ফাগুন প্রেম পর্বঃ ১৬

0
472

#__ফাগুন_প্রেম__
#_লিখাঃ Bornali Suhana
#_পর্বঃ ১৬
💛
ভয়ের জ্বালায় কথাগুলো ভালো করে শুনতে পায়নি বর্ণালী। হাত পা কাঁপছে এখন। কেন যে কল করতে গেলাম। বর্ণালীর মোবাইলটা ভু ভুউ শব্দ করতেই চমকে উঠে ও। হার্ট অ্যাটাক করার মতো অবস্থা। কল রিসিভ করবে কি করবে না দ্বিধায় পড়ে গেলো।
ভাবছে ইভান কল করলো নাকি ওই মেয়েটা?
ভাবতে ভাবতেই কলটা কেটে যায় কিন্তু আবারো কল আসে। এবার আর দেরি না করে কলটা রিসিভ করে চুপ করে শুনতে চায় ওপর প্রান্তে কে কথা বলছে। একটা নিশ্বাসের শব্দ শুনতেই বর্ণালী বুঝতে পারে আর কেউ নয় ইভানই আছে ওইপাশে। পরক্ষণেই ইভানের কন্ঠ ভেসে আসে।
-“কথা বলবেন নাকি কল রেখে দিবো?”
-“বাহ তুমি থেকে আপনিতে চলে এলাম?”
-“হুম।”
-“আগে কে কল রিসিভ করেছিলো? জানো ভয়ে আমার প্রাণ বেড়িয়েই যাচ্ছিলো।”
-“বুমনি ছিলো।”
-“ভেবেছিলাম এমনটাই হবে।”
-“হুম শেষ কথা?”
-“রেগে আছো এখনো?”
-“রেগে থাকার মতো কি অধিকার হয়েছে?”
-“হয়েছে তো।”
-“তাই? তা কি অধিকার?”
-“কেন আমরা তো বন্ধু।”
-“আচ্ছা? তা দিনে কি অপরিচিত ছিলাম?”
-“সরি আর এমনটা করবো না।”
-“হয়তো এখন বলছো কিন্তু পড়ে ঠিকই আবার এমন করবে।”
-“সত্যি করবো না।”
-“আচ্ছা ঠিকাছে সরি এক্সেপ্টেড।”
বর্ণালী ইভান দুজনেই হেসে দিলো।
-“ইভান একটা কথা বললে রাগ করবে না তো?”
-“বলো আগে শুনি তারপর দেখবো রাগ করবো কি করবো না।”
-“দেখো ইভান আমি জানি বন্ধুত্তের মাঝে কখনোই টাকার কোন প্রশ্ন আসেনা। কিন্তু আমার নিজের একটা আত্মসম্মান আছে। আর তুমি নিশ্চয়ই চাইবে না যে আমার আত্মসম্মানবোধের এতটুকু পরিমান আঘাত আসুক।”
-“উহু আমি কখনোই চাইবো না। আমি তোমাকে এবং তোমার আত্মসম্মানের সবসময় সম্মান করবো কিন্তু আমার সামনে তুমি প্লিজ কখনো আমাকে ছোট করো না আর নিজেকে তো অবশ্যই না।”
-“আচ্ছা বাবা আমরা না হয় সবকিছু শেয়ার করে নিবো।”
-“ঠিকাছে সময় হলে দেখা যাবে।”
-“পড়া শেষ?”
-“হুম পড়তে তো মন বসেনা।”
-“দেখো ইভান সামনে তোমার অনেক বড় পরীক্ষা সো ভালো করে পড়াশোনা করো। একটা ভালো রেজাল্ট তোমার মা-বাবা অবশ্যই আশা করেন।”
-“হাহাহাহা মা-বাবা কখনোই তা আশা করেন না আমার কাছ থেকে। জানো আমি যখন এসএসসিতে ফেল করি বাবা তখন এই বাইকটা কিনে দিয়েছিলো।”
বর্ণালী যেনো আকাশ থেকে পড়লো। এটা কোন কথা হলো? আট-দশটা সাধারণ পরিবারে রেজাল্ট একটু খারাপ হলে কত কথাই না শুনান তারউপর অনেকের পড়াও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এখানে উল্টো বন্যা বইছে। এ কেমন পরিবার রে বাবা! ইভানের কথায় মনযোগ দেই আবারো।
-“একটা জিনিস বুঝতে পেরেছো?”
-“কি?”
