জীবন সাথী💜 পর্ব-১৯

0
926

#জীবন_সাথী💜
লেখিকা-জান্নাতুল ফারিয়া প্রত্যাশা
১৯.
~
কোর্টের ভেতরের পরিবেশটা নীরব।একপাশের কাঠগড়ায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে আরাফ।আর তার পেছন সাধারন মানুষের বসার সিটগুলোতে বসে পি.এ আর অনু তার দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আরাফকে এভাবে কাঠগড়ায় দেখে অনুর ভীষণ খারাপ লাগছে।কিন্তু কিছুই তো করার নেয়;
.
কিচ্ছুক্ষন বাদে বিচারপতি এসে তার আসনে বসলেন।তারপর শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ।বিচারপতি আরাফকে সব সত্যিটা বলতে বলে।আরাফও যা যা করেছে সবটা সবার সামনে বলে।আরাফের বলা শেষে তার পক্ষের উকিল বলে,

”মাই লর্ড;আমি মানছি মি.আরাফ মোহাম্মদ যা করেছেন তা ভুল করেছেন।আইনের চোখে এটা অন্যায়।কিন্তু তিনি এমনটা শুধু মাত্র নিজেকে আর একজন নিরপরাধ মানুষকে বাঁচানোর জন্য করেছেন।এছাড়া তার আর কোনো উদ্দেশ্য নেয়;আশা করছি আপনি বিষয়টা বিবেচনা করে দেখবেন।”

উনার কথায় বিচারপতি বলেন,
”আসল অপরাধী কে?কারা উনাদের মারতে চেয়েছিলো তা কি জানেন?”

”না মাই লর্ড তবে আমার পক্ষের বাদী আশা করি সবটা জানে।উনার মুখেই না হয় শুনি কে সেই ব্যক্তি?”

কথাটা বলে তিনি আরাফের সামনে গিয়ে দাঁড়ান।তারপর গম্ভীর কণ্ঠে তাকে জিজ্ঞেস করেন,
”মি .আরাফ কে আপনাকে আর পারভেজ আহমেদকে আটকে রেখেছিলো?তার নামটা বলুন!”
.
উকিলের প্রশ্নে আরাফ একবার তার পি.এর দিকে তাকায়।পারভেজ সাহেবও আরাফের দিকে উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে সেই মানুষটার নাম শুনার অপেক্ষা করছে।কিন্তু আরাফের গলা আটকে আসছে।সে যে সবার সামনে তার বাবার নামটা নিতে পারছে না।অদ্ভুত কিছু তার কণ্ঠকে অবরুদ্ধ করে ফেলেছে।এই মানুষটাকে সে সবার সামনে অপরাধী বানাতে চাইছে না।আরাফকে চুপ থাকতে দেখে উকিল সাহেব আবারো জিজ্ঞেস করে,

”কি হলো মি. আরাফ!!আপনি কিছু বলছেন না কেন?”

আরাফ এখনো চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।আরাফের এই নীরবতা দেখে পি.এ বুঝতে পেরেছে যে আরাফ সবার সামনে তার বাবার নাম দিতে চাইছে না।এত অপরাধের পরও সে চায় না কেউ তার বাবার দিকে আঙ্গুল তুলুক।
.
আরাফের মতে সেদিনের আগুনে পুড়ে তার বাবা যথেষ্ট শাস্তি পেয়েছে আর তাকে কোনো শাস্তি পেতে দেখতে পারবে না সে।আরাফের নীরব চাহনিই তার বাবার প্রতি তার প্রগাঢ় ভালোবাসার প্রমান দিচ্ছে।
.
আরাফ কিছু বলছে না দেখে এবার বিচারপতি বলে,
”দেখুন মি. আরাফ আপনি সবটা সত্যি না বললে শাস্তি কিন্তু আপনাকে একাই পেতে হবে।তাই প্লিজ আপনি সবটা বলুন।”

