ব্যবধান ( ষষ্ঠ পর্ব )

ব্যবধান ( ষষ্ঠ পর্ব )
শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য্য

দীপশিখার ঘর থেকে বেরিয়ে, বৃষ্টির মধ্যে উদভ্রান্তের মত এগিয়ে চলেছে কৌস্তভ। অবশ পাদুটো চলছেনা আর। ক্রমাগত হোঁচট খেয়ে খেয়ে, জানাচ্ছে প্রবল বিদ্রোহ। চোখের জলের ধারা আর বৃষ্টির জলের ধারা, সব যেন মিলেমিশে একাকার। হতজ্ঞান হয়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে তবুও হেঁটেই চলেছে সে। শিখার বলা কথাগুলোর দংশনে, ছটফট করছে কৌস্তভ। বিশেষ করে ‘পরপুরুষ,’ এই শ্লেষাত্মক কথাটার তীব্র দহনে, জ্বলে যাচ্ছে সর্বাঙ্গ। এই একটা কথায় কৌস্তভের সব অধিকার যেন নিমেষে ছিনিয়ে নিল শিখা। কিন্তু কেন? সে তো নিজের ভুলের আজ ক্ষমাপ্রার্থী। ক্ষমা করে দেওয়াটা কী এতই কঠিন? নাকি এই কষ্ট পাওয়াটাই এখন ওর ভাগ্যের পরিহাস? চিৎকার করে কর্দমাক্ত জনমানব শূন্য মাঠের মধ্যে মূর্ছিতের মত হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল কৌস্তভ। কিন্তু সেই কান্না শোনবার আজ কেউ নেই। সেই যন্ত্রণা উপলব্ধি করবার কেউ নেই। ঝমঝম করে বৃষ্টির অবিরাম বর্ষণ শুধু সমব্যথী হয়ে স্বান্তনা দিচ্ছে কৌস্তভকে। উন্মত্ত শীতল বারিধারা ক্রমশ ধুয়েমুছে দিচ্ছে হৃদয়ের সব যন্ত্রণাকে, ধীরে ধীরে শান্ত করছে শরীরের তীব্র দহনকে। বেশ কিছুক্ষণ মনের সমস্ত যণ্ত্রণাকে বুকফাটা তীব্র কান্নায় নিঃশেষিত করে, আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়াল কৌস্তভ। যতটা সম্ভব ওকে এখন স্বাভাবিক হতে হবে। মায়ের সামনে মনের অবস্থা ধরা পড়লে চলবেনা কিছুতেই। ছেলের জন্য এমনিতেই চিন্তার শেষ নেই। তারওপর আজকের ঘটনা তাঁকে উদ্বিগ্ন করে তুলবে আরও। এইবয়সে মানুষটার মানসিক চাপ আর বাড়াতে চায়না কৌস্তভ।

কলিংবেলের শব্দে তাড়াতাড়ি এসে দরজা খুললেন সুলেখাদেবী। দরজার বাইরে বৃষ্টিতে সপসপে ভিজে কৌস্তুভকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, যারপরনাই বিস্মিত হয়ে বললেন—-” সেকিরে! এই মুষলধারে বৃষ্টি মাথায় করে, এখন এলি কেন তুই? আসবি বলে তো একটা খবরও দিসনি!”

মুখে যতটা সম্ভব হাসি টানবার চেষ্টা করে কৌস্তভ বলল—–” আচমকা এসে তোমায় সারপ্রাইজ দেব ভাবছিলাম মা। কিন্তু এই হতভাগা বৃষ্টি সব ভেস্তে দিল। মেঘ দেখে ভাবলাম, বৃষ্টি নামতে নামতে পৌঁছে যাব। কিন্তু মাঝ রাস্তাতেই এমন বৃষ্টি, একেবারে ভিজে গেলাম।“

