নানান বরণ মানুষ রে ভাই পর্ব-৪

0
1034

নানান বরণ মানুষ রে ভাই
চতুর্থ পর্ব
বড় গল্প
নাহিদ ফারজানা

মেজ আপার শাশুড়ি মা শিশু বিশেষজ্ঞ। তিনি নিজেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে
বড় আপার বাসায় গেলেন। খালাম্মা অনেক কথা বললেন। তাঁর এবং খালুর স্ট্রাগলের কথা। পাশ করার পরে দুজনেই পোস্ট গ্রাজুয়েশন এবং বিসিএস এর পড়া পড়েছেন। দুজনেই প্রথম জীবনে ক্লিনিকে চাকরি করেছেন। কিন্তু যা করেছেন, সব ভালোবেসে। “আমরা খুব তাড়াহুড়ো করিনি। কোন্ বন্ধু পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করে ফেললো, কে খুব ভালো জায়গায় চাকরি পেয়ে গাড়িও কিনে ফেললো,এগুলো নিয়ে আমরা কখনো কষ্ট পাইনি,নিজেদের ইনফেরিওর ভাবিনি। আমার বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি সবাই অন্যদের উদাহরণ আমাদের দিতেন। আমরা বলতাম, ওদের জীবন ওদের,আমাদের জীবন দর্শন আমাদের। তোমার খালু আমার চার বছরের সিনিয়র ছিলেন। কিন্তু আমি পার্ট ওয়ান করে ফেললাম,প্রথম বারে হয়নি,তৃতীয় বারে পাশ করলাম। কিন্তু ও তখনও পাশ করতে পারেনি। তবে পরের বছর ওর বিসিএস হলো। আমি একটা ক্লিনিকে চাকরি করতাম ৬ ঘন্টার জন্য, আমার বাবা-মাকে প্রতিদিন একবার দেখে আসতাম,কি লাগে না লাগে সেগুলোর ব্যবস্থা করে দিয়ে আসতাম, বাসায় এসে শ্বশুর -শাশুড়ির সাথে কিছু কোয়ালিটিফুল টাইম কাটাতাম।আমার শাশুড়ি প্রথম দিকে একটু অন্য রকম ছিলেন। এই একটু মন্দ কথা বলা, একটু বাপের বাড়ির খোঁটা দেওয়া,পড়তে দেখলেই কোনো কাজের অর্ডার করা। আমি আমাকে শান্ত রাখতাম। আমি যদি রিঅ্যাক্ট করি, আমারই অশান্তি। উনার বা আর কারোর নয়। আমি নিজেকে বুঝাতাম,উনার মধ্যে যে কারণে হোক, নৈতিকতা কম।কিন্তু আমিতো আমার নীতি বিসর্জন দিতে পারি না। আমি উনাদের খাওয়া,ওষুধ, চিকিৎসার কোনো অবহেলা হতে দিতাম না,আমার বাপ মায়েরও না। এই ব্যাপারটা আমাকে মানসিক শান্তি দিতো। আমি দিনে একপদ বা দুইপদ বড়জোর রান্না করতাম। বাকিটা করার জন্য একজন মেয়েকে ঠিক করেছিলাম।শাশুড়ির খুব আপত্তি ছিল। কিন্তু আমি উনাকে ধীরে ধীরে মোটিভেট করি। বলি,আম্মা,এর বেশি আমি করতে পারবো না। আমাকে পড়তে হবে না?আমি যখন পাশ করবো,তখন আপনার কোনো নাতি নাতনিকে অন্য ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না।আরও কতোশত কথা। আমি গায়ে নিতাম না। আত্মীয়রা এলে আমি খুবই আদর আপ্যায়ন করতাম, কিন্তু বেশি সময় দিতে পারতাম না। তবে যতোটুকু দিতাম,কোয়ালিটিফুল টাইম দিতাম। যা করতাম,যতোটুকু করতাম,ভালোবেসে করতাম।সময় নষ্ট করতাম না। স্বীকার করো আর না করো,আজকালকার ছেলেমেয়েরা ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ,ইমোতে যথেষ্ট সময় ব্যয় করে আর পড়ার সময় পাইনা,পড়ার সময় পাইনা বলে অশান্তি করে।আমি সব দাওয়াতে অ্যাটেন্ড করতাম না, কলিগের ভাইএর বিয়ে, বান্ধবীর বোনের মেয়ের জন্মদিন, এগুলো আমি সবিনয়ে রিফিউজ করতাম। তবে একদম নিকট আত্মীয় বা খুব প্রিয় বন্ধু বা প্রিয় কলিগ, এদের দাওয়াত সাধারণত মিস করতাম না। আবার বেশি সময়ও থাকতাম না। কারণ তখন আমার পড়ার সময়ের দরকার।ট্রেনিং পিরিওড চলছে। আমার নামে যে কটু কথা হোতো না,তা কিন্তু মোটেই নয়,কিন্তু আমি ভ্যালিড কথা না হলে কথাগুলো ইগনোর করতাম। অপ্রয়োজনীয় বিষয় ইগনোর করতে পারাও একটা আর্ট।ভ্যালিড সমালোচনা হলে আমি নিজেকে সংশোধন করে নিতাম। ইতিমধ্যে তোমার খালুরও পার্ট ওয়ান হয়ে গেছে। সে বেচারা ট্রেনিং পিরিওডে ঢুকে গেছে। ট্রেনিং করে,লেখা পড়া করে,বাপ-মায়ের সাথে কিছুটা সময় অবশ্য ই কাটায়, সপ্তাহে আমার বাপ-মাকে একবার দেখতে যায়,এভাবেই আমাদের জীবন চলছিল। আমরা টাইম ওয়েস্ট করতাম না। কে কি বললো,কে কেমন ব্যবহার করলো,এগুলো নিয়ে ভাবতে গেলেও প্রচুর সময় নষ্ট হয়। সেল্ফ রেসপেক্ট আমাদেরও টনটনে।কিন্তু অনেকে এই শব্দটার খুব অপব্যাখ্যা করে। খুব অল্পেই দেখি অসহিষ্ণু হয়ে যায়। ছেলে মেয়েরা স্বামী বা স্ত্রী কিংবা শ্বশুর বাড়ির নিন্দায় যে সময় ব্যয় করে,সেই সময়ে কয়েক চ্যাপ্টার পড়া হয়ে যায়। ”

