তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি
পার্ট:৯+১০
#পিচ্চি_লেখিকা
আরুশকে কফি দিয়ে আরিয়া নিজের টেবিলের দিকে যেতে লাগলো তখনই আরুশ বলে উঠলো,,,
“” কফি খেয়ে দেখাও,,,
আরিয়া সেখানে দাড়িয়েই উত্তর দিলো,,,
“” আপনার কফি আমি কেন খাবো?
“”” তোমাকে বিশ্বাস নাই,,,যদি কিছু মিশিয়ে দাও তাহলে তো আমি শেষ তাই তুমি আগে খাও,,,
আরিয়া এবার রেগে গিয়ে বললো,,
“” কিহ এত বড় কথা,,,উগান্ডার খচ্চর তেলাপোকার নানা,,,টিকটিকির লেজ,,,দেন,,,
বলেই একটান দিয়ে কফি খেয়ে বললো,,,
“” নেন খাইছি,,,এবার আপনি খেয়ে আমাকে উদ্ধার করেন,,,
“” আবার কফি বানায় আনো যাও,,,
“” মানে টা কি?
“” মানে হচ্ছে আরুশ আরফান কারো এটো খাবার খায় না,,,তাই তোমার খাওয়া কফিও আমিও খাবো না,,,আবার আনো যাও,,,
“” আমি কি খেতে চাইছিলাম নাকি হ্যা,,,পারবো না আমি আর,,,
“”” তুমি কিন্তু আমার পি.এ আর কন্ট্রাক পেপ,,,
আরুশকে থামিয়ে আরিয়া বলে উঠলো,,,
“”” হয়ছে মেরি মা,,,এবার থামেন যাচ্ছি আমি,,,
আরিয়া রাগে ফোস ফোস করতে করতে কেবিন থেকে বের হলো,,আর আরুশ আরিয়া কে রাগাতে পেরে হাসতে হাসতে শেষ,,,আরিয়া যাচ্ছে আর আরুশকে গালি দিচ্ছে,,,
“”উগান্ডা,,খচ্চর,,,ইবলিশ,,,ফেরাউনের ভাই😤এবার তোকে জন্মের কফি খাওয়াবো,,,পারলে তো তোকে আমি এখনই টিকটিকি ভাজি করে খাইয়ে দেয়,,,আরিয়া রেগে মেগে কিচেনে যেতেই দেখে রাসেল সেখানে কফি বানাচ্ছে,,,রাসেল আরিয়া কে দেখেই মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললো,,,
“” কি ব্যাপার ম্যাম,,স্যার বুঝি কফি বানিয়ে নিতে বলেছে,,,
“” হুম,,,উনার একটা কফি তে হয়নি আরো লাগবে,,,জন্মের খাওয়া খাবে,,,
আরিয়ার কথা শুনে রাসেলের কাশি উঠে গেলো,,,তা দেখে আরিয়া পানি এগিয়ে দিলো,,,রাসেলের কাশি থামলে বললো,,
“” ম্যাম আস্তে বলেন,,,এখানে কিন্তু সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে,,স্যাার আপনার কথা শুনলেই আপনার খবর খারাপ করে দেবে,,
“” ওহ আচ্ছা,,এ্যাাাা কি বললেন,,,সব জায়গায় ক্যামেরা আছে মানে,,,আমি যাই করবো তা ওই গুন্ডাটা দেখতে পাবে,,,
“” হুম,,,
“” ও আল্লাহ এখানে কই আসছি আমি,,,ধুর এখান থেকে বের হতে পারলে বাচি,,,আচ্ছা আপনি কে?
“” রাসেল,,,স্যারের পি.এ,,
“” আপনি স্যারের পি.এ?
