প্রবাসীর বউ পর্ব-৭ শেষ পর্ব

0
1970

#ধারাবাহিকগল্প
#প্রবাসীর বউ
শেষ পর্ব
মাহাবুবা বিথী

গত রাতে বৃষ্টি হওয়াতে আবহাওয়া আজকে বেশ ঠান্ডা।খুব ভোরে জানালা দিয়ে ঝিরঝিরে শীতল বাতাস আসছে।রহিমার শরীরটা জুড়িয়ে গেলো।ফজরের নামাজ পড়ে রহিমা দুকাপ চা বানালো।শাশুড়ীর হাতে এককাপ নিজে এককাপ নিয়ে ফেনীর ভাড়াটিয়াদের খোঁজখবর নিলো।

এদিকে ওর জা জরিনা মনে মনে ওর শাশুড়ী আর রহিমার উপর রেগে আছে।জরিনা বালা জোড়া রহিমাকে দিতে চায়নি।রহিমার তো এখন ভালোই টাকা আছে।চাইলে নিজের জন্য বালা গড়াতে পারবে।কিন্তু ও তো পারবে না।তাই শাশুড়ীর কাছে আবদার করেছিলো ওকে বালাজোড়া দিয়ে দিতে।শাশুড়ী শোনেনি।শাশুড়ী জরিনাকে বলেছে,
—-তোমার মতো মূর্খ মেয়ে মানুষ বুঝবে না।এ বালা জোড়ার মুল্য রহিমার কাছে কতো।যার জিনিস তাকে দিয়ে আমি ভারমুক্ত হতে চাই।
জরিনা বরাবরই মুখরা আর কুটিল ছিলো।ও ভূলেই গেলো রহিমা ওর বিপদে কিভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিলো।তাই রহিমাকে আবারো খোঁচা দিয়ে বললো,
—-রুবেলটা তোমার পিছনে ছোঁক ছোঁক করে।ওর না আছে চাল না আছে চুলো।তার থেকে আমার কাছে একটা ভালো প্রস্তাব আছে।বয়সটা একটু বেশী।ষাট বছর হবে।ফেনীর গোলাপশাহ মার্কেটে তিনটা দোকান আছে।রহিমা তোমার ঢাকায় শোরুম নিতে হবে না।ওখানেই তোমার কাপড় বিক্রি হয়ে যাবে।গাড়ি আছে, ফেনী শহরে চারতলা বাড়ি আছে।ছেলে মেয়েরা সব বিদেশে থাকে।ওনার একজন সঙ্গীর খুব দরকার।
জরিনার কথা শুনে রহিমার মেজাজটা বিগড়ে গেলো।রহিমা একটা জুতসই উত্তর দেওয়ার আগেই শাশুড়ী জরিনাকে বললো,
—–কুত্তার লেজটারে যদি ঘি দিয়াও মর্দন করা হয় তাও সোজা হয় না তোমার অবস্থা হচ্ছে সে রকম।তোমার ইচ্ছা হলে তুমি গিয়া বুড়া বেডার সাথে হাঙ্গা বস নিষেধ করছে কে।
জরিনা বরাবর মুখরা মহিলা।তাই ও শাশুড়ীকে বলে দেয়,
—-আমারে নিলে তো কবে হেই বুড়ার কাছে চলে যেতাম।এই পোড়া সংসারে থেকে কি পেলাম।আপনার কাছে একটা জিনিস চাইলাম তাও দিলেন না।আপনার জমিজমা সব বেলালরে দিলেন।আমার রিতারে কিছুই দিলেন না।
ওর শাশুড়ী বলে,
—-যার জিনিস তারে দিয়া ঋণ মুক্ত হইছি।এটা বুঝার ক্ষমতা তোমার নাই।যাও রান্নাঘরে গিয়া নাস্তা বানাও।
বালাজোড়ার উপরে জরিনার বরাবর লোভ ছিলো এটা রহিমা জানে।তাই
রহিমা ভাবে স্বার্থে টান পড়লেই এই দুনিয়ায় সবার চেহারা বদলে যায়।এতো কাহিনী না করে জরিনা যদি ওর কাছে আবদার করে বলতো ওই তো জরিনাকে একজোড়া বালা গড়িয়ে দিতে পারতো।অথচ কি অবলীলায় জরিনা ওকে আঘাত করে গেলো।ওর বিপদে যে রহিমা ওকে আশ্রয় দিলো এটা এক লহমায় ভূলে গেলো।এটাই হয়তো বাস্তবতা।