মেজ আপা বললো,”কেউ যদি ক্যারিয়ারকে জীবনের সব মনে করে,তাহলে তার বিয়ে করা উচিৎ না, সন্তান নেওয়াতো আরও উচিৎ না।”

খালাম্মা আবার বলা শুরু করলেন,”আমি কিন্তু রীতু-নীতু দু’জনেরই ট্রেনিং পিরিয়ড সম্পর্কে জানি। রীতু,মা,কিছু মনে কোরো না,তুমি পড়েছো অনেক, থিওরি অনেক জানো, কিন্তু রোগীদের প্রতি তোমার সিমপ্যাথি কখনোই ছিলোনা। তুমি শুধু মাত্র পাশ করার জন্য রোগীর শরীরে যতোটুকু হাত দেওয়া দরকার,ততোটুকুই দিতে। রোগীর প্রতি সিমপ্যাথি দূরের কথা,কর্তব্য বোধ পর্যন্ত তোমার নেই। তাহলে কেন ডাক্তারি লাইনে আসা? রোগীর প্রতি দরদ না থাকলে ডাক্তারি পড়া কেন? তুমিতো জুনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবেও খুবই ফাঁকিবাজ। তাহলে তুমি কি মানবতার জন্য নয়, নামের পেছনে ডিগ্রির বহর থাকবে,এরজন্য ডাক্তার হয়েছো? এতোটুকু বাচ্চা ছেড়ে যেতে তোমার এতোটুকু খারাপ লাগবে না?”

“খালাম্মা,এটা আমার পার্সোনাল ব্যাপার। ”
“না,এটা তোমার পার্সোনাল ব্যাপার না। আমি এখানে শুধু তোমার মাঐমা নই, আমি তোমার সিনিয়র, আমি তোমার টিচার।”

“সেটা কর্মক্ষেত্রে, বাসায় নয়।”

“তোমার বাসার লোকেরা তোমার এই ডিসিশনের জন্য সাফার করবেন না?”

“সেটা তাদের সাথে আমি বুঝে নিবো।”

খালাম্মা উঠে দাঁড়ালেন। বড় আপার শাশুড়ি, তিথি ভাবী, আপার ননাস হৈহৈ করে উঠলেন।

“বেয়ান,এভাবে মন খারাপ করে চলে যাবেন না,প্লিজ। আমার নাতনির দোহাই। ”

খালাম্মা বড় আপার শাশুড়ির রুমে বসলেন। বাবুসোনা তখন থেকে মেজ আপার বুকে লেপ্টে ঘুমাচ্ছে। তিথি ভাবী বললেন,”খালাম্মা, আপনাদের স্ট্রাগলের পরের গল্প শুনতে ইচ্ছা হচ্ছে। ”

