তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি পার্ট:১১+১২

#তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি
পার্ট:১১+১২
#পিচ্চি_লেখিকা

আরিয়া আর আরুশ দাড়িয়ে কথা বলছিলো হঠাৎ কোথা থেকে একটা মেয়ে দৌড়ে এসে আরুশকে জড়িয়ে ধরলো,,,আরিয়া মেয়েটার এহেন কান্ডে নিজেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়,,,কিন্তু যখন আরুশের দিকে তাকায় তখন সে অবাক হয়ে যায়,,,আরুশ কিছু বলছে না আবার মুচকি হাসছে,,,আরুশ মেয়েটাকে সোজা করিয়ে দেয়,,,মেয়েটাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে খুব খুশি,,,

“”” কি রে তানু তুই এখানে কিভাবে আসলি,,,

“”কিভাবে আবার উড়ে উড়ে আসছি,,,

“”” ওহ তাই বুঝি তা তের পাখা কই রে?

“”” বাড়ি চল দেখাচ্ছি,,,

আরিয়া বুঝতে পারলো মেয়েটা আরুশের কেউ হয়,,,তাই কিছু না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলো,,,এদিকে আরুশ তানিয়া কে পেয়ে এতই খুশি যে আরিয়া তার পাশে আছে সেইটা সে ভুলেই গেছে,,,তানিয়া আরুশের ফুপির মেয়ে+সব থেকে কাছের বন্ধু,,,এতদিন দেশের বাহিরে ছিলো,,আজই ফিরেছে,,,আরিয়া চুপ করে আরুশ আর তানিয়ার কথা শুনছে,,,তানিয়া গল্পে গল্পে বললো,,,

“”আমি কিন্তু এখনো বাসাই যাইনি,,,তুই আমাকে এখানে দাড় করিয়ে গল্প করতে শুরু করে দিয়েছিস,,,মাম্মাম জানলে কিন্তু বকবে,,,

“””বাড়ি তো যাবোই আগে বল তুই কিভাবে জানলি আমি এখানে?

“” জানবো না?আফটার অল তোর ফিউচার বউ আমি,,,

“” আহারে চল বাড়ি চল,,,

আরুশ আর তানিয়া গল্প করতে করতে চলে যাচ্ছে আরিয়া শুধু আরুশকে দেখছে কতটা কান্ডজ্ঞানহীন লোকটা,,,তানিয়ার কথা শুনে আরিয়ার এটাই মনে হলো তানিয়া হয়তো আরুশের ফিয়ন্সে তাই আর ওদের মধ্যে ঢুকলো না,,,কিন্তু কেন যেন আরিয়ার ভিষন অস্বস্তি হচ্ছে,,,আরিয়া রাস্তাও চেনে না বাড়ি যাবে কি করে তাই সেখানেই নিরিবিলি কিছুটা সময় কাটাচ্ছে,,,

এদিকে আরুশ তানিয়ার সাথে এতই ব্যাস্ত যে তার আরিয়ার কথা মনেই নেই,,,তানিয়া কে নিয়ে বাড়িতে পৌছলে হঠাৎই তানিয়া বলে উঠে,,,

“” উফফস সরি তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছি,,,

“” কি কথা?

“” ওই খানে তোর পাশে একটা মেয়েকেও দেখলাম মনে হলো কথা বলছিলি তোরা,,,কে ওই মেয়েটা?

