পারমিতা” পর্ব-৪১

0
1249

পারমিতা
পর্ব ৪১

– আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে কতদিন হল? কখনো খোঁজ নিয়েছিলে? আমরা কিভাবে বেচে আছি জানতে চেয়েছিলে কখনো?
– প্লিজ আমার কথা শোনো।
রাসিফের গলা শুনেই পারমিতার শরীরে রাগ উপচে পড়তে লাগল। আজকাল রাসিফ শুধু রাগের পর্যায়ে নেই, ঘৃণায় পরিণত হয়েছে। তাই তো রাসিফের সঙ্গে কথা বলতে গেলে নিজেকে সামলে নিতে পারেনা পারমিতা।
– রাসিফ, তোমাকে মাত্র দশ মিনিট সময় দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে যা বলতে চাও বলো। এরপর আর কখনো আমাকে ফোন করবে না। দেখা করারও চেষ্টা করবে না। আমাকে আমার মতো শান্তিতে থাকতে দাও প্লিজ।
– তুমি শান্তিতে আছ?
– কি?
– শান্তিতে আছো তুমি পারমিতা?
পারমিতা চুপ করে রইল। সে এতদিন শান্তিতে হয়তো ছিল না, কিন্তু এখন আছে। এখন একটা মানুষের পরম ভালবাসায় মাখামাখি হয়ে আছে সে। মানুষটা তার জন্য শত বছর অপেক্ষা করতেও রাজি। এমন একজনের ভালবাসা প্রাপ্তির পরেও কি আর অশান্তিতে থাকা যায়?
কিন্তু রোদের কথা রাসিফকে বলা যাবে না কিছুতেই। পারমিতা বলল, তারাতাড়ি কথা শেষ করো। আমি অনেক ভালো আছি নিজের মতো।
– পারমিতা শোনো। আমি সবকিছু জানি।
– কি জানো?
– তুমি অনেক সংগ্রাম করে টিকে আছো সেসব। তোমার বাড়িতে উঠতে দেয়নি তোমাকে। একা একা যুদ্ধ করে প্রীতুলকে নিয়ে জীবন চালিয়ে যাচ্ছ। আমি এসবই শুনেছি। খোঁজ নেইনি তা নয়।
পারমিতা রেগে বলল, তাহলে কখনো তো আসোনি দেখতে? কিসের ভয়ে?
– ভয়ে নয়। আমি আসলে এক বছর কিভাবে যে বলি..
– কি?
– আমি প্রায় দেড় বছর রিহ্যাবে ছিলাম পারমিতা।
– কি বলছ এসব?
পারমিতা অবাক হল ভীষণ। রাসিফ বলল, বিশ্বাস করো আমার কথা। তুমি চলে যাওয়ার পর আমি প্রথমদিকে বেশ আনন্দে ছিলাম। ভেবেছিলাম লাইফ থেকে আপদ বিদায় হয়েছে। আমি অনেক উশৃংখল হয়ে উঠলাম । প্রতিদিন বাড়িতে দেরি করে ফিরতাম। রাত জেগে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে নিয়ে বারে যেতাম , মদ খেতাম, গাঁজা টানতাম। ভেবেছিলাম এই জীবনটাই সব থেকে আনন্দের। বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে ফূর্তি করে বেড়াতাম। এ সময় একটা মেয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। মেয়েটা আমার কাছ থেকে প্রেম আদায় করে নিয়েছিল। সঙ্গে টাকা-পয়সাও। আমি ওর সঙ্গে প্রেম করতে এতটাই উন্মত্ত হয়ে উঠেছিলাম যে জাগতিক সমস্ত কিছু ভুলে গিয়েছিলাম। মেয়ে আর নেশা দুইটাই আমার মাথা নষ্ট করে দিয়েছিল। আমার চাকরি চলে গেল। যা টাকা জমানো ছিল সব নষ্ট করতে শুরু করলাম। বাবা-মায়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেল। বাবা আমাকে বলল তার সঙ্গে সব সম্পর্ক শেষ করে দিতে। আমি নেশায় এতটাই পাগল হয়েছিলাম যে বাবার সঙ্গে অনেক খারাপ আচরণ করি। তখন আব্বু আম্মু তোমার কথা বারবার বলছিল। আমার সবকিছু ভালোমতো মনে নেই। তবে যেটুকু মনে আছে তাতে বুঝেছিলাম তারা তোমাকে হারিয়ে খুব আফসোস করছেন। তারা অনেক শঙ্কায় ভুগছিলেন। মেয়েটাকে টাকা দিতে পারছিলাম না। শেষমেষ মেয়েটার সঙ্গে আমার ব্রেকআপ হয়ে গেল। আমি নিঃসঙ্গ একাকী হয়ে গেলাম। ঘরে বসে থাকতাম আর সারাদিন নেশা করতাম। এক পর্যায়ে গিয়ে দুনিয়াকে ভুলে গেলাম। হয়ে পড়লাম অসুস্থ। সত্যি বলতে তুমি যখন আমার সঙ্গে ছিলে আমি তখন থেকেই মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আমি নিজেও সেটা বুঝতে পারিনি, তুমিও বোঝোনি, কেউই বুঝতে পারেনি। এটা ডাক্তার বলেছে। বাবা মা আমার খারাপ অবস্থায় আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করালেন । হাসপাতালের ডাক্তার আমাকে রিহাবে দেয়ার পরামর্শ দিলেন। এভাবেই কেটে গেল কয়েকটা বছর। আমি যখন সুস্থ হয়ে ফিরে এলাম, তখনকার দুনিয়াটা আমার কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত। মনে হল আমি একটা শিশু। কিন্তু বাবা-মায়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক কখনো ভাল হয়নি। তারা আমার উপর অনেক রেগে ছিলেন। আমি ভয়ঙ্কর একাকী হয়ে পড়লাম। সারাক্ষণ তোমার কথা মনে পড়তো। তোমাকে পাগলের মত খুজতাম। ধীরে ধীরে আমার মনে পড়তে লাগলো তোমার সঙ্গে কি খারাপ আচরন আমি করেছিলাম। অপরাধবোধে ভুগছেলাম আমি। লজ্জায় আমি তোমার সামনে আসতে পারিনি। তবে দূর থেকে তোমার খোঁজ নিয়েছি। জেনেছি তুমি এখন স্বাবলম্বী। নিজের সন্তানকে বুকে আগলে রেখে মানুষ করছো। বিশ্বাস করো আমি সুস্থ হয়ে ফেরার পর তোমাকে প্রচন্ড মিস করতাম। প্রায়ই রাতে আমি কাঁদতাম। স্ত্রী সন্তানকে হারিয়ে আমি কত বড় ভুল করেছি সেটা ভেবে অপরাধবোধ ও গ্লানিতে ভেঙ্গে পড়েছি। তোমার সামনে আসার মুখ আমার ছিলনা। আমার আর দেশে কোনো চাকরি হলো না। বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা করলাম। কিন্তু তার আগে তোমার কাছে একবার ক্ষমা চেয়ে নিতে না পারলে আমি হয়তো ভবিষ্যতে কখনো রাতে ঘুমাতে পারতাম না। তোমার খোঁজে এসে একদিন তোমার সঙ্গে প্রীতুলকে দেখেছিলাম। ওকে দেখার পর আমার মাথায় সারাক্ষণ আমার ছেলেটাই ঘুরছিল। আমি ওর সঙ্গে একবার দেখা করতে চাই, কথা বলতে চাই। প্লিজ তুমি আর আমাকে ভুল বুঝনা। আমি এতক্ষণ যা বলেছি সব সত্যি বলেছি। আমাকে বিশ্বাস না হলে তুমি আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারো। তারাও তোমাকে ফিরে পাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছেন। যদিও তারা জানেন তুমি আর কখনো ফিরবে না। সেটা আমিও জানি। তাই আমি তোমাকে ফিরতেও বলবো না। আমি শুধু চাই তুমি আমার ছেলেটাকে আমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দাও। প্লিজ পারমিতা।

