ভুলের মাশুল পর্ব: ৩

0
1602

গল্প: ভুলের মাশুল
পর্ব: ৩
লেখক: হানিফ আহমেদ

সকালে
অর্ণবরা হসপিটাল এর সব দেওয়া পাওনা মিটিয়ে থানার গেলো।
থানার অফিসার অর্ণির চাচাতো ভাই রাফি,
ওরা থানায় যেতেই, রাফি বলে উঠলো!
রাফি: আরে অর্ণব যে, তুমি তো এখন ভাইরাল, হাজারো মানুষের ক্রাশ এখন পুরুষত্বহীনতায় ভুগছে।
অর্ণব: যেমন বোন তেমন ভাই?
রাফি: কি বললে?
অর্ণব: আজাইরা প্যাঁচাল করতে আসিনি, মামলা করতে এসেছি।
রাফি: কিসের মামলা?
অর্ণব: মানহানি এর মামলা অর্ণির নামে।
রাফি: (শব্দ করে হেসে উঠে আর বলে) কি রে ভাই অর্ণব তুই কি সত্যিই হি*** একটা মেয়ে তোর পুরুষত্ব নিয়ে কথা তুললো আর তুই কি না মানহানির মামলা করতে আসছিস , তুই তো ছেলেদের সম্মান মাটিতে মিশিয়ে দিবি?
অর্ণব কিছু বলার আগেই মৌ বলে উঠলো
মৌ: মিস্টার রাফি! শুধু ঘোষ এর টাকা খেয়ে পেটকে আলুর বস্তা বানাতে পারবা, মনুষ্যত্ব অর্জন করা যায় না।
রাফি: ইউ রাস্কেল,
মৌ: প্যাঁচাল করতে আসিনি , অনেক বড় ভুল করলে , চাকরিটা আর থাকলো না আপনার মিস্টার রাফি, আসি আমরা।
ওরা চলে আসে
রনি ২ টা রোম বুকিং করে , অর্ণিকে যে শাস্তি দিতে হবে।

ঘড়ির কাটায় ১২টা ছুঁই ছুঁই
অর্ণব আর তার ফ্রেন্ড গুলো বসে আছে রেস্টুরেন্টে। ১২:১০এ অর্ণি আর মিরা আসলো,
অর্ণি: কেন ডেকেছো আমায়?
অর্ণব: আমার সাথে কেন এমন করলে? কি করেছিলাম আমি! তুমি না আমায় ভালোবাসতে তাইলে কিভাবে পারলে আমার সাথে এমন করতে? (অর্ণব কেঁদেই কথাগুলো বললো)
অর্ণি: কাল একি ভাবে এমন প্রশ্ন আমিও করেছিলাম! “শুনেছিলে আমার কথা, দিয়েছিলে আমার প্রশ্নের উত্তর? আমিও পাইনি কাল উত্তর গুলো।” এটা হওয়ারি ছিলো তোমার সাথে ।
অর্ণব: কি পেলে এসব করে?
অর্ণি: মজা পেয়েছি। প্রতিশোধ নিয়েছি।
অর্ণব: এটাকে প্রতিশোধ বলে?
মিরা: অর্ণি চলতো এসব আবর্জনার সাথে কথা বলে লাভ নাই, শুধু শুধু টাইম নষ্ট করা?
মৌ: একটা থাপ্পড় ও মাটিতে পরবে না তোর, জানিস তোকে এখানেই মেরে রেখে দিতে পারি।
মৌ এর দমক শুনে মিরা চুপ হয়ে গেলো।
মৌ: অর্ণব তুই আর একটা কথাও বলবিনা, আর অর্ণি গাড়িতে উঠো, মিরা তুইও উঠ?
অর্ণি: আমি তোমাদের সাথে যাবো না? কোথায় নিয়ে যাবে আমায়?
মৌ চাকু দেখিয়ে
মৌ: এটা দেখেছিস, যদি এখন কথা না শুনিস তাইলে এখানেই দুটুকে শেষ করে ফেলবো।
মিরা: আয়ায়ায়ামরায়ায়া চিৎকার করবো কিন্তু?
সজিব: কর চিৎকার, কেও শুনবে না তোদের চিৎকার গুলো, তাই যা বলছি তাই কর নইলে উপরে যাওয়ার জন্য রেডি থাক দুজন,
মিরা: না না আমরা যাবো যাবো,
মৌ: গুড গার্লস, দিপু আর রনি তোদের যেটা করতে বলছি ওইটা করতে যা? আর সজিব রাতুল চল আমাদের সাথে
ওরা: হুম
অর্ণব চুপ হয়ে শুধু সব দেখছে ,কি বলবে ও ,মৌ যেটা করতে বলছে ওইটাই অর্ণির আসল শাস্তি।
ওরা গাড়িতে উঠলো