“পরের গল্প আর কি মা? ট্রেনিং এর মাঝামাঝি সময়ে আমি অ্যাকসিডেন্টলি কনসিভ করি। আমার থ্রেটেন্ড অ্যাবরশন ছিল কমপ্লিট বেড রেস্ট। বেবীকে নষ্ট করার কথা ভুলেও ভাবিনি। বরং দিনরাত আল্লাহকে ডেকেছি,আল্লাহ,আমার বেবীকে ভালো রাখুন। শ্বশুরবাড়িতে ই ছিলাম। শাশুড়ি -ননদ অনেক যত্ন করেছিলেন। তোমরা বলতে পারো,এই সময়ে তো নিজেদের স্বার্থেই তাঁরা সেবাযত্ন করবেন। আমি সেভাবে ভাবিনি।আমি যত্ন পেয়েছি অনেক,সাহস পেয়েছি তাঁদের কাছ থেকে, সেটাই আমার চিরকাল মনে থাকবে।আমার উদ্দেশ্য খোঁজার দরকার কি? নয়মাস পরে আমার মেয়ের মুখ দেখে কি যে অপার্থিব ভালো লাগা কাজ করেছিলো! মেয়ে হওয়াতে শ্বশুর -শাশুড়ি একটু হতাশ হয়েছিলেন। প্রকাশও করেছিলেন কিছুটা, আমি বললাম, আপনারা আপনাদের ছেলেদের যেমন ভালোবাসেন, মৌলি-মৌরিকেও কি সেরকম ভালোবাসেন না? আপনার ছেলেরা আপনাদের যতটুকু সেবা করে,মৌলি-মৌরি কি কোনো অংশে কম করে বাবা-মা?” এর বেশি কথা বাড়াইনি। মেয়ে আমার কালো।এটা নিয়ে ওর দাদী দিনরাত কথা শোনাতেন।আমি আমার শাশুড়িকে একদিন বললাম,”মা,আপনি আমার মেয়েকে কালো বলেন,আমার কোনো আপত্তি নেই। কালোও তো গায়ের একটা রং।আমি চিন্তা করছি আপনাদের নিয়ে।আপনারা যে আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে সমালোচনা করছেন,মন খারাপ করছেন,আল্লাহ আপনাদের উপরে নারাজ হবেন না তো?মন দিয়ে দোয়া করি,আল্লাহ আপনাদের ক্ষমা করে দেন।” আমার বাবা-মাও নাত্নির চেহারা-ছবিতে খুব একটা খুশি হননি। কি আসে যায় তাতে? কে কি বললো আর ভাবলো,এটা নিয়ে রিসার্চ করলেতো আমার নিজের জন্য সময় থাকবে না। আমি ছয় মাস মেয়েকে বুকের দুধ ছাড়া কিচ্ছু খাওয়াই নি।ওর ছয়মাস বয়সে আবার ট্রেনিং শুরু করি। বাবুর কাজ যতোটা সম্ভব,আমি আর ওর বাবা গুছিয়ে রেখে যেতাম। যেমন বাবুকে গোসল করানো, বুকের দুধ ফিডারে জমিয়ে রাখা, খিচুড়ি -সুজি রান্না করে রাখা, শুধু মাত্র বাবুর জন্য একজন মেয়েকে ঠিক করে রাখা। ডিউটি শেষ হলে সোজা বাসায় আসা। গোসল করে কিছু খাওয়া। তারপরে পালা করে বাবুকে রাখা। মেয়েটার হাতে দিলে শাশুড়ি মা,নিজের মা দুজনেই রাগ করতেন।তাঁদের ভাষ্য ছিল সারাদিন মেয়েকে বঞ্চিত করে আবার এখন নিজের কাছে না রাখা কেন? আমি বলতাম,” আমিতো কাজ সেরে এসেছি, গোসল-খাওয়া নিয়ে দেড় ঘন্টা।আধাঘন্টা আমার রেষ্ট দরকার। দুলি তো কেয়ারিং। সবচেয়ে বড় কথা, বাবুতো আপনাদের সুপারভিশনে আছে।আমি জাস্ট আধাঘন্টা রেস্ট নিতাম। তারপরে মাতৃত্বের টানেই বাবুকে কাছে নিতাম।ওকে খাওয়ানো,চোখে চোখ রেখে নানা রকম গল্প করা,এটা অবশ্য ওর জন্মের পর থেকেই আমি করতাম, বাচ্চার বুদ্ধি বাড়ে এমন কিছু খেলা করা আমি করতাম। অত্যন্ত আনন্দ ও গুরুত্বের সাথেই করতাম। এরই ফাঁকে ফাঁকে পড়তাম। ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে পড়তাম। রুগীদের পাশে বসে বসে পড়তাম, এটা খুব ফ্রুটফুল হতো। মেয়ে যখন বাবার সাথে খেলতো বা অন্য কারো কাছে থাকতো,আমি পড়তাম। রাতে শ্বশুর -শাশুড়ির সাথে খেতে বসতাম, উনাদের ভালোমন্দ দেখার জন্য, কোম্পানি দেওয়ার জন্য। আমি ব্যালেন্সড লাইফ লিড করার চেষ্টা করতাম কারণ জীবন কখনোই এককেন্দ্রিক হওয়া উচিৎ না। তোমার খালু দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় পাশ করে গেলেন।আমি তখনও পরীক্ষায় অ্যাপিয়ার করতে পারিনি। বাবা শৈশবে যতোই করুন, মা’কে একটু হলেও বেশি করতে হয়। প্রাকৃতিক নিয়মকে অস্বীকার করা যায় না। পরীক্ষা যখন দিলাম,আল্লাহর রহমতে একবারেই পাশ করে গিয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ, নীতু ভীষণ লক্ষী মেয়ে। ওকে তো ওর থার্ড ইয়ার থেকে চিনি,রোগীদের প্রতি ওর খুব টান,খুব কর্তব্য বোধ। আল্লাহর রহমতে ওর উসিলায় অনেক মানুষের মঙ্গল হবে।আমি বলবো,আমার ছেলের চেয়েও নীতু অনেক ব্রাইট, অনেক সিনসিয়ার। আর যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে। ”

