পারমিতা” পর্ব-১

0
4810

গল্পঃ #পারমিতা
পর্ব ১
_নীলাভ্র জহির

২৬ জুন পারমিতার জীবনে একটা অভিশাপের নাম। এই দিনেই ওর জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর ঘটনাগুলো ঘটেছিল। আজ সেই ২৬ জুন। রাগে ও ক্ষোভে পারমিতা ক্যালেন্ডারের ২৬ তারিখের ওপর সমানতালে কালো কলম দিয়ে ঘষে যাচ্ছে। ঘষতে ঘষতে ক্যালেন্ডারের পাতা ছিঁড়ে গেল। মন শান্ত হলো না তবুও। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে পারমিতা মেঝের ওপর বসে পড়লো। কান্না পাচ্ছে ওর। ক্যালেন্ডার দেয়াল থেকে নামিয়ে আবারও শুরু করে দিলো ২৬ তারিখকে পুরোপুরি বিলুপ্ত করার নেশা।
পাশের ঘর থেকে ছুটে এলো সামান্তা। পারমিতাকে জড়িয়ে ধরে ক্যালেন্ডার সরিয়ে রাখলো সে। মৃদু স্বরে বললো, পাগল হয়ে গেছিস তুই? রাখ ওটা।
পারমিতা সামান্তার বুকে ঢলে পড়ে ব্যকুল সুরে কেঁদে উঠলো। এই জীবনটা আর ভালো লাগছে না তার। এত অসহাত্ব, এত যন্ত্রণা আর ভালো লাগছে না।
সামান্তা বলল, প্লিজ তুই শান্ত হ। সব ঠিক হয়ে যাবে।
– কিচ্ছু ঠিক হবে না। রাসিফের সাথে জড়িয়ে থাকা সব স্মৃতি আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। ভালো স্মৃতিগুলো বারবার আমাকে যন্ত্রণা দেয়, ওকে ফিরে পেতে ইচ্ছে করে। আর খারাপ স্মৃতি গুলো আমাকে বিষ দিয়ে মেরে ফেলতে চায় সামান্তা। আমার ওকে একদমই সহ্য হয় না।
– তুই শান্ত হ। জীবনটাকে নতুনভাবে গড়ে তোল। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে দোস্ত। প্লিজ।

পারমিতা কান্নায় ভেঙে পড়লো। ছোট্ট সোনামণি প্রীতুল দরজার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওর চোখেমুখে ভয়, বিস্ময়। মাকে কাঁদতে দেখে ওরক কান্না পাচ্ছে। একটা হাত মুখে দিয়ে শান্ত ভঙ্গীতে একদৃষ্টে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে প্রীতুল।

সামান্তা প্রীতুলকে ডেকে বলল, আসো বাবাই। এখানে আসো।
প্রীতুল কোনো সাড়া দিলো না।
পারমিতা একবার ইশারায় ডাকতেই ছুটে এসে মায়ের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো প্রীতুল। ওর বয়স চার বছর। তবে প্রীতুলের বয়স চার হলেও ওর মায়ের বেলায় সেটা দুঃসহ চার বছর। কতটা যন্ত্রণা বুকে চেপে প্রীতুলকে মানুষ করার যুদ্ধে নেমেছিল সে! অথচ সব যুদ্ধ আজ মলিন হয়ে গেল কোনো এক অচেনা স্রোতে।

পারমিতা প্রীতুলকে ধরে বলল, তোর আব্বু নেই রে আর। তোকে বাবা ছাড়া কষ্ট করে বড় হতে হবে। তাও কি লাভ হবে আমার। বড় হলে ঠিক তুই তোর ওই পাষাণ আব্বুর কাছে চলে যাবি। এই দুঃখিনী মা টাকে তোর কি মনে থাকবে প্রীতুল?
প্রীতুল ফ্যালফ্যাল করে পারমিতার দিকে তাকিয়ে রইলো। জানতে চাইল, আব্বু কোথায় গেছে আম্মু?
– তোর আব্বু আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে। আমাকে! যে আমি ওর সব নির্যাতন সহ্য করেও ওর সাথে সংসার করে গেছি। আজ ও আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে প্রীতুল।
সামান্তা বলল, বাচ্চা ছেলেটাকে এসব বলছিস কেন?
– ওর জানা দরকার। ওর বাবা মায়ের ডিভোর্স হয়ে গেছে সেটা ওর জানা দরকার। প্রীতুল, তোর আব্বু আমাকে ঠকিয়েছে। যে মানুষটা এতগুলো দিন বুকে পাথর চেপে সব সহ্য করে গেছে তাকেই ছেড়ে দিয়েছে তোর আব্বু।