সুলেখাদেবী ব্যস্ত হয়ে ওয়ারড্রব থেকে একটা শুকনো তোয়ালে নিয়ে এসে, এগিয়ে দিলেন ছেলেকে। মাথাটা মুছতে মুছতে জামাকাপড় নিয়ে কৌস্তভ চলে গেল বাথরুমে। আর দেরি না করে, সুলেখাদেবী রান্নাঘরে গিয়ে চায়ের জলটা বসিয়ে দিলেন।

বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে, কৌস্তভ এসে বসল খাটে। জানলার দিকে একঝলক তাকিয়ে দেখল, অঝোর ধারায় বৃষ্টি তখনো পড়েই চলেছে। কৌস্তভের মনের বেদনার প্রকাশ হয়ে সেইথেকে এই বৃষ্টি তার সহানুভূতির শীতল বারি ঝরিয়েই চলেছে অবিরাম। আজ বাইরে যে বর্ষণ, কৌস্তভের মনেও সেই একই বর্ষণ। তফাত একটাই, বাইরের বৃষ্টি হয়তো কোন একসময় ঠিক থেমে যাবে। কিন্তু কৌস্তভের মনের এই বেদনার বারিধারা কী আদৌ কোনদিনও থামবে? নিজের অজান্তেই চোখটা জলে ঝাপসা হয়ে আসছে অনবরত। মনের সাথে ধীরে ধীরে শরীরের কষ্টটাও এবার জানান দিতে শুরু করেছে। মাথাটা ছিঁড়ে যাচ্ছে যন্ত্রণায়। শরীরটাও কেমন ম্যাজম্যাজ করছে।

চায়ের কাপ হাতে, ঘরে ঢুকতে গিয়ে ছেলের চোখমুখের অবস্থা দেখে, থমকে গেলেন সুলেখাদেবী। সজল চোখে উদাসভাবে জানলার দিকে তাকিয়ে, বসে আছে কৌস্তভ। মুখ চোখ থমথমে। এমনই আনমনা হয়ে রয়েছে যে সুলেখাদেবীর ঘরে ঢোকার শব্দেও চিন্তার রেশ কাটেনি কৌস্তভের। বুঝতেই পারছেন ছেলে-বৌয়ের মধ্যে মনকষাকষি কিছু একটা হয়েছে। তিনি এগিয়ে এসে, মাথায় স্নেহের হাত রাখতে, সচকিত হয়ে উঠল কৌস্তভ। চায়ের কাপটা এগিয়ে দিয়ে স্নেহার্দ কন্ঠে বললেন—-” কী হয়েছে কৌস্তভ, আমায় কী বলা যাবেনা? নিজের মনের কষ্ট এইভাবে চেপে না রেখে, কাউকে বললে, মনটা হাল্কা হয় বাবা। আমি যে তোর মা। আমায় বলতে এত দ্বিধা কিসের? দেখনা, এই বুড়িমাকে মনের কষ্টটা বলে, যদি মন কিছুটা হাল্কা হয়?”
কৌস্তভ একটু ম্লান হেসে বলল—–” তুমি মিছিমিছি চিন্তা করছো মা। কিছু তো হয়নি। আমি তো বেশ আছি।“
——–” এই মন ভোলাবার কথাগুলো, আমায় বলিসনা বাবা। তোর মনের অবস্থা বুঝতে, আমার এতটুকুও সময় লাগেনা। তবে তোর যখন বলবার ইচ্ছে নেই, তাহলে থাক। আমি জোর করবোনা।“—- বলে সুলেখাদেবী খাট থেকে উঠতে যাবেন, কৌস্তভ তাড়াতাড়ি সুলেখাদেবীর হাতটা ধরে খাটে বসিয়ে, কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল। মায়ের কোলের এই পরম শান্তির আশ্রয়ে এসে, এতক্ষণে কিছুটা স্বস্তি পেল কৌস্তভ। দুহাতের বেষ্টনীতে সুলেখাদেবীকে জড়িয়ে ধরে, কাতরভাবে বলল
——” চলে যেওনা মা। একটু বস। সত্যিই অনেক কথা তোমায় বলবার আছে। আর যে আমি পারছিনা মা। বড় কষ্ট। আচ্ছা মা, বলতে পারো, ভুল করে কেউ যখন নিজেকে শোধরাতে চায়, তখন সমাজ তাকে ফিরিয়ে নেয়না কেন? নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে চাইলে, তাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়না কেন? আজীবন একজন অপরাধী হিসেবেই তার বিচার কেন হয় মা?”