পারমিতা এতক্ষণ চুপচাপ রাসিফের কথা শুনছিল। তার রাগ কমে গেছে । ভীষণ অবাক হয়েছে সে। রাসিফের সঙ্গে প্রচণ্ড রেগে থাকার কারণে সে কখনও তার খোঁজ নেয়নি । কেউ তাকে এসব জানায়ও নি । সত্যি বলতে তাকে এসব জানানোর মতো কেউ ছিলনা। পারমিতার বড্ড মনটা ভেঙে গেছে। সে নিজেকে সামলে নিল।

রাসিফ বলল, আমি জানি তুমি আমাকে কখনো ক্ষমা করতে পারবে না। তোমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার মুখটাও আমার নেই। আমি রিকোয়েস্ট করছি প্লিজ আমার ছেলেটাকে কষ্ট দিও না। আমি ওর দায়িত্ব নিতে চাই। তুমি ওকে অনেক কষ্ট করে বড় করেছ। আমি অমানুষের মত ওকে দাবি করে ফিরিয়ে নিতে পারিনা। ও তোমার কাছেই থাকুক। শুধু চাই, সে জানুক আমি তার বাবা। সে তার বাবাকে ক্ষমা করে দিয়ে বাবার সঙ্গে কথা বলুক। আমি মন থেকে চাইছি। আমাকে বঞ্চিত করো না প্লিজ।

রাসিফের গলা ধরে এলো। পারমিতা কি বলবে বুঝতে পারছে না। হতবাক হয়ে গেছে সে। শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো।
রাসিফ জানতে চাইল, চুপ করে আছো কেন? কিছু অন্তত বলো।
পারমিতা বলল, আমি কিছুদিন আগে শুনেছিলাম তুমি দেশের বাইরে চলে যাবে। তার আগে কিছুই শুনি নি। তবে এটুকু শুনেছি বাইরে যাওয়ার আগে তুমি বিয়ে করতে চাও। বিয়ের জন্য পাত্রী দেখা চলছে।

রাসিফ অনুরোধের সুরে বলল, প্লিজ আমাকে ভুল বুঝনা। এখানে আমার কোন ইচ্ছে বা হাত ছিল না। এটা পুরোটাই মার জন্য হয়েছে। মা জানেন তুমি কখনো ফিরবে না। তুমি কোথায় থাকো কি করো মা সেটাও জানেন না? মা চাইতেন আমি সুস্থ হওয়ার পর আমাকে বিয়ে দিয়ে আমার দায়িত্ব মেয়েটার হাতে তুলে দিতে। কারণ এই সময়ে আমার সঠিক সেবাযত্নের দরকার আছে। মা পাত্রী দেখা শুরু করেছিলেন। কিন্তু আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি তুমি আগের কিছুই জানো না শুধু এইটুকু জানো কিভাবে?