প্রীতুলকে বুকে জড়িয়ে ধরে ব্যকুল হয়ে কাঁদতে থাকে পারমিতা। ২৬ জুন ওর জীবনে বিয়ের প্রহর এসেছিল। ২৬ জুন প্রথম মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরেছিল রাসিফ। আবার এই ২৬ জুনেই তার ডিভোর্স হয়ে গেলো। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, গতবছর ২৬ জুনে বাবা মারা গেছেন। পারমিতা কান্নাভেজা চোখে ক্যালেন্ডারের দিকে তাকালো। সেখানে ২৬ তারিখটা আর নেই। কিন্তু ক্যালেন্ডারে না থাকলেও তো জীবন থেকে দিনটা হারিয়ে যাবে না। জীবনের প্রতি পদে পদে এই তারিখটা তার সামনে চলে আসবে। কারণ, এই তারিখ জীবনে না আসলে প্রীতুলও তার জীবনে আসতো না। সব স্মৃতি মুছে ফেলা গেলেও এই সন্তানকে সে কখনো মুহুর্তের জন্য ভুলতে পারবে না।

দুই বছর পর-
অফিসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরের পরিবেশ দেখছে পারমিতা। আজকের দিনটা অনেক রোদ ঝলমলে। দুপুরের খাবার খেয়ে বিরতির এই সময়টা প্রতিদিন বারান্দায় এসে দাঁড়ায় সে। আঠারো তলা বিল্ডিংয়ের ওপর থেকে চেনা শহরটাকে দেখতে ওর ভীষণ ভালো লাগে। ইট পাথরের শহরেও গাছের সঞ্চার খুঁজে পায়।
ম্যানেজার সাহেব ডাকছেন। জরুরি একটা ফাইল দেয়ার কথা আজ। একটা নতুন ফ্যাক্টরির সাথে ব্যবসায়ীক চুক্তি হচ্ছে। পারমিতার মতো সাধারণ একজন কর্মচারির সেখানে তেমন কোনো কাজ নেই। একটাই কাজ, চুক্তির দিন আয়োজিত অনুষ্ঠানে যাদেরকে দাওয়াত করা হবে, সবার ঠিকানা দেখে দেখে তাদের কাছে দাওয়াতের চিঠি পাঠানো। এই অফিসে সে হচ্ছে সবচেয়ে নিম্ন পোস্টের একজন কর্মকর্তা। তবে এই চাকরি তার আর তার ছেলের জীবনে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। সামান্তার বয়ফ্রেন্ড যদি দুই বছর আগে এই চাকরিটার ব্যবস্থা করে না দিতো, আজ নিশ্চয় তার অস্তিত্বই থাকতো না। প্রীতুলকেও স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়া হতো না।
ম্যানেজার সাহেবের রুমে ঢোকার অনুমতি চাইলো পারমিতা। আজ ওনার মুখে মিষ্টি হাসি। পারমিতাকে বললেন, আপনার জন্য একটা সুখবর আছে।
ধক করে উঠলো পারমিতার বুক। অফিসে সুখবর কী হতে পারে? নিশ্চয় প্রোমোশন। এই একটা দিনের জন্য বহু দিন রাত ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছে সে।
স্যার বললেন, বসুন মিস পারমিতা। আপনি ভালো আছেন?
– জি স্যার। আপনি ভালো আছেন?
– হ্যাঁ ভালো আছি। এইযে আপনার ফাইল। এটা পুরোটা পড়ে দেখবেন। যে যে কোম্পানির নাম উল্লেখ আছে তাদের সবগুলো নোট করে সবার নাম ঠিকানা রেডি করে ফেলুন। তারপরের কাজ কি বুঝতেই পারছেন। সবাইকে ইনভাইটেশন লেটার পাঠানো।
– জি স্যার। থ্যাংক ইউ।
– সুখবরটা শুনতে চাচ্ছেন না?
– হ্যাঁ স্যার। শুনতে চাচ্ছি। বলুন প্লিজ।
পারমিতার হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। সুখবর শোনার জন্য তার একদমই ধৈর্য ধরে বসে থাকতে ইচ্ছে করছে। কয়েকটা মাস ধরেই সে ধৈর্য্য ধরে প্রমোদ গুণছে। কবে শুনবে সেই সুখবর? অবশেষে…
নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল পারমিতার। ম্যানেজার স্যার এখনো কেন বলছেন না?
পারমিতার অপেক্ষার অবসান ঘটানোর চেষ্টা করলেন ম্যানেজার। বললেন, আপনাকে কিন্তু মিষ্টি খাওয়া হবে মিস পারমিতা। আপনি খাবেন না আমি খাবো বলুন? হা হা হা।
পারমিতা লাজুক ভঙ্গীতে হাসলো। ম্যানেজার বললেন, এ কি আপনি নিউজ না শুনেই লজ্জা পাচ্ছেন। মাই গড!
আবারও হাসিতে ফেটে পড়লেন ম্যানেজার জালালুদ্দিন। হাসি ফুরালে বললেন, শুনুন। আপনাকে আর অপেক্ষা না করাই। আপনার কপাল তো খুলে গেছে মিস পারমিতা।
পারমিতা চোখ তুলে এক পলক ম্যানেজারকে দেখলো। ওর খুব লজ্জা লাগছে। সত্যিই তার কপাল খুলে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটবে যদি প্রোমোশন হয়। কারণ অনেক টাকা ধার হয়ে গেছে। প্রীতুলের ভালো জামাকাপড় নেই। বেতনটা বাড়লে ওর জন্য খুবই ভালো হয়।