-“লেখাপড়া অনুযায়ী আমি এইবার অনার্স প্রথম বর্ষে থাকতাম। কিন্তু বুমনি বলে আমি হয়তো ছোটবেলায় ড্রপও দিয়েছি পড়ালেখায় যে পরিমান গাধা হয়তো কয়েক ক্লাস ফেলও করেছি। সেদিক হিসেব করলে হয়তো আমি তোমার বড় বা সমবয়সীই হবো।”
-“আচ্ছা জনাব তাই নাকি? তা আপনার জন্মের সালটা একটু বলেন তো।”
-“কেন?”
-“আরে বলেন না। সত্যি বলতে হবে কিন্তু।”
-” আসলে ১৯৯৯সাল।”
-“হাহাহাহা আর আমার জন্মের সাল শুনবেন?”
-“হু বলো।”
-“১৯৯৭সাল।”
-“ভালো। এটা কোন বড় বিষয় না। সো ড্রপ দিজ ম্যাটার। তা এখন নিজে কেন আমাকে আপনি করে বলছো?”
বর্ণালী হোহো করে হেসে দিলো। ওর হাসি যেনো থামছেই না।
শারমিন বেগম বাইরে থেকে টেনশনে পড়ে গেলেন উনার মেয়ে এতো রাতে একা একা হাসছে কেন? এমনিতেই মেয়েটাকে কত করে বলি অসময়ে বাইরে যাস নে তাও কথা শুনেনা। ইয়া আল্লাহ আমার মেয়েটাকে এতো সুন্দর করে দেয়ার কি প্রয়োজন ছিলো? কোন জ্বিন-পরী ধরে নিতো!
-“বর্ণালী? এই বর্ণালী শুনছিস?”
-“হ্যাঁ মা বলো।”
-“দরজা খোল।”
-“ইভান আমি রাখছি পরে কথা হবে।”
-“না না রাখবে না কল থাকুক তুমি শুনে আসো গিয়ে কি বলছেন আমার শাশুড়ী মা।”
বর্ণালী আর কথা না বাড়িয়ে দরজা খুলে দিতেই শারমিন বেগম রুমে ঢুকেন।
-“এভাবে একা একা কার সাথে হাসছিলি?”
-“ক….কই মা? আমি তো শুয়ে ছিলাম। হাসিনি তো। তুমি মনে হয় ভুল কিছু শুনেছো।”
-“যা ভেবেছিলাম তাই হয়েছে।”
-“মানে কি মা?”
-“নিশ্চয়ই তোর উপর কোন জ্বিন পরীর নজর লেগেছে রে। কত করে বলি সময়ে অসময়ে বাইরে যাস নে। তুই তো আমার কোন কথাই শুনিস না।”
-“কিই মা? এসব কথা নিশ্চয়ই বেতাল চাচী শিখিয়েছে তোমাকে?”
-“আরে তুই কথায় কথায় ভাবীকে কেন টেনে আনিস?”
-“আনবো না তো কি করবো মা? সবসময় সবাইকে এইসব উল্টো পাল্টে কথা শিখিয়ে বেড়ান।”
-“ভালো কথাই বলেন ভাবী আর সবসময় ঠিক কথাই বলেন।”
-“মা এসব কুসংস্কার থেকে প্লিজ তুমি দূরে থাকো।”
-“হয়েছে এখন তোকে আমার মা হতে হবেনা। এদিকে আয় তো। আল্লাহ যে কেন আমাকে এতো সুন্দর মেয়ে দিতে গেলেন। কেন রে তুই কি একটু কালো হয়ে জন্ম নিতে পারলি না?”
বর্ণালী এবার মায়ের কথায় থ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ওর মায়ের মুখে এমন কথাও শুনতে হলো? পৃথিবীর বুকে এমন কোন মা নেই যে চায় না তার মেয়ে সুন্দর না হোক। সবাই চায় মেয়েটা একটু সুন্দর হোক তাহলে বিয়ে দিতে সমস্যা হয় না। আর আমার মা মনে হয় একমাত্র মা যে কিনা চায় আমি কেন একটু কালো হলাম না। ভাবা যায় এমন কিছু?
ইভান ফোনের ওপাশ থেকে হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে।
শারমিন বেগম মেয়েকে বিছানায় বসিয়ে মাথা নিচু করে ধরে কিসব ঠোঁট নেড়ে জপতে লাগলেন। উনার ঠোঁট নাড়াটাই বর্ণালী দেখছে কি পড়ছেন তা বুঝতে পারছেনা।
-“মা এসব কি করছো?”
