নীড় পর্ব-২

0
3601

নীড়
রেশমী রফিক
২।।
‘ভালোবাসি’ শুনে শেফালি তেলেবেগুণে জ্বলে উঠলেন। এই ছেলের সাহস তো কম না। কোথাকার বেয়াদব এসে জুড়ছে? ওর বাবা-মা কি ওকে আদব-কায়দা শিখায়নি? সাইফুলও কম যায় না। শেফালির সাথে তার তুমুল ধুন্ধুমার লাগে, এমন অবস্থা। এই পর্যায়ে মধ্যস্থতার ভুমিকায় দাঁড়ালেন দিবার বাবা। দিদারুল সাহেব একদিকে স্ত্রীকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করলেন, অন্যদিকে সাইফুলকে বললেন চিৎকার না করতে। এটা ভদ্রলোকের বাসা।
সাইফুল এই বাসায় ঢুকে এই একজনই সুস্থ মাথার মানুষকে পেয়েছে, যিনি কি না শান্ত ভঙ্গিতে ওর সাথে কথা বলেছেন এতক্ষণ। কপাল ভালো থাকলে এই লোকই হবে তার শ্বশুর। এজন্য মেজাজ গরম হলেও তৎক্ষণাৎ নিজেকে সামলে নিল। দিবাকে নিজের করে পেতে হলে এই সময়ে মাথা গরম করলে চলবে না। হবু শ্বশুরের কথামতো সে চুপচাপ বসে পড়ল সোফায়। তা দেখে শেফালি আরও এক ধাপ গলা চড়ালেন,
– অ্যাই ছেলে, তুমি বসলা কেন? উঠো। বের হও বাসা থেকে। এখনই বের হবা।
সে গ্যাট হয়ে বসে রইল। বলল,
– দিবাকে বিয়ে না করে এই বাসা থেকে এক পাও বাইরে দিব না।
দিদারুল সাহেবও চাইছিলেন, এই মুহূর্তে ছেলেটা চলে যাক। পরে স্ত্রীর সাথে কথাবার্তা বলে, তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে এরপর যোগাযোগ করবেন। ছেলে তো অন্যায় কোনো আবদার করছে না। দিবাকে ভালোবাসে। বিয়ে করতে চায়। আর মেয়েকে একদিন বিয়ে দিতেই হবে। তাহলে এই ছেলের হাতে তুলে দিতে সমস্যা কোথায়? ছেলের বৃত্তান্ত এতক্ষণ যা শুনেছে, আপত্তি করার মতো কিছু নেই।
যাই হোক, সাইফুল নড়বে না। স্ত্রীকেও ঠান্ডা করা যাচ্ছে না। অগত্যা দিদারুল সাহেব অনেকটা জোর করে শেফালিকে ঘরে নিয়ে গেলেন। ঘরের দরজা আটকে দিলেন, যাতে তাদের মধ্যেকার কথাবার্তা বাইরে না যায়।
এদিকে সাইফুল ভেতরদিকে উঁকিঝুঁকি মারছে। তুবা যাচ্ছিল বসার ঘরে। ওর কাছে পানি চাইবার ছলে জেনে নিল দিবার ঘর কোনটা। তারপর চট করে চলে গেল ঘরের ভেতর। দিবা দেয়ালে ঠেস মেরে দাঁড়িয়েছিল চুপচাপ। তার বুকের ভেতর কাঁপাকাঁপি চলছে। ওই মুহূর্তে দরজা ঠেলে সাইফুলকে ঢুকতে দেখে তার চোখ ছানাবড়া। চিৎকার দেবার আগেই সাইফুল মুখ চেপে ধরল ওর। খুব কাছে এসে কপালে আলতো চুমু দিয়ে বলল,
– দেখলেই তো, তোমার বাসা পর্যন্ত চলে আসছি। এরপর তোমার মনে কনফিউশন থাকার কথা না আমাকে নিয়ে। তোমাকে নিজের করে নিয়েই তবে থামব আমি।
ওটাই দিবার জীবনে কোনো পুরুষের খুব কাছাকাছি আসার প্রথম মুহূর্ত। আতঙ্কে জমে গিয়েছিল সে। কেউ দেখে ফেলবে এই অবস্থায়, সেই ভয়ে নয়। সাইফুলের দুঃসাহসের মাত্রা আন্দাজ করতে পেরে। সাইফুল ওকে জড়িয়ে ধরেছিল কিছুক্ষণের জন্য। এরপর কখন বের হয়ে গেছে ঘর থেকে, জানে না। তুবার ডাকে চোখ মেলে দেখল, ঘরে আর কেউ নেই।
ততক্ষণে দিদারুল সাহেব আর শেফালির রুদ্ধদ্বার আলোচনা শেষ হয়েছে। শেফালি মাথা ঠান্ডা করেছেন। তবে শান্ত হননি। বসার ঘরে গিয়ে সাইফুলকে আরেক দফা ঝাড়ি দিলেন,
– অ্যাই ছেলে, তোমার পরিচয় কী? তোমার ফ্যামিলিতে কে কে আছে?