“”” হুম,,,
“” আপনি থাকতে উনার আরেকটা পি.এ কেন লাগে বলেন একটু,,,উফফস,,,
রাসেল মুচকি হেসে বলে,,,
“” আচ্ছা,ম্যাম যান কফি নিয়ে যান,,,
তারপর রাসেল চলে গেলো,,,আর আরিয়া কফি বানিয়ে নিয়ে কেবিনে গেলো,,,আরুশকে কফি দিয়ে কাজ করতে বসে গেলো,,,কিন্তু বেচারি আরিয়া,,,যখনি কাজ করতে যায় তখনই আরুশ এটা দেও ওটা দেও বলতেই থাকে,,,সারাদিন আরুশ আরিয়া কে জালালো,,,আরিয়া শুধু বাড়ি যাওয়ার জন্য ছটফট করছে,,,
অফিস শেষ করে আরিয়া বাড়ি চলে আসলো,,এসেই ফ্রেশ হয়ে বেডে গা এলিয়ে দিলো,,সাারাদিন কাজ করার ফলে,,সে ক্লান্ত তাই ঘুমিয়ে পড়লো,,,
আরুশ আজ অনেক খুশি,,,সে তার আরুজানকে প্রতিদিন দেখতে পারবে জালাতে পারবে,,,কোনো একদিন নিজের করেও নিতে পারবে,,,আয়ান আরুশকে মুচকি মুচকি হাসতে দেখে আরুশের কাছে গেলো,,,
“”” ভাইয়া,,,
“”” হুম ভাই বল,,,কিছু লাগবে তোর?
“” না একটু কথা বলতে আসলাম তোমার সাথে,,,
“” হুম বল,,,
“”” তুমি এতো মুচকি মুচকি হাসছো কারণ কি?কোনো কারণে কি তুমি খুব খুশি ভাইয়া?
আরুশ কখনো আয়ানকে মিথ্যা বলে না,,তাই আজও বললো না,,,
“”” হুম ভাই আমি অনেক খুশি,,,
“”” কেন?
“” বলবো আজ না অন্যদিন,,,তুই খেয়েছিস?
“” হুম
“” গুড বয়,,,
আরিয়া ঘুম থেকে উঠে দেখে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে গেছে,,তাড়াতাড়ি উঠে নিচে চলে গেলো,,
_______________
সকালবেলা উঠে আরিয়া কান্না করতে লেগে গেলো,,,আজকে আবারও ওই উগান্ডার অফিসে তার যাওয়া লাগবে ভেবেই এক বক্স টিসু শেষ করে দিয়েছে,,,আইরা অনেকক্ষণ হলো জিজ্ঞেস করেই যাচ্ছে কিন্তু আরিয়ার তাতে হেলেফেল না দেখে আইরা চলে গেলো,,আরিয়াও বাচ্চা ফেস নিয়ে রেডি হয়ে নিলো,,,দিশাকে ফোন করে বলে দিয়েছে যেন দিশা আজ তাড়াতাড়ি কলেজে আসে,,,তাই আরিয়াও কলেজের জন্যই বের হলো,,,
আরিয়া কলেজ এসে দিশার দিকে বাচ্চা মার্কা ফেস করে তাকিয়েই ভ্যা ভ্যা করে কেদে উঠলো,,,দিশা হা করে তাকিয়ে আছে,,,
“” এই আরু কাদছিস কেন?
“” দিশু রে,,,আমার সব শেষ রে,,,
দিশা আরিয়ার কথার মানে বুঝতে না পেরে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে,,,
“” এত নেকামো না করে বল কি হয়েছে,,,
“” দিশু রে তুই জানিস আমার জব কার অফিসে হয়ছে?