আরুশের তখন আরিয়ার কথাটা মাথায় আসে,,,

“” ওহ শীট,,তানু তুই থাক আমি এখনি আসছি,,,

আরুশ তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লো,,তানিয়ার মাথায় কিছুই গেলো না,,,ডেকেছে কিন্তু কোনো কিছু না শুনেই গাড়ির কাছে গেলো,,আরুশ নিজেই নিজেকে বকা দিচ্ছে,,,তার যে কাজ টা ঠিক হয়নি সে বুঝছে কিন্তু ভুল তো ভুলই,,,

আরুশ তাড়াতাড়ি ওই আশ্রম টা তে চলে এলো,,,পুরো টা খুজলো কিন্তু কোথাও নেই আরিয়া,,,আরুশ খুজতে খুজতে একটা নির্জন জায়গায় চলে যায়,,,হঠাৎ ই তার চোখে পড়ে কেউ বসে আছে,,আরুশ তাড়াতাড়ি তার কাছে গেলো,,,গিয়ে দেখে আরিয়া,,,আরুশ যেন হাফ ছেড়ে বাচলো,,,খুব সাবধানে আরিয়ার পাশে বসলো,,,কিন্তু তাতে যেন আরিয়ার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই,,,আরুশ ভেবেছিলো আরিয়া তাতে এত্ত কথা শোনাবে কিন্তু আরুশের ভাবনা মিথ্যা করে দিয়ে আরিয়া বলে উঠলো,,,

“”” আমাকে একটু বাসাই পৌছে দেবেন?

আরুশ আরিয়ার কথা শুনে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে,,,আরিয়া এতটুকু বলেই চুপ করে গেলো,,,আরুশের আরিয়ার ব্যবহারটা হজম হলো না,,,

“”” তুমি আমায় না বকে এত শান্ত গলায় কথা বললে,,,

আরিয়া মুচকি হেসে বললো,,,

“”” অনেকক্ষণ হলো বসে আছি,,,রাস্তা টা তো চিনি না,,,তাই যেতে পারিনি,,,আপনি ব্যস্ত ছিলেন তাই বিরক্ত করিনি,,,

আরুশ বুঝলো আরিয়ার কিছু হয়েছে,,,কিন্তু আরিয়া যে বলবে না তাও সে ভালো ভাবেই জানে,,,তাই আর কথা না বাড়িয়ে আরুশ উঠে দাড়ালো সাথে আরিয়াও দাড়ালো,,আরুশ আরিয়াকে বাড়ি পৌছে দিল,,,সারা রাস্তা আরিয়া একটা টু শব্দও করেনি,,,যা আরুশের জন্য খুব বিরক্তকর ছিলো,,,আরুশ আরিয়াকে নামিয়ে দিয়ে বাড়ি চলে গেলো,,,আরিয়াও কাউকে কিছু না বলে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো,,,আজ তার মন খারাপ কিন্তু কেন খারাপ সেটাই তার অজানা,,,ফ্রেশ হয়ে এসে ঘুমিয়ে পড়লো,,আরুশ বাড়ি গিয়ে রেস্ট নিচ্ছিলো তখনই তানিয়া আসলো,,,

“”” কি রে তখন ওভাবে ছুটলি কেন?

“” আরে ভাই তুই আগে মনে করাবি না মেয়েটার কথা।

“” হয়েছে টা কি বল!

“” ওইটা আমার পি.এ,,,বেচারি একা একা অনেকক্ষণ ওখানে বসে ছিলো,,,আমার একদম উচিত হয়নি ওকে একা রেখে আসা,,রাস্তাঘাট কিছুই চিনে না।

তানিয়া আরুশের কথা শুনে ভ্রুকুচকে তাকায়,,

“” ওহ আচ্ছা মেয়েটা তোর পি.এ,,নাম কি রে মেয়েটার?

“” আরিয়া।

“” বাহ বাহ,,,তা শুধু কি পি.এ নাকি আরো কিছু চলছে?

তানিয়ার কথা শুনে আরুশ মুচকি হাসে,,,তাতেই তানিয়া বুঝে যায়।

“” বুঝছি বুঝছি,,,তাই তো বলি যে আরুশ মেয়েদের থেকে একশো হাত দুরে থাকে সে কি না একটা মেয়ের সাথে গল্প করছে আবার ওই মেয়েটাই আরুশের পি.এ,,,গুড গুড।

“”” হয়ছে আপনার গবেষনা এবার যান।

“” না না আমিও জানতে চায়,,,আরুশ আরফান কিভাবে প্রেমে পড়লো?