মায়ের চোখ রাঙানো দেখেই বর্ণালী চুপ মেরে যায়। শারমিন বেগম কিসব বলে মেয়ের মাথা থেকে পা পর্যন্ত লম্বা একটা ফুঁ দিয়ে দেন।
-“মা কি করছো এগুলো?”
-“চুপ কর তো। একদম নড়বি না আমি আসছি।”
২মিনিটের ভেতর শারমিন বেগম কতগুলো আস্ত লাল মরিচ এনে আবারো কি সব জপে মরিচ মেয়ের মাথা থেকে পা পর্যন্ত ছুঁইয়ে মরিচের উপর থুথু ছিটিয়ে চুলোয় পুড়িয়ে ফেলেন। বর্ণালী রিতীমত অবাকের সপ্তম আকাশে উঠে গেছে। ওর মা এসব কোত্থেকে শিখলেন! এই মুহুর্তে বেতাল চাচীকে এক মগ পানিতে চোবাতে ইচ্ছে করছে। এসব শিখিয়ে বেড়ান পাড়ার মহিলাদের। সবাইকে নিজের মতো করে নিচ্ছেন। শারমিন বেগম আবার এসে মেয়েকে বলেন,
-“শুন অবেলায় আর বাইরে যাবিনা। কোন কোচিং ফোচিং-এর প্রয়োজন নেই। লাগবে না এতো টাকা। টাকা টাকা করে নিজের ক্ষতি কেন করতে চাচ্ছিস? যেভাবে খাই খাবো যেভাবে চলার চলবো তবুও তোর নিজের এভাবে ক্ষতি করার প্রয়োজন নেই।”
মায়ের মুখে এমন কথা শুনে অনেকটা খারাপ লাগে ওর। এতো কেন ভাবেন মা আমাকে নিয়ে! এদিকে না জানি ইভান এসব কথা শুনছে কিনা! নিজের আত্মসম্মান কখনোই কারো কাছে বিসর্জন দিতে রাজি না। কারো সামনে মাথা নিচু করে বা ছোট হয়ে বাঁচতে চায় না ও। মাকে থামিয়ে বলে,
-“মা প্লিজ এসব বেতাল চাচীর মতো কাজকর্ম করো না তো।”
-“কিরে তুই ভাবীকে এভাবে কেন বলিস?”
-“তো কিভাবে বলবো মা? সারাক্ষণ বেতালের মত এর ঘাড় হতে ওর ঘাড়ে চেপে বেড়ান ভাল্লাগেনা। আর তুমি আমায় নিয়ে এতো ভেবোনা তো আমার কিছুই হয় নি দেখো আমি একদম ফিট এন্ড ফাইন।”
-“কেন আমার কথা কানে নিস না? একবার নিজেকে আয়নায় দেখেছিস? আগে কত সুন্দর স্বাস্থ্য ছিলো আর এখন শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছিস।”
-“মা গো মা এসো আজকে তোমার সাথেই ঘুমাই দেখবে তোমার মেয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ।”
-“হয়েছে আর আমাকে জ্বালাস নে। তোর বাবার শরীর সবসময় ভালো থাকেনা। আমাকে উনার পাশেই থাকতে হবে।”
বর্ণালী আর কিছুই বললো না। মায়ের যাওয়ার পথে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দরজাটা লাগিয়ে দিলো। ফোন হাতে নিয়ে দেখলো কল কেটে গেছে। ভালোই হয়েছে ইভান কিছু শুনতে পারেনি। নাহলে না জানি কি থেকে কি ভেবে বসতো।
ইভান ফোন ইচ্ছে করেই কেটে দিয়েছে। ও কখনোই চায় না বর্ণালী নিজেকে ওর কাছে ছোট মনে করুক। কখনোই চায় না ওর আত্মসম্মান ক্ষুন্ন হোক। তাই তো সব শুনেও না শোনার ভাব নেয়। ছোট্ট করে একটা মেসেজ পাঠিয়ে দেয় বর্ণালীকে।
-“ঘুমিয়ে পড়ো বাসন্তী। কাল দেখা হবে সেই পর্যন্ত ভালো থেকো। আল্লাহ হাফেজ।”
মেসেজটা দেখেই বর্ণালী একটুখানি হেসে দেয়। সাথে সাথে একটা রিপ্লে ও করে দেয়।
-“তুমিও ঘুমিয়ে পড়ো পিচ্চি ছেলে। আর সকালে উঠে পড়তে বসো। সামনে এক্সাম এভাবে বসন্তপথিক হয়ে ঘুরে বেড়ালে হবে না। ভালো রেজাল্ট করতে হবে। নিজের খেয়াল রেখো। আল্লাহ হাফেজ।”
^
ইভান এক দৃষ্টিতে বাইকের দিকে তাকিয়ে আছে৷ বর্ণালী এই বাইকে উঠতে চায় না। তাহলে এটা রাখার মানে কি? নাহ আজ থেকে আর বাইক সাথে নেবো না।ফারহান আহমেদ চা হাতে নিয়ে বেলকনি থেকে ছেলের এই দৃষ্টির কারণ খুঁজছেন। ধীরে ধীরে নিচে নেমে এলেন।
-“হেই হ্যান্ডসাম?”
