পারমিতা” পর্ব-৪

0
2673

#পারমিতা
পর্ব ৪
_নীলাভ্র জহির

দুশ্চিন্তায় হাত পা কাঁপছে পারমিতার। তৌশিকের নাম্বার থেকে বেশ কয়েকবার কল এসেছে, পারমিতা রিসিভ করে নি। গা ঠান্ডা হয়ে আসছে ওর। তৌশিকের কথা না শুনলে নিশ্চিত ওর চাকরি চলে যাবে। এসব ভেবে ভেবে যখন পারমিতা অস্থির, ঠিক এমন সময়ে দরজায় ঠকঠক শব্দ হলো। একবার না, বেশ কয়েকবার। পারমিতা ঢোক গিলল। কিন্তু উঠলো না দরজা খোলার জন্য। আবারও শব্দ করে সে চলে যাক। দেখা যাক কী হয়!
পারমিতা ঘামতে শুরু করেছে। সামান্তাকে কল দিয়ে কোনো পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। সামান্তাকে কল দেয়ার জন্য মোবাইল হাতে নিয়েছে, সে সময় দরজার ওপাশে তৌশিকের গলা শোনা গেল। বলছে, পারমিতা দরজা খুলুন। আপনি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন? ঘুমিয়ে পড়েছেন নাকি? পারমিতা..

ঘুম, হ্যাঁ এই ঘুমের অজুহাত দিয়ে আজকের রাতটা কাটিয়ে দেয়া যাবে। আগামীকাল দেখা হলে তৌশিককে বলবে পারমিতা ঘুমিয়ে পড়েছিল তাই ফোন রিসিভ করতে পারেনি। কিন্তু আগামীকাল রাতেও তো একই ব্যাপার ঘটবে। শুধু রাতেই ঘটবে তা নয়, দিনেও তো সাইমুন খানের রুমে ওকে পাঠাতে পারে এই শয়তান তৌশিক। পারমিতার মাথা ঘুরছে। কোনোভাবে যদি এই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যেত!
পারমিতা আস্তে আস্তে উঠে রুমের লাইট জ্বালালো। ওর দম আটকে আসছিল। অন্ধকারে ওর ভয়টা যেন আরও বেড়ে গেছিল। দরজার ওপাশে তৌশিকের গলা আর শোনা যাচ্ছে না। কোনো শব্দ নেই। বোধহয় চলে গেছে তৌশিক। কিন্তু ভয়টা এখনো কাটছে না পারমিতার। ফোনে ভাইব্রেট হচ্ছে। তৌশিকের নাম্বার থেকে এসেছে কল। এইমুহুর্তে সামান্তাকে কল দেয়াও যাবে না। কারণ তৌশিক কল দিয়ে ওয়েটিং দেখলে বিপদ আরও ঘনাবে। তারচেয়ে বরং চুপচাপ হয়ে থাকাটাই ভালো। কাল কি হয় দেখা যাবে।