সাইফুলের মুখে হাসি ফুটল। যাক, হবু শাশুড়ি একটু হলেও লাইনে এসেছেন তাহলে। ধৈর্য ধরে নিজের আর পরিবারের বৃত্তান্ত আরও একবার শাশুড়িকে শোনাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। দিদারুল সাহেব থামিয়ে দিলেন। বললেন,
– বাবা সাইফুল, তুমি এক কাজ করো। এভাবে তো মুখে মুখে শোনা যায় না। আমার মেয়ের সারাজীবনের ব্যাপার এটা। তুমি তোমার বায়োডাটা দাও। সাথে তোমার একটা ছবি। দিবার চাচা-ফুপুরা আছেন। মামা-খালাদের সাথেও কথা বলতে হবে। তারা তো জানতে চাইবে তুমি কে ইত্যাদি। আর হ্যাঁ, তোমার বাবা-মাকে দিয়ে প্রস্তাব পাঠালে ভালো হয়। আশা করি, বুঝতে পারছ আমি কী বলতে চাইছি।
সাইফুল আপত্তি করল না। শ্বশুরকে সম্মতি জানিয়ে চলে গেল। শেফালি আবার তেঁতে উঠলেন,
– প্রস্তাব পাঠাবে মানে কী? আমার এইটুক মেয়েকে আমি বিয়ে দিব না।
– আরে, বিয়ে দিব কে বলল? খোঁজখবর নিয়ে রাখি। নাহয় বিয়ের কথা ঠিক হয়ে থাকল। ছেলের ফ্যামিলি আসুক। তাদেরও পছন্দ-অপছন্দ আছে। ব্যাটে-বলে সব ঠিক থাকলে আমরা সময় চাইব। বলব, দিবা মাত্রই ইন্টারে পড়ে। অন্তত অনার্স শেষ হোক। তাছাড়া, সাইফুলেরও নিজেকে গুছিয়ে নেবার দরকার আছে। পড়াশুনা শেষ করেছে মাত্রই। চাকরি করে না। বাবার বিজনেস আছে। কিন্তু ওর ইচ্ছা বিসিএস দেবে। সরকারি চাকরি করবে। সেজন্য বিজনেসে ইনভলভড হয়নি এখন।
এরপর পার হয়েছে চার-চারটে বছর। সাইফুলের পরিবার থেকে দিবার ব্যাপারে একটু-আধটু খুঁতখুঁতি থাকলেও সায়রা-সাইফুলের যৌথ চাপের মুখে তারা মেনে নিয়েছিল। বিয়ে কথাবার্তা পাকাপাকি করে আঙটি পরিয়ে রেখেছিল দিবাকে। তারপর তুমুলে প্রেম করেছে দু’জন। কোনো পরিবার থেকেই মানা ছিল না কোনো। সাইফুল বিসিএস দিয়ে টিকতে পারেনি। তাই প্রাইভেট ব্যাংকে জয়েন করেছিল। এই বছর দিবার অনার্স শেষ বর্ষ চলছে। বিয়ে হবার কথা ছিল এক বছর পর। কিন্তু সাইফুলের মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। স্ট্রোক হয়েছিল তার। ব্রেইন হেমোরেজ হয়েছে। শরীরের একপাশ অবশ হয়ে গেছে। অতঃপর সাইফুলদের পরিবার থেকে তোড়জোর করতে লাগল দিবাকে নেয়ার জন্য। বাড়িতে এখন সংসারের হাল ধরার মতো কাউকে দরকার। সাইফুল একমাত্র ছেলে তাদের। সায়রাও বেশিদিন থাকবে না। ওর আকদ হয়েছে গত বছর। স্বামী প্রবাসী। ওকে নিয়ে যাবার জন্য কাগজপত্র প্রস্তুত করা চলছে। ভিসা হয়ে গেলেই সে চলে যাবে। তার আগেই দিবাকে আনতে হবে সংসারে। অতঃপর এক শুভক্ষণে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেল। দিবা চলে গেল শ্বশুরবাড়িতে।
