#বিবর্ণ_জলধর
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ২৯
_____________
“আপনি চাকরির জন্য এপ্লাই করেছেন এটা কি সত্যি?”
“হ্যাঁ, সত্যি। কেন? কোনো সমস্যা?”
শ্রাবণ মিহিকের উত্তরে অসন্তুষ্ট। বললো,
“আপনার কেন চাকরি করতে হবে? আমার কি টাকা-পয়সা কম? আমার এত টাকা-পয়সা থাকতে আমার বউয়ের কেন চাকরি করতে হবে? করবেন না আপনি চাকরি।”
‘আমার বউ’ কথাটা নিতান্তই শ্রাবণের মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে। আসলে এটা সে বলতে চায়নি। বিয়ের পর তার অনেক কথাবার্তার মাঝেই এই ঘটনা ঘটেছে। এমনটা হওয়ার পর সে বিব্রত বোধ করতো, আজও করতে হলো। ব্যাপারটা তার কাছে একদম ভালো লাগলো না। কেন মিহিককে ‘আমার বউ’ বলতে গেল সে? হ্যাঁ, মিহিক তার বিয়ে করা বউ সেটা ঠিক আছে। কিন্তু তাদের সম্পর্ক তো আর স্বাভাবিক স্বামী-স্ত্রীর মতো না। যেখানে সম্পর্ক ঠিক নেই, সেখানে আমার বউ কথাটা উল্লেখ করা কতটুকু উচিত কাজ হলো? শ্রাবণের মাথা হেট হয়ে আসছে। সে এটা স্বাভাবিক ভাবে না মানতে পারলেও, মিহিক এটাকে স্বাভাবিক ভাবেই গ্রহণ করলো। বিস্ময়ের চূড়ায় নিজের কণ্ঠকে পৌঁছে বললো,
“আপনার মেন্টালিটি দেখে আমি অবাক না হয়ে পারছি না শ্রাবণ। আপনি একজন চাকরিজীবী, শিক্ষিত ছেলে হয়ে এই কথা কীভাবে বললেন? আপনার মা-বাবা কেউ তো আমার চাকরির বিষয়ে অমত করেনি। তাহলে আপনি কেন নিজের বউকে শুধু ঘরে বসিয়ে রাখতে চাইছেন?”
শ্রাবণের কাছে উত্তর নেই। সে জানে না কেন সে মিহিকের চাকরির বিষয়টা মানতে পারছে না। মিহিক চাকরি করলে তো কোনো সমস্যা নেই। তবুও সে মিহিকের চাকরি বিষয়ে সম্মতি দিতে নারাজ। দেবে না সে সম্মতি। না থাক অমত করার কোনো কারণ, সম্মতি না দিলে মনে প্রশান্তি তো আসবে। সে খাপছাড়া কণ্ঠে বললো,
“দেখুন আমি চাইছি না আপনি চাকরি করেন। যেখানে এপ্লাই করেছেন, সেখান থেকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকলে যাবেন না ইন্টারভিউ দিতে। রোজ অত লোকের মাঝে অফিস গিয়ে চাকরি করার দরকার নেই।”
মিহিক কয়েক মুহূর্ত নীরব তাকিয়ে থেকে বললো,
“এটা কি আদেশ? না কি অনুরোধ করছেন? আদেশ হলে ভালো লাগতো, মেনে নিতাম। কিন্তু আপনি যেরকম ভাবে বললেন এটাকে অনুরোধের মতো লাগছে। আমি আবার অনুরোধ রাখতে পারি না কারো।”
মিহিক ঘুরে আয়রণ করা ড্রেসগুলো ক্লোজেটে গুছিয়ে রাখতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো আবার।
পিছন থেকে শ্রাবণ কাতর কণ্ঠে বললো,
“এর মানে আপনি ইন্টারভিউ দেবেন?”