কিছুক্ষণ নিরবে কেটে গেল। আজ যেন সময়কে কেউ বেঁধে রেখেছে। অনেক্ষণ আগে ঘড়িতে দেখেছিল সাড়ে দশটা। এখনো এগারোটা বিশ। রাত ফুরাচ্ছে না আজকে। এদিকে বাইরে তুমুল বর্ষণ এখনো চলছে।
অনেক্ষণ পর আবারও দরজায় ঠকঠক শব্দ। এবার তৌশিকের গলা সামান্য ঝাঁঝালো। রেগে গেছে তৌশিক। কারণ এত বার কল দিলে কিংবা দরজায় শব্দ করলে ঘুমন্ত মানুষেরও ঘুম ভেঙে যাবে। পারমিতা ইচ্ছে করেই সাড়া দিচ্ছে না, সেটা বুঝতে অসুবিধা হবে না তৌশিকের।
পারমিতা ঘরে পায়চারি করতে লাগল। দরজার ওপাশে ঠকঠক শব্দ বন্ধ হয়েছে। এবার বেজে উঠলো বিছানার পাশে রাখা টেলিফোন। পারমিতা বুঝতে পারল না কি করবে। এই নাম্বার তো তৌশিকের কাছে নেই। ফোন ধরবে কি না ভাবতে ভাবতে পায়চারি করতে লাগল। আবারও বাজতে লাগল টেলিফোন। এই টেলিফোনের আওয়াজ কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে পারমিতা টেলিফোনের রিসিভার তুলে ধরল। কোনো কথা বলার প্রয়োজন হল না, তার আগেই শোনা গেল তৌশিকের কর্কশ গলার স্বর। প্রথমে রেগে বলল, আমার সাথে ফাজলামো হচ্ছে? ফাজলামো আমি ছুটিয়ে দিচ্ছি।
পরক্ষণেই গলার স্বর নরম হয়ে এলো। বোধহয় বুঝতে পেরেছে এভাবে পারমিতাকে রাজি করানো যাবে না। ধীরগলায় বলল, পারমিতা আপনি দরজা খুলুন। আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
– ফোনে বলুন।
– ফোনে বলা যাবে না। আমি আসছি। আপনি দরজা খুলুন।

খট করে ফোন রেখে দিলো তৌশিক। পারমিতা কী করবে বুঝতে পারল না। তৌশিক যদি রুমে ঢুকে ওকে জবরদস্তি করে? রাজি না হলে যদি নিজেই পারমিতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, পারমিতা কি করবে তখন? কিংবা যদি সাথে করে বসকে নিয়ে আসে? মাথা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে পারমিতার। একটা উপায় আছে, তা হলো ঘরের বাইরে যাওয়া। করিডোরে সিসি ক্যামেরা আছে। তাছাড়া করিডোরে কোনোকিছু করার সাহস পাবে না তৌশিক।
পারমিতা দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে করিডোরে দাঁড়িয়ে রইলো। দরজা থেকে খানিকটা দূরেই চলে গেল সে। যাতে করে তৌশিক ওকে রুমে ঢোকাতে না পারে। অন্য মানুষের রুমের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। অন্তত চিৎকার করলে মানুষ সাহায্য করতে এগিয়ে আসার সম্ভাবনা আছে। দ্রুত ঘামতে লাগল পারমিতা।
তৌশিক কে দেখা যাচ্ছে। দুলতে দুলতে এগিয়ে আসছে তৌশিক। চোখমুখ শক্ত। পারমিতাকে দেখে চমকে উঠলো। স্বাভাবিক গলায় বলার চেষ্টা করল, আপনি এখানে কেন?
স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলেও উনি যে ভয়ংকর রেগে আছেন সেটা বুঝতে পারমিতার সময় লাগলো না। পারমিতা ঘামছে। উত্তর দিলো না।
তৌশিক বলল, রুমে চলুন।
পারমিতা এবার মুখ ফুটে বলল, এখানে বলুন কী বলবেন?
– রুমে গিয়ে বলবো।
– না। আমি রুমে গিয়ে একান্তে কথা বলতে পারবো না। আপনি এখানেই বলুন।
– ভয় পাচ্ছেন আমাকে?ওহ হো পারমিতা, আমাকে ভয় পেলে হবে? আমি আপনার কলিগ। আমি তো জোর করে কিছু চাপিয়ে দিচ্ছি না। আমি আপনার জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি। বিনিময়ে আপনিও আমার জন্য কিছু করবেন। আমরা তো কলিগ তাইনা? দুজনেরই স্বার্থ থাকলো এতে। কেউ কিছু জানবেও না।
পারমিতার গলা দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না। অনেক কষ্টে বলার চেষ্টা করলো, আপনি প্লিজ আমার এত বড় ক্ষতি করবেন না। আমি প্রমোশন চাই না। আমি কোনো লাভ চাইনা। আমার কিছু দরকার নেই।
– চাকরি দরকার আছে তো নাকি? না সেটাও দরকার নেই?
পারমিতার বুক ধক করে উঠলো। ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে রইল পারমিতা।
তৌশিক বলল, সাইমুন স্যার আপনার ওপর অসন্তোষ হলে চাকরিটা থাকবে ভাবছেন? ওটাও তো আর থাকবে না। সেটা কি খুব ভালো হবে? শুনেছি আপনার এই চাকরিটা খুব দরকার?
– ভাই, প্লিজ আমার সাথে এমন করবেন না।
– আমি তো কিছু করছি না। আপনিই তো করছেন। আমার কথা শুনলে এত কথা বলতাম না। মাত্র দুটো রাতেরই তো ব্যাপার। সারা রাত আপনিও মজা করলেন। বৃষ্টির রাত, দারুণ এনজয়েবল হবে।
পারমিতা মাথা নিচু করে রইল। কান্না পাচ্ছে ওর। তৌশিক বলল, নাকি স্যারের বয়স বেশি বলে ওনাকে পছন্দ হচ্ছে না?
তৌশিক পারমিতার দিকে এগিয়ে এসে মৃদু স্বরে বলল, আমাকে পছন্দ হয়? আমার তো বয়স কম। হ্যান্ডসাম, বলিষ্ঠ। অনেক সুখ এনে দেবো৷ আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ে আমার নিচে শুয়ে অসন্তুষ্ট হয়নি। তোমাকেও আনন্দ দেবো। সাথে যা চাও, প্রমোশন, টাকা, ফ্ল্যাট। তোমাকে আমার সেই লাগে। অনেকদিন থেকে ফলো করছি।