“”” ওই তুই বের হ,,,যা।।

আরুশ এক প্রকার জোড় করে তানিয়া কে বের করে দিলো,,,তারপর রেস্ট নিলো,,,

কেটে গেছে কয়েকটা দিন,,,আরুশ এখনো আরিয়াকে খুব জালায়,,,আর আরিয়া সেই রেগে মেগে ফায়ার হয়ে যায়,,,ওইদিনের মন খারাপটা সে সেদিনই কাটিয়ে নিয়েছিলো কিন্তু যতবারই সে তানিয়া কে দেখেছে আরুশের সাথে ততবার চুপ করে থেকেছে আরুশ জালালেও কিছু বলতো না,,,আরুশের আরিয়ার এমন ব্যবহার কিছুতেই মাথায় ঢোকে না,,,আজ আরুশের একটা ডিল সাইন হয়েছে তাই সে জন্য পার্টি দেওয়া হয়েছে,,,অনেক বড় বড় বিজনেস ম্যান সেখানে এসেছে,,,আরিয়া যেতে না চেয়েও যেতে বাধ্য হলো,,,মামা মামি কে ম্যানেজ করে আরিয়া যাবে ঠিক করেছে,,,অনেক কষ্টে মামা মামি কে সে রাজি করিয়েছে,,আইরা যেতে চেয়েছিলো কিন্তু বিজনেস পার্টির জন্য আরিয়া নেয়নি সাথে,,,আরিয়া আজ গাঢ় নীল কালার স্টোনের কাজ করা একটা গাউন পড়েছে,,চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে,,একদম হালকা সেজেছে,,ব্যাস তাতেই তাকে নীল পরীর মতো লাগছে,,,আইরা আর তিনা আরিয়া কে দেখে বললো,,,

“” আরে আপু,,,আসো আগে নজর টিপ দেয়,।

“”” নজর টিপ কেন?

“” তোমাকে আজ যা লাগছে না পুরাই নীল পরী,,,আজ যে কত ছেলে তোমার উপর ক্রাশ খাবে ইসসস,,,

“” চুপ পাজি,,,আমি তোর বড় বোন,,,

“”” সত্যিটাই তো বললাম,,,

“” হয়ছে আর বলতে হবে না,,,সাবধানে থাকিস তোরা,,,আর খেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়িস,,

আরিয়া বাড়ি থেকে বের হতেই দেখলো আরুশের গাড়ি দাড় করানো কিন্তু আরুশ নেই,,আরুশ হয়তো বিজি তাই আসতে পারেনি,,,আরিয়া সাত পাচ না ভেবে গাড়িটার কাছে যেতেই দেখলো রাসেল ভিতরে বসে আছে,,,রাসেল আর আরিয়ার এই কয়দিনেই খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে,,,আরিয়া রাসেল কে ভাইয়া ডাকে,,,রাসেল কে দেখেই আরিয়ার ঠোটের কোণে হাসি ফুটলো,,,রাসেল আরিয়াকে নিয়ে পার্টিতে চলে আসলো,,,রাসেল আগে ঢুকে পড়লো আর আরিয়া গাড়ির কাছে কিছুক্ষণ দাড়ালো,,,খুব আনইজি ফিল হচ্ছে তার,,,আরিয়া অনেক সাহস নিয়ে পার্টিতো ঢুকলো,,,আরিয়া মাথা নিচু করে আছে,,,সবাই আরিয়ার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে,,,আরুশ তো চোখের পলক না ফেলে তাকিয়ে আছে,,,আরিয়াকে ঢুকতে দেখে রাইসা এগিয়ে আসলো,,,

“”” এতো লেইট করলে কেন?