“”” আমি কি করে জানবো,,,তুই কি আদৌও বলেছিস আমাকে,,,
“” আরে ধুর উগান্ডি,,,ওই আরুশ্যা গুন্ডার পি.এ হয়ে গেছি আমি অ্যাাাাাা,,,,
দিশা অবাক হয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,,,হঠাৎ করে লাফ দিয়ে উঠে খুশিতে নাচতে শুরু করেছে দিশা,,,আরিয়া ওর নাচ দেখে কান্না থামিয়ে হা করে দেখছে,,,
“”” এই উগান্ডি এই,,তোর কি মাথার তার ছিড়ে গেছে হ্যা,,,আমি মরি আমার জালায় আর তুই নাচতেছিস,,,
“”” আরু বেবি তুই কান্না কেন করছিস ইসসস আরুশ যদি এই অফারটা আমাকে দিতো আমি তো লুঙ্গি ড্যান্স দিতাম,,,
“”” সত্যি,,,তাহলে তুই আমার জবটা নিয়ে নে বইন,,,
“”” তা কি আর হবে নাকি,,,আরুশ তো তোকে দিয়েছে জব আমাকে না,,
“” অ্যাাাা ওই আরুশ্যা আমার জিবন একদিনে তেজপাতা করে দিছে,,,,
আরিয়া দিশাকে সব কিছু বললো,,,আর দিশা হাসতে হাসতে ক্যাম্পাসে গড়াগড়ি খাচ্ছে তা দেখে আরিয়া আরো রেগে গেলো,,,,
“”” হোপ ছেরি,,,তুই বান্ধুবি নাকি শত্রু,,,
“” ২ টাই হিহিহি,,,
‘””চুপ কর পরে হাসিস,,কেমনে জব টা ছাড়মু ক,,,
“”” ছাড়ার দরকার নাই,,,আমার কি মনে হয় আরু জানিস,,,
“”” বল কি মনে হয়,,,
“” আরুশ না তোকে ভালো টালো বাসে,,,তাই তো তোকে সে এত চোখে চোখে রাখে,,,
আরিয়া দিশার মুখে এমন কথা শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে,,,
“”” এই ছেরি চুপ,,,এক থাপ্পড় দিয়া নেটওয়ার্কের বাইরে ফেলবো,,,
“” লে বাবা সত্যি কথা বললেও আজকাল দোষ,,,
“”” তুই তো সত্যির উড়োজাহাজ,,,এবার মুখ বন্ধ রাখ,,,আর শোন আরুশ আরফানের ভেতরে যদি সত্যি এরকম কিছু থাকেও তবুও ওকে আমার চাই না,,,কোনো দিন ওই গুন্ডাকে তো ভালোবাসবোই না আর শোন আমার মনে হয় না ওই গুন্ডা আমাকে ভালোবাসে,,,
“”” ভাগ্যে থাকলে ঠিকই ভালোবাসবে আরুজান,,,
আরিয়া কারো এমন কথা শুনে পিছনে তাকাতেই দেখে আরুশ দাড়িয়ে,,,দিশা তো আরুশের এমন কথা শুনেই শিষ বাজিয়ে উঠছে,,,
“”” আরে শালিকা এতো লাফাইয়ো না,,,তোমার বান্ধুবি তো আমারে ভালোও বাসে না,,,ভালো বাসা তো দুর ২ চোখেই সহ্য করতে পারে না,,,
“” আরে জিজু ওয়েট,,,সবুরে মেওয়া ফলে,,,সো চিল,,
২ জনের শালি জিজু আরিয়ার মাথার উপর দিয়ে গেলো,,,
“” এই দিশু,,,তোর বড় বোন কবে থেকে আসলো?
দিশা আর আরুশ আরিয়ার এমন আবুল মার্কা প্রশ্ন শুনে হেসে উঠে,,,,
“”” তুই আসলেও গাধী আরু,,,
“”” কি বললি?
“”” জিজু ওরে নিয়ে যান তো,,,
“” ওকে শালিকা টাটা,,,
আরুশ উঠে আরিয়াকে টেনে তোলে,,,আরিয়া বার বার বলছে ছেড়ে দেন আমাকে,,,কিন্তু আরুশ কিছুতেই ছাড়বে না,,,আরিয়াকে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিলো,,,আরিয়া নামাার কন্য ছটফট করলে আরুশ আরিয়াকে ধমক দিয়ে বসিয়ে দেয়,,,আরিয়াও বাচ্চাদের মতো চুপটি মেরে বসে আছে,,,গাড়ি যাচ্ছে গন্তব্যে হঠাৎ আরিয়া চিৎকার করে উঠলো…….
চলবে…..