মিহিক পিছন ফিরে শ্রাবণের কাতর মুখখানিতে তাকিয়ে বললো,
“না, দেবো না। আর দিলেও হয়তো কোনো লাভ হতো না। এ যাবৎ চার জায়গাতে আমি ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম, এক জায়গাতেও সিলেক্ট হইনি। এবার ইন্টারভিউ দিলেও, নিশ্চয়ই সিলেক্ট হতাম না।”
তাৎক্ষণিক শ্রাবণের মুখে হাসি ফুঁটলো। বেখেয়ালে বলে ফেললো,
“আপনি আগে দজ্জাল মেয়ে ছিলেন, কিন্তু এখন ভালো হয়ে গেছেন।”
মিহিক চোখ ছোট ছোট করে বললো,
“কী বললেন?”
শ্রাবণের হুঁশ ফিরলো। বুঝতে পারলো তার ভুল হয়ে গেছে। কিন্তু ভুলটা তো এখন কাটিয়ে নিতে হবে। শ্রাবণ আরও চওড়া হেসে এগিয়ে এলো মিহিকের কাছে। মিহিকের মাথায় আলতো করে হস্ত পরশ রেখে বললো,
“আপনি খুব ভালো মিহিক!”
মিহিকের গম্ভীর মুখ ফ্যাকাশে হয়ে এলো। হৃদয়ে ঢিপঢিপ শব্দচারণ। শ্রাবণের মুখ থেকে দৃষ্টি সরে চোখ নত হয়ে এলো তার। হৃদয়টা আবারও অদ্ভুত রকম করছে। মিহিক স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করলো। কিছু বলবে করেও ব্যর্থ হলো। উপায়ন্তর না পেয়ে শ্রাবণের হাতটাই সরিয়ে দিলো প্রথমে। অপ্রস্তুত কণ্ঠে বলে উঠলো,
“আপনার কাজ নেই কোনো? কাজ করুন গিয়ে।”
শ্রাবণ একটু চমকালো,
“আপনি শিক্ষিকাদের মতো করছেন মিহিক।”
মিহিক হেসে ফেললো। অন্তঃকরণে এখনও গরমিল অনুভূতি। বললো,
“শিক্ষিকাদের মতো না করলে আপনাকে শিক্ষা দেবো কীভাবে?”
“কীসের শিক্ষা?”
মিহিক উত্তর দিলো না। জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে দৃষ্টি মেললো আকাশ পানে। মৃদু সমীরণ বইছে। আকাশের গায়ে জ্বলছে কিছু নক্ষত্র। ক্ষীণ আলোয় জ্বলতে থাকা নক্ষত্রের দিকে চেয়ে থেকে বললো,
“রুমকিকে মনে পড়ে আপনার?”
শ্রাবণ চমকে তাকালো। অকস্মাৎ মিহিক এমন প্রশ্ন করবে এ তার দুর্বোধ্য ছিল। হৃদয়ের অদৃশ্য স্থল হতে নির্গত চিনচিনে এক ব্যথা উপলব্ধি হলো তার।
মনে মনে মিহিকের প্রশ্নের উত্তর খুঁজলো। তার কি মনে পড়ে রুমকিকে? না, আজকে তার একবারের জন্যও মনে পড়েনি রুমকিকে। মিহিকের প্রশ্নে রুমকির কথা মনে পড়লো। শ্রাবণের কষ্ট অনুভব হয়। রুমকি তার সাথে অভিনয় করেছে!
“হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন করছেন?” মিহিকের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো শ্রাবণ। যদিও এই প্রশ্নের উত্তর পেল না।
মিহিক বললো,
“মনে করবেন না রুমকিকে। যদি ভুলক্রমে একটু-আধটু মনে পড়ে যায় সেটা ভিন্ন ব্যাপার। কিন্তু নিজ ধ্যানে যদি রুমকির চিন্তায় বুদ হয়ে থাকতে চান, তাহলে যে তুই ডাকা বন্ধ করেছিলাম, সেটা আবার শুরু করবো।”
“কী?”