আরাফ কিছু বলতে যাবে তার আগেই কেউ পেছন থেকে বলে উঠে,
”আমি সবটা বলছি সম্মানীয় বিচারপতি।”
.
পেছন থেকে কারো গলার আওয়াজে পেছন ফিরে তাকায় সবাই।দরজার সামনে মানুষটিকে দেখে থমকে যায় আরাফ,অনু আর পারভেজ সাহেবের দৃষ্টি।একটা হুইল চেয়ারে বসে আছেন আনোয়ার মোহাম্মদ।পেছন থেকে একজন লোক সেটাকে ঠেলে ভেতরে নিয়ে আসছেন।আনোয়ার সাহেবের পুরো শরীর নীল রঙের বড় একটা কাপড় দিয়ে ঢাকা।যার ফলে তার শরীরের বিন্দু মাত্র অংশও দেখা যাচ্ছে না।শুধু মুখটা বাদে।মুখের বিভিন্ন অংশের চামড়া উঠে আছে।আনোয়ারকে এভাবে দেখে অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে গেছে আরাফ,অনু আর পারভেজ সাহেব।যে লোকটা কালকেও আই.সি.ইউতে ছিল সেই লোকটা আজকে এখানে কি করে এলো সেটাই বুঝতে পারছে না তারা।পুরো পরিবেশটা কেমন থম থেমে হয়ে উঠছে।আরাফ এক দৃষ্টিতে হুয়িল চেয়ারে বসা তার বাবাকে দেখে যাচ্ছে।আনোয়ার সাবেকে হুয়িল চেয়ার সহ অন্য পাশের কাঠগড়াটায় দাঁড় করানো হলো।উনাকে দেখে বিচারপতি বললো,

”কে আপনি?আর কি বলতে চান ?”

আনোয়ার সাহেব ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন,
”আমি আনোয়ার মোহাম্মদ।আরাফের বাবা।আর আপনারা জানতে চেয়েছিলেন না কে এসব কিছু করেছে?কে আরাফ আর পারভেজকে আটকে রেখে তাদের মারতে চেয়েছে?আমি বলছি সবটা।এই সবকিছু করেছি আমি।আমিই ওদের আটকে রেখেছিলামা আর আমিই ওদের মারতে চেয়েছি।”
.
এইটুকু বলে থেমে যান তিনি।পুরো রুম জুড়ে চাঞ্চল্যকর পরিবেশ।চারদিকে মানুষের শোরগোল শুরু হয়ে গেলো।বিচারপতি সবাইকে চুপ করানোর জন্য অর্ডার অর্ডার বললেন।তারপর আবার আনোয়ার সাহেবের দিকে তাকিয়ে বললেন,
”আপনি কি কারণে এসব করেছেন?”
.
আনোয়ার সাহেব এবার প্রথম থেকে সবটা বলতে শুরু করেন।সেই তার প্রথম অবৈধ ব্যবসা;পারভেজ সাহেব বাধা দেয়াই তার সাথে সমস্ত সম্পর্ক শেষ করে দেওয়া।তারপর তিল তিল করে অবৈধ সম্পর্কের পাহাড় গড়া;আর এতো বছর পর আবার তার পারভেজ সাহেবের সাথে দেখা হওয়ার পর পারভেজ সাহেব জেনে যায় যে বাংলাদেশের অন্য সব কালোবাজারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আনোয়ারও অন্যতম।সেদিন পারভেজ আনোয়ারকে বলেছিলো যে, সে আর প্রথম বারের মতো ভুল করবে না এসব অন্যায় কাজ বন্ধ না করলে এবার সে পুলিশকে বলে দিবে কারণ সে চায় না আনোয়ারের এই অন্যায় কাজে যুব সমাজ ধ্বংস হোক।তাই তিনি রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।কিন্তু টিকতে পারেননি।মিথ্যে অপবাদে তিনি তাকে আরাফের লোকদের দিয়ে ধরে আনে।তারপর আনোয়ার সাহেব বলেন এই এক বছর পারভেজ সাহেব আরাফের কাছে ছিল।উনি ভেবেছিলো আরাফ বোধ হয় তার ফাইল আর পেনড্রাইভ না পেলে পারভেজ সাহেবকে মেরে ফেলবে।কিন্তু তা হয়নি বরং আরাফ যখন জানতে পারলো পারভেজ তার পি.এ তখন সে তাকে ছেড়ে দেয়।তাতে করে আনোয়ার পুরো প্লেনটা ভেস্তে যায়।তাই সে আবারো লোক পাঠিয়ে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসে।কিন্তু এবার তাকে কিছু করার আগেই আরাফ সবটা জেনে যায় যে আনোয়ার আরাফকে মিথ্যে বলেছে তার ফাইল আর পেনড্রাইভ পারভেজ সাহেব না তিনি নিজেই সরিয়েছেন।তাই আরাফ তার তাকে এই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে তিনি তার সব কিছু স্বীকার করে।আর আরাফকে তার অবৈধ কাজের কথাও বলে।যেহেতু আরাফ সব জেনে গিয়েছে তাই তিনি পারভেজ সাহেবের সাথে আরাফকেও মেরে ফেলতে চেয়েছিলো।কিন্তু পারেননি আরাফ পারভেজ সাহেবকে বাঁচানোর জন্য পুরো বিল্ডিংয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।আরাফ যা করেছে সবটা কাউকে বাঁচানোর জন্য করেছে।এখানে ওর কোনো দোষ নেয়।অন্যায় করেছি আমি শাস্তি দিতে হলে আমাকে দিন।আমি আমার বন্ধুকে কষ্ট দিয়েছি;আমি আমার ছেলেকে মারতে চেয়েছি;এতো অবৈধ ব্যবসা করেছি।আমি সব থেকে বড় অপরাধী। আমাকে আমার অপরাধের শাস্তি দিন জর্জ সাহেব।আমাকে শাস্তি দিন।”
.
কথাটা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আনোয়ার সাহেব।বাবার এই অবস্থা দেখে আরাফের চোখেও পানি চলে আসে।আরাফ তার বাবার দিকে সিক্ত নয়নে তাকিয়ে আছে।আর তার বাবা মাথা নিচু ওরে একাধারে কেঁদেই চলছেন।আনোয়ার সাহেব তার ভুল বুঝতে পেরেছে সেটাই আরাফের জন্য অনেক।তবে আরাফ অপেক্ষা করছে কোর্টের রায় শুনার জন্য ।সব শুনার পর বিচারপতি বলতে আরাম্ভ করে;
”সমস্ত কিছু শুনার পর কোর্ট বিচার বিবেচনা করে এটা বুঝতে পেরেছে যে মি. আরাফ শুধু মাত্র নিজেকে আর একজন নিরপরাধ মানুষকে বাঁচানোর জন্য সবটা করেছেন।আর তিনি তার ভুলও স্বিকার করে নিয়েছেন।এই অন্যায় পেছনে মূলত হাত রয়েছে মি.আনোয়ার মোহাম্মদের যিনি কোর্টে দাঁড়িয়ে নিজের মুখে সবটা স্বীকার করেছেন।তাই সমস্ত কিছু বিবেচনা করে কোর্ট মি.আরাফ মোহাম্মদকে বেকসুর খালাস দিচ্ছেন আর মি.আনোয়ার মোহাম্মদকে ৬ বছরের জেল ও ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।সঙ্গে উনার যত অবৈধ সম্পদ আছে সব কিছু সরকারের হাতে হস্তান্তর করা হবে।যেহেতু উনি শাররীক ভাবে খুব দুর্বল তাই উনাকে আপাতত জামিনে রাখা হচ্ছে উনি সুস্থ হওয়ার পর উনার শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।আর এতদ্বারা আজকের বিচার পর্ব শেষ করা হলো।”
.
কথাটা বলে বিচারপতি একটা কাগজের উপর সাইন করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান।উনি বেরিয়ে যেতে ধীরে ধীরে কাঠগড়া থেকে আরাফ আর তার বাবাকে নামানো হয়।আনোয়ার মোহাম্মদ ছলছল চোখে তার ছেলের দিকে তাকিয়ে আছে।আরাফও স্থির দৃষ্টিতে তার বাবাকে দেখছে।চোখের পানিতে আরাফের চোখ গুলোও চিকচিক করছে।আনোয়ার সাহেব হাতের ইশারায় আরাফকে তার কাছে ডাকে।আরাফ ধীর পায়ে তার বাবার কাছে গিয়ে হাটু ভেঙে তার সামনে বসে;আনোয়ার আরাফের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,

