংস ছিনিয়ে আনে চিতাটি। লাগাতার অবিশ্রান্ত আঘাতে কিছুক্ষণেই শান্ত হয় হায়েনাটি।

তোভিয়া প্রাণহীন চোখে চেয়ে আছে। যেন কোনো চুম্বক তাকে গাছের সাথে সেটে রেখেছে। কালো চিতাটির তার রাগের পূর্ণ প্রকাশ করল। ছিন্নভিন্ন করল হায়য়েনাটির নিথর দেহ। আর দেখতে পারল না সে। অষ্পষ্ট যা দেখতে পেল তাতেই তার বুকের কম্পন থেমে গেছে। সে অবগুন্ঠিত চোখে স্থির হয়ে রইল। তার মনে হচ্ছে সে মারা যাচ্ছে। এক স্থির, নীরব, যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু!

আচানক কর্ণগোচর হলো গোঙানির শব্দ। তোভিয়া চোখের পল্লব মেলে ধরল অত্যন্ত অরব ভঙ্গিমায়। কালো চিতাটি তার সন্নিকটে দাঁড়িয়ে আছে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে। গাঢ় সবুজ রঙের চোখ দুটো তার খুব পরিচিত। কিন্তু এই অবয়ব!
চিতাটির গালে লেগে আছে শোণিত। রঞ্জিত গালের ফাঁক বেয়ে লালা ঝরছে। জ্বলজ্বল করা সবুজ চোখ দুটোতে আটকে গেল তোভিয়া। সবকিছু অস্পষ্ট তার কাছে। তবে চোখ দুটো পূর্ণ প্রকট। তোভিয়ার শ্বাস স্বাভাবিক হলেও কমেনি ভয়। কালো চিতাটি আরও কাছে ঘেঁষল। হিংস্র পশুটির চোখে কেন হিংস্রতা নেই? তা বুঝতে পারল না তোভিয়া। তবে সে পালাতে চায়। এ গভীর অরণ্যে যাকে সে খুঁজতে এসেছে তাকে নিয়ে পালাতে চায়। কিন্তু সে কোথায়?

কালো চিতাটির আগ্রাসন কমে এলো। চোয়াল স্বাভাবিক হতেই নাকের ফোলা কমে গেল। নাকের পাশে থাকা ক’গাছি লম্বা চুল শান্ত হলো। চোখের জ্বলন্ত ভাব কমে গেল। কিন্তু তোভিয়ার হৃৎকম্পন এবার বেগতিক হারে বাড়ল। যার পিছু পিছু সে এসেছে সেই মানুষটি কোথায়? তাকে খেয়ে ফেলেনি তো এই অাদমখোর প্রাণী? গলা বসে এলো তার। এই জীবনের সমস্ত প্রার্থনায় যে মানুষটিকে সে চেয়েছে তাকে সে হারাতে পারে না।

হঠাৎ করেই চকিত হলো তোভিয়া। তার বদ্ধ ওষ্ঠাধর ফাঁক করে বেরিয়ে এলো অদ্ভুত,অবাঞ্চিত শব্দ। সামনের সেই কালো চিতাটি ধীরে ধীরে তার কাঠামো পরিবর্তন করতে লাগল। মিনিটেই সে রূপান্তরিত হলো এক অতীব সুদর্শন পুরুষে। তোভিয়া ভয়ার্ত চোখে ফ্যাসফ্যাসে স্বরে বলল—

“জেহেন!”

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here