ম্যানেজার বললেন, শুনুন। আপনার জন্য একটি বিয়ের প্রস্তাব আছে।
মুহুর্তেই বজ্রপাতের ন্যায় বিস্ফারিত হলো পারমিতার চোখ। তারমানে, প্রোমোশন নয়!
স্যার বললেন, আমার পরিচিত। বিআরসি কোম্পানির এমডির ছেলে। রিসেন্টলি বিজনেসে জয়েন করেছে। সেও কয়েকদিন পর এমডি হয়ে যাবে। বাবার নিজস্ব বাড়ি আছে এই শহরে। আর ব্যাংক ব্যালেন্স নিশ্চয় আপনার ধারণা করতে কষ্ট হবে না? এমডি সাহেব আমাকে বলেছিলেন ওনার ছেলের জন্য একটা সাধারণ, মার্জিত, লক্ষী মেয়ে খুঁজে দিতে। কোন ফ্যামিলির মেয়ে সেটা নিয়ে ওনার ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। আমার সবার আগে আপনার কথাই মাথায় এসেছে। আমি আপনাকে হোয়াটসঅ্যাপে ছেলের ছবি পাঠিয়ে দেই। চোখ বন্ধ করে রাজি হয়ে যান মিস পারমিতা। আমি আপনাকে খারাপ কিছুর সন্ধান দেবো না।