মৃদু হেসে সুলেখাদেবী বললেন——” আমি বুঝতে পারছি কৌস্তভ, তুই কী বলতে চাইছিস। বউমাকে ভুল বুঝিসনা বাবা। অনেক দূরত্ব তোদের মধ্যে হয়ে গেছে। আবার নতুন কোন ভুল বোঝাবুঝিতে সেটাকে বাড়তে দিসনা আর। আমার মনে হয় শিখাকে তোর আরও কিছুটা সময় দেওয়া দরকার। কিছুটা অপেক্ষা তোকে এখনও করতে হবে বাবা। এতবছরের রাশিকৃত অভিমান যে এত সহজে ভাঙ্গবার নয়। শিখা যে তোকে এখনও কতটা ভালোবাসে, কতটা তোর জন্য চিন্তা করে, তা তোর অ্যাকসিডেন্টের সময় আমি দেখেছি, বুঝেওছি। ও যে তোকে ভীষণ ভালোবাসে, তা নিয়ে কোন দ্বিমত হবেনা। শুধু অদৃশ্য এক অভিমানের প্রাচীর আজ তোদের মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিয়ের পর থেকে যে কষ্ট ও সহ্য করেছে, তার থেকে বেরিয়ে আসতে ওর সময় লাগবে। ধৈর্য্য তোকে ধরতেই হবে। অভিমানের এই নিরেট প্রাচীর নিজের ভালোবাসা দিয়ে তোকেই ভাঙ্গতে হবে কৌস্তভ।“

গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে, চুপ করে রইল কৌস্তভ। মায়ের বলা কথাগুলো তো সেও উপলব্ধি করে মননে। ঠিকই তো বলেছে মা। শিখার এত যত্ন, ভালোবাসার পরিবর্তে ও কী দিয়েছে শিখাকে? শুধুই যণ্ত্রণা। প্রতি রাতে মদের নেশায় চূড় হয়ে উপর্যুপরি অত্যাচার চালিয়েছে শিখার উপর। তারপরেও শান্তি হয়নি, নিষ্ঠুরের মত ডিভোর্সের ফরমান ধরিয়েছে হাতে। এখন একাকীত্বের যন্ত্রণা ভোগ করা ছাড়া, কোন দ্বিতীয় পথ তো ওর কাছে আর খোলা নেই। নিজের স্ত্রী, সন্তানকে কাছে পাওয়ার তীব্র কামনায় ও তিলে তিলে শেষ হয়ে যাবে, এটাই তো ওর শাস্তি। প্রতিটা সেকেন্ড, প্রতিটা মিনিট, প্রতিটা ঘন্টা শুধু অপেক্ষা। এটাই এখন ওর নিয়তি। আত্মগ্লানিতে আজ দগ্ধ হয়ে মনের গহনস্থল থেকে শুধু একটাই আকুতি ভেসে আসছে বারবার, অপেক্ষা করবো শিখা। আমৃত্যু অপেক্ষা করবো তোমার ফিরে আসবার।

সন্ধ্যে থেকেই গা-টা বেশ গরম কৌস্তভের। যতই রাত বাড়ছে, জ্বরটাও উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। তার সাথে অসম্ভব মাথার যণ্ত্রণা। ওষুধ খেয়েও উপশম হয়নি এতটুকুও। সুলেখাদেবী ঠায় বসে জলপট্টি দিয়ে যাচ্ছেন ছেলের মাথায়। অসম্ভব মাথার যণ্ত্রণায়, জ্বরে একেবারে বেহুঁস হয়ে ছটফট করছে কৌস্তভ। ছেলের অবস্থা দেখে চিন্তিত সুলেখাদেবী অস্থির চিত্তে অসহায়ভাবে অপেক্ষা করছেন ভোরের আলো ফোটবার। কী উপায় ছেলেকে একটু আরাম দেবেন, ভেবে পাচ্ছেন না কিছুই। তবে ওষুধের প্রভাবে ভোরের দিকে জ্বরটা একটু কমতে শুরু করলো কৌস্তভের। এতক্ষণে খানিকটা স্বস্তি পেলেন, রাত জাগার ক্লান্তিতে অবসন্ন সুলেখাদেবী।

——“কীরে, আজ সকাল থেকেই দেখছি মুখটা ভার। বিরহী রাধিকার মত অবস্থা কেন ম্যাডামের? সুস্থ হয়ে, তোর কেষ্ট ঠাকুর কী আবার স্বমূর্তি ধরল নাকি শিখা?”—-স্কুলের টিফিন পিরিয়ডে টিচার্স রুমে শিখার পাশে বসতে বসতে বলল তনিমা।

বেশ কিছুক্ষণ নীরব থেকে, অশ্রুসিক্ত আনত চোখ দুটো তুলে শিখা বলল—” কাল কৌস্তভ চলে গেছে তনিমা। একরাশ অভিমান নিয়ে চলে গেছে ও। অনেক বাজে কথা বলে, অনেক অপমান করে বৃষ্টির মধ্যে অসুস্থ মানুষটাকে ঘর থেকে একরকম বের করে দিয়েছি আমি।“

—-” সেকিরে! কিন্তু কেন?”

তনিমাকে গতকাল বিকেলের সব ঘটনাই একে একে খুলে বলল দীপশিখা।
সব শুনে বেশ গম্ভীর হয়ে গেল তনিমা।
—-” এটা কিন্তু তুই ঠিক করিসনি শিখা। কৌস্তভ কিন্তু তোর কাছে নিজে আসেনি। তুই ডেকে এনেছিলি। কাউকে ঘরে ডেকে, তাকে এভাবে অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়া, তোর সত্যিই উচিত হয়নি। আর ওই আরতিদেবীর মত এমন অসভ্য মুখকাটা মহিলার কথা অত মনে ধরিস কেন বলতো? কৌস্তভ তোর হাজবেন্ড। ওকে ঘরে রাখা মানে কোন নষ্টামি করা নয়। আমি তোর জায়গায় থাকলে, এত নোংরা কথা বলবার জন্য, ঠাস করে গালে একখানা চড় কষিয়ে দিতাম মহিলার। আর তুই তার কথায় বৃষ্টির মধ্যে কৌস্তভকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিলি? ফোন করেছিলি কৌস্তভকে? ওইভাবে বৃষ্টিতে ভিজে, কেমন আছে জিজ্ঞেস করেছিস একবারও?”
——” না, করিনি। সাহস হয়নি।“
——” বাহ! শোন কথা। মনের ভেতর গুমড়ে গুমড়ে এভাবে কষ্ট না পেয়ে, একটা ফোন করে খবর নিলে তো পারতিস। এখন দায় এড়িয়ে গেলে তো চলবেনা। এইভাবে মনে কষ্ট পুষে রেখে লাভ কী? কথা বল কৌস্তভের সাথে। মনটা হাল্কা হবে। কৌস্তভ তোর সাথে অন্যায় করেছে ঠিকই। কিন্তু কালকের অন্যায়টাও তোর কিছু কম নয় শিখা।“

স্কুল থেকে ফিরেই, আর একমুহূর্তও দেরি না করে কৌস্তভকে ফোন করলো শিখা। কাল থেকে বুকের ভেতর জমাট বেঁধে আছে কষ্টটা। সারারাত দুচোখের পাতা এক করতে পারেনি শিখা। তবুও কীসের তুচ্ছ অভিমানের বশে একটাও ফোন করেনি, খবর নেয়নি কৌস্তভের। এই প্রথম মনে হয় শিখা নিজের মনের নয় মস্তিষ্কের শাসনকেই গুরুত্ব দিয়েছে বেশি। তবে আর নয়। যে ভুল ও করেছে, তার ক্ষমা চাইবে আজ। স্বজ্ঞানে কাউকে কষ্ট দেওয়া তো ওর স্বভাব নয়।

শুনতে পাচ্ছে কৌস্তভের ফোনে রিং হচ্ছে। বেশ কিছুক্ষণ রিং হওয়ার পর, ফোনটা ধরলো কৌস্তভ।
ফোনটা ধরে, কয়েকমুহূর্ত দুপক্ষই নীরব। মনের মধ্যে জমা হয়ে রয়েছে অনেক কথা। কিন্তু তা প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে আজ দুজনেই। শেষে নীরবতা ভেঙ্গে প্রথম কথা বলল কৌস্তভ—-” কিছু বলবে শিখা?”

ফোনে কৌস্তভের গলাটা শুনেই, উদ্বিগ্ন হয়ে উঠল শিখা—–“তোমার গলাটা এমন বসে গেছে কেন কৌস্তভ? তোমার কী শরীর খারাপ?”
—না না, আমি ঠিকই আছি। কাল রাতে একটু জ্বর এসেছিল। এখন ভালো আছি।“

—–” জ্বর এসেছিল? আমায় একবার খবর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করলেনা তুমি? জানি রাগ হয়েছে তোমার। হওয়াটাই স্বাভাবিক। কালকের ব্যবহারের জন্য সত্যিই ভীষণ অনুতপ্ত আমি। অন্যায় করেছি কৌস্তভ। পারলে আমায় ক্ষমা করো।“

—–” এসব কী যা তা বলছো তুমি শিখা। ক্ষমা চাওয়ার কোন প্রশ্নই নেই। আসলে আমি তোমায় আর বিব্রত করতে চাইনি।“
——” এতো তোমার রাগের কথা।
—–” রাগের কথা নয় শিখা। যে মানুষের সারাজীবন তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত, তার কী রাগ করা মানায়? আর তাছাড়া এই সংসারে আমার মত একজন অপ্রয়োজনীয় মানুষের রাগের কী বা এসে যায়? এই ধৃষ্টতা অন্তত আমায় শোভা পায়না। আচ্ছা, এখন ছাড়ো এসব কথা। অনেকক্ষণ ধরে ফোনে রণর কান্নার আওয়াজ পাচ্ছি। কী হয়েছে, কাঁদছে কেন সে? কিছু বায়না হচ্ছে নিশ্চয়ই।”
——” হ্যাঁ, তাছাড়া আর কী? যত বড় হচ্ছে, জেদ ক্রমশ বাড়ছে ছেলের। টুলুমাসির সাথে পার্কে গিয়ে কোন এক বাচ্চার ট্রাই সাইকেলে চেপে, আর সেখান থেকে কিছুতেই উঠবেন না মহাশয়। মাসি জোর করে উঠিয়ে নিয়ে আসায়, শুরু হয়েছে কান্না। তার সাথে বায়না। তার এখন ওই সাইকেল চাই।“

——” ঠিক আছে, ট্রাই সাইকেলের দায়িত্ব তুমি আমার উপর ছেড়ে দাও। কাল অফিস থেকে ফেরবার পথে আমি নিয়ে আসবো।“
——” তোমার তো জ্বর কৌস্তভ। এরমধ্যে কী করে অফিস জয়েন করবে তুমি? আর কটাদিন যাক না।“

——” আরও ছুটি নিয়ে বসে থাকলে, এবার আমায় সারাজীবনের মতই ছুটি দিয়ে দেবে কোম্পানি। এখন আমি ঠিক আছি। তাছাড়া এতদিন ধরে ঘরে বসে আর ভালোও লাগছেনা। মনের ভারটা বড় বেশি অসহনীয় হয়ে উঠছে। বাইরে বেরোলে, সবার সাথে কথা বললে, কাজের মধ্যে থাকলে, হয়তো কিছুটা ভালো লাগবে। মুক্ত বাতাসে প্রাণভরে অন্তত নিঃশ্বাসটুকু তো নিতে পারবো।“ ( ক্রমশ )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here