ইভান পিছন ফিরে হেসে দেয়। বাবার একটু একটু করে তার দিকেই এগিয়ে আসছেন।
-“হেই বুড়ো।”
-“বেয়াদব ছেলে বাবাকে বুড়ো বলিস কেন?”
-“বুড়োকে বুড়ো বলবো না তো কি যুবক বলবো নাকি?”
-“হ্যাঁ বলবিই তো আমি এখনো তোর থেকে ইয়াং আছি।”
-“তাহলে কনে দেখবো নাকি?”
-“সে তোর মায়ের সাথে আলাপ করে দেখতে পারিস।”
বাপ ছেলে দুজিনেই একসাথে হোহো করে হেসে দেয়।
-“তা বাইক কি নতুন একটা লাগবে নাকি?”
-“না বাবা।”
-“তাহলে এভাবে দেখছিলি কেন?”
-“এমনিই বাবা।”
-“বাবাকে বলবি না ভালো কথা ফ্রেন্ডকে তো বলতেই পারিস।”
-“হাহাহা তেমন কিছুনা বাবা।”
-“আমি তো আমার বন্ধুর চোখে অনেক কিছুই দেখতে পাচ্ছি। তা কে রিজেক্ট করেছে বাইকে উঠতে?”
-“হু!”
ইভান অনেকটা অবাক বাবা কিভাবে বুঝলো যে কেউ ওর বাইকে উঠতে রিজেক্ট না ঠিক রিজেক্ট না বর্ণালী তো আশেপাশের মানুষের কথা ভেবে তার সাথে বাইকে উঠতে চায় না।
-“না বাবা আসলে।”
-“আরে বেটা তোর বয়সে আমি কত মেয়েকেই বাইকের পেছনে তুলেছি জানিস?”
-“কি বলো বাবা?”
-“তোর মাকে বলিস না প্রতিদিন তো আমি ২-৩টা মেয়েকে ডেট করতামই।”
-“হাহাহাহা তাই নাকি?”
-“হ্যাঁ আর আমার ছেলে হয়ে তুই কারো কাছ থেকে রিজেক্ট হয়ে এলি?”
-“না বাবা রিজেক্ট না। ওর আত্মসম্মান খুব বেশি। আর ওর অনেক রেস্পেক্ট আছে সমাজে। তাই ও আমার সাথে বাইকে উঠতে চায় না। সে না বললেও আমি বুঝি যে ও চায় না শুধু শুধু কেউ ওকে নিয়ে বাজে কথা ছড়াক।”
-“হুম এসব শুনে যেটা বুঝলাম যে মেয়েটা আর সবার মতো না। ভদ্র ফ্যামিলির মেয়ে বলেই মনে হচ্ছে।
দেখো হ্যান্ডসাম এখন আমি তোমাকে বন্ধুর মতো না একজন বাবা হয়ে বলছি, কাউকে ভালোবাসলে মন থেকে ভালোবেসো। এমন মেয়ে কিন্তু হাজারে একজন। ভালোবাসতে নাই পারো অন্ততপক্ষে কারো সম্মান নষ্ট করো না। কারো মন ভাঙা যে মহাপাপ। আমি জানি আমার ছেলে কখনোই এমন ভুল করবে না। তবুও বলছি ভালোবাসলে ওর সম্মান করবে। কখনো সম্মান ক্ষুন্ন হয় এমন কোন কাজ করবে না।”
ইভান বাবার বলা কথাগুলো মন দিয়ে শুনছে। আজ পর্যন্ত কোন বাবাকে সে এভাবে কোন ছেলেকে বুঝাতে দেখে নি। সবসময়ই ভালো মন্দ যাচাই করার আগেই বকতে দেখেছে ও। নিজের বাবাকে নিয়ে আজ ও গর্ব অনুভব করছে। ইভান কখনোই এমন কাজ করবে না যাতে ওর কারণে বর্ণালীর বা নিজের বাবার সম্মান নষ্ট হয়।
ফারহান আহমেদ রুমে গিয়ে ফোন হাতে নিলেন ছেলে মেয়ের সুখ কেনার জন্য।
-“হ্যালো ফাহিম।”
-“জ্বি স্যার বলুন।”
-“কাজটা কি হয়েছে?”