কি সুন্দর খালাম্মার কথাগুলো। দুই আপার শাশুড়ি ই খুব ভালো।

মেডিকেল অ্যাডমিশন টেস্টে আমি চান্সই পেলাম না। আত্মীয় -স্বজন, বন্ধু -বান্ধব, টিচাররা সবাই হতবাক। আমি হলিক্রস কলেজের ফার্স্ট গার্ল ছিলাম, ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় এতো ভালো রেজাল্ট,মেডিকেল অ্যাডমিশন টেস্টে চান্স ই হলো না! আমি নিজেও বুঝতে পারছি না কি হলো। পরীক্ষা অবশ্য খুব একটা ভালো হয়নি। প্রশ্ন কিছুটা পেঁচিয়ে এসেছিলো।

আম্মু উন্মাদ হয়ে গেলেন।
আম্মু সেদিন কি কি করেছেন আর বলেছেন,আম্মু মনে হয় নিজেও জানেননা। আমি চোখ মেলে দেখলাম, আমি হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি। দুই আপা,দুই দুলাভাই, আব্বু,ছোট মামা সবাই উপস্থিত। মেজ আপা ব্যাকুল হয়ে কাঁদছে । ছোট ফুপি হন্তদন্ত হয়ে ঢুকলেন।

কি হয়েছিল জানতে না চাইলেও বড় আপার কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে পারলাম। রেজাল্ট দেওয়া উপলক্ষে বড় আপা সেদিন আমাদের বাড়িতে এসেছিল। আব্বু-আম্মু অফিস থেকে ছুটি নিয়েছিলেন। যখন দেখা গেলো, আমি মেডিকেলে চান্সই পাইনি, আম্মু পাগলের মতো আমাকে মারতে শুরু করেন। চড় থাপ্পড়, তারপরে চুলের মুঠি ধরে সমানে দেওয়ালের সাথে মাথায়
বাড়ি দেওয়া।সাথে অশ্রাব্য গালাগাল। প্রথম দিকে কেউ বাধা দেয়নি,কারণ তারাও আমার উপরে খুব রেগে ছিল, তারপরে অবস্থা যখন চরম পর্যায়ে যায়, আব্বু, বড় আপা আর বাসার ছুটা খালা মিলে প্রাণপণে আমাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে। আমার কপাল,মুখ তখন রক্তে মাখামাখি। আম্মুর শরীরে নাকি অসুর ভর করেছিল।জোর করে আমাকে ছাড়ানোর সময় আম্মু খুব জোরে আমাকে ধাক্কা মারায় আমি চিৎ হয়ে মেঝেতে পড়ি। তারপর আমার পরপর দুবার বমি হয়।আমার জ্ঞান ছিলোনা।আব্বু আমাকে দ্রুত হাসপাতালে আনার ব্যবস্থা করেন। ব্রেইনের সিটি স্ক্যান করা হয়েছে, কপালে চারটা,মাথার পিছনে তিনটা সেলাই লেগেছে। সিটি স্ক্যানে খারাপ কিছু আসেনি। আমাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় আম্মু নাকি বলেছিলেন, “মরলে ওর লাশও এই বাড়িতে আনবি না।”

এগুলো শোনার পরে মুহূর্তেই আমি সম্পূর্ণ অন্য এক মানুষে পরিণত হলাম।

চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here