ত্রয়ী
মোর্শেদা হোসেন রুবি
২১||
ঘরটার আয়তন আট ফুট বাই সাত ফুট। এত ছোট ঘর শিরি জীবনেও দেখেনি। এটাকে ঘর না বলে স্টোর রুম বললেই বেশী মানাত। এতটুকুন একটা রুম তার ভেতরে আবার দুনিয়ার বস্তা আর কাগজের প্যাকেট। ঘরটাতে আসবাব বলতে কিছুই নেই। শিরি অবাক চোখে তাকালে পলাশ বলেছিল, ‘আপাতত দুটো দিন কষ্ট করো প্লিজ। তারপরেই তোমাকে আমাদের বাসায় নিয়ে যাব।”
-” কিন্তু এখানে, মানে কেমনে কী ? ” শিরি না বলে পারল না। পলাশ ফ্যাকাশে হেসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেছিল।
-” আরে, প্রেমের জন্য মানুষ কত কষ্ট করে। আর এ তো সামান্য।’ বলে উষ্ণ আদরে শিরির অনুভূতি ফিরতে সাহায্য করেছিল পলাশ। যার ফলে ঘরে ঢোকার পর ছুটে বেরিয়ে যাবার যে ইচ্ছাটা পেঁজা তুলার মত ঝরতে শুরু করেছিল তা মুহূর্তেই গলে পানি হয়ে গিয়েছিল পলাশের শারীরি উষ্ণতায়। মনে পড়ে গিয়েছিল কিসের টানে এখানে আসা। সমান তালে সায় দিয়েছিল শিরি নিজেও। পলাশ নিজেই তখন বাস্তবে ফিরে এসে বলল ,” রাতের খাবারের জন্য কিছু নিয়ে আসি ততক্ষণে তুমি রুমটা গোছাতে পারো কিনা দেখ। পলাশ বেরিয়ে গেলে হাতের ব্যাগ রেখে কোমড়ে ওড়না গুঁজল শিরি। খুঁজে পেতে একটা ঝাড়ু যোগাড় করে সাফাই এর কাজে হাত দিল। বুকের ভেতর তখন অজস্র স্বপ্নের ফুলঝুরি। অনাগত রাতের স্বপ্নে বিভোর শিরি এই আট ফুট বাই সাত ফুটের কামরাতেই স্বর্গ রচনা করতে গিয়ে ভারী বস্তা আর প্যাকেটগুলো টানা হ্যাঁচড়া শুরু করেছিল। তবে ওগুলো সরাতে গিয়ে টের পেয়েছিল সেগুলো অসম্ভব ভারী। কৌতুহল বশত উঁকিও দিয়েছিল। প্রতিটা কাগজের বাক্স টিনের পাতলা সিট দিয়ে ঠাসা। নড়ানোই দায়। তখনই বুঝতে পারল এগুলো কারখানার কাঁচামাল আর রুমটা কাঁচামাল রাখার গুদাম ঘর। নিজেকে বোঝাল হয়ত দুদিনের জন্য পলাশ রুমটা ব্যবস্থা করেছে। আর তখনই এই ভাবনার সাথে হাত ধরাধরি করে আরেকটা ভাবনা চলে এসেছিল, ‘এত তাড়াহুড়ার কী ছিল। কোচিং শেষ হয়ে তো আর হয়ে যায়নি। এখনও ঢের দেরী। পরক্ষণেই মনে পড়ল পলাশ স্যার নিজেই কী একটা কারণে কোচিং ছেড়ে দিচ্ছে। ওদের আর রোজ দেখা হবার সুযোগ থাকছে না। তবে গতকালকে কোচিং এ যাবার পর যখন জানতে পেরেছিল আজ ওদের কোচিং দুটো ক্লাস হয়েই ছুটি হয়ে যাবে। তখনও মাথায় ছিল না এভাবে হঠাৎ করেই পলাশের হাত ধরে এখানে চলে আসা হবে। বরং দ্বিতীয় ক্লাসটা করার পরপরই যখন পুরো কোচিং ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল আর পলাশ স্যার সেই সুযোগে ওকে অধিকার করতে শুরু করেছিল তখন শিরির মনে হয়েছিল এ জীবনে সে অনেক কিছুই চেয়েও পায়নি। কেবল টিভি নাটক সিনেমাতে দেখেই শিহরিত হয়েছে। আজ সেই সৌভাগ্য নিজে এসে ধরা দিচ্ছে। অনুভূতিটা একেবারেই নতুন আর চাওয়াটা ছিল ভীষণ আগ্রাসী। এমনকি পলাশ ওকে না জাগানোর একটু আগেও জানত না যে ওর ভেতর এরকম একটি চাওয়া ঘুমিয়ে আছে। বরং অবচেতন মন বলে উঠেছিল, এরকম একটি চাওয়া থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখা একেবারেই উচিত হবেনা। একটা পর্যায়ে দুজনেই বুঝতে পারছিল খালি রুমে বন্ধ দরজার ভেতরে নিজেদেরকে খুব বেশী পাহাড়া দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। কারণ দুজনের মাঝেই নিজেদের সর্বস্বটুকু উজাড় করে দেবার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। শিরি কোনরকমে উচ্চারণ করতে পেরেছিল, ” বাসায় জানলে বকবে।”