পারমিতার শরীর কাঁপছে। চোখ ফেটে অশ্রু গড়াচ্ছে গাল বেয়ে। মনে হচ্ছে এই বুঝি মাথা ঘুরে পড়ে যাবে সে। মাটি দুভাগ হলে ভেতরে ঢুকে যেতো পারমিতা। এত বড় বিপদে কখনোই পড়েনি সে।
পারমিতা কাঁদতে কাঁদতে বলল, প্লিজ আমার সঙ্গে এমন করবেন না। আমি অন্যদের মতো নই।
এমন সময় করিডোর দিয়ে যাচ্ছিলো একজন মানুষ। পারমিতা সেদিকে খেয়াল করেনি। কিন্তু তৌশিক খেয়াল করেছে। লোকটাকে দেখেই পারমিতার থেকে দূরে সরে গেল সে। হাসিমুখে বলল, হ্যালো স্যার।
লোকটার গলা শুনতে পেলো পারমিতা, এনি প্রবলেম?
পারমিতার ইচ্ছে করলো চিৎকার করে বলতে, হ্যাঁ অনেক বড় প্রবলেম। কিন্তু বলতে পারল না। ও মাথা নিচু করে কাঁদছে।
লোকটার গলা আবার শোনা গেল, উনি কাঁদছেন কেন?
তৌশিক বলল, পারসোনাল ম্যাটার স্যার।
– এখানে পারসোনাল ম্যাটার? আমরা একটা অফিসের কাজে এসেছি। এনিওয়ে, আপনাদের মধ্যে কোনো পারসোনাল রিলেশন থাকলে সেটা ভিন্ন ব্যাপার। আমি আসি। গুড নাইট।