পারমিতা বলল, আমাদের সমাজের নিয়মই এরকম। হয়তো তোমার পরিবার তোমার অসুস্থতার কথা বাইরের কাউকে জানাতে চায় নি। শুধু বিয়ের পাত্রী দেখার কথা জানাতে চেয়েছিল। আমাদের ডিভোর্স হওয়ার পিছনে তোমার পরিবারের অবদানও আছে। তারা যদি আমাদের সম্পর্কটাকে ভালোভাবে নিত, যদি আমার প্রতি তাদের যথাযথ সম্মান থাকতো, আজকে এই দিন দেখতে হতো না। যাই হোক, প্রীতুল জানে ওর বাবা নেই। ওকে এখন আমি বাবার কথা বলতে পারবোনা।
– প্লিজ পারমিতা। এতটা নিষ্ঠুর হইও না। তোমাকে তো সবই খুলে বললাম। প্লিজ একবার ভেবে দেখো। আমি জানি তুমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছো। অনেক সংগ্রাম করে টিকে আছো। কখনো আমাকে ক্ষমা করতে পারবে না। তবুও হাতজোড় করে রিকোয়েস্ট করছি, আমার ছেলেটার সাথে আমাকে দেখা করতে দাও প্লিজ।
পারমিতা বলল, এটা কখনো সম্ভব না। ও জানে ওর বাবা নেই। নতুন করে আমি আর কোন কাহিনী বানাতে পারবো না। তুমি আমাকে যেমন ভুলে যেতে চেষ্টা করছো, ওকেও ভুলে যেতে চেষ্টা করো। আমাদের দুইজনকে তোমার জীবন থেকে মুছে ফেলো। দেশের বাইরে যাও, নতুন করে জীবনটাকে গড়ে তোল। মায়ের পছন্দের পাত্রীকে বিয়ে করে জীবন সাজাও। তোমার আবার সন্তান হবে। আমাদের কথা ভুলতে খুব বেশি কষ্ট হবে না।
– আমাকে এভাবে বলোনা প্লিজ। তোমার পায়ে পরি।
– একদিন আমিও তোমার পায়ে পড়েছিলাম। তোমাকে অনেক বুঝিয়েছি। তুমি আমার কোন কথা শোনোনি। আমার প্রতি তোমার বিন্দুমাত্র সম্মানবোধ ছিল না। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে সবথেকে বেশি ইম্পরটেন্ট হচ্ছে রেস্পেক্ট। দুজনের মাঝে রেস্পেক্ট জিনিসটা চলে গেলে সেই সম্পর্ক কখনো টিকে থাকে না। টিকে থাকলেও সেটা হয় একটা মৃত সম্পর্ক। আমি একটা মৃত সম্পর্কে জড়িয়ে থাকতে চাই নি। তাই তোমার বাঁধন খুলে চলে এসেছিলাম। সমাজের সবাই আমাকে ভুল বুঝেছে। আমি সবার চোখে অপরাধী কলঙ্কিনী। আমার ফ্যামিলি ও আমাকে বলেছে ছেলেরা এরকম একটু একটু মদ খায়। সবকিছু মেনে নিয়ে সংসার কর। কিন্তু ততদিনে আমার প্রতি তোমার রেস্পেক্ট ভালোবাসা, কেয়ারনেস সব ই চলে গিয়েছিল। যাইহোক আমি পুরনো কথা ভুলে গিয়েছি। এসব নিয়ে আর কথা না বলাই ভালো।
– আসলেই কি ভুলে যেতে পেরেছ?
– সেটা তোমার না জানলেও চলবে। যতটুকু পেরেছি তাতে আমার বাকি জীবনটা আমি স্বাচ্ছন্দ্যে কাটাতে পারব। প্লিজ তুমিও আমাদেরকে ভুলতে চেষ্টা করো। সেটা আমাদের উভয়ের জন্যই কল্যাণকর হবে।
– পারমিতা তুমি সবকিছু জেনেও একজন বাবার কাছ থেকে তার সন্তানকে আলাদা করে দিতে চাইছো।
– তোমরা বহু আগেই আলাদা হয়ে গেছো। প্রীতুল জানে তার বাবা নেই , মারা গেছে। নতুন করে বাবাকে জীবিত করতে পারবোনা। পারলেও সেটা হয়তো খুব একটা ভালো দেখাবে না। আমাদের কথা এখানেই শেষ হওয়া উচিত। আশা করছি তুমি সবকিছু স্পষ্ট বুঝতে পারছ।
রাসিফ চুপ করে রইলো। কিছুক্ষণ পর তার ফোসফাস কান্নার আওয়াজ শোনা গেল। পারমিতা আর ফোন কানে ধরে রাখতে পারছেনা। তার বিরক্তি লাগছে। একই সাথে অন্য রকম সহানুভূতি ফিল করছে। তাই এখনই ফোনটা রেখে দেয়া উচিত।

পারমিতা বলল, আমাকে আর ফোন দিও না। তোমার নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা রইল। ভালো থেকো।

কল কেটে দিলো পারমিতা। রাসিফের অসুস্থতার কথা শুনে তার রাগ অনেকটা কমে গিয়েছে। তবে অভিমান, কষ্ট কোনকিছুই কমেনি। কষ্ট কখনো কমেনা। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বরং কষ্ট আরো বেড়ে যায়।