-” ধুর বোকা, বাসায় জানাবে কেন তুমি ? ”
শিরি কেঁদে ফেলে অনুযোগের সুরে বলেছিল,” ওর কোর্স শেষ হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। এর পরের নতুন প্যাকেজটাতে শিরির ভর্তি হওয়া সম্ভব হবেনা। কারণ ওর পরিবারের হাতে এত টাকা নেই। তাছাড়া পরীক্ষা ছাড়া অহেতুক সারা বছর কোচিং করানোর পক্ষপাতি নয় ওর বোন। সব শুনে পলাশও জানিয়েছিল, তার ক্লাস নেয়াও আজই শেষ। কাল থেকে সে কোচিং এ আসবেনা। কারণ সামনে ওর পরীক্ষা। শেষ পর্যন্ত দুজনেই আবেশে বুঁদ হয়ে ছিল অনেকক্ষণ। শিরি একটু একটু বুঝতে পারছিল জীবনের পরম চাওয়ার চরম পাওয়াটা আজ বড় অসময়ে এসে ধরা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত দুজনে মিলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিছু পেতে হলে কিছু ছাড়তে হয়। শিরিকে ঘর ছাড়তে হবে।
পলাশ অভয় দিয়েছিল, ” আমরা দুজন মিলে নতুন পৃথিবী গড়ব।” সেই আবেগের ঘোরেই এ পর্যন্ত আসা। যতবারই দ্বিধা এসে জমা হয়েছে ততবারই পলাশ সেই দ্বিধাকে ভালবাসা নামের এলোপাতাড়ী বাতাসে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। বরং গতরাতের পরে আজ সকালে শিরির সিদ্ধান্ত নেয়া আরো সহজ হয়ে গেছে। যত যা’ই ঘটুক না কেন, পলাশকে ছেড়ে সে কোনদিনও যাবেনা। তাতে কিছুদিন কষ্ট করতে হলে করবে।
সেই চিন্তা থেকে অল্প সময়েই ঘরটা গুছিয়ে পরিপাটি করেছে। পলাশ গতরাতেই কোত্থেকে যেন চাদর আর দুটো বালিশও যোগাড় করে ফেলেছিল। সেগুলোকেও ঝেড়ে পিটিয়ে সাজিয়ে রেখে অবশেষে গোসলের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলে পলাশকে জানালে সে ওকে পাশের বাড়ির বাথরুমে নিয়ে আসে। বাড়ীর গৃহিনীকে বলে শিরির গোসলের ব্যবস্থা করে দেয়। বালিশ আনার সময় নিজের বাড়তি কাপড়ের কথাও পলাশকে বলেছিল। শুনে আজ সকালেই বেচারা কোত্থেকে যেন ফ্রি সাইজের দুটো মেক্সি এনে ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেছে, ‘ তুমি গোসল সেরে আসো। আমি নাস্তা কিনে নিয়ে আসি।”
শিরি গোসল সেরে চলে আসার সময় গৃহিনী সরু চোখে তাকিয়ে থেকে জানতে চাইলেন, ” কবে বিয়ে হয়েছে তোমাদের ? ”
শিরি আমতা আমতা করল, ” গ….গতকালই।” বলতে গিয়ে ভীষণ অপরাধী মনে হল নিজেকে। সে যেভাবে পলাশের সাথে থাকছে এটা একজন বিবাহিতার থাকা। অথচ সে বিবাহিতা নয়। ভাবনাটা মনে আসতেই অজানা এক সংস্কারে কেঁপে উঠল। গুনাহ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নেই শিরির। তবু কেমন যেন একটা অস্বস্তি হচ্ছে। পলাশ বলেছিল আজই ওরা বিয়ে করবে। শিরি জানেনা সেই মাহেন্দ্রক্ষণটা কখন আসবে। মন উন্মুখ হয়ে আছে কখন সে একজনের স্ত্রী হবে। যদিও গতরাতে পলাশ বলেছে ভালোবাসা আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা করেনা আর তারপর থেকেই সে ওর স্বামী বনে গেছে। শিরিও ওর দাবী এড়াতে পারেনি। ঠিক করল আজই বিয়েটা সেরে ফেলতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব। পলাশ ফিরলে ওকে বলতে হবে ভাবল শিরি।