”আমি জানি বাবা।আমি ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য না।কিন্তু আমি সত্যিই আজ অনুতপ্ত।জানিস বাবা আজ নিজেকে অনেক বড় মনে হচ্ছে যে আমার তোর মতো একটা ছেলে আছে।আমি তোমার সাথে এতো অন্যায় করার পর ও তুমি আমার চিকিৎসার ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছো;আজ এতো বার বলার পরও তোমার মুখ থেকে আমার নাম বের হয়নি।এত ভালবাস আমায়।অথচ দেখো আমি এই মূর্খ বাবা তার এই সন্তানটাকেই মারতে চেয়েছিলাম।কতটা পাষান আর নির্দয় আমি;ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে।বাবারে পারলে তুই তোর এই অপরাধী বাপটাকে মাফ করে দিস।”
.
কথাটা শেষ করে আরাফের কপালে তিনি আলতো করে চুমু দেন।তাতেই আরাফের গাল বেয়ে টুপ করে জল গড়িয়ে পরে।আনোয়ার সাহেব এবার পারভেজের দিকে তাকিয়ে বলে,
”বন্ধু তুইও আমাকে ক্ষমা করে দিস।আমার জন্য একটা বছর তুই তোর পরিবার থেকে দূরে ছিলি;অনেক কষ্ট দিয়েছি আমি তোকে আর তোর পরিবারকে;জানি কখনো ক্ষমা করবি না।তবু ক্ষমা চাইবো।যদি পারিস তাহলে কোনদিন ক্ষমা করিস তোর এই অধম বন্ধুটাকে।”