মিহিক আর একটা শব্দও উচ্চারণ করলো না। নিঃশব্দে হাসলো শুধু। পিছন থেকে শ্রাবণের শক্ত চোয়ালের কণ্ঠ শোনা গেল,
“আর কখনও আমাকে তুই করে বলার চেষ্টা করবেন না। তাহলে আমিও কিন্তু ছাড় দেবো না। তুই করে বলতে চাইলে নিজেও তুই শোনার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।”
মিহিক এবারও কিছু বললো না, নিঃশব্দে হেসে গেল।
__________________
ধরিত্রী ডুবে আছে আঁধারে। আবহাওয়া বেশ ভালো। যদিও উষ্ণতা একটু বেশি। কিন্তু দখিনা নির্মলেন্দু বাতাস যখন বয়ে যায়, অন্য রকম প্রশান্তি অনুভব হয়। নোয়ানার গলার কাছটা ঘামে ভিজে উঠেছে। ওড়না দিয়ে ঘাম মুছে নেয় সে। আবারও ঘেমে যায়। সে এখন বসে আছে বাড়ির উঠোনে। উঠোনে রয়েছে ছোট সাইজের একটা টেবিল এবং চেয়ার। এখানে টেবিল-চেয়ার রাখার ব্যবস্থা করেছিল মিহিক। রাতে এখানে এসে কিছুক্ষণ একলা বসে থাকার স্বভাব ছিল তার। কবির সাহেবদের উঠোনে চেয়ার টেবিলের ব্যবস্থা দেখার পরই তার নিজ উঠোনে একটা টেবিল, চেয়ার রাখার ইচ্ছা জেগেছিল। কিছুদিনের ভিতর উঠোনের জন্য চেয়ার, টেবিল কিনেও ফেলে। মিহিকের উঠোনে একলা বসে থাকার স্বভাবটা কিছুদিন ধরে নোয়ানার মাঝে দেখা দিয়েছে। আগে বাইরে একা এসে বসে থাকতে তার একটু ভয় করতো। কিন্তু এখন ভয় নামক বিষয়টা নিজের মাঝে উপলব্ধি করছে না। তার সম্মুখে টেবিলের উপর মেলে রাখা পড়ার বই। পড়াতে তার মন অটল নয়। মনে ঘুরছে নানান বিষয়। ঘুম ঘুমও পাচ্ছে। অনেক বার হাই তুলতে গিয়েও তোলেনি। হাইকে যেন পাশ কাটিয়ে চলে এসেছে। কৃত্রিম আলোয় বইয়ের এক পাতার শেষের লাইন পড়া সমাপ্ত করে পরের পাতা উল্টালো সে। ঘরে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। একাকী ভালো লাগছে। এখনও দশ-পনেরো মিনিট থাকবে এখানে।
হঠাৎ গেটের কাছে শব্দ হতে আঁতকে উঠলো সে। বসা থেকে দাঁড়িয়েই গেল। বাড়ির গেট এসময় বন্ধ থাকে। ইদ্রিস খান বাইরে থেকে ফিরে এলেই বাড়ির গেট বন্ধ হয়ে যায়। বাইরে থেকে গেট খোলার সাধ্য কারো নেই। গেটের বাইরে শব্দটা কীসের হলো? এই সময়ে কোনো চোর তো আর চুরি করতে আসবে না। নোয়ানার ভয় করতে শুরু করলো। টেবিল থেকে বইটা তুলে নিলো সে। কেউ কি গেট খোলার চেষ্টা করছে? ওদিকটায় আলো বেশি পৌঁছায়নি। ভালো দেখা যাচ্ছে না কিছু। শব্দটা একবার হয়ে থেমে থাকেনি। কেমন একটা শব্দ হচ্ছে গেটের ওদিক থেকে। নোয়ানা হন্তদন্ত হয়ে ঘরের দিকে ছোটা দিলো। কয়েক কদম ছুটে আসতেই পিছন থেকে বাতাসের সাথে ভেসে এলো ক্ষীণ স্বরের দুটো শব্দ,
“টিউলিপ ফুল!”