লোকটা চলে যাচ্ছে। পারমিতা কাঁদতে কাঁদতে তৌশিককে বলল, স্যার আপনি কেন আমার সঙ্গে এমন করছেন? আমার সাথে আপনার তো কোনো সম্পর্ক নেই।
লোকটা চলে গেলেও কান খাড়া করে রেখেছিল। পিছিয়ে এলো সে। বলল, কি ব্যাপার? আপনি না বললেন পারসোনাল ম্যাটার?
তৌশিক রাগী রাগী চোখে পারমিতার দিকে তাকিয়ে রইল। লোকটা বলল, চুপ করে আছেন কেন?
তৌশিক বলল, আমি পরে আলাপ করে ঝামেলা মিটিয়ে নেবো।
গমগমে মুখ করে চলে গেল তৌশিক। যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো পারমিতা। যদি এ রক্ষে শুধু আজকের রাতের জন্য। আগামীকাল ওর কপালে চরম দুর্ভোগ আছে। আর সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে, ওর চাকরিটা আর থাকবে না এটা নিশ্চিত।
লোকটা পারমিতার দিকে এগিয়ে এসে বলল, কি হয়েছে বলবেন প্লিজ? মানে কোনো সাহায্য করতে পারি?
পারমিতা এতক্ষণে চোখ তুলে লোকটার দিকে তাকালো। আরে! এ তো সেই মানুষটা যার সাথে সন্ধ্যায় হলরুমে পরিচয় হয়েছিল! বৃষ্টি নিয়ে কথা হয়েছিল ছেলেটার সাথে। ভাগ্যিস ছেলেটা এসেছে, নয়তো মহা বিপদে পড়ে যেত পারমিতা।

পারমিতা চোখ মুছে বলল, কিছু না। আপনাকে ধন্যবাদ।
– কিছু না হয়ে থাকলে ধন্যবাদ কেন?
পারমিতা চুপ করে রইল। ছেলেটা বলল, কাঁদবেন না প্লিজ। আমি না মেয়েদের কান্না সহ্য করতে পারি না। আসুন..
– কোথায়?
– তখন বললাম না বাইরে খুব সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে? বৃষ্টি দেখবো চলুন।

ছেলেটার চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো পারমিতা। মন বলছে এই ছেলেটাকে বিশ্বাস করা যায়। যেভাবে দেবদূতের মতোন এসে হাজির হলো!
পারমিতা ছেলেটার সঙ্গে হাঁটতে লাগল। করিডোর পেরিয়ে এসে লিফটে উঠলো ছেলেটা। পারমিতা ইতস্তত করছিল। ছেলেটা বলল, আসুন। আমাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আর দয়া করে কাঁদবেন না প্লিজ। আমার কান্না ভালো লাগে না।
পারমিতা চুপচাপ লিফটে প্রবেশ করল। লিফট চলে এলো নিচে। হোটেল থেকে বের হয়ে সামনে বিশাল সুইমিংপুল। বারান্দা ধরে হাঁটতে লাগল ওরা।
বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে ঝমঝম করে। এতক্ষণ কোনো শব্দ কানে আসে নি। বাইরে আসামাত্রই সুন্দর বৃষ্টির শব্দ কানে আসতে লাগলো। বারান্দা ধরে হাঁটতে হাঁটতে একটা বেঞ্চিতে বসল ছেলেটা। পারমিতাকে বলল, বসুন।
সামনের বেঞ্চিতে পারমিতা বসলো। দূরে বৃষ্টি পড়ছে। বিদ্যুতের আলোয় সুইমিংপুলের পানিতে বৃষ্টি পড়ার দৃশ্য অসাধারণ লাগছে। এত স্নিগ্ধ একটা রাত, এত সৌন্দর্য চারপাশে! অথচ পারমিতা ভেতরে ভেতরে নিজের সঙ্গে তুমুল যুদ্ধে নেমেছে।
ছেলেটা বলল, আচ্ছা আপনার নামটা কী?
– পারমিতা।
– বাহ, সুন্দর নাম। আমি রোদ।
পারমিতা বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে। রোদ বলল, আপনার এখনো মন খারাপ? এত সুন্দর বৃষ্টি দেখেও?
– ঠিক আছি।
– আরে, এত মন খারাপ করে থাকবেন না তো। যদি বেশি কষ্ট হয় আমাকে বলুন কী হয়েছে?
– কিছু না।
– প্লিজ?

পারমিতা একটা নিশ্বাস ফেলে বলল, আসলে, জানিনা আপনাকে বলা ঠিক হচ্ছে কিনা। আপনি এটা নিয়ে কোনো ঝামেলা করবেন না তো?
রোদ হেসে বলল, না কোনো ঝামেলা করবো না।
– আসলে উনি আমাকে একটা অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছেন। আমি রাজি হইনি তাই চাকরি হারানোর ভয় দেখাচ্ছিলেন।
– হোয়াট! কী বলছেন এসব?