আনোয়ারের কথায় পারভেজ সাহেব তার কাছে এসে তার হাতের উপর আলতো করে হাত রেখে বলে,
”ভুল করে ভুল স্বীকার করে নিলে সেই ভুলকারীকে তো আল্লাহ ও ক্ষমা করে দেয়।সেখানে আমি আল্লাহর বান্দা হয়ে কি করে তোকে ক্ষমা না করে থাকবো বল।তুই তোর ভুল বুঝতে পেরে আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছিস সেটাই অনেক।আমি তাতেই তোকে ক্ষমা করে দিয়েছি।”
পারভেজ সাহেবের কথা শেষ হতেই আনোয়ার একবার করুন চোখে তাদের দিকে তাকায়।তারপর তার পেছনে থাকা লোকটাকে বলে,
”চলো আমাকে আবার হসপিটালে নিয়ে চলো।”
ছেলেটাও তার কথা মতো আজ করলো।
.
রাত ১২.০০টা,,
রাতের বিদঘুটে অন্ধকারটা তার মায়া জালের আঁধারে পুরো পরিবেশটা গ্রাস করে নিয়েছে।এই অন্ধকারের দরুন সেই মাতাল করা কৃষ্ণচূড়া গাছটা আজ আর আরাফের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।এক রাশ হতাশা নিয়ে সে সামনে থাকা লেম্পোস্টের দিকে তাকিয়ে আছে।যার পিট পিটে আলো দিয়ে জ্বলজ্বল করছে আসে পাশের কিছুটা জায়গা।আরাফের দৃষ্টি আজ ভীষণ অগোছালো।বারান্দার দেয়ালটাতে হেলান দিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে লেম্পোস্টের সেই আবছা আলোর দিকে।মাঝে মাঝে এই আবছা আলোটা তার কাছে আরো বেশি ঘোলাটে হয়ে উঠছে হয়তোবা তার চোখের নোনা জলের জন্য এমনটা হচ্ছে।ছোটো থেকে কত কিছু হারিয়ে এসেছে সে প্রথমে পি.এ তারপর তার মা আর এখন তার বাবা।কাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচবে সে।কেউকি আছে যে মানুষটা তার ভালোবাসা দিয়ে তার সমস্ত কষ্ট ভুলিয়ে দিতে পারবে।কেউ কি আছে যে তার হাতটা ধরে বলবে;’আমি আছিতো তোমার পাশে আর সারাজীবন থাকবো’আজ এই প্রকৃতিটাকে আরাফের কাছে ভীষণ বিষন্ন মনে হচ্ছে।মনে হচ্ছে এই বিষিন্ন প্রকৃতিটাও তার কষ্টে কষ্ট পাচ্ছে।আরাফের মনে এখন প্রবল ইচ্ছে জাগছে এই অন্ধকারে নিজেকে বিলিয়ে দিতে।বিলীন করে দিতে নিজের সমস্ত কষ্ট গুলোকে এই আঁধারের মাঝে।

চলবে…
(আল্লাহকে ভয় করো;পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়)

{আসসালামু আলাইকুম।আমি বুঝিতে পারিয়াছি আপনারা আমার গল্প পড়িয়া ভীষণ বোরিং ফিল করিতেছেন।কারণ গল্পে এখনো রোমান্টিক পার্ট শুরু হইতাছে না।আপনারা একদমই চিন্তা করিবেন না।গল্পের নিরামিষ পর্ব গুলি শেষ হইয়াছে এখন শুরু হয়তে চলিয়াতাছে ভালোবাসার রোমান্টিক পর্ব।তাই আমি এখন আবার আগের মতোই আপনাদের রেস্পন্স আশা করিয়াতাছি।আশা করি আপনারা আপনাদের মতামত জানাইবেন।ধন্যবাদ”একটু মজা করলাম আরকি তবে এটা সত্যি গল্পের নিরামিষ পর্ব শেষ হয়ে এখন আমিষ পর্ব শুরু হতে যাচ্ছে।তাই যদি আমিষ খেতে চাও তো বেশি বেশি রেসপন্স করো ওকে😊”}

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here