-“জ্বি স্যার আজকে বিকেলেই কল যাবে।”
-“গুড। এজন্যই তোমাকে আমার ম্যানেজার হিসাবে এতো ভালো লাগে ফাহিম। তোমার কাজ 6G গতিতে চলে। কিন্তু এখন তোমার জন্য আরেকটা কাজ আছে। আর এই কাজটা কাল সকালেই করতে হবে।”
-“অর্ডার দিন স্যার।”
ফারহান আহমেদ প্রয়োজনীয় কথাগুলো শেষ করে বলেন,
-“শুনো ফাহিম আমার কিন্তু বেস্ট টাই চাই। টাকার কোন টেনশন করবে না।”
-“অবশ্যই স্যার আমি বেস্ট টাই করবো।”
^
-“চুপচাপ বসে আছিস যে?”
-“কোন কথা কি বলার ছিলো?”
-“প্লিজ ইয়ার ওইদিনের জন্য সরি। ফ্রেন্ডদের সাথে রাগ করে থাকবি নাকি?আর সত্যি বলছি আমি কখনোই ভাবিনি তুই বর্ণালী ম্যামের সম্পর্কে এতো সিরিয়াস।”
-“এখন তো বুঝে গিয়েছিস?”
-“হ্যাঁ সে জন্যই সরি বললাম। আমি আমার ফ্রেন্ডশিপটা নষ্ট করতে চাই না।”
-“হুম ঠিকাছে। বাকী সবাই কোথায়?”
-“রাহাত আজকে আসেনি। হিমেল আর আসাদ এখানেই কোথাও আছে।”
-“মিথি কই?”
-“হাই মালিহা, হাই ইভান। আমাকে নিয়ে কথা হচ্ছিলো নাকি?”
-“তুই কোন সেলিব্রিটি নাকি যে তোকে নিয়ে কথা বলবো?”
-“মালিহা! এখনি না শুনলাম ইভান আমার কথা জিজ্ঞেস করছে। ঠিক না ইভান?”
-“হ্যাঁ তোকে দেখছিলাম না তো তাই জিজ্ঞেস করেছিলাম।”
ইভান কথাটা শেষ করতেই দেখে বর্ণালী ওর সামনে দিয়ে হেটে আসছে। চোখ ওখানেই থমকে গেছে ওর। কালো লং ড্রেসের সাথে কালো প্লাজো আর কালো ওড়না দিয়ে আলতো করে মাথা ঢেকে রেখেছে। কালো হ্যান্ড ব্যাগটা হাতের ঠিক কনুইয়ের উল্টো পাশে ঝুলিয়ে রেখেছে। সিল্কি চুলগুলো ওড়না ভেদ করে বারবার বেড়িয়ে আসছে আর ও আনমনে সেই চুলগুলো দু আঙুল দিয়ে কানের পিছনে গুজে দিচ্ছে। কাছে আসতেই দেখলাম আজকে বর্ণালী চোখে কাজল লাগিয়েছে তাও অন্য এক ডিজাইনে। চোখের মাঝখান থেকে টেনে চোখের কোনায় অবধি কাজল লাগিয়েছে। চোখ দুটো টানাটানা হয়ে আরো বেশি মায়াবী দেখচ্ছে। ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলেই আছে। হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলছে আর হেসে যাচ্ছে। হাসির সময় কখনো চোখ দুটো খুব ছোট ছোট হয়ে আসছে আবার আগের মতো বড় হয়ে আসছে। বেশি হাসলে হাত দিয়ে মুখের উপর ঢেকে দিচ্ছে। এ কেমন সৌন্দর্য! ইস আমারই না নজর লেগে যায়। আমার এখনো না হওয়া শাশুড়ী মা ঠিকই বলেছিলেন ও একটু কালো হয়ে জন্ম নিলো না কেন! সবাই কেমন ভাবে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। পাশের স্যার তো প্রায় গিলেই খাচ্ছেন তার এই সৌন্দর্য। ও আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে আবারো স্যার আর ম্যাডাম একজনের সাথে কথা বলতে বলতে ক্যান্টিনের দিকে চলে গেলো।
💛
#_____চলবে……..
[লেখার ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ]

Part 15
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122452646091761&id=103632171307142

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here