“” সরি আসলে খুব আনইজি ফিল হচ্ছে তাই বাইরে ছিলাম,,,

“”” ধুর আনইজি ফিল করার কি আছে?বাই দ্যা ওয়ে তোমাকে কিন্তু দারুন লাগছে,,,দেখো সবাই কি করে তাকিয়ে আছে,,,

“”” চলো,,,

আরিয়া রাইসার সাথে ভেতরে চলে গেলো,,,সবাই কাপল ডান্স করছে,,,আরুশ আরিয়ার কাছে এগিয়ে এসে বললো,,,

“” এত সেজেছো কেন মিস পি.এ?

“”” এতো সাজ কোথায় দেখলেন আপনি?

“”” এই যে,,,

“”” আজব,,,আর সাজলেই বা আপনার কি?

আরুশ আরিয়ার আরেকটু কাছে গিয়ে বললো,,,

“”” আমার জিনিসের দিকে কেউ তাকাক এটা আমার পছন্দ নাা,,,

আরিয়া আরুশের কথার মানে না বুঝে আরুশের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,,,আরুশ বাকা হেসে চলে গেলো,,,,আরিয়া দাড়িয়ে আছে একা,,,হঠাৎ কেউ তাকে চেপে ধরে খুব সাবধানে বাইরে নিয়ে গেলো,,আরিয়া হঠাৎ আক্রমণে ভয়ে কুকড়ে গেছে…..

চলবে….

(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন❤️❤️স্কুল অ্যাসাইনমেন্ট সব নিয়ে অনেক ঝামেলায় আছি তার উপর আমি অসুস্থ তাই দেরী হয়ছে,,,,দেরী হওয়ার জন্য দুঃখিত☹️)

#তোমার_নেশায়_নেশাক্ত_আমি
#পার্ট:১২
#পিচ্চি_লেখিকা

আজ আরিয়ার বিয়ে,,,মাথাটা নিচু করে কান্না করছে,,,আরিয়া পাশেই তার মামি তিনা তন্ময় সবাই গম্ভীর মুখ নিয়ে বসে আছে,,,আর আইরা আরিয়ার মতোই কেদে চলেছে,,আইরা আরিয়াকে ছেড়ে থাকতে পারে না,,কিন্তু আরিয়ার বিয়ে হয়ে গেলো তাকে বাধ্য হয়ে দুরে থাকতে হবে তাই ভেবেই সে ডুকরে কাদছে,,,আরিয়াও কিছুটা এই কারনে কাদছে,,সে কখনোই চায়নি কারো সাথে বিয়ে করতে,,,কিন্তু ভাগ্য কখন কাকে কোথায় নিয়ে যায় কেই বা জানে,,,আরিয়ার বাড়ির সবাই ওকে ঘিরে বসে আছে আর আরিয়ার সামনেই ওর হবু বর শুভ বসে আছে,,,বেশ ভদ্র শান্ত ভাবে নিজেকে পৃরকাশ করছে,,,কিন্তু আরিয়া কিছুতেই সহ্য করতে পারছে না,,শেষে কি না এই চরিত্রহীন টাকে বিয়ে করতে হবে অবশ্য অন্যকে কি বলবে তাকেই তো এখন চরিত্রহীন উপাধি দেওয়া হয়েছে,,,আরিয়া ভাবছে আরুশ যদি তার সাথে এমন না করতো তাহলে হয়তো আজ সব ঠিক থাকতো,,,

ফ্ল্যাশব্যাক____

পার্টিতে কেউ আরিয়ার মুখ চেপে ধরে বাহিরে এক জায়গায় নিয়ে আসে,,,বাহিরে এনেই আরিয়াকে ছেড়ে দেয়,,,আরিয়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই তার চোখ পড়ে সামনে,,,মিটমিট আলো দিয়ে জোনাকি পোকাড়া জ্বলছে,,,কেউ তার খুব কাছে এসে দাড়ায় আরিয়া অনুভব করতে পেরে পিছনে তাকাতেই দেখে আরুশ,,,আরিয়া রেগে গিয়ে জিজ্ঞেস করে,,,

“” কি সমস্যা আপনার?এভাবে আনার মানে টা কি?

“”” সারপ্রাইজ,, (ফিসফিসিয়ে বললো)

“”” সারপ্রাইজ?কিসের?

