পাগল প্রেমিকা পর্ব-২৪

0
558

#পাগল_প্রেমিকা
#sharmin_akter_borsha
#পর্ব_২৪
_________
রিমন চোখ খুলে পুরো অবাক হয়ে রইল। বৃষ্টি রিমনের বুকের মধ্যে মুখ লুকিয়ে ঘুমাচ্ছে। বৃষ্টির চুলগুলো রিমনের চোখে মুখে এসে পরছে হাত দিয়ে আলতো হাতে চুল সরিয়ে দিলো। কপালে ঠোঁট জোড়া লাগিয়ে চুলু একে দিয়ে বৃষ্টি কে শক্ত হাতে জরিয়ে ধরল।

পরেরদিন সকালে।

ফোনের এলার্ম বেজে উঠল। পিটপিট করে চোখ খুলল।
রিমনকে এত কাছে মানে এমন ভাবে জরিয়ে ধরেছে দেখে বৃষ্টি এক ঝাকড়া দিয়ে রিমন হাত সরিয়ে দিলো উঠে বসে পরল। এমন ভাবে হাত সরিয়ে দিয়েছে রিমনও ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠে বসল।

বৃষ্টি রিমনের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে। রিমন বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে রইল বেশকিছু ক্ষণ পর প্রশ্ন ছুড়ে মারল।

” সমস্যা কি এইভাবে হাত ঝাড়া দিছো কেন হাতটা যদি ভেঙে যেতো? ”
” গেলে যেতো তা তে আমার কি?”
” কথার মানে কি তোর?”
” তুই আমাকে এভাবে জরিয়ে ধরে রাখছিলি কেন নষ্টা”

“ওই তুই নষ্টা বলবি না বললাম”
” ওই তুই নষ্টা তোকে নষ্টা বলবো না তো কি বলবো?”
“বৃষ্টি”
“তুই আমাকে ধরলি কেন কুত্তা? ”
“আমি তোকে ধরি নাই কুত্তী”
” তো কেডা ধরছিল লুচ্চা ঘুমের মধ্যে ফায়দা উঠাইতে চাইছিলি?”
” কি বললি আমি তোর ফায়দা উঠাইতে চাই”

বৃষ্টিকে হাত দুটো ধরে পেছনে ঘুরিয়ে শক্ত করে চেপে ধরল। কানের কাছে কন্ঠ কঠোর করে বলল…

” তোর ফায়দা উঠাতে চাইলে আমি এখনই উঠাতে পারি ফলে তুই কিচ্ছু করতে পারবি না। কিন্তু আমি ওতটাও জগন্য না যে একটা মেয়ে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার ফায়দা উঠাবো আর তোর টমাটোর মতো বড়বড় চোখ দু’টো বের করে দেখ আমি তোর জায়গায় যাই নি তুই ঘুমের মধ্যে আমার দিকে এসে আমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমাই ছিলি আমিও তোকে দূরে সরাই দিতে পারি নাই তাই ”

” কি তাই হা কেন পারিস নাই আগে যেমন সরাই দিছিলি ওই ভাবেই সরাই দিতি কেন দেছ নাই হার্টলেস ”

“বৃষ্টি”

“সর কোনো কথা বলবি না আমার সাথে তুই ”

বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে ঢুকে পরল। ২০মিনিট পর বের হলো নীল রঙের একটা গোল জামা পরে। চুলগুলো টাওয়ালের সাথে পেচিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলগুলো হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে শুকচ্ছে। এক মনে ফোন স্ক্রল করছে মাঝেমধ্যে আড় চোখে তাকাচ্ছে আয়নার দিকে সাথে দাঁত চেপে চোখ সরিয়ে নিচ্ছে।
কারন সে ভালোই বুঝতে পারছে এসব কিছু ইচ্ছে করে করছে ওকে জ্বালানোর জন্য এটা ভেবেই আরও রাগ হচ্ছে চোখে হালকা কাজল দিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে আছে আর বলছে…

” নিজেই নিজের উপর এত ক্রাশ খাই অন্য দের কথা তো বাধই দিলাম। ”

আয়নার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে একটা ফ্লাইং কিস ছুড়ল নিজের প্রতিচ্ছবির দিকে সেটা আবার দেখল খাটে পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকা হার্টলেস টায়। চুলগুলো নাড়তে নাড়তে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। বৃষ্টি চলে যাওয়ার পর রিমন উঠে অন্য একটা টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকল।

খানিকক্ষণ বাধ……

খুশিতে পাগল হয়ে ঘুরতে ঘুরতে হুট করেই দরজা ধাক্কা দিয়ে ঢুকে পরলাম রুমের মধ্যে একি দেখলাম।

দিলাম হুট করেই এক চিৎকার ” আহহহহ ”

আমার চিৎকার শুনে পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দৌঁড়ে এসে আমাকে রুমের মধ্যে ঢুকিয়ে দরজা চাপিয়ে দিলো। রাগী তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে আমি কিছু বলতেও পারছি না শুধু তাকিয়ে আছি। কিভাবে বলবো একহাত দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরেছে অন্য হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরেছে।

কন্ঠ কঠোর করে শক্ত ভাবেই প্রশ্ন ছুড়ল।

” লজ্জা করে না তোর নক না করেই একটা ছেলের রুমে চলে আসিস। এখন চুপ আছিস কেন কিছু বল ”