রোদের রিয়েকশন দেখে ভয় পেয়ে গেল পারমিতা। রোদ বলল, সত্যি! আমি তো এতদিন এই কোম্পানিকে অনেক ভালো জানতাম। এই কোম্পানির সাথে আমাদের অনেক বছরের ভালো সম্পর্ক৷ আপনাদের ম্যানেজার খুবই ভালো মানুষ। সিইও আব্দুল্লাহ, সাইমুন খান ওনাদেরকেও আমি চিনি।
– উনি আমাকে সাইমুন খানের রুমে যেতে বলেছেন।
– সিরিয়াসলি! ওহ মাই গড। এসব কি শুনছি!
– হ্যাঁ। আমি কি করবো বুঝতে পারছি না। আমার চাকরিটা এবার চলেই যাবে।
– আরে মেয়ে, সম্মান চলে যাচ্ছে সেটা কিছু না আর আপনি আছেন চাকরির টেনশনে?
– আমার এই চাকরিটা ছাড়া সংসার চালানোর মতো উপায় নেই। না খেয়ে মরতে হবে আমাদের।

শান্ত হয়ে গেল রোদ। অনেক্ষণ চুপ থেকে নিজের রাগটাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে বলল, ওকে। আপনি চিন্তা করবেন না। আপনাকে আমি আমাদের কোম্পানিতে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবো। কিন্তু এই অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে একটা পদক্ষেপ নিতেই হবে। আমি কালকেই এটা প্রেসে জানাবো। আপনি সাক্ষী দেবেন।
– না না, এতকিছু করার দরকার নেই। আমি শুধু ওখানে চাকরিটা ছাড়তে পারলেই বাচি। ওদের বিরুদ্ধে কিছু করলে আমার লাইফটা রিস্কে পড়ে যাবে। প্লিজ কিছু করবেন না।
– এভাবে চুপচাপ থাকলে আপনার মতো আরও হাজারটা মেয়েকে ওরা ব্যবহার করবে। সেটা কি আপনি চান?

পারমিতা চুপ করে রইল। হতে পারে কোনো অবিবাহিত মেয়েকে এইরকম ফাঁদে পড়ে ধর্ষিতা হতে হয়েছে, হতে পারে কোনো সতী স্ত্রীকে নিজের সম্মান দিতে হয়েছে, কিংবা হতে পারে কোনো মাকে তার সন্তানের কথা ভেবে চাকরি হারানোর ভয়ে সবকিছু বিকিয়ে দিতে হয়েছে। আর কত?
পারমিতা বলল, ওদের বিরুদ্ধে কথা বলা দরকার। এটা বন্ধ হওয়া দরকার।
– ভেরি গুড। এটাই চাচ্ছিলাম। আমি যা ব্যবস্থা নেয়ার নিচ্ছি। আপনি এখন শান্ত হোন।

কয়েক মুহুর্ত চুপ থেকে রোদ বলল, এখন মন ভালো হয়েছে একটু?
– হুম।

মাথা ঝাঁকাল পারমিতা। রোদকে এই প্রথম ভালো করে খেয়াল করলো পারমিতা। আজকের দিনেও এমন মানুষ আছে বলেই এখনো পৃথিবীতে মেয়েরা টিকে আছে। লোকটা রোদের মতোই আলো নিয়ে এলো তার জীবনে। এই দুই ঘন্টার দুঃসহ দুশ্চিন্তা থেকে ওকে বের করে আনার জন্য লোকটার প্রতি কৃতজ্ঞতা শেষ হবে না কখনো।

খুব সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে। সেদিকে তাকিয়ে আছে রোদ। এখন পারমিতারও বৃষ্টি খুব ভালো লাগছে।
চলবে..

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1354940311554401&id=439669216414853

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here