আরুশ মুখে কিছু বললো না,,,আরিয়ার কাধে হাত রেখে ঘুরে দাড় করিয়ে আঙুল দিয়ে সামনে ইশারা করতেই আরিয়া সামনে তাকালো,,,দুরে মিটমিট আলোতে কিছু উড়ে এক হয়ে ভালোবাসি লেখাটা জ্বলজ্বল করছে,,,আরিয়ার বুকের মধ্যে ধক করে উঠলো,,,তাড়াতাড়ি মাথা নিচু করে পিছন ফিরেই দেখে আরুশ হাতে রিং নিয়ে এক হাটু মুড়ে বসেছে,,,আরিয়ার যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়তেছে,,,কি হচ্ছে এসব?স্বপ্ন নাকি বাস্তব তাই গুলিয়ে ফেলছে সে,,জায়গাটা অনেক সুন্দর করে সাজানো ছিলো,,,আর মিট মিট করে অনেক রকম আলো জ্বলছিলো,,,আরিয়া আর দাড়ালো না আরুশকে পাশ কাটিয়ে আরিয়া ছুটে চলে গেলো,,,আরুশ কিছুই বুঝে উঠতে পারলো নাা,,,যদিও সে জানতো না আরিয়ার মনে তার জন্য আদদৌও কিছু আছে কি না,,,তবুও সে আজ নিজের মনের কথা বলতে চেয়েছিলো কিন্তু আরিয়া সব না শুনেই চলে গেলো,,,আরুশ আরিয়ার পিছন পিছন যেতে লাগলো,,,আরিয়া কিছুটা দুরে চলে গেছে,,হঠাৎ করেই কোথা থেকে একটা গুলি এসে লাগে আরুশের পেট বরাবর,,,আরুশ অনাকাঙ্ক্ষিত আক্রমণে ভড়কে যায় হঠাৎ গুলি লাগায় সটাং করে নিচে পড়ে যায়,,,রাসেল আশে পাশেই ছিলো,,,সে জানে যখন তখন তার বসকে আক্রমণ করাী মতো অনেক গোপন শত্রু আছে,,গুলির শব্দে রাসেল চমকে উঠে তাড়াতাড়ি সেই জায়গাই যায়,,গিয়ে দেখে আরুশ নিচে পড়ে আছে প্রচুর ব্লিডিং হচ্ছে,,,রাসেল তাড়াতাড়ি আরুশের কাছে যায়,,,

এদিকে আরিয়া তাড়াতাড়ি সেখান থেকে এসে তন্ময় কে ফোন করে,,,তন্ময় কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসে,,,আর আরিয়াকে নিয়ে বাড়ি চলে যায়,,,বাড়ি গিয়ে ফ্রেশ হয়েই শুয়ে পড়ে আরিয়া,,,সে কিছু নিয়ে ভাবতে চায় না,,,তবুও আরুশের মুখটা ওই ভালোবাসি লেখাটা যেন বার বার চোখের সামনে ভাসছে,,,বিরক্তি নিয়ে উঠে আরিয়া ৩ টা ঘুমের ট্যাবলেট নেয়,,কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমের দেশে তলিয়ে যায়,,,

_________________

সকালবেলা আইরা আর তিনা খুব জোড়ে জোড়ে আরিয়া কে ধাক্কিয়ে তোলে,,,কিন্তু ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ার জন্য চোখ খুলতে পারছে না,,,তবুও কোনো রকম মাথা টা তুলে আইরা চর তিনার দিকে ছোট ছোট চোখ করে তাকায়,,,ওদের ২ জন কে দেখে মনে হচ্ছে কোনো বিষয় নিয়ে তারা খুব চিন্তিত,,,

“” আপু তাড়াতাড়ি উঠো,,(তিনা)

“” এত সকাল সকাল কেন ডাকছিস তোরা?

“” আপু নিচে চলো,,,দেখো কি হয়ছে,,,

“” কি হয়ছে কি দেখবো?