=====[
বাড়ীতে ঢুকেই বাপের মুখোমুখি পড়ে হকচকিয়ে গেল পলাশ। আজমল বাইরে যাবার জন্য মাত্রই বেরোচ্ছিলেন। ছেলেকে দেখে থেমে গিয়ে বললেন, ” কী রে, গতকাল থেকে তোর কোন পাত্তা নেই দেখছি। কই ছিলি সারাদিন ? ”
-” ইয়ে বাবা। পরীক্ষার প্রিপারেশন নিচ্ছি তো আমরা। আরিফের ওখানেই ছিলাম সারারাত। গ্রুপ স্টাডি করেছি।”
-” তোদের এসব স্টাডি তোরাই বুঝিস। আমার মাথায় ঢুকেনা। আচ্ছা, ঠিক করে বলতো, গ্রুপ স্টাডি করে আসলে পড়া হয় ? পড়াশোনার জন্য দরকার একটা নিরিবিলি পরিবেশ । তা না করে, তোরা করিস গ্রুপ স্টাডি। যত্তসব। নাস্তা করেছিস? ”
-” না। এখনও করিনি।” মাথা চুলকে বলল পলাশ।
-” ঘরে যা। গিয়ে নাস্তা কর। আর তোর মায়ের কী লাগে দোকান থেকে এনে দে।” বলে পকেট থেকে টাকা বের করে ছেলের হাতে দিয়ে বেরিয়ে গেলেন আজমল মিয়া। বাপকে চলে যেতে দেখেই লম্বা করে দম ফেলে সোজা ডাইনিং এ চলে এল পলাশ। জোরে হাঁক দিয়ে মা’কে ডাকল, ” আম্মা নাস্তা দাও। খিদায় পেট জ্বলতেসে।”
মিনিট দশেক পরেই ডিম ভুনা, সব্জি ভাজি আর গরম গরম পরোটা দিয়ে নাস্তা সারল পলাশ। সারা শরীরে এক আরামদায়ক আলস্য। ঠিক করল নাস্তা খেয়ে লম্বা একটা ঘুম দেবে। ঐ কবুতরখানায় রাতে গেলেও চলবে। যদিও ওর অপেক্ষায় বসে থাকবে মেয়েটা। তা থাকুক। একদিন না খেয়ে থাকলে কিছু হয়না। নিজের ঘরে ঢুকে মোবাইল সুইচড অফ করে দিল পলাশ। এটা এখন সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
=====
রেস্টুরেন্টটা সম্ভবত নতুন। ওরা তিনজন মুখোমুখি বসে আছে। ইতোমধ্যে মা’কে ফোন দিয়ে কথা বলে নিয়েছে বারসাত। পেয়ারী জানিয়েছেন এই কনকনে শীতে তিনি এখন আর বেরোতে রাজি নন। তারচে রুম সার্ভিসে কল করে যা দরকার আনিয়ে নেবেন। খরচ একটু বেশী পড়বে কিন্তু কিছু করার নেই। টানা জার্ণি তাকে যথেষ্ট কাবু করে ফেলেছে। ফোন রাখার আগে বারসাতকে দুপুরের খাবার কিনে নিয়ে ফিরতে বললেন পেয়ারী। বারসাত নিজেও জানে, যে খাবার হোটেলে রুমে দেয় সেই একই খাবার বাইরে আরো সস্তায় পাওয়া যায়। আম্মার আবার এসব দিকে কড়া নজর। তিনি বিলাসিতায় বাড়তি খরচ করতে একদম নারাজ।
মায়ের সাথে কথা শেষ করে নিজেদের জন্য নাস্তার অর্ডার দিলো বারসাত। সায়রা তখনও মুগ্ধ হয়ে তুষারপাত দেখছিল। একটু আগেই হঠাৎ করে বরফ পড়া শুরু হয়েছে। সায়রা এর আগে কখনও তুষার পড়া দেখেনি। হঠাত ঘাড় ফিরিয়ে বলল, ” আমি একটু বাইরে গিয়ে তুষার হাতে মাখি ? ”
-” কী দরকার। পরে যাবার সময় নাহয় মেখে নেবেন। এখনই নাস্তা চলে আসবে। খেয়ে একসাথেই বেরোব চলুন।” বারসাত বলল।
-” না, প্লিজ। দুই মিনিট।” বলে বারসাতের অনুমতির অপেক্ষা না করে দৌড়ে বাইরে বারান্দায় চলে গেল সায়রা।
বারসাত শব্দ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে শ্রাবনীর দিকে তাকাল। শ্রাবণী হাসছে। বারসাত এবার দুহাত একত্র করে মুঠোটা মুখের সামনে ধরল। অন্তর্ভেদী চোখে বোনের দিকে তাকিয়ে বলল,
-” একটা কথা জানতে চাইব, অনেস্টলি বলবি? এই মেয়েকে কী আমার বিয়ে করা উচিত হবে ? ”