রহিমা ওর শাশুড়ীকে বললো,
—-ভাবি আমার বিয়ের কথা না ভেবে রিতার বিয়ের কথা ভাবা উচিত ছিলো।মেয়েটার অল্প বয়স।সারাজীবন এভাবে থাকা ঠিক না।
ওর শাশুড়ী বললো,
—-মেয়ের বিয়ের কথা বলবে না।কারণ মেয়ের বিয়ে হলে ওর কাজ করে দিবে কে? সারাটাদিন মেয়েটাকে দিয়ে কাজ করায়।
রহিমা বলে,
—-মা আপনি যদি রাজী থাকেন আমার একজন কর্মচারীর সাথে ওর বিয়ের ব্যবস্থা করতে পারি।
শাশুড়ী বলে,
—-যদি তোমার কাছে সেরকম ছেলে থাকে তাহলে বিয়ে দিয়ে দাও।ওকে এভাবে দেখতে আমারও ভালো লাগে না।

তিন বছর পর____
আজ রহিমার স্বপ্ন পূরণের দিন।বেলাল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে।বাড়িতে আজ খুশীর ফোয়ারা বইছে।সবাই বেলালকে মন ভরে দোয়া করুক তাই আজ বাড়িতে সবাইকে দাওয়াত দিয়েছে।রুবেল ও এসেছে।বেলালের আজ এ সাফল্যর পিছনে রুবেলের ভূমিকা আছে।রহিমার তো লেখাপড়ার দৌড় খুব একটা নাই।রুবেল বেলালকে গাইড করেছে।রিতা আর ওর জামাই এসেছে।রহিমা জরিনার জন্য এক জোড়া সোনার চুড়ি কিনে জরিনার হাতে পড়িয়ে দিলো।জরিনা খুশীতে রহিমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো।রহিমার শাশুড়ী ওর মা সবাই রহিমার খুশীতে খুশী।মেয়েটার এতোদিনের সাধনা আল্লাহপাক সফল করে দিয়েছে।বেলাল খুশীতে ওর মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে।বেলালের জন্যও এই জার্নিটা এতো সহজ ছিলো না।ও ভাবে রুবেল আন্কেলের কাছে ও অনেক ঋণী।রহিমার ভাই ভাবীও খুশী।ওদের ও একটা মেয়ে আছে।দশম শ্রেণীতে পড়ে।যদিও রহিমার ভাই রহিমাকে বলেনি কিন্তু বেলালকে ও মেয়ের জামাই বানাতে চায়।

এরমধ্যে রহিমা ঢাকায় একটা শোরুম দিয়েছে।রুবেল রহিমার কর্মচারী হিসাবে দেখাশোনা করে। জীবনের চলার পথটা কাঁটায় ভরা থাকে। চলার পথে কাঁটাগুলিকে সরিয়ে পথ চলতে হয়।নিন্দুকেরা রুবেল আর রহিমাকে নিয়ে নানা রটনা রটানোর চেষ্টা করে।রহিমা ব্যক্তিত্বের কারনে পেরে উঠে না।ওর বয়স বাড়ছে।বেলালের ভবিষ্যতের জন্য টাকার দরকার।আপন মানুষের চেহারাগুলো ওর চেনা ।সুযোগ পেলেই বেঈমানী করে।তাই ওর ব্যবসায় রবেলকে কাজে লাগায়।রুবেল ওর বেতনভূক কর্মচারী। আর রহিমা সবসময় আল্লাহপাকের উপর ভরসা করেই পথ চলে।
বেলাল মেডিকেলে এ বছর থার্ড ইয়ারে উঠেছে।বেলাল ওর মাকে বলে,
—-মা আমি পড়াশোনার জন্য ইংল্যান্ডে যেতে চাই।
রহিমা বলে,
—-বাবা সে তো অনেক টাকার দরকার।এতো টাকা আমি কোথায় পাবো।আর তুই যদি বিদেশে চলে যাস আমি কার কাছে থাকবো।
বেলাল বলে,
—-টাকার পরিমানটা একটু বেশী।প্রায় পনেরো লক্ষ টাকা লাগবে।এমবিবিএস পাশ করে প্লাব পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নিয়ে লন্ডনে যাবো।তারপর ওখানে চাকরি করে পড়াশোনাটা চালিয়ে যাবো।তখন আর তোমাকে টাকা দিতে হবে না।আর তোমাকেও আমার সাথে নিয়ে যাবো।তোমার জীবনের পুরোটা সময় আমার জন্য ব্যয় করলে।এখন তোমার বিশ্রামের প্রয়োজন।