“” ধুর তাড়াতাড়ি চলো,,,

বলেই তিনা আর আইরা টানতে টানতে আরিয়াকে নিয়ে যায় হল রুমে,,,আরিয়া টিভির দিকে তাকাতেই তার ঘুম উড়ে যায়,,,চোখ বড় বড় হয়ে যায়,,টিভিতে আরুশ আর আরিয়ার পার্টির রাতের সব পিক দেখাচ্ছে,,,আরো কিছু ঘনিষ্ঠ পিক দেখাচ্ছে আর বাজে বাজে কথা বলছে,,,আরিয়ার মামা মামি তো মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে,,,আরিয়া যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে,,,কে করলো এসব?কিছুই আরিয়ার মাথায় ঢুকছে না,,আরিয়ার মামি শান্ত গলায় বললো,,

“”” এসব কি আরু?

আরিয়া চোখ মুখ বড় করেই আছে,,,তার মামির প্রশ্নের কি উত্তর দেবে বুঝতে পারছে না,,,কাপা কাপা কন্ঠে বললো,,

“””এসব মিথ্যা মামি,,,আমি জানি না এসবের ব্যাপারে,,,

আরিয়ার মামি এবার আরিয়ার কাছে গিয়ে ২ বাহু শক্ত করে বললো,,,

“”” এসবের জন্য কাল তুই রাতে পার্টিতে গেছিলি ছি,,,এত ভালোবাসার পরও এভাবে মানসম্মান শেষ করলি ছি ছি,,,

আরিয়া কাদো কাদো গলায় বললো,,,

“” বিশ্বাস করো মামি আমার কোনো দোষ নেই,,,আমি এসব কিছু করিনি,,,

“”” বিশ্বাস?আর তোকে?এতদিন তো করেছি আজ কি হলো বিশ্বাসের?তুই বিয়ে করতে চাস নি আমরা তোকে বিয়ে দেয়নি,,,তোর সব কথার মান রেখেছি আর তুই?বেড়িয়ে যা বাড়ি থেকে,,,

বলেই হাত টা সরিয়ে একটু দুরে সরে দিলো,,,আরিয়ার যেন আর সহ্য হচ্ছে না,,,চোখের বাধ ছেড়ে দিয়ে হাউমাউ করে কেদে উঠে তার মামির পায়ের কাছে বসে পড়ে,,,আপনজনরা যখন অবিশ্বাস করে তখন আর কিছুই করার থাকে না,,,আরিয়ার মামা চোয়াল শক্ত করে বসেছিলেন,,,কি করবে বুঝতে পারছিলেন না,,,খুব শান্ত কন্ঠে বলে উঠলেন,,,

“”” আরিয়া কোথাও যাবে না,,,২ দিনের মধ্যে ওর বিয়ে দেবো,,,ওকে তৈরি থাকতে বলো,,,

আরিয়ার মামা সংক্ষিপ্ত স্বরে এটুকু বলেই হাটা লাগালেন,,,আরিয়া আর কি বলবে বুঝতে পারছে না,,,কেন সব সময় তার সাথেই এমন হয় সেইটা তার অজানা,,,ভাগ্যর কি পরিহাস,,,আরিয়াও চুপচাপ সবটা মেনে নিলো,,,কিছু না করেও আজ তাকে চরিত্রহীনা নাম দেওয়া হয়েছে,,তার জন্য তার মামা মামিকেও অপমানিত হতে হয়,,,২ দিনের মধ্যে আরিয়ার মধ্যে,,,এই ২ দিনে আরুশ খবরও নেয়নি আরিয়ার,,,আরিয়ার ক্ষোভ যেন আরো বেড়ে গেছে,,,আরুশ যদি তাকে ওই জায়গাই না নিয়ে যেত যদি তাকে না টাচ করতো যদি দুরে থাকতো আজ হয়তো এতো কিছু হতো না,,,২ দিন কেটে আজ আরিয়ার বিয়ে,,,আরিয়া কাদতে কাদতে নিজেই নিজেকে বলতে শুরু করেছে,,,