রাতুল ড্রাইভ করছে, আর সজিব ওর পাশে বসা,
পিছনে ওরা চারজন বসে আছে,
মৌ কাওকে ফোন দিচ্ছে
অর্ণব: কাকে ফোন দিচ্ছিস?
মৌ: ওই রামছাগল হানিফ সালারে দিচ্চি, কাল থেকে বেপাত্তা হয়ে বসে আছে, এই দিকে এতো কিছু হয়ে যাচ্ছে ‘ তার কোনো খবর নাই।
অর্ণব: হয়তো কোথাও গিয়েছে, ফোনের কাছে না ও?
অর্ণি: আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছো তোমরা?
মৌ: গেলেই দেখতে পাবি,তোর কাজের শাস্তি তোকে পেতে হবে যে।
অর্ণি আর মিরা চুপসে যায়,কি হতে চলছে ওদের সাথে, কিছুই বলতে পারছে না।
অর্ণব বললো
অর্ণব: ভিডিওটা এখনো ডিলিট হয়নি, বুকে সাহস আছে তোমার! তোমার এই ভুলের মাশুল পাহাড় সমান হলো, খুব পস্তাবে তুমি,
মৌ: চুপ থাকতো তুই, ভিডিওতে কি আছে এতে কিছু আসে যায় না। ওরা কাদের সাথে লাগতে আসছে সেটা কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝতে পারবে।

গাড়িটা এক জায়গায় থামলো।
মৌ: দুটুর মধ্যে একটাও যদি চিৎকার করছিস তাইলে এই চাকু দিয়ে এখানেই দুটুকে শেষ করে ফেলবো,( এই বলে অর্ণি আর মিরাকে গাড়ি থেকে নামানো হলো)
গাড়ি থেকে নেমেই অর্ণি চিৎকার করে উঠলো।
অর্ণি: কাজী অফিস এর সামনে কেন এনেছো আমাদের,
মৌ: তোর পাপ কাজের শাস্তি দেওয়ার জন্য?
অর্ণি: আমি কোথাও যাবো না? মিরা চল আমরা বাসায় যাবো?
অর্ণব: এখানে আমরা যা করতে বলবো তাই করবা, নইলে দুজনি লাশ হয়ে বাসায় ফিরবা?
(এই বলে অর্ণব অর্ণির হাত শক্ত করে ধরে, হাতে ছুরি ছিলো তা ভেঙে অর্ণির হাতে ঢুকে যায় সে দিকে অর্ণবের কোনো দৃষ্টি নাই)
অর্ণি: আহহ ব্যথা হচ্ছে ছাড়ো আমার হাত(চোখে পানি চলে আসে)
ওরা কাজী অফিসে ডুকে
মৌ: সব কিছু করা শেষ তো চাচা? (কাজী অফিসে থাকা লোকটিকে বললো)
কাজী: হুম শেষ,
মৌ: আচ্ছা।
রাতুল: মৌ তুই যা অর্ণিকে গিয়ে শাড়ি পরিয়ে আন?
অর্ণি: শাড়িই পড়বো মানেএএএ?
মৌ: তোর আর অর্ণব এর বিয়ে?
অর্ণি: আমি করবো না?
মৌ: কেন করবি না, ও অর্ণব এর তো পুরুষত্ব নাই তাইলে তুই ওরে কেমনে বিয়ে করবি তাই তো?
অর্ণি: হুম, যার পুরুষত্ব নাই তারে আমি কখনো বিয়ে করবো না কখনো না।
মৌ: তোকে অর্ণব কে বিয়ে করতেই হবে, আর আজ এখনি বিয়ে করবি। চল শাড়ি পড়বি এমনিতেই ২টা হয়ে যাচ্ছে।
অর্ণি: তুমি একটা মেয়ে হয়ে অন্য একটা মেয়েকে জোর করছো বিয়ে করানোর জন্য? লজ্জা করে না তোমার?
অর্ণির কথা শেষ হতেই
ঠাস করে শব্দ হয়, হুম মৌ অর্ণির গালে পরপর দুটু থাপ্পড় বসিয়ে দেয়। আর বলে
মৌ: হুম পারছি আমি মেয়ে হয়ে তোর মতো একটা মেয়েকে জোর করে বিয়ে দিতে, জানিস তুই যদি এখন বিয়ে না করিস অর্ণব কে তাহলে তোকে কেটে টুকরো টুকরো করে রাস্তার কুকুরদের খাওয়াবো। তোর মতো মেয়ে বেঁচে না থাকাই ভালো, তুই কি অর্ণব এর সাথে রাত কাটিয়েছিস যে তুই ওর পুরুষত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিস, আর কি করছিস ভিডিও আপলোড দিয়েছিস, খুব মজা পাচ্ছিস তাই না, এই ফোন দিয়েই তো ভিডিও করেছিলি এই নে তোর ফোন, (বলেই ভেঙে ফেললো ফোন) আর কি বললি আমি মেয়ে হয়ে কিভাবে এসব করতে পারছি।
তুই যদি মেয়ে হয়ে পুরুষদের নিয়ে খারাপ কথা বলতে পারিস তাইলে আমি কেন পারবো না এমন কাজ করতে?

মৌ এর কথা গুলো শুনে অর্ণি চুপ হয়ে গেছে, কি বলবে ও, রাগের বসে সত্যিই অনেক বড় ভুল করে ফেলছে। ভুলের মাশুল তাকেই গুণতে হবে।
মৌ: চুপ কেন? চল বিয়ের জন্য রেডি হবি?
অর্ণি আর কিছু না বলে মৌ যা বলছে তাই করছে।
,,,,।,,,,,
কাজী: সাক্ষী কে কে?
মৌ: কনের দিক থেকে আমি আর মিরা, আর বরের দিক থেকে রাতুল আর সজিব।
কাজী: তাইলে শুরু করি বিয়ের কাজ?
মৌ: হুম
কাজী:

চলবে,,,

(গল্পের ভুল গুলো ধরিয়ে দিবেন সবাই আশাকরি? গল্পের সাথেই থাকেন।)

ভালো থাকবেন
ঘরেই থাকবেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here