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ❤️❤️
#তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি
#পার্ট:১০
#পিচ্চি_লেখিকা
গাড়ি চলছে আপনগতিতে হঠাৎ করেৎ আরিয়া খেয়াল করে তারা যে রাস্তায় যাচ্ছে সেইটা তো অফিসের রাস্তা না তাহলে কোথায় যাচ্ছে আরুশ,,,অন্য রাস্তা দেখেই আরিয়া চেচাতে শুরু করে,,,
“”” এই এই গাড়ি থামান গাড়ি থামান,,,
আরুশ আরিয়ার চেচানোর কারণ বুঝতে না পেরে গাড়ি দাড় করালো,,,
“” চেচাও কেন আজব,,,
“” আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
“” কাজী অফিসে,,,
“” কিহহ,,,
“” হা বন্ধ করো নয়তো মশা ঢুকবে,,,
“” চুপ করেন,,,আমি যাবো না আপনার সাথে,,,
“” জোড় করে নিয়ে যাবো,,,
“”” গুন্ডারা এইছাড়া কি পারে,,,হুহ,,
কথাটা আস্তে বললেও আরুশের কান পর্যন্ত ঠিক গেছে,,,
“” ঠিক বলেছো,,,তুমি তো আমাকে গুন্ডাই বলো,,,এখন গুন্ডামো করেই তোমাকে বিয়ে করবো,,,
“” অ্য্যাাাা আমি বিয়ে করবো না,,,(বাচ্চা ফেস নিয়ে কাদো কাদো কন্ঠে বললো)
“” কেন?
“” আপনার মতো গুন্ডাকে আমি কেন কেউই বিয়ে করতে চাইবে না,,,
“” তাই নাকি,,,
“”” জি তাই,,,
“”” বুঝে বলছো তো?
“” বুঝেই বলছি,,
“”” আমাকে যদি কেউ বিয়ে করতে চায় তাহলে তুমি আজ সারাদিন আমার সাথে ঘুরবে ওকে,,,,
আরিয়াকে কিছু বলতে না দিয়েই আরুশ নেমে পড়লো,,,মিশন কোনো মেয়ে😆,,,
আরুশের নেমে যাওয়া দেখে আরিয়াও নামলো,,,আরুশ আরিয়া কে রেখেই একটু সামনে এগোতে লাগলো এটা দেখে আরিয়াও পিছন পিছন ছুটলো,,,
“” এই গুন্ডা,,,এই অচেনা যায়গাই আমাকে রেখে কই যাচ্ছেন?
“” তোমাকে রেখে যাচ্ছি না,,,তোমার কাছেই আসতাম,,আচ্ছা এসেছো যখন ভালোই হয়ছে,,,
বলেই আরিয়ার হাত ধরে হাটা শুরু করলো,,,আরিয়া বার বার জিজ্ঞেস করছে কিন্তু আরুশের কোনো আন্সার না পেয়ে চুপ করেই থাকলো,,,আরুশ সামনের একটা পার্কে গিয়ে ২ টা মেয়ের সামনে দাড়ালো,,আরিয়ার মাথায় কিছুই ঢুকছে না,,,আরুশ ওই মেয়ে গুলোকে উদ্দেশ্য করে বললো,,,
“”” এক্সকিউজ মি,,,
২ টা মেয়ে আরুশের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে,,,হা করে তাকাবেই না কেন?আরুশ আরফান যে কি না এই শহরের বেষ্ট বিজনেসম্যান+সব মেয়ের ক্রাশ,,,সে তাদের নিজে থেকে ডাকলো,,,
আরুশ মেয়েগুলোর তাকানো তে বিরক্ত হয়ে গেছে তবুও মাথা ঠান্ডা করে আবারও ডাকলো,,,
“”” এই যে হ্যালো,,,
মেয়েগুলো নিজেদের ধ্যান ভেঙে একসাথে উত্তর দিলো,,
“” জি বলুন,,,
“” আপনাদের মাঝে কি কেউ সিঙ্গেল আছেন??
“” জি,,আমরা দুজনেই সিঙ্গেল,,,কিন্তু কেন?