বেলাল পুস্পিতাকে ভালোবাসে।ওরা এক সাথেই কুমিল্লা মেডিকেলে পড়াশোনা করে।বেলালের পরিবার থেকে পুস্পিতাদের পরিবার অনেক ধনী। বেলাল ছাত্র মেধাবী।বেলালদের পারিবারিক অবস্থা দেখে পুস্পিতার বাবা এই সম্পর্ক মেনে নিবে না।সমাজের উঁচুতলায় পুস্পিতাদের অবস্থান।ক্যারিয়ার আর নিজেদের জীবনের স্বার্থে বেলাল আর পুস্পিতা
এই সিদ্ধান্ত নেয়।
বেলাল পুস্পিতাকে বলে,
—-মাকে রাজী করিয়েছি।কিন্তু মার মনটা খারাপ।আমাকে বলছিল,আমি বিদেশে চলে গেলে মা কার কাছে থাকবে।আমারও অনেক কষ্ট হচ্ছিলো।আমার পৃথিবী জুড়ে আমার মা।আমিই বা মাকে ছাড়া কিভাবে থাকবো।
পুস্পিতা বলে,
—-তোমার পৃথিবীতে আমার জায়গা তাহলে নেই।
বেলাল বলে,
—-তুমি রাগ করলে পুস্পিতা।বাবা ছাড়া মা একলা হাতে আমায় মানুষ করেছেন।মেডিকেলে এসে তোমার সাথে আমার পরিচয় হলো।আমার মাতো অত শিক্ষিত নন।তারপর আল্লাহর অসীম রহমতে আমি এতোদূর আসতে পেরেছি।মা চাইলে আর একটা বিয়ে করে নিজের মতো ভালো থাকতে পারতেন।আমার মুখের দিকে তাকিয়ে মা একা থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
পুস্পিতা বলে,
—-আমি তোমার অবস্থাটা বুঝতে পারছি।আমি কিছু মনে করেনি।তবে আমার পরিবার তোমার সাথে বিয়েতে রাজী হবে না।আমি বাবা মার একমাত্র সন্তান।আমরা যদি প্লাবপরীক্ষায় পাশ করে চাকরি নিয়ে ইংল্যান্ডে যাই এবং সেখানে উচ্চতর ডিগ্রীগুলো নিতে আমাদের সুবিধা হবে। তাহলে হয়তো বাবা মা রাজী হবে।এই জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।বেলাল আমি তোমাকে খুব ভালবাসি।অনেক ভেবে দেখেছি, এটা ছাড়া আমার বাবা মাকে রাজী করার আর কোনো পথ খোলা নেই। আন্টিকে আমাদের কাছে নিয়ে যাবো।
রহিমার ভাই ভাবী অসন্তষ্ট হয়।তারপর ও মেনে নেয়।ছোটোবেলায় যে বেলালকে ওরা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছে সেই বেলাল আল্লাহর রহমতে জীবনে কতো সুন্দরভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

যদিও বেলালদের পরিবার নিয়ে পুস্পিতার বাবার আপত্তি ছিলো তারপরও ওদের সম্পর্কটা মেনে নেয়।রহিমার সাথে পরিচয় হওয়ার পর পুস্পিতার মা রহিমাকে সম্মান করে বলে,
—-আপা আপনাকে পুরুস্কৃত করা উচিত।কতটা সংগ্রামী হলে একটা মানুষ এতটা লড়াই করতে পারে।এই সমাজে একটা নারীর একলা পথ চলা খুব কঠিন।আপনি দেখতেও মাশা আল্লাহ।