পারমিতা স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো। ম্যানেজার স্যার জানেন না পারমিতা ডিভোর্সি, স্যার এটাও জানেন না যে পারমিতার জীবনে প্রীতুল নামে একজন আছে। তার একমাত্র সন্তান, তার জীবনে বেঁচে থাকার অবলম্বন। এইমুহুর্তে দুবেলা ভালোমতো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকাটাই পারমিতার স্বপ্ন। এর জন্য প্রোমোশন ভীষণ দরকার তার। গত দুই বছরে সে অনেক জায়গায় চাকরির চেষ্টা করেছে। কিন্তু অভিজ্ঞতা ছাড়া ভালো চাকরি কেউই দিচ্ছে না। প্রোমোশনের আশায় এখানেই স্বল্প বেতনে কাজ করে গেছে সে। আজকে যা ভেবেছিল, তাও সেগুড়ে বালি।
ম্যানেজার সাহেব বললেন, আপনি খুশি হোননি? এনিওয়ে, আপনার কি প্রেমিক আছে নাকি?
– না স্যার। কিন্তু এই মুহুর্তে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব না।
– তাহলে কোন মুহুর্তে সম্ভব? এই মুহুর্তে তো করতে বলছি না। যে মুহুর্তে সম্ভব হবে সেই মুহুর্তেই করবেন।
– স্যার আমার জন্য সেই মুহুর্ত আর কখনো আসবে না। আমি দুঃখিত স্যার। আপনাকে কষ্ট দিয়ে ফেললাম। আমি জানি আপনি আমার ভালোর জন্যই বলছেন। কিন্তু আমার পক্ষে কাউকেই বিয়ে করা সম্ভব না। সরি স্যার। আমি আসবো এখন?
হতবিহ্বল অবস্থায় জালালুদ্দিন সাহেব বললেন, ঠিক আছে যান। কিন্তু বুঝতে পারছি না আপনি কেন বিয়ে করতে চাইছেন না। এত ভালো সম্বন্ধ কপাল গুণে আসে।

পারমিতা ম্যানেজারের রুম থেকে বেরিয়ে এলো। সত্যিই এমন সম্বন্ধ কপাল গুণে আসে। তারও এসেছিল। আজ থেকে সাত বছর আগে। সবেমাত্র অনার্সে ভর্তি হয়েছে সে। ভার্সিটি লাইফ নিয়ে অনেক আনন্দে দিন কাটছিল। এর চেয়ে সুন্দর সময় যেন জীবনে কখনো আসেনি। হঠাৎ একদিন মা বললেন, ভালো সম্বন্ধ এসেছে। কালকে দেখতে আসবে।
পারমিতা বলেছিল, আমি এখন বিয়ে করতে চাই না আম্মু। আমার মাত্র লাইফ শুরু হলো।
– বিয়ে হলে কি লাইফ শেষ হয়ে যায়?
– মা আমি পড়াশোনা শেষ করবো।
– বিয়ের পরে করিস।
– বিয়ের আগে আর পরের লাইফ এক না। তুমি এটা আমার চাইতে ভালো জানো। নিজে সারাদিন বলো বিয়ে করে ভুল করছো আর আমাকে বিয়ে দিতে চাইতেছো?
– চুপ থাক। বেশি কথা বলিস না। যা বলতেছি শোন। কালকে ভালোমতো ওদের সামনে যাবি। ছেলে সরকারি চাকরি করে। এমন সম্বন্ধ কপাল গুণে আসে।

কথাটা এখনো কানে বাজছে পারমিতার। আজও সেই একই কথার প্রতিধ্বনি। কপাল গুণে এসেছিল বলেই তো আজ তার জীবনের এমন ভয়ংকর পরিণতি। প্রীতুল জন্মের সময় পড়াশোনা একেবারে বন্ধ হয়ে গেল। বিয়ের পরেও নাকি পড়াশোনা করা যায়! মায়েরা এমন অদ্ভুত কথা কিভাবে বলে পারমিতা জানে না। কিসের লোভে তারা মেয়েদেরকে বিয়ে দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে পারমিতা তাও জানে না। এতটা অসহায়ত্ব নিয়ে সে বেচে আছে, আজও কি মা একই কথা বলবে?