শব্দ দুটো কানে আসতেই থমকে গেল নোয়ানা। শিরদাঁড়া বেয়ে আর্ত স্রোত নেমে গেল। চকিতে পিছন ফিরলো সে।
আষাঢ় গেটের উপর থেকে লাফ দিয়ে ঘাসে মোড়ানো জমিনে পদচারণ ফেললো। চোরের মতো কত কী-ই না করছে সে। মানুষের বাড়িতে গেট বেয়েও উঠছে আজকাল! গেটের কাছ থেকে কয়েক পা সামনে হেঁটে এলে নোয়ানা আষাঢ়ের চেহারা দেখতে পেল স্পষ্ট। অস্ফুট স্বরে বিস্ময় প্রকাশ করলো,
“আপনি?”
আষাঢ় কিছু না বলে মুচকি হাসি অধরে রেখে কাছে এগিয়ে এলো। এসে এক হাত দিয়ে নোয়ানার মুখ চেপে ধরলো। আষাঢ়ের এই কাজে নোয়ানার মুখ থেকে চাপা একটা শব্দ বেরিয়ে গেল। আষাঢ় সেসব গ্রাহ্য না করে তাকে বাড়ির পাশের দিকটায় নিয়ে এলো। এখানে গাছের ছায়ার কারণে আলো এসে পৌঁছাচ্ছে না। সুতরাং ঘর থেকে কেউ বের হলে সহজে তাদের দেখতে পাবে না। আষাঢ় যথা স্থানে এসে থামতেই নোয়ানা আষাঢ়ের হাতটা রাগান্বিত ভাবে সরিয়ে দিলো। নিচু ক্ষিপ্র কণ্ঠে বলে উঠলো,
“এটা কোন ধরণের অসভ্যতামি? আপনার সাহস কী করে হয় এসময় এমন করে আমাদের বাড়িতে আসার? মরতে চান আপনি?”
আষাঢ়ও নোয়ানার মতো নিচু স্বর করে বললো,
“মেরেই তো ফেলেছো। আর কী মারা বাকি আছে?”
“এমন চোরের মতো করে কেন এসেছেন আমাদের বাড়িতে?”
“তোমাকে চুরি করতে। চুরি করে নিয়ে যাব তোমায়।”
নোয়ানা রেগে বললো,
“আপনার ইয়ার্কি আমার একদম পছন্দ নয়। বলুন, কেন এসেছেন?”
“তোমাকে দেখতে।” নির্বিকার বললো আষাঢ়।
“হাসালেন আমায়।”
“তাহলে এবার কান্নার কথা বলি। এসেছি তোমাকে জেরা করতে।”
“কীসের জেরা?”
“টিউশনি শেষে তুমি ওই নাঈমের বাইকে চড়ে কেন বাড়িতে এসেছো? কেন অন্য ছেলেদের বাইকে উঠতে হবে তোমার? বিশেষ করে ওই নাঈমের?”
“আপনি এই কথা জিজ্ঞেস করতে এসেছেন?” কটমট করে জিজ্ঞেস করলো নোয়ানা।
“মনে করো এই কথা জিজ্ঞেস করতেই এসেছি। তোমাকে আগেই বলে দিই, ওই নাঈমকে আমার একদম পছন্দ নয়। ওর সাথে বেশি কথা বলবে না।”
“আপনার পছন্দ না অপছন্দ তাতে আমার কী যায় আসে? সে আমার কাজিন। অবশ্যই তার সাথে আমি বেশিই কথা বলবো।”
“তুমি বুঝতে পারছো না, ও স্বাভাবিক নয় তোমার সাথে। আমার তো মনে হচ্ছে ও তোমার প্রেমে পড়ে বসে আছে।”
“তাতে আপনার সমস্যা কী?”