অবশেষে দুই পরিবারের সম্মতিতে বেলাল আর পুস্পিতার বিয়ে হয়ে যায়।রহিমা বিয়ের গয়নার সাথে ওর বালা আংটি নাকফুল পুস্পিতাকে পড়িয়ে দেয়।রুবেল পাশে থেকে রহিমাকে সহযোগিতা করে যায়।
এর মাঝে একদিন রাতে রহিমার ঘুম আসছিলো না।ওর মনে হচ্ছিলো অসীম শুন্যতায় ওর চারপাশটা ভরে আছে।বেলাল বিয়ে করেছে একদিকে যেমন খুশী হয়েছে অন্যদিকে বুকের কোথায় যেন চিনচিন করে ব্যথাও হচ্ছে।সবাই যার যার মতো করে নিজেদের জীবনগুছিয়ে নিলো।আসলে বেলাল বিয়ে করাতে একদিকে ও নিশ্চিন্ত হয়েছে।রহিমা ভাবে ও যদি এখন মরেও যায় বেলালকে নিয়ে চিন্তা নাই।বেলাল তো ভালবাসার মানুষের কাছে আছে।এসব আবোল তাবোল ভাবতে গিয়ে বাথরুমে যাওয়ার সময় রহিমা
মাথা ঘুরে পড়ে যায়।বেলাল তখন শ্বশুর বাড়িতে ছিলো।রুবেল আর বেলালের মামা মিলে হাসপাতালে ভর্তি করে।আসলে প্রেসার অনেক লো হয়ে গিয়েছিলো।খবর পেয়ে বেলাল আর পুস্পিতাও হাসপাতালে চলে আসে।
পুস্পিতা খেয়াল করে, রুবেল রহিমার দিকে অনেক কেয়ারিং।পুস্পিতা বেলালকে জিজ্ঞাসা করে,
—-রুবেল আন্কেল কি তোমাদের আত্মীয় হয়?
বেলাল বলে,
—-আত্মীয়র থেকে অনেক বেশী।দশ বছর আমাদের সাথে আছে।আমার লেখাপড়ার পুরো গাইড আন্কেল করেছে।ওনার কাছে আমার অনেক ঋণ।
পুস্পিতা বলে,
—-তোমাকে একটা কথা বলি,কিছু মনে করবে নাতো।
—-আঙ্কেল বিয়ে করেন নি।
বেলাল বুঝতে পারছে পুস্পিতা কি বলতে চায়।
বেলাল বলে,
—-না,
পুস্পিতা বলে,
—–আঙ্কেল মার প্রতি অনেক দুর্বল এই বিষয়টা তোমার চোখে কখনও পড়েনি।
বেলাল বলে,
—-আমিও জানি।আঙ্কেল মাকে একবার প্রপোজ করেছিলো।মা রাজী হয়নি।আঙ্কেলের এই পৃথিবীতে কেউ নাই।বাবা মা ছোটো বেলায় মারা গিয়েছে।আর উনি বিশ্বস্ত একজন মানুষ।আমাকে আর মাকে জীবনের ঝড় বৃষ্টি বাদলে ছাতা হয়ে খুঁটি হয়ে আগলে রেখেছে।
পুস্পিতা আরও বলে,
—-ওনাদের দুজনকে এক করে দিলে মনে হয় ভালো হয়।জীবনের লম্বাসময়ে দুজন দুজনকে পরীক্ষা করেছে।সকল ঝড় ঝাপটায় পাশে থেকে একে অপরকে সহযোগিতা করেছে।
বেলাল বলে,
—-এই বয়সে বিয়ে করলে লোকে কি বলবে?আর তোমাদের বাড়ির লোকেরাই বা কিভাবে নিবে?
পুস্পিতা বলে,
—-বেলাল লোকের কথা না ভেবে আমাদের মার কথা ভাবা উচিত।এই মানুষটাকি সবাইকে ত্যাগের দস্তখত লিখে দিয়েছে যে সারাজীবন উনি একাই ত্যাগ করে যাবেন।আর আমাদের বাড়ির বিষয় আমি সামলে নিবো।

বেলাল আর পুস্পিতা মিলো রহিমা আর রুবেলের বিয়ে দেয়।রহিমাও এবার আর অমত করেনি।একা পথ চলতে চলতে ও হাঁপিয়ে উঠেছে।এখন কারো উপর নির্ভর করতে মন চায়।পৃথিবীটা বড়ই স্বার্থপর।সবাই নিজেদের মতো করে সুখটা কিনে নেয়।ওই বা কেন নিজেকে জীবনের রং রূপ রস থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবে।আর যে মানুষটা বছরের পর বছর ধরে ওর জন্য অপেক্ষা করে আছে তাকে ও তো ওর বঞ্চিত করা উচিত না।

বেলাল আর পুস্পিতা লন্ডনে চলে যায়।বছরের ছয়মাস রহিমা আর রুবেল লন্ডনে ওদের সাথে সঙ্গ দেয়।মা বুটিকস দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও জায়গা করে নেয়।অনেক অসহায় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়।এই বুটিকস সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডে অংশ নেয়।

জীবনের কঠিন বাস্তবতায় রহিমার জীবনের বিন্দু বিন্দু ভালবাসাগুলো বুকের অতলান্তিক গহ্বরে জমা থাকে।জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি মানুষের ভালবাসার প্রয়োজন হয় তাই সঠিক মানুষটার জন্য রহিমা অপেক্ষা করে রয়।

সততা আর পরিশ্রমের বিনিময়ে আল্লাহপাকের রহমতে জীবনের অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে রহিমা আর রুবেল পরিপূর্ন সুখের সন্ধান পায়।

বিঃদঃআপনাদের ভালবাসায় আমার প্রথম উপন্যাস জীবনের নানা রং বই আকারে বের হচ্ছে ইচ্ছে প্রকাশনীর ব্যানারে।দোয়া করবেন বইটি যেন সবার কাছে সমাদৃত হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here