“”” কেন গেছিলি ওই আরুশের অফিসে?কেন গেছিলি পি.এ হতে?আজ তোর নিজের জন্য নিজের এতো কষ্ট পেতে হচ্ছে,,,আপন মানুষদের থেকে দুরে সরতে হচ্ছে,,,ভালোবাসা দেখাতে এসেছিলো ওই গুন্ডা আজ ভালোবাসা নয় কলঙ্ক দিয়ে গেছে আমাকে,,,একটু পর তো আমার বিয়ে তাও আবার শুভর সাথে,,,ওই চরিত্রহীন টাকে স্বামী বলে মানতে হবে,,,কিভাবে থাকবো ওর সাথে আমি?

শুভর সাথে থাকার কথা ভেবেই আরো ডুকরে কেদে উঠে আরিয়া,,,,

কাজি বসে আছে সামনে,,,আরিয়ার বিয়ে পড়ানো শুরু হলো,,,বিয়ে শেষ করে আরিয়া শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে,,,আইরা অনেক কেদেছে যাওয়ার জন্য কিন্তু তার মামা মামি যেতে দেয়নি,,,আরিয়ার যেন পৃথিবী থমকে গেছে,,,,,পুরো টা রাস্তা সে কাদতে কাদতে এসেছে,,,আর তার পাশে থাকা হাজবেন্ড নামক মানুষটি চুপ করে দেখে গেছে,,,আরিয়ার গন্তব্য শেষ হলো,,,,গাড়ি এসে থামলো তার বরের বাড়িতে,,,কিন্তু তার মাঝে নেই কোনো ফিলিংস,,,নেই কোনো আশা,,শুধু রোবটের মতো যাচ্ছে,,,বাড়ির ভেতর থেকে একটা মেয়ে দৌড়ে দুজনের সামনে দাড়ায়,,,আহ্লাদী কন্ঠে বলে উঠে,,,

“”” ওলে আমার কিউট ভাবি টাহ্,,,আসো আসো তোমার জন্য অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি,,,আর তুই(আরিয়ার বর) এত দেরি করলি কেন?মাম্মাম কখন থেকে ওয়েট করছে তাড়াতাড়ি চল,,,

আরিয়া কে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েটি,,,আর আরিয়া ড্যাবড্যাব করে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে,,,দরজা তে দাড় করালো আরিয়াকে,,,একজন মহিলা এসে সুন্দরভাবে আরিয়াকে বরন করে ঘরে আনে,,,আরিয়া মুখ দেখেই বলে উঠে,,,

“” মাশাল্লাহ,,,

আরিয়াকে নিয়ে মেয়েটা চলে গেলো,,,রুমে বসিয়ে দিলো,,,এটুকু সময়ের মধ্যেও অনেক সুন্ূর করে ঘর সাজানো হয়েছে,,,ফুলের পাপড়ির মধ্যে আরিয়া এক হাত ঘোমটা টেনে বসে আছে,,,অনেক রাত হয়ে গেছে কিন্তু বর রুমে আসার নাম নেই,,,আরিয়া তো এখনো নাক টেনে কান্না করেই যাচ্ছে,,,গভীর রাতে দরজা খোলার শব্দ পেয়ে আরিয়া চোখ তুলে তাকায়,,,ঘোমটা টা একটু উচু করে দেখে তার কয়েকঘন্টা আগে বিয়ে করা সো কলড স্বামী দুলতে দুলতে আসছে,,,দেখেই বোঝা যাচ্ছে ড্রিংক করে পুরো ভুত হয়ে আছে,,,আরিয়া এমনিও খুব রেগে ছিলো তার ওপর এরকম অবস্থা দেখে রেগে বেড থেকে নিচে নেমে দ্রুত পায়ে গিয়ে কলার চেপে ধরলো………..

চলবে……

(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ❤️❤️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here