বাসায় ফিরতেই প্রীতুল ছুটে এসে বলল, আম্মু আমার জন্য কি এনেছো?
– ফ্রুটস এনেছি বাবাই।
– চকোলেট আনোনি? আইসক্রিম আনোনি?
– তোমার তো চকোলেট খাওয়া বারণ। ডাক্তার নিষেধ করেছে না? দাঁতে পোকা হচ্ছে। আর তোমার এখন আইসক্রিম খাওয়া যাবে না বাবা। রাত্রিবেলা কাশি হয় তোমার।
– না না। তোমার সাথে কথা বলবো না। তুমি যাও এখান থেকে। আমি একা বাসায় থাকবো।
– বাবা এরকম করে না। আমার লক্ষী ছেলে না তুমি?
– আমি লক্ষী হতে চাই না। আমাকে তুমি চকোলেট এনে দাও। আইসক্রিম এনে দাও।
– তোমাকে ম্যাংগো জুস বানিয়ে দিচ্ছি সোনা। আসো। আম্মু ফ্রেশ হয়ে আসি?
– না। তুমি বাসায় ঢুকতে পারবে না। আমি একা থাকবো এখানে।
– তোর আব্বুর মতো? থাক না একা। আমি চলে গেলে সবার ভালো হয়। তোরও ভালো হবে তাইনা?

অনেক্ষণ অদ্ভুত ভঙ্গীতে প্রীতুল পারমিতার দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর ওর গলা জড়িয়ে ধরে বললো, তুমি কোথাও যেও না আম্মু। আমার সাথে থাকো। আমি চকোলেট আইসক্রিম কিছু খেতে চাই না। তোমার লক্ষী ছেলে আমি।
পারমিতার চোখ পানি চলে এলো। একটা মানুষ হলেও তার জীবনে আছে, যে তাকে বুঝতে পারে। এইটুকু ছেলের এই বোধগম্যতা দেখে অবাক হয় ও। প্রীতুলকে জড়িয়ে ধরে বলল, আমি ফ্রেশ হয়ে আসি। আজকে তোমাকে পুডিং বানিয়ে দেবো সোনামণি।
– পুডিং! ইয়েএএ অনেক মজা হবে।

হাততালি দিচ্ছে প্রীতুল। পারমিতা প্রীতুলের কপালে একটা চুমু দিয়ে নিজের ঘরে যায়। গোসল সেরে বেরিয়ে এসে দেখে প্রীতুল টেবিলের ওপর ডিম, দুধ, চিনি, ব্লেন্ডার সবকিছু জড়ো করে রেখেছে। হেসে ফেললো পারমিতা। রান্নাঘর ঢুকে খাবার আনতে গেলে প্রীতুল বলল, আম্মু আমার পুডিং?
– ভাত খেয়ে বানিয়ে দেই?
– এখুনি বানিয়ে দাও।
– আমার খিদে পেয়েছে বাবাই সোনা।
– আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি ভাত খেয়েই বানিয়ে দাও।
পারমিতা মুচকি হাসলো। প্লেটে ভাত নিয়ে খেতে বসে গেল সে। ওর গায়ে হেলান দিয়ে খেলনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেল প্রীতুল। কিছুক্ষণ পর ভাতের প্লেট নিয়ে টেবিলের ওপর রেখে বলল, অনেক ভাত খেয়েছ। আগে পুডিং তারপর বাকি ভাত খাবে।
পারমিতা বাধ্য হয়েই হাত ধুতে গেল। ছেলের বায়না মতো পুডিং বানানো শুরু করলো সে। টেবিলের ওপর পরে রইলো অর্ধেক খাওয়া ভাতের প্লেট। মায়েদের জীবন এমনই। সিঙ্গেল মা’য়ের জীবনটা আরও বেশি বেদনার। কেউ তাদের কষ্ট বুঝার নেই, কেউ নেই পাশে থাকার। একা একা সন্তানের সব আবদার মিটিয়ে এভাবেই একাকী মায়েরা বেঁচে থাকে।

চলবে কি??


https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1348889065492859&id=439669216414853

https://www.facebook.com/439669216414853/posts/1354250008290098/

https://www.facebook.com/439669216414853/posts/1354940311554401/

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1356930984688667&id=439669216414853

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1357976371250795&id=439669216414853

https://www.facebook.com/439669216414853/posts/1358625194519246/

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1360007717714327&id=439669216414853

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1360893620959070&id=439669216414853

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1361944004187365&id=439669216414853
১০
https://www.facebook.com/439669216414853/posts/1374736602908105/
১১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here