শ্রাবনী বাইরের দিকে একবার তাকিয়ে বলল,” কেন উচিত হবেনা। মানছি, সায়রা একটু ছেলেমানুষ। ওর বয়সটা দেখতে হবে তো।” কৈফিয়ত দেবার চেষ্টা করল শ্রাবনী । বারসাত বোনের দিকে সামান্য ঝুঁকে রাগ চেপে বলল, ” আমি তো আম্মিকে বলিনি আমার জন্য সাগর সেঁচে মুক্তো তুলে আনেন। এসব আম্মির ফালতু প্রেজুডিস। নিজের ঘরানার বাইরে উনি যাবেন না। নইলে কী মনে করে আমার গলায় এরকম একটা মেয়েকে ঝুলাতে চান যার জীবনবোধ পালকের চেয়ে হালকা। সকালে একজনের প্রেমে পড়ে তো বিকালে আরেকজনের। সুন্দর চেহারার পারফেক্ট ইস্তেমাল।”
-” বিয়ে হয়ে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে ভাইয়া।”
-” এই কথাটা আমার সবচে অপছন্দ জানিস। বিয়ে হয়ে গেলে কিছুই ঠিক হয়না বরং ঠিক হবার জন্য নিজেকে বদলে ফেলতে হয়। সায়রা কতটা বদলাবে জানি না কিন্তু আমার তো নিজের এখন আর বদলানোর বয়স নেই। ওর সাথে আমার বয়সের ডিফারেন্সটাও একটা বড় ব্যপার। এই মেয়ে কতক্ষণ টিকবে আমার সাথে সেটাই প্রশ্ন।”
নাস্তা এসে পড়লে দুজনেই থেমে গেল। হালকা ধমকের সুরে বলল, ” যা, ডেকে নিয়ে আয় কুসুম কুমারীকে।”
-” ভাইয়া, এত রেগে যাচ্ছ কেন। সায়রা মেয়েটা খুব দ্রুত বায়েসড হয় এটা ঠিক। তবে বোঝালে বোঝে।” শ্রাবনী চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে গিয়েও ভাইয়ের কথায় থেমে গেল।
-” কোন কাজে আসেনা এমন কিছু কারোরই কাম্য না। আমি জীবন সঙ্গিনী চেয়েছি। শোকেসে সাজানোর জন্য পুতুল চাইনি যে তোরা একটা মাকাল ফল এনে আমাকে পটানোর চেষ্টা করবি। তোর কাছ থেকে অন্তত সাপোর্ট আশা করেছিলাম আমি।”
-” আচ্ছা, সায়রাকে কী তোমার একদমই পছন্দ না ? ”
-” পছন্দ না বলব না। কিন্তু গত দুদিন ওর সাথে চব্বিশ ঘন্টা কাটানোর পর মনে হল, সি ইজ নট ফর মি। আমার আরেকটু ম্যাচিওরড মেয়ে দরকার। এই মেয়েটা দেখতেই যা ভেতরে সারবস্তু বলে কিছু নেই । মাঝেমধ্যে তো মেজাজ গরম করব ফেলার মত কথা বলে।” বারসাত কথা শেষ করলে শ্রাবনী উঠে দাঁড়িয়ে থমকে গেল। কথায় মগ্ন ছিল বলে এতক্ষণ খেয়ালই করেনি যে কখন সায়রা ফিরে এসেছে। বারসাতের ঠিক পেছনে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে। শ্রাবণী ছটফটিয়ে উঠল। পাছে ভাই আরো কিছু না বলে বসে সেই ভয়ে দ্রুত বলে উঠল, ” আরে তুমি এসে পড়েছ ? আমি তোমাকেই ডাকতে যাচ্ছিলাম। এসো। ” বলতে বলতে সায়রার মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করল বারসাতের একটু আগের বলা কথাগুলো ও শুনেছে কি না। কিন্তু সেরকম কিছু মনে হল না বরং সায়রা আগের মতই হাসিখুশি ভঙ্গিতে বলল, ” তুষার ছুঁয়ে এলাম। দারুণ। আচ্ছা, কই নাস্তা এসে গেছে ? খিদেয় আমার পেট জ্বলছে।”
-” আসুন বসুন। নাস্তা তো সেই কবেই এসেছে।” বলে বারসাত নিজেই নাস্তা এগিয়ে দিল সায়রার দিকে। সায়রা খুশি মনে প্লেট টেনে নিয়ে নাস্তা খেতে খেতেই শ্রাবনীর সাথে গল্পে মেতে উঠল। ভুলেই গেল যে টেবিলে আরেকজন মানুষ আছে। বারসাত কয়েকবার ওদের আলাপে অংশ নিতে গিয়েও থেমে যেতে বাধ্য হল কারণ সায়রা ওর কথার কোন জবাব দিচ্ছে না। (চলবে)