“”” না মানে,,,
“” জি বলুন না,,
“”” আসলে আপনাদের মাঝে কেউ কি আমাকে বিয়ে করবেন😌
আরুশের মুখে ডিরেক্ট এমন কথা শুনে আরিয়া সহ ২ টা মেয়েই হা হয়ে গেছে,,,আরিয়া তো অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে,,,সে তো শুধু এমনিই বলেছিলো আর লোকটা সত্যি সত্যি মেয়েদের বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে দিলো,,,এ কি মানুষ নাকি এলিয়েন তা ই আরিয়া বুঝতে পারে না,,,আরিয়াকে আরো অবাক করে দিয়ে দুজন মেয়েই লাফিয়ে উঠে বলে,,,
“”” আমি করবো বিয়ে,,,
দুজনই বলাতে দুজন দুজনের মুখের দিকে তাকাচ্ছে আর আরিয়া চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,,,আরুশ আরিয়ার দিকে তাকিয়ে ডেভিল স্মাইল দিয়ে বললো,,,
“”” thanks…
আরুশ আর না দাড়িয়ে আরিয়া কে নিয়ে হাটা ধরলো,,আরিয়া তো এখনো বেকুবের মতো তাকিয়ে আছে,,,মেয়ে ২ টাও কিছু না বুঝে হা করে তাকিয়ে আছে,,,আরুশ আরিয়াকে গাড়িতে বসিয়ে নিজেও বসে পড়ে,,,
“”” তুমি বলেছিলে কেউই নাকি আমাকে বিয়ে করবে না,,,কিন্তু ২ টা মেয়ে একসাথে আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে আর তাই কথা মতো সারাদিন তুমি আমার সাথে থাকবে,,,
“”” এই ওয়েট আমি কখন বলেছি হ্যা,,,আপনি বলে আপনি চলে গেছেন আমি যাবে না,,ছেড়ে দেন আমাকে,,
“”চুপ থাকো,,,
আরুশ গাড়ি স্টার্ট দিলো,,আর আরিয়া বকা শুরু করে দিয়েছে,,,
“” উগান্ডার নানা,,,টিকটিকি খাওয়ানো উচিত তোকে,,,আমি কি বলেছি আমি তোর সাথে যাবো,,,তোর পি.এ হয়েছি ২ দিনও হয়নি আর আমাকে এখনি জালিয়ে মারছিস,,,এই গুন্ডা যা শুরু করেছে,, আচ্ছা দিশা কোথাও ঠিক বলে নি তো??না না এমন টা হওয়া যাবে না,,,
আরিয়া পুরো রাস্তা আরুশকে বকতে বকতে আসলো,,,আরুশ আরিয়ার মুখ দেখেই বুঝে গেছে আরিয়া যে তাকে বকছে,,,আরুশ শুধু ঠোট টিপে হেসে গেছে,,,হঠাৎই আরুশ গাড়ির ব্রেক কষলো,,আরিয়াও চমকে আরুশের দিকে তাকালো,,,আরুশ ইশারায় নামতে বললো,,,আরিয়াও নামলো,,,
গাড়ি থেকে নামতেই আরিয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,,সরু একটা ব্রিজ এত সুন্দর করে সাজানো,,,উপর দিয়ে ফুল দিয়ে গেটে করে সাজিয়ে রাখা,,,নিচে পানির স্রোত,,আরিয়া এত সুন্দর একটা জায়গা দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেটের মধ্য দিয়ে ব্রিজ টা তে পা রাখলো,,,আরিয়া পারলে খুশিতে এখনি নাচা শুরু করবে,,,আরুশ আরিয়া কে দেখছে,,,আরুশ আরিয়ার কাছে গিয়ে দাড়ালো,,,
“”” কেমন লাগছে জায়গাটা পি.এ?
“”” দারুন,,,ইসস এত সুন্দর জায়গা,,,আগে বললে তো এমনি তেই আসতাম,,,এতো ধমকাতে হতো না,,,
“” ওহ বাবা তাই নাকি,,,আচ্ছা ভেতরে চলো,,,
“”” ভেতরে মানে?