সে চলে যাবার পর বাসায় কেবল দিদারুল সাহেব, শেফালি আর তুবা। দিনার সারাদিন অফিসে থাকে। তার স্ত্রী আদৃতা শ্বশুরবাড়ি-বাবার বাড়ি মিলিয়ে থাকে। তার পড়াশুনা এখনো শেষ হয়নি। মাস্টার্সের ছাত্রী সে। যতদিন না পরীক্ষা শেষ হচ্ছে, ততদিন অলিখিতভাবে বাবার বাড়িতেই বেশি থাকা হবে তার। কারণ কলেজ ওখান থেকেই কাছে। এর মধ্যেই হুট করে প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়েছে। এখন তো বলতে গেলে বাবার বাড়িতেই থাকা হবে।
যথারীতি শেফালির রক্তচক্ষু সারাক্ষণ তুবার উপর ঘুরঘুর করে। মায়ের কড়া শাসন থেকে নিস্তার পাবার জন্য তুবা পড়াশুনার অজুহাতে প্রায় সারাদিনই বাসার বাইরে থাকে। তার কলেজ ছুটি হয় দুপুর একটায়। বিকেল তিনটা থেকে কোচিং। এই দু’ঘন্টায় বাসায় ফিরে আবার কোচিংয়ের জন্য বের হওয়া মানেই ডাবল খাটুনি। দুপুরের কাঠফাটা রোদে রাস্তায় যানজট এড়িয়ে বাসায় ফেরা, আবার হুড়মুড় করে কোচিংয়ের উদ্দেশ্যে বের হওয়া, সব মিলে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেরি লাগবে না। এই অজুহাতে সে শেফালিকে বলেছে, এই সময়টুকু তার বান্ধবী সুলতানার বাসায় থাকবে। সুলতানার বাসা কোচিংয়ের কাছে। সেও একই কোচিংয়ে পড়ে। ছুটির সময় দুই বান্ধবী একসাথে বাসায় যাবে। এরপর খানিক বিশ্রাম নিয়ে দুপুরে খেয়েদেয়ে একসাথেই কোচিংয়ে যাবে, এর চাইতে ভালো সমাধান আর হতেই পারে না।
সব শুনে শেফালি আপত্তি করেননি। ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা প্রসঙ্গে তিনি একদমই নমনীয়। শুরুতে অবশ্য বলেছিলেন, এত দূরের কোচিংয়ে ভর্তি না হয়ে বাসার কাছের কোনো কোচিং সেন্টারে ভর্তি হবার কথা। তুবা তখন হরেক রকমের অজুহাত দেখিয়েছে। প্রথমত, বাসার কাছে ভালো কোনো কোচিং সেন্টার নেই। কথাটা একদমই মিথ্যে। ওর বাসা থেকে মাত্র আধঘন্টার রিকশা যাত্রার দুরত্বে, হাজিপাড়া মেইন রোডে খুব ভালো একটা কোচিং সেন্টার আছে। আরেকটু বেশি দুরত্বে বলতে গেলে, হাতের বাদিকে রামপুরা ডিআইটি রোডে আর ডানদিকে মালিবাগের দিকে ভালো বেশ কয়েকটা কোচিং সেন্টার আছে। এর মধ্যে একটা হচ্ছে ‘ম্যাবস’। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের কাছে ‘ম্যাবস’ খুবই জনপ্রিয়। এদের নোট পড়ে অনেকেই চোখ বন্ধ করে পরীক্ষায় পাশ করতে পারে। পড়াশুনাতেও এদের বিশেষ কড়াকড়ি আছে। রীতিমতো স্কুলের নিয়ম অনুসরণ করে এরা ছেলেমেয়েদেরকে পড়ায়। কিন্তু তুবা ওর মাকে বলেছে, ম্যাবসের মতো ফালতু কোচিং সেন্টার ইহজনমে আর একটাও আছে কি না সন্দেহ। ম্যাবসে কোচিং করে ওর স্কুলেরই উপরের ক্লাসের দু-একজন পরীক্ষায় ফেল করেছে। এর চাইতে ই,হক কোচিং খুব ভালো পড়ায়। তাদের ওখানে পড়ে ফেল করেছে, এই রেকর্ড এখনো হয়নি।
শেফালির আর কিছু বলার দরকার মনে হয়নি। মেয়ে যেখানে ইচ্ছে কোচিং করুক, ভালো রেজাল্ট করলেই চলবে। আসল কথা হচ্ছে, তুবা ইচ্ছেকৃতভাবেই ই,হক কোচিং সেন্টারে শান্তিনগর শাখায় ভর্তি হয়েছে যাতে এই সময়টুকু বাসায় ফিরতে না হয়। একবারে সন্ধ্যায় ফিরবে। তারপর অল্প কিছু খেয়ে হোমওয়ার্ক করতে বসবে। শেফালি এইসময়ে টিভিতে নাটক দেখেন। পাশে বসে দিদারুল সাহেব খবরের কাগজ পড়েন। কখনোবা স্ত্রীর সাথে গল্পগুজব কিংবা সাংসারিক আলাপ করেন। রাত নয়টা-দশটার দিকে খাবার দেয়া হয় টেবিলে। তখন খেয়েদেয়েই ঘুমিয়ে পড়ে তুবা। দিনের ছুটি ওখানেই। এভাবেই সে মায়ের নাগালের বাইরে থাকার চেষ্টা করে। তবে ই, হক কোচিং সেন্টারে পড়ার জন্য মিথ্যে কথা বলাটা একদমই অমুলক নয়। এই কোচিংটাও ভালো পড়ায়। বাসার কাছে হওয়ায় সুলতানা ওখানেই ভর্তি হয়েছে। তুবার খুব কাছের বান্ধবী সে। যাকে বলে জানের জিগরি দোস্ত। একারণে তুবাও ওর সাথে পড়তে চেয়েছিল কোচিংয়ে।
এ তো গেল সপ্তাহের পাঁচদিনের কথা। বাকি রইল দুই দিন। এই দু’দিন বাসার বাইরে থাকার ব্যবস্থাও করেছে সে। যেমন, শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে তার গানের ক্লাস। দুই ঘন্টা ক্লাস চলে। গানের প্রতি তুবার বিশেষ আগ্রহ নেই। গান পছন্দ করত দিবা। মৌচাক মার্কেটের পাশে ‘হিন্দোল সঙ্গীত একাডেমী’তে ভর্তি হয়েছিল সে। সপ্তাহে দুইদিন ক্লাস করত। জ্ঞানবুদ্ধি হবার পর থেকেই তার আঁচল ধরে গানের স্কুলে যাওয়া হতো তুবার। গান না শিখলেও বোনের পাশে বসে থাকত চুপচাপ। বাসায় মায়ের রক্তচক্ষুর সামনে বসে কালক্ষেপণ করার চাইতে বোনের সাথে গানের স্কুলে বসে থাকাটা তার জন্য বেশি আরামদায়ক ছিল। পরবর্তীতে দিবা গানের স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল পড়াশুনার চাপে পড়ে। বাসায় নিয়মিত রেওয়াজ করত। ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন প্রোগ্রামে গান গাওয়া হতো তার। তখন তুবা নিজে আগ্রহ করে হিন্দোলে ভর্তি হয়েছে। শুক্রবারে বাবা আর ভাইবোন বাসার থাকে বিধায় ওর উপর দিয়ে তুফান খুব একটা যায় না। এমনিতে সে লক্ষী ধরনের মেয়ে। স্কুলে খুব ভালো ছাত্রী না হলেও রেজাল্ট খারাপ হতো না তেমন। তাই তার নামে কখনো সেরকম গুরুতর অভিযোগ আসেনি। একারণে শেফালি ওকে নিয়ে অনেকটাই নিশ্চিন্ত থাকতেন। আবার হতে পারে, পরিবারের সবথেকে শেষ সন্তান বলে ওর বড় ভাইবোনদের সামলে ওর দিকে আলাদাভাবে মনোযোগ দেবার ফুসরত হতো না শেফালির। আর শনিবারে ই,হক কোচিং সেন্টার খোলা থাকে। এই দিন সে সুলতানার সাথে বসে নোট রেডি করার অজুহাতে সকালের নাশতা খেয়ে বেলা দশটার দিকেই বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
এভাবেই চলে আসছে বহুদিন ধরে। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে তুবা এখন কলেজ প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়াশুনার চাপ আগের থেকে বেশি। তার উপর দিবার বিয়ে হয়ে যাওয়ায় মাঠ বলতে গেলে ফাঁকাই। এজন্য তার তথাকথিত ব্যস্ততা আগের চেয়েও বেড়েছে। সারাক্ষণ এমন ভাব করে যেন পড়াশুনাই তার জীবনের একমাত্র ব্রত। এর বাইরে অন্য কিছুতে তার আগ্রহ নেই, ফিরেও তাকাতে চায় না।
তুবার এই ‘এক ঢিলে দুই পাখি’ মারার পরিকল্পনা ওর বান্ধবীরা কমবেশি সবাই জানে। তুবার আম্মাকে ওরাও ভয় পায়। এজন্য তুবার বাসায় যেতে গড়িমসি করে। তুবাও খুব একটা জোর করে না। সে নিজেই বাসার বাইরে থাকতে পারলে খুশিতে গদগদ করে। বান্ধবীদেরকে বাসায় ডেকে নেবে কোন দুঃখে?
সেই মেয়ের আচমকা পরিবর্তন দেখে বান্ধবীদের আক্কেলগুড়ুম। কিছুদিন ধরে ক্লাস শেষ হওয়ামাত্র ঝেড়ে দৌড় দিচ্ছে সে। ক্লাস শুরুর আগেও দেরি করে আসে। যে মেয়ে আগে ক্লাস শুরু চল্লিশ-পঞ্চাশ মিনিট আগেই চলে আসত কলেজে, সে এখন মাত্র পাঁচ মিনিট আগে কলেজের গন্ডিতে পা রাখে। বান্ধবীদের সাথে খুব একটা কথা বলে না। সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ক্লাসের ফাঁকে মোবাইলে গুঁতাগুঁতি করে।
তুবার এই গোমর সুলতানা একটু-আধটু জানে। তার কাছে পেটের কোনো কথাই গোপন রাখতে পারে না তুবা। কিন্তু বাকিরা একদমই অন্ধকারে। তারা নিজেদের মধ্যে ফিসফাঁস করে প্রায়ই। তুবাকে জিজ্ঞেস করলে সে রহস্যময় হাসি দেয়। স্পষ্ট করে কিছুই বলে না। সুলতানা নিজেও ভালোমতো জানে না কিছু। তুবা তাকে খুব বেশি কিছু বলেনি। কেবল বলেছে, ক’দিন যাক। এরপর সব কিছু ক্লিয়ার করব।
(চলবে)
পরের পর্ব আগামীকাল দুপুর তিনটায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here