পারমিতা রাসিফের নাম্বারটা ব্ল্যাকলিস্টে ঢুকিয়ে রাখল। প্রীতুলকে বুকে জড়িয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করল পারমিতা।
রাতে ফোন করল রোদ। বলল, বাসায় ভাত খাইনি। বাসায় খাওয়া বন্ধ করে দিলে আম্মু কষ্ট পায়। ঠিকই তখন বুঝতে পারবে আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি।
পারমিতা বললো, এসব ছেলেমানুষী না করলেই কি নয়? এই বয়সে এসে মায়ের সঙ্গে এভাবে অভিমান করে থাকার কোনো মানে হয় না। আপনার মা আমার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে যাক সেটা আমি কখনো চাইনা। আপনি এরকম করলে তিনি আমাকে আরো অপছন্দ করবেন।
রোদ বলল, আমি আমার মাকে চিনি। মা জানে আমি মাকে অনেক ভালোবাসি। প্রতিদিন বাসায় ফিরে মাকে একবার জড়িয়ে না ধরলে আমার ভালো লাগেনা। বাসা থেকে বের হওয়ার সময়ও আমি মাকে একবার জড়িয়ে ধরে বিদায় নিয়ে যাই। আজকে এই দুইটার একটাও করিনি। মা বুঝতে পারবে ছেলে কতটা কষ্ট পাচ্ছে। আমার পুরো জীবনে আমি কখনো মায়ের সঙ্গে এমন অভিমান করিনি।

পারমিতা ভীষণ অবাক হল। যদিও তার এই বিষয়টা ভালো লাগছে না। কিন্তু মনে মনে এক ধরনের আনন্দ হচ্ছে। তাকে পাওয়ার জন্য একটা ছেলে পরিবারে এভাবে যুদ্ধ করছে, মাকে রাজি করাতে চেষ্টা করছে। এটা সত্যিই গর্ব করার মত। পুরুষ মানুষের ভালোবাসা পেলে মেয়েরা ভাগ্যবতী হয়ে যায়। পারমিতা সত্যিই নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছে।
রোদ বলল, তুমি রাত জেগে থেকো না। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো। তোমার মনটা কি এখন ভালো হয়েছে?
– কিছুটা হয়েছে। তবে আজকে আর মন ভালো হবে না।
– কেন?
– কিছু না। বাদ দাও। তুমিও তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো। রাতে খুদা লাগলে রাগ করে না থেকে ভাত খেয়ে নিও।
– তোমার ওখান থেকে খেয়ে এসেছি। বউ বাচ্চার সঙ্গে বসে খাবার খাওয়া দারুন মজার। হাহাহা ।
পারমিতাও হাসল। আরো কিছুক্ষণ কথা বলে কল কেটে দিল সে। আজ রাতে তার বড্ড অশান্তি লাগবে। ঘুম হবে না। তবুও ঘুমানোর বৃথা চেষ্টা করলো পারমিতা। রাত যত বাড়তে লাগল ততই নিজের মধ্যে এক ধরনের সুক্ষ্ম অপরাধবোধ জেগে উঠল। রাসিফের অসুস্থতার ব্যাপারটা সে যদি আগেই ধরতে পেরে তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতো তাহলে হয়তো আজকে আলাদা হয়ে যেতে হতো না। অবশ্য এটাও একটা সত্যি কথা যে রাসিফ তার জীবনে থাকলে আজকে রোদ তার জীবনে আসতো না। প্রতিটি জিনিস প্রকৃতির নিয়মে চলে। এটা হয়তো প্রকৃতির ইচ্ছায় হয়েছে। পারমিতা মনটাকে কিছুতেই বোঝাতে পারছে না। অনেক অশান্তি নিয়ে বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে লাগলো সে।

চলবে..

আর কয়েকটি পর্বে গল্পটি শেষ করবো, আর হ্যাঁ সবাইকে আর দেরি হবে না।
পুর্বের পর্বগুলো

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=641896073477694&id=100029719223370

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here