“”” আরে এটা অনেক বড় একটা জায়গা,,,আর ভেতরে গেলেই বুঝবে চলো,,,
আরিয়া আর কথা বাড়ালো না,,,আরুশের পিছন পিছন যেতে লাগলো,,,কোথা থেকে হঠাৎ করেই অনেক গুলো ছেলে মেয়ে এসে ঝাপটে জড়িয়ে ধরলো আরুশকে,,,সবার হঠাৎ আগমনে আরিয়া ভড়কে গিয়ে পিছে দাড়ালো,,,ছেলেমেয়ে গুলো আরুশকে এমন ভাবে ঘিরে রেখেছে যে আরিয়া আরুশকে মাঝে মাঝে খুজেই পাচ্ছে না,,,আরুশও কি সুন্দর করে ওদের সাথে তাল মিলিয়ে হাটু মুড়ে বসে পড়লো,,,আরিয়া অবাকের উপর অবাক হচ্ছে তবুও কিছু না বলে চুপচাপ দেখে যাচ্ছে,,,,
কিছুক্ষণ পর ছেলেমেয়ে গুলো আরুশকে ছেড়ে দিলো,,,আর আরুশ সবাইকে ছেড়ে আরিয়াকে ডাকলো,,,
“”” ওই পি.এ এদিকে আসো,,,
আরিয়া ভেংচি কেটে মনে মনে বললো,,,
“”” এতক্ষণ উনার মনে ছিলো না যে পাশে উনার পি.এ আছে,,,
“”” ওই আরিয়া তাড়াতাড়ি আসো,,,
আরিয়া আর কিছু না বলে আরুশের কাছে এগিয়ে গেলো,,,,এর মধ্যেই একটা বাচ্চা ছেলে বলে উঠলো,,,
“”” এটা কে ভাইয়া?ভাবি?
‘””না গো ভাইয়া এখনো তোমাদের ভাবি হয়নি তবে হবে,,,
“” সত্যি?
“” হুম সত্যি,,দেখো তো তোমাদের পছন্দ হয় কি না,,,তোমাদের পছন্দ না হলে ভাবি চেঞ্জ করবো কেমন,,,
“”” না ভাইয়া ভাবি তো অনেক সুন্দর এটাই আমাদের পছন্দ,,,
আরুশ ছেলেটার কথা শুনে হেসে উঠলো,,,আরিয়া শেষের কথাটা শুনেছে তাই আরুশকে জিজ্ঞেস করে,,,
“” কোন ভাবি কিসের পছন্দ?
“” তোমার জানতে হবে না,,,তুমি দুরে দাড়িয়ে ছিলে কেন?
“”” তো কি করবো কেউ তো আমাকে চিনে না তাই সবাই আপনার কাছে আছে আমাার কাছে কে আসবে যে আমি কাছে আসবো,,(অভিমানী স্বরে)
আরিয়ার কথা শুনে আরুশ সবাইকে ইশারা করে,,,ইশারা বুঝে সবাই গিয়ে আরিয়াকে ধরলো,,,,দুজন অনেকটা সময় বাচ্চাদের সাথে থেকে পুকুরের কাছে একটা দোলনার দিকে গেলো,,,আরিয়া যত দেখছে ততই মুগ্ধ হচ্ছে,,,আরিয়া আরুশকে জিজ্ঞেস করলো,,,
“”” আচ্ছা এটা কোন জায়গা?
“” আমাদের অনাথ আশ্রম,,,
আরুশদের অনাথ আশ্রম শুনে আরিয়া চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,,,
“”” এভাবে তাকানোর কিছুই নেই,,,এই আশ্রমটা আমার বাবা করেছিলো,,,উনি মারা যাওয়ার পর আমি সামলায় এটা,,,যখন আমার খুব মন খারাপ থাকে বা খুব খুশি হয় তখনই চলে আসি এই জায়গাটাই,,,এছাড়াও প্রায়ই আসি,,ভিষন ভালো লাগে আমার এই জায়গাটা,,,
“”” আপনার বাবা নেই?
আরুশ কেমন করে যেনো হাসলো,,,
“”” না নেই,,,
“”” সরি আসলে আমি..
“”” ইটস ওকে বাদ দাও,,,তোমার জায়গাটা কেমন লাগলো?
“”” ভিষন ভালো লেগেছে,,,আচ্ছা আপনি বললেন আপনি খুব খুশি থাকলে বা খুব মন খারাপ থাকলে এখানে আসেন,,,আজকে কেন আসছেন?
“”” খুশি তে বলতে পারো,,,
“” কোন খুশি?
“”” অন্য একদিন বলবো,,,
আরুশ আর আরিয়া কথা বলছিলো হঠাৎ কোথা থেকে একটা মেয়ে দৌড়ে এসে আরুশকে জড়িয়ে ধরলো,,,,মেয়েটার এমন কান্ডে আরিয়া চমকে গেলেও আরুশ চমকায় নি,,,উলটো মুচকি হাসলো…….
চলবে…..
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ❤️🍂🥀