“আমার সমস্যা কী মানে? সব সমস্যা তো আমারই। তুমি মানুষটাই তো আমার। আমার মানুষের প্রেমে অন্য কেউ পড়লে রাগ হবে না আমার?”
“চলে যান।”
“চলে তো যাবই, থাকতে কি এসেছি? থাকতে কি দেবে তুমি?”
“দ্রুত যান, আপনাকে এখানে দেখতে পেলে ব্যাপারটা অন্যরকম হয়ে যাবে।”
“যাচ্ছি, কিন্তু…”
আষাঢ় আচমকা ঝুঁকে পড়লো নোয়ানার দিকে। নোয়ানা চমকে উঠে পিছনে সরে গেল। আষাঢ় হেসে ফেলে বললো,
“দূরে সরে গিয়ে লাভ নেই টিউলিপ, কাছে তোমার আসতেই হবে। তোমার পালানোর দিন অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।”
বলে এক হাত বাড়িয়ে নোয়ানার ডান হাতটা ধরে কাছে টেনে আনলো নোয়ানাকে। নোয়ানার বুক কাঁপছে। আষাঢ় তার দুই হাত ধরে রেখে আবারও কিছুটা ঝুঁকলো তার দিকে। ঝাপসা আলোয় দেখতে লাগলো নোয়ানার থমথমে নেত্র জোড়া। দৃষ্টি স্থির রেখে বললো,
“বিয়ের আগে তোমার একটা চুমু কি পেতে পারি না টিউলিপ? এটা আবদার করা কি খুব অন্যায় আমার?”
নোয়ানা চোয়াল শক্ত করে ক্রুর কণ্ঠে বললো,
“এসব কী বলছেন হিমেল?”
“হিমেল ইসলাম যা বলে ঠিকই বলে। কিন্তু এখন যেটা করবে একদম ঠিক করবে না। এটা একটা বিরাট অপরাধ হবে। তাও সে এ কাজটা করবে।”
নোয়ানা তাকিয়ে রইল। দু চোখে তার ভীষণ বিষাক্ততা। আষাঢ় সেই বিষাক্ত চোখ জোড়া থেকে দৃষ্টি আড়াল করলো। নোয়ানার অধরে চুমু খাওয়ার জন্য নিকটে এগিয়ে এলেও সে তার পূর্ব পরিকল্পনা থেকে নড়লো না। আঁখি মুদিত অবস্থাতেই সে হেসে হঠাৎ নোয়ানার কপালে ছুঁয়ে দিলো ওষ্ঠ্য আর্দ্র পরশ।
আষাঢ়ের এই কাজ নোয়ানার রূঢ় ভাব কাটিয়ে তাকে করে দিলো স্তব্ধ, বিমূঢ়। স্তব্ধ হয়ে গেল সে।
আষাঢ় প্রশস্ত হেসে বলে ফেললো,
“আসলে এই কাজটার জন্যই এসেছিলাম আমি। খুব বেশি রাগ করলে কি টিউলিপ?”
নোয়ানা বাকরুদ্ধ, হতভম্ব। আষাঢ় হাসতে হাসতেই বললো,
“বউ না হয়ে কোথায় যাবে তুমি? পালানোর সব রাস্তায় রেড সিগন্যাল জ্বালিয়েছি আমি। সবুজ বাতি কখনও জ্বলবে না তাতে। শুধু আমার হৃদয়ে যাতায়াতের রাস্তাই উন্মুক্ত তোমার জন্য। এটা সিগন্যাল বিহীন। ইচ্ছা-খুশি মতো যাতায়াতের স্থান। এমন স্থান পৃথিবীর দ্বিতীয় কোথাও পাবে না টিউলিপ ফুল!”
নোয়ানা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনলো আষাঢ়ের কথাগুলো। মনের ভিতর গেঁথে নিলো। ধ্যান ভাঙলো হাফিজার ডাকে,
“নোয়ানা, কোথায় তুই?”
নোয়ানার হৃদপিণ্ড ভয়ে কেঁপে উঠলো। চাচি!
(চলবে)