কি ভাবে বলবো ইচ্ছা করছে ওর চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে জানালা দিয়ে বাহিরে ফেলে দেই। চোখে কি কম দেখে নাকি অসহ্য হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে আছে আর বলছে কিছু বলছি না কেনো আজব নয় কি একেই বুঝি বলে চোখ থাকিতে অন্ধ।
মনে মনেই বললাম।

আরও দুইবার বলল “কিছু বলছিস না কেন?
এবার আমার রাগ উঠল অন্য হাত দিয়ে ওর হাত সরিয়ে দিলাম ঝাড়া দিয়ে ধাক্কা দিলাম। আমার থেকে একটু দূরে সরে গেলো। ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে রইল আমিও দাঁতে দাঁত চেপে বলতে শুরু করলাম।

” চোখে কি কম দেখেন হা মুখে হাত চেপে ধরে রাখছেন আর বলছেন কিছু বলছি না কেন? ”
“ও সরি খেয়াল করিনি”
“খেয়াল করবেন কিভাবে চোখ থাকলে তো করবেন”
” তুমি কিন্তু অপমান করছো আমাকে”
“আপনার অপমান বোধ হলে আমার কিছু করার নেই। আর রুম টা আপনার একার নয় আমার ও তাই যখন তখন যেখানে সেখানে শুধু টাওয়াল পরে দাঁড়িয়ে থাকবেন না।”
” কেন তোর কি জরিয়ে ধরতে ইচ্ছে করে নাকি?”
“নাহহহ টাওয়াল টা টান দিয়ে খুলে দিতে ইচ্ছা করে যতসব নষ্টার কারবার। ”

কথাটা বলে সামনে থেকে সরে গেলো হাঁটতে হাঁটতে আবারও পেছনে ঘুরে তাকালো আর বলল..

” রেডি হন তাড়াতাড়ি আমাদের নিতে আসছে আমার আব্বু, ফুপা , চাচ্চু তো তারাতাড়ি রেডি হন! ”

কথাটা বলে আবারও রুম থেকে এক প্রকার দৌঁড়ে বেরিয়ে গেলো।

রিমন ও বৃষ্টি দু’জনেই পরিপাটি হয়ে নিচে চলে আসল। বৃষ্টি মা বলে ওর শাশুড়ী কে জরিয়ে ধরল আর বলল।

” চিন্তা করো না আমি কালকেই চলে আসবো তোমাকে কাছে ”

উনি বৃষ্টির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন!

” পাগলী মেয়ে দুই তিন দিন থেকে আসিস পরে আবার কবে না কবে যেতে পারবি এই টুকু তো পথ নয় সাবধানে থাকিস আর আমার ছেলেটার উপর নজর রাখিস ”
“ঠিক আছে মা”

বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
দু’জনে গাড়ির সাইডে বসেছে মধ্য খানে এতো জায়গা ফাঁকা রিমন মোবাইল স্ক্রল করছে। বৃষ্টি জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে আজ ওর অপেক্ষার অবশন ঘটবে বাড়ি গিয়েই তাপ্পি কে জিজ্ঞেস করবে কেনো সে নাটক করেছিল পালিয়ে না গিয়েও কেনো পালানোর অভিনয় করে ছিল সব কিছু জানতে চাইবে আজই এই সব ভাবচে মনে মনে।

সন্ধ্যার পর…
সবাই বাড়ির গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে কখন ওরা আসবে। তার ঠিক ১০মিনিট পর বাড়ির সামনে এক এক করে গাড়ি ঢুকল।

গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির সামনে এসেই বৃষ্টি সবাইকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়ল!

” তাপ্পি কোথায়? ”

সবাই বৃষ্টির কথায় রীতিমতো অবাক হলো। দুইদিন পর এসেছে কোই ওকে সবাই ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করবে উল্টো এসেই তনি’র কথা জিজ্ঞেস করছে।

বর্ষা হাত বাড়িয়ে কিছু জিজ্ঞেস করতে নিলেই বৃষ্টি ওকে থামিয়ে দিয়ে আবারও একই প্রশ্ন ছুড়ল..

” তাপ্পি কোথায়? ”

রিমা বৃষ্টির চোখ দেখলে এমনি ভয় পায় সে ভয়েই গড়গড়িয়ে বলে দিল।

” তাপ্পি তাপ্পির রুমে ”

আর একমিনিট ও দাঁড়ালো না সবাইকে ঢেলে ভেতরে ঢুকে পরল পেছন থেকে সবাই ডাকল অন্তত বরন তো করতে দিয়ে যা। কিন্তু শুনল না সিঁড়ি দিয়ে দৌঁড়ে চলে গেলো। গেইটের সামনে একা জামাই সাথে এত শশুড় বাড়ির লোক আনইজি ফিল করছে। বর্ষা রিমনের দিকে এক নজর তাকালো চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ ফুটে উঠল। সেখান থেকে চলে আসতে নিলেই রিমা বর্ষা’র হাত ধরে নিলো আর বলল…

” জান ওই দিকে তাকা….”

রিমা’র কথা শুনে বর্ষা ভ্রু কুঁচকে পেছনে তাকালো দেখে তো চোখ কপালে উঠে গেলো। বর্ষা’র পাশ দিয়ে মুন্নী বলে উঠল…

“OMG.. ”

বর্ষা, রিমা ও মুন্নীর দিকে ঘুরে তাকালো আর দাঁতে দাঁত চেপে কন্ঠ কঠোর করে বলল!

” মনে হচ্ছে জীবনে….

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here