#ভালোবাসি_আমি_যে_তোমায়_২
#Sohani_Simu
২৮.
বিকেল চারটে।সারাদিনের কড়া রোদ চলে গিয়ে আকাশে ঘন কালো মেঘ জমেছে,আষাঢ়ের মেঘ।দূরে কোথাও মেঘ গুড় গুড় করছে।আরাফ ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।মৃদু ঠান্ডা বাতাসে মাথার উসকো খুশকো চুল গুলো কাঁপছে।কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টি নামতে পারে।আরাফ কিছুক্ষণ নীরব দাঁড়িয়ে থেকে পেছনে ঘুরে দাঁড়ালো।ঘরের বেহাল দশা দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিছানায় গিয়ে গা এলিয়ে দিল।লাল হয়ে যাওয়া চোখের কোনা বেয়ে আবারও গড়িয়ে পরলো অশ্রু।চোখ বন্ধ করে চুল গুলো দুই হাত দিয়ে মাথার উপর ঠেলে দিয়ে কান্নায় ভেঙে পরলো।অন্তর বিয়ে হয়ে গিয়েছে।নিজের চোখের সামনে ভালোবাসার মানুষকে অন্যের হতে দেখেছে,কিছু করতে পারেনি।ভালোবাসাই তার হাত-পা বেঁধে দিয়েছে।নির্ভীক আর অন্তর বিয়ে শেষেই আরাফ কমিউনিটি সেন্টার থেকে সোজা বাসায় চলে এসেছে।কি করবে না করবে কিছু ভেবে পাচ্ছেনা।রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে।নির্ভীক তার সাথে এটা কি করে করতে পারলো।জানতো তো এর পরিণাম কি হতে পারে।অন্ত শুধু আমার আর কারো নয়।আমি তোকে শেষ করে দিব নির্ভীক,আমার জানপাখির জীবন থেকে সরিয়ে দিব।আরাফ চোখ খুললো।চোখমুখ শক্ত করে উঠে বসলো।ফোন নিয়ে রাগী মুখ করে আবার চলে গেল।
—
শত শত লোকের সামনে অন্ত মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছে।সত্যি সত্যি আজকেই বিয়ে হয়ে যাবে সে ভাবতে পারেনি।কাল রাতে নির্ভীকে শুধু হাতটা বাড়িয়ে দিয়েছিল আর আজই নির্ভীক ওকে বিয়ে করে নিল।পার্লারে সাধারণ সাজের জন্য গিয়েছিল বউ সেজে বের হয়ে এল।কিছু সময়ের মধ্যে বিয়েও হয়ে গেল।বিয়ের কার্ডে প্রিয়তার নাম দেখে অন্ত ভেবেছিল নির্ভীক মজা করে কার্ডটা বানিয়েছে কিন্তু এই কার্ড দিয়েই যে শত শত লোককে ইনভাইট করা হয়েছে অন্ত সেসবের কিছুই জানতো না।ইচ্ছেমতি অন্তর পাশে নির্ভীকের জায়গায় বসে একটার পর একটা সেলফি তুলছে।নির্ভীক একটু দূরে বন্ধুূের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।অন্ত মাঝে মাঝে মাথা তুলে আড় চোখে নির্ভীককে দেখছে।মেরুন কালার শিরওয়ানিতে নির্ভীককে রাজপুত্র লাগছে।নির্ভীকের সাথে চোখাচোখি হতেই অন্ত চোখ সরিয়ে নিল।নির্ভীক মুচকি হেসে বন্ধুদের সাথে কথা বলতে লাগলো।অন্ত এবার আফ্রার দিকে তাকালো।আফ্রা রাযীনের বন্ধুদের সাথে কথা বলছে।আফ্রার তাও সবার সাথে কথা বলে ভাল সময় কাঁটছে কিন্তু নির্ভীক তো অন্তর কাছে কাউকে ঘেষতেই দিচ্ছেনা।কেউ একটু কথা বলতে আসলেই নির্ভীক এসে দ্রুত সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষ করে তাকে পাঠিয়ে দিচ্ছে।অন্তকে কোন ছেলের সাথে কথা বলতে দিচ্ছে না।মেয়েদেরও অন্তর কাছে বেশিক্ষণ থাকতে দিচ্ছেনা।সকালে অন্তর একটু মাথাব্যথা করছিল সেজন্য নির্ভীক একটু বেশি কেয়ার নিচ্ছে যাতে কোনো ভাবেই মাথাব্যথাটা ফিরে না আসে।
অন্ত ইচ্ছেমতির দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল,
‘কি শুধু একা একা সেলফি তুলছিস?আমাকে নিয়েও দু-একটা তোল।’
ইচ্ছেমতি অন্তর থুতনি ধরে বলল,
‘ওলে বাবুটা,তুমিও সেলফি তুলবা?কিন্তু তুমি তো বিয়ে করবানা জন্য ভাইয়ার গলা ধরে কাঁদছিলা এখন তাহলে সেলফি তুলতে চাইছিস কেন হে?নাটক করা শেষ?বিয়ে তো করলিই,তখন শুধু শুধু নির্ভীক ভাইয়াকে সবার সামনে অপমান করলি।’
শেষের কথাগুলো ইচ্ছেমতি রাগ নিয়ে বলল।অন্ত মাথা নিচু করে মন খারাপ করে বলল,
‘তখন ভয় করছিল তাই…’
ইচ্ছেমতি মুখ বাঁকা করল।অন্তর কাজিন রিসাব এসে অন্তর পাশে বসতেই নির্ভীক ঝরের গতিতে অন্তর সামনে আসলো।অন্তর হাত ধরে বলল,
‘চলো আমার স্যার তোমার সাথে কথা বলবেন।’
অন্ত শুকনো মুখ করে নির্ভীকের সাথে গেল।রিসাব হতাশ হয়ে ইচ্ছেমতির দিকে তাকিয়ে বলল,
‘আয় তোর সাথেই সেলফি তুলি।’
‘ওয়েট ওয়েট একটু ওয়েট কর।’
ইচ্ছেমতি এদিক ওদিক প্রান্তকে খুঁজছে।প্রান্তকে জেলাস ফিল করানোর একটা খুব ভাল সুযোগ পেয়েছে। এই সুযোগ সে কিছুতেই হাত ছাড়া করতে চায়না।কিন্তু প্রান্তকে দেখে ইচ্ছোমতি নিজেই জেলাস হয়ে গেল।একটু দূরে প্রান্ত দুই হাতে দুটো কাঠি কাবাব নিয়ে খাচ্ছে আর একটা মেয়ের পাশে বসে হেসে হেসে কথা বলছে।ইচ্ছেমতি ভ্রু কুচকে মনে মনে বলল,
‘ঠিক আছে আমিও দেখে নিব।আপনি তো আমাকে কি প্যারায় ফেলেছেন তারচেয়ে দ্বিগুণ প্যারায় আপনাকে ফেলবো।হেসে নিন ভাল করে।আপনার মেয়েবাজি করা যদি না তাড়িয়েছি আমার নামও ইচ্ছে নয়।’
ইচ্ছেমতি থমথমে মুখ করে আফ্রার কাছে চলে গেল।পুরো বিকেল দুই জোড়া বর-বউকে নিয়ে সবার খুব ভাল সময় কাটলো।আরাফ আসার পর থেকে অন্তর দিকে তাকায়নি।সবসময় অন্তর থেকে দূরে থেকেছে।নির্ভীক বুঝতে পারছে আরাফের মানসিক অবস্থা এখন ভাল নেই।নির্ভীক খুব ভাল করে জানে আরাফ অন্তকে কতটা ভালোবাসে।
সবশেষে এবার বিদায়ের পালা।প্রথমে রাযীন-আফ্রা অন্তর বাবা-মার কাছ থেকে বিদায় নিল তারপর নির্ভীক-অন্ত।অন্তর কান্না করতে করতে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে আফ্রা অনেক চেষ্টা করেও চোখে পানি আনতে পারছেনা।ছোট বোন এত কাঁদছে আর বড় বোন একটুও কাঁদছোনা ব্যাপারটা কেমন দেখায়।আফ্রা মনে মনে বলছে তোকে একা পেলে থাপ্পড় দিয়ে কান্না করা ভুলিয়ে দিব ডাইনি কোথাকার।জারিফ একটু দূরে উল্টোদিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে।একসাথে বাড়ির দুটো মেয়েকে বিদায় দেওয়া সামান্য কোন ব্যাপার নয়।অন্তর বাবা-মা একদম ভেঙে পরেছেন।নির্ভীকের বাবা-মা উনাদের নানান ভাবে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।সবাই রাযীন-আফ্রাকে আগে যেতে বলল।আরাফ এসে আফ্রা আর রাযীনের মাঝে দাঁড়ালো।দুজনকে দুপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিতে গেল।অন্তর কাজিন সারা আর রুহি অন্ত-নির্ভীককে নিয়ে জারিফের কাছে গেল।দুই ভাই-বোন এবার চিৎকার করে কান্না করছে।অনেকে এমন দৃশ্য দেখতে না পেরে দূরে যাচ্ছে।অন্তকে এত কাঁদতে দেখে নির্ভীকের মুখ শুকিয়ে গেছে।বেশ কিছুক্ষণ ধরে খেয়াল করছে অন্তর হাতের ব্যান্ডেজ রক্তে লাল হয়ে আছে।সেলাই টেলাই কেঁটে গেল নাকি কে জানে।জারিফ অন্তর সাথে নির্ভীককেও জড়িয়ে ধরলো।হাউ মাউ করে কাঁদছে,কিছুই বলতে পারছেনা।দুজনকে দুই পাশে নিয়ে গাড়ির কাছে এসে অন্তকে গাড়িতে বসিয়ে দিল।নির্ভীককে জড়িয়ে ধরে কোনরকম বলল,
‘বোন নয় কলিজা আমার।কখনও কষ্ট দিসনা।যেই সমস্যায় হোক সবার আগে আমাকে জানাবি।কখনও জোরে কথা বলিস না,খুব কষ্ট পায়।’
নির্ভীক শুধু জারিফের পিঠে হাত বুলিয়ে দিল।তারপর গাড়িতে অন্তর পাশে বসলো।প্রান্ত ফ্রন্ট সিটে বসতেই গাড়ি ছেড়ে দিল।অন্ত এখনও মাথা নিচু করে কাঁদছে।নির্ভীক একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অন্তকে একপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে মলিন কন্ঠে বলল,
‘আর কেঁদো না প্লিজ।’
অন্ত নির্ভীকের বুকে মাথা রেখে হেঁচকি তুলছে।নির্ভীক অন্তর কাঁটা হাতটা এক হাতে ধরে আছে।অন্ত একটু কান্না থামালেই হাতটা দেখা যেত কিন্তু থামছেই না।পনেরো মিনিটের মাথায় তারা বাসায় চলে আসলো।ড্রইং রুমে রাযীন আফ্রার সাথে নির্ভীক-অন্তকেও বসানো হল।নির্ভীক তার মাকে ডেকে অন্তর হাত দেখালো।উনি অন্তকে নিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলেন।নির্ভীকের পাশের সিট খালি পেয়েই টোয়া সেখানে বসে বলল,
‘গাইস এখন তো রাত আটটা বাজে মাত্র।এত সময় আমরা কি করবো?’
নির্ভীক উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
‘যা খুশি কর আমি রুমে গেলাম।’
টোয়া নির্ভীকের হাত ধরে বলল,
‘আরে তুমি যাচ্ছো কেন?আফ্রা আর অন্ত রুমে যাবে আর তোমরা দুই বর বারোটার আগে ছুটি পাবানা।’
নির্ভীক হাত ঝারা দিয়ে বলল,
‘ভাইয়াকে নিয়ে বসে থাক।ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।’
তখনই নির্ভীকের কাজিন গুলো সব চেপে ধরলো।প্রান্ত মুচকি হেসে বলল,
‘শালা বউ এর আগে বাসর ঘরে ঢুকে ঘোমটা দিয়ে মাথা ঢেকে বসে থাকবি?’
নির্ভীক বিরক্ত হয়ে বলল,
‘আরে ইয়ার চেন্জটা করতে দে।কমফোর্টেবল কিছু পরে আসি তারপর নাহয় সারারাত আড্ডা দিব।’
শৈবাল সোফায় বসে পায়ের উপর পা তুলে বলল,
‘সারারাত আমাদের সাথে থাকলে তোর বউ রাগ করবেনা?তাছাড়াও সুন্দরী বউকে…..’
নির্ভীকের রাগী মুখ দেখে শৈবাল আর কিছু বলার সাহস পেল না।এমনিতেও নির্ভীকের হাতে কম মাইর খায়নি।এখন উল্টো-পাল্টা কিছু বললে নির্ভীক তো মারবেই সাথে মায়ের হাতে জুতোর বারি ফ্রি।শৈবাল চোখমুখ শক্ত করে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকলো।মনে মনে বলল শৈবাল কথা কম বলে আর কাজ বেশি করে।তোর হিসেব নিকেশ খুব তাড়াতাড়ি মিটিয়ে নিব।ওই মেয়ের জন্য তুই আমার সাথে যা করেছিস।একদম ঠিক কাজ করিসনি।
নির্ভীকের রুমে যাওয়া হলোনা।কিছুক্ষণ পরই অন্তকে নিয়ে এসে আবার নির্ভীকের পাশে বসানো হল।বয়স্ক মহিলারা এখন কিছু রিচুয়াল পালন করবেন।এক দিকে রাযীনের রিচুয়াল পালন হচ্ছে অন্যদিকে নির্ভীকের।এক গ্লাস পানিতে চিনির শরবত বানিয়ে অর্ধেকটা নির্ভীককে খাওয়ানো হল তারপর বাকি অর্ধেকটা অন্তকে।এরপর বড় একটা রসগোল্লা নিয়ে শৈবালের দাদি কি যেন বিরবির করতে করতে মিষ্টিটাকে ছয়ভাগ করলেন।তিনভাগ নির্ভীককে খাওয়ানো হল কিন্তু বাকি তিন ভাগ অন্ত আর খেতে পারছেনা।গা গুলোচ্ছে।দাদি অন্তর উপর অখুশি হয়ে বললেন,
‘এই কেউ একটু পানি নিয়ে এসো।পানি দিয়ে গিলে খাক।এই মেয়ে তো দেখছি মিষ্টি মিঠায় কিছুই পছন্দ করে না।এমন ধারা হইলে সংসার মিঠা হইবো নাতো।’
নির্ভীক বাকি তিন টুকরো মিষ্টি মুখে পুরে বলল,
‘এসব বোগাস কথা কই পাও যে তোমরা।’
দাদি ভ্রু কুচকে বলল,
‘এই তুই এটা কি করলি?আবার প্রথম থেকে সব শুরু করতে হবে।’
নির্ভীক অন্তর এক হাত ধরে বলল,
‘নেক্সট কি আছে সেসব কর তো নাহলে উঠে যাব।’
দাদি রাগী মুখ করে এক টুকরো সন্দেশ হাতে নিয়ে নির্ভীকের মুখে ধরে বললেন,
‘অর্ধেকটা খা।’
নির্ভীক মুচকি হেসে বলল,
‘পুরো টা খাই?’
দাদি চোখ গরম করে তাকাতেই নির্ভীক বলল,
‘না মানে আই লাভ সুইটস্।’
নির্ভীক এক কামড়ে অর্ধেকটা নিল।বাকি অর্ধেকটা অন্তর মুখে ধরা হল।অন্ত অসহায় মুখ করে দাদির দিকে তাকালো।নির্ভীকের খালা পানি নিয়ে এসে অন্তকে দিল।অন্ত দাদির হাতের সন্দেশ মুখে নিয়ে পানি দিয়ে গিলে গ্লাসটা রেখে দিল।মনে মনে ভাবছে এসব কি ধরনের রিচুয়াল!!তখন থেকে নির্ভীক ভাইয়ার এটো খাবার খাওয়াচ্ছে,ইয়াক!!!
মিষ্টি থেরাপির পর নির্ভীকের মাকে দিয়ে কিছু রিচুয়াল পালন করানো হল।অন্ত আর আফ্রার ডান পায়ের বুড়ো আঙুল ধুয়ে সেই পানি উনাকে খাওয়ানো হয়েছে।অন্ত এসব আটকানোর জন্য কান্না করে দিয়েছে কিন্তু নির্ভীকের মা হাসি মুখে পানি খেয়ে বুঝিয়ে দিলেন ছেলের বউদের উনি কতটা ভালোবাসবেন।সব শেষে আবার নির্ভীকের এটো খাবার খাইয়ে রাত দশটায় অন্তকে বাসর ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হল আর নির্ভীককে হুদায় আটকে রাখলো।
ঘড়িতে রাত এগারোটা বাজে।অন্ত ফুল দিয়ে সাজানো ঘরে হাঁটাহাঁটি করছে।দাদি বলেছে নির্ভীক ঘরে ঢুকলেই যেন পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে।অন্তর এখন একা একা খুব ভয় করছে আর লজ্জাও করছে।নির্ভীকের সামনে কিভাবে দাঁড়াবে সেটায় ভেবে পাচ্ছে না তাহলে সালাম করবে কিভাবে।অন্যদিকে নির্ভীক রাযীনের বাসর ঘরের দরজা আটকে বড় ভাইয়ের থেকে টাকা আদায় করছে।রাযীন তো কিছুতেই কানাকড়িও দিবেনা।শেষমেশ নির্ভীক জোর করে রাযীনের পকেট হাতরে পাঁচ হাজার টাকা বের করে গুনতে গুনতে বলল,
‘পকেটে টাকা রেখে বলছে টাকা দিবেনা।গাইস টাকা পেয়ে গিয়েছি।’
প্রান্ত ছো মেরে নির্ভীকের হাত থেকে টাকা নিয়ে বলল,
‘রাযীন ভাইয়া তুমি এখন আসতে পারো।অল দ্যা বেস্ট।সকালে ভাতিজাকে নিয়ে ঘর থেকে বের হবা।’
সবাই হো হো করে হেসে দিল।রাযীন সবার দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে ঘরে ঢুকে গেল।তারপর সবাই নির্ভীকের দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো।নির্ভীক আড়মোড়া ভেঙে বলল,
‘কি চাই?’
টোয়া নির্ভীকের হাত ধরে বলল,
‘চলো বান্দরবন ট্রিপে যাই।’
টোয়ার কথা শুনে সবার মুড টায় নষ্ট হয়ে গেল।নির্ভীক টোয়ার থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
‘অন্তকে নিয়ে আকাশ দেখতে যাব।ওসব বন-জঙ্গল ভাল লাগেনা।’
শৈবাল মুচকি হেসে বলল,
‘যাবি তো কিন্তু তার আগে আমাদের কিছু কানাকড়ি দিয়ে ঘরে যা।’
নির্ভীকের বড় খালার মেয়ে বলল,
‘সুন্দরি বউ তাই দশহাজারের কমে দরজা খুলবো না।ঘরে যেতে হলে দশহাজার দিতেই হবে।’
নির্ভীক শৈবালের হাতে একটা হাজার টাকার মোটা ব্যান্ডেল ধরিয়ে দিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল।এতগুলো টাকা দেখে প্রান্ত বাদে সবার চোখ রসগোল্লা।কিন্তু একটু পরই বুঝতে পারলো এক হাজার টাকার একটা নোট বাদে সবগুলোই সাদা কাগজ।নির্ভীক তো ঘরে ঢুকে গিয়েছে তাই সবাই প্রান্তকে চেপে ধরলো কারন সবাই বুঝে গিয়েছে প্রান্ত আগের থেকেই জানতো নির্ভীক তাদের বোকা বানাবে।
নির্ভীক দরজা লাগিয়ে পেছনে ঘুরতেই দেখলো অন্ত মাথা নিচু করে মেঝেতে দাঁড়িয়ে আছে।নির্ভীক মুচকি হেসে অন্তর সামনে দাঁড়ালো।অন্তর হাত-পা মৃদু কাঁপছে।মুখে সালাম দিয়ে নির্ভীকের সামনে নিচু হতেই নির্ভীক অন্তকে বাঁধা দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।অন্তর কপালে চুমু দিয়ে বলল,
‘আজকে আমি কি পেয়েছি জানো না।তুমি আমার বাঁচার স্বপ্ন,ভাল থাকার মহাষৌধ।আমার সব খুশি শুধু তোমাকে ঘিরে।আমার যাবতীয় সুখের ফোয়ারা তুমি।ভালোবাসি তোমাকে।’
নির্ভীক আবার অন্তর কপালে ঠোঁট ছোঁয়ালো।মুচকি হেসে বলল,
‘ভয় পাচ্ছো?’
অন্ত মাথা নিচু করে মাথা নাড়ালো।এর অর্থ ‘না’।নির্ভীক অন্তর গালে হাত রেখে বলল,
‘তাহলে কাঁপছো কেন বউ?এখনো তো কিছুই করলাম না।’
নির্ভীকের মুখে বউ ডাক শুনে অন্তর মনে শৈতপ্রবাহ বয়ে গেল।নিজের অজান্তেই নির্ভীকের বুকে মাথা রেখে মুচকি হাসলো।নির্ভীক অন্তর মাথায় চুমু দিয়ে অন্তকে কোলে নিয়ে ড্রেসিং টেবিলের উপর বসিয়ে দিল।অন্ত ভীত চোখে নির্ভীকের দিকে তাকিয়ে পিছিয়ে গিয়ে আয়নাতে মাথা ঠেকালো।নির্ভীক এক দৃষ্টিতে অন্তর দিকে তাকিয়ে আছে দেখে অন্ত মাথা নিচু করে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো।নির্ভীক মুচকি হেসে অন্তর গালে গাল ঘষে কানের কাছে বিরবির করে বলল,
‘ভয় পেয় না বউ,তোমার ভীত চোখ দেখলে আমি পাগল হয়ে যায়।নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবোনা।’
অন্ত গালে হাত দিয়ে ভীত চোখে নির্ভীকের দিকে তাকালো।নির্ভীকের গালে এমন কি আছে যার জন্য সে এত ব্যাথা পেল কিছু বুঝতে পারছেনা।নির্ভীক গাল থেকে অন্তর হাত সরিয়ে দিয়ে সেখানে চুমু দিল।অন্তর কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলল,
‘পাগল হয়ে যাচ্ছি।কেন এত মায়া করছো!!আমি তো তোমারই,তাহলে এত মায়াজাল বুনছো কেন!মারা যাব আমি!!’
অন্ত শুকনো ঢোক গিললো।কাঁপা কাঁপা কন্ঠে উল্টোপাল্টা করে বলল,
‘ন-ন-নামবো নিচে থ-থেকে স-স-সামনে স-সরুন!!’
নির্ভীক অন্তর ঠোঁটে বুড়ো আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে বলল,
‘মাচ কিউট!লিপস্টিকটা কি সত্যি কিসিং প্রুফ?লেট’স চেক।’
অন্ত সঙ্গে সঙ্গে ঠোঁট দুটি মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে নিল।নির্ভীক মুচকি হেসে অন্তর নাক টিপে ধরে থাকলো।কয়েকসেকেন্ডের মধ্যে বাধ্য হয়ে অন্তকে মুখ খুলতে হল।নির্ভীক সঙ্গে সঙ্গে অন্তর ঠোঁট দখল করে নিল।অন্তও নিজের অজান্তে নির্ভীকের ঘাড়ে নখ বসিয়ে দিয়েছে।নির্ভীক তাও ছাড়তে রাজী নয়।কয়েকমিনিট পর অন্ত আর শ্বাস নিতে পারছেনা দেখে কান্না করে দিয়েছে।নির্ভীক অন্তকে ছেড়ে দিয়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,
‘সরি,ডোন্ট ক্রাই।আর এরকম করবোনা প্রমিস।’
অন্ত নাক টেনে নিচে নামার চেষ্টা করতেই নির্ভীক অন্তকে আটকে দিল।অন্তর মাথা থেকে লাল ওড়না খুলে সব অর্নামেন্টস খুলে দিল।আলমিরা থেকে সাদা গাউন বের করে অন্তর হাতে দিয়ে বলল,
‘ফ্রেশ হয়ে অজু করে আসো।’
দুজনে একসাথে নফল নামাজ পরা শেষে নির্ভীক গিয়ে লাইট অফ করে দিল।মোমবাতির আলোতে পুরো ঘর আলোকিত হয়ে উঠলো।এখন বিছানায় যেতে হবে বুঝতে পেরেই অন্তর হাত-পা অবশ হয়ে আসছে।নির্ভীক অন্তকে কোলে নিয়ে বিছানায় ফুলের পাপড়ির উপর শুয়ে দিল।কনুই ভাজ করে অন্তর উপর ঝুকে অন্তর গালে হাত দিয়ে বিরবির করে বলল,
‘ভালোবাসি,খুব ভালোবাসি।সারাদিন,এমনকি ঘুম আসার পূর্ব পর্যন্ত তোমার বিভিন্ন আচরণ,কন্ঠস্বর,কথা,মায়াবী চোখ,শারীরিক সৌন্দর্য সবকিছু আমাকে ক্রমাগত অস্থির করে তোলে।একসময় নিজের উপরই রেগে যাই,নিজের এমন অসঙ্গত মানসিক অস্থিরতার কথা ভেবে।কিন্তু সব যুক্তি তর্ক ভুলে তোমার বুনা ইন্দ্রজালে বার বার নিজেকে হারিয়ে ফেলি।নিজেকে কিছুতেই সামলাতে পারিনা।তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?একবার বল প্লিজ!’
নির্ভীক তীব্র এক ব্যাকুলতায় সেই শব্দটি শুনতে চায় যা শুনার জন্য সে বছরের পর বছর ধরে ক্ষতবিক্ষত হয়ে চলেছে – যেমন করে খরাপীরিত পৃথিবী বৃষ্টির অপেক্ষা করে,যেমন করে দীর্ঘ রাত্রি ভোরের সূর্যের কামনা করে।
অন্তর মনে উথাল পাতাল ঢেউ।নির্ভীকের আবেগে আপ্লুত হয়ে জ্বলেপুরে মরে যাচ্ছে।জ্বলেপুরে মরার নাম যদি ভালোবাসা হয় তাহলে অন্ত অবশ্যই নির্ভীককে ভালোবাসে।অন্ত কাঁপা হাতে প্রথম বারের মতো নির্ভীকের গাল ধরলো।নির্ভীক অন্তর সেই হাতে ঠোঁট ছোয়ালো।অন্ত কেঁপে উঠে চোখবন্ধ করে বলল,
‘আমিও ভালোবাসি আপনাকে।আই লাভ ইউ টু।’
নির্ভীক স্বস্তির শ্বাস ফেলে অন্তর পাশে চিৎ হয়ে শুয়ে পরলো।দুই হাতে কপালের চুল মাথার উপর চেপে ধরে সিলিং এর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।তারপরই অন্তকে বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে অন্তর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
‘ঘুমাও,অনেক রাত হয়েছে।অহ না ওয়েট,মেডিসিন তো খাওনি।’
নির্ভীক উঠে অন্তকে নিয়ে সোফায় বসে অন্তর হাতে মেডিসিন দিল।পানি ভর্তি জগ থেকে এক গ্লাস পানি অন্তকে দিয়ে খেতে বলল।অন্ত অর্ধেক পানি খেয়ে বাকি অর্ধেকটা টি-টেবিলে কৃত্রিম পদ্মফুল রাখা পাত্রের পানির মধ্যে ঢেলে দিল।নির্ভীক চটে গিয়ে বলল,
‘ফেলে দিলা কেন?আমি খাব তো।’
অন্ত মুখ কাচু মাচু করে বলল,
‘জগে আরও পানি আছে।’
নির্ভীক মুচকি হেসে জগ থেকে পানি নিয়ে আবার অন্তকে দিল।অন্ত আবার দুঢোক ঢোক পানি খেয়ে অবশিষ্টটা ফট করে ঢেলে দিল।মাথা নিচু করে মুচকি হাসতেই নির্ভীক অন্তর গাল টেনে বলল,
‘দুষ্টুমি করছো পিচ্চি?পরে সামলাতে পারবা তো?’
‘উফ্ ছাড়ুন,গাল টেনে ছিড়বেন নাকি?’
নির্ভীক অন্তর গাল ছেড়ে দিয়ে বলল,
‘ইশ!কি সফট্ এগুলো!!ইচ্ছে করছে সোনা দিয়ে মুড়িয়ে রাখি।অহ ওয়েট তোমার জন্য গিফট আছে।’
নির্ভীক উঠে আলমিরার কাছে গেল।অন্ত ভ্রু কুচকে নির্ভীকের দিকে তাকিয়ে আছে।সত্যি এই ছেলেটা তার বর!!অন্তর বিশ্বাসী হচ্ছেনা নির্ভীক সারাজীবনের জন্য তার।নির্ভীক আলমিরা থেকে সাদা টিশার্ট আর লাল পাটোয়ারী পায়জামা বের করে অন্তকে দিয়ে চেন্জ করে আসতে বলল।অন্ত ঠোঁট উল্টে বলল,
‘থাক না,পড়ে আছি এটায় কমফোর্টেবল।’
নির্ভীক মুচকি হেসে বলল,
‘না তুমি এসব পরবা।বাসাতে তো রোজ এসবই পরে ঘুমাও।যাও চেন্জ করে আসো।’
অন্ত কোনরকমে চেন্জ করে ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো।হঠাৎ মাথা ঘুরছে,চোখ জ্বলছে।নির্ভীক অন্তর জন্যই ওয়েট করছিল।অন্ত বের হতেই অন্তর সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো।কোমড় থেকে টিশার্ট উপরে তুলে অন্তর কোমরে সোনার বিছে পরিয়ে দিল।কোমড়ের কুচকুচে কালো তিলে একটা চুমু খেয়ে দ্রুত টিশার্ট নামিয়ে দিয়ে অন্তর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,
‘এটা কখনও খুলবা না।খুললে আমি খুলে দিব পরলেও আমি পরিয়ে দিব।কমফোর্টেবল করে বানিয়ে নিয়েছি তাই সব সময় পরতে পারবা।’
অন্ত ভ্রু কুচকে বলল,
‘আপনাকে এমন লাগছে কেন?কোনটা আপনি?’
নির্ভীক উঠে দাঁড়িয়ে চিন্তিত হয়ে বলল,
‘তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?ঘুম পাচ্ছে?’
অন্ত চোখ বন্ধ করে মেঝেতে বসে বলল,
‘হুম।’
নির্ভীক অন্তর সামনে বসে গালে হাত দিয়ে বলল,
‘আচ্ছা চলো ঘুমাবা।’
অন্ত আর কিছু বলছেনা।ধীরে ধীরে শরীর এলিয়ে দিচ্ছে।নির্ভীক ভ্রু কুচকে বলল,
‘কিরে এখানেই ঘুমিয়ে গেলা তো।স্ট্রেঞ্জ!!এই কি হয়েছে তোমার?’
নির্ভীক অন্তকে বিছানায় শুয়ে দিল।মোমবাতি গুলো নিভিয়ে বেলকুনির দরজা লাগিয়ে দিয়ে নিজেও অন্তকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো।
—
রাত তিনটে বাজে।গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে ছাদের মেঝেতে শুয়ে অন্ধকার আকাশ দেখছে আরাফ।অন্ত এখন নির্ভীকের সাথে এক বিছানায় আছে ভাবতেই নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে।অনেক চেষ্টা করেও নির্ভীককে আটকাতে পারলোনা।ভেবেছিল নির্ভীককে কড়া ঘুমের ঔষধ খাইয়ে দিবে কিন্তু পারেনি।কি করে পারবে নির্ভীক যা খাচ্ছে অন্তকেও তাই খাওয়ানো হচ্ছে।অন্তর শরীরের যা অবস্থা ডক্টরের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ কেন কোন খাবারও খাওয়ানো যাবেনা।তাই উপায় না পেয়ে নির্ভীকের ঘরে জগ ভর্তি পানিতে ঔষধ মিশানো হয়েছে।আরাফ জানে ওই ঔষধ কোন কাজে লাগেনি কারন কিছুক্ষণ আগেই নির্ভীককে বেলকুনির দরজা লাগাতে দেখেছে সে।তারমানে নির্ভীক পানি খায়নি।ঔষধটা দুধে মিশানো ভাল ছিল কিন্তু নির্ভীক যদি অর্ধেক দুধ অন্তকে খাইয়ে দেয় সেই ভয়ে পানিতে মিশিয়ে দিয়েছে।যে কাজটা করেছে অন্তকে নিয়ে তার কোন মাথাব্যথা নেই।পানি খেয়ে অন্ত মরলে মরবে কিন্তু নির্ভীককে ঘুমোতে হবে।ঘুমানোর আগে নির্ভীক পানি খায় তাই পানিকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।আরাফ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে বসলো।কাউকে ফোন দিয়ে বলল,
‘সকালে শুধু একবার অন্তকে বাহিরে নিয়ে আসার ব্যবস্থা কর,নিয়ে যাব ওকে অনেক দূরে।’
ওপাশ:আচ্ছা আমি চেষ্টা করব।সকালে না পারলেও দিনের মধ্যে যেকরেই হোক ওকে বাহিরে নিয়ে যাব।ঘর সাজানোর টাকা দিয়ে বিকেলে একটা রেস্টুরেন্টে খাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে অন্তকে ওখানে নিয়ে যাব।নির্ভীক কাল বাসাতেই থাকবেনা,ভার্সিটিতে নিয়োগ পেয়েছে জানো?’
আরাফ ভ্রু কুচকে বলল,
‘নির্ভীক সকালে বেড়িয়ে যাবে?’
ওপাশ:অ্যান্টিকে বলছিল সকালে বের হতে হবে।ইন্টারন্যাশনালে জয়েন করতে চায়না,সফটওয়্যার নিয়ে কি যেন করছে।যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে।পিএইচডির জন্য কোথাও অ্যাপ্লিকেশন করেছে,হয়ে গেলে কিন্তু অন্তকে নিয়ে চলে যাবে।’
আরাফ চোখমুখ শক্ত করে বলল,
‘যা যা বলেছিলাম কর।আর ছবি গুলো অন্তকে দেখাও।সকালেই দেখাবে যেন রাগ করে এখানে চলে আসে।’
বলেই আরাফ কল কেঁটে দিল ভেজা শরীরে ঠান্ডা লাগছে তাই নিজের ঘরে চলে আসলো।নিপা মেঝেতে শুয়ে ঘুমোচ্ছে।আরাফ দ্রুত চেন্জ করে বিছানায় শুয়ে পরিকল্পনা করতে লাগলো।তাকে খুব সাবধানে সবকিছু করতে হবে।অন্ত যেন কোনদিন কিছু জানতে না পারে তার জন্য সবার আগে অন্তকে হাতের মুঠোয় আনতে হবে।অন্তকে পেতে হলে একটু পাগলামি তো করতেই হবে।ভালেবাসা মানেই পাগলামি।আমি তোমার জন্য কতটা পাগল তোমাকে বুঝতে হবে কিন্তু জারিফ!জারিফের কথা মনে হতেই আরাফের মুখ কালো হয়ে গেল।টেবিল থেকে এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে বেলকুনিতে